Tag: madhyom news

madhyom news

  • Ramakrishna 288: “তুমি না গীতা, বেদান্ত পড়? তুমি না শিখাও ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা?”

    Ramakrishna 288: “তুমি না গীতা, বেদান্ত পড়? তুমি না শিখাও ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা?”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    শ্রীরামকৃষ্ণের জ্ঞানোন্মাদ ও জাতি বিচার

    পূর্বকথা ১৮৫৭—কালীমন্দির প্রতিষ্ঠার পর জ্ঞানীপাগলদর্শন—হলধারী 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—শ্রীমতীর প্রেমোন্মাদ। আবার ভক্তি-উন্মাদ আছে। যেমন হনুমানের। সীতা আগুনে প্রবেশ করেছে দেখে রামকে মারতে যায়। আবার আছে জ্ঞানোন্মআদ। একজন জ্ঞানী পাগলের মতো দেখে ছিলাম। কালীবাড়ির সবে প্রতিষ্ঠার পর। লোকে বললে, রামমোহন রায়ের ব্রাহ্মসভার একজন। একপায়ে ছেঁড়া জুতা, হাতে কঞ্চি আর একটি ভাঁড়, আঁবচারা। গঙ্গায় ডুব দিলে। তারপর কালীঘরে গেল। হলধারী তখন কালীঘরে বসে আছে। তারপর মত্ত হয়ে স্তব করতে লাগল —

    ক্ষ্রৌং ক্ষ্রৌং খট্টাঙ্গধারিণীম্ ‌ইত্যাদি

    “কুকুরের কাছে গিয়ে কান ধরে তার উচ্ছিষ্ট খেলে—কুকুর কিছু বলে নাই। আমারও তখন এই অবস্থা আরম্ভ হয়েছে। আমি হৃদের গলা ধরে বললাম, ওরে হৃদে, আমারও কি ওই দশা হবে?

    “আমার উন্মাদ অবস্থা! নারায়ণ (Kathamrita) শাস্ত্রী এসে দেখলে, একটা বাঁশ ঘাড়ে করে বেরাচ্ছি। তখন সে লোকদের কাছে বললে ওহ্‌, উন্মস্ত্‌ হ্যায়। সে অবস্থায় জাত বিচার কিছু থাকতো না। একজন নীচ জাতি, তার মাগ শাক রেঁধে পাঠাতো, আমি খেতুম।

    “কালীবাড়িতে (Ramakrishna) কাঙালীরা খেয়ে গেল, তাদের পাতা মাথায় আর মুখে ঠেকালুম। হলধারী তখন আমায় বললে, তুই করছিস কি? কাঙালীদের এঁটো খেলি, তোর ছেলেপিলের বিয়ে হবে কেমন করে? আমার তখন রাগ হল। হলধারী আমার দাদা হয়। তাহলে কি হয়? তাকে বললাম, তবে রে শ্যালা, তুমি না গীতা, বেদান্ত পড়? তুমি না শিখাও ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা? আমার আবার ছেলেপুলে হবে তুমি ঠাউরেছ! তোর গীতাপাঠের মুখে আগুন (Kathamrita)!

    (মাস্টারের প্রতি) — “দেখ, শুধু পড়াশুনাতে কিছু হয় না। বাজনার বোল লোকে মুখস্থ বেশ বলতে পারে, হাতে আনা বড় শক্ত!”

    ঠাকুর (Ramakrishna) আবার নিজের জ্ঞানোন্মাদ অবস্থা বর্ণনা করিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 287: “ধর্মের সূক্ষ্মা গতি, একটু কামনা থাকলে ভগবানকে পাওয়া যায় না, ছুঁচের ভিতর সুতো যাওয়া একটু রোঁ থাকলে হয় না”

    Ramakrishna 287: “ধর্মের সূক্ষ্মা গতি, একটু কামনা থাকলে ভগবানকে পাওয়া যায় না, ছুঁচের ভিতর সুতো যাওয়া একটু রোঁ থাকলে হয় না”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    ন্যাংটাবাবার শিক্ষা — ঈশ্বরলাভের বিঘ্ন অষ্টসিদ্ধি

    সাধু খাতির করে তাঁকে বসালেন। এমন সময়ে একটা হাতি সেখান দিয়ে যাচ্ছে। তখন নূতন সাধুটি বললেন, ‘আচ্ছা মহারাজ, আপনি মনে করলে এই হাতিটাকে মেরে ফেলতে পারেন?’ সাধু বললেন, ‘য়্যাসা হোনে শক্তা’। এই বলে ধুলো পড়ে হাতিটার গায়ে দেওয়াতে সে ছটফট করে মরে গেল। তখন যে সাধুটি এসেছে, সে বললে, ‘আপনার কি শক্তি! হাতিটাকে মেরে ফেললেন।’ সে হাসতে লাগল। তখন ও সাধুটি বললে (Kathamrita), ‘আচ্ছা, হাতিটাকে আবার বাঁচাতে পারেন?’ সে বললে, ‘ওভি হোনে শক্তা হ্যায়।’ এই বলে আবার যাই ধুলো পড়ে দিলে, অমনি হাতিটা ধড়মড় করে উঠে পড়ল। তখন এ-সাধুটি বললে, ‘আপনার কি শক্তি! কিন্তু একটা কথা জিজ্ঞাসা করি। এই যে হাতি মারলেন, আর হাতি বাঁচালেন, আপনার কি হল? নিজের কি উন্নতি হল? এতে কি আপনি ভগবানকে (Ramakrishna) পেলেন?’ এই বলিয়া সাধুটি অন্তর্ধান হলেন।

