Tag: India-Bangladesh Relations

  • India Bangladesh Relations: ভারত-বিরোধিতার মাশুল! বাংলাদেশকে মোক্ষম শিক্ষা দিল দিল্লি, মাথায় হাত ইউনূসের

    India Bangladesh Relations: ভারত-বিরোধিতার মাশুল! বাংলাদেশকে মোক্ষম শিক্ষা দিল দিল্লি, মাথায় হাত ইউনূসের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব মজবুত করতে তৎপর ইউনূসের বাংলাদেশ। ভারত-বিরোধিতা (India Bangladesh Relations) এখন পদ্মাপাড়ের মূলমন্ত্র। যে মানচিত্র ভারতের হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছিল, সেই মানচিত্রের গ্রাফটাই এখন বদলে গিয়েছে। হাসিনা পরবর্তী যুগে সোনার বাংলাদেশ এখন ছারখার। জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল। তাই চুপ করে কতদিন থাকা যায়! কয়েকদিন আগেই চিনে গিয়ে ভারতের নিন্দা করে এসেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। বলেছিলেন, ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলি ‘ল্যান্ড লকড’। তাদের সমুদ্রপথের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ওই এলাকার সমুদ্রপথের একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ। ইউনূসের ওই মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ভারত। এবার সহজে বাংলাদেশের বাণিজ্যের রাস্তা বন্ধ করে দিল দিল্লি। তৃতীয় কোনও দেশে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি করতে ব্যবহার করা যাবে না ভারতের কোনও বন্দর বা বিমানবন্দরের শুল্ককেন্দ্র। সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। তবে, ছাড় দেওয়া হয়েছে ভুটান ও নেপালের ক্ষেত্রে। ভারতের ভূখণ্ড হয়ে ভুটান ও নেপালে বাংলাদেশি পণ্য পরিবহণে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে দিল্লি। অর্থাৎ, ভারত দিয়ে এই দুই দেশে আগের মতোই রফতানি করতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু, মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা, ইউরোপ বা অন্য বাকি দেশে পণ্য পাঠাতে পারবে না ঢাকা।

    ভারতের সিদ্ধান্ত

    কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৮ এপ্রিলের পর থেকে ভারতের উপর দিয়ে ভুটান ও নেপাল বাদ দিয়ে আর কোনও দেশে পণ্য রফতানির জন্য ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন (LCS) বা শুল্ক কেন্দ্র ব্যবহার করতে পারবে না বাংলাদেশ (India Bangladesh Relations)। এতদিন এই সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজস্ব পণ্য ভারতে নিয়ে এসে এখানকার বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পাঠাতে পারত। এটি দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। বাংলাদেশের সামগ্রী বিশ্বের অন্যান্য দেশে রফতানির জন্য এই ‘‘ট্রান্স-শিপমেন্ট’’ সুবিধা প্রত্যাহার করা হল। এর জন্য কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) ২০২০ সালের জুন মাসের একটি নিয়ম বাতিল করল, যা বাংলাদেশের পণ্য ভিনদেশে রফতানির জন্য ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরের ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন ব্যবহার করতে দিত। এতে বিভিন্ন দেশে পণ্য পাঠাতে ভারতের পরিকাঠামোকে ব্যবহার করে এক ছাদের নিচে সব সুযোগ সুবিধা পেত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। ফলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এবার থেকে ওই সব দেশে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা বাড়বে। সময়ও বেশি লাগবে। খরচও বেশি হবে।

    কেন এই নির্দেশ

    পড়শি দেশকে (India Bangladesh Relations) এই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছিল ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলি। বিশেষ করে বস্ত্র রফতানি সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে এই অনুরোধ করা হয়েছিল। ২০২০ সালের জুন মাস থেকে বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়ে আসছিল ভারত। ভিন দেশে পণ্য রফতানির জন্য এই সুবিধা ব্যবহার করত বাংলাদেশ। ৮ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সংক্রান্ত পূর্ববর্তী নির্দেশিকা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তবে যে সব পণ্য ইতিমধ্যে ভারতে প্রবেশ করেছে, সেগুলিকে পূর্বের নির্দেশিকা অনুসারে ভারত থেকে বেরোতে দেওয়া হবে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়ার ফলে এ দেশের বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলিতে ভিড় বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এর ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলির রফতানিতে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, নেপাল এবং ভুটানে পণ্য রফতানি করতে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না।

