Tag: goddess kali

goddess kali

  • Kali Puja 2024: নদিয়ার মাজদিয়ার ১১২ বছরের ‘ডাকাতে কালী’র কাহিনি আজও যেন গায়ে কাঁটা দেয়!

    Kali Puja 2024: নদিয়ার মাজদিয়ার ১১২ বছরের ‘ডাকাতে কালী’র কাহিনি আজও যেন গায়ে কাঁটা দেয়!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ডাকাতি করে এসে ডাকাতরা করত মা কালীর পুজোl তাই নাম ডাকাতে কালীl এই পুজোর বয়স ১১২ বছরের মতো l ভীষণ জাগ্রত এই কালী। পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। নদিয়ার মাজদিয়ার ঘোষপাড়ায় এই ডাকাতে কালীতলায় ধুমধাম করে পুজো (Kali Puja 2024) হচ্ছে এবারেও l প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে দারুণ কাহিনিl

    তরতাজা যুবক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, তাঁরা ডাকাতি করবেন

    স্থানীয় শিক্ষক সুকুমার ঘোষের কাছ থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ১১২ বছর আগে ওই গ্রামের মানুষের দিন কাটছিল অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়েl অনেকেই পাচ্ছিলেন না দুবেলা দুমুঠো খাবারl সেই করুণ অবস্থা দেখে ব্যথিত হয়ে পড়লেন গ্রামবাসীরা। ওই গ্রামের কয়েকজন তরতাজা যুবক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, তাঁরা ডাকাতি করবেনl ডাকাতি করেই জোগাড় করবেন গ্রামের মানুষের জন্য খাবারl তখন চলছে কড়া ব্রিটিশ শাসনl আচমকা ওই যুবকেরা খবর পেলেন, ঢাকার দিকে যাচ্ছে ব্রিটিশদের মালবাহী ট্রেনl ওই ট্রেনেই তাঁরা ডাকাতি করার সিদ্ধান্ত নেন। রাত হয়ে গিয়েছে। মাজদিয়ার ইছামতী ব্রিজের ওপর দিয়ে ব্রিটিশদের মালবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল কু-ঝিক ঝিক করেl হাতে লন্ঠনের লাল আলো দেখিয়ে ব্রিজের ওপরই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল ট্রেনটিকেl সময় নষ্ট না করে ট্রেনের বগি থেকে কাপড়ের বান্ডিল বেশ কয়েকটা ফেলে দেওয়া হল নদীর জলেl লুট করা হল খাদ্যসামগ্রীওl এরপর ডাকাতরা লাল আলো নিয়ে সরে যেতেই ট্রেন ছাড়ে। ট্রেন বেরিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই খবর পৌঁছে গিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনীর কাছেl শুরু হয়ে গেল খোঁজ-খোঁজl ডাকাতদলের লোকজন আশ্রয় নিয়েছিলেন জঙ্গলেl ব্রিটিশ বাহিনী নদীতে ফেলা কাপড়ের বান্ডিলের হদিশ পায়নি l সেই কাপড় তুলে ও লুট করা খাদ্যসামগ্রী ওই ডাকাতেরা গ্রামের মানুষের মধ্যে বিলি করেন। কিন্তু যারা করেছে এই কাজ, তাদের সন্ধানে ব্রিটিশ পুলিশদের খোঁজখবর চলছিল কড়াভাবেইl

    ‘মা, তুমি বাঁচিয়ে দাও, আমরা তোমার পুজো দেব’ (Kali Puja 2024)

    ডাকাতে কালীপুজো কমিটির সভাপতি সুমন ঘোষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ওই ডাকাতদলে ছিলেন দুলাল প্রামাণিক, হেমন্ত বিশ্বাস, ভরত সর্দার, কৃত্তিবাস মিত্র, অবিনাশ ক্যারিয়া, গিরীন্দ্রনাথ ঘোষ নামে কয়েকজন যুবকl ব্রিটিশবাহিনীর কাছে ধরা পড়ার ভয়ে জঙ্গলেই কাটতে লাগল তাঁদের সময়l সেই সময় তাঁরা স্মরণ করেছিলেন মা কালীকেl বলেছিলেন, ‘মা, তুমি বাঁচিয়ে দাওl আমরা তোমার পুজো দেবl ‘অলৌকিকভাবেই সেবার তাঁদের সন্ধান পায়নি বৃটিশের পুলিশl ফিরে যেতে হয় তাদেরl ব্রিটিশবাহিনীর ফিরে যাওয়ার পরদিনই ছিল অমাবস্যা,কালীপুজোl জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি বেল ও নিমগাছের পাশেই বেদি বানিয়ে ডাকাতরা করেছিলেন মা কালীর পুজোর আয়োজনl

    ডাকাতি করা জিনিসপত্র তাঁরা বিলিয়ে দিতেন

    জোর করে ভূদেব মালাকার নামে একজন প্রতিমাশিল্পীকে ধরে এনে ঠাকুর বানানো হলl গ্রামের চক্রবর্তী পরিবারের লোককে দিয়ে বাধ্য করানো হল পুজো করতেl প্রতিমা বানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে রং করিয়ে পাটে তোলা হলl সেই সময়ের ডাকাত হেমন্ত বিশ্বাসের পরিবারের সদস্য সুনীল বিশ্বাসের কাছ থেকে জানা যায় সেদিনের অনেক কাহিনি-ইl যদিও সেদিন যাঁরা ডাকাত বলে পরিচিত ছিলেন, তাঁদের মাজদিয়ার ঘোষপাড়ার মানুষ সম্মানের চোখেই দেখেন বলে জানালেন প্রাক্তন শিক্ষক সুকুমার ঘোষ। তাঁদের বক্তব্য, ‘ওঁরা ডাকাতি করতেন ঠিকই, তবে কোনও দিন মানুষ খুন করেননিl শুধু তাই নয়, ডাকাতি করা জিনিসপত্র তাঁরা বিলিয়ে দিতেন গ্রামের মানুষের মধ্যেইl তাঁরাই আবার ডাকাতির টাকা-পয়সা দিয়ে করতেন মায়ের পুজোl তাই এখানে মা কালী ডাকাতে কালী বলেই পরিচিতl যদিও সেদিনের সেই ডাকাতদের পরিবারের উত্তরসূরীরা কেউ শিক্ষক, কেউ পুলিশে, কেউ সেনাবহিনীতে কাজ করেনl ডাকাত হেমন্ত বিশ্বাসের পরিবারের সদস্য সুনীল বিশ্বাস একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছরে অন্য সময় তাঁরা ডাকাতি না করলেও ডাকাতি ছিল মাকে স্মরণ করার একটা পন্থা। তাইতো কালীপুজোর আগে ওঁদের ডাকাতি করা চাই-ইl নইলে যে মায়ের পুজো (Kali Puja 2024) হবে নাl

    কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি, ট্রেজারিতেও ডাকাতি

    একবার ডাকাতি আটকাতে পুলিশ (Nadia) ওঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখল সন্দেহের বশে l থানার সামনে চাদর-কম্বল মুড়ি দিয়ে ওঁরা ষোল-সতেরো জন শুয়ে থাকলl পরদিনই কালীপুজোl কী হবে? অনেক রাত হয়ে গিয়েছেl গ্রামের কয়েকজন পুলিশের নজর এড়িয়ে ওঁদের চাদর-কম্বলের তলায় আশ্রয় নিলl ওঁরা বেড়িয়ে গেলেন ডাকাতি করতেl ডাকাতি সেরে ডাকাতির মালপত্র এক জায়গায় রেখে ওঁরা নিজেদের জায়গায় ফিরে এসে কম্বলের তলায় শুয়ে পড়েl যারা আগে থেকে ছিল, তারা বেরিয়ে আসেl পুলিশ বুঝতে পারেনিl পরদিন ওঁরা ছাড়া পেয়ে মায়ের পুজো দিলেনl বাকি সামগ্রী গ্রামের মানুষদের বিলিয়ে দেনl আসলে ওঁরা সব সময়ই মাকে স্মরণ করতেনl ডাকাতি করতেন গরিব মানুষদের জন্যl জানা যায়, ওঁরা কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি, ট্রেজারিতেও ডাকাতি করেছেনl

    ‘কথা দে, আর তোরা ডাকাতি করবি না’ (Kali Puja 2024)

    বাংলাদেশের দর্শনাতে একবার ডাকাতি করতে যাওয়ার পর ঘটেছিল একটা অদ্ভুত ঘটনাl ওইখানেই কর আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন যে রানি, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ডাকাতদল হানা দিয়েছেl এখান থেকে ডাকাতরা ডাকাতি করতে গিয়ে অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হন। দেখেন, ঢোকার মুখে যেন স্বয়ং মা দাঁড়িয়েl যিনি বলেন, তোরা কথা দে, আর তোরা ডাকাতি করবি নাl আসলে ওঁদের শিক্ষা দিতে ওই রানি নিজেই নগ্ন হয়ে মা কালীর রূপ নিয়েছিলেনl হ্যাঁ, সেদিনের পর থেকে ওঁরা ডাকাতি বন্ধ করে দেনl ‘পরবর্তীকালে গ্রামের ঘোষপাড়ায় চাঁদা তুলে মায়ের মন্দির গড়ে তোলেনl আজও ডাকাতদের সেই কালী-ই ডাকাতে কালী নামে পুজো হয়ে আসছেl আর যেখানে নিমগাছ তলায় (Nadia) প্রথম কালীপুজো করেছিলেন ডাকাতরা, সেই থানে গ্রামের মহিলারা আজও সকাল-সন্ধ্যায় পূজা দেন ভক্তি ভরে। এই কালী এখানকার মানুষের কাছে অত্যন্ত জাগ্রতl বহু মানুষ এখানে মায়ের পুজো দেনl পুজোর দিন হয় পাঁঠা বলিl

    জল-বাতাসা সহ মাকে মিষ্টিমুখ

    প্রথা মেনে ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন কাঁধে করে পুরো মাজদিয়া বাজার ঘুরে ডাকাতে কালীকে বিসর্জন করা হত। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এখন টানা গাড়িতে করে বিসর্জিত হয় ডাকাতে কালী মাথাভাঙা নদীতে। কালী মা বাজারের মধ্যে প্রতিটি দোকানের সামনে পৌঁছানো মাত্রই দোকানদাররা জল-বাতাসা সহ মাকে মিষ্টিমুখ করান। শোভাযাত্রায় হাজার হাজার পুরুষ-মহিলা পা মেলান। বলা যেতেই পারে, ডাকাতে কালী এখন এলাকার মানুষের কাছে একটা আবেগ (Kali Puja 2024)।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: শিকড়ের ঝাড়ের মধ্যে গুহাই এখানে মন্দির! ছিল রঘু ডাকাতের প্রধান আস্তানা

    Kali Puja 2024: শিকড়ের ঝাড়ের মধ্যে গুহাই এখানে মন্দির! ছিল রঘু ডাকাতের প্রধান আস্তানা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মূর্তি নেই। অশ্বত্থ গাছ-ই কালী রূপে পূজিতা হন। বারাসতের অন্যতম পুরানো কালীমন্দির কাঠোর রোডের ডাকাত কালীবাড়ি। এই ডাকাত কালীবাড়ি  ঘিরে বহু কথা প্রচলিত রয়েছে আজও। আজও কালীপুজোয় (Kali Puja 2024) এখানে ভক্তদের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয়, প্রতিমা তো নেই-ই, নেই কোনও পুরোহিতও৷ সেখানে কোনও প্রতিমাও নেই। অশ্বত্থ গাছেরও সঠিক বয়স এখন জানা নেই কারও। এখানে এসে মায়ের কাছে মানত করে নমস্কার করে মোমবাতি-ধূপকাঠি জ্বালিয়ে নিজেই পুজো করে যায়।

    মন্দিরের কোনও দরজা নেই (Kali Puja 2024)

    আনুমানিক ৪০০ বছরের পুরানো এই কালীমন্দির। বারাসতের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে এই ডাকাত কালীবাড়ি বর্তমানে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে। স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ বিশ্বাস বলেন, এক সময় রঘু ডাকাত (Raghu dakat) এই মন্দির থেকেই পুজো করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বের হতেন। আবার ডাকাতি করে তাঁর দলবল নিয়ে এই মন্দিরেই ফিরে আসতেন৷ এটাই তাঁর প্রধান আস্তানা ছিল। রঘু ডাকাত সেসময় জমিদারদের বাড়ি ডাকাতি করে গরিবদের বিলিয়ে দিতেন৷ রঘু ডাকাত কখনও গরিবদের ওপর অত্যাচার করতেন না৷ এসব কথা তিনিও শুনেছেন৷ পাশাপাশি আর এক বাসিন্দা সোমনাথ ব্রহ্মচারী জানান এই মন্দিরের কোনও দরজা নেই। যতবারই দরজা লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখা গিয়েছে, সেই দরজা নেই। সবার বিশ্বাস, মা স্বয়ং দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন। তাই দরজার কোনও দরকার পড়ে না এই মন্দিরে।

    এই ডাকাত কালীবাড়ি জাগ্রত

    এক সময় এই এলাকায় মানুষ আসতে ভয় পেতেন৷ গোটা এলাকা জঙ্গলে ঘেরা ছিল৷ রাতে এই রাস্তায় কেউ যাতায়াত করত না৷ বাড়িঘরও তেমন ছিল না এখানে৷ আজ চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। তবে আজও দূর-দূরান্তের মানুষের কাছে এই ডাকাত কালীবাড়ি (Kali Puja 2024) জাগ্রত। মন্দিরটির ছাদ বলতে অশ্বত্থ গাছের শিকড়৷ ইটগুলি রঘু ডাকাত সহ তার দলবলই কাঠের ডাইস বানিয়ে তাতে মাটি দিয়ে সেই সময় তৈরি করেছিল বলেই শোনা যায়৷ তাঁর দাবি, এই ইট দেখলেই বোঝা যায় একেবারে আলাদা। নেই কোনও নম্বর এবং অক্ষর, যা অন্যান্য ইটের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। মন্দির বলতে গাছে শিকড়ের ঝাড়ের মধ্যে গুহা, যার চারিদিকে ইট দিয়ে গাঁথা। আজও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে অন্যতম এই মন্দির।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে দেওয়া হয় পান্তা ভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ!

