Tag: GST reform

  • Sin Tax: দেশজুড়ে চর্চা, এই পণ্যগুলি কিনলে বইতে হবে বাড়তি ‘পাপের বোঝা’! কী এই ‘সিন ট্যাক্স’?

    Sin Tax: দেশজুড়ে চর্চা, এই পণ্যগুলি কিনলে বইতে হবে বাড়তি ‘পাপের বোঝা’! কী এই ‘সিন ট্যাক্স’?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১৭ সালে চালু হয় পণ্য ও পরিষেবা কর, যাকে বলা হয় জিএসটি। ৮ বছর পর বুধবার, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জিএসটি কাউন্সিল করের স্ল্যাব পুনর্বিন্যাস করেছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নতুন জিএসটি হার ঘোষণা করেছেন। নতুন জিএসটি কর হারের ঘোষণা হওয়া ইস্তক দেশে একজোড়া শব্দবন্ধ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। তা হচ্ছে ‘সিন ট্যাক্স’ (Sin Tax)।

    জিএসটি কাউন্সিলের ঘোষণা অনুযায়ী, এ বার থেকে দু’টি হারে জিএসটি কার্যকর হবে— ৫ এবং ১৮ শতাংশ। ১২ এবং ২৮ শতাংশের যে জিএসটি স্তর ছিল, তা তুলে দেওয়া হল। এছাড়া, কিছু পণ্যকে রাখা হয়েছে ৪০ শতাংশ হারের বিশেষ তালিকায়। এই বিশেষ কর হারের তালিকাকে বলা হচ্ছে ‘সিন অ্যান্ড লাক্সারি ট্যাক্স’ (Sin Tax) আর সেই তালিকায় থাকা পণ্যগুলিকে বলা হচ্ছে ‘সিন অ্যান্ড লাক্সারি গুডস’।

    ‘সিন ট্যাক্স’-এর বাংলা অর্থ করলে বোঝায় ‘পাপের কর’। অর্থাৎ, অর্থনৈতিক ও নীতিগতভাবে এই শব্দটি একটি নির্দিষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কারণ, মনে করা হয়, ব্যক্তি বা সমাজের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে—এমন জিনিসগুলিকে এই করের আওতায় আনা হয়। অর্থাৎ, ‘সিন ট্যাক্স’-এর আওতায়। সাম্প্রতিক সময়ে জিএসটি কাউন্সিলের সভায় এই ‘সিন ট্যাক্স’-এর প্রাসঙ্গিকতা ফের একবার উঠে এসেছে, বিশেষত এই করের মাধ্যমে রাজস্ব তৈরি এবং এই করের আওতায় থাকা জিনিসগুলি কীভাবে যেকোনও মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতবর্ষের (India) ক্ষেত্রে ‘সিন ট্যাক্স’ (Sin Tax) কিভাবে কাজ করে, তা বোঝা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়েই আমাদের প্রতিবেদন।

    ‘সিন ট্যাক্স’ আরোপিত করা হচ্ছে এমন কতগুলি পণ্য

    শুরুর কথাতেই যেমন বলা হয়েছে, নাগরিকদের স্বাস্থ্য, সমাজ বা পরিবেশের উপর ক্ষতিকারক বলে বিবেচিত হয় এমন পণ্য ও পরিষেবার উপর আরোপিত একটি করকেই ‘সিন ট্যাক্স’ (Sin Tax) বলা হয়। এগুলি সাধারণভাবে বেশিরভাগটাই অপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে অথবা সামাজিক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সমাজের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এবার কয়েকটি উদাহরণ সহ বোঝা যাক—যেমন, ‘সিন ট্যাক্স’-এর আওতায় পড়ছে তামাক, সিগারেট, মদ্যপান, পান মসলা, জুয়া, যেকোনও ধরনের বাজি। এর পেছনে উদ্দেশ্য হল—এই করের আওতায় থাকা জিনিসগুলি যাতে মানুষ কম ব্যবহার করেন এবং সেগুলির প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমে যায়, সেইজন্যই সরকার এগুলির ওপর বেশি কর আরোপ করছে, জিএসটি বেশি নিচ্ছে।

    বর্তমানে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের উপরে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ জিএসটি রয়েছে

