Tag: madhyom news

madhyom news

  • Ramakrishna 385: এগিয়ে পড়ো, আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে…

    Ramakrishna 385: এগিয়ে পড়ো, আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে…

    শ্রীরামকৃষ্ণের ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল। আমার বুঝি হল না। নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণ লোচনে চাহিয়া আছেন। বাইরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসে সমস্ত দেখিতেছিলেন।

    ভক্ত- মহাশয় কামিনী কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে। তবে গৃহস্থ কি করবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তা তুমি করো না, আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল।

    (গৃহস্থ ভক্তের প্রতি অভয়দান ও উত্তেজনা)

    মহিমাচরন চুপ করিয়া বসিয়া আছেন মুখে কথাটি নাই

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি)- এগিয়ে পড়। আর আরও আগে যাও চন্দন কাঠ পাবে, আরও আগে যাও রুপার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও সোনার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও হিরে মাণিক পাবে। এগিয়ে পড়ো।

    মহিমা- আজ্ঞে টেনে রাখে যে এগুতে দেয় না

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- কেন লাগাম কাটো তার নাম গুণে কাটো, কালী নামেতে কালপাশ কাটে।

    নরেন্দ্র পিতৃ বিয়োগের পর সংসারে বড় কষ্ট পাইতেছেন। তাহার উপর অনেক তাল যাইতেছে। ঠাকুর মাঝে মাঝে নরেন্দ্রকে দেখিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) বলিতেছেন, তুই কি চিকিৎসক হয়েছিস?

    ঠাকুর (Ramakrishna) কি বলিতেছেন নরেন্দ্রের এই বয়সে অনেক দেখাশোনা হইল। সুখ দুঃখের সঙ্গে অনেক (Kathamrita) পরিচয় হইল। নরেন্দ্র ঈষৎ হাসিয়া চুপ করিয়া রইলেন।

    শ্রী শ্রী দোলযাত্রা ও শ্রীরামকৃষ্ণের রাধাকান্ত- মা কালীকে ও ভক্ত দিকের গায়ে আবির প্রদান

    নবাই চৈতন্য গান গাহিতেছেন। ভক্তরা সকলেই বসিয়া আছেন। ঠাকুর ছোট খাটটিতে বসিয়াছিলেন। হঠাৎ উঠিলেন। ঘরের বাহিরে গেলেন (Kathamrita)। ভক্তরা সকলে বসিয়া রহিলেন গান চলিতে লাগিল।

    মাস্টার ঠাকুরের (Ramakrishna) সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। ঠাকুর পাকা উঠান দিয়া কালীঘাটের দিকে যাইতেছেন। রাধাকান্তের মন্দির আগে প্রবেশ করিলেন। ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন। তাঁহার প্রণাম দেখিয়ে মাস্টারও প্রণাম করলে। ঠাকুরের সম্মুখে থালায় আবির ছিল।

  • Ramakrishna 384: শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না

    Ramakrishna 384: শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না

    (পূর্বকথা- হৃদয় মুখুজ্জের হাঁকডাক- ঠাকুরের সত্ত্বগুণের অবস্থা)

    নরেন্দ্র- গিরিশ ঘোষ এখন কেবল এইসব চিন্তাই করে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- সে খুব ভালো। তবে এত গালাগাল, মুখ খারাপ করে কেন? সে অবস্থা আমার নয়। বাজ পড়লে ঘরের মোটা জিনিস তত নড়ে না কিন্তু সারসি ঘটঘট করে। আমার সেই অবস্থা নয়, সত্ত্ব গুণের অবস্থায় হৈচৈ হয় না। হৃদয় তাই চলে গেল। মা রাখলেন না শেষা শেষি। আমায় গালাগালি দিত। হাঁকডাক করত।

    নরেন্দ্র- আমি কিছু বলি নাই, তিনিই বলেন, তাঁর অবতার বলে বিশ্বাস। আমি আর কিছু বললাম না।

