Tag: Finland President

  • India US Relation: ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা মার্কিন মুলুকে, কী বললেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট?

    India US Relation: ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা মার্কিন মুলুকে, কী বললেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ট্রাম্প জমানায় মার্কিন বিদেশনীতির কড়া সমালোচনা করলেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব। রাজধানী হেলসিঙ্কিতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপ এবং আমেরিকাকে গ্লোবাল সাউথ এবং ভারতের প্রতি সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নইলে আমরা হেরে যাব।’’ পরাজয় কোন দিক থেকে আসবে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি আলেকজান্ডার। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, স্টাবের এই মন্তব্যের সময় তাঁর পাশে ছিলেন লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গীতানাস নৌসেদা। ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণের (India US Relation) সমালোচনা করেছেন ডেমোক্র্যাট নেতা রো খান্না। প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) জেক সুলিভানও ট্রাম্পের ভারতের উপর আরোপিত শুল্কনীতি এবং একতরফা ভূ-রাজনৈতিক আচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

    ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ স্টাবের আশঙ্কা

    চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিনের তিয়ানজিনে চলা ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’ বা এসসিওর বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (India US Relation)। সেখানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাদা করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, মোদিকে নিজের গাড়িতে করে হোটেলে নিয়ে যান পুতিন। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নয়াদিল্লি ও ক্রেমলিনের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে কাটাছেঁড়ায় বসে একাধিক পশ্চিমি দেশ। গত ২৭ অগাস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ করে শুল্ক ধার্য করেছে ট্রাম্পের আমেরিকা। শুধু তা-ই নয়, নয়াদিল্লি অবিলম্বে রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত খনিজ তেল ‘উরাল ক্রুড’ কেনা বন্ধ না করলে নিষেধাজ্ঞার অঙ্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। যদিও এই হুমকির কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ মোদি সরকার। কেন্দ্রের সাফ যুক্তি, জাতীয় স্বার্থে মস্কোর থেকে সস্তা দরে ‘তরল সোনা’ আমদানি করা হচ্ছে, যা কোনও অবস্থাতেই বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। ভারতীয় পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের অঙ্ক বৃদ্ধি করতেই বিকল্প বাজারের সন্ধানে কোমর বেঁধে লেগে পড়ে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে সাত বছর পর প্রধানমন্ত্রী মোদির চিন সফরের দিকে তাকিয়েছিল গোটা বিশ্ব। সেখানে শি এবং পুতিনের সঙ্গে তাঁকে খোশগল্প করতে দেখে প্রমাদ গুনেছে ফিনল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মতো রুশ সীমান্ত লাগোয়া পূর্ব ইউরোপের একাধিক দেশ। মস্কোর দিকে নয়াদিল্লির এ ভাবে ঝুঁকে পড়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করছে তারা। ফিনল্যান্ড প্রেসিডেন্ট স্টাবের কথায়, ‘‘চিনের বৈঠকে কী হয়েছে সেটা আমরা সবাই দেখেছি। পশ্চিম ইউরোপ কিন্তু যথেষ্ট ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভারতের মতো উদীয়মান শক্তির সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে সমূহ বিপদ। আমাদের পুরনো ব্যবস্থার কথা মাথায় রাখতে হবে।’’

    স্টাবস-ট্রাম্প ঘনিষ্ঠতা

    স্টাবস নেহাতই কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট নন, তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা আছে। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়, সারা বিশ্বে যে কয়েকজন পশ্চিমী রাষ্ট্রনেতার (বিরল তালিকা) কথায় পাত্তা দেন ট্রাম্প, তাঁদের মধ্যে আছেন ফিনল্যান্ড প্রেসিডেন্ট। এমনকী ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউক্রেনের যে আলোচনা চলছে, তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ফিনল্যান্ড। শুধু তাই নয়, গত মার্চে ফ্লোরিডায় মার-এ-লাগো রিসর্টে ট্রাম্পের সঙ্গে সাত ঘণ্টা গলফ খেলেছিলেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট।

    নোবেল না পাওয়াতেই ভারতকে শাস্তি

    ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসম্যান রো খান্না এক্স-এ এক পোস্টে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন না করায়, ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০% শুল্ক বসিয়েছেন, যা চিনের উপর আরোপিত শুল্কের থেকেও কঠোর।” তিনি অভিযোগ করেন, “ট্রাম্প নিজের স্বার্থে তিন দশকের মার্কিন-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ধ্বংস করছেন। এটা শুধু ভারতের রফতানি খাতকে নয়, মার্কিন নির্মাতা ও আমেরিকার অর্থনীতিকেও বিপর্যস্ত করছে।”

    পাকিস্তানে পারিবারিক ব্যবসার স্বার্থে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন

    আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানও ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে বলেন, “ট্রাম্প নিজের পরিবারের ব্যবসা রক্ষা করতে পাকিস্তানের সঙ্গে আঁতাত করেছেন এবং ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক নষ্ট করেছেন।” তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বহু দশক ধরে দ্বিদলীয় সমর্থনে ভারতের সঙ্গে একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই সম্পর্ক প্রযুক্তি, প্রতিভা, অর্থনীতি ও চিন মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প সব কিছু এক লহমায় নষ্ট করে দিয়েছেন।” সুলিভান আরও অভিযোগ করেন, ট্রাম্প ও তাঁর পরিবারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইনান্সিয়াল ইঙ্ক (World Liberty Financial Inc বা WLFI) পাকিস্তানের ক্রিপ্টো কাউন্সিলের (PCC) সঙ্গে একাধিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। আমেরিকান অর্থনীতিবিদ রিচার্ড উলফ, জেফরি স্যাকস ও প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালিও ট্রাম্পের ভারতের উপর শুল্কনীতি ও একতরফা আচরণকে “কৌশলগত ভুল”, “আত্মঘাতী পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন।

LinkedIn
Share