Tag: Jammu Kashmir

Jammu Kashmir

  • Russia’s Victory Day Parade: সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি! মোদির পর রাশিয়া সফর বাতিল রাজনাথের, ভারত থেকে যাচ্ছেন কে?

    Russia’s Victory Day Parade: সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি! মোদির পর রাশিয়া সফর বাতিল রাজনাথের, ভারত থেকে যাচ্ছেন কে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও কাণ্ডের জেরে আগেই রুশ সফর বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির পরিবর্তে রাজনাথের ৯ মে মস্কো সফরে যাওয়ার কথা ছিল। এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও রাশিয়ার বিজয় দিবসের (Russia’s Victory Day Parade) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মস্কো যাচ্ছেন না। অন্তত সূত্রের খবর এমনই। আগামী সপ্তাহেই রাশিয়ায় বিজয় দিবস পালন করার কথা। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। জানানো হয়, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সূত্রের খবর, এই সফর বাতিল করতে চলেছেন রাজনাথ সিং। তাঁর জায়গায় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন বলেও খবর। জানা গিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার পরে উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

    রাশিয়ায় বিজয় দিবসের গুরুত্ব

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী (MoS) সঞ্জয় শেঠ। মস্কোর ওই অনুষ্ঠানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ বিশ্বের প্রায় ২০ দেশের প্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথা আছে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার পরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। যে কোনও সময় পাল্টা জবাব দিতে পারে নয়াদিল্লি। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই রাজনাথও তাঁর মস্কো সফর বাতিল করতে চলেছেন। ইতিমধ্য়েই পহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এই হামলাকে নৃশংস অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়ার সমর্থন যে ভারতের সঙ্গে রয়েছে সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন পুতিন।

    ভারতের পাশে রাশিয়া

    প্রধানমন্ত্রী মোদির মস্কো সফর না করার সিদ্ধান্তের কারণ স্পষ্ট করেনি রাশিয়া (Russia’s Victory Day Parade)। রাশিয়ার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ও কুচকাওয়াজে বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা এবং সামরিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি গত বছর দুবার রাশিয়া সফর করেছিলেন। একবার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য এবং দ্বিতীয়বার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য। এই বছরের শেষের দিকে পুতিন দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত আসতে পারেন।

    যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন পাকিস্তানের

    সীমান্তে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। এই নিয়ে টানা নবমবার বিনা প্ররোচনায় সীমান্তে গুলি ছুড়ল পড়শি দেশ। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শুক্রবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারা, উরি এবং আখনুর সেক্টরে গুলি ছুড়তে শুরু করে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও। পহেলগাঁও হামলার পরও নাগাড়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। এই নিয়ে দিন তিনেক আগেই সতর্ক করেছে ভারত। তবে সোজা পথে আসার বান্দা নয় পড়শি দেশ। ফের চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে সে দেশের সেনা।

    প্রত্যাঘাতের দাবি

    পহেলগাঁওয়ে হত্য়ালীলার (Pahalgam Terror Attack) পর প্রত্যাঘাতের দাবি দেশজুড়ে। তিন বাহিনীও বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা আঘাত হানতে প্রস্তুত। নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিচ্ছেন, কল্পনাতীত শাস্তি হবে। বিরোধীরাও জোটবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার পক্ষে!প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় কাঁপছে পাকিস্তানও। অজ্ঞাতবাস নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়ার পর আচমকা প্রকাশ্য়ে এসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানও বোঝানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা প্রস্তুত। এদিকে, পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ১১ দিন পরেও অধরা হামলাকারী জঙ্গিরা। কিন্তু কোনওভাবেই কাউকে যে ছাড়া হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে জঙ্গিদের খোঁজে উপত্যকা জুড়ে চলছে চিরুনি তল্লাশি। বিভিন্ন জঙ্গলে ও দুর্গম এলাকায় যৌথ অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। শ্রীনগরের আকাশ দিয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের দিকে ঘন ঘন উড়ছে সেনাবাহিনীর চপার! শুক্রবারও উপত্যকায় ছিলেন এনআইএ-র ডিজি সদানন্দ দাতে। এদিনও তিনি যান ঘটনাস্থলে। জরুরি বৈঠক করেন তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে।

    সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি

    ইতিমধ্যেই কাশ্মীর ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর মানুষ যুদ্ধের ‘প্রস্তুতি’ শুরু করেছেন। উভয় পক্ষই নিজেদের বাঁচানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতের দিকে চুরান্ডা এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠির মতো গ্রামগুলি সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় বাঙ্কার এবং সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করছে। জানা গিয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের স্থানীয় প্রশাসন সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারীদের দুই মাসের জন্য খাদ্যশস্য মজুত করার আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ার-উল-হক বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অবস্থিত ১৩টি নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের দু’মাস খাদ্যশস্য রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের মৌলিক চাহিদার কথা মাথায় রেখে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিলও গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকার রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকেও মোতায়েন করা হচ্ছে। কার্যত সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলছে প্রশাসন। পাকিস্তানে আতঙ্কের পরিস্থিতি এমন যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ১০০০ জঙ্গি ঘাঁটি বন্ধ করেছে পাকিস্তান। জঙ্গিদের সেখান থেকে সরানো হয়েছে। এছাড়া পাঞ্জাব থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। বড় শহরগুলির আকাশসীমাও প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পর্বে সাইরেনও লাগানো হচ্ছে। সদা সতর্ক রয়েছে ভারতীয় সেনাও।

  • Netherlands: পহেলগাঁও হামলার নিন্দা, পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ নেদারল্যান্ডসে

    Netherlands: পহেলগাঁও হামলার নিন্দা, পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ নেদারল্যান্ডসে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে ২৬ হিন্দু পর্যটককে হত্যার ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) দ্য হেগ শহরে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ একত্রিত হয়ে এক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন। এই প্রতিবাদের আয়োজন করে গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স (GHRD) এবং হেট লিখ্‌ট নেদারল্যান্ডস। নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই প্রতিবাদে সমবেত হন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আওয়াজিত এই সমাবেশের শুরুতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

    পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

    ‘শান্তি ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক রাজধানী’ হিসেবে খ্যাত দ্য হেগ শহর। এখানেই পহেলগাঁও হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাস দমনে একত্রিত হন বহু মানুষ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই হিন্দু ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুসারে একটি প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করা হয়। এরপর শান্তি মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ আনেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ডাচ সরকারের কাছে সন্ত্রাস দমনে জোরালো পদক্ষেপের আহ্বান জানান এখানে উপস্থিত সকলে। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তান-ভিত্তিক গোষ্ঠীর দ্বারা সীমান্ত পার সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার প্রদর্শন করেন। তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীরা পহেলগাঁওয়ে হামলার জন্য পাকিস্তানের সমালোচনা করেন। জোর দিয়ে বলেন যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের পৃথিবীতে কোনও স্থান নেই।

