মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এভাবে চলতে পারে না।” রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে কথাগুলি বললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকে। রাজ্যপাল হিসেবে সব কিছু বিবেচনা করে দেখা উচিত, মাঠে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে তবেই কিছু সুপারিশ করা উচিত আমার। রাজ্যপাল হিসেবে কী সুপারিশ করব, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি (Nagrakata Issue)।”
গ্রাউন্ড জিরোর পরিস্থিতি আমি জানি (CV Ananda Bose)
পরে তিনি বলেন, “গ্রাউন্ড জিরোর পরিস্থিতি আমি জানি। সব রিপোর্ট পাঠানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, গুরুতর কিছু ঘটেনি। আমি জানি গুরুতর ঘটনা ঘটেছে। আমি নিজে এলাকায় গিয়ে কথা বলি মানুষের সঙ্গে, তাঁদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করি। বাংলায় যা ঘটছে, তা হওয়া উচিত নয়। না বলার সময় এসেছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করার সময় এসেছে।” প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটায় বানভাসিদের ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শঙ্করের আঘাত ততটা গুরুতর না হলেও বিজেপির উপজাতি সম্প্রদায়ের নেতা খগেনের আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না
উত্তরবঙ্গের বন্যা দুর্গতদের দেখতে বুধবারই রাজ্যপাল গিয়েছিলেন শিলিগুড়িতে। সেখান থেকে তিনি (CV Ananda Bose) হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিজেপির জখম দুই বিধায়ককে দেখতে। পরে সটান চলে যান রাষ্ট্রপতি ভবনে। সেখানে তিনি সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাও হয়েছে বলে জানান রাজ্যপাল। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল। তিনি জানান, রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কথা হলেও, ৩৫৬ ধারা বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তাঁর সাফ কথা, “রাজ্যে যে একাধিক জায়গায় গুন্ডারাজ চলছে, তা পরিষ্কার। এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না (Nagrakata Issue)।”
মমতা-রাজ্যপাল সম্পর্ক
রাজ্যপাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর পেশাদার সম্পর্ক অটুট রয়েছে। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাও রয়েছে, যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। কিন্তু গোটা রাজ্যের আনাচে-কানাচে যা ঘটছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। এর পরেই রাজ্যপাল (CV Ananda Bose) বলেন, “গ্রাউন্ড জিরোর পরিস্থিতি আমি জানি। বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়ে আমজনতার সঙ্গে কথাও বলেছি আমি। পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে, সে সম্পর্কে আমি যথেষ্ট অবগত।” তিনি জানান, আগামিদিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক-সহ আর যেখানে যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন, সেখানেও যাবেন। উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় পরিস্থিতি নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। রাজনৈতিক দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপে না গিয়ে, পরিস্থিতি মোকাবিলার রাস্তা খুঁজতে হবে বলেও জানান সিভি আনন্দ বোস।
হেল্পলাইন নম্বর
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দুর্গত এলাকায় নজরদারি ও প্রশাসনিক তৎপরতা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এজন্য গঠন করা হয়েছে একটি র্যাপিড অ্যাকশন সেল। সাহায্যের জন্য যোগাযোগের ঠিকানাও দেওয়া হয়েছে রাজভবনের তরফে। ফোন করতে পারেন ০৩৩–২২০০১৬৪১ এই নম্বরে। ই-মেল করা যাবে পিসরুমরাজভবন@জিমেল.কম-এ। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাই হোক কিংবা অন্য কোনও রাজনৈতিক সংঘর্ষ, তিনি বারংবার মানুষের পাশে থাকতে ছুটে গিয়েছেন। কথা বলেছেন বিপন্ন মানুষদের সঙ্গে (Nagrakata Issue)। এদিন সেকথাও মনে করিয়ে দেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে, এবারও তিনি সেই একই কাজ করেছেন। এর পরেই তিনি (CV Ananda Bose) বলেন, “বাংলার আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।”