    শ্রী রামকৃষ্ণ- কিন্তু খুব বিশ্বাস দেখেছিস।

    ভক্তেরা এক দৃষ্টি দেখিতেছেন। ঠাকুর নিচেই মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। কাছে মাস্টার, সম্মুখে নরেন্দ্র, চতুর্দিকে ভক্তগণ। ঠাকুর একটু চুপ করিয়া নরেন্দ্রকে সস্নেহে দেখিতেছেন। পরে নরেন্দ্র কে বলিলেন, বাবা কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ না হলে হবে না। বলিতে বলিতে ভাব পূর্ণ হইয়া উঠিলেন। সেই করুনামাখা সস্নেহ দৃষ্টি তাহার সঙ্গে ভাবন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন-

    কথা বলতে ডরাই না বললেও ডরাই
    মনের সন্দেহ হয় পাছে তোমাধনে হারাই হারাই।।
    আমরা জানি যে মন-তোর দিলাম তোকে
    সেই মন্তর এখন মন্তর
    আমরা যে মন্ত্রে বিপদে তরি ডরাই।।

    শ্রীরামকৃষ্ণের ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল। আমার বুঝি হল না। নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণ লোচনে চাহিয়া আছেন। বাইরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিয়া আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসে সমস্ত দেখিতেছিলেন।

    ভক্ত- মহাশয় কামিনী কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে। তবে গৃহস্থ কি করবে?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- তা তুমি করো না, আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল।

  • Ramakrishna 383: ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি

    Ramakrishna 383: ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি

    রাবণকে একজন বলেছিল, তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও। রামরূপ ধরো না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয় একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়। পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক (Ramakrishna)।

    সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরের শুদ্ধাভক্তি হয় না। এক লক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।

    (নেপালি মেয়ে- ঈশ্বরের দাসী সংসারির দাসত্ব)

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (মনমোহনের প্রতি)- তুমি রাগই করো আর যাই করো। রাখালকে বললাম ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস একথা বরং শুনব তবু কারও দাসত্ব করিস একথা যেন না শুনি।

    নেপালের একটি মেয়ে এসেছিল। বেশ এসরাজ বাজিয়ে গান করলে হরিনাম গান। কেউ জিজ্ঞাসা করলে, তোমার বিবাহ হয়েছে? তা বললে আবার কার দাসী হব! এক ভগবানের দাসী আমি। কামিনী কাঞ্চনের ভিতর থেকে কী করে হবে। অনাসক্ত হওয়া বড় কঠিন (Ramakrishna)। একদিকে মেগের দাস, একদিকে টাকার দাস আর একদিকে মনিবের দাস। তাদের চাকরি করতে হয়।

    এক ফকির বনে কুটির করে থাকত। তখন আকবর শা দিল্লির বাদশা। ফকিরটির কাছে অনেকে আসত। অতিথি সৎকার করতে তার বড় ইচ্ছা হয়। একদিন ভাবলে যে টাকা কড়ি না হলে কেমন করে অতিথি সৎকার হয়। তবে যাই একবার আকবর শার কাছে (Ramakrishna)। সাধু ফকিরের অবারিত দ্বার। আকবর তখন নামাজ পড়ছিলেন। ফকির নামাজ ঘরে গিয়ে বসল। দেখলে আকবর শা নামাজের শেষে বলছে হে আল্লা ধন-দৌলত দাও! আরও কত কী! এই সময় নামাজের ঘর থেকে চলে যাবার উদ্যোগ করতে লাগল ফকির। আকবর শা ইশারা করে বসতে বললেন। নামাজ শেষ হলে বাদশা জিজ্ঞাসা করলেন আপনি এসে বসলেন, চলে যাচ্ছেন কেন? ফকির বললে সে আর মহারাজের জেনে কাজ নেই। আমি চললুম (Kathamrita)। বাদশা অনেক জিদ করাতে ফকির বললে, আমার ওখানে অনেকে আসে, তাই কিছু টাকা প্রার্থনা করতে এসেছিলাম। একবার বললে (Kathamrita) তবে যাচ্ছিলেন কেন? ফকির বলে যখন দেখলাম তুমিও ধন দৌলতের ভিখারি। তখন মনে করলাম যে ভিখারির কাছে চেয়ে আর কী হবে? চাইতে হয়ত আল্লার কাছে চাইব।