    ভারতের সুবিধা

    সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতীয় বিমানবন্দর এবং বন্দরগুলির এলসিএস-গুলিতে বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক-শিপমেন্ট এসে ভিড় জমাত। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত সময় ও টাকা খরচ হচ্ছিল। অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (AEPC) চেয়ারম্যান সুধীর শেখরি বলেছেন, “ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের নিষ্পত্তি হল। প্রতিদিন ২০-৩০ বাংলাদেশি পণ্য বোঝাই ট্রাক দিল্লিতে এসে অপেক্ষা করত ভিনদেশে যাওয়ার জন্য। এতে আমাদের এক্সপোর্টাররা সমস্যার পড়ছিলেন। কার্গোতে আমাদের পণ্যের পর্যাপ্ত জায়গা হচ্ছিল না।” এই সিদ্ধান্তের ফলে বস্ত্র, জুতো, মূল্যবান পাথর এবং গয়নার ক্ষেত্রে ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলির সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, বস্ত্র রফতানি ক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হল বাংলাদেশ। ভারতীয় রফতানি সংস্থাগুলির সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন’ (এফআইইও)-এর মহাপরিচালক অজয় সহায় বলেন, “এর ফলে ভারতীয় রফতানি পণ্যের জন্য বিমানে আরও বেশি জায়গা পাওয়া যাবে। অতীতে রফতানিকারক সংস্থাগুলি প্রায়শই অভিযোগ করত, বাংলাদেশি পণ্যের জন্য তারা কম জায়গা পাচ্ছে।”

    কূটনীতিকদের অভিমত

    সম্প্রতি চিনে গিয়ে নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মেরে এসেছিলেন ইউনূস। নিজেদের সমুদ্রের অভিভাবক বলে চিনকে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বাংলাদেশে (India Bangladesh Relations) এসে ব্যবসার জন্য, প্রচুর জিনিস বানাতে। বিক্রির জন্য বাংলাদেশের বাজার উন্মুক্ত। চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের এই বন্ধুত্ব ভারত ভালো চোখে দেখেনি। তার ওপর যখন শিলিগুড়ির চিকেনস্ নেকের কাছে বাংলাদেশের মাটিতে চিনকে বিমানঘাঁটি তৈরির আহ্বান জানিয়ে বসেন ইউনূস, তখন ভারত আর চুপ করে বসে থাকেনি, বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। চিন সফরে গিয়ে ইউনূসকে বলতে শোনা যায়, “ভারতের পূর্ব প্রান্তের সাতটি রাজ্য, যাদের সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। ওই বিরাট অঞ্চল কিন্তু পাহাড় আর স্থলভাগে ঘেরা। সমুদ্রপথে যোগাযোগ করার উপায়ই নেই তাদের। বাংলাদেশই হল সমুদ্রপথের রাজা। তাই ওই এলাকায় চিনা অর্থনীতির বিস্তার ঘটতেই পারে।” এই মন্তব্যের ইঙ্গিত অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ভারতের ৭ রাজ্য (সেভেন সিস্টার)কে ভেঙে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই একই ইচ্ছা চিনের। যদিও সেই চৈনিক চাল বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এবার বাংলাদেশের মুখে এমন মন্তব্যে দুয়ে দুয়ে চার করতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না ভারতের। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের কফিনের অন্যতম পেরেক ইউনূসের এই মন্তব্য। তাই এবার ব্যবসার রাস্তা বন্ধ করে ঢাকাকে বার্তা দিল দিল্লি।