    মানবতার হয়ে সওয়াল

    একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “এটা শুধু প্রতিবাদ নয়, এটা ছিল মানবতার পক্ষ থেকে একটি সম্মিলিত আবেদন – আমরা ন্যায়বিচার চাই এবং শান্তির বিজয় নিশ্চিত করতে চাই।” একজনের কথায়, “নীরবতা মানে অপরাধে অংশগ্রহণ। আমাদের এই প্রতিবাদ বিশ্ববাসীর জন্য একটি জাগরণী বার্তা – ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নিরীহ মানুষদের উপর এই ধরনের আক্রমণ আমরা মেনে নিতে পারি না।” মোমবাতির আলো ও শান্তি মন্ত্রের সুরে মোড়ানো এই প্রতিবাদ শুধু এক শোকসভা ছিল না, বরং এটি বিশ্বব্যাপী এক দৃঢ় বার্তা দেয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোই আজকের সময়ের প্রয়োজন, বলে মন করে প্রতিবাদকারীরা।

  • India-Pakistan Conflict: পাক বিমানকে ‘লক্ষ্যভ্রষ্ট’ করতে সীমান্তজুড়ে জিপিএস জ্যামার মোতায়েন ভারতের

    India-Pakistan Conflict: পাক বিমানকে ‘লক্ষ্যভ্রষ্ট’ করতে সীমান্তজুড়ে জিপিএস জ্যামার মোতায়েন ভারতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan Conflict) পশ্চিম সীমান্তে অত্যাধুনিক জ্যামার বসাল ভারত। এর ফলে পাকিস্তানি সেনার বিমান যে ‘গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম’ (জিএনএসএস) ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান স্থির করে, তা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ক্ষমতাও কমিয়ে দেবে। উপগ্রহ-নির্ভর নেভিগেশন সিস্টেমগুলো ব্যাহত হওয়ায় দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

    ভারতের সর্বাধুনিক জ্যামিং প্রযুক্তি, বেকায়দায় পাকিস্তান

    নয়াদিল্লির একটি সূত্র বলছে, পাকিস্তানের সেনাবিমান লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান জানার জন্য জিপিএস (আমেরিকা), গ্লোনাস (রাশিয়া), বেইডু (চিন)— এই তিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কিন্তু এই তিন প্রযুক্তিকেই মাত দিতে পারে ভারতের জ্যামিং প্রযুক্তি, এমনটাই দাবি করছে ওই সূত্র। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে পাকিস্তান সেনা তার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে ব্যর্থ হতে পারে। সেই লক্ষ্যবস্তুর বিষয়ে যথাযথ তথ্য থেকেও বঞ্চিত হতে পারে তারা। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশির ভাগই হিন্দু পর্যটক। এরপরই ভারত ২০২১ সালের যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। দ্রুত মোতায়েন করা হয়েছে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম, যার মাধ্যমে জিপিএস, গ্লোনাস এবং ভারতীয় ‘নাবিক’-সহ বিশ্বব্যাপী ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিগন্যালকে ব্যাহত করা হচ্ছে।

    জ্যামারের কাজ কী

    ভারত-পাক সীমান্তে পাক খাচ্ছে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমানকেই আকাশ প্রতিরক্ষায় পাঠিয়েছে পাকিস্তান। এফ-১৬ সহ একাধিক পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানকেও পাক খেতে দেখা গিয়েছে। ভারত হাত গুটিয়ে থাকার পাত্র নয়। সীমান্তে পাকিস্তানের জারিজুরি কৌশলকে আটকে দিতে এবং যুদ্ধবিমানে থাকা ফ্রিকোয়েন্সি যাতে সমস্যায় পড়ে, তার জন্য ভারতীয় সীমানায় মোতায়েন করা হল অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির জ্যামার সিস্টেম। জ্যামারের কাজই হল, বিমানের ফ্রিকোয়েন্সিকে আটকে দেওয়া। জ্যামার থাকলে বিমান এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যায় পড়বে, আকাশে বিভ্রান্ত হয়ে পাক খেতে হবে। সীমান্তে এই উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির জ্যামার নিয়ে যাওয়ায় পাক বায়ুসেনা আকাশপথে অনেকটাই বিপাকে পড়বে বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

    কীভাবে কাজ করে এই জ্যামিং সিস্টেম

    জ্যামার মূলত শক্তিশালী রেডিও সিগন্যাল নির্গত করে, যা উপগ্রহ থেকে নির্দিষ্ট যন্ত্রে (যেমন যুদ্ধবিমান বা ড্রোনে) পাঠানো জিএনএসএস তথ্যকে বিকৃত বা বিঘ্নিত করে। টার্গেটিং সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করে না, প্রিসিশন গাইডেড মিসাইল বা স্মার্ট বোমার সফলতা কমে যায়। রিয়েল-টাইম সিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস বিঘ্নিত হয়।

    ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামের দখলই আসল

    এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, “এলওসি বরাবর সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, কুপওয়ারায় সংঘর্ষ এবং গুজরাটের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (SEZ) কাছাকাছি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা—এই সব কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভবিষ্যতের যুদ্ধে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামের দখলই নির্ধারণ করবে বিজয়ী পক্ষ।” ভারত ইতিমধ্যেই মোতায়েন করেছে ‘সম্যুক্তা’ ইডব্লিউ সিস্টেম (রেঞ্জ ২০০ কিমি), ‘হিমশক্তি’ হিমালয় ও উচ্চ-অঞ্চলে, রাফাল জেটে সংযুক্ত ‘স্পেকট্রা’ ইডব্লিউ স্যুট, নৌবাহিনীর ইডব্লিউ সিস্টেম, ‘কালী-৫০০০’ এবং ডিরেক্টেড এনার্জি অস্ত্র (ডিইডব্লু) ব্যবস্থা।

    চিনের সহায়তার আশায় পাকিস্তান

    অন্যদিকে পাকিস্তান চিনের সহায়তায় গঠিত ‘জারব’ উপকূলীয় ইডব্লিউ সিস্টেম, জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানে যুক্ত ইডব্লিউ প্ল্যাটফর্ম এবং বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ চিনা জ্যামার ব্যবহার করে ভারতীয় ড্রোনকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান বিমান বাহিনী (PAF) তাদের ৫২টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মধ্যে অর্ধেকই সরিয়ে নিয়েছে আরব সাগরের উত্তর উপকূলের পাসনি এয়ারবেসে, যাতে ভারতের রুশ-উৎপাদিত অত্যাধুনিক এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমের রাডার কভারেজ থেকে দূরে রাখা যায়। সাউথ ব্লকের এক আধিকারিকের কথায়, “ভারতের সমন্বিত নজরদারি ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ঝুঁকি এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, পাকিস্তান তাদের সবচেয়ে মূল্যবান বিমানসম্পদ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।” জানিয়েছেন এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

  • India-Pakistan Conflict: সম্মুখ সমরে ভারত-পাকিস্তান! জলে-স্থলে-আকাশে সামরিক শক্তিতে কে, কোথায় দাঁড়িয়ে?

