মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তার জেরে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় (Kolkata Police)। দেওয়া হয় ধর্ষণের হুমকিও। তার আগেই অবশ্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি (Bengal govt)। ডিলিট করে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টও। তার পরেও কলকাতা থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার উজিয়ে গিয়ে গুরুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে আনা হয় আইনের এক ছাত্রীকে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে গিয়ে শর্মিষ্ঠা নামের ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বলে অভিহিত করেন।
দেশপ্রেমিক তরুণীকে গ্রেফতার (Kolkata Police)
সেই তিনিই একটি পাকিস্তানি ট্রোলকে উদ্দেশ করে ভিডিও বানানো এক দেশপ্রেমিক তরুণীকে গ্রেফতার করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করলেন। শর্মিষ্ঠার একমাত্র ‘অপরাধ’, তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়াকে সমর্থন করেছিলেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যা জেহাদিদের সমর্থন করে। তারা অমুসলিম ‘কাফের’দের হত্যা করে — এটি একপ্রকার ওপেন সিক্রেট। যদিও তার ভিডিওতে গালিগালাজ ও উত্তেজিত ভাষা ছিল, তা ছিল মূলত পাকিস্তানি ট্রোলদের বিরুদ্ধে, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিল এবং পহেলগাঁও হামলার ধর্মীয় উদ্দেশ্য অস্বীকার করছিল। শর্মিষ্ঠা ওই পাকিস্তানি ট্রোলকে কটাক্ষ করেন এবং ইসলামিক ৭২ হুর ও তাদের নবীকে নিয়ে সমালোচনা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় ইসলামপন্থীদের একটা বড় অংশ।
শর্মিষ্ঠার প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর গোটা দেশ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, শর্মিষ্ঠার প্রতিক্রিয়া ছিল তারই স্বাভাবিক বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানি এক ট্রোলের প্রতি এই প্রতিক্রিয়াই ভারতে অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপ আশ্চর্যজনক নয় (Kolkata Police)। কারণ মমতা সরকার ইসলামপন্থীদের খুশি করতেই সব সময় ব্যস্ত থাকে। বর্তমান ঘটনাটি মমতা সরকারের স্পষ্ট দ্বিচারিতার আর একটি উদাহরণ, যেখানে তারা নিজেদের রাজ্যেই ইসলামপন্থী দাঙ্গাবাজদের দ্বারা নিপীড়িত হিন্দুদের দুরবস্থার প্রতি চোখ বুজে থাকে। তাঁদের মতে, গোটা দেশ দেখেছে কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকারের অধীনে মুর্শিদাবাদ ও সন্দেশখালিতে হিন্দুদের ইসলামপন্থী দাঙ্গাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের অত্যাচার একেবারে সরকারের নাকের ডগায় ঘটে চলেছে। মুসলিম-প্রধান মুর্শিদাবাদ জেলায় ১১ই এপ্রিল ‘ওয়াক্ফ (সংশোধন) আইন’-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আড়ালে ব্যাপক হিংসা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
জলের ট্যাংকে বিষ
বহু হিন্দু পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ও জীবিকা হারিয়েছে। তাদের জলের ট্যাংকে বিষ মেশানো হয়েছে, এবং ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হিন্দু মহিলাদের বলা হয়েছিল, তারা যেন নিজেদের ইজ্জত বিসর্জন দিয়ে স্বামী-সন্তানের জীবন রক্ষা করে (Bengal govt)। ইসলামপন্থীরা হিন্দু নারীদের বলেছিল, নিজেদের ধর্ষিত হতে দাও, তবেই পরিবার বাঁচবে। তাদের সিঁদুর মুছে ফেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতেও বাধ্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ (Kolkata Police)। গত বছর সন্দেশখালিতেও হিন্দু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছিল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন মূলত নারীরা। এই মহিলারা তৃণমূল নেতা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহচর শেখ শাহজাহান ও তার ঘনিষ্ঠ দুই কর্মী — শিব প্রসাদ হাজরা ও উত্তম সরদারের গ্রেফতারের দাবি জানান।
নিপীড়নের প্রতিবাদ
সেদিন সন্দেশখালির শত শত মহিলা ঝাঁটা, লাঠি ও কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি হাতে পথে নামেন। অবরোধ করেন সড়ক। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই অঞ্চলের বিবাহিত হিন্দু নারীদের বয়স ও সৌন্দর্যের ভিত্তিতে তুলে নেওয়া হত। রাতে তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালানো হয়। এই মহিলাদের স্বামীদের হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, তাদের স্ত্রীর ওপর তাদের কোনও ‘অধিকার’ নেই। যদি তারা মহিলাদের ওপর হওয়া এই নিপীড়নের প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের (Bengal govt) নির্মমভাবে মারধর করা হয় (Kolkata Police)।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ যে দ্রুততায় শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করেছে, সেই তৎপরতা একেবারেই দেখা যায়নি যখন রাজ্যের হিন্দু জনগণ ইসলামপন্থী দাঙ্গাকারীদের হাতে নির্মম নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছিল। মুসলিম অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি নিজেও একজন মহিলা, হিন্দু নারীদের ওপর হওয়া যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘তুচ্ছ ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই নিষ্ক্রিয়তা দেখে কলকাতা হাইকোর্ট এই ঘটনার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে (Bengal govt) তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে (Kolkata Police)।