    বিপদে বাংলাদেশ

    ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতের এই এক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি ও ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে। বিশেষত ঢাকার বস্ত্র রফতানি এতে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হবে। এতদিন ধরে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর পণ্য পাঠাত বাংলাদেশ, বিশেষত জামাকাপড়। ভারতের মাটি, বায়ুপথ ও বন্দরের শুল্ককেন্দ্র ব্যবহার করে অনেক কম খরচ ও কম সময়ে ভিনদেশে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য পাঠাত বাংলাদেশ। কিন্তু এবার সেই সুযোগ বন্ধ হল। এখন থেকে বাংলাদেশকে সমুদ্রপথ বা আকাশপথে রফতানির বিকল্প ভাবতে হবে, যা তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। লজিস্টিক সমস্যা ও সময়ে পণ্য পৌঁছতে দেরি হবে। ফলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে ঢাকা। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলছেন, “বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের রফতানি এবার মার খাবে। এতদিন ভারত যে সুবিধা দিত তাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের শুধু অনেক টাকাই বাঁচত না, সময়ও বাঁচত।” তিনি আরও জানান, গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশকে সন্তানসুলভ প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে ভারত। পণ্যের উপর শূন্য শুল্ক থেকে অগ্রাধিকার— কী না দেওয়া হয়নি। মদ ও সিগারেট ছাড়া নেপাল, ভুটানের মতো দেশে বাংলাদেশ সব পণ্য বিনা শুল্কে এতদিন পাঠিয়ে এসেছে। তাও ভারত-বিরোধিতা (India Bangladesh Relations) করতে পিছপা হননি ইউনূস। তাই পরিবর্তিত বাংলাদেশকে শিক্ষা দিতেই এই পদক্ষেপ ভারতের।

  • Paresh Baruah: উলফা নেতা পরেশকে হাতের পুতুল বানিয়ে ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টায় চিন, বাংলাদেশ, আইএসআই!

    Paresh Baruah: উলফা নেতা পরেশকে হাতের পুতুল বানিয়ে ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টায় চিন, বাংলাদেশ, আইএসআই!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সক্রিয় হয়ে উঠছে উলফা! ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, চিন, বাংলাদেশ এবং আইএসআই ‘অলিখিত ত্রয়ী’ আঁতাঁত গড়ে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি পরেশ (Paresh Baruah) তাঁর গোপন ডেরা পরিবর্তন করেছে। অরুণাচল প্রদেশ-মায়ানমার সীমান্তের রুইলি এলাকায় চিনের পশ্চিম ইউনান প্রদেশে থাকতেন বড়ুয়া। এখন তিনি চিনের সিশুয়াংবান্না দাই অঞ্চল রয়েছেন তিনি। এটি অসমের অহম জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং জাতিগত সম্পর্কযুক্ত তাই জনগণের একটি শক্তিশালী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। বড়ুয়া সম্ভবত এরপর মং লা শহরে পৌঁছবেন যা মায়ানমারের অন্তর্গত হলেও চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

    কে এই পরেশ বড়ুয়া?

    অসমের একটি ছোট পরিবারে জন্ম পরেশের (Paresh Baruah)। তাঁর জন্ম সূত্রে যে ছিল বিপ্লব-প্রতিবাদের ধারা। অসমের মতক পরিবারে জন্ম হয় তাঁর। এই মতকদের পূর্বসূরি আবার অহম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। ফলত সংগ্রাম যে পরেশ বড়ুয়ার রক্তধারায় বইছে তা সন্দেহাতীত। পরেশও তার ব্যতিক্রম ছিল না। চাকরি ছেড়ে ১৯৮১ সালে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম (সংক্ষেপে উলফা) গঠনের দু’বছর পর পরেশও এই ভারত-বিরোধী সংগঠনে নাম লেখায়। তৎকালীন পরিস্থিতিতে অসমে চলা দুরাবস্থা, অর্থনৈতিক ধস, বেকারত্ব প্রতিটি সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটই পরেশের ভাবাবেগে আঘাত করে। যার জেরে অসাধ্য সাধনের পথে, দুর্নীতি-দুরাবস্থা থেকে অসমের স্বাধীনতা দাবিতে সরসরি রাষ্ট্রবিরোধী সংগঠন উলফায় নাম লেখান তিনি।

    কী এই উলফা?

    ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল, এক দল যুবকের নেতৃত্বে গঠন করা হয় ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম। সে রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে উলফা। রাজনৈতিক আন্দোলন কিংবা অহিংসার পথ ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ থেকেই স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া আর্দশে এগোতে শুরু করে উলফা। ঝরে রক্ত, চলে আন্দোলন। গঠনের কয়েক বছরের মধ্যেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তকমা পেয়ে যায় উলফা। উত্তর-পূর্বে নিজেদের আস্ফালন তৈরিতে বিপুল অস্ত্রের সম্ভার তৈরি করে তারা। সেই সূত্রেই বাড়ে চিনের সঙ্গে যোগাযোগ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এক বান্ধবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রায়ই মায়ানমারের জঙ্গলে পেরিয়ে চিনে যেতেন তিনি। সেই বান্ধবী নাকি আবার ছদ্মবেশী চিনা গোয়েন্দা বলেই খবর।

    চিনের কাছাকাছি

    রাষ্ট্রের কাছে পরেশ বড়ুয়ার (Paresh Baruah) অপরাধী রূপে দর যত বেড়েছে। তত নিজের গা ঢাকা দিতে চিনের দিকে পা বাড়িয়েছেন পরেশ। এমনকি ভারতের উত্তর-পূর্বে সন্ত্রাস চালাতে বরাবরই বাংলাদেশকে মাধ্যম করেছেন পরেশ। অবশেষে ২০০৪ সালের অস্ত্র পাচার নাম জড়ায় পরেশ বড়ুয়ার। গা ঢাকা দিতে বারংবার চিনে গিয়ে লুকিয়েছিলেন তিনি। তবু মেলেনি স্বস্তি। বাংলাদেশ আদালত রায় দিয়েছিল পরেশের মৃত্যুদণ্ডের। সেই রায় বদলে গেল ইউনূস সরকারের আমলে। ফাঁসির সাজা মকুব হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান পরেশ বড়ুয়া।

    ভারতের ভয়

    বাংলাদেশ এখন ভারতের শত্রু দেশ চিন ও পাকিস্তানের কাছাকাছি চলে এসেছে, যা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর মৌলবাদী সহিংসতা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ইউনূস-নেতৃত্বাধীন সরকার এই সহিংসতাগুলিকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, এমনকি মৌলবাদী উপাদানগুলির দ্বারা সৃষ্ট নৃশংসতাকে অগ্রাহ্য করেছে বলে অভিযোগ। এই আবহে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার শাস্তি কমিয়ে দিয়ে ইউনূস সরকার ভারত-বিরোধী মনোভাব স্পষ্ট করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের আইএসআই, চিন এবং বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে পরেশ বড়ুয়াকে একটি পুতুল হিসেবে ব্যবহার করছে।

    চিন-যাত্রা বড়ুয়ার

    নয়ের দশকে, ভারতের সেনাবাহিনী উলফার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পর, বড়ুয়া বাংলাদেশে পালিয়ে যান, যেখানে তাকে আইএসআই এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকারের কাছ থেকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় পদ্মাপাড় থেকেই উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে চরমপন্থী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন বড়ুয়া। তবে ২০০৬ সালের পর, যখন জিয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়, বড়ুয়া মনে করেন যে ঢাকা তাঁকে ভারতের ক্রোধ থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তখনই তিনি চিনের রুইলি চলে যান। ২০০৯ সালে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামি লিগ সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে। এরপর অস্ত্র পাচার মামলায় পরেশ বড়ুয়াকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশ।

