মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থঙ্কর হলেন বর্ধমান মহাবীর। আজ বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে মহাবীর জয়ন্তী (Mahaveer Jayanti)। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে মহাবীর জয়ন্তী পালিত হয়। এই বিশেষ দিনটি জৈন সম্প্রদায়ের মানুষেরা আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করে থাকেন। মহাবীর তাঁর জীবদ্