    Kali Puja 2024: নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে দেওয়া হয় পান্তা ভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না, অতি তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে।” রাজাকে স্বপ্নাদেশ দেওয়ার পরে এতটুকুও বিলম্ব না করে মন্দির তৈরি করেন রাজা। এর পর থেকেই ১৫ ফুট উচ্চতার হাড়িকাঠে ১০৮টি মহিষ বলি দিয়ে শুরু হয় জাগ্রত দেবী মহিষখাগীর বিশেষ পুজো-অর্চনা (Kali Puja 2024)।

    তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা

    নদিয়ার শান্তিপুর শহরের প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন মহিষখাগী কালীমাতার পুজোর ইতিহাস অনন্য। শোনা যায়, এই স্থানে এক তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা হয়। পরবর্তীতে চ্যাটার্জি বংশের কাঁধে পুজোর দায়িত্বভার পড়ে। কিন্তু দেবীর মন্দির না থাকায় স্বপ্নাদেশে মন্দির নির্মাণ করেন স্বয়ং নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। বর্তমানে স্থানীয় বারোয়ারির তত্ত্বাবধানেই হয়ে আসছে এই জাগ্রত কালীমায়ের পুজো। প্রথমদিকে মন্দির ছিল একটি কুঁড়েঘরের আদলে। পুজোটি (Kali Puja 2024) আগে ছিল চ্যাটার্জি বংশের দায়িত্বে, পরে তাঁরা গত হলে বারোয়ারির হাতে দিয়ে যান পুজোর দায়িত্বভার। আগের মন্দির বহু প্রাচীন হয়ে যাওয়ায় এখন মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ হয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায়। শোনা যায়, বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষীখাগী কালীমা’কে। মাকে প্রথম পাটে তোলার সময় থাকে একাধিক নিয়মরীতি। পাটে তোলার পরে মন্দির প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে সেদিন ভোররাতে হয় দধিমঙ্গল। তারপরে অমাবস্যা শুরু হলে বিয়ের রীতি মেনেই পুজো করা হয় দেবীকে। পরের দিন পালন করা হয় বাসি বিয়ের রীতি। বাসি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পূজিত হন মা। পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় মা’কে নিরঞ্জনের জন্য।

    আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে (Kali Puja 2024)

    পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায়, বহু বছর আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে, পরবর্তীতে হয় পাঁঠা বলি। তবে অনেক বছর আগে একবার পুজার্চনা করতে দেরি হয়ে যাওয়াতে বলি উৎসর্গের সময় পেরিয়ে যায়। সেই দিন থেকেই মহিষখাগী কালীমায়ের পুজোতে কোনও রকম বলি উৎসর্গ করা হয় না। সেই থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মহিশখাগী মাতার পুজোতে বলি প্রথা। তবে নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে (Goddess Mahishkhagi) দেওয়া হয় পান্তা ভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ। এই পুজোকে (Kali Puja 2024) কেন্দ্র করে সারা শান্তিপুরবাসী মেতে ওঠেন দীপাবলির আনন্দে। দেবীর নিরঞ্জনের ক্ষেত্র রয়েছে দেবী ও ভক্তদের মেলবন্ধন, ভক্তদের কাঁধে করেই নিরঞ্জনযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় দেবী মহিষখাগীকে। মনের ভক্তি ও মায়ের আবার আগমনীর আহ্বান জানিয়ে চিৎকার করতে থাকেন হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: সম্প্রীতির মেলবন্ধন! কাঁটাতারের বিভাজন কাটিয়ে কালীপুজোয় হিন্দু-মুসলিম একাকার

    Kali Puja 2024: সম্প্রীতির মেলবন্ধন! কাঁটাতারের বিভাজন কাটিয়ে কালীপুজোয় হিন্দু-মুসলিম একাকার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া হাড়িপুকুর গ্রাম। একেবারে বাংলাদেশের শূন্যরেখা লাগোয়া মন্দিরে কালীপুজো করেন হিলির মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এই কালীপুজো (Kali Puja 2024) ঘিরে সাজো সাজো রব গ্রামে। শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সামিল হন সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরাও। শুধুমাত্র ভারতীয় বা বিএসএফ’রা নয়, সীমান্ত লাগোয়া এই পুজোয় মাতেন বাংলাদেশের মানুষও। এমনকী মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণও করেন তাঁরাই। তবে প্রথম থেকেই রীতি মেনে এই পুজো করেন হিন্দু পুরোহিত। কালীপুজোকে ঘিরে সেজে উঠেছে কাঁটাতারের পাশের গ্রাম হাড়িপুকুর। উৎসবের রেশ হাড়িপুকুর সংলগ্ন বাংলাদেশের গ্রামগুলিতেও। দীপাবলির আলোর এই উৎসবে কার্যত মনের আঁধার দূরে সরিয়ে মিলন উৎসবে মেতে ওঠেন দুই বাংলার মানুষ। দেশভাগের পর থেকেই হাড়িপুকুরের সীমান্তের শূন্যরেখার পিলারের পাশেই দেবী দীর্ঘদিন থেকে পূজিত হয়ে আসছেন। তবে এখানে কালীর থানে ঘটপুজোর প্রচলন আজও অব্যাহত।

    পুজো সারা বছরই করেন হিন্দু পুরোহিত (Kali Puja 2024)

    মূর্তি তুলে পুজো হলেও গ্রামবাসীরা এই কালীর থানকে জাগ্রত বলে মানেন। হাড়িপুকুর গ্রামটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম বলে পরিচিত এবং ওপারে বাংলাদেশের গ্রামগুলিও মুসলিম অধ্যুষিত। হিন্দুদের প্রচলিত রীতি মেনে হাড়িপুকুর গ্রামের এই কালীমাতার থানে পুজো সারা বছরই করেন হিন্দু পুরোহিত। কিন্তু কালীর থান এবং যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ করেন ওই গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ (Hindu-Muslim)। সারা বছরই কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি এই গ্রামবাসীরা। বাইরের পুজোয় আনন্দ না করতে পারলেও গ্রামের মধ্যে আলোর এই উৎসবে মেতে ওঠেন। কালীপুজোকে ঘিরে আলোর ঝর্ণাধারায় সেজে ওঠে এপারের হাড়িপুকুর গ্রাম এবং ওপারের বাংলাদেশের বাঘমারা গ্রাম। কালীপুজোর পরদিন পুরনো রীতি অনুযায়ী খিচুড়ি ভোগেরও আয়োজন করা হয়। যে ভোগে অংশগ্রহণ করে সবাই।