    চট্টগ্রাম অস্ত্র চোরাচালান কাণ্ড

    ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ধারের জেটিঘাটে উদ্ধার হয় ১০ ট্রাক ভর্তি চিনা অস্ত্র। যার মধ্যে রকেট ও গ্রেনেড ছিল। পদ্মা নদীর পাড়ে তখন জোর শোরগোল। নাম জড়াচ্ছে একের পর এক বিএনপি নেতার। নাম জড়াল খোদ প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের। অবশেষে অস্ত্র পাচার মামলায় প্রকাশ্যে এল মাস্টারমাইন্ডের নাম। পরেশ বড়ুয়া। অভিযোগ, তখনকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি (বিএনপি) সরকারের সহায়তায় এবং পাকিস্তানের আইএসআইর মাধ্যমে এসব অস্ত্র উলফা ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে পাঠানো হচ্ছিল। এই চট্টগ্রাম অস্ত্র চোরাচালান কাণ্ডটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা হিসেবে পরিচিত, যেখানে ৪,৯৩০টি অস্ত্র, ২৭,০২০টি গ্রেনেড, ৮৪০টি রকেট লঞ্চার, ৩০০টি রকেট, ৬,৩৯২টি ম্যাগাজিন এবং ১,১৪০,৫২০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছিল। পরেশ তখন ঢাকাতেই ছিলেন।

    ভারতের জন্য কেন উদ্বেগের?

    পরেশ বড়ুয়াকে (Paresh Baruah) ওই মামলায় ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর ফাঁসির সাজা কমানো হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ আদালত পাকিস্তান এবং আইএসআইকে সন্তুষ্ট করতে প্রয়াস চালাচ্ছে। যেমন খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য পাকিস্তানপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা এবং গুরুতর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির একটি মামলায় অব্যাহতি দিয়েছে, যেখানে তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা পরে ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেরকম ভাবেই সাজা কমানো হয় পরেশের। ভারতের সীমান্তের কাছে চিনের সিশুয়াংবান্নায় এখন রয়েছেন পরেশ। তাঁকে ধরতে পারা যায়নি। দিল্লির ধারণা, বড়ুয়া এই কৌশলগত অবস্থানটি ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। উলফার সমর্থনও বাড়াতে পারেন বড়ুয়া। কারণ সিশুয়াংবান্নায় তাই সম্প্রদায়ের সাথে অসমের অহম সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

    শান্ত অসমকে অশান্ত করার চেষ্টা

    ৯০-এর দশকের সঙ্গে এখন যদিও কোনও মিল নেই। কেন্দ্রে মোদি সরকার ও অসমে হিমন্ত বিশ্বশর্মার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সৌজন্যে এখন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন নামমাত্র রয়েছে অসমে। আন্দোলনকারীদের মূল স্রোতে ফেরাতে গত কয়েক বছর বড় পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্র ও অসম সরকার। উলফার আলোচনাপন্থীদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল অসম সরকার ও কেন্দ্র। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে অপর একটি শাখা আলফা (স্বাধীন) এই চুক্তির অংশ হয়নি। ফলে পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড খারিজ হয়ে যাওয়ায় ফের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে নাশকতা বাড়বে বলে আশঙ্কা দিল্লির। চিন থেকেই ভারতে নাশকতার চক্রান্ত চালাবেন পরেশ এমনই অনুমান গোয়েন্দাদের।

  • Muhammad Yunus: বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে সরাতে সক্রিয় আইএসআই! জেনারেল জমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ইউনূস?

    Muhammad Yunus: বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে সরাতে সক্রিয় আইএসআই! জেনারেল জমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ইউনূস?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শেখ হাসিনার জামানার পতনের পর মহম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) জামানায় ঢাকা-ইসলামাবাদ দোস্তি চওড়া হয়েছে। পদ্মাপাড়ে ভারত বিরোধিতার সুর যত চড়েছে ততই পাকিস্তানের কোলে ঢলে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনূস। পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ ৫০ বছর পর সমুদ্র বাণিজ্য চালু করেছে বাংলাদেশ (Bangladesh Army Chief)। করাচি থেকে পণ্যবাহী জাহাজ এসেছে চট্টোগ্রামে। এবার পাকিস্তান সেনার সঙ্গে যোগ রেখে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জমানকে সরাতে চাইছে ইউনূস প্রশাসন। তাঁর বদলে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়ে আসা হতে পারে পাক ঘনিষ্ঠ বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে চতুর্থ স্থান অধিকারী,ফয়জুর রহমানকে।

    ইউনূস এবং সেনাপ্রধানের মধ্যে বিরোধ!