    দেশে বর্তমানে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের উপরে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ জিএসটি রয়েছে। ভারতে সিগারেটের উপরে মোট ৫২ শতাংশ কর চালু রয়েছে। বিড়ির উপরে ২২ শতাংশ কর বর্তমানে চালু রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভারত। সেই অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্যে ৭৫ শতাংশ কর আরোপ করতে পারে ভারত সরকার। ৪০ শতাংশ জিএসটি হওয়ায় এই করের হার ৬৪ শতাংশ হবে। উদ্দেশ্য স্পষ্ট—দাম যত বাড়বে, তত মানুষ এগুলি কিনতে চাইবেন না। বলা হচ্ছে, ভারতবর্ষের মতো দেশে জনস্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ আজ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই চ্যালেঞ্জের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে—তামাক ব্যবহার, অ্যালকোহল সেবন এবং জীবনযাত্রা-সম্পর্কিত নানা স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সমাজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে কী বলা হল?

    একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে—তামাক ব্যবহারের ফলে ভারতে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এও জানিয়েছে যে, প্রতিবছর শুধুমাত্র তামাক ব্যবহারের কারণেই ভারতে প্রায় ১৩.৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। সারা পৃথিবীর মধ্যে ভারতের নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহার করেন। তামাক উৎপাদনকারী দেশ হিসেবেও ভারত সারা পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

    ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ২৬ কোটি মানুষ তামাক সেবন করে

    ২০১৬-১৭ সালের ‘গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ইন্ডিয়া’-র তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ভারতে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ২৬ কোটি মানুষ তামাক (Sin Tax) ব্যবহার করেন। ভারতে তামাক ব্যবহারের সবচেয়ে প্রচলিত ধরন হল ‘ধোঁয়াবিহীন তামাক’। এর মধ্যে পড়ে—খৈনি, গুটখা, পান তামাক, জর্দা ইত্যাদি। আর ধোঁয়াযুক্ত তামাকের মধ্যে পড়ে—বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা ইত্যাদি। এই ধরনের ‘সিন ট্যাক্স’ আরোপ করে মোদি সরকার অতিরিক্ত তামাক সেবনকে রুখতে চাইছে এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত রাজস্ব সুরক্ষিত করতে চাইছে।

    এক নজরে ‘সিন অ্যান্ড লাক্সারি গুডস’-এর তালিকা

    ১) তামাকজাত পণ্য, ২) গুটখা, ৩) পানমশলা, ৪) জর্দা, ৫) অন্যান্য তামাকজাত পণ্য, ৬) সিগারেট, ৭) সিগার/চুরুট, ৮) মিষ্টি যুক্ত ঠান্ডা পানীয়, ৯) কোল্ড ড্রিঙ্কস, ১০) ক্যাফিন যুক্ত কোল্ড ড্রিঙ্কস, ১১) লাক্সারি গাড়ি, ১২) ১২০০ সিসির বেশি ইঞ্জিন ক্যাপাসিটির পেট্রল গাড়ি, ১৩) ১৫০০ সিসির বেশি ইঞ্জিন ক্যাপাসিটির ডিজেল গাড়ি, ১৪) ৩৫০ সিসির উপরে মোটরবাইক, ১৫) ইয়ট, ১৬) হেলিকপ্টার, প্রাইভেট এয়ারক্রাফট, ১৭) কয়লা, লিগনাইট, পিট, ১৮) অনলাইন গ্যাম্বলিং ও গেমিং সার্ভিস

  • GST 2.0: জিএসটি-তে বড় পরিবর্তন! কেন্দ্রের প্রস্তাবে সায় মন্ত্রিগোষ্ঠীর, কমতে পারে বহু জিনিসের দাম

    GST 2.0: জিএসটি-তে বড় পরিবর্তন! কেন্দ্রের প্রস্তাবে সায় মন্ত্রিগোষ্ঠীর, কমতে পারে বহু জিনিসের দাম

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির খবর। দেশে পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি (GST) ব্যবস্থায় আসতে চলেছে বড় পরিবর্তন। বর্তমান চার-স্তরীয় কর কাঠামোর বদলে দুটি প্রধান স্তরে জিএসটি আনার যে প্রস্তাব কেন্দ্র দিয়েছিল, তা গ্রহণ করেছে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠী (GoM)। এই নতুন ব্যবস্থা চালু হলে দৈনন্দিন ব্যবহারের বহু জিনিসের দাম কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে, যা মধ্যবিত্ত এবং সাধারণ মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত এই মন্ত্রিগোষ্ঠী কেন্দ্রের প্রস্তাবে সায় দেওয়ায় জিএসটি ২.০-এর (GST 2.0) পথ প্রশস্ত হল। এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হল কর ব্যবস্থাকে আরও সহজ, সরল এবং স্বচ্ছ করে তোলা, যাতে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ উভয়েরই সুবিধা হয়।