    খিচুড়ি বিতরণ অনুষ্ঠান

    হাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকেই হয়ে আসা এই কালীপুজোর (Kali Puja 2024) কয়েকটি দিন এলাকায় জমজমাট পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিদ্যুতের অভাবে প্রথমে মোমবাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর প্রচলন ছিল। কিন্তু বর্তমানে গ্রামে বিদ্যুৎ এসে যাওয়ায় পুজোর কয়েকটি দিনে ছোট ছোট টুনি বাল্বের আলোতে সেজে ওঠে দুই দেশের শূন্যরেখা এলাকা। পুরানো রীতি মেনেই হিন্দুদের দ্বারা এই পুজো চললেও সেখানে অংশ নেন হাড়িপুকুর গ্রামের সমস্ত মুসলিম মানুষ। জাত ভেদাভেদ ও দেশ ভাগাভাগি ভুলে পুজোর দিন ও পুজোর পরের দিন খিচুড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে সামিল হন বাংলাদেশের গ্রামের প্রচুর হিন্দু ও মুসলিম মানুষ।

    সাজো সাজো রব হিলির হাড়িপুকুর গ্রামে (Kali Puja 2024)

    দেশজুড়ে যেখানে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, এরই মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ছে হাড়িপুকুর গ্রাম। এ যেন দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিবেশেও অক্ষুন্ন সেখানকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন। গ্রামের হিন্দু কালীমন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। এখানে এসেই মনে হয় বিদ্রোহী কবি নজরুলের লাইন ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’। আর মাত্র কয়েকদিন তাই এই কালীপুজো ঘিরে সাজো সাজো রব হিলির হাড়িপুকুর গ্রামে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: “কেউ নূপুর পরে দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে”, কালীবাড়ি ঘিরে গা ছমছম করা কাহিনি!

    Kali Puja 2024: “কেউ নূপুর পরে দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে”, কালীবাড়ি ঘিরে গা ছমছম করা কাহিনি!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৭৬৬ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণেন্দু হোতা মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাচীন সয়দাবাদে শিবমন্দির সহ একটি কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত এই মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনও রকম বৈদ্যুতিক আলো জ্বালানো হয় না। এখানে প্রদীপের আলো এবং মোমবাতি জ্বালিয়েই সারা বছর মায়ের পুজো (Kali Puja 2024) হয়। মুর্শিদাবাদ জেলায় চারচালা বৃহত্তম মন্দির বলে এই দয়াময়ী কালীবাড়িকেই মানুষ জানে। কিন্তু এই কৃষ্ণেন্দু হোতা কে? জানা যায়, তিনি কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির নায়েক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন সাধকও। এই মন্দির এবং মায়ের মূর্তি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। দয়াময়ী মন্দিরের (Dayamayee kalibari) সামনের দালানমন্দিরে গ্রহরাজের পুজো হয়। দয়াময়ী মা জাগ্রতা বলে সবাই বিশ্বাস করেন। কৃষ্ণেন্দু হোতার বাড়ি ছিল মায়ের মন্দিরের পিছনে। তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে মায়ের দর্শন পান। শোনা যায়, সে সময় সেখানে মায়ের ছাল রেখে গিয়েছিলেন। তিনি তার পর মাকে এখানে প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে কোনও রকম ঘটে পুজো হয় না। কারণ মা এখানে তাঁর দেহের অংশ ছেড়ে রেখে গিয়েছেন। সে কারণে এখানে মায়ের পুজো হয় দেহে। অমাবস্যার দিন ১২ মাসেই তাঁর পুজো এখানে হয়। বিশেষ আমাবস্যার পুজো হয় কার্তিক মাসে। এই সময় বহু মানুষের সমাগম হয় এই দয়াময়ী কালীবাড়িতে এবং হাজার চার-পাঁচেক লোকের ভোগ রান্না করা হয়।

    জহুরা মায়ের ইচ্ছা (Kali Puja 2024) 

    এ বিষয়ে দয়াময়ী কালীবাড়ির পুরোহিত বলেন, যতক্ষণ মা শিবের উপর দণ্ডায়মান আছেন, ততক্ষণ শক্তি। যেই মা নেমে যাবেন, আর আমাদের শক্তি থাকবে না। এই দয়াময়ী কালীবাড়ির মূর্তি নিয়ে নানান ধরনের ঘটনা উল্লেখিত আছে। কথিত আছে, একবার জহুরা মা এসে সাধনার জন্য জবরদস্তি করেছিলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল, মায়ের আসনে বসে সাধনা করবেন। কিন্তু আমার দাদু বলেছিলেন, “আপনি অবশ্যই সাধনা করতে পারবেন। কিন্তু তার আগে আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।” কী সেই পরীক্ষা? “আমি একটা মালা ওখানে রেখে দিয়ে আসব। সেই মালাটি কোনও রকম স্পর্শ না করে কারও সহযোগিতা না নিয়ে মায়ের গলায় পরাতে হবে।” এই কথা শোনার পর জহুরা মা বলেন, এটা কখনও সম্ভব? তার উত্তরে তিনি বলেন, সম্ভব এবং তিনি তা করেও দেখিয়েছেন। তাঁর দাবি, দাদু বেশ কয়েকবার মায়ের দর্শন পেয়েছেন।

    নূপুরের শব্দ (Dayamayee kalibari)

    তাঁর মুখ থেকে শোনা যাক তেমনই কিছু ঘটনা। তিনি বলে চলেন, “দুপুরবেলায় বাচ্চারা এখানে খেলতে আসত। সে সময় বন্যা হওয়ার কারণে মন্দিরের নীচের চত্বর থেকে জলে পরিপূর্ণ ছিল।। তারা খেলতে এসে দেখে, মন্দিরের সামনে একজন মাথা নিচু করে পড়ে আছে। তার চুলগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাচ্চারা ওই দেখে ভয় পেয়ে ছুটে গিয়ে দাদুকে সমস্ত কথা জানায়। তখন দাদু ছুটে এসে দেখে মায়ের সেই রূপ।” এই দয়াময়ী কালীবাড়ির (Kali Puja 2024) মাকে নিয়ে নানান ধরনের ঘটনা আছে। শোনা যাক আরও একটি ঘটনা। তিনি বুলেন, “দাদুর বন্ধু ঠাকুর-দেবতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। দাদু ওই বন্ধুকে বলেছিলেন, মন্দিরের এই ঘরে তুই যদি থাকতে পারিস এক রাত, তোকে ৫ টাকা দেওয়া হবে এবং পেট ভর্তি রসগোল্লা খাওয়ানো হবে। এই কথা শুনে সেই বন্ধু ওই ঘরে রাতে থাকার জন্য ঢোকেন। দু-দিন পর সেই বন্ধু বাড়িতে আসেন এবং দাদুকে বলেন, আমি আর জীবনে কোনও দিন মন্দিরে রাতের বেলায় প্রবেশ করব না। কী হয়েছে জানতে চাইলে ওই বন্ধু বলেন, আমি যখনই শুতে যাচ্ছি, তখনই দেখা যাচ্ছে কেউ নূপুর পরে আমার দরজা পর্যন্ত এসে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দরজা খুলে দেখা যাচ্ছে, কেউ নাই। এই রকম ঘটনা তিন-চার বার হওয়ার পর ওই বন্ধু নিজেকে সামলাতে না পেরে পাশে কাঠের দরজা টপকে পালিয়ে যান। জানিয়ে দিয়ে যান, তিনি আর জীবনে কোনও দিন এই মন্দিরে থাকবেন না। এই কারণে রাত নটা-দশটার পর এই মন্দিরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

