Tag: goddess skandamata

goddess skandamata

  • Navaratri 2023: আজ মহাপঞ্চমীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী স্কন্দমাতার পৌরাণিক আখ্যান

    Navaratri 2023: আজ মহাপঞ্চমীর মাহাত্ম্য কী? জানুন দেবী স্কন্দমাতার পৌরাণিক আখ্যান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হল কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পুজো করা হয় নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। কার্তিকের জন্মবৃত্তান্ত এবং মাতা পার্বতীর স্কন্দমাতা হয়ে ওঠার কাহিনি জানতে হলে অপর একটি পৌরাণিক কাহিনি শুনতে হবে (Navaratri 2023)।

    অসুর-দেবতা যুদ্ধ

    পুরাকালে বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিলেন। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে (Navaratri 2023) মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্মপথে চলতে পারেন, সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানসকন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্মকর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহস্থের কর্ম সম্পাদন করতেন।

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।”‌ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমতো বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হল তারক নামের অসুরের‌। 

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- “একমাত্র শিবের বালকপুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে, এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুরকে বধ করতে পারবেন।

    শিব-পার্বতীর বিবাহ

    আয়োজন শুরু হল শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হল। পার্বতী দেবী, মাতা চন্দ্রঘণ্টার রূপধারণ করে অসুরদের বিতাড়িত করলেন। এরপর সুসম্পন্ন হল শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হল কার্তিকের। মাতা পার্বতী তখন হলেন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দ পুরাণে”।

    স্কন্দমাতার বিবরণ

    স্কন্দমাতার অপর নাম কার্তিকেয়। ত্রিনয়নী মাতার কোলে তাঁর শিশুপুত্রকে দেখতে পাই আমরা। এই শিশুপুত্রই হলেন স্কন্দ বা কার্তিক। স্কন্দমাতা স্নেহ, মায়া, সন্তান বাৎসল্য-এর প্রতীক। মাতার ভক্তরা মনে করেন দেবীর পুজো করলে সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়, জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর হয়, অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। দেবী পদ্মাসনা। তাঁর বাহন সিংহ। তাঁর দুই হাতে দুটি পদ্ম। একহাতে কার্তিককে ধরে থাকেন। অপর হাত বর-মুদ্রার ভঙ্গিতে থাকে। যার দ্বারা ভক্তদের উদ্দেশে সর্বদাই আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। স্কন্দমাতার পুজো করলে শত্রু বিনাশ হয়, শক্তি বৃদ্ধি হয়, এমনটাই মনে করেন ভক্তরা। স্কন্দমাতার পুজোতে সাদা রঙের পোশাক পরলে মাতা প্রসন্ন হন, এমনটাই প্রচলিত ধারণা রয়েছে। দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা নৈবেদ্যতে কলা বা কদলী ভোগ দেন।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Navratri 2022: মহা পঞ্চমীর মাহাত্ম্য: জানুন তারকাসুর বধ ও স্কন্দমাতার আখ্যান

    Navratri 2022: মহা পঞ্চমীর মাহাত্ম্য: জানুন তারকাসুর বধ ও স্কন্দমাতার আখ্যান

    শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: পুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেব মহাদেবের পুত্র হলেন দেব সেনাপতি কার্তিক। তাঁর অপর নাম স্কন্দ। স্কন্দমাতা মানে হলো কার্তিকের মাতা। দেবী পার্বতীর এই রূপেরই পূজা করা নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন। কার্তিকের জন্মবৃত্তান্ত এবং মাতা পার্বতীর স্কন্দমাতা হয়ে ওঠার কাহিনী জানতে হলে আমাদের অপর একটি পৌরাণিক কাহিনী শুনতে হবে।

    পুরাকালে বজ্রাঙ্গ নামে এক অসুর রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন দিতির পুত্র। দেবতাদের রাজা ইন্দ্রকে বজ্রাঙ্গ সিংহাসনচ্যুত করে, বন্দি করেন। দেবতাদের প্রতি বজ্রাঙ্গের এই রোষ আসলে ছিল তাঁর প্রতিশোধ। কারণ ইতিপূর্বে দিতির অসংখ্য পুত্রকে মানে বজ্রাঙ্গের নিজ ভাইদের দেবতারা হত্যা করেছিল। বজ্রাঙ্গের হাতে বন্দি ইন্দ্রকে মুক্ত করতে আসেন ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনি। কাশ্যপ মুনি ছিলেন বজ্রাঙ্গের পিতা, অর্থাৎ দিতির স্বামী। ব্রহ্মা এবং কাশ্যপ মুনির অনুরোধে বজ্রাঙ্গ তখনকার মতো ইন্দ্রকে মুক্ত করেন। 

    দৈত্য হয়েও এমন দয়ার ভাব বজ্রাঙ্গের মধ্যে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মা তাঁকে বরদান করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। বজ্রাঙ্গ তখন তপস্বী হওয়ার বর প্রার্থনা করলেন এবং বাকি জীবন যেন তিনি ধর্ম পথে চলতে পারেন সেই আশীর্বাদ ব্রহ্মার কাছে চাইলেন। ব্রহ্মা তাঁর মানস কন্যা বরাঙ্গীর সঙ্গে বজ্রাঙ্গের বিবাহ দিলেন। বজ্রাঙ্গ এবং বরাঙ্গী বনের মধ্যে কুটির বানিয়ে ধর্ম কর্ম করতে লাগলেন। বজ্রাঙ্গ তপস্যায় রত থাকতেন এবং বরাঙ্গী গৃহস্থের কর্ম সম্পাদন করতেন। ‌

