Tag: Hindutva in Bollywood

  • Kesari Veer and Chhavaa: ‘কেশরী বীর’ থেকে ‘ছভা’, ভুলে যাওয়া হিন্দু যোদ্ধাদের পর্দায় ফেরাচ্ছে বলিউড

    Kesari Veer and Chhavaa: ‘কেশরী বীর’ থেকে ‘ছভা’, ভুলে যাওয়া হিন্দু যোদ্ধাদের পর্দায় ফেরাচ্ছে বলিউড

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মারাঠি ভাষায় প্রকাশিত উপন্যাস থেকে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মারাঠি রাজা শিবাজি মহারাজের ছেলে সম্ভাজি মহারাজের বীরত্ব, তাঁর যুদ্ধের কাহিনি ও আত্মত্যাগ নিয়ে তৈরি “ছভা” বলিউডে পরিবর্তনের ধারা নিয়ে আসছে। এর পথ ধরে শীঘ্রই পর্দায় আসতে চলেছে আর একটি ছবি, “কেশরী বীর: লেজেন্ড অফ সোমনাথ” (Kesari Veer and Chhavaa)। এই দুই ছবিই বলিউডের ঐতিহ্যগত ইসলামিক প্রভাব থেকে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে। এই সিনেমাগুলোর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া হিন্দু বীরদের কাহিনি নতুন করে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

    বলিউডে নতুন গল্প বলার ধরন

    দীর্ঘদিন ধরে বলিউড, “দাউদউড” হিসেবে সমালোচিত হয়েছে তার হিন্দু-বিরোধী (Hindutva in Bollywood) মনোভাবের জন্য। সেই বলিউডই এখন বীর হিন্দু যোদ্ধাদের গল্প বলতে শুরু করেছে। “ছভা” এবং “কেশরী বীর” সিনেমাগুলোর মাধ্যমে, একেবারে নতুন ধরনের গল্প বলার এক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলি-দুনিয়ায়। যদিও এই সিনেমাগুলি হিন্দুত্বের মূল আদর্শ অনুসরণ করে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে এগুলোর মাধ্যমে হিন্দু ইতিহাসের ভুলে যাওয়া বীরদের কাহিনি নতুন করে উন্মোচিত হওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই সিনেমাগুলি হিন্দু বীরত্বের কাহিনি তুলে ধরে, বলিউডের ঐতিহ্যগত দৃষ্টিভঙ্গির থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের গল্প বলছে। এই সিনেমাগুলোর মাধ্যমে বলিউডের সেই পুরনো ধারা ভাঙছে, যেখানে হিন্দু ইতিহাস প্রায়শই উপেক্ষিত বা বিকৃত করা হয়েছে।

    ইতিহাসে উপেক্ষিত চরিত্র

    সপ্তদশ শতকে বাবা শিবাজির পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তরুণ সম্ভাজি মোঘলদের দাসত্ব স্বীকার না করে, মারাঠা স্বরাজের পক্ষে লড়াই করেছিলেন। দিল্লিতে তখন ঔরঙ্গজেবের রাজত্ব। সম্ভাজি সিংহাসনে বসেই বুরহানপুরে মোঘলদের সেনা ছাউনিতে আক্রমণ করে ধ্বংস করলে তৎকালীন মোঘল সম্রাট প্রতিশোধ নিতে শুরু করেন পালটা আক্রমণ করে। ওদের প্রতিটি আক্রমণ রুখে দেন সম্ভাজি তাঁর অনুগত সৈনিক এবং সেনাপতি হাম্বিররাওয়ের লড়াই কৌশলে। একেবারে যাকে বলে গেরিলা যুদ্ধ, প্রায় সেইরকম। জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সম্ভাজির সেনারা (লক্ষ্মণ উতরেকরের নির্দেশে অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার) আরও কতই না ভেলকি দেখিয়েছেন। তাঁরা মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে। আখের ক্ষেতে ছদ্মবেশে আখ গাছ হয়েছে। চিত্রনাট্যে মহারাষ্ট্র ও সমগ্র মারাঠি জাতির প্রাণপুরুষ শিবাজি মহারাজ, উপস্থিত না থেকেও যেভাবে রয়েছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। সংলাপে অনর্গলভাবে ওঁর নাম উচ্চারিত হয়েছে।