    নতুন জিএসটি কাঠামো

    জিএসটি-র এই নতুন ব্যবস্থায় মূলত দুটি করের হার থাকবে ৫% এবং ১৮%। বর্তমানে দেশে চারটি প্রধান জিএসটি হার রয়েছে: ৫%, ১২%, ১৮% এবং ২৮%। নতুন কাঠামোয় ১২% এবং ২৮% -এই দুটি স্তরকে পুরোপুরি তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে করের হিসাব রাখা এবং রিটার্ন ফাইল করা অনেক সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কোন জিনিস কোন স্তরে

    যে সমস্ত পণ্যের উপর বর্তমানে ১২% হারে জিএসটি (GST 2.0) নেওয়া হয়, তার প্রায় ৯৯% জিনিসই নতুন ব্যবস্থায় ৫% করের আওতায় চলে আসবে। এর মধ্যে ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, পোশাক, জুতো এবং অন্যান্য গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকতে পারে। একইভাবে, যে সমস্ত পণ্যের উপর এখন ২৮% কর বসে, তার প্রায় ৯০% জিনিসপত্র ১৮%-এর স্তরে নেমে আসবে। এর ফলে বড় টেলিভিশন, ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

    ক্ষতিকর ও বিলাসবহুল পণ্য

    সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত পণ্যে করের বোঝা কমানো হলেও, ক্ষতিকর এবং অতি-বিলাসবহুল কিছু পণ্যের উপর বাড়তি কর চাপানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তামাকজাত দ্রব্য, অ্যালকোহল, বিলাসবহুল গাড়ি ইত্যাদি। এই ধরনের ‘সিন গুডস’ বা ক্ষতিকর পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত কর বসানো হতে পারে। এর উদ্দেশ্য হল একদিকে যেমন এই সব পণ্যের ব্যবহার কমানো, তেমনই সরকারের রাজস্ব আদায়ও নিশ্চিত করা।

    সাধারণ মানুষের জীবনে কী প্রভাব

    এই প্রস্তাব আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলা জিএসটি (GST Reform) কাউন্সিলের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে কেন্দ্র ও সব রাজ্যের মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। এই পদক্ষেপকে স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত “নেক্সট-জেনারেশন জিএসটি সংস্কার”-এর প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই নতুন জিএসটি ব্যবস্থা চালু হলে সাধারণ মানুষের জীবনে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে অর্থনৈতিক মহল। এই হার সংস্কার বিষয়ক মন্ত্রীগোষ্ঠীতে কেরালা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও কর্ণাটকের মন্ত্রীরা রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই সংস্কার থেকে সম্ভাব্য রাজস্ব হ্রাস নিয়ে বেশ কিছু রাজ্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই কারণে, রাজ্যগুলি কেন্দ্রের কাছে ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা দাবি করেছে। উত্তরপ্রদেশের অর্থমন্ত্রী সুরেশ খান্না বলেন, ১২% ও ২৮% করের স্তর তুলে দেওয়ার প্রস্তাব সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে। তিনি জানান, ৫-৭টি পণ্যই মাত্র উচ্চ করের আওতায় থাকবে।

    মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও সহজ কর ব্যবস্থা

    জিএসটি-র (GST Reform) এই পরিবর্তনে দৈনন্দিন ব্যবহারের বহু জিনিসের দাম কমায় মূল্যবৃদ্ধির চাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। বিশেষত, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির মাসিক খরচের বোঝা কমবে। করের স্তর কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের জন্য জিএসটি রিটার্ন ফাইল করা এবং অন্যান্য নিয়মকানুন মেনে চলা আরও সহজ হবে। এর ফলে দেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হবে। দুটি মাত্র করের হার থাকায় পুরো ব্যবস্থাটি আরও স্বচ্ছ হবে এবং কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, এই সংস্কারের ফলে সাধারণ মানুষ, কৃষক, মধ্যবিত্ত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগপতিরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। এখন মন্ত্রিগোষ্ঠীর এই সুপারিশ জিএসটি কাউন্সিলের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেখানে সবুজ সংকেত পেলেই দেশজুড়ে চালু হবে ‘জিএসটি ২.০’, যা ভারতীয় অর্থনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

LinkedIn
Share