  • Ramakrishna 382: সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের! কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না

    Ramakrishna 382: সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের! কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না

    একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল (Ramakrishna)। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পণ্ডিত আছে। কিন্তু তার একটু গোল আছে। তার নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙ্গল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়। অবসর নাই (Kathamrita)। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই। যার অবসর নাই (Ramakrishna), লাঙ্গল হেলে গরু ওয়ালা ভাগবত পন্ডিত আমি খুঁজছি না, আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শোনাতে পারে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- এক রাজা রোজ ভাগবত শুনত। পণ্ডিত পড়া শেষ হলে রাজাকে বলত, রাজা বুঝেছো? রাজাও রোজ বলে, আগে তুমি বোঝো। পণ্ডিত বাড়ি গিয়ে রোজ ভাবে, রাজা এমন কথা বলে কেন যে তুমি আগে বোঝো। লোকটা সাধন-ভজন করত। ক্রমে চৈতন্য হল। তখন দেখলে যে হরিপাদপদম্মই সার। আর সব মিথ্যা। সংসারে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এল। কেবল একজনকে পাঠালে রাজাকে (Kathamrita) বলতে যে রাজা এইবার বুঝেছি (Ramakrishna)।

    তবে কি এদের ঘৃণা করি? না ব্রহ্মজ্ঞানী তখন আনি। তিনি সব হয়েছেন। সকলেই নারায়ণ। সব যোনীই মাতৃ যোনী। তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখিনা।

    (সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের, রূপ ঐশ্বর্যের বশ)

    কি বলবো? সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের (Kathamrita)। কামিনী কাঞ্চন ছাড়তে চায় না। লোকে মেয়ে মানুষের রূপে ভুলে যায়। টাকা ঐশ্বর্য দেখলে ভুলে যায়। কিন্তু ঈশ্বরের রূপ দর্শন করলে (Ramakrishna) ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়।

    রাবণকে একজন বলেছিল, তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও। রামরূপ ধরো না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয় একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়। পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক (Ramakrishna)।

    সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরের শুদ্ধাভক্তি হয় না। এক লক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।

  • Ramakrishna 381: একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে, সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে, একজন আড়চোখে চেয়ে দেখলে….

    Ramakrishna 381: একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে, সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে, একজন আড়চোখে চেয়ে দেখলে….

    নতুন হাড়ি আর দই পাতা হাঁড়ি। দই পাতা হাঁড়িতে দুধ রাখতে ভয় হয়। প্রায় দুধ নষ্ট হয়ে যায়। ওরা থাক আলাদা যোগ আছে। ভোগও আছে। যেমন রাবণের ভাব। নাগকন্যা, দেবকন্যা নেবে। রামকেও লাভ করবে। অসুররা নানা ভোগও করছে। আবার নারায়ণকেও লাভ করছে।

    নরেন্দ্র- গিরিশ ঘোষ আগেকার সঙ্গ ছেড়েছে

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- বড় বেলায় দামড়া হয়েছে। আমি বর্ধমানে দেখেছিলাম। একটা দামড়া, গাই গরুর কাছে যেতে দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কি হল এতো দামড়া। তখন গাড়োয়ান বলে, মশায় এ বেশি বয়সে দামরা হয়েছিল। তাই আগেকার সংস্কার যায় নাই। এক জায়গায় সন্ন্যাসীরা বসে আছে একটি স্ত্রীলোক সেইখান দিয়ে চলে যাচ্ছে। সকলে ঈশ্বর চিন্তা করছে। একজন আড় চোখে চেয়ে দেখলে। সে তিনটে ছেলে হবার পর সন্ন্যাসী হয়েছিল। একটি বাটিতে যদি রসুন গোলা যায়। রসুনের গন্ধ কি যায়? বাবুই গাছে কি আম হয়? হতে পারে সিদ্ধায়। তেমন থাকলে বাবুই গাছও আম হয়। সে সিদ্ধায় কি সকলের হয়? সংসারী লোকের অবসর কই? একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল (Ramakrishna)। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পন্ডিত আছে। কিন্তু তার একটু গোল আছে। তারা নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙ্গল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়। অবসর নাই (Kathamrita)। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই। যার অবসর নাই (Ramakrishna), লাঙ্গল হেলে গরু ওয়ালা ভাগবত পন্ডিত আমি খুঁজছি না, আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শোনাতে পারে।

