Tag: kolkata-dengue

kolkata-dengue

  • Dengue Update: স্বাস্থ্য দফতরের পুজো পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ল, শারদোৎসবে ডেঙ্গি আক্রান্তরা হয়রানির শিকার

    Dengue Update: স্বাস্থ্য দফতরের পুজো পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ল, শারদোৎসবে ডেঙ্গি আক্রান্তরা হয়রানির শিকার

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল: তৃতীয়া থেকেই জ্বরে আক্রান্ত গিরিশ পার্কের বাসিন্দা কৌশিক রায়। সপ্তমীর সকালে রক্ত পরীক্ষা করে জানা যায়, বছর তিরিশের কৌশিক ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত। জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকায় চিকিৎসক পরামর্শ দেন, হাসপাতালে ভর্তি জরুরি। কিন্তু কোনও সরকারি হাসপাতালেই তিনি ভর্তি হতে পারেননি। পরিবারের অভিযোগ, উৎসবের সময় অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। তারপরে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরলেও বলা হয়েছে, বেড নেই। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া হেল্পলাইনে ফোন (Helpline phone no) করেও কোনও সুবিধা হয়নি। শেষ পর্যন্ত শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন কৌশিক বাবু। কয়েক লাখ টাকা খরচ করে ডেঙ্গি চিকিৎসা করিয়ে তিনি মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফিরেছেন।

    বাঘাযতীনের বছর চল্লিশের তৃপ্তি সাহা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে। পরিবারের তরফে জানানো হয়, প্লেটলেট জরুরি। এদিকে সরকারি ব্লাড ব্যাংকে গেলেই জানানো হচ্ছে, প্লেটলেট নেই। পরিবারের অভিযোগ, কলকাতার একাধিক সরকারি হাসপাতালে রক্তের জন্য ঘুরেছেন। কিন্তু সর্বত্রই জানানো হয়েছে, পুজোর ছুটিতে কর্মী নেই। রক্তদান কর্মসূচিও নেই। জোগান নেই। অথচ চাহিদা মারাত্মক। তাই রক্তের অভাব। রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রতি ইউনিট সাড়ে চার হাজার টাকায় রক্ত কিনতে হয়েছে। গিরিশ পার্ক বা বাঘা যতীনের ঘটনা কোনও ব্যতিক্রম নয়। কলকাতা শহরের পাশপাশি জেলার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। দূর্গাপুজোর আলোয় উৎকন্ঠাকেই সঙ্গী করে কাটাতে হয়েছে ডেঙ্গি আক্রান্ত ও তার পরিজনদের। পুজোতে ডেঙ্গি সামলাতে কার্যত ব্যর্থ রাজ্য সরকার।

    সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। অক্টোবরে পুজোর মরশুমে ডেঙ্গি আরও ভয়ানক চেহারা নেয়। আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু পুজোর সময় রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি আরও আশঙ্কাজনক হয়। মুখ থুবড়ে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের সমস্ত পরিকল্পনা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন গড়ে পাঁচ থেকে ছ’শো মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু এত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকারি হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাঙ্ক। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

    আরও পড়ুন: বাংলায় শাসকের আইন চলে! মমতা-সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়

    পুজোর আগে স্বাস্থ্য ভবনের এক অধিকর্তা জানিয়েছিলেন, পুজোর সময় স্বাস্থ্য ভবনে আলাদা ডেঙ্গি কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। চব্বিশ ঘণ্টা কাজ হবে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের ভর্তি, রক্তের প্রয়োজন, কোথাও ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হলে সেই এলাকার দিকে বিশেষ নজরদারির মতো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করবে এই বিশেষ কন্ট্রোল রুম। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও সুবিধা পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনও ব্লাড ব্যাঙ্কে গেলে রক্ত পাওয়া যাবে, সেই তথ্যও পাওয়া যায়নি। পজিটিভ গ্রুপের রক্ত পেতেও হয়রানি সহ্য করতে হয়েছে রোগীর পরিজনদের।

    পুজোর আগে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা ফি-বছরের হয়রানি মেনে নিয়ে বলেছিলেন, পুজোর সময় সরকারি হাসপাতালগুলো পরিষেবা নিয়ে সমস্যা হয়। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী, নার্স ছুটি নেন। সরকারি হাসপাতাল পরিষেবা থমকে যায়। কিন্তু যে হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক না থাকলে, পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে। তাই সরকারি হাসপাতালগুলোতেও উৎসব স্পেশাল ডিউটি রোস্টার তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লাড ব্যাংকে যাতে রক্তের জোগান ঠিক থাকে, সেদিকেও বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গি চিকিৎসায় প্লেটলেট খুব জরুরি। রক্তের জোগান ঠিক মতো না হলে, রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই ব্লাড ব্যাঙ্কের দিকে বিশেষ নজর। কিন্তু অন্য বছরের মতো এ বছরেও পুজোর দিনগুলোতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হলেন।