    “ধর্মের সূক্ষ্মা গতি। একটু কামনা থাকলে ভগবানকে পাওয়া যায় না । ছুঁচের ভিতর সুতো যাওয়া একটু রোঁ থাকলে হয় না।

    “কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, ভাই আমাকে যদি লাভ করতে চাও তাহলে অষ্টসিদ্ধির একটা সিদ্ধি থাকলে হবে না।

    “কি জান? সিদ্ধাই থাকলে অহংকার হয়, ঈশ্বরকে ভুলে যায়।

    “একজন বাবু এসেছিল—ট্যারা। বলে, আপনি পরমহংস, তা বেশ, একটু স্বস্ত্যয়ন করতে হবে। কি হীনবুদ্দি। ‘পরমহংস’(Ramakrishna); আবার স্বস্ত্যয়ন করতে হবে। স্বস্ত্যয়ন করে ভাল করা,—সিদ্ধাই। অহংকারে ঈশ্বরলাভ হয় না। অহংকার কিরূপ হান? যেন উঁচু ঢিপি, বৃষ্টির জল জমে না, গড়িয়ে যায়। নিচু জমিতে জল জমে আর অঙ্কুর হয়; তারপর গাছ হয়; তারপর ফল হয়।”

    Love to all—ভালবাসায় অহংকার যায়—তবে ঈশ্বরলাভ 

    “হাজরাকে তাই বলি, আমি বুঝেছি, আর সব বোকা— এ-বুদ্ধি করো না। সকলকে ভালবাসতে হয়। কেউ পর নয়। সর্বভূতেই সেই হরিই আছেন। তিনি ছাড়া কিছুই নাই। প্রহ্লাদকে ঠাকুর বললেন, তুমি বর নাও। প্রহ্লাদ বললেন, আপনার দর্শন পেয়েছি, আমার আর কিছু দরকার নাই। ঠাকুর ছাড়লেন না। তখন প্রহ্লাদ বললেন, যদি বর দেবে, তবে এই বর দেও, আমায় যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের অপরাধ না হয়।

    “এর মানে এই যে, হরি একরূপে কষ্ট দিলেন। সেই লোকদের (Kathamrita) কষ্ট দিলে হরির কষ্ট হয়।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Childs Mobile Addiction: সন্তানের মোবাইলে আসক্তি! কমাবে স্মৃতিশক্তি আর কথা বলার ক্ষমতা? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত

    Childs Mobile Addiction: সন্তানের মোবাইলে আসক্তি! কমাবে স্মৃতিশক্তি আর কথা বলার ক্ষমতা? জানুন বিশেষজ্ঞদের মত

    মাধ্যাম ডেস্ক: খাওয়ার সময়ে হোক কিংবা অবসর! মোবাইলের পর্দায় চোখ আটকে থাকে বাড়ির একরত্তি শিশুর (Childs Mobile Addiction)! প্রিয় কার্টুন কিংবা গান, যেকোনও জিনিস এক টাচে হাজির! মোবাইল অন থাকলে তবেই খাবার সহজে খাওয়া হচ্ছে, না হলে খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও থাকছে না। আবার অনেক সময়েই ঘুমের আগে কিছুসময় মোবাইলে না কাটালে কিছুতেই বিছানায় থাকবে না। সন্তানের এমন বায়নায় নাজেহাল বাবা-মা! চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দিনের অনেকটা সময় মোবাইলের স্ক্রিনে কাটিয়ে দেওয়ার ফলেই নানান জটিল রোগের (Speaking Ability) ঝুঁকি বাড়ছে।

    কোন রোগের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা (Childs Mobile Addiction)?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আধুনিক জীবনে মোবাইল, ল্যাপটপের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। কাজের জন্য অনেক সময়েই ল্যাপটপ কিংবা মোবাইলে সময় দিতে হয়। স্কুল স্তর থেকেই পড়াশোনার জন্য প্রযুক্তির উপরে নির্ভর করতে হয়। তাই স্কুল পড়ুয়াদেরও মোবাইল কিংবা ল্যাপটপে চোখ রাখতে হয়। কিন্তু শিশুরোগ (Speaking Ability)  বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মাত্র দেড় থেকে দু’বছরের শিশুও (Childs Mobile Addiction) স্ক্রিন টাইম অনেক সময় কুড়ি বছর বয়সীদের মতো থাকছে। যা ভয়ঙ্কর বিপদ তৈরি করছে!

    কমছে কথা বলার ক্ষমতা!

    শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, দু’বছর বয়সের পরে শিশুরা (Childs Mobile Addiction) বিভিন্ন শব্দ বলতে শেখে! সাধারণত পরিবারের সকলের নাম ডাকা এবং সাড়া দেওয়া করতে পারে‌। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে তিন কিংবা সাড়ে তিন বছরের শিশুও কথা বলতে পারছে না। নানান কথা বুঝতে পারলেও সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা থাকছে না‌। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন,‌ অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের জেরেই এই সমস্যা বাড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, পরিবারের সকলে ব্যস্ত! শিশুকে শান্ত রাখার জন্য হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিশুর চোখ মোবাইলের স্ক্রিনে আটকে থাকছে। তাঁরা জানাচ্ছেন কথা শোনা আর ইঙ্গিত দেওয়ার থেকেই কথা শেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়। শিশুর সঙ্গে যদি লাগাতার কেউ কথা না বলেন, শিশুও যদি পাল্টা ইঙ্গিত করে প্রতিউত্তর (Speaking Ability) দিতে না শেখেন তাহলে আপনার শিশুর কথা বলা কঠিন হয়ে যায়, কীভাবে সমাধান করবেন জানেন?