  • Ramakrishna 380: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    Ramakrishna 380: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

    তুমি ঠাকুর আমি ভক্ত। এটি ভক্তের ভাব- এ আমি ভক্তির আমি। কেন ভক্তির আমি রাখে? তার মানে আছে। আমি তো যাবার নয়, তবে থাক শালা, দাস আমি, ভক্তির আমি হয়ে।

    হাজার বিচার কর, আমি যায় না। আমি রূপ কুম্ভ, ব্রহ্ম যেন সমুদ্র। জলে জল। কুম্ভের ভিতরে বাহিরে জল। জলে জল। তবু কুম্ভ তো আছে। ওইটি ভক্তের আমির স্বরূপ। যতক্ষণ কুম্ভ আছে, আমি তুমি আছে। তুমি ঠাকুর, আমি ভক্ত। তুমি প্রভু, আমি দাস, এও আছে। হাজার বিচার কর, এ ছাড়বার জো নাই। কুম্ভ না থাকলে তখন সে এক কথা।

    (ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ)

    নরেন্দ্র আসিয়া প্রণাম করিয়া বসিলেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (Ramakrishna) নরেন্দ্রের সঙ্গে কথা কহিতেছেন। কথা কহিতে কহিতে মেঝেতে আসিয়া বসিলেন। মেঝেতে মাদুর পাতা। এতক্ষণে ঘর লোকে পরিপূর্ণ হইয়াছে। ভক্তেরাও আছেন। বাহিরের লোকও আসিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রর প্রতি) ভালো আছিস? তুই নাকি গিরিশ ঘোষের ওখানে প্রায়ই যাস।

    নরেন্দ্র- আজ্ঞে হ্যাঁ মাঝে মাঝে যাই।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) নিকট গিরিশ কয়েক মাস হল নতুন আসা-যাওয়া করিতেছেন। ঠাকুর বলেন, গিরিশের বিশ্বাস আঁকড়ে পাওয়া। যেমন বিশ্বাস তেমনি অনুরাগ। বাড়িতে ঠাকুরের (Kathamrita) চিন্তায় সর্বদা মাতোয়ারা হয়ে থাকেন।

    নরেন্দ্র প্রায় যান। হরিপদ, দেবেন্দ্র ও অনেক ভক্ত তাঁর বাড়িতে প্রায় যান। গিরিশ তাঁদের সঙ্গে কেবল ঠাকুরের কথাই কন। গিরিশ সংসারে থাকেন কিন্তু ঠাকুর দেখিতেছেন নরেন্দ্র সংসারে থাকিবেন না। কামিনী কাঞ্চন ত্যাগ করিবেন। ঠাকুর নরেন্দ্র সহিত কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- তুই গিরিশ ঘোষের ওখানে বেশি যাস?

    কিন্তু রসুনের বাটি যত ধোয় না কেন? গন্ধ একটু থাকবেই। ছোকরারা শুদ্ধ আধার কামিনী কাঞ্চন স্পর্শ করে নাই। অনেকদিন ধরে কামিনী কাঞ্চন ঘাঁটলে রসুনের গন্ধ হয়। যেমন কাকে ঠোকরানো আম। ঠাকুরদের দেওয়া যায় না। নিজেরও সন্দেহ। নতুন হাড়ি আর দই পাতা হাঁড়ি। দই পাতা হাঁড়িতে দুধ রাখতে ভয় হয়। প্রায় দুধ নষ্ট হয়ে যায়। ওরা থাক আলাদা যোগ আছে। ভোগও আছে। যেমন রাবণের ভাব। নাগকন্যা, দেবকন্যা নেবে। রামকেও লাভ করবে। অসুররা নানা ভোগও করছে। আবার নারায়ণকেও লাভ করছে।

