Tag: Dr Hedgewar life and work

  • RSS: ব্যক্তি-চরিত্র গঠনই সংঘের কাজ, কলকাতায় বললেন আরএসএস প্রধান

    RSS: ব্যক্তি-চরিত্র গঠনই সংঘের কাজ, কলকাতায় বললেন আরএসএস প্রধান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে সমাজ ও সংগঠন নিয়ে নিজের ভাবনা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ সমাজকে আপন করে নেওয়ার অর্থ হলো—জাতি, ভাষা বা প্রান্তের ভেদাভেদ ভুলে সকল মানুষকে নিজের বলে গ্রহণ করা। মোহন ভাগবত বলেন, সমাজে মতভেদ ও ভিন্ন চিন্তাধারা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভিন্নতার মধ্যেও মন এক রেখে এগিয়ে চলাই সমাজের প্রকৃত শক্তি। ভিন্ন মত থাকা সত্ত্বেও ঐক্য বজায় রেখে চলতে পারলেই একটি সমাজ পরিণত ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

    মানুষের চরিত্র গঠনের কাজ করে সংঘ (RSS)

    তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমেরিকার মতো বড় রাষ্ট্র বিভিন্ন ধরনের মানুষের সহাবস্থানের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে। এমনকি গৃহযুদ্ধের সময়েও সেখানে পারস্পরিক বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েনি। সংঘপ্রধানের বক্তব্যে উঠে আসে সংঘের কাজের মূল দর্শন। তিনি বলেন, সমাজে ঐক্যের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হলে প্রথমেই মানুষকে বিতর্ক বা সংঘর্ষে জড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। বরং মানুষের চরিত্রগঠনই সবচেয়ে জরুরি। এই উদ্দেশ্যেই সংঘ মানুষের গঠনমূলক কাজ করে, যাতে ভবিষ্যতে সেই মানুষরাই সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে পারে।

    সংঘের কাজ পরিচালিত হয় বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস ও শুদ্ধ ভালোবাসার ভিত্তিতে

    মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat) জানান, সংঘের (RSS) সঙ্গে যুক্ত বহু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কাজ করেন। তাঁদের উপর কোনও রকম সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বা রিপোর্টিং সিস্টেম নেই। সংঘের কাজ পরিচালিত হয় বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস ও শুদ্ধ ভালোবাসার ভিত্তিতে। তিনি বলেন, সংঘ সম্পর্কে ‘কন্ট্রোল’, ‘ডিরেকশন’ বা ‘ভ্যাকসিন ড্রাইভিং’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করে যে প্রচার চালানো হয়, তা বাস্তবসম্মত নয়। সংঘের দায়িত্বশীল কর্মী ও স্বয়ংসেবকেরা এই ধরনের প্রচার থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকেন। সংঘ গঠিত হওয়ার পর কেউ যে ক্ষেত্রে কাজ করেন, সেখানে তিনি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনেই কাজ করেন। বহু ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও স্বয়ংসেবকদের নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হয়। তিনি স্পষ্ট করেন, সংঘ কোনোভাবেই স্বয়ংসেবক বা তাঁদের পরিবারের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করে না। প্রয়োজনে পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হয়, এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজে সংঘ সবসময় পাশে থাকে। সংঘের এই কার্যপদ্ধতির সূচনা হয় ১৯২৫ সালেই। বিভিন্ন স্বভাব, আর্থিক অবস্থা ও ভৌগোলিক পরিবেশের মানুষের মধ্যে কাজ কীভাবে কার্যকরভাবে করা যায়, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। মাসে একদিন মিলিত হওয়া থেকে শুরু করে প্রতিদিন মিলিত হওয়ার মতো নানা পদ্ধতি অনুসরণ করে কার্যকর পথ নির্ধারণ করা হয়।

    সমাজকল্যাণমূলক কাজে সংঘ (RSS) সবসময় পাশে থাকে

    সংঘের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যত বেশি সম্ভব কর্মীকে যুক্ত করা হয় এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সামষ্টিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘের ইতিহাসে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা, আক্রমণ ও কষ্টের মধ্যেও স্বয়ংসেবকেরা অবিচল থেকে কাজ করে গেছেন। মোহন ভাগবত বলেন, সংঘের মূল লক্ষ্য সম্পূর্ণ সমাজকে একত্রিত করা—কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি করা নয়। জাতীয় স্বার্থে কাজ করার সময় শালীন ভাষা, শালীন আচরণ ও আত্মসংযম বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

    সংঘ সম্পূর্ণভাবে স্বনির্ভর

    সংঘ সম্পূর্ণভাবে স্বনির্ভর এবং সমাজের সাধারণ মানুষের ছোট ছোট অবদানের উপরেই তার কার্যক্রম চলে। ভবিষ্যতে সংঘের লক্ষ্য হলো সমাজের সর্বস্তরে এমন নেতৃত্ব তৈরি করা, যারা রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের ভেতর থেকেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। ভাষণে তিনি বলেন, সমাজে নীরবে ও নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া সজ্জন শক্তিকে একত্রিত করা এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আচরণগত পরিবর্তন হঠাৎ আসে না; ধীরে ধীরে অভ্যাস ও আচরণ সংশোধনের মাধ্যমেই প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব।

    পরিবর্তনের শুরু করতে হবে নিজের জীবন, পরিবার ও দৈনন্দিন আচরণ থেকে

    এই পরিবর্তনের শুরু করতে হবে নিজের জীবন, পরিবার ও দৈনন্দিন আচরণ থেকে। জাতি, ভাষা, পেশা বা ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলাই সামাজিক ঐক্যের ভিত্তি। সমাজের ভাঙন সৃষ্টিকারী শক্তিকে রুখতে পারস্পরিক যোগাযোগ, বিশ্বাস ও সহাবস্থানের পরিবেশ গড়ে তোলার উপর জোর দেন সংঘপ্রধান। পাশাপাশি ‘মঙ্গল সংলাপ’-এর মাধ্যমে নিজের জীবন, দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব নিয়ে নিয়মিত আলোচনা ও আত্মসমালোচনার গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।

