তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বর্ষায় প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু তাপমাত্রার পারদ নামলে শক্তি ক্ষয় হয়, দাপটও কমে। এমনটাই গত কয়েক বছর হয়ে এসেছে। কিন্তু এই বছরের ছবি বেশ ব্যতিক্রম। রাজ্যে শীত জাঁকিয়ে বসছে। কিন্তু তারপরেও কমছে না ডেঙ্গির (Dengue) প্রকোপ। বরং ডেঙ্গি সংক্রমণের পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসক মহল।
কী বলছে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট?
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন সপ্তাহে শুধু কলকাতাতেই প্রায় ৩৫০ জনের ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ হয়েছে। নদীয়া, মুর্শিদাবাদের মতো জেলার পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। চলতি বছরে রাজ্যের সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত জেলা মুর্শিদাবাদ। ওই জেলার সর্বশেষ রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে শুধু মুর্শিদাবাদ জেলাতেই প্রায় পাঁচশোর বেশি মানুষ ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরে মুর্শিদাবাদ জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলির পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সূত্রের খবর, শীতেও রাজ্যের সর্বত্র ডেঙ্গির মারাত্মক প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। চলতি বছরে রাজ্যে কয়েক লাখ মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। চলছে মৃত্যু মিছিল। অন্যান্য বছরে শীতে ডেঙ্গির দাপট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু চলতি বছরে ডেঙ্গির দাপট অব্যাহত।
কাদের ঝুঁকি বাড়ছে? (Dengue)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই ডেঙ্গি আক্রান্ত উপসর্গহীন হচ্ছেন। আর তার ফলেই বিপদ বাড়ছে। প্রথম থেকেই জ্বর কিংবা গায়ে-হাতে-পায়ে ব্যথা বা বমির মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে না। সামান্য সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু তারপরেই হঠাৎ বমি বা রক্তক্ষরণের মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তাই পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকিও বাড়ছে। বিশেষত শিশুদের জন্য এই ধরনের উপসর্গহীন ডেঙ্গি আরও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
শীতেও (Winter) মশার দাপট চলছে। তাই ডেঙ্গির প্রকোপ অব্যাহত। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মশা নিধনে সক্রিয়তা না থাকলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো যাবে না। তাই দরকার সচেতনতা। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাই ডেঙ্গি (Dengue) মোকাবিলার প্রথম ও প্রধান অস্ত্র। নিজের বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা জরুরি। জমা জল একেবারেই রাখা চলবে না। আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। এলাকার বাগান কিংবা পার্ক থাকলে, সেগুলো পরিষ্কারে বাড়তি নজর দিতে হবে। পাশপাশি স্কুল কিংবা অফিস চত্বর পরিষ্কার রাখার দিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে হবে। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত মশা নিধন স্প্রে দেওয়া জরুরি। নিকাশি ব্যবস্থাও পরিষ্কার থাকা দরকার। মশা বাহিত রোগ মোকাবিলার জন্য দরকার সতর্কতা। তবে সাধারণ সর্দিকাশির উপসর্গের আড়ালেও হানা দিচ্ছে ডেঙ্গি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা দ্রুত করা দরকার বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ রোগ প্রথমেই চিহ্নিত করতে পারলে বড় বিপদ আটকানো সহজ হবে। পাশপাশি সংক্রমণ রুখতেও সুবিধা হবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।