    শিশু স্বভাবিক উত্তর না দিলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কী কমে যায়?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর সবচেয়ে আদর্শ সময় শৈশব। নানান কাজের মাধ্যমে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ হয়। আঁকা, রং করা, ছোটাছুটি, নানান জিনিস নিয়ে খেলার মাধ্যমে শিশুদের (Childs Mobile Addiction) কল্পনা শক্তি বাড়ে। এর ফলে তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। দৌড়ানো, লাফানো নানান ধরনের খেলার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক বিকাশের পাশপাশি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতাও বাড়ে। কিন্তু দীর্ঘ সময় একজায়গায় বসে থেকে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ আটকে থাকলে মস্তিষ্কের কাজ বিশেষ হচ্ছে না। তাই মনে রাখার ক্ষমতা কমছে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও কমছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

    স্থুলতার ঝুঁকি বাড়ছে!

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভারতীয় শিশুরা স্থুলতার সমস্যায় কাবু। প্রতি চার জনে অন্তত একজন শিশু স্থুলতার সমস্যায় (Speaking Ability) ভুগছে। আর তার কারণ ঠিকমতো শারীরিক কসরত না করা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ছোটাছুটি করা, লাফানো কিংবা মাঠে গিয়ে খেলার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে না। খোলা জায়গায় খেলাধুলার পরিবর্তে বিনোদন এখন মোবাইলে। আর এই অভ্যাস শিশুদের (Childs Mobile Addiction) স্থুলতার সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর শিশুদের এই স্থুলতা ডায়বেটিস সহ নানান জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

    পেশি ও‌ স্নায়ুর সচলতা কমাচ্ছে!

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুদের একাংশের হাতের লেখায় সমস্যা হচ্ছে। কোনো জিনিস ধরা, এমনকি জলের বোতল ভরা বা কোনো বোতলের মুখ পেঁচিয়ে খোলার মতো কাজ করতেও চার-পাঁচ বছরের বহু শিশুর অসুবিধা হয়। আর তার কারণ তাদের পেশি ও স্নায়ুর সচলতা কমছে। শিশুরোগ (Childs Mobile Addiction) বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, একজায়গায় বসে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল দেখার জেরেই শিশুদের শরীরের সমস্ত পেশির মধ্যে সমন্বয় কমছে। স্নায়ু শীথিল হয়ে যাচ্ছে। পেশির কার্যক্ষমতা বাড়াতে ছোটো থেকেই নানান কাজ করা জরুরি বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

    বাড়ছে চোখের সমস্যা!

    মোবাইলের আলো চোখের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ মোবাইল আসক্তি। তাঁরা জানাচ্ছেন, মোবাইলের আলোয় চোখের শুষ্কতা বাড়ে। এর ফলে চোখে নানান সংক্রমণ বাড়ে।

    কী পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্ক্রিন টাইমে নিয়ন্ত্রণ জরুরি। মোবাইলের ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল‌ বিনোদনের জন্য নয়। বরং কাজের জিনিস। প্রয়োজনীয় জিনিস। সেটা শিশুদের প্রথম থেকেই বোঝানো জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, অভিভাবকদের ও নিজেদের স্ক্রিন টাইম নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। অন্তত শিশুদের সামনে সবসময় মোবাইলে সময় কাটানো যাবে না। বরং সন্তানের সঙ্গে বসে আঁকা, রং করার মতো কাজ একসঙ্গে করলে তাদের আগ্রহ বাড়বে। এর ফলে শিশুদের (Childs Mobile Addiction) মানসিক বিকাশ ঘটবে। পাশপাশি বাড়ির ছোটো‌ছোটো কাজ শিশুদের করানোর অভ্যাস তৈরির পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।‌ তাঁরা জানাচ্ছেন, চার-পাঁচ বছরের শিশুদের গাছে জল দেওয়া, খাবার জল ভরা কিংবা বই গোছানোর কাজে সাহায্য করতে দেওয়া দরকার। এতে তাদের আত্মবিশ্বাস (Speaking Ability) বাড়বে। আবার স্নায়ু ও পেশির সক্রিয়তাও বাড়বে। এই সব কাজ কমাবে মোবাইলে আসক্তি।

    পুষ্টিবিদদের একাংশের পরামর্শ, শিশুদের প্রথম থেকেই পরিবারের সকলের সঙ্গে খাওয়ার অভ্যাস করা জরুরি। এতে নানান রকমের খাবার খাওয়ার ইচ্ছে তৈরি হয়। আবার শিশুর সঙ্গে পরিবারের সকলের যোগাযোগ ও দৃঢ় হয়।

  • Ramakrishna 286: “যাই ধুলো পড়ে দিলে, অমনি হাতিটা ধড়মড় করে উঠে পড়ল, সাধুটি বললে, ‘আপনার কি শক্তি!”