    আরও পড়ুন: জানুন মাতা কুষ্মান্ডার কাহিনী, মহাচতুর্থীর দিন আরাধিতা হন দেবী

    একদিন দেবরাজ ইন্দ্র ওই কুটিরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বরাঙ্গীকে দেখতে পেয়ে পুরনো অপমানের বদলা নিতে চাইলেন। কখনও বানর সেজে, কখনও ভেড়া বা কখনও সাপ হয়ে কুটির লন্ডভন্ড করতে লাগলেন। ক্রন্দনরত অবস্থায় বরাঙ্গী তাঁর স্বামী বজ্রাঙ্গকে এসব বিষয়ে বললে, বজ্রাঙ্গ ব্রহ্মাকে স্মরণ করলেন। ব্রহ্মা প্রকট হয়ে বর দিতে চাইলে বজ্রাঙ্গ বললেন, “আমাকে এমন পুত্র দিন, যে দেবতাদের উপর অত্যাচার করতে সমর্থ হবে।”‌ ব্রহ্মা বজ্রাঙ্গের মনোমত বরদান করলেন। বরাঙ্গীর গর্ভে জন্ম হলো তারক নামের অসুরের‌। 

    পরবর্তীতে তারকাসুরের উপর ব্রহ্মার বরদান ছিল যে- “একমাত্র শিবের বালক পুত্র ছাড়া, কারও হাতে তিনি হত হবেন না।” ব্রহ্মার বরদানে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন তারকাসুর। কারণ তিনি জানতেন শিব কখনও বিবাহ করবেন না এবং ত্রিভুবনে ব্রহ্মার বরদানে তাঁকে হত্যা করতে পারে এমন ক্ষমতা কোনও দেবতা, মানুষ বা জীবজন্তুর নেই। তারকাসুর দেবলোক নিজের দখলে আনেন। দেবরাজ ইন্দ্র সিংহাসনচ্যুত হলেন। বিতাড়িত দেবতারা বুঝতে পারলেন শিবের বিয়ে দিতে পারলে তবে তাঁর পুত্রই তারকাসুর কে বধ করতে পারবেন। 

    আরও পড়ুন: নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজিতা হন মাতা চন্দ্রঘন্টা, জানুন তাঁর পৌরাণিক কাহিনী

    আয়োজন শুরু হলো শিব-পার্বতীর বিবাহের। সেখানেও তারকাসুরের আক্রমণ হলো। পার্বতী দেবী, মাতা চন্দ্রঘন্টা রূপধারণ করে অসুরদের বিতাড়িত করলেন। এরপর সুসম্পন্ন হলো শিব-পার্বতীর বিবাহ। জন্ম হলো কার্তিকের। মাতা পার্বতী তখন হলেন স্কন্দমাতা অর্থাৎ কার্তিক জননী। দৈববাণী পেয়ে দেবরাজ ইন্দ্র কার্তিককে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এক প্রবল যুদ্ধে কার্তিকের হাতে তারকাসুর হত হলেন। দেবতারা তাঁদের হৃত স্বর্গরাজ্য পুনরায় নিজেদের দখলে আনলেন। এমনটাই লেখা রয়েছে “স্কন্দ পুরাণে”।

    স্কন্দমাতার অপর নাম কার্তিকেয়। ত্রিনয়নী মাতার কোলে তাঁর শিশু পুত্রকে দেখতে পাই আমরা। এই শিশু পুত্রই হলেন স্কন্দ বা কার্তিক। স্কন্দমাতা স্নেহ, মায়া, সন্তান বাৎসল্য এর প্রতীক। মাতার ভক্তরা মনে করেন দেবীর পুজো করলে সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়, জীবনের সকল বাধাবিঘ্ন দূর হয়, অশুভ শক্তি বিনষ্ট হয়, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, সমৃদ্ধি তে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। দেবী পদ্মাসনা। তাঁর বাহন সিংহ। তাঁর দুই হাতে দুটি পদ্ম। একহাতে কার্তিককে ধরে থাকেন। অপর হাত বর-মুদ্রার ভঙ্গিতে থাকে। যার দ্বারা ভক্তদের উদ্দেশে সর্বদাই আশীর্বাদ বর্ষিত হয়। 

    স্কন্দমাতার ধ্যানমন্ত্র হলো –

    “সিংহাসনগতা নিত্যং
    পদ্মাশ্রিত করদ্বয়া।
    শুভাদাস্তু সদা দেবী
    স্কন্দমাতা যশস্বিনী”।।

    স্কন্দমাতার পুজো করলে শত্রু বিনাশ হয়, শক্তি বৃদ্ধি হয় এমনটাই মনে করেন ভক্তরা। স্কন্দমাতার পুজোতে সাদা রঙের পোশাক পরলে মাতা প্রসন্ন হন এমনটাই প্রচলিত ধারণা রয়েছে। দেবীর আশীর্বাদ পেতে ভক্তরা নৈবেদ্যতে কলা বা কদলী ভোগ দেন।

LinkedIn
Share