    আমিষ ভোগ (Kali Puja 2024) 

    তিনি জানান, এখানে আগাগোড়া আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। এখানে মায়ের ভোগে মাছ প্রত্যেক দিন লাগবে। মাছবিহীন কখনও ভোগ হবে না। এখানে আমাবস্যার দিন মায়ের বিশেষ দুটি পছন্দের মাছ বোয়াল এবং শোল ভোগে দেওয়া হয়। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2024: বাঘের হাত থেকে বাঁচতে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে শুরু হয়েছিল এই কালীপুজো

    Kali Puja 2024: বাঘের হাত থেকে বাঁচতে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে শুরু হয়েছিল এই কালীপুজো

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাঘের হাত থেকে বাঁচতেই আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই কালীপুজো (Kali Puja 2024)। এখনও রীতি মেনেই হয় এই পুজো। ভৌগোলিক পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গজিয়ে উঠেছিল একটি দ্বীপ, বর্তমানে যার নাম সাগরদ্বীপ। আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে এই দ্বীপ গড়ে উঠেছিল। তৎকালীন সময়ে এই দ্বীপ ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। রুটিরুজির টানে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন এখানে এসে সুন্দরবন থেকে কাঠ সংগ্রহ করতেন। এছাড়াও এই দ্বীপের মধ্যে এসে মধু সংগ্রহ করতেন উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। সেই সময় এই দ্বীপ এত আধুনিক হয়নি। তৎকালীন সময়ে জঙ্গলের হিংস্র জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে একটি বটবৃক্ষের তলায় পুজো-অর্চনা করে জঙ্গলে যেতেন এলাকাবাসী। জঙ্গলের এই নিয়ম দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলে আসছিল। তৎকালীন সময়ে হিংস্র জীবজন্তুর আক্রমণে মৃত্যু হত সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনের। এই বটবৃক্ষের তলায় পুজো-অর্চনা দেওয়ার পর থেকে হিংস্র জীবজন্তুদের আক্রমণের ফলে প্রাণ হারানোর সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে মানুষের বিশ্বাস।

    ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা (Kali Puja 2024)

    এর পর বেশ কয়েকজন উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষ জঙ্গল পরিষ্কার করে এই সাগরদ্বীপেই বসবাস শুরু করেন। এমনই এক অলৌকিক মন্দির রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের ধসপাড়া এলাকায়। এলাকায় এই মন্দির আদি কালীমন্দির নামে পরিচিত। তৎকালীন সময়ে সাগরদ্বীপের এক বাসিন্দা, অমূল্যকুমার পান্ডা স্বপ্নাদেশ পান কালীমাতার। এরপর তিনি ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে মন্দির তৈরি করে দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন। এর পর থেকে ওই মন্দিরে কালীপুজো (Kali Puja 2024) হয়ে আসছে আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ বছর ধরে। গঙ্গাসাগর এলাকায় এই মন্দির আদি কালীমন্দির নামে পরিচিত। এই জাগ্রত কালীমন্দিরে নিজেদের মনস্কামনা জানাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ  ছুটে আসেন পুজো দিতে। প্রতি বছর কালীপুজোর দিন জাঁকজমকের সাথে গঙ্গাসাগরে আদি কালীমন্দিরে পূজিত হন মা কালী।

    মন্দিরের মা খুবই জাগ্রত (Kali Puja 2024)

    প্রতিদিনই এই মন্দিরে নিত্যপুজোর ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল ও শনিবার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত প্রকাশ পন্ডা বলেন, “সাগরদ্বীপ যখন থেকে গড়ে উঠেছিল, তার পর থেকেই এই মন্দিরে কালীমায়ের পুজো (Kali Puja 2024) শুরু হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষ এই মন্দিরে মায়ের সেবা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। বংশপরম্পরায় এখন আমি এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত। এই মন্দিরের মা খুবই জাগ্রত। মায়ের কাছে পুজো দিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ছুটে আসেন। মা করুণাময়ী সবার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এই বটগাছের নীচেই মায়ের মূর্তি ছিল এবং মা একজনকে স্বপ্নাদেশ দেন যে এখানেই তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো করার জন্য। তৎকালীন সময় এই এলাকা ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। আমরা প্রত্যেকদিন বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেতাম (Sundarbans)। কিন্তু মায়ের আশীর্বাদে আমাদের কোনও প্রকার ক্ষতি হয়নি। এই মা খুবই জাগ্রত। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই মায়ের কাছে পুজো দিতে আসেন। কালীপুজোর সময় বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করা হয়।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bipadtarini Puja: বিপত্তারিণী পুজোয় তেরো সংখ্যার বিশেষ তাৎপর্য আছে, কেন জানেন?

    Bipadtarini Puja: বিপত্তারিণী পুজোয় তেরো সংখ্যার বিশেষ তাৎপর্য আছে, কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ বিপত্তারিণী পুজো (Bipadtarini Puja)। দেবী দুর্গার ১০৮ রূপের মধ্যে অন্যতম একটি রূপ হল মা বিপত্তারিণী। যে রূপ আবার সঙ্কটনাশিনী রূপেও পূজিত। 

    পরিবার-সন্তান রক্ষা করতেই বিপত্তারিণী পুজো

    বিপদ থেকে সন্তান ও পরিবারকে রক্ষা করতেই বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja) পুজো করে থাকেন মহিলারা। স্বামী, সন্তান এবং সমগ্র পরিবারের মঙ্গল কামনায় বিবাহিত মহিলারা এই পুজো করে থাকেন। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত এই পুজো করা হয়ে থাকে। সাধারণত, সোজা রথযাত্রা এবং উল্টোরথের মধ্যে যে শনি এবং মঙ্গলবার পড়ে সেই দুই দিনেই পালিত হয় সেই দু’দিনই বিপত্তারিণী ব্রত উত্‍সব। 

    হিন্দুরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। কথিত আছে, এই ব্রত পালন করার সময় দেবীর চরণে উৎসর্গকৃত ‘লাল তাগা’ বা লাল সুতো হাতে বাঁধা হলে বিপদ ধারকাছেও ঘেঁষতে পারবে না। এবছর, ৯ জুলাই মঙ্গলবার এবং ১৩ জুলাই শনিবার পালিত হবে বিপত্তারিণী ব্রত। 

    এই পুজোয় তেরো সংখ্যার তাৎপর্য (Importance of 13)