    Ramakrishna 286: “যাই ধুলো পড়ে দিলে, অমনি হাতিটা ধড়মড় করে উঠে পড়ল, সাধুটি বললে, ‘আপনার কি শক্তি!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    ন্যাংটাবাবার শিক্ষা—ঈশ্বরলাভের বিঘ্ন অষ্টসিদ্ধি

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সিদ্ধাই থাকা এক মহাগোল। ন্যাংটা আমায় শিখালে—একজন সিদ্ধ সমুদ্রের ধারে বসে আছে, এমন সময় একটা ঝড় এল। ঝড়ে তার কষ্ট হল বলে সে বললে, ঝড় থেমে যা। তার বাক্য মিথ্যা হবার নয়। একখানা জাহাজ পালভরে যাচ্ছিল। ঝড় হঠাৎ থামাও যা আর জাহাজ টুপ করে ডুবে গেল। এক জাহাজ লোক সেই সঙ্গে ডুবে গেলো। এখন এতগুলি লোক যাওয়াতে যে পাপ হল, সব ওর হলো। সেই পাপে সিদ্ধাইও (Kathamrita) গেল, আবার নরকও হলো।

    “একটি সাধুর খুব সিদ্ধাই হয়েছিল, আর সেই জন্য অহংকারও হয়েছিল। কিন্তু সাধুটি লোক ভাল ছিল, আর তার তপস্যাও ছিল। ভগবান ছদ্মবেশে সাধুর বেশ ধরে একদিন তার কাছে এলেন। এসে বললেন, ‘মহারাজ (Ramakrishna)! শুনেছি আপনার খুব সিদ্ধাই হয়েছে’। সাধু খাতির করে তাঁকে বসালেন। এমন সময়ে একটা হাতি সেখান দিয়ে যাচ্ছে। তখন নূতন সাধুটি বললেন, ‘আচ্ছা মহারাজ, আপনি মনে করলে এই হাতিটাকে মেরে ফেলতে পারেন?’ সাধু বললেন, ‘য়্যাসা হোনে শক্তা’। এই বলে ধুলো পড়ে হাতিটার গায়ে দেওয়াতে সে ছটফট করে মরে গেল। তখন যে সাধুটি এসেছে, সে বললে, ‘আপনার কি শক্তি! হাতিটাকে মেরে ফেললেন।’ সে হাসতে লাগল। তখন ও সাধুটি বললে (Kathamrita), ‘আচ্ছা, হাতিটাকে আবার বাঁচাতে পারেন?’ সে বললে, ‘ওভি হোনে শক্তা হ্যায়।’ এই বলে আবার যাই ধুলো পড়ে দিলে, অমনি হাতিটা ধড়মড় করে উঠে পড়ল। তখন এ-সাধুটি বললে, ‘আপনার কি শক্তি! কিন্তু একটা কথা জিজ্ঞাসা করি। এই যে হাতি মারলেন, আর হাতি বাঁচালেন, আপনার কি হল? নিজের কি উন্নতি হল? এতে কি আপনি ভগবানকে (Ramakrishna) পেলেন?’ এই বলিয়া সাধুটি অন্তর্ধান হলেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 285: “শ্রীমতীর মহাভাব, গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই, ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না”

    Ramakrishna 285: “শ্রীমতীর মহাভাব, গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই, ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    রাখাল, নারাণ, নিত্যগোপাল ও ছোটগোপালের সংবাদ

    “তাদের সামনে বুঝি বাবুরামকে বললুম (Ramakrishna), নারাণের জন্য আর তোর জন্য এই সন্দেশগুলি রেখে দে। তারপর গণির মা ওরা সব বললে, মা গো, নৌকাভাড়ার জন্য যা করে! আমায় বললে যে আপনি নারাণকে বলুন যাতে বিয়ে করে। সে কথায় বললুম, ও-সব অদৃষ্টের কথা। ওতে কথা দেব কেন? সকলের হাস্য (Kathamrita)

    “ভাল করে পড়াশুনা করে না; তাই বললে, আপনি বলুন, যাতে ভাল করে পড়ে। আমি বললুম, পড়িস রে। তখন আবার বলে, একটু ভাল করে বলুন। (সকলের হাস্য)

    (চুনির প্রতি) “হ্যাঁ গা, গোপাল আসে না কেন?”

    চুনি—রক্ত আমেশা হয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna),—ওষুধ খাচ্ছে?

    থিয়েটার ও বেশ্যার অভিনয়—পূর্বকথা—বেলুনদর্শন ও শ্রীকৃষ্ণের উদ্দীপন 

    ঠাকুর আজ কলিকাতায় স্টার থিয়েটারে চৈতন্যলীলা দেখিতে যাইবেন। স্টার থিয়েটারে তখন যেখানে অভিনয় হইত, আজকাল সেখানে কোহিনূর থিয়েটার। মহেন্দ্র মুখুজ্জের সঙ্গে তাঁহার গাড়ি করিয়া অভিনয় দেখিতে যাইবেন। কোন্‌খানে বসিলে ভাল দেখা যায়, সেই কথা হইতেছে। কেউ কেউ বললেন, একটাকার সিটে বসলে বেশ দেখা যায়। রাম বললেন, কেন, উনি বক্সে বসবেন।

    ঠাকুর হাসিতেছেন। কেহ কেহ বলিলেন, বেশ্যারা অভিনয় করে। চৈতন্যদেব, নিতাই এ-সব অভিনয় তারা করে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদিগকে)—আমি তাদের মা আনন্দময়ী দেখব।