    India-Pakistan Conflict: সম্মুখ সমরে ভারত-পাকিস্তান! জলে-স্থলে-আকাশে সামরিক শক্তিতে কে, কোথায় দাঁড়িয়ে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ২৬ জন পর্যটকের নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের (India-Pakistan Conflict) মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সীমান্তে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সামরিক (India-Pakistan Military Strength) শক্তির তুলনা এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারত এবং পাকিস্তান, দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর।

    সক্রিয় সেনাসংখ্যা

    স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সামরিক বাহিনীতে মোট সক্রিয় সদস্য ১৪ লক্ষ। এর মধ্যে সেনাবাহিনীতে ১২ লক্ষ ৩৭ হাজার, নৌবাহিনীতে ৭৫ হাজার ৫০০ এবং বায়ুসেনায় ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯০০, উপকূলরক্ষী বাহিনীতে ১৩ হাজার ৩৫০। এছাড়াও ১৬.১৬ লক্ষ আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য রয়েছে। পাকিস্তানের মোট সেনাসংখ্যা ৭ লক্ষ, সেনাবাহিনীতে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার, বায়ুসেনায় ৭০ হাজার এবং নৌবাহিনীতে ৩০ হাজার। পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী ২.৯১ লাখ সদস্যবিশিষ্ট।

    অস্ত্রভাণ্ডার

    ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে ৯ হাজার ৭৪৩টি কামান রয়েছে। পাকিস্তানের কামানের সংখ্যা ৪ হাজার ৬১৯টি। ভারতের কাছে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক রয়েছে ৩ হাজার ৭৪০টি, পাকিস্তানের ২ হাজার ৫৩৭টি। ভারতের রয়েছে ১,৪৩৭টি ফিক্সড-উইং বিমান, ৯৯৫টি হেলিকপ্টার, ৭,০৭৪টি সাঁজোয়া যান এবং ১১,২২৫টি আর্টিলারি। পাকিস্তানে ৮১২টি ফিক্সড-উইং বিমান, ৩২২টি হেলিকপ্টার, ৬,১৩৭টি সাঁজোয়া যান এবং ৪,৬১৯টি আর্টিলারি রয়েছে। সাঁজোয়া যানে ভারতে কিছুটা অগ্রাধিকার থাকলেও খুব বেশি পার্থক্য নেই।

    পারমাণবিক শক্তি

    ভারত মূলত স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম। এছাড়া আকাশপথেও পারমাণবিক বোমা বহন করতে পারে এবং সাবমেরিন থেকে পারমাণবিক হামলার সক্ষমতাও গড়ে তুলছে। ভারতের কাছে মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল আছে এবং আন্তঃমহাদেশীয় মিসাইল পরীক্ষাধীন। ভারতের কাছে ১৮০টি ওয়ারহেড রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রে বা রকেটের যে অংশটিতে রাসায়নিক, জৈবিক বা পারমাণবিক বিস্ফোরক ভরে শত্রুপক্ষের দিকে ছোড়া হয়, সেটিকে ওয়ারহেড বলা হয়। পাকিস্তানের ওয়ারহেডের সংখ্যা ১৭০। পাকিস্তান স্থলভিত্তিক ও আকাশপথে পারমাণবিক অস্ত্র ছুড়তে সক্ষম। তাদের ছোট, মাঝারি ও নিকট পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে। সাবমেরিন থেকে পারমাণবিক ক্রুজ মিসাইল ছোড়ার সক্ষমতা নেই পাকিস্তানের।

    বায়ুসেনা

    বিশ্বতালিকায় ভারতের বায়ুসেনার স্থান চতুর্থ। ভারতের কাছে রয়েছে ২,২২৯টি এয়ারক্র্যাফট। সেখানে পাকিস্তানের রয়েছে মাত্র ১,৩৯৯টি। শত্রুর বুকে আঘাত হানতে যে কোনও সময় ওড়ার জন্য প্রস্তুত ভারতের ৫১৩টি যুদ্ধবিমান। সেখানে পাকিস্তানের রয়েছে ৩২৮টি। ভারতের হাতে অ্যাটাকিং যুদ্ধবিমান রয়েছে ১৩০টি, ৮৯৯টি হেলিকপ্টার ও ৮০টি অ্যাটাকিং কপ্টার। সেখানে পাকিস্তানের মাত্র ৯০টি অ্যাটাকিং যুদ্ধবিমান, ৩৭৩টি হেলিকপ্টার ও ৫৭টি অ্যাটাকিং কপ্টার।

    নৌসেনা

    নৌবহরের দিক থেকেও পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করতে তৈরি ভারত। দেশের একদিকে ভারত মহাসাগর, অন্যদিকে আরব সাগর। ফলে বিরাট সমুদ্র অঞ্চলে কড়া নজরদারি চালাতে ভারতের নৌবহর বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় বিরাট শক্তিশালী। নৌবহরে বিশ্বে ষষ্ঠস্থানে ভারত। আর পাকিস্তান ২৭ তম স্থানে। ভারতের কাছে যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে ২৯৩টি। সেখানে পাকিস্তানের ১২১টি। ভারতের রয়েছে দুটি এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার – আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং আইএনএস বিক্রান্ত। যা পাকিস্তানের নেই। এছাড়া ভারতের ১৮টি ডুবোজাহাজ, পাকিস্তানের ৮টি। ভারতের ১৩টি ডেস্ট্রয়ার, পাকিস্তান ০। ভারতের ফ্রিগেট ১৪টি, পাকিস্তানের ৯টি, করভেট রয়েছে ভারতের ১৮টি, পাকিস্তানের ৯টি। এবং টহলদারি ভেসেল ভারতের ১৩৫টি ও পাকিস্তানের ৬৯টি।

    প্রতিরক্ষা বাজেট

    ২০২৫ সালে ভারতের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ৬.৮ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে সেনার আধুনিকীকরণের জন্য বরাদ্দ হয় ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা। দেশের মোট জিডিপি-র ১.৯ শতাংশ সামরিক খাতে বরাদ্দ করে ভারত। আর বাজেটের ১৩.৪৫ শতাংশ। অন্য দিকে, ২০২৪ সালে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা খাতে ২.১২ লক্ষ কোটি বরাদ্দ করেছিল, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৬৪ হাজার ৮২ কোটি টাকা। দেশের জিডিপি-র ১.৭ শতাংশ তারা প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করে।

    গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স

    গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের চলতি বছরের সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান চতুর্থ। অন্যদিকে, গত বছরও বিশ্ব তালিকায় ৯ নম্বর স্থানে ছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে চলতি বছরে পাকিস্তান নেমে গিয়েছে ১২ নম্বরে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স (GFP)-এর তথ্যে ভারতের (PwrIndx) স্কোর ০.১১৮৪ এবং পাকিস্তানের স্কোর ০.২৫১৩। এখানে ০.০০ স্কোর সবচেয়ে ভালো বলে ধরা হয়।

    সামরিক আধুনিকীকরণ

    ফেব্রুয়ারি ২০১৯-এ পুলওয়ামায় সিআরপিএফ-এর কনভয়ে আত্মঘাতী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারত পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছিল।স২০১৯ সালের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই সামরিক আধুনিকীকরণে মনোযোগী হয়েছে। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। রাশিয়া প্রধান সরবরাহকারী হলেও, ভারত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইজরায়েল এবং দেশীয় উৎপাদনের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে — যার মধ্যে রয়েছে বিমানবাহী রণতরী, সাবমেরিন এবং হেলিকপ্টার।

  • Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলার পাল্টা জবাব প্রস্তুত, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে না গিয়ে নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়ার পথে দিল্লি?

    Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলার পাল্টা জবাব প্রস্তুত, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে না গিয়ে নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়ার পথে দিল্লি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পেরিয়ে গিয়েছে এক সপ্তাহ। কাশ্মীরে পহেলগাঁওয়ে নিরীহ হিন্দুদের হত্যাকাণ্ডের ঘাতকদের খোঁজ চলছে। বৈসরন উপত্যকার জঙ্গি হানায় ২৫ জন হিন্দু পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু ঘিরে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ উত্তেজনার পারদ এখনও চড়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে উপত্যকা জুড়ে চলছে সেনা তৎপরতা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী যুদ্ধের সীমা না পেরিয়ে দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে আঘাত হানার দিকেই এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (CCS)-এর দ্বিতীয় বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

    পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়িয়ে নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ

    এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC)-তে ছোট অস্ত্র দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর “উস্কানিমূলক” গুলিবর্ষণের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ডিজিএমও হটলাইনে ভারতীয় সেনাবাহিনী কড়া বার্তা দেয়। মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তান আবার উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে এবং জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে পারগওয়াল সেক্টরে গুলিবর্ষণ শুরু করে। একজন সেনা কর্মকর্তা জানান, “আমাদের বাহিনী সব ধরনের সংঘর্ষবিরোধ লঙ্ঘনের জবাব দ্বিগুণ শক্তিতে দিচ্ছে।” মঙ্গলবার নিজের বাসভবনে সামরিক আধিকারিক এবং গুরুত্বপূর্ণ আমলাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে সেনাবাহিনীকে পরবর্তী বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী মোদি তিন বাহিনীর প্রধানদের “সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা” দেওয়ার ফলে এখন বিষয়টি আর “পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না” নয়, বরং “কখন নেওয়া হবে”—এই প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “পাল্টা জবাবের পরিকল্পনা ও ধাপে ধাপে প্রতিক্রিয়ার কৌশল প্রস্তুত রয়েছে। এটি কোনো আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়া নয়, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়িয়ে বরং হিসেব করে নেওয়া, বিশ্বাসযোগ্য এবং নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ।” বুধবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।

    সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি ঘাঁটিতে হানা

    গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তান সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যেই ইসলামাবাদ তার বাহিনী মোতায়েন করেছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সক্রিয় করেছে—ফলে চমকের উপাদান প্রায় নেই। তা সত্ত্বেও, ভারতীয় সেনা ১৫৫ মিমি কামান, ১২০ মিমি মর্টার এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি ঘাঁটি ও সন্ত্রাসী লঞ্চপ্যাডে আঘাত হানার উপযোগী অবস্থানে রয়েছে।

    দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার

    একজন কর্মকর্তা আরও জানান, “নিয়ন্ত্রণ রেখা না পার হয়েও দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা সম্ভব। পাকিস্তানি বাহিনী ১৫৫ মিমি গোলাবারুদের ঘাটতির মধ্যে রয়েছে, যা তারা ইউক্রেনে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে রফতানি করছে।” এছাড়া, সীমিত স্থল অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা-স্পেশাল ফোর্স অংশ নিতে পারে—যেমন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, যেখানে চারটি আলাদা স্থানে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হানা হয়েছিল। বিমানে হামলা—যেমন ২০১৯ সালের বালাকোট স্ট্রাইক—এবারও বিকল্প হতে পারে, যদিও তা কিছুটা উত্তেজনা বাড়াতে পারে। এবার ভারতের হাতে রয়েছে আধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান, যেগুলো স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল, ইসরায়েলি ক্রিস্টাল মেজ ও স্পাইস ২০০০-এর মতো আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত।

    সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গ

    এছাড়া, ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট বৈঠকে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে পাকিস্তানের ওপর একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি হাই কমিশনের কার্যক্রম সীমিত করা এবং ভারতে অবস্থানরত সব পাকিস্তানি নাগরিকের ভিসা বাতিল। পহেলগাঁও কাণ্ডের আবহে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি)। নিয়ন্ত্রণরেখায় বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করেছে পাক সেনা। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, কাশ্মীরের কুপওয়ারা এবং বারামুলা জেলার কাছে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর প্রান্ত থেকে বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ শুরু করেছে পাকিস্তানি সেনা। কাশ্মীরের আখনুর সেক্টরের বিপরীত প্রান্ত থেকেও গুলি চালিয়েছে পাক ফৌজ। তার জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। প্রসঙ্গত, এলওসি এলাকায় সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করতে ২০০৩ সালে একমত হয়েছিল নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি চুক্তি পুনর্নবীকরণ করেছিল। খাতায়কলমে এই নিয়ম এখনও বহাল। কিন্তু, অতীতেও দু’দেশের সেনা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে।

    উপত্যকা জুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান

    কুলগাঁও, ত্রাল, সোপিয়ান-পুলওয়ামার মতো চারটি স্থানে সেনা অভিযান হয়েছে। ত্রালের অদূরে জঙ্গলে একটি জঙ্গিদলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর। তাদের সঙ্গে সেনা ও পুলিশের যৌথবাহিনীর গুলির লড়াই শুরু হয়েছে। বৈসরনে হামলায় জড়িত সন্দেহে ১৫ জন স্থানীয়কে গ্রেফতার করে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বয়ান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে সরকারি সূত্রের দাবি। ধরপাকড়ের পাশাপাশি বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন লস্কর জঙ্গির বাড়ি নিরাপত্তাবাহিনী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে।