  • RSS: হিন্দুদের সংগঠিত করতেই তৈরি হয় আরএসএস, কলকাতায় বললেন মোহন ভাগবত

    RSS: হিন্দুদের সংগঠিত করতেই তৈরি হয় আরএসএস, কলকাতায় বললেন মোহন ভাগবত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলকাতায় আয়োজিত “সংঘের ১০০ বছরের যাত্রা – নতুন দিগন্ত” শীর্ষক বক্তৃতামালার প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ভূমিকা, উদ্দেশ্য ও ভাবনা স্পষ্টভাবে তুলে ধরলেন সরসংঘচালক ড. মোহন ভাগবত। রবিবার সকাল দশটায় অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে তিনি সংঘকে ঘিরে প্রচলিত নানা ভুল ধারণার জবাব দেন।

    সংঘ কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়

    ড. ভাগবত বলেন, সংঘের স্বয়ংসেবকেরা (RSS) প্যারেড করেন ঠিকই, কিন্তু তাদের প্যারামিলিটারি সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি জানান, স্বয়ংসেবকেরা দেশ ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবামূলক কাজ করেন। তিনি বলেন, সংঘের বহু কর্মী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে কাজ করেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সংঘ কোনও রাজনৈতিক সংগঠন। সংঘ কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়নি। এটি কোনও প্রতিক্রিয়ার ফলও নয়।

    সংঘের (RSS) কোনও শত্রু নেই

    সরসংঘচালকের কথায়, সংঘের কোনও শত্রু নেই। তবে সংঘ বড় হলে যাঁদের স্বার্থে আঘাত লাগে, তাঁরাই বিরোধিতা করেন এবং মিথ্যা প্রচার চালান। সংঘ চায়, মানুষ যেন বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে সংঘকে বিচার করে, ভুল প্রচারের ভিত্তিতে নয়। ড. ভাগবত বলেন, সংঘের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এমন একটি সমাজ গড়ার জন্য, যা ভবিষ্যতে বিশ্বে ভারতের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ভারত বিশ্বগুরু হবে—এই লক্ষ্যেই সমাজকে প্রস্তুত করার প্রয়াস সংঘের।

    হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করার কাজ করে (RSS)

    তিনি স্পষ্ট করে বলেন, সংঘ বিশুদ্ধভাবে হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করার জন্য শুরু হয়েছিল। কাউকে ধ্বংস করা বা বিরোধিতা করা সংঘের লক্ষ্য নয়। সম্পূর্ণ হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করাই উদ্দেশ্য। ড. ভাগবত জানান, ১৮৫৭ সালের বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পর একটি বড় প্রশ্ন উঠে আসে—যোগ্য যোদ্ধা, শাসক ও বিদ্বান থাকা সত্ত্বেও কীভাবে অল্প কয়েকজন ইংরেজ ভারত শাসন করল। এই চিন্তা থেকেই সংগঠনের ভাবনা তৈরি হয়।

    হেডগেওয়ারের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন

    তিনি (Mohan Bhagwat) ড. হেডগেওয়ারের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। জানান, মাত্র ১১ বছর বয়সে ড. হেডগেওয়ার বাবা-মাকে হারান। তাঁরা প্লেগ রোগীদের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হন। চরম দারিদ্র্যের মধ্যেও ড. হেডগেওয়ার মেধাবী ছাত্র ছিলেন। দেশসেবাই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। ড. ভাগবত বলেন, ড. হেডগেওয়ার কখনও ব্রিটিশ শাসন মেনে নেননি। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার। তিনি চাকরি করেননি, বিবাহ করেননি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেন এবং রাজদ্রোহের মামলার মুখোমুখি হন।

    ভারত চিরকাল বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের দেশ

    সরসংঘচালক (Mohan Bhagwat) বলেন, ভারত কোনও নতুন রাষ্ট্র নয়। ইংরেজদের আগেও এই দেশ ছিল। ভারত চিরকাল বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের দেশ। হিন্দু কোনও একক ধর্ম বা উপাসনা পদ্ধতি নয়। হিন্দু একটি স্বভাব। যে এই সংস্কৃতি, এই ভূমিকে মানে, সে-ই হিন্দু। তিনি বলেন, হিন্দু মানে সর্বসমাবেশী চিন্তা। সকলের মঙ্গল ভাবাই হিন্দু স্বভাব। এই বৈচিত্র্যই ভারতের সৌন্দর্য। ড. ভাগবত জানান, সংঘের কাজের পদ্ধতি অনন্য। ব্যক্তি গঠনের মাধ্যমে সমাজকে সংগঠিত করাই লক্ষ্য। সংঘের শাখা মানে প্রতিদিনের ব্যস্ততা ভুলে এক ঘণ্টা দেশের কথা ভাবা। তিনি বলেন, সংঘ সমাজের ভেতরে আলাদা কোনও শক্তিকেন্দ্র গড়তে চায় না। সমাজকেই সংগঠিত করতে চায়। ভালো কাজ যেখানে হচ্ছে, সেখানে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করাই সংঘের নীতি। সবশেষে ড. ভাগবত বলেন, সংঘ থেকে তৈরি হওয়া স্বয়ংসেবকেরা সমাজের সব ক্ষেত্রে কাজ করছেন। দেশের কল্যাণে যে কোনও সৎ উদ্যোগে সংঘ সবসময় পাশে থাকে।

LinkedIn
Share