  • Ramakrishna 379: বালক সত্ত্ব-রজঃ-তমঃ কোনও গুণের বশ নয়

    Ramakrishna 379: বালক সত্ত্ব-রজঃ-তমঃ কোনও গুণের বশ নয়

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- জীবকোটি ও ঈশ্বরকোটি। জীবকোটির ভক্তি বৈধভক্তি। এত উপাচারে পূজা করতে হবে। এত উপাচারে জপ করতে হবে। এত পুরশ্চরণ করতে হবে। এই বৈধ ভক্তির পর জ্ঞান। তারপর লয় ফেরেনা। ঈশ্বরকোটির আলাদা পথ। যেমন অনুলোম বোলুম। নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি। তখন কখন ছাদেও থাকতে পারে, আবার উঠানামাও করতে পারে।

    শুকদেব সমাধিস্থ ছিলেন (Kathamrita)। নির্বিকল্প সমাধি। জড়সমাধি। ঠাকুর নারদকে পাঠিয়ে দিলেন, পরীক্ষিতকে (Ramakrishna) ভাগবত শোনাতে হবে। নারদ দেখলেন জড়ের ন্যায় শুকদেব বাহ্যশূন্য হয়ে বসে আছেন। তখন বীণার সঙ্গে হরির রূপ চার শ্লোকে বর্ণনা করতে লাগলেন। প্রথম শ্লোক বলতে বলতে শুকদেবের রোমাঞ্চ হল। ক্রমে অশ্রু অন্তরে হৃদয় মধ্যে চিন্ময় রূপ দর্শন করতে লাগলেন। জড় সমাধির (Kathamrita) পর আবার রূপ দর্শন হল। শুকদেব ঈশ্বর কোটি।

    হনুমান সাকার-নিরাকার সাক্ষাৎকার করে রাম মূর্তিতে নিষ্ঠা করে থাকল। চিদঘন আনন্দের মূর্তি সেই রাম মূর্তি (Ramakrishna)।

    প্রহ্লাদ কখন দেখতেন সোহম (Ramakrishna), আবার কখন দাস ভাব থাকতেন। ভক্তি না নিলে কি নিয়ে থাকে? তাই সেব্য সেবক ভাব আশ্রয় করতে হয়। তুমি প্রভু আমি দাস। হরি রস আস্বাদন করবার জন্য।। রস রসিকে ভাব। হে ঈশ্বর তুমি রস আমি রসিক।

    ভক্তির আমি। বিদ্যার আমি। বালকের আমি। এতে দোষ নাই। শঙ্করাচার্য বিদ্যার আমি রেখেছিলেন, লোক শিক্ষা (Ramakrishna) দেবার জন্য। বালকের আমির আঁট নাই। বালক গুণাতীত। কোনও গুণের বস নয়। এই রাগ করলে আবার কোথাও কিছু নাই। এই খেলাঘর করলে, আবার ভুলে গেলে। এই খেলুড়েদেরদের ভালোবাসছে, আবার কিছুদিন তাদের না দেখলে তো সব ভুলে গেল। বালক সত্ত্ব রজঃ তমঃ কোনও গুণের বশ নয়।

  • Ramakrishna 378: নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি

    Ramakrishna 378: নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি

    দোলযাত্রা দিবসে শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) দক্ষিণেশ্বরে ভক্ত সংঘে

    (দোলযাত্রা দিবসে শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তিযোগ)

    মহিমাচরণ, রাম, মনমোহন, নরেন্দ্র, মাস্টার প্রভৃতি

    আজ দোলযাত্রা। শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর জন্মদিন ১৯ ফাল্গুন, পূর্ণিমা, রবিবার ১লা মার্চ ১৮৮৫। শ্রীরামকৃষ্ণ ঘরের মধ্যে ছোট খাটটিতে বসিয়া সমাধিস্থ। ভক্তরা মেঝেতে বসিয়া আছেন। এক দৃষ্টে তাহাকে দেখিতেছেন মহিমাচরণ রাম মনমোহন, নবাই, চৈতন্য, মাস্টার প্রভৃতি অনেকে বসিয়া আছেন।

    ভক্তেরা এক দৃষ্টে দেখিতেছেন। সমাধি ভঙ্গ হইল ভাবের পূর্ণমাত্রা। ঠাকুর মহিমাচরণকে বলিতেছেন বাবু, হরি ভক্তির কথা।

