মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাজেটে (Union Budget 2025) শিক্ষাক্ষেত্রে একাধিক সুবিধার কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। দেশের সমস্ত সরকারি স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করছে সরকার। স্কুলগুলিতে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা স্থাপন করা হবে। তার মাধ্যমে স্কুলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পড়াশোনা করতে পারবে পড়ুয়ারা। আসন সংখ্যা বাড়তে চলেছে ডাক্তারিতে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ৭৫ হাজার আসন বাড়ানো হবে, বলে জানালেন অর্থমন্ত্রী। নির্মলা জানিয়েছেন, মেডিক্যাল শিক্ষা খাতে (Education Budget 2025) বিশাল বিনিয়োগ করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে সিট সংখ্যা।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ
গতবারের তুলনায় বাড়ল শিক্ষাখাতে (Union Budget 2025) ধার্যের পরিমাণ। চলতি বছরে ১ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে কেন্দ্র। গত বছর এই টাকার পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা। দেশের চিকিৎসাশিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে শনিবার বাজেট বক্তৃতায় বড় ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। অর্থমন্ত্রী (Nirmala Sitharaman) জানিয়েছেন, আগামী এক বছরে ১০,০০০টি নতুন মেডিক্যাল স্নাতক (MBBS) ও স্নাতকোত্তর (PG) আসন সংযোজিত হবে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরবর্তী পাঁচ বছরে মোট ৭৫,০০০টি আসন বাড়ানো হবে।
মেডিক্যালে বাড়ছে আসন সংখ্যা
দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বর্তমানে মোট ১,১২,১১২টি এমবিবিএস সিট রয়েছে। ভর্তি হতে হয় নিট পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রতি বছরই বিপুল প্রতিযোগিতা হয়। নির্মলার দাবি, কেন্দ্রে মোদি সরকার গঠনের পর গত দশকে ভারতের চিকিৎসাশিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে যেখানে দেশে এমবিবিএস-এ ৫১,৩৮৪টি আসন ছিল, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১২,১১২টিতে। একইভাবে, স্নাতকোত্তরে আসনের সংখ্যা ৩১,১৮৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭২,৬২৭-এ পৌঁছেছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ক্যান্সার সেন্টার গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আইআইটি-তে অতিরিক্ত পরিকাঠামো
বাজেট ভাষণে দেশের ৫টি আইআইটি-তে (Union Budget 2025) অতিরিক্ত পরিকাঠামো নির্মাণের ঘোষণাও করেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি, আইআইটি পাটনার সম্প্রসারণের কথাও জানান। সেখানে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হবে। আআইইটি-এর সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন নির্মলা (Nirmala Sitharaman)। আইআইটির আসনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে নির্মলা জানিয়েছেন, দেশের ২৩টি আইআইটিতে গত ১০ বছরে ১০০ শতাংশ আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১৪ সালের পর থেকে দেশে যে পাঁচটি নতুন আইআইটি তৈরি করা হয়েছে, তাতে আগামী দিনে আরও সাড়ে ছয় হাজার ছাত্রছাত্রীকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এই আইআইটিগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নেও জোর দেবে সরকার। পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য আলাদা করে অর্থ বিনিয়োগ করা হবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে গুরুত্ব
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে বারবার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (Artificial Intelligence) প্রসঙ্গ উঠে আসে। কীভাবে এআই (AI) কাজ করছে সেই সংক্রান্ত তথ্য বারবার তুলে ধরেছেন মোদি। এবার এই বিষয়ে বড় ঘোষণা করা হয়। অর্থমন্ত্রী জানান, এআই শিক্ষার (Artificial Intelligence) জন্য ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ৩টি এআই এক্সিলেন্স সেন্টার স্থাপন করা হবে বলেও জানান। স্টার্টআপ ক্রেডিট গ্যারান্টি বাড়িয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
ভারতীয় ভাষাপুস্তক প্রকল্প
শিক্ষাক্ষেত্রে ‘ভারতীয় ভাষাপুস্তক প্রকল্প’ ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে (Union Budget 2025)। এর মাধ্যমে ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনায় জোর দেওয়া হবে। নির্মলা বলেছেন, ‘‘নিজস্ব ভাষায় বিভিন্ন বিষয় পড়া এবং বোঝার জন্য আমরা স্কুল-কলেজে ‘ভারতীয় ভাষাপুস্তক প্রকল্প’ চালু করছি। এ ছাড়া, সমস্ত সরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।’’
স্কুলে স্কুলে ইন্টারনেট
প্রযুক্তিবিদ্যায় জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মোদির (PM Modi) ডিজিটাল ইন্ডিয়া গঠনের স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলেও ব্রডব্যান্ড সার্ভিস চালুর কথা বলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি জানিয়েছেন আগামী পাঁচ বছরে ৫০,০০০ সরকারি স্কুলে আত্তল টিঙ্কারিং ল্যাব চালু করা হবে। সব সেকেন্ডারি স্কুলে দেওয়া হবে ব্রডব্যান্ড কানেকশন। সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতেও। পড়াতে সুবিধা হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও।
প্রধানমন্ত্রী রিসার্চ ফেলোশিপ
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিহারে একটি জাতীয় প্রযুক্তি, উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা পূর্বাঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে উৎসাহিত করবে। এর ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে, যুবকদের দক্ষতা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে এমএসএমই সেক্টরের উপর বাড়তি জোর দিয়েছেন নির্মলা। তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য ১০,০০০ ফেলোশিপ দেওয়া হবে। চালু করা হবে ‘অঙ্গনওয়াড়ি ও পুষ্টি ২.০ প্রকল্প’।