    “তারা চৈতন্যদেব সেজেছে, তা হলেই বা। শোলার আতা দেখলে সত্যকার আতার উদ্দীপন হয়।

    “একজন ভক্ত রাস্তায় যেতে যেতে দেখে, কতকগুলি বাবলাগাছ রয়েছে। দেখে ভক্তটি একেবারে ভাবাবিষ্ট। তার মনে হয়েছিল যে, ওই কাঠে শ্যামসুন্দর বাগানের কোদালের বেশ বাঁট হয়! অমনি শ্যামসুন্দরকে মনে পড়েছে! যখন গড়ের মাঠে বেলুন দেখতে আমায় নিয়ে গিয়েছিল, তখন একটি সাহেবের ছেলে একটা গাছে ঠেসান দিয়ে ত্রিভঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দেখাও যা, অমনি কৃষ্ণের উদ্দীপন হল; অমনি সমাধিস্থ হয়ে গেলাম!

    “চৈতন্যদেব (Ramakrishna) মেড়গাঁ দিয়ে যাচ্ছিলেন! শুনলেন, গাঁয়ের মাটিতে খোল তৈয়ার হয়! যাই শোনা অমনি ভাবাবিষ্ট হয়ে গেলেন।

    “শ্রীমতী মেঘ কি ময়ূরের কণ্ঠ দেখলে আর স্থির থাকতে পারতেন না। শ্রীকৃষ্ণের উদ্দীপন হয়ে বাহ্যশূন্য হয়ে যেতেন (Kathamrita)।”

    ঠাকুর একটু চুপ করিয়া বসিয়া আছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে আবার কথা কহিতেছেন—“শ্রীমতীর মহাভাব। গোপীপ্রেমে কোন কামনা নাই। ঠিক ভক্ত যে, সে কোন কামনা করে না। কেবল শুদ্ধাভক্তি প্রার্থনা করে; কোন শক্তি কি সিদ্ধাই কিছু চায় না।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 284: “‘সরল’ এইকথা বলিতে বলিতে ঠাকুর যেন আনন্দে পরিপূর্ণ হইলেন”

    Ramakrishna 284: “‘সরল’ এইকথা বলিতে বলিতে ঠাকুর যেন আনন্দে পরিপূর্ণ হইলেন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    রাখাল, নারাণ, নিত্যগোপাল ও ছোটগোপালের সংবাদ

    আজ রবিবার, (শুক্লা দ্বিতীয়া) ৬ই আশ্বিন, ১২৯১, ২১শে সেপ্টেম্বর, ১৮৮৪। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) ঘরে অনেকগুলি ভক্ত সমবেত হইয়াছেন। রাম, মহেন্দ্র মুখুজ্জে, চুনিলাল, মাস্টার ইত্যাদি অনেকে আছেন।

    চুনিলাল সবে শ্রীবৃন্দাবন হইতে ফিরিয়াছেন। সেখানে তিনি ও রাখাল বলরামের সঙ্গে গিয়াছিলেন। রাখাল ও বলরাম এখনও ফেরেন নাই। নিত্যগোপালও বৃন্দাবনে আছেন। ঠাকুর চুনিলালের সহিত বৃন্দাবনের কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—রাখাল কেমন আছে?

    চুনি—আজ্ঞে, তিনি এখন আছেন ভাল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—নিত্যগোপাল আসবে না?

    চুনি—বলরামবাবু বলেছেন, ভাল উপযুক্ত লোকের সঙ্গে পাঠিয়ে দেব। নাম দেন নাই।

    ঠাকুর মহেন্দ্র মুখুজ্জের সঙ্গে নারাণের কথা কহিতে লাগিলেন। নারাণ স্কুলে পড়ে। ১৬।১৭ বৎসর বয়স। ঠাকুরের কাছে মাঝে মাঝে আসে। ঠাকুর বড় ভালবাসেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—খুব সরল; না?

    ‘সরল’ এইকথা বলিতে বলিতে ঠাকুর যেন আনন্দে পরিপূর্ণ হইলেন।

    মহেন্দ্র—আজ্ঞে হাঁ, খুব সরল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তার মা সেদিন এসেছিল। অভিমানী দেখে ভয় হল। তারপর তোমরা এখানে আসো, কাপ্তেন আসে,—এ-সব সেদিন দেখতে পেলে। তখন অবশ্য ভাবলে যে, শুধু নারাণ আসে আর আমি আসি, তা নয়। (সকলের হাস্য) মিছরি এ-ঘরে ছিল তা দেখে বললে, বেশ মিছরি! তবেই জানলে (Kathamrita), খাবার-দাবার কোন অসুবিধা নাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ— সিদ্ধাই থাকা এক মহাগোল। ন্যাংটা আমায় শিখালে — একজন সিদ্ধ সমুদ্রের ধারে বসে আছে, এমন সময় একটা ঝড় এল। ঝড়ে তার কষ্ট হল বলে সে বললে, ঝড় থেমে যা। তার বাক্য মিথ্যা হবার নয়। একখানা জাহাজ পালভরে যাচ্ছিল। ঝড় হঠাৎ থামাও যা আর জাহাজ টুপ করে ডুবে গেল। এক জাহাজ লোক সেই সঙ্গে ডুবে গেলো। এখন এতগুলি লোক যাওয়াতে যে পাপ হল, সব ওর হলো। সেই পাপে সিদ্ধাইও গেল, আবার নরকও হলো।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 282: “দুর্যোধনেরা গন্ধর্বের কাছে বন্দী হলে যুধিষ্ঠিরই উদ্ধার করলেন”

