Tag: Indian Heritage

  • NCERT: এনসিইআরটি-র সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে বাদ মুঘল এবং সুলতানি শাসন, স্থান পেল ভারতীয় সাম্রাজ্যের কথা

    NCERT: এনসিইআরটি-র সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে বাদ মুঘল এবং সুলতানি শাসন, স্থান পেল ভারতীয় সাম্রাজ্যের কথা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং)-র পাঠ্যবইয়ে (NCERT) সপ্তম শ্রেণির নতুন সমাজবিজ্ঞান বইয়ে বাদ পড়ল দিল্লির মুঘল এবং সুলতানি সাম্রাজ্যের অধ্যায়। তার পরিবর্তে নতুন সংযোজন করা হয়েছে প্রাচীন ভারতীয় সাম্রাজ্যের কথা। রাখা হয়েছে মগধ, মৌর্য, শুঙ্গ এবং সাতবাহন সাম্রাজ্যকে। একইসঙ্গে ২০২৫ সালে প্রয়াগরাজে হওয়া মহাকুম্ভও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নতুন পাঠ্যবইয়ে।

    জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী পরিবর্তন

    এই পরিবর্তনগুলি জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) ২০২০ এবং স্কুল শিক্ষার জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম কাঠামো (এনসিএফএসই) ২০২৩ অনুযায়ী করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই দুই নীতিই স্কুল শিক্ষায় ভারতীয় ঐতিহ্য, দর্শন, সভ্যতাকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছে। এনসিইআরটির এমন সিদ্ধান্তে তারই প্রতিফলন দেখা গেল (Indian Heritage)। প্রসঙ্গত, এর আগে তুঘলক, খিলজি, লোধি প্রভৃতি শাসন ব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে এই প্রথম মুঘল এবং দিল্লির সুলতান সম্পর্কিত অধ্যায়গুলি বাদ পড়ল।

    তীর্থভূমি ভারত নিয়ে আলাদা অধ্যায় (NCERT)

    সমাজ বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক (NCERT) ‘এক্সপ্লোরিং সোসাইটি: ইন্ডিয়া অ্যান্ড বিয়ন্ড’ এই বইয়ে ভারতীয় সাম্রাজ্যগুলির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মগধ, মৌর্য, শুঙ্গ এবং সাতবাহনের মতো প্রাচীন ভারতীয় রাজবংশগুলির শাসন। এই অধ্যায়েই দেশের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ, চারধাম যাত্রা এবং নদীসঙ্গম, পর্বত ও জঙ্গল সহ শক্তিপীঠের স্থানগুলিকে ‘ধর্মীয় ভূগোল’ (Sacred geography) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আসলে ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপট সম্বলিত স্থানগুলির অধ্যয়ন। এর মাধ্যমে স্থানগুলির প্রতীকী ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য বোঝাতে চাওয়া হয়েছে। এটি এমন স্থানগুলিকে চিহ্নিত করে যা ধর্মীয় বিশ্বাস ও প্রথার সঙ্গে সম্পর্কিত। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হয়েছে এই অধ্যায়ে, যেখানে ভারতবর্ষকে তীর্থভূমি হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। অন্যদিকে ইসলাম, খ্রিস্টান, ইহুদি এবং হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ- এই ধর্মগুলি নিয়ে একটি নয়া অধ্যায় রাখা হয়েছে।

    স্থান পেয়েছে মহাকুম্ভ

    নতুন সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে (NCERT) দাবি করা হয়েছে, ‘বর্ণ-জাতি ব্যবস্থা’ প্রাচীন ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা প্রদান করলেও, পরে তা বৈষম্যের আকার নেয়। বিশেষত ব্রিটিশ শাসনের অধীনে কঠোর হয়ে ওঠে। ২০২৫ সালে উত্তরপ্রদেশে অনুষ্ঠিত হওয়া মহাকুম্ভ সম্পর্কেও উল্লেখ রয়েছে বইতে। এখানেই বলা হয়েছে ৬৬ কোটি মানুষ এই বিরাট ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন।

    নাগরিকদের বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনও স্থান পেয়েছে (Indian Heritage)

    ভারতের সংবিধান সম্পর্কিত একটি অধ্যায় স্থান পেয়েছে বইটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘একটা সময় ছিল যখন সাধারণ নাগরিকদের বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুমতি ছিল না। কিন্তু পরে ২০০৪ সালে এই নিয়মের পরিবর্তন করা হয়। নাগরিকদের নিজেদের দেশের প্রতি গর্ব প্রকাশ করতে বাড়িতে জাতীয় পতাকা তোলার আর্জি জানান। সুপ্রিম কোর্টও এবিষয়ে সম্মতি জানিয়ে বলেছিল যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করাও মৌলিক অধিকারের অঙ্গ। বর্তমানে আমরা গর্বের সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে তেরঙ্গা উড়াতে পারি, এটা মাথায় রেখেই যে জাতীয় পতাকার যাতে কোনও অসম্মান না হয়।’’ এনসিইআরটি কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে আরও জানিয়েছেন, এই সংশোধনী কেবল বইয়ের প্রথম অংশের জন্য করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশের সংশোধনী আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছে এনসিআরটি।

    ভারতের উন্নয়নের একাধিক প্রকল্প স্থান পেয়েছে

    একই সঙ্গে নয়া পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় (NCERT) আনা হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক এবং সামাজিক পরিবর্তনগুলিকে। এই বইতে স্থান পেয়েছে মোদি সরকারের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বগুলিও। যথা মেক-ইন-ইন্ডিয়া, বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও, একই সঙ্গে অটল টানেলের মতো ভারতবর্ষের বড় পরিকাঠামোগত সাফল্যগুলিও এই বইতে স্থান পেয়েছে। এনসিআরটি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই অধ্যায়গুলির সংযোজনের আসল লক্ষ্য হল- ছাত্র-ছাত্রীদের অবগত করানো দেশের উন্নয়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং মাইলস্টোনগুলিকে।

    ভারতীয় লেখকদের লেখা প্রাধান্য পেয়েছে

    প্রসঙ্গত, সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ইংলিশ কারিকুলাম বিষয়টিও সংশোধন করা হয়েছে। আগের পাঠ্যপুস্তকের নাম ছিল Honeycomb. বর্তমানে তা বদলে করা হয়েছে Poorvi. আগের Honeycomb-এ ১৭টি অংশ ছিল সাহিত্যের। যার মধ্যে মাত্র চারটি ছিল ভারতীয় লেখকদের অধ্যায়। নতুন Poorvi-তে পনেরোটি বিভিন্ন গল্প ও কবিতা রয়েছে। যেগুলির মধ্যে ৯টি লেখা রয়েছে ভারতীয় লেখকদের। এখানেই স্থান পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং এপিজে আবদুল কালামের লেখা। বিদেশীদের মধ্যে স্থান পেয়েছে রাসকিন বন্ডের লেখা।

LinkedIn
Share