মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমের জল বিশুদ্ধতার প্রতীক। রাজনীতিবিদরা যতই বিতর্ক তৈরি করুন না কেন, সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, ত্রিবেণী সঙ্গমের জল কাচের মতো স্বচ্ছ। কোটি কোটি মানুষ যে জলে স্নান করেছেন, সেই জল কীভাবে স্বচ্ছ থাকে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। শুধু সারা ভারতের পুণ্যার্থীরাই নন, বিভিন্ন দেশ থেকেও বহু মানুষ প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় যোগ দিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, দিল্লি, ওড়িশা, বিহার, অসম, ত্রিপুরা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, কানাডা, সুইৎজারল্যান্ড, জার্মানির মতো দেশগুলি থেকেও পুণ্যার্থীরা প্রয়াগরাজে এসেছিলেন। প্রত্যেকেই ত্রিবেণী সঙ্গমের জল বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। সেই জল অত্যন্ত পরিষ্কার।
কীভাবে বিশুদ্ধ জল
ত্রিবেণী সঙ্গমের জল কেন এত স্বচ্ছ্ব এই নিয়ে পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়া বিজ্ঞানী ড. অজয় সোনকরের মতামত জানতে চেয়েছেন বিদেশি বিজ্ঞানীরা। কোটি কোটি মানুষের জমায়েত স্থলে যে ব্যবস্থাপনা করা হয়েছিল, তার জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসাও করেছেন বিদেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীরা। মকর সংক্রান্তি থেকে মহা শিবরাত্রি পর্যন্ত প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে ৬৫ কোটিরও বেশি পুণ্যার্থী স্নান করেছেন। সারা বিশ্বে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এত মানুষ উপস্থিত হননি। ফলে নজির গড়েছে মহাকুম্ভ। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শেষ হওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলায় ত্রিবেণী সঙ্গমের জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে দমকল বিভাগ।
গঙ্গাজল স্বচ্ছ
ত্রিবেণী সঙ্গমের জলের বিষয়ে ড. সোনকর জানিয়েছেন, অ্যালকালাইন ওয়াটারের চেয়েও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন গঙ্গাজল। এই জল পানের যোগ্য। তিনি বিজ্ঞানসম্মতভাবে এ কথা প্রমাণ করে দিয়েছেন। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এই ভিডিও দেখে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা গঙ্গাজল নিয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠেছেন। অনেকেই এখন ড. সোনকরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁরা গঙ্গাজলের বিশেষত্ব জানতে চাইছেন। ড. সোনকর গবেষণা করে জানিয়েছেন, গঙ্গাজলে ১,১০০ ধরনের ব্যাকটেরিওফাজ আছে। এগুলি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করে দেয়। এই বিষয়টি নিয়েই বিদেশি বিজ্ঞানীরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
গঙ্গা জলের প্রতি আকর্ষণ
ভারতের পাশাপাশি সারা পৃথিবী, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, এই জল নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা চলছে। বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা একাডেমিয়া, যা লক্ষ লক্ষ বৈজ্ঞানিক পত্রিকা এবং জার্নাল প্রকাশ করে, তারা গঙ্গা জল নিয়ে গোপন রহস্য উন্মোচন করতে আগ্রহী। গঙ্গা জল নিয়ে এই মহা-আকর্ষণ ইউটিউব এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গঙ্গা সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবন প্রচেষ্টা এখন ভারতে সীমিত না হয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বহু আন্তর্জাতিক পর্যটক গঙ্গার জল নিজেদের বাড়িতে রাখতে ইচ্ছুক, যা তারা পবিত্রতা ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখেন। গঙ্গার জলের প্রতি এই আকর্ষণ শুধু ধর্মীয় নয়, এটি এখন একটি সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক উত্তরাধিকার হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।