    এই পুজোর একটা বিশেষ নিয়ম হল সবকিছু ১৩টা করে উৎসর্গ করতে হয় দেবীকে। ব্রতর আচার হিসেবে সব কিছু দিতে হয় তেরোটি করে। যেমন— তেরোটি নৈবেদ্য সাজাতে হয়। ব্রত পালনে লাগে তেরো রকম ফুল, তেরো রকম ফল, তেরোটি পান, তেরোটি সুপুরি, তেরোটি এলাচ। এছাড়া, বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja) ব্রতপালনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে হাতে বাঁধতে হয় লাল ডুরি বা ডোর বা তাগা। এই ডোর তৈরির ক্ষেত্রেও তেরো সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ। তেরো গাছা লাল সুতোর সঙ্গে তেরোটি দূর্বা রেখে তেরোটি গিঁট বেঁধে তৈরি হয় এই পবিত্র তাগা বা ডোর। বিশ্বাস করা হয় যে, এই তাগা হাতে পরলে তাঁকে কোনও বিপদ স্পর্শ করতে পরে না৷ 

    খাবারেও ১৩ সংখ্যা আবশ্যিক

    বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja) পুজোর শেষে সকলেই হাতে ওই ডোর বেঁধে দেওয়া হয়৷ মেয়েরা বাম হাতে ও ছেলেরা ডান হাতে এটি পরেন৷ এটি শুধু ব্রত পালন যিনি করছেন তিনিই যে বাঁধেন তা নয়, পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাঁধেন বিপন্মুক্তির জন্য৷ ব্রতপালনের পর খাবার যা খেতে হয়, সেখানেও ১৩ সংখ্যা রাখা আবশ্যিক৷ মায়েরা প্রসাদ হিসেবে খান, তেরোটি লুচি বা পরটা সঙ্গে তেরো রকমের ফল। চাল-চিঁড়ে-মুড়ি এসব খাওয়া যায় না৷ ফল বা ময়দার রান্না যাই খাওয়া হোক না কেন সেটা ১৩ সংখ্যায় (Importance of 13) গ্রহণ করার কথাই ব্রতে বলা হয়৷ তবে যদি সেটা না হয় তাহলে পুজো মিটে যাওয়ার পর বিজোড় সংখ্যাতেও খাদ্যগ্রহণ করা যায়৷

    বিশ্বাস করা হয়, বিপত্তারিণী পুজো (Bipadtarini Puja) করলে শুধু বিপদই নয় অর্থ সঙ্কট থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এবং ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। তবে, বিপত্তারিণী পুজোর বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা নিয়ম নিষ্ঠা করে পালন করতে হয়। তবে না জেনে এই বিপত্তারিণী পুজো করলেই হতে পারে চরম বিপদ। 

    বিপত্তারিণী পুজোর নিয়মবিধি—

    • বিপত্তারিণী পুজোর আগের ও পুজোর দিন ভুলেও আমিষ খাবার খাওয়া উচিত নয়। 
    • এই দুদিন নিরামিষ খাবার খাওয়া উচিত। এমনকি, বাড়ির সকল সদস্যেরও নিরামিষ আহার গ্রহণ করা উচিত। 
    • যারা ব্রত পালন করবেন, পুজোর দিন চালের জিনিস যেমন ভাত, চিড়ে, মুড়ি একদমই খাওয়া উচিত নয়। 
    • বিপত্তারিণী ব্রত পালনের জন্য ১৩ সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ (Importance of 13)। ১৩টি ফল, ১৩টি ফুল, ১৩টি পান, ১৩টি সুপারি, ১৩টি এলাচ সহ নৈবেদ্যের প্রয়োজন হয়।
    • বিপত্তারিণী পুজোর (Bipadtarini Puja) অন্যতম অঙ্গ হল তাগা বা ডুরি। ১৩টি লাল সুতোয় ১৩টি গিঁট এবং ১৩টি দুর্বা ঘাস দিয়ে ডুরি (চলিত কথায় ডোর) তৈরি করতে হয়।
    • এই ডুরি পুরুষদের ডান এবং মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করতে হয়। বিশ্বাস, এই সুতো বেঁধে রাখলে স্বামী-সন্তানের উপর আসা সমস্ত বিপদ দূর হয়।  
    • পুজো শেষের পর খাদ্য গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও ১৩টি খাবার খেতে হবে, যেমন – ১৩টা লুচি, ১৩ রকমের ফল, ইত্যাদি। 
    • পুজো চলাকালীন পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলবেন না। এর ফলে দেবী রেগে যেত পারে। বাড়িতে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।
    • বিপত্তারিণী পুজোর সময় কিছু ভুল হলে আর্থিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে। 
    • ব্রাহ্মণ দ্বারা আম্রপল্লব-সহ ঘট স্থাপন করে নাম গোত্র সহযোগে পুজা দিতে হয়। পুজোর পরে শুনতে হবে বিপত্তারিণীর ব্রতকথা। যা এই পুজোর অন্যতম অঙ্গ। 
    • বিপত্তারিণী পুজোর সময়ে কাউকে অপমান করবেন না। ভুল করে কোনও মহিলার সম্পর্কে কুরুচিকর কথা বলবেন না। এতে দেবী ক্রুদ্ধ হন।
    • বিপত্তারিণী পুজোর (Bipadtarini Puja) দিন কাউকে চিনি দেবেন না। বিশ্বাস, এদিন চিনি দিলে সংসারে অশান্তি ও আর্থিক সংকট দেখা যায়।
    • কোনও অন্ধকার-অপরিচ্ছন্ন স্থানে বিপত্তারিণী পুজো করবেন না। এতে দেবী রুষ্ট হন এবং ঘরের সুখ-শান্তি নষ্ট হয়।
    • বিপত্তারিণী পুজোর দিন নিকট সদস্য ছাড়া কাউকে টাকা ধার দেবেনও না, নেবেনও না। বিশ্বাস করা হয় যে, এই সময় প্রদত্ত অর্থ ফেরত আসে না।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Bipadtarini Puja: আজ বিপত্তারিণী পুজো, কেন পালিত হয় এই ব্রত, জানুন মাহাত্ম্য

    Bipadtarini Puja: আজ বিপত্তারিণী পুজো, কেন পালিত হয় এই ব্রত, জানুন মাহাত্ম্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ বিপত্তারিণী পুজো (Bipadtarini Puja)। প্রত্যেক বছর আষাঢ় মাসে রথযাত্রা এবং উল্টোরথের মধ্যে যে শনি এবং মঙ্গলবার পড়ে সেই দুই দিনেই পালিত হয় বিপত্তারিণী ব্রত উত্‍সব। কথিত আছে, এই ব্রত পালন করার সময় দেবীর চরণে উৎসর্গকৃত ‘লাল তাগা’ বা লাল সুতো হাতে বাঁধা থাকলে বিপদ ধারকাছেও ঘেঁষতে পারবে না। এবছর, ৯ জুলাই মঙ্গলবার এবং ১৩ জুলাই শনিবার পালিত হবে বিপত্তারিণী ব্রত।

