Tag: Indian Astronauts

  • Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘‘পৃথিবীকে বাইরে থেকে দেখার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়’’, মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে শুরু হয়ে গিয়েছে শুক্লা-পক্ষ। আঠাশ ঘণ্টার জার্নি শেষে ভারতীয় সময় সন্ধে ছটার কয়েক মিনিট আগে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন শুভাংশু শুক্লা, পেগি হুইটসন, স্লাওজ উজনানস্কি ও টিবর কাপু। আগামী চোদ্দদিন এটাই ওঁদের ঘর। মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে দিন কাটানো মুখের কথা নয়। বাইরে থেকে খুব সহজ মনে হলেও মাথা ঝিমঝিম করছে শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla)। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছে নিজেই সে কথা জানালেন ভারতীয় মহাকাশচারী। তবে মহাবিশ্বের হাতছানির কাছে এ কিছুই নয়, দাবি ইতিহাস সৃষ্টি করা শুভাংশুর। ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, আগামী ১৪ দিন আইএসএস-এ বসে যে গবেষণা তাঁরা করবেন, তার তুলনায় এই অস্বস্তি কিছুই নয়।

    মহাকাশে আলাপচারিতা

    ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ আমেরিকার ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশুরা (Shubhanshu Shukla)। প্রতি ঘণ্টায় ২৬,৫০০ কিলোমিটার গতি ছিল মহাকাশযানের। ২৮ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার আইএসএস-এ পৌঁছেছেন শুভাংশু, তাঁর তিনি সঙ্গী পোল্যান্ডের স্লায়োস উজনানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু, আমেরিকার পেগি হুইটসন। তাঁদের অপেক্ষায় বসেছিলেন আইএসএস-এর সাত মহাকাশচারী। পৃথিবী থেকে রওনা হওয়া চার মহাকাশচারীকে নিয়ে তাঁদের উদ্বেগও ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ (ভারতীয় সময়) শুভাংশুরা আইএসএস-এ পৌঁছোতেই তাঁদের জড়িয়ে ধরেন সেখানকার মহাকাশচারীরা। তাঁরা সেখানে ইতিমধ্যেই গবেষণা চালাচ্ছেন। চার জনকে অভ্যর্থনা জানিয়ে পানীয় দেওয়া হয় হাতে। সেই মুহূর্তের কিছু ছবি, ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে। প্রকাশ করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স। সেখানে দেখা গিয়েছে, আইএসএস-এ হাসতে হাসতে গল্প করছেন মহাকাশচারীরা।

    শস্য ফলানোই প্রধান কাজ

    ১৯৮৪ সালে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ৪১ বছর পর ফের ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেল ভারত। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের নেতৃত্বেই রয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আগামী ১৪ দিন তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা অনেক কাজ করবেন। শুভাংশুর (Shubhanshu Shukla) সঙ্গে রয়েছে ৬ ধরনের ভারতীয় শস্যবীজ। সেই শস্য ফলানোই প্রধান কাজ। আগামীদিনে মহাকাশ অভিযানে এটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হবে কারণ মহাকাশেই ফল-মূল উৎপাদন করা সম্ভব হলে কষ্ট করে পৃথিবী থেকে খাবার বয়ে নিয়ে যেতে হবে না। মহাকাশে উৎপাদন হলে তার জিনগত বা পুষ্টিগত কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তাও গবেষণা করে দেখা হবে। এছাড়াও শুভাংশু শুক্লা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন। মাইক্রোঅ্যালগি বা “ক্ষুদ্র শৈবাল” নিয়ে গবেষণা। মহাকাশে গেলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবদেহের পেশি। মহাকাশে রেডিয়েশন ও মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাব এই অ্যালগির উপরে কী হয়, এর পুষ্টিগুণে কোনও পার্থক্য তৈরি হয় কি না, তা গবেষণা করে দেখা হবে।

    গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত

    আইএসএস-এ বসেই লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু বলেন, ‘‘এটা গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত, মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ব়ড় পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে তিনি আবার মনে করিয়ে দেন তাঁর কাঁধে থাকা ভারতীয় পতাকার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘গর্বের সঙ্গে কাঁধে তেরঙা পরেছি।’’ বুধবার যাত্রা শুরুর আগেও এই কথাই শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাঁধে লাগানো জাতীয় পতাকা মনে করাচ্ছে যে তিনি একা নন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রবেশ করে সেখানকার বন্ধুদেরও ধন্যবাদ জানান শুভাংশু। তিনি বলেন, ‘‘পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীকে দেখার সুযোগ পাওয়াটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। অসাধারণ! মহাকাশে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু যে মুহূর্তে আমি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রবেশ করলাম, এই ক্রু সদস্যরা আমাকে এমন স্বাগত জানাল! তোমরা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জন্য তোমাদের ঘরের দরজা খুলে দিলে। আমি আরও ভালো বোধ করছি। এখানে আসার আগে আমার যা প্রত্যাশা ছিল তা অবশ্যই ছাপিয়ে গেছে। তাই তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে আগামী ১৪ দিন বিজ্ঞান এবং গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ হবে। অনেক ধন্যবাদ।’’

    মহাকাশে বসেই গাজরের হালুয়া, আমের রস

    ১৪ দিনের এই অভিযানের গোটা সময়টা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেই থাকবেন চার নভশ্চর। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা। তবে, শুধু তো কাজ করলেই হল না, মহাকাশে খাবার খেতেও হবে শুভাংশুদের। এই খাবার খাওয়াও এক কষ্টসাধ্য কাজ, কারণ সাধারণ খাবার খাওয়া যায় না। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবারই খেতে হয়। তবে ওই প্যাকেটজাত খাবার, শুকনো ফলের পাশাপাশি গাজরের হালুয়া, আমের রস ও মুগ ডালের হালুয়াও খাবেন শুভাংশু (Shubhanshu Shukla)। তাঁর জন্য এই খাবার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করে দিয়েছে ইসরোর ডিফেন্স ইন্সটিটিউশন অব বায়ো ডিফেন্স টেকনোলজি। এই খাবারে কোনও প্রিজারভেটিভ দেওয়া নেই। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ১ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকবে এই খাবারগুলি। শুভাংশুর অভিযানের লাইভ সম্প্রচার লখনউয়ে তাঁর স্কুলে বসে দেখেন বাবা, মা, আত্মীয়, বন্ধুরা। ১৪ দিনের এই অভিযান আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বকে আরও মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    Shubhanshu Shukla: ‘ঠিক যেন শিশু, মহাকাশে হাঁটা-খাওয়া শিখছি…’, মহাশূন্য থেকে নমস্কার জানিয়ে বার্তা শুভাংশুর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাবিশ্ব, মহাকাশে ভাসছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশ শুক্লা (Shubhanshu Shukla)৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটেয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছবে তাঁদের মহাকাশযান ক্যাপসুল ‘গ্রেস’। ইতিমধ্যে মহাকাশে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে ফেলেছেন চার নভশ্চর। সেখান থেকেই পৃথিবীর উদ্দেশে আরও এক বার বার্তা দিলেন শুভাংশু। শোনালেন মহাকাশে একটা গোটা দিন কাটিয়ে ফেলার অভিজ্ঞতা! মহাশূন্য থেকে দেশবাসীকে ‘নমস্কার’ জানান শুভাংশু। বলেছেন, মহাশূন্যে অভিকর্ষের ব্যাপক পার্থক্যের কারণে আবার এখন শিশুর মতো হাঁটতে শিখছেন ৷

    মহাকাশে কেমন লাগছে শুভাংশুর ?