    নারদ পঞ্চরাত্রে আছে। নারদ তপস্যা করেছিলেন। দৈববাণী হল, হরিকে যদি আরাধনা করা যায়, তাহলে তপস্যার কি প্রয়োজন? আর হরিকে যদি না আরাধনা করা হয়, তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? হরি যদি অন্তরে বাহিরে থাকেন (Ramakrishna) তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? আর যদি অন্তরের বাহিরে না থাকেন তাহলেই বা তপস্যার কি প্রয়োজন? অতএব হে ব্রহ্মণ বিরত হও। বৎস তপস্যার কি প্রয়োজন? জ্ঞান সিন্ধু শংকরের কাছে গমন করো। বৈষ্ণবেরা যে হরি ভক্তির কথা বলে গেছেন, সেই সুপক্কা ভক্তি লাভ কর। এই ভক্তি এই ভক্তি-কাটারই দ্বারা ভব নিগড় ছেদন হবে।

    (ঈশ্বর কোটি শুকদেবের সমাধি ভঙ্গ, হনুমান, প্রহ্লাদ)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- জীবকোটি ও ঈশ্বরকোটি। জীবকোটির ভক্তি বৈধভক্তি। এত উপাচারে পূজা করতে হবে। এত উপাচারে জপ করতে হবে। এত পুরশ্চরণ করতে হবে। এই বৈধ ভক্তির পর জ্ঞান। তারপর লয় ফেরেনা।
    ঈশ্বরকোটির আলাদা পথ। যেমন অনুলোম বোলুম। নেতি নেতি করে ছাদে পৌঁছে যখন দেখি, ছাদও যে জিনিসে তৈরি, ইঁট, চুন, সুরকি সেই জিনিসে তৈরি। তখন কখন ছাদেও থাকতে পারে, আবার উঠানামাও করতে পারে।

  • Ramakrishna 377: রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না, নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়

    Ramakrishna 377: রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না, নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়

    গিরিশের অবতার বাদ- শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কি অবতার

    খানিকক্ষণ শুনিয়া অন্যমনস্ক হইলেন। মাস্টারের সহিত আস্তে আস্তে কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)-আচ্ছা গিরিশ ঘোষ যা বলছে অর্থাৎ অবতার তা কি সত্য?

    মাস্টার- আজ্ঞা ঠিক কথা। তা নাহলে সবার মনে লাগছে কেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ- দেখ এখন একটি অবস্থায় আসছে, আগেকার অবস্থা উল্টে গেছে। ধাতুর দ্রব্য ছুঁতে পারছি না।

    মাস্টার অবাক হইয়া শুনিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- এই যে নতুন অবস্থা, এর একটি খুব গুচ্ছ মানে আছে।

    ঠাকুর ধাতু স্পর্শ করিতে পারিতেছেন না। অবতার বুঝি মায়া ঐশ্বর্য কিছু ভোগ করেন নাই। তাই কি ঠাকুরের এসব কথা বলিতেছেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)- আচ্ছা তোমার অবস্থা কিছু বদলাচ্ছে দেখছো?

    মাস্টার- আজ্ঞা কই

    শ্রীরামকৃষ্ণ- কার্যে (Ramakrishna)

    মাস্টার- এখন কাজ বাড়ছে, যত লোক জানতে পারছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ- দেখছো আগে যা বলতাম এখন চলছে।

    ঠাকুর কিয়ৎকাল চুপ করিয়া থাকিয়া হঠাৎ বলছেন, আচ্ছা পল্টুর ভালো ধ্যান হয় না কেন?

    (গিরিশ কি রসুন গোলা বাটি?)

    এইবার ঠাকুরের দক্ষিণেশ্বর যাইবার উদ্যোগ হইতেছেন। ঠাকুর কোন ভক্তের কাছে গিরিশের সম্বন্ধে বলেছিলেন রসুন গোলা বাটি হাজার ধোও রসুনের গন্ধ কি একেবারে যায়? গিরিশও তাই মনে মনে অভিমান করিয়াছেন। যাইবার সময় গিরিশ ঠাকুরকে কিছু নিবেদন করিতেছেন।

    গিরিশ (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)- রসুনের গন্ধ কি যাবে?