    যিনি বিপদকে তারণ করেন তিনিই বিপত্তারিণী

    দেবাদিদেব মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী, আদি শক্তি হলেন দেবী দুর্গা। অন্যান্য দেবী তাঁরই অবতার বা ভিন্ন রূপ। দেবী দুর্গার ১০৮ রূপের মধ্যে এক রূপ, দেবী বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja)। সঠিক অর্থে বিশ্লেষণ করলে ‘বিপত্তারিণী’ বা ‘সঙ্কটনাশিনী’ দেবীর নাম নয়, উপাধি। যিনি বিপদ তারণ করেন, তিনিই বিপত্তারিণী। আবার সব রকমের সঙ্কটকে বিনাশ করেন, তাই তিনিই সঙ্কটনাশিনী (Maa Kali Sankatnashini)। আসলে, মহামায়ার আলাদা করে কোনও নাম হয় কি? ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ ইনিই। আবার ‘দশমহাবিদ্যা’ও তাঁরই রূপের প্রকাশ।

    স্বামী-সন্তান-পরিবারের মঙ্গল কামনায় বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja)

    বাংলায় ঘরে ঘরে বিবাহিত মহিলারা স্বামী-সন্তান-পরিবারের মঙ্গল কামনায় মা বিপত্তারিণী পুজো করেন। গ্রামাঞ্চলে বিপত্তারিণী পুজো চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর আরাধনা করা হয়। মহিলারা গঙ্গা বা কোনও নদীতে স্নান করে দণ্ডী কাটেন। তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়। বিপত্তারিণী পুজো উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করেন। কিন্তু জানেন কি এই পুজোর মাহাত্ম্য? দেবীর মাহাত্ম্য নিয়ে একাধিক বৃত্তান্ত রয়েছে। দেবীর বিপত্তারিণী রূপ নিয়ে ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণে’ কাহিনীটি বেশ জনপ্রিয়—

    ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণে’ কী বলা হয়েছে?

    কথিত আছে, শুম্ভ-নিশুম্ভ, অসুর ভ্রাতৃদ্বয়ের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে দেবগণ একবার মহামায়ার স্তব করছেন, এমন সময় শিবজায়া পার্বতী সেখানে হাজির হয়ে শুধালেন, “তোমরা কার স্তব করছ গো?” যাঁর স্তব, তিনি স্বয়ংই এ প্রশ্ন করছেন। কিন্তু দেবতারা তাঁকে চিনতে পারলেন না। তখন পার্বতী নিজের স্বরূপ দেখিয়ে বললেন, “তোমরা আমারই স্তব করছ।” এর পরবর্তীতে দেবী শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করেন। দেবতাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করলেন। সেই থেকে বিপত্তারিণী পুজোর (Bipadtarini Puja) উৎস।

    দেবীর মাহাত্ম্য নিয়ে একাধিক বৃত্তান্ত

    এই পুজোর একটি কাহিনি রয়েছে। ব্রতকথা অনুযায়ী, বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজবংশের এক রানির এক নিম্নবর্ণের সখী ছিলেন। তিনি জাতে মুচি। এই মহিলা নিয়মিত গোমাংস খেতেন। রানিও একদিন কৌতূহলী হয়ে গোমাংস খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। প্রথমে তিনি নিমরাজি হন। পরে তিনি রানির আদেশ রক্ষার্থ গোমাংস আনেন। অন্তঃপুরে গোমাংস প্রবেশ করেছে— এই খবর রাজার কাছে পৌঁছে যায়। তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে রানিকে শাস্তি দিতে উদ্যত হন। রানি গোমাংস তাঁর বস্ত্রের আড়ালে লুকিয়ে রেখে বিপত্তারিণী (Bipadtarini Puja) মা দুর্গাকে স্মরণ করতে থাকেন। রানিকে তল্লাশি করে রাজা দেখতে পান তাঁর বস্ত্র আড়ালে গোমাংস নয়, রয়েছে একটি লাল জবা ফুল। লাল জবা কালী পুজোর অন্যতম উপকরণ। মায়ের এই পুষ্প দেখে রাজা তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। রানিকে ক্ষমা করে দেন। মা বিপত্তারিণী দুর্গার কৃপায় রানির বিপদ কেটে গেল। এরপর থেকে রানি নিষ্ঠা-সহকারে বিপত্তারিণীর (Maa Kali Sankatnashini) ব্রত করতে থাকলেন। সেই থেকেই বিপত্তরিণীর পুজো প্রচলিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Rankini Mandir: দক্ষিণ ভারতীয় শিল্পশৈলীতে তৈরি রঙ্কিণী দেবীর মন্দিরে এক সময় নরবলিও হত!

    Rankini Mandir: দক্ষিণ ভারতীয় শিল্পশৈলীতে তৈরি রঙ্কিণী দেবীর মন্দিরে এক সময় নরবলিও হত!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অমর কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিখ্যাত গল্প “রঙ্কিণী দেবীর খড়্গ” আজও বহু মানুষের স্মৃতিতে অম্লান। পশ্চিমবঙ্গের একদম প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের এক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং জাগ্রত মন্দির এই রঙ্কিণী দেবীর মন্দির (Rankini Mandir)। কলকাতার একদম কাছেই, বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ঘাটশিলা। আর এই ঘাটশিলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দির। ঝাড়খণ্ড তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার থেকেও বহু মানুষ আসেন এই মন্দিরে মা রঙ্কিণী দেবীকে পুজো দিয়ে নিজের মনস্কামনা পূর্ণ করার অভিপ্রায়ে।

    মা কালীর এক রূপ? (Rankini Mandir)

    ঘাটশিলা থেকে জাদুগোড়া যাওয়ার পথে জাদুগোড়ার কাছেই পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই মন্দিরের আরাধ্য রঙ্কিণী দেবীকে মনে করা হয় মা কালীর এক রূপ। আবার অনেকেই বলেন, মা রঙ্কিণী হলেন আদিবাসী মানুষের দেবী। কথিত আছে, দৈবাদেশে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। এক সময় রঙ্কিণী দেবীর মন্দিরে নরবলি হত বলেও জানা যায়। ইংরেজ শাসকদের হস্তক্ষেপে সেই জঘন্য প্রথা বন্ধ হয় এবং ঘাটশিলায় অবস্থিত প্রাচীন মন্দির স্থানান্তরিত করে এই জাদুগোড়ায়, আরন্যক পরিবেশে, পাহাড়ের কোলে। বর্তমান মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে দক্ষিণ ভারতীয় শিল্পশৈলীতে। রয়েছে গোপুরম। এই গোপুরমে দেবী রঙ্কিণীর (Rankini Mandir) বিভিন্ন রূপ চিত্রিত করা আছে। মন্দিরের প্রবেশদ্বারের উপরেই রয়েছে দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধের পাথরে খোদাই করা মূর্তি। এখানে একটি পাথরকে দেবী রূপে পুজো করা হয়।

    আর কী কী মন্দির আছে?