    Ramakrishna 282: “দুর্যোধনেরা গন্ধর্বের কাছে বন্দী হলে যুধিষ্ঠিরই উদ্ধার করলেন”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৯শে সেপ্টেম্বর

    পূর্বকথা—শম্ভু মল্লিকের অনাশক্তি—মহাপুরুষের আশ্রয়

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মুখুজ্জে প্রভৃতিকে)—কাপ্তেনের ঠিক সাধকের অবস্থা (Kathamrita)।

    “ঐশ্বর্য (Ramakrishna) থাকলেই যে তাতে আসক্ত হতেই হবে, এমন কিছু নয়। শম্ভু (মল্লিক) বলত, ‘হৃদু, পোঁটলা বেঁধে বসে আছি!’ আমি বলতাম কি অলক্ষণে কথা কও! —

    “তখন শম্ভু বলে, ‘না,— বলো, এ-এব ফেলে যেন তাঁর কাছে যাই!’

    “তাঁর ভক্তের ভয় নাই। ভক্ত তাঁর আত্মীয়। তিনি তাদের টেনে নেবেন। দুর্যোধনেরা গন্ধর্বের কাছে বন্দী হলে যুধিষ্ঠিরই উদ্ধার করলেন। বললেন, আত্মীয়দের ওরূপ অবস্থা হলে আমাদেরই কলঙ্ক (Kathamrita)।”

    ঠাকুরবাড়ির ব্রাহ্মণ ও পরিচারকগণ মধ্যে ভক্তিদান 

    প্রায় নয়টা রাত্রি হইল। মুখুজ্জে ভ্রাতৃদ্বয় কলিকাতা ফিরিবার জন্য প্রস্তুত হইতেছেন। ঠাকুর একটু উঠিয়া ঘরে ও বারান্দায় পাদচারণ করিতে করিতে বিষ্ণুঘরে উচ্চ সংকীর্তন হইতেছে শুনিতে পাইলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করাতে একজন ভক্ত (Ramakrishna) বলিলেন, তাহাদের সঙ্গে লাটু ও হরিশ জুটিয়াছে। ঠাকুর বলিলেন, ও তাই!

    ঠাকুর বিষ্ণুঘরে আসিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ভক্তেরাও আসিলেন। তিনি শ্রীশ্রীরাধাকান্তকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন।

    ঠাকুর দেখিলেন যে, ঠাকুরবাড়ির ব্রাহ্মণেরা—যারা ভোগ রাঁধে, নৈবেদ্য করে দেয়, অতিথিদের পরিবেশন করে এবং পরিচারকেরা, অনেকে একত্র মিলিত হইয়া নাম সংকীর্তন করিতেছে। ঠাকুর একটু দাঁড়াইয়া তাহাদের উৎসাহ বর্ধন করিলেন।

    উঠানের মধ্য দিয়া ফিরিয়া আসিবার সময় ভক্তদের বলিতেছেন(Kathamrita) —

    “দেখো, এরা সব কেউ বেশ্যার বাড়ি যায়, কেউ বাসন মাজে!”

    ঘরে আসিয়া ঠাকুর (Ramakrishna) নিজ আসনে আবার বসিয়াছেন। যাঁহারা সংকীর্তন করিতেছিলেন, তাঁহারা আসিয়া ঠাকুরকে প্রণাম করিলেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 281: “প্রত্যক্ষ দর্শনের পার যা যা অবস্থা হয় শাস্ত্রে আছে, সে সব হয়েছিল, বালকবৎ, উন্মাদবৎ, পিশাচবৎ, জড়বৎ”

    Ramakrishna 281: “প্রত্যক্ষ দর্শনের পার যা যা অবস্থা হয় শাস্ত্রে আছে, সে সব হয়েছিল, বালকবৎ, উন্মাদবৎ, পিশাচবৎ, জড়বৎ”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৯শে সেপ্টেম্বর

    পূর্বকথা—শ্রীরামকৃষ্ণের পুরাণ, তন্ত্র ও বেদ মতের সাধনা

    পঞ্চবটী, বেলতলা ও চাঁদনির সাধন—তোতার কাছে সন্ন্যাস গ্রহণ—১৮৬৬ 

    “মা বললেন, বেদান্তের সার—ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা। যে সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মের কথা বেদে আছে, তাঁকে তন্ত্রে বলে, সচ্চিদানন্দঃ শিবঃ (Ramakrishna)— আবার তাঁকেই পুরাণে বলে, সচ্চিদানন্দঃ কৃষ্ণঃ (Kathamrita)।

    “গীতা দশবার বললে যা হয়, তাই গীতার সার। অর্থাৎ ত্যাগী ত্যাগী!

    “তাঁকে যখন লাভ হয়, বেদ, বেদান্ত, পুরাণ, তন্ত্র—কত নিচে পড়ে থাকে। (হাজরাকে) তখন ওঁ উচ্চারণ করবার জো নাই।—এটি কেন হয়? সমাধি থেকে অনেক নেমে না এলে ওঁ উচ্চারণ করতে পারি না।

    “প্রত্যক্ষ দর্শনের পার যা যা অবস্থা হয় শাস্ত্রে আছে, সে সব হয়েছিল। বালকবৎ, উন্মাদবৎ, পিশাচবৎ, জড়বৎ।

    “আর শাস্ত্রে যেরূপ আছে, সেরূপ দর্শনও হত।

    “কখন দেখতাম জগৎময় আগুনের স্ফুলিঙ্গ!