    পহেলগাঁও প্রসঙ্গ রাষ্ট্রপুঞ্জে

    পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ তুলে রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানকে ‘দুর্বৃত্ত দেশ’ (রোগ স্টেট) বলে সমালোচনায় বিঁধেছে ভারত। ২০০৮ সালে ২৬/১১ মুম্বই হামলার পরে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হানাতেই সবচেয়ে বেশি নিরস্ত্র মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। ভারতের প্রতি সংহতির বার্তা দিয়েছে।

  • Jammu Kashmir: জম্মু-কাশ্মীরে তীব্র গতিতে চলছে জঙ্গি নিকেশ অভিযান

    Jammu Kashmir: জম্মু-কাশ্মীরে তীব্র গতিতে চলছে জঙ্গি নিকেশ অভিযান

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জঙ্গি নিকেশ করতে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu Kashmi) একেবারে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে মোদি সরকার। পহেলগাঁও হামলার পরবর্তীকালে ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের খতম করতে বদ্ধপরিকর দিল্লি। এই কারণে জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান (Jammu Kashmi) পরিচালনা করা হচ্ছে তীব্র গতিতে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অভিযান জোরকদমে তীব্র গতিতে চলছে। তবে এনিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি সামনে আনছে না প্রশাসন। কারণ এতটাই গোপন রাখা হয়েছে সেই অভিযান।

    কল্পনার থেকেও বেশি শাস্তির কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদি

    পহেলগাঁওতে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা (Counter Terror Operations) ঘটে যেখানে ধর্ম বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত হন ২৬ জন মানুষ। সারাদেশের নাগরিকদের মধ্যে এনিয়ে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। আমেরিকা, ব্রিটেন সমেত অনেক দেশ এই ঘটনার নিন্দা জানায়। হামলার কয়েকদিন পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিহারের মধুবনিতে একটি জনসভা করেন। নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে এই হামলার সঙ্গে যুক্ত এবং হামলার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের কল্পনার থেকেও বেশি শাস্তি হবে। পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এদেরকে তাড়া করা হবে বলেও জানান মোদি।

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাই বাস্তবায়িত হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে

    প্রসঙ্গত জম্মু-কাশ্মীরে বিভিন্ন জেলায় তীব্রগতিতে (Counter Terror Operations) নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভিযান বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যা বলেছিলেন সেটাই বাস্তবায়িত (Jammu Kashmi) হচ্ছে। গত ২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন যে, ভারত সামরিক হামলার (Jammu Kashmi) প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই আবহে মঙ্গলবারই সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এনএসএ, সিডিএস এবং ৩ বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, অজিত দোভাল এবং অনিল চৌহান। কাশ্মীরে কাপুরুষোচিত হামলার পর কীভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া যায়, সেই গুরুত্বপূর্ণ রোডম্যাপই তৈরি করা হয় এই বৈঠকে।

  • Pahalgam Terror Attack: ভারতের ভয়ে বিদেশ পালালেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির! প্রাণভয়ে কোথায় লুকোলেন, জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়

    Pahalgam Terror Attack: ভারতের ভয়ে বিদেশ পালালেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির! প্রাণভয়ে কোথায় লুকোলেন, জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরীহ হিন্দু পর্যটক খুনের (Pahalgam Terror Attack) ঘটনায় আগুনে ফুটছে ভারত। পাকিস্তানের উপর প্রত্যাঘাত শানাতে কূটনৈতিক ও সামরিক— দু’ধরনের প্রস্তুতিই নিচ্ছে নয়াদিল্লি। এরই মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে, ভারতের ভয়ে নাকি পাকিস্তান ছেড়ে সপরিবারে বিদেশ পালিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির (Asim Munir)।

    কোথায় আছেন মুনির

    পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ইসলামাবাদের উপর নয়াদিল্লি চাপ বাড়াতেই সমাজমাধ্যমে জেনারেল মুনিরকে নিয়ে একাধিক খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তেই পাক সেনাপ্রধান দেশে ছেড়ে চম্পট দিয়েছেন বলে জল্পনা তীব্র হয়েছে। সেই কারণেই গত ২ দিন ধরে তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না, দাবি সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের। এ ব্যাপারে স্থানীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলিও একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই সব প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। আর তাই নাকি তাঁর নাম ‘মিসিং ইন অ্যাকশন’ বা এমআইএতে রেখেছে রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দফতর। অনেকে বলছেন, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কিছু অফিসারকে নিয়ে রাওয়ালপিন্ডির একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন জেনারেল মুনির।

    ‘মুনির আউট’ ট্রেন্ডিং

    ‘মুনির আউট’ (Munir Out) হ্যাশট্যাগটি পাকিস্তানসহ ভারতেও ট্রেন্ডিং হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে মুনির এবং তার পরিবার পাকিস্তান ত্যাগ করেছেন। কিছু অনির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, মুনির, আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিক এবং চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি জেনারেল সাহির শামশাদ মিরজা যুক্তরাজ্য ও নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। তবে, এসব তথ্যের কোনও সরকারি প্রমাণ পাওয়া যায়নি।​ যদিও এই দুই খবরই জল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদ। তারা জানিয়েছে ঠিক রয়েছেন মুনির। গত ২৭ এপ্রিল জেনারেল মুনিরের একটি গ্রুপ ছবি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেখানে একাধিক সেনা অফিসার এবং প্রধানমন্ত্রী শরিফের সঙ্গে পাক সেনাপ্রধানকে সামনের সারিতে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল ওই ছবি অ্যাবটাবাদের সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তোলা হয় বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

    পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমত

    পহেলগাঁও হামলার পর ভারত পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতির পাশাপাশি, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমতও তীব্র হয়েছে। অনেক পাকিস্তানি নাগরিক সোশ্যাল মিডিয়ায় মুনিরের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ‘#ResignAsimMunir’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন। একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, মুনির আইএসআইকে পহেলগাঁও হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।​ এদিকে, ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও ‘#PakistanBehindPahalgam’ হ্যাশট্যাগে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

  • Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলরা জবাবে ভারতে নিষিদ্ধ ১৬ পাক ইউটিউব চ্যানেল, নোটিশ বিবিসি-কেও

    Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলরা জবাবে ভারতে নিষিদ্ধ ১৬ পাক ইউটিউব চ্যানেল, নোটিশ বিবিসি-কেও