    মূল মন্দিরের বাঁ দিকে রয়েছে গণেশ, আর ডান দিকে রয়েছে শিব মন্দির। এছাড়াও এখানে রয়েছে নানা দেব-দেবীর মূর্তি। মন্দিরের কাছেই গাছের ডালে লাল কাপড়ে আচ্ছাদিত করে নারকেল বেঁধে রেখে ভক্তরা মায়ের কাছে মানত করেন। মন্দিরের (Rankini Mandir) আশপাশের পাহাড়ি পরিবেশও অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক।

    যাওয়া ও থাকা-খাওয়া (Rankini Mandir)

    যাতায়াত-রঙ্কিণী মন্দিরে যাওয়ার জন্য আসতে হবে ঘাটশিলা। হাওড়া স্টেশন থেকে যাচ্ছে ইস্পাত এক্সপ্রেস, স্টিল এক্সপ্রেস, হাওড়া-ঘাটশিলা এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন। দূরত্ব প্রায় ২১৫ কিমি। থাকা – খাওয়া-যাঁরা অমলিন প্রকৃতির মাঝে দুটো দিন থাকতে চান, তাঁরা থাকতে পারেন নিকটবর্তী রাত মোহনা নামের একটি অত্যন্ত সুন্দর স্থানে। এখানে রয়েছে “রিসর্ট রাত মোহনা ইন” (ফোন-০৮৪০৯২১১৫৫৫, ০৯৯৩৪৫৮০৮৬০)। অন্যথায় ঘাটশিলা থেকে ঘুরে নিতে পারেন। ঘাটশিলায় আছে জে এন প্যালেস (০৯২৩৪৬৪৩৫৪০), সুহাসিতা রিসর্ট (০৯৭৭১৮৩১৮৭৭) প্রভৃতি। সবকটিতেই রয়েছে খাওয়ার ব্যবস্থা।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Kali Puja 2023: ‘কালী আরাধনা’র পরেই ডাকাতি! জানুন রঘু ডাকাতের হাড় হিম করা গল্প

    Kali Puja 2023: ‘কালী আরাধনা’র পরেই ডাকাতি! জানুন রঘু ডাকাতের হাড় হিম করা গল্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলার কোনও ডাকাত দলের সর্দারের নাম বলুন তো? যে কাউকে এই প্রশ্ন করলে মনের মধ্যে ভেসে ওঠে ‘রঘু ডাকাত’ নাম। ‘রঘু ডাকাত’ নামে কত উপন্যাস, কত গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এক কথায় বোঝাতে গেলে বলতে হয়, এই নামটি একটি ‘মিথ’ হয়ে রয়েছে। তবে জানেন কি রঘু ডাকাত মাত্র একজন ছিল না। বর্ধমান থেকে হুগলি, কলকাতা থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনার জঙ্গলগুলিতে একাধিক রঘু ডাকাতের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রত্যেক রঘু ডাকাত-ই মা কালীর (Goddess Kali) ভক্ত। কালী আরাধনার (Kali Puja) পরেই তারা ডাকাতি করতে যেত।

    ‘রঘু ডাকাত’ সম্পর্কে নানা রোমাঞ্চকর গল্প 

    খগেন্দ্রনাথ মিত্র এবং যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তর লেখা থেকেই ‘রঘু ডাকাত’ সম্পর্কে নানা রোমাঞ্চকর তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, নৈহাটির রঘু ডাকাতের কথা। সে সময় নৈহাটি থানার দারোগা ছিলেন দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দারোগাবাবু অনেক চেষ্টা করেও বাগে আনতে পারছিলেন না রঘু ডাকাতকে। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন, যেভাবেই হোক রঘু ডাকাতকে তিনি ধরবেন। হঠাৎ করেই কিছুদিন পর দারোগাবাবুর কাছে একটি চিরকূট এল। তাতে লেখা রয়েছে, ‘খুব শীঘ্রই আপনার সঙ্গে আমার দেখা হবে দারোগাবাবু’। তলায় লেখা, ইতি আপনার সেবক রঘু‌। এর বেশ কিছুদিন পর এলাকার জমিদারবাবুর নাতির অন্নপ্রাশন। আমন্ত্রিত হয়েও উপস্থিত থাকতে পারেননি দারোগাবাবু। একদিন দুপুরে আহারের পর নিজের চেয়ারে বসে ভাত ঘুম দিচ্ছিলেন তিনি। সে সময় হঠাৎ এক জেলে উপস্থিত হল দুই হাতে দুটো মাছ নিয়ে এবং নিজের ধুতিতে বেঁধে রাখা এক টুকরো কাগজ বের করে দারোগাবাবুকে দিল। যেখানে লেখা ছিল, ‘‘আমার নাতির অন্নপ্রাশনে আপনি আসতে পারেননি, তাই আপনাকে দুটো বড় মাছ পাঠালাম।’’ তলায় ছিল জমিদারবাবুর স্বাক্ষর। বেশ কিছু দিন পর আবার একটি চিরকূট পেলেন দারোগাবাবু‌। তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘আপনার সঙ্গে দেখা করে ভালো লাগল, মাছ দুটো কেমন খেলেন?’’

    মা সারদার পথ আটকেছিলেন রঘু ডাকাত? 

    রঘু ডাকাতের প্রচলিত কাহিনি থেকে জানা যায়, তাঁর বাবাকে নীলকর সাহেবরা হত্যা করেছিল। এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নাকি সে ডাকাত হয় এবং নীলকর সাহেবদের লুট করে তা গরীব মানুষের মধ্যে বিতরণ করত। অর্থাৎ বাঙালির রবিনহুড বলতে গেলে সেটা রঘু ডাকাত-ই। জনশ্রুতি রয়েছে, হুগলির রঘু ডাকাত নাকি একবার সারদা মায়ের পথ আটকেছিল সিঙ্গুরের কাছে। এরপর ভীষণ দর্শনা মা কালী প্রকট হলে, রঘু ডাকাত সারদা মায়ের কাছে ক্ষমা চায়। মাকে রাতে চালকড়াই ভাজা খেতে দেয়।

    রঘু ডাকাতের কালীপুজোয় নরবলি!

    অপর এক রঘু ডাকাত বারাসতের জঙ্গলে থাকত বলে জানা যায়। তার কালীপুজো (Kali Puja) আজও ধুমধাম করে হয়। বারাসত শহর থেকে দু’কিলোমিটার দূরে কাজিপাড়া অঞ্চলে এই পুজো হয়, বটগাছের ঝুরি দ্বারা ঘেরা ভগ্ন এক মন্দিরে। স্থানীয়রা এই কালীকে জাগ্রত বলে মনে করেন। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কেতুগ্রামের অট্টহাস সতীপীঠেও নাকি রঘু ডাকাত কালীপুজো করত। তারপর ডাকাতির উদ্দেশ্যে সংলগ্ন এলাকাগুলিতে অভিযান চালাত। জনশ্রুতি অনুযায়ী, রঘু ডাকাত বৈষ্ণব ছিল। তবুও সে শক্তির উপাসনা করত। সাধক রামপ্রসাদের সঙ্গেও রঘু ডাকাতের সাক্ষাতের কথা প্রচলিত রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে, রঘু ডাকাতের কালীপুজোতে নরবলি হত। তারপরে রঘু ডাকাত ল্যাটা মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে ডাকাতি করতে যেত।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ। 

LinkedIn
Share