    “কখন চারিদিকে পারার হ্রদ,—ঝক্‌ঝক্‌ করছে। আবার কখনও রূপা গলার মতো দেখতাম।

    “কখন দেখতাম রঙমশালের আলো যেন জ্বলছে!

    “তাহলেই হল, শাস্ত্রের সঙ্গে ঐক্য হচ্ছে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণেরm (Ramakrishna) অবস্থা—নিত্যলীলাযোগ

    “আবার দেখালে, তিনিই জীব, জগৎ, চতুর্বিংশতি তত্ত্ব হয়েছেন! ছাদে উঠে আবার সিঁড়িতে নামা। অনুলোম বিলোম।

    “উঃ! কি অবস্থাতেই রেখেছে!—একটা অবস্থা যায় তো আর একটা আসে। যেন ঢেঁকির পাট। একদিক নিচু হয় তো আর-একদিক উঁচু হয়।

    “যখন অন্তর্মুখ—সমাধিস্থ—তখনও দেখছি তিনি! আবার যখন বাহিরের জগতে মন এল, তখনও দেখছি তিনি।

    “যখন আরশির এ-পিঠ দেখছি তখনও তিনি! আবার যখন উলটো পিঠ দেখছি তখনও তিনি।”

    মুখুজ্জে (Kathamrita) ভ্রাতৃদ্বয়, বাবুরাম প্রভৃতি ভক্তেরা অবাক্‌ হইয়া শুনিতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 280: “কুকুরের উপর চড়ে তার মুখে লুচি দিয়ে খাওয়াতাম, আর নিজেও খেতাম, সর্বং বিষ্ণুময়ং জগৎ”

    Ramakrishna 280: “কুকুরের উপর চড়ে তার মুখে লুচি দিয়ে খাওয়াতাম, আর নিজেও খেতাম, সর্বং বিষ্ণুময়ং জগৎ”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    ষোড়শ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৯শে সেপ্টেম্বর

    পূর্বকথা—শ্রীরামকৃষ্ণের পুরাণ, তন্ত্র ও বেদ মতের সাধনা

    পঞ্চবটী, বেলতলা ও চাঁদনির সাধন—তোতার কাছে সন্ন্যাস গ্রহণ—১৮৬৬ 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি)—তিনি আমায় নানারূপ সাধন করিয়েছেন। প্রথম, পুরাণ মতের-তারপর তন্ত্র মতের, আবার বেদ মতের। প্রথমে পঞ্চবটীতে সাধনা করতাম। তুলসী কানন হল—তার মধ্যে বসে ধ্যান করতাম। কখনও ব্যাকুল হয়ে ‘মা! মা!’ বলে (Kathamrita) ডাকতাম—বা ‘রাম! রাম!’ (Ramakrishna) করতাম।

    “যখন ‘রাম রাম’ করতাম তখন হনুমানের ভাবে হয়তো একটা ল্যাজ পরে বসে আছি! উন্মাদের অবস্থা। সে সময়ে পূজা করতে করতে গরদের কাপড় পরে আনন্দ হত—পূজারই আনন্দ!”

    “তন্ত্র মতের সাধনা বেলতলায়। তখন তুলসী গাছ—সজনের খাড়া—এক মনে হত!”

    “সে অবস্থায় শিবানীর উচ্ছিষ্ট—সমস্ত রাত্রি পড়ে আছে—তা সাপে খেলে কি কিসে খেলে তার ঠিক নাই—ওই উচ্ছিষ্টই আহার।” (Kathamrita)

    “কুকুরের উপর চড়ে তার মুখে লুচি দিয়ে খাওয়াতাম, আর নিজেও খেতাম। সর্বং বিষ্ণুময়ং জগৎ।—মাটিতে জল জমবে তাই আচমন, আমি সে মাটিতে পুকুর থেকে জল দিয়ে আচমন কল্লাম।”

    “অবিদ্যাকে নাশ না করলে হবে না। আমি তাই বাঘ হতাম—হয়ে অবিদ্যাকে খেয়ে ফেলতাম!” (Kathamrita)

    “বেদমতে সাধনের সময় সন্ন্যাস নিলাম। তখন চাঁদনিতে পড়ে থাকতাম—হৃদুকে বলতাম, ‘আমি সন্ন্যাসী হয়েছি, চাঁদনীতে ভাত খাব’!”

    সাধনকালে নানা দর্শন ও জগন্মাতার বেদান্ত, গীতা সম্বন্ধে উপদেশ

    (ভক্তদের প্রতি)—“হত্যা দিয়ে পরেছিলাম! মাকে বললাম, আমি মুখ্যু—তুমি আমায় জানিয়ে দাও—বেদ, পুরাণ, তন্ত্রে—নানা শাস্ত্রে—কি আছে ।” (Ramakrishna)

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 279: “ডুব দিলেও হাঙ্গর-কুমিরের ভয় আছে—কাম-ক্রোধাদির ভয় আছে, হলুদ মেখে ডুব দাও”

    Ramakrishna 279: “ডুব দিলেও হাঙ্গর-কুমিরের ভয় আছে—কাম-ক্রোধাদির ভয় আছে, হলুদ মেখে ডুব দাও”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে

    পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ১৯শে সেপ্টেম্বর

    হাজরা মহাশয়

    পূর্বকথা—স্ত্রীর অসুখে কামারপুকুরবাসীর থর থর কম্প

    “ও-দেশে একজনের পরিবারে অসুখ হয়েছিল। সারবে না মনে করে লোকটা থর থর করে কাঁপতে লাগলো—অজ্ঞান হয় আর কি!