    এই মিশনে দারুণ উত্তেজিত অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের পাইলট শুভাংশু শুক্লা ৷ তাঁর সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে এই যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে তিনি কৃতজ্ঞ ৷ আমেরিকার স্পেসএক্স সংস্থার মহাকাশ স্টেশনের লঞ্চপ্যাড থেকে তাঁদের রকেট উৎক্ষেপণের সময়ে একটা বিশাল ধাক্কা অনুভব করেছেন শুভাংশু-সহ অন্যরা ৷ এরপর একটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের পথে যাত্রা শুরু করে রকেট ৷ তখনও অস্বস্তি হচ্ছিল শুভাংশুর ৷ এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই প্রবল হয়েছে মহাশূন্যের নিস্তব্ধতা ৷ আর সঙ্গে মহাকাশের ভারশূন্য অবস্থা ৷ ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মহাকাশ থেকে সরাসরি পৃথিবীর সঙ্গে কথোপকথন করেছেন চার নভশ্চর। অ্যাক্সিয়ম স্পেসের এক্স হ্যান্ডলেও সেই ভিডিয়োর সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। সেখানেই শুভাংশু বলেন, ‘‘যখন যাত্রা শুরু হল, তখন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। খুব ভাল সফর ছিল। মহাকাশে পৌঁছোতেই অস্বস্তি শুরু হয়। শুনলাম, গত কাল নাকি আমি পড়ে পড়ে ঘুমিয়েছি!’’

    শিশুর মতো শিখছেন

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) ছাড়াও নাসার এই অভিযানে রয়েছেন পেগি হুইটসন, স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং টিবর কাপু। মহাকাশের মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে হাঁটাচলা থেকে শুরু করে সব কিছুই নতুন করে শিখতে হচ্ছে তাঁদের। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার যাত্রাপথে কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে? এর উত্তরে শুভাংশ জানান, তিনি এখন কিছুটা ভালো বোধ করছেন ৷ ভালো করে ঘুমোচ্ছেন এবং নতুন এক বিশ্বে এক কৌতূহলী শিশুর মতো ক্রমাগত শিখে চলেছেন ৷ শুভাংশু বলেন, ‘‘শিশুর মতো হাঁটতে শিখছি! শিখছি কী ভাবে হাঁটতে হয়, কী ভাবে খেতে হয়!’’ মহাকাশের পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন শুভাংশুরা ৷ ক্যাপসুলে বন্দি থেকে প্রতি মুহূর্তে মহাশূন্যের নতুন নতুন দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং সহ-নভশ্চরদের সঙ্গে ভুলত্রুটিগুলিও সংশোধন করছেন ৷

    ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা

    ইতিহাস গড়েছে ভারত। রাকেশ শর্মার পর চার দশক ডিঙিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন ৩৯ বছরের ভারতীয় নভোচর শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। বুধবার দুপুরে আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে পাড়ি দেন তিনি। মহাকাশ থেকে প্রথম বার্তায় আগেই শুভাংশু জানিয়েছিলেন ‘বর্ণনাতীত’ অভিজ্ঞতা। অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের (Axiom-4 mission) সফল উৎক্ষেপণের পর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা পৃথিবীতে পাঠানো প্রথম বার্তায় জানান, কাঁধে করে তেরঙা নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ চার দশক পর এক অনন্য ইতিহাসের পাতায় লিখতে চলেছেন তাঁর দেশ ভারতের নাম। মিশনের কন্ট্রোল রুমে পাঠানো প্রথম বার্তায় শুক্লা বলেন, এই অভিযান শুধু আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা নয়, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা।

    শুভাংশুকে প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা

    শুভাংশু (Shubhanshu Shukla) বলেন, , ‘‘নমস্কার, আমার প্রিয় দেশের মানুষ। কী মজার যাত্রা! ৪১ বছর পর আমরা আবার মহাকাশে পাড়ি দিলাম। দারুণ লাগছে! এখন আমরা পৃথিবীকে প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে ৭ কিমি গতিতে প্রদক্ষিণ করছি। তেরঙা আমার কাঁধে রয়েছে। যা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি। আমি চাই আপনারাও সকলে আমার এই যাত্রার সঙ্গী হন। আপনাদের বুক নিশ্চই গর্বে ফুলে উঠবে। মহাকাশে ভারতের মানুষ পাঠানোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। জয় হিন্দ! জয় ভারত!’’ শুভাংশুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘‘শুভাংশু শুক্লাই প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রাখবেন। তিনি নিজের কাঁধে ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষার ভার বহন করছেন।’’

LinkedIn
Share