    শ্রী রামকৃষ্ণ- যাবে

    গিরিশ- তবে বললেন যাবে

    শ্রীরামকৃষ্ণ- অত আগুন জ্বললে গন্ধ-ফন্দ পালিয়ে যায়। রসুনের বাটি পুড়িয়ে নিলে আর গন্ধ থাকে না। নতুন হাঁড়ি হয়ে যায়। যে বলে আমার হবে না তার হয় না। মুক্ত অভিমানী, মুক্তই হয়। আর বদ্ধ অভিমানী, বদ্ধই হয়। যে জোর করে বলে আমি মুক্ত হয়েছি, সে মুক্তই হয়। যে রাত দিন আমি বদ্ধ আমি বদ্ধ বলে সে বদ্ধই হয়ে যায়।

  • Ramakrishna 376: শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রর উদ্দেশ্যে), এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয়, তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা

    Ramakrishna 376: শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রর উদ্দেশ্যে), এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয়, তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)- তুই একটু গান গা

    নরেন্দ্র গান গাহিতেছেন

    চিদানন্দ সিন্ধুনীর প্রেমানন্দের লহরী
    মহাভাবিক রাসলীলা কী মাধুরী মরি মরি,
    বিবিধ বিলাস রঙ্গপ্রসঙ্গ কত অভিনব ভাব তরঙ্গ,
    ডুবিছে উঠেছে করিছে রঙ্গ নবীন রুপ ধরি।

    (হরি হরি বলে)
    মহাযোগে সমুদায় একাকার হইল।
    বেশ কাল ব্যবধান ভেদাভেদ ঘুছিল
    (আশা পুরিল রে আমার সকল সাধ মিটে গেল)
    এখন আনন্দে মাতিয়া দু বাহু তুলিয়া বল রে মন হরি হরি।

    নরেন্দ্র যখন গান গাহিতেছেন, মহাযোগে সব একাকার হইল। তখন শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) বলিতেছেন- এটি ব্রহ্ম জ্ঞানে হয় তুই যা বলছিলি সবই বিদ্যা।

    নরেন্দ্র যখন গান গাহিতেছেন, আনন্দে মাতিয়া দু বাহু তুলিয়া বল রে মন হরি হরি। তখন শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে বলিতেছেন- ওইটি দুবার করে বল।
    গান হইয়া গেলে আবার ভক্তর সঙ্গে কথা হইতেছে।

    গিরিশ- দেবেন্দ্রবাবু আসেন নাই। তিনি অভিমান করে বললেন, আমাদের ভেতরে এত ক্ষীরের পোর নাই কলাইয়ের পোর আমরা এসে কি করব।

    শ্রী রামকৃষ্ণ বিস্মিত হইয়া- কই আগে তো উনি ওরকম করতেন না।

    ঠাকুর জলসেবা করিতেছেন, নরেন্দ্রকেও খাইতে দিলেন

    যতীনদেব- (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)- নরেন্দ্র খাও, নরেন্দ্র খাও বলছেন। আমরা শালারা ভেসে এসেছি।

    যতীনকে ঠাকুর খুব ভালোবাসেন (Kathamrita)
    । তিনি দক্ষিণেশ্বরে গিয়া মাঝে মাঝে দর্শন করেন। কখনও কখনও রাত্রে সেখানে গিয়ে থাকেন। তিনি শোভাবাজারের রাজাদের বাড়ির (রাধাকান্ত দেব বাড়ির) ছেলে।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (নরেন্দ্রের প্রতি সহাস্য)- ওরে যতীন তোর কথাই বলছে।

    ঠাকুর হাসিতে হাসিতে যতীনের থুতি ধরে আদর করিতে করিতে বলিলেন, সেখানে যা, গিয়ে খাস অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বরে যাস। ঠাকুর আবার বিবাহ বিভ্রাট অভিনয় শুনবেন। বক্সে গিয়ে বসলেন। ঝির কথাবার্তা শুনে হাসিতে লাগিলেন।

LinkedIn
Share