    “এরূপ ঈশ্বরের (Ramakrishna) জন্য কে হচ্ছে!”

    হাজরা ঠাকুরের পায়ের ধুলা লইতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সঙ্কুচিত হইয়া)—“উগুনো কি?”

    হাজরা—যাঁর কাছে আমি রয়েছি তাঁর পায়ের ধুলা লব না?

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ঈশ্বরকে তুষ্ট কর, সকলেই তুষ্ট হবে। তস্মিন্‌ তুষ্টে জগৎ তুষ্টম্‌। ঠাকুর যখন দ্রৌপদীর হাঁড়ির শাক খেয়ে বললেন, আমি তৃপ্ত হয়েছি, তখন জগৎসুদ্ধ জীব তৃপ্ত—হেউ-ঢেউ হয়েছিল! কই মুনিরা খেলে কি জগৎ তুষ্ট হয়েছিল—হেউ-ঢেউ হয়েছিল (Kathamrita)?

    ঠাকুর (Ramakrishna) লোকশিক্ষার্থ কিছু কর্ম করতে হয়, এই কথা বলিতেছেন।

    পূর্বকথা—বটতলার সাধুর গুরুপাদুকা ও শালগ্রামপূজা

    শ্রীরামকৃষ্ণ (হাজরার প্রতি)—জ্ঞানলাভের পরও লোকশিক্ষার জন্যে পূজাদি কর্ম রাখে।

    “আমি কালীঘরে যাই, আবার ঘরের এই সব পট নমস্কার করি; তাই সকলে করে। তারপর অভ্যাস হয়ে গেলে যদি না করে তাহলে মন হুস্‌ফুস্‌ করবে।

    “বটতলায় সন্ন্যাসীকে দেখলাম। যে আসনে গুরুপাদুকা রেখেছে তারই উপরে শালগ্রামও রেখেছে! ও পূজা করছে! আমি জিজ্ঞাসা করলাম (Kathamrita), ‘যদি এতদূর জ্ঞান হয়ে থাকে তবে পূজা করা কেন? সন্ন্যাসী বললে,—সবই করা যাচ্ছে—এ ও একটা করলাম। কখনও ফুলটা এ-পায়ে দিলাম; আবার কখনও একটা ফুল ও-পায়ে দিলাম।’

    “দেহ থাকতে কর্মত্যাগ করবার জো নাই—পাঁক থাকতে ভুড়ভুড়ি হবেই।”

    The three stages—শাস্ত্র, গুরুমুখ, সাধনা; Goal প্রত্যক্ষ

    (হাজরাকে)—“এক জ্ঞান থাকলেই আনেক জ্ঞানও আছে। শুধু শাস্ত্র পড়ে কি হবে?

    “শাস্ত্রে বালিতে চিনিতে মিশেল আছে—চিনিটুকু লওয়া বড় কঠিন। তাই শাস্ত্রের মর্ম সাধুমুখে গুরুমুখে শুনে নিতে হয়। তখন আর গ্রন্থের কি দরকার?

    “চিঠিতে খবর এসেছে,—‘পাঁচ সের সন্দেশ পাঠাইবা—আর একখানা রেলপেড়ে কাপড় পাঠাইবা।’ এখন চিঠিখানি হারিয়ে গেল। তখন ব্যস্ত হয়ে চারদিকে খোঁজে। অনেক খোঁজবার পর চিঠিখানি পেলে, পড়ে দেখে,—লিখেছে—‘পাঁচ সের সন্দেশ আর একখানা রেলপেড়ে কাপড় পাঠাইবা।’ তখন চিঠিখানি আবার ফেলে দেয়। আর কি দরকার? এখন সন্দেশ আর কাপড়ের যোগাড় করলেই হল।

    মুখুজ্জে, বাবুরাম, মাস্টার প্রভৃতি ভক্তদের প্রতি—“সব সন্ধান জেনে তারপর ডুব দাও। পুকুরের অমুক জায়গায় ঘটিটা পড়ে গেছে, জায়গাটি ঠিক করে দেখে নিয়ে সেইখানে ডুব দিতে হয়।

    “শাস্ত্রের মর্ম গুরুমুখে শুনে নিয়ে, তারপর সাধন করতে হয়। এই সাধন ঠিক হলে তবে প্রত্যক্ষ দর্শন হয়।

    “ডুব দিলে তবে তো ঠিক ঠিক সাধন হয়! বসে বসে শাস্ত্রের (Ramakrishna) কথা নিয়ে কেবল বিচার করলে কি হবে? শ্যালারা পথে যাবারই কথা—ওই নিয়ে মরছে—মর শ্যালারা, ডুব দেয় না!

    “যদি বল ডুব দিলেও হাঙ্গর-কুমিরের ভয় আছে—কাম-ক্রোধাদির ভয় আছে।—হলুদ মেখে ডুব দাও—তারা কাছে আসতে পারবে না। বিবেক-বৈরাগ্য হলুদ (Kathamrita)।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

LinkedIn
Share