    মারাঠি মহানুভবতার পরিচয়

    সম্ভাজি ও ঔরঙ্গজেবের মধ্যে ফাইনাল যুদ্ধটি হয় পুণের কাছে ভীম নদীর পাড়ে তুলাপুর নামের একটি জায়গায়। যেখানে ঔরঙ্গজেব সম্ভাজি ও তাঁর অন্যতম অমাত্য কবি কালাশকে বন্দি করে নিয়ে যান। বন্দিদশায় কবির জিভ কেটে দেওয়া হয়। আর চোখ উপড়ে নেওয়া হয় সম্ভাজির। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত মারাঠিরাজ একা লড়ে যান শতাধিক মোঘল সৈন্যের সঙ্গে। সে লড়াই সত্যি অসম্ভব এবং অমানসিক। হিন্দুত্বের জয়গান, মারাঠি মহানুভবতার পরিচয়, এই ছবি। এক সংলাপে সম্ভাজি বলেই ফেলেন “তুমি আমার সঙ্গে যোগ দিয়ে মারাঠি হয়ে যাও, তোমাকে সেজন্য ধর্ম ত্যাগ করতে হবে না। সুখে থাকবে!” বলিউড অতীতে সাধারণত ইসলামি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামী হিন্দু বীরদের গল্প বলতে পিছপা থেকেছে, বরং ওই সময়ের আক্রমণকারীদের মঙ্গলময় রূপে উপস্থাপন করত। সম্ভাজি মহারাজের এই কাহিনী বহুদিন ধরেই ইতিহাস থেকে উপেক্ষিত ছিল, যদিও তিনি ছিলেন এক মহান যোদ্ধা।

    সোমনাথ মন্দির রক্ষার লড়াই

    সুনীল শেঠি, সুরজ পাঞ্চোলি এবং বিবেক ওবেরয় অভিনীত ঐতিহাসিক বায়োপিক, কেশরী বীর: লেজেন্ড অফ সোমনাথের বহুল প্রতীক্ষিত টিজারও সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এই ছবিটি হামিরজি গোহিলের বীরত্বপূর্ণ কাহিনী বর্ণনা করে, যিনি একজন নির্ভীক যোদ্ধা ছিলেন। পবিত্র সোমনাথ মন্দিরে পাহারা দিতেন তিনি। শক্তিশালী তুঘলক সাম্রাজ্যের হাত থেকে হিন্দু মন্দিরকে রক্ষা করেছিলেন হামিরজি। ছবিটি গোহিলের সাহস, ত্যাগ এবং দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করে। ১৪০০ শতাব্দীতে আক্রমণকারীদের হাত থেকে সোমনাথ মন্দিরকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করা এবং জীবন উৎসর্গ করা অজ্ঞাত পরিচয় যোদ্ধাদের এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবি। হামিরজি গোহিলের মতো হিন্দু বীরের গল্পও এখন আলোচনায় আসছে। গোহিল রাজপুত বংশের এক বীর যোদ্ধা। তিনি সোমনাথ মন্দির রক্ষার জন্য আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়েছিলেন, তাঁর কাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত ছিল।

    বলিউডে পরিবর্তন

    বহুদিন ধরে বলিউডকে তার হিন্দু-বিরোধী এবং প্রো-ইসলামিস্ট অবস্থানের জন্য সমালোচিত করা হয়েছে। তবে “ছভা” এবং “কেশরী বীর” (Kesari Veer and Chhavaa) সিনেমাগুলি সম্ভবত এই পরিবর্তনের শুরু, যা ভবিষ্যতে আরও নতুন গল্প নিয়ে আসবে। সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার এক বিশেষ প্রবণতা শুরু হয়েছে, যা কেবল আড়ালে রাখা বীরদের কাহিনী সামনে আনছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, কি বলিউড একটি বাস্তবিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধন করছে, নাকি এটি কেবল হিন্দু অনুভূতির প্রতি বাজারের প্রতিক্রিয়া? যাই হোক, যে কথাগুলো এতদিন চাপা ছিল, সেগুলো এখন সিনেমার পর্দায় উঠে আসছে—এটা নিজেই একটি বড় পরিবর্তন।

LinkedIn
Share