    প্রশাসনিক বৈঠকে জানানো হয়েছিলো, স্বাস্থ্য দফতরের পাশপাশি পুর দফতর ডেঙ্গি মোকাবিলায় বিশেষ ভূমিকা নেবে। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যের সমস্ত পুর এলাকায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় বিশেষ নজরদারি দেওয়া শুরু হবে। স্বাস্থ্য কর্তাদের মতোই পুর কর্তারাও উৎসবের মরশুমে এলাকা পরিদর্শন করবেন। কোথাও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে, সেই এলাকায় বিশেষ নজরদারি দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবের ছবি সম্পূর্ণ আলাদা। যে সব পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছিলো, তার অধিকাংশ সরকারি নথিতেই আটকে থেকেছে। বাস্তবে উৎসবের দিনগুলোতে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

  • Dengue Update: সপ্তাহে আক্রান্ত সাড়ে পাঁচ হাজার, ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ প্রশাসন, অভিমত স্বাস্থ্য অধিকর্তার

    Dengue Update: সপ্তাহে আক্রান্ত সাড়ে পাঁচ হাজার, ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ প্রশাসন, অভিমত স্বাস্থ্য অধিকর্তার

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল :  ডেঙ্গি পরিস্থিতি ভয়ানক। পুজোর মরশুমে প্রশাসন কোনও কাজ করেনি। এমনকি ডেঙ্গি আক্রান্তের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টও আসতে দেরি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের থেকে অনেক পরে পাওয়া যাচ্ছে ডেঙ্গি রিপোর্ট। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের জন্য আলাদা বেড নির্ধারিত নেই। প্রয়োজনীয় পরিকল্পনার অভাব রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা কার্যত মেনে নিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী।

    স্বাস্থ্য দফতর (Health Department) সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবনের প্রশাসনিক বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গি রোগীর দিনে দু’বার প্লেটলেট কাউন্ট হচ্ছে না। তাই অনেক সময় নির্দিষ্ট সময়ে রক্ত দেওয়া হচ্ছে না। এতে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হচ্ছে। তাছাড়া, ডেঙ্গি রোগীর জন্য হাসপাতালে আলাদা বেড নেই। তাই রোগী ভর্তি নিয়েও টালবাহানা হচ্ছে। সূত্রের খবর, তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, ডেঙ্গি পজিটিভ হলেই রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। রিপোর্ট দেরিতে পেলে বিপদ বাড়বে। ডেঙ্গি মোকাবিলা হবে না। কেন রিপোর্ট দেরিতে পাওয়া যাচ্ছে, সেটাও খতিয়ে দেখা জরুরি বলে তিনি এ দিনের বৈঠকে জানান।

    স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি এখন ভয়ঙ্কর। পুজোর পরে ডেঙ্গি পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাড়িয়েছে ১২ শতাংশ। এক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজার। পুজোর মুখেই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ডেঙ্গি চোখ রাঙাচ্ছিলো। স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ জানিয়েছিলেন, ঠিকমতো পরিকল্পনা মাফিক কাজ না করলে পুজোয় মানুষের হয়রানি আরও বাড়বে।

    আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য দফতরের পুজো পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ল, শারদোৎসবে ডেঙ্গি আক্রান্তরা হয়রানির শিকার

    দুর্গা পুজোর শুরুতেই অবশ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, পুজোর সময় স্বাস্থ্য ভবনে আলাদা ডেঙ্গি কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। চব্বিশ ঘণ্টা কাজ হবে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের ভর্তি, রক্তের প্রয়োজন, কোথাও ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হলে সেই এলাকার দিকে বিশেষ নজরদারির মতো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করবে এই বিশেষ কন্ট্রোল রুম। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও সুবিধা পাওয়া যায়নি। এমনকি কোন ব্লাড ব্যাঙ্কে গেলে রক্ত পাওয়া যাবে, সেই তথ্যও পাওয়া যায়নি। পজিটিভ গ্রুপের রক্ত পেতেও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে রোগীর পরিজনদের।

    পুজোর আগে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা ফি-বছরের হয়রানি মেনে নিয়ে বলেছিলেন, পুজোর সময় সরকারি হাসপাতালগুলোর পরিষেবা নিয়ে সমস্যা হয়। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী, নার্স ছুটি নেন। সরকারি হাসপাতাল পরিষেবা থমকে যায়। কিন্তু যে হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক না থাকলে, পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে। তাই সরকারি হাসপাতালগুলোতেও উৎসব স্পেশাল ডিউটি রোস্টার তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ব্লাড ব্যাঙ্কে যাতে রক্তের জোগান ঠিক থাকে, সেদিকেও বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ডেঙ্গি চিকিৎসায় প্লেটলেট খুব জরুরি। কিন্তু অন্য বছরের মতো এ বছরেও পুজোর দিনগুলোতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হলেন।

    শুক্রবার এই সমস্ত অভিযোগকে কার্যত মেনে নিলেন খোদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে তিনি জানান, ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য ডেঙ্গি তথ্য গোপন কিংবা পজিটিভ রিপোর্ট দেরিতে দিলে বিপদ আটকানো যাবে না। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাই আলাদাভাবে ডেঙ্গি মোকাবিলায় গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে মশাবাহিত এই রোগ আরও ভয়ানক আকার নেবে।

LinkedIn
Share