    সূত্রের খবর, বাংলাদেশের (Bangladesh Army Chief) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) , যিনি গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, তিনি দেশের সেনা প্রধানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, জেনারেল জমান দীর্ঘদিন ধরে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারকে নিয়ে অসন্তুষ্ট। তিনি দেশটির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ এবং শেখ হাসিনার অপসারণের পর দেশটির আইন-শৃঙ্খলার অবনতির বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর জেনারেল জমান বারবার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে কথা বললেও, বর্তমান পরিস্থিতির অজুহাতে ইউনূস দেশে নির্বাচনের তারিখ বারবার স্থগিত করেছেন। আরেকটি কারণ হতে পারে যে, জেনারেল জমান শেখ হাসিনার শাসনামলে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক শেখ হাসিনার পরিবারে, যার ফলে দু’পক্ষের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

    ইউনূস সরকার এবং পাকিস্তানের আইএসআইয়ের ষড়যন্ত্র

    বিশেষ সূত্রমতে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল জমান সন্দেহ করছেন যে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং আইএসআই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তাঁর ধারণা, আইএসআই বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রভাব ফেলছে এবং তাদের পছন্দের লোকদের শীর্ষ পদে নিযুক্ত করার চেষ্টা করছে। গত মাসে পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিকের বাংলাদেশ সফরকালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকটি, জেনারেল জমানের প্রতি আইএসআইয়ের হস্তক্ষেপের চেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফয়জুর রহমান বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে চতুর্থ স্থান অধিকারী। তিনি পাকিস্তানের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

    জমানকে অপসারণের চেষ্টা

    বাংলাদেশ সেনার অভ্যন্তরে গুঞ্জন, অন্তবর্তী সরকার জেনারেল জমানকে সেনাপ্রধান পদ থেকে অপসারণ করে, ফয়জুর রহমানকে এই পদে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ফয়জুর রহমানকে পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর পক্ষে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও আইএসআইয়ের সমর্থন রয়েছে।

    বিরোধের সূত্রপাত

    গত অগাস্ট মাসের শুরুতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের সময়, আন্দোলনকারীদের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন জেনারেল জমান এবং সেনা। তাদের চাপেই ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন হাসিনা। তারপর, মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউনুস। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার একটি রূপরেখা দিয়েছে ইউনূস সরকার। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এতদিন পর্যন্ত ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আওতাধীন। অর্থাৎ, সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কাজেই, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাজনৈতিক প্রয়োজনে সেনাকে ব্যবহারের সুযোগ ছিল। তার বদলে সেনাকে রাষ্ট্রপতির আওতায় আনার প্রস্তাব দিয়েছে নয়া সরকার। এর ফলে, ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকবে। কিন্তু আখেড়ে উল্টো কাজ করছে ইউনূস প্রশাসন। তার থেকেই বিরোধের সূত্রপাত।

    ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক

    বাংলাদেশে (Bangladesh Army Chief) শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ জায়গায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশে বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক সম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। যা ঢাকা এবং নয়াদিল্লির সম্পর্ককে জটিল করে তুলছে। ভারত, ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারকে অভিযোগ করছে যে তারা সন্ত্রাসী মৌলবাদী ইসলামিক শক্তিগুলির দ্বারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ প্রসঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অক্ষম এবং এ ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভারত সফরে এসে পাক গোয়েন্দারা ভারতের চিকেন নেকও দেখতে গিয়েছিলেন। যা ভারতের কাছে বিরক্তির কারণ। এই আবহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে পাক ঘনিষ্ঠতা ভারতের কাছে অসন্তোষের।

LinkedIn
Share