মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিন কয়েক আগে কলকাতা দখলের হুমকি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) এক মৌলবী। তার আগে চিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ভারতকে চমকাতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। ইউনূসের বাংলাদেশকে সবক শেখাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। তার মধ্যে রয়েছে রেডিমেড পোশাক-সহ বেশ কিছু পণ্য স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে আমদানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা জারিও। এই বিষয়ে (PM Modi) দেশের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রক শনিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কেবলমাত্র মুম্বইয়ের নভাশেভা ও কলকাতা সমুদ্র বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে রেডিমেড পোশাক আমদানি করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী। বাংলাদেশ থেকে রেডিমেড পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় পেট্রাপোল সীমান্তে বাণিজ্যে প্রভাব পড়েছে। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ১৫টি পণ্য বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসে। সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রেডিমেড পোশাক আমদানি বন্ধের নির্দেশিকা (PM Modi)
রেডিমেড পোশাক আমদানি বন্ধের নির্দেশিকা জারি হওয়ায় প্রভাব পড়েছে পেট্রাপোল স্থল বন্দরে। সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে পোশাক আমদানিতে যেমন খরচ বাড়বে, তেমনি সময়ও বেশি লাগবে। পেট্রাপোল এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, “পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে রেডিমেড পোশাক আমদানি বন্ধ হওয়ায় সমস্যায় পড়বেন বাংলাদেশের রফতানিকারীরা।” বাংলাদেশের রফতানিকারীদেরও দাবি, ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার জেরে দেশের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেনাপোল বন্দর সূত্রে খবর, সেখানে রেডিমেড পোশাক বোঝাই ৩৬টি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। এগুলি ভারতে রফতানি করতে না পারলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বেন বাংলাদেশের রফতানিকারীরা।
গড়ে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি
বাংলাদেশ প্রতি বছর গড়ে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করে ভারতে। বাংলাদেশ রেডিমেড ও রফতানিকারী সমিতির প্রাক্তন পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “এখন বাংলাদেশের পোশাক ভারতে পৌঁছতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগবে। এতে খরচও বাড়বে। ভারতে পোশাক রফতানিও কমে যাবে।” তিনি বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য যখন নানা সমস্যায় জর্জরিত, তখন এমন সিদ্ধান্তে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।” রুবেল বলেন, “ভারত বাংলাদেশের বড় ক্রেতা দেশ। সেখানে ক্রমেই বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাকের বাজার বিস্তার লাভ করছিল। এখন ভারতের এই সিদ্ধান্ত নতুন করে আমাদের জন্য উদ্বেগের (Bangladesh) কারণ হয়ে দাঁড়াল। ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে ভুটান বা নেপালের ট্রানজিট পণ্য প্রভাবিত না হলেও, সামগ্রিকভাবে ব্যবসায়িক সম্পর্কের ওপর এটি একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে (PM Modi)।” রফতানিকারীরা জানান, শুধু রেডিমেড পোশাকই নয়, ফলমূল, কার্বনেটেড বেভারেজ, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য, কাঠের আসবাবপত্র-সহ বেশ কিছু পণ্যের ওপরও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় স্থলবন্দরগুলিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় সার্বিকভাবে ব্যবসা ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকছেই।
বাংলাদেশকে পাল্টা চাল ভারতের
যেসব পোশাকের বার্ষিক মূল্য ৬১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৫২,৭৭,৩৩,৩৭,৫০০ টাকা), সেগুলি এখন কেবলমাত্র কলকাতা ও নভাশেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পরিবহণ করা যাবে, যার ফলে বাংলাদেশ প্রবেশাধিকার হারাল গুরুত্বপূর্ণ স্থল বাণিজ্য পথগুলিতে। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের ইউনূস সরকার ভারতীয় পণ্যের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ পাঁচটি গুরুত্বপূ্র্ণ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সঙ্গে চাল রফতানির ওপরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। তামাক, মাছ, গুঁড়ো দুধ-সহ আরও অনেক ভারতীয় পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের মতে, বাংলাদেশের বেশ কিছু আমদানির ওপর ভারতের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের ফলে দেশটি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭৭ কোটি মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬,৫৮১ কোটি টাকা, বা ৯,৩৬৭ কোটি বাংলাদেশি টাকা)। এটি দ্বিপাক্ষিক (Bangladesh) আমদানির প্রায় ৪২ শতাংশ। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ জানিয়েছে (PM Modi), ভারতের সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাগুলি মোটেই ইচ্ছে মতো বা অকারণে নয়। তাদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলি মনে হচ্ছে ভারতের তরফে বাংলাদেশের প্রতি প্রতিক্রিয়া। কারণ ঢাকা ভারতের বহু পণ্যের আমদানি সীমিত করেছে এবং কূটনৈতিকভাবে চিনের দিকে ঝুঁকেছে। প্রসঙ্গত, ভারতের অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন/ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য ইত্যাদি রফতানি করা যাবে না।
চিনের মতো ভারতে আগ্রাসন শুরু বাংলাদেশেরও!
এদিকে, চিনের মতো ভারতে আগ্রাসন শুরু করেছে বাংলাদেশও! ‘গ্রেটার বাংলা’, ‘সুলতানেট বাংলা’ নাম দিয়ে এখন বাংলাদেশের কিছু চক্র মানচিত্রে ভারতের একাধিক রাজ্যকে নিজেদের বলে দাবি করছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য, এমনকি বিহার-ঝাড়খণ্ডকেও এই কাল্পনিক মানচিত্রে ঢুকিয়ে দিচ্ছে তারা। ভারতের বিদেশনীতি বিশ্লেষক রবিন্দর সচদেব বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে ভারতের তরফে এখনই (Bangladesh) কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে (PM Modi)।”