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terror Attack) জবাবে এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’ ভারতের। এর আগে পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে প্রায় সবরকম কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এবার বেশকিছু পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল (Pakistan Youtube Channel) ব্যান করল ভারত (India)। উল্লেখ্য, এর আগে নিষিদ্ধের তালিকায় ছিল পাকিস্তান সরকারের সোশ্যাল মিডিয়া, এবং পাক সংবাদমাধ্যমের সোশ্যাল সাইট। আর এবার নিষিদ্ধ করা হল পাকিস্তানি সমস্ত ইউটিউব চ্যানেল। ভারতে বসে আর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম বা অন্য কোনও ব্যক্তির ইউটিউব চ্যানেল দেখা যাবে না। এই চ্যানেলগুলির সম্মিলিত গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষপাশাপাশি বিবিসি-কেও চিঠি লিখে সতর্ক করা হয়েছে।

    কোন কোন চ্যানেল বন্ধ

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, সিন্ধু জল চুক্তি, বন্ধ সীমান্ত, পাকিস্তানিদের আর দেওয়া হবে না ভিসা-ও। এবার আরও এক বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের। ডন নিউজ, ইরসাদ ভাটি, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, রফতার, দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স, জিও নিউজ, সামা স্পোর্টস, জিএনএন, উজায়ের ক্রিকেট, উমর চিমা এক্সক্লুসিভ, আসমা সিরাজি, মুনিব ফারুক, শুনো নিউজ, রাজি নামা নামের চ্যানেলগুলি ব্যান করা হয়েছে। ভারতীয় ইউজাররা এখন এসব ইউটিউব চ্যানেল দেখতে গেলে একটি বার্তা দেখতে পাচ্ছেন। দেখাচ্ছে, “এই বিষয়বস্তু এই দেশে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে না, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কারণে সরকারের নির্দেশে সরানো হয়েছে। সরকারি অনুরোধ সম্পর্কে আরও জানতে গুগল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট দেখুন।” প্রসঙ্গত, আজ সরকারি তরফে যে সমস্ত অ্যাকাউন্টের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে অনেক চ্যানেলকেই চিরতরে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের ওই সমস্ত চ্যানেলে কোনওদিন ভারত থেকে ‘অ্যাকসেস’ করা যাবে না। যদিও অ্যাকাউন্ট ব্যানড হলেও সেখানে আপলোড করা অনেক পুরনো ভিডিও ইউটিউবের অ্যাপ ও ওয়েবসাইট—দু’জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে।

    বন্ধ আখতারের চ্যানেলও

    প্রাক্তন ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের চ্যানেলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। যার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ। উল্লেখ্য, রশিদ লতিফ, বাসিত আলির মতো একাধিক ক্রিকেটারের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হলেও ভারতে তাদের বাজার বেশ জনপ্রিয়। কেন্দ্রের কোপে আপাতত সমস্ত চ্যানেলই ‘ব্যানড’। এই তালিকায় রয়েছেন শোয়েব আখতারও। যদিও বাকিদের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’। বিভিন্ন বিষয়ে অকপট মন্তব্যের জন্য দুই মুলুকের তামাম ক্রিকেটভক্তের মধ্যে সুখ্যাতি রয়েছে শোয়েবের।

    কেন বন্ধ চ্যানেলগুলি

    সরকারের অভিযোগ, পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে ভারত, ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক, সাম্প্রদায়িক ও মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। সেই কারণেই ইউটিউব চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হল। সরকারি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সম্প্রতিই কেন্দ্রের নজরে এসেছে যে পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য় সম্প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পর এমন কিছু কন্টেট পোস্ট করা হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বা হিংসার সৃষ্টি করতে পারে। জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলগুলি ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    বিবিসি-র উপর ক্ষুব্ধ সরকার

    অন্যদিকে, কেন্দ্রের তরফে বিবিসি-কেও চিঠি লিখে সতর্ক করা হয়েছে তাদের সংবাদ পরিবেশন নিয়ে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার খবরের শিরোনামে লেখা ছিল “কাশ্মীরের হামলার পর পাকিস্তান ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করল।” এছাড়া সন্ত্রাসবাদী হামলাকেও ‘মিলিট্যান্ট অ্যাটাক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই কেন্দ্রের তরফে বিবিসি ইন্ডিয়ার প্রধান জ্যাকি মার্টিনকে চিঠি লেখা হয় এবং জানানো হয় যে বিদেশ মন্ত্রক বিবিসির রিপোর্টিংয়ে নজর রাখবে।

    মোদি-রাজনাথ বৈঠক

    এর আগে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলা চালায় লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। ২২ এপ্রিলের ওই নাশকতায় প্রাণ হারান ২৬ জন। তাঁদের অধিকাংশই ভারতীয় হিন্দু পর্যটক। এই হামলার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি বিবৃতি পেশ করে। যেখানে বলা হয়, ‘উস্কানিমূলক ও ‘সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীল কন্টেন্ট তৈরি, বিভ্রান্তিমূলক ন্যারেটিভ বানানো এবং ভারত নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলি ব্যান করা হল।’ এরপর কোন কোন চ্যানেল পুরোপুরি নিষিদ্ধ, তার তালিকা পেশ করেছে কেন্দ্র। সামা টিভি, ডন নিউজ, ইরশাদ ভাট্টি-র মতো একগুচ্ছ চ্যানেল এই তালিকায় রয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পাকিস্তানের বিরদ্ধে কোন পথে সেনা এগোবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া-সহ গোটা বিশ্বই।

  • Pahalgam Terror Attack: উপস্থিত বুদ্ধিতে বাজিমাত! জানেন কীভাবে পহেলগাঁওয়ে ৪০ জনের প্রাণ বাঁচালেন প্রাক্তন সেনাকর্তা?

