Tag: Indian GDP

  • India US Relation: ভারতের জিডিপি ৭.৮% হারে বাড়ছে আর আমেরিকার ৩.৩%! ‘মৃত’ অর্থনীতি বলে বেকায়দায় ট্রাম্প

    India US Relation: ভারতের জিডিপি ৭.৮% হারে বাড়ছে আর আমেরিকার ৩.৩%! ‘মৃত’ অর্থনীতি বলে বেকায়দায় ট্রাম্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক অভিনব বিদ্রূপের চিত্র ফুটে উঠেছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির মঞ্চে। যেখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (India US Relation) ভারতের অর্থনীতিকে “মৃত” বলে অভিহিত করেছিলেন, সেখানেই সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন মাসে ভারত ৭.৮% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এর বিপরীতে, ট্রাম্পের প্রশংসায় ভরপুর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি একই সময়ে মাত্র ৩.৩% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের অর্থনৈতিক (Indian Economy) এই সাফল্য মূলত ভর করেছে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা, পরিষেবা খাতের দৃঢ়তা এবং উৎপাদন খাতের পুনরুজ্জীবনের উপর। নতুন প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফল দেখিয়েছে ভারতের অর্থনীতি।

    বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি

    বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ ইতিমধ্যেই আগামী কয়েক বছরে ভারতের প্রবৃদ্ধিকে ৬.৩% থেকে ৬.৪% হারে থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে। এর ফলে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কেন ভারতকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যেখানে ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসছে, সেখানে ভারত নিজের গতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত কঠোর শুল্কের মধ্যেও। ট্রাম্পের “মৃত অর্থনীতি” মন্তব্যে শুধু ভারতেই নয়, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশের মধ্যেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অস্ট্রেলিয়া ভারতকে “অসাধারণ সম্ভাবনার দেশ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের অর্থনীতি কোনওভাবেই ধ্বংসের মুখে নয় – বরং ২০৩৮ সালের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুযায়ী (PPP) দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে, যেখানে জিডিপি হবে প্রায় ৩৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

    মোদি সরকারের কৌশলী নীতি

    ভারতে জিডিপি-র (Indian Economy) প্রবৃদ্ধি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে স্বস্তি দিয়েছে। সরকারের পরিকাঠামো খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন-ভিত্তিক ব্যবস্থা ও আত্মনির্ভর ভারত তৈরির স্বপ্ন সফল হচ্ছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) অবশ্য মার্কিন সুরক্ষা নীতিকে ঝুঁকি হিসেবে দেখলেও, বলেছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা যথেষ্ট শক্তিশালী, যা বাইরের চাপ সামাল দিতে সক্ষম। বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে, ভারতীয় অর্থনীতিই আজ সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। গত ২৭ অগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ করে শুল্ক নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এই পদক্ষেপ করেছেন তিনি। পূর্ব ইউরোপের ওই সংঘাত শুরু হওয়া ইস্তক মস্কোর থেকে সস্তা দরে অপরিশোধিত খনিজ তেল আমদানি করে চলেছে নয়াদিল্লি। ট্রাম্প মনে করেন, এতে সংঘর্ষ চালিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ পেয়ে যাচ্ছে ক্রেমলিন। আর তাই রাশিয়াকে ‘ভাতে মারতে’ ভারতের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কনীতির কড়া সমালোচনা করে ভারত জানিয়েছে, কোনওভাবেই মাথা নোয়াবে না দিল্লি। দেশের মানুষের স্বার্থে যা করা উচিত তাই করা হবে।

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত

    ট্রাম্পের এ-হেন শুল্কনীতির অবশ্য আমেরিকার ভিতরেই শুরু হয়ে গিয়েছে কড়া সমালোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক এডোয়ার্ড প্রাইস বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রেসিডেন্ট অর্থনীতির কিছুই বোঝেন না। ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের নামে বেপরোয়া এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ করছেন তিনি। অবিলম্বে নয়াদিল্লির পণ্যে ৫০ শতাংশ কর প্রত্যাহার করুক হোয়াইট হাউস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ২১ শতকের পৃথিবী কৌশলগত অংশীদারদের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেখানে ভারতের মতো বন্ধুকে হারানো চরম মূর্খামি।’’

    ট্রাম্পের বোকামি

    গত ৩০ জুলাই নিজের সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে নয়াদিল্লি ও মস্কোকে নিশানা করে একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করছে, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। ওরা ‘মৃত অর্থনীতি’কে একসঙ্গে ধ্বংস করতে পারে। আমি সব কিছুর জন্য চিন্তা করি। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, নয়াদিল্লির শুল্ক অনেক বেশি। একে বিশ্বের সর্বোচ্চ বলা যেতে পারে। রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে প্রায় কোনও ব্যবসা নেই বললেই চলে।’’ তাঁর এই পোস্টের পরেই শুরু হয় হইচই। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অগাস্টের একেবারে শেষে চলতি আর্থিক বছরের (২০২৫-’২৬) এপ্রিল থেকে জুনে জিডিপির হার প্রকাশ করে কেন্দ্র। মোদি সরকারের দেওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে ৭.৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে সূচক। পরে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত।’’ বর্তমানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নয়াদিল্লির নাম। সমীক্ষক সংস্থা ‘ইওয়াই ইকোনমিক ওয়াচ’ আবার তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ১৩ বছরের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির (Indian Economy) দেশ হয়ে উঠবে ভারত। পাশাপাশি, তালিকায় এক নম্বর স্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (India US Relation) গদি টলমল হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। সেখানে চিনের উঠে আসার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন তাঁরা।

     

     

     

     

LinkedIn
Share