Tag: Indias linguistic heritage

  • Amit Shah: ‘‘ইংরেজিতে যাঁরা কথাবার্তা বলেন, তাঁরা খুব শীঘ্রই লজ্জিত হবেন’’, ভারতীয় ভাষার পক্ষে সওয়াল শাহের

    Amit Shah: ‘‘ইংরেজিতে যাঁরা কথাবার্তা বলেন, তাঁরা খুব শীঘ্রই লজ্জিত হবেন’’, ভারতীয় ভাষার পক্ষে সওয়াল শাহের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় ভাষাগত ঐতিহ্যের পুনরুত্থানের আওয়াজ তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তিনি জানান যে, ভারতবর্ষের নিজস্ব পরিচয় হল তার ভাষা। এই দেশের ভাষাগুলি, এ দেশের পরিচয়কে বহন করে। তাই ভারতীয় ভাষাগুলিকে সর্বদাই বিদেশি ভাষার থেকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। “ম্যাঁ বুঁদ স্বয়ং, খুদ সাগর হুঁ” নামের একটি বই লিখেছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার আশুতোষ অগ্নিহোত্রী। এই বইটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই তিনি বলেন যে, ‘‘ভারতবর্ষ থেকে উপনিবেশিকতার প্রভাব এবং ছাপ, দুটিকে মুছে ফেলতে হবে এবং আমাদের যে নিজস্ব ভাষা রয়েছে, সেগুলিকে আঁকড়ে ধরতে হবে গর্বের সঙ্গে (Linguistic Heritage)।’’

    ইংরেজিতে যাঁরা কথাবার্তা বলেন, তাঁরা খুব শীঘ্রই লজ্জিত হবেন

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah) নিজের ভাষায় বলেন, ‘‘আমাদের দেশে যাঁরা এখনও পর্যন্ত ইংরেজিতে কথাবার্তা বলেন, তাঁরা খুব শীঘ্রই লজ্জিত হবেন। সেই সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠতে আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। আমার মনে হয়, আমাদের দেশের যে সমস্ত ভাষা রয়েছে, সেগুলি হল আমাদের সংস্কৃতির মণি-মাণিক্য। আমাদের নিজস্ব ভাষা ছাড়া আমরা নিজেদেরকে প্রকৃত ভারতীয় বলতে পারবই না।’’

    আমাদের দেশকে পরিচালিত করব আমাদের নিজস্ব ভাষা দিয়ে

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah) সমগ্র দেশবাসীর কাছে আবেদন জানান যে, বিদেশি ভাষাগুলিকে আঁকড়ে না ধরে যেন তাঁরা ভারতীয় ভাষা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকেই আঁকড়ে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশকে বুঝতে হলে, আমাদের সংস্কৃতিকে বুঝতে হলে, আমাদের ইতিহাসকে বুঝতে হলে এবং আমাদের ধর্মকে বুঝতে হলে, তা বিদেশি ভাষায় বোঝা যাবে না। বিদেশি ভাষা সম্পূর্ণভাবে আমাদের কল্পনায় আনতে পারবে না সমগ্র ভারতকে। আমি সম্পূর্ণভাবে জানি, এই লড়াই কতটা কঠিন। কিন্তু আমি এখানে আত্মবিশ্বাসী ও আশাবাদী যে ভারতীয় সমাজ একদিন এটাতে জিতবেই। আরও একবার বলতে চাই, আত্মমর্যাদার সঙ্গে বলতে চাই—আমরা আমাদের দেশকে পরিচালিত করব আমাদের নিজস্ব ভাষা দিয়ে, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি (Linguistic Heritage) দিয়ে। এবং সেই মাধ্যমেই আমরা গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেব।’’

    পঞ্চপ্রাণ নীতির কথাও উঠে আসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষণে

    এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Amit Shah) বক্তব্যে উঠে আসে পঞ্চপ্রাণ নীতির আদর্শ এবং তাৎপর্য। প্রসঙ্গত, এই পঞ্চপ্রাণ নীতির কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং এই নীতির মাধ্যমেই আগামীর ভারত গড়ে উঠবে বলে আত্মবিশ্বাসী অমিত শাহ। প্রসঙ্গত, পঞ্চপ্রাণ নীতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন ২০৪৭ সালের জন্য, যখন এই দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান করবে। এ নিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদিজি আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন পঞ্চপ্রাণ নীতি। স্বাধীনতার অমৃতকালে এর মাধ্যমে আমরা তৈরি করব একটি উন্নত ভারত, যেখানে সম্পূর্ণভাবে আমরা মুছে দেব উপনিবেশিকতা এবং দাসত্বের সমস্ত চিহ্ন। আমরা গর্বিত হব আমাদের প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে নিয়ে। একই সঙ্গে আমরা আমাদের এই দেশের ঐক্য, সংহতি বজায় রাখব এবং প্রতিটি নাগরিকই নিজের কর্তব্য পালন করবেন। এই পঞ্চপ্রাণ নীতি ১৩০ কোটি জনগণের কাছে আজ একটি সংকল্পপত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব এবং আমাদের ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে উন্নত ভারত গঠনে।’’

    ঔপনিবেশিক ছাপ মুছে ফেলতে দরকার প্রশাসনিক সংস্কার

    একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন প্রশাসনিক সংস্কারের কথাও বলেন এবং তিনি জানান যে, বর্তমানকালে প্রয়োজন হয়েছে প্রশাসনিক আধিকারিকদের যে প্রশিক্ষণব্যবস্থা রয়েছে, তাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে অনেক ক্ষেত্রেই এখনও উপনিবেশিকতার ছাপ দেখা যাচ্ছে।’’ এগুলো মুছে ফেলতে হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদেরকে সেই সংস্কার আনতেই হবে।’’

    ভাষা সংরক্ষণে সাহিত্যের গুরুত্ব

    একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন সাহিত্যের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেন এবং বলেন, ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে সংরক্ষণ করতে সাহিত্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’’ তাঁর নিজের ভাষায়, ‘‘যখন আমাদের দেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল, বিদ্যুতের আলো ছিল না, তখনও এ দেশে সাহিত্য রচনা হত, বাতি বা প্রদীপের আলোয়। সেই সময়েও দেশে সাহিত্য রচিত হয়েছে ধর্ম ও স্বাধীনতা, সংস্কৃতিকে ঘিরে। এর পরে সরকার বদলেছে, সরকার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেই সাহিত্যের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলেনি। কিন্তু যখনই কেউ আমাদের ধর্মকে, সংস্কৃতিকে বা সাহিত্যকে আঘাত করতে চেয়েছে, আমাদের সমাজ সর্বদাই তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। শুধু দাঁড়ায়নি, তাদেরকে পরাস্ত করেছে। কারণ সাহিত্যই হল আমাদের সমাজের আত্মা।’’

LinkedIn
Share