    Pahalgam Terror Attack: উপস্থিত বুদ্ধিতে বাজিমাত! জানেন কীভাবে পহেলগাঁওয়ে ৪০ জনের প্রাণ বাঁচালেন প্রাক্তন সেনাকর্তা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চোখের সামনে তখন শুরু হয়ে গিয়েছে হত্যালীলা। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। শুধু নিজের ভাই, প্রাক্তন সেনাকর্তার উপস্থিত বুদ্ধির জোরে জঙ্গিদের চোখে ধুলো দিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন মাইসোরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র প্রসন্ন কুমার ভাট। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে (Pahalgam Terror Attack) উপস্থিত ছিলেন তিনিও। চোখের সামনেই দেখেছেন জঙ্গিদের হাতে একে একে ২৬টি ভ্রমণপ্রেমীকে লাশ হয়ে যেতে। সেদিন মৃত্যুর মুখ থেকে কী ভাবে বেঁচে ফিরেছেন, তাই এক্স হ্যান্ডলে দেশবাসীকে জানালেন প্রসন্ন।

    কী ভাবে বেঁচে গিয়েছেন

    বাকিদের মতোই বৈসরনের স্বর্গীয় সৌন্দর্য গায়ে মেখে সারাজীবনের মতো মুহূর্তগুলোকে ক্যামেরাবন্দি করছিলেন প্রসন্ন। তাঁর স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রী একটি ক্যাফেতে বসে কাওয়া (কাশ্মীরি চা) পান করছিলেন। হঠাতই দুটো গুলির শব্দ। আচমকা জঙ্গি হামলা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলছে গুলি। ওখানে উপস্থিত সকলকে প্রায় ঘিরে ফেলেছে জঙ্গিরা। গুলির শব্দ শুনে বেরোনোর জন্য গেটের দিকে পালাবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক, পালাচ্ছিলেনও সকলে। কিন্তু গুলি মারার জন্য সেখানেই ওঁত পেতে বসেছিল জঙ্গিরা। সে দিন সঙ্গে তাঁর ভাই না থাকলে তিনি বাঁচতেন না বলে পোস্টে দাবি করেছেন ভাট। আসলে তাঁর ভাই প্রাক্তন সেনাকর্মী।

    ভয়ঙ্কর স্মৃতি ভোলার নয় 

    সে দিনের ভয়ঙ্কর স্মৃতি মনে করে প্রসন্ন লিখেছেন, ‘খারাপ আবহাওয়ার কারণে ভ্রমণ দু’দিন স্থগিত রাখার পর, ২২ এপ্রিল দুপুর নাগাদ বৈসরন যাই। সঙ্গে বাচ্চারা ছাড়াও ছিলেন আমার স্ত্রী, ভাই ও ভ্রাতৃবধূ। ঘড়িতে তখন দুপুর ২.২৫। বাচ্চারা পিকনিকের মুডে খেলা করছিল। হঠাৎ ভেসে এল গুলির শব্দ। ভাই শুনেই বুঝতে পারে এটা একে-৪৭-এর আওয়াজ। বাচ্চাদের টেনে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে কাছের ভ্রাম্যমান শৌচাগারের পাশে লুকোলাম। ততক্ষণে সেখান থেকে মাঠে দুটো মৃতদেহ পড়তে দেখা হয়ে গিয়েছে। ভাই বলল জঙ্গি হামলা। সঙ্গে সঙ্গে উল্টো দিকে দৌড়নোর পরামর্শ দিল। ভাই শুধু আমাদের পরিবারকেই নয়, আশপাশে থাকা ৩৫-৪০ জনকেও নির্দেশ দেন উল্টো দিকে দৌড়তে।’

    প্রাক্তন সেনাকর্তার উপস্থিত বুদ্ধি 

    এখানেই শেষ নয়, প্রাক্তন সেনাকর্তা হওয়ার দরুণ ভাই বুঝেছিলেন প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে পালানোর চেষ্টা মানেই মৃত্যুর ফাঁদে পড়া। সেই মুহূর্তে তিনি প্রায় ৩৫-৪০ জন পর্যটককে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে একটি জলনিষ্কাশনের পাইপের ফাঁকা জায়গা দিয়ে বের করে দেন। ভাট লেখেন, “ভাই বললেন, সবাই যেন দল বেঁধে না দৌড়ায়, বরং আলাদা আলাদা হয়ে স্লোপ ধরে নিচে নেমে যাই। স্লোপে জল ছিল, কাদা ছিল, অনেকে পিছলে পড়ে যাচ্ছিল, কিন্তু তাতেই জীবন রক্ষা পেয়েছে।” তাঁর নির্দেশ মতোই, বেড়ার নীচের গর্ত দিয়ে বেড়িয়ে নীচের ঢালে সবাই নেমে গিয়েছিলেন, যাতে জঙ্গিদের চোখের আড়ালে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে দৌড়ও প্রায় প্রাণে হাতে করে দৌড়ের সামিল ছিল বলে জানিয়েছেন প্রসন্ন কুমার ভাট। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চলে লাগাতার গুলি। বহুক্ষণ ওখানেই ছিলেন তাঁরা।

    চারিদিকে চিৎকার, আর্তনাদ, কান্না আর ছুটোছুটি

    অত্যন্ত দুর্বল মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকা সত্ত্বেও গর্তের নীচ থেকেই ভাটের ভাই স্থানীয় সেনা ইউনিট এবং শ্রীনগরের হেডকোয়ার্টারে খবর পাঠাতে সক্ষম হন। দীর্ঘক্ষণ ওই ঢালে থাকার প্রায় ৪০ মিনিট পরে হেলিকপ্টারে শব্দ পেয়ে তাঁরা আবার উপত্যকার উপরে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানে আসার পর যে দৃশ্য তাঁরা দেখেছেন তা লাইফটাইম ট্রমা বলে জানাচ্ছেন এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ভাট বলেন, “রক্তাক্ত দেহ, কাঁদতে থাকা মানুষ—এই দৃশ্য আমাদের সারা জীবনের জন্য এক ক্ষত দিয়ে গেল।” তিনি জানিয়েছেন, এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনো তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মানসিকভাবে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রসন্ন কুমার ভাট লেখেন, “আমরা ওই বিভীষিকা থেকে বেঁচে ফিরেছি, গুলির শব্দ এখনও কানে বাজছে। ঘুম উড়েছে প্রায় সকলের। চারিদিকে চিৎকার, আর্তনাদ, কান্না আর ছুটোছুটি। ভুলতে পারছি না।” এই হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের সবচেয়ে ভয়ানক জঙ্গি হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    ভারতীয় সেনার প্রতি কৃতজ্ঞ

    প্রসন্ন লিখেছেন, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার (Pahalgam Terror Attack) সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। সেদিন স্বর্গীয় সেই সৌন্দর্য রক্তের লাল রঙে ভাসছিল। ঈশ্বরের কৃপা, ভাগ্য এবং একজন সেনা অফিসারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং ক্ষিপ্রতাই আমাদের গোটা পরিবার-সহ ৩৫-৪০ জনের জীবন বাঁচিয়েছিল। পোস্টের একদম শেষে নিজের ভাই এবং ভারতীয় সেনার সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান যুবক। নিরাপদে কর্নাটকে ফিরে গিয়েছেন বলেও জানান প্রসন্ন। এখন তাঁদের একটাই আশা, কেউ যেন আর কখনও এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন না হন।

  • Pahalgam Terror Attack: উপত্যকায় আরও তিন জঙ্গির ঘর গুঁড়িয়ে দিল সেনা, মোট সংখ্যা ৯! তল্লাশি অভিযানে মিলল বাঙ্কারের হদিস

    Pahalgam Terror Attack: উপত্যকায় আরও তিন জঙ্গির ঘর গুঁড়িয়ে দিল সেনা, মোট সংখ্যা ৯! তল্লাশি অভিযানে মিলল বাঙ্কারের হদিস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার (Pahalgam Terror Attack) পর থেকে জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে নিরাপত্তাবাহিনী। জঙ্গিদের তালিকা তৈরি করে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। গুঁড়িয়েও দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়ি। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের ঘর ধ্বংসে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিনামাইট ও প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ। তল্লাশি অভিযানে জঙ্গিদের একটি বাঙ্কারেরও হদিস পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী।

    কাদের বাড়ি ধ্বংস করা হল

    দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার ওয়ানডিনা গ্রামে আদনান শফির বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সে গত বছর সন্ত্রাসবাদী দলে যোগ দিয়েছিল। একইভাবে পুলওয়ামা জেলায় উড়িয়ে দেওয়া হয় আরেক সক্রিয় জঙ্গি আমির নাজিরের বাড়ি। উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলায় ধ্বংস করা হয়েছে ২০১৬ সাল থেকে সক্রিয় লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি জামিল আহমদ শেরগোজরির বাড়ি। শুক্রবার ধ্বংস করা হয়েছিল পুলওয়ামার কচিপোরা এলাকার হারিস আহমদের (সক্রিয় ২০২৩ সাল থেকে), শোপিয়ানের চোটিপোরা গ্রামের শাহিদ আহমদ কুটাই (সন্ত্রাসবাদে যোগ দেয় মার্চ ২০২৩), এবং পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি ফারুক তিদওয়ার বাড়ি।

    নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে সহায়তা

    প্রশাসনের মতে, দক্ষিণ কাশ্মীরের চার জেলা থেকে বহু জঙ্গি সমর্থকদের আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাহির আহমদ কুমার ও শবির আহমেদ গনাই-কে জননিরাপত্তা আইনের (PSA) অধীনে আটক করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, “এই দুজন সক্রিয়ভাবে জঙ্গি কার্যকলাপে সহায়তা করছিল — যেমন চলাফেরা, আশ্রয়, লজিস্টিক সহায়তা। এদের কাজই ছিল তরুণদের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা।” সূত্রের খবর, পহেলগাঁও এবং পুলওয়ামাকাণ্ডের সঙ্গে যে সব স্থানীয় জঙ্গির নাম উঠে এসেছে, সে রকম ১৪ জঙ্গির একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ বার সেই জঙ্গিদের খুঁজে বার করে খতম করার কাজ শুরু করে দিয়েছে সেনা।

    সেই তালিকায় রয়েছে—

    ১। আদিল রহমান দেন্তু: জম্মু-কাশ্মীরের সপোরের লস্কর কমান্ডার। ২০২১ সাল থেকে সক্রিয়। আদিলের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।

    ২। আসিফ আহমেদ শেখ: জইশ জঙ্গি। অবন্তীপুরার জেলা কমান্ডার। ২০২২ সাল থেকে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।

    ৩। এহসান আহমেদ শেখ: পুলওয়ামার লস্কর জঙ্গি।

    ৪। হরিশ নাজির: পুলওয়ামার বাসিন্দা। লস্কর জঙ্গি।

    ৫। আমির নাজির ওয়ানি: জইশ জঙ্গি। পুলওয়ামায় সক্রিয়।

    ৬। ইয়াবর আহমদ ভট্ট: জইশ জঙ্গি। পুলওয়ামায় সক্রিয়।

    ৭। আসিফ আহমেদ কন্ডে: সোপিয়ানের বাসিন্দা। ২০১৫ থেকে হিজবুল জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে। পাক জঙ্গিদের মদতদাতা।

    ৮। নাসির আহমেদ ওয়ানি: লস্করের  সক্রিয় সদস্য। সোপিয়ানের বাসিন্দা।

    ৯। শাহিদ আহমেদ কুটে: লস্কর আর টিআরএফের সঙ্গে যুক্ত। সোপিয়ানে সক্রিয়।

    ১০। আমির আহমেদ দার: লস্কর আর টিআরএফের সক্রিয় সদস্য।

    ১১। আদনান সফি দার: ২০২৪ সালে লস্কর আর টিআরএফ-এ যোগ দিয়েছে। পাক জঙ্গিদের মদতদাতা।

    ১২। জুবেইর আহমেদ ওয়ানি: হিজবুল জঙ্গি। অনন্তনাগে হিজবুলের অপারেশনাল কমান্ডার।

    ১৩। হারুন রশিদ গনি: হিজবুল জঙ্গি। অনন্তনাগে সক্রিয়। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে সম্প্রতি।

    ১৪। জুবেইর আহমেদ গনি: লস্কর জঙ্গি। কুলগামে সক্রিয়।

    উদ্ধার প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র

    গত ২২ তারিখ পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে জঙ্গিরা। ধর্ম জেনে বেছে বেছে খুন করা হয় বলে সেখানে উপস্থিত নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান। এরপর থেকেই উপত্যকাজুড়ে চিরুনি তল্লাশিতে নেমেছে সেনা। চলছে অভিযান। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়ার পরেই উপত্যকার সেদোরি নালা মুস্তাকাবাদ মছিলের জঙ্গলে সম্প্রতি অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকেই জঙ্গিদের বাঙ্কারের হদিসও মিলেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ। সেগুলির মধ্যে রয়েছে পাঁচটি একে-৪৭ রাইফেল, আটটি একে-৪৭ ম্যাগাজিন, একটি পিস্তল, একটি পিস্তল ম্যাগাজিন, একে-৪৭-এর ৬৬০টি কার্তুজ এবং এম৪ বন্দুকের ৫০টি কার্তুজ। পহেলগাঁও জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার অন্তর্গত। গোটা জেলা জুড়ে তল্লাশি অভিযানে এখনও পর্যন্ত আটক হয়েছেন ১৭৫ জন। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    জঙ্গিদের গ্রেফতারই লক্ষ্য

    পহেলগাওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terror Attack) পর সন্ত্রাস দমনে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। গত কয়েক দিনে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে জম্মু কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে সুরক্ষা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, জঙ্গিদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। এ বার সেই কাজই শুরু হয়ে গেল জম্মু-কাশ্মীরে। তবে সেনার তরফে এও জানানো হয়েছে, শুধু জঙ্গিদের বাড়ি ধ্বংস করা নয়, তাদের গ্রেফতার করাটাই মূল উদ্দেশ্য। কুলগামের কাইমো এলাকার ঠোকরপোরা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা জঙ্গিদের সহযোগী ছিল বলে সেনার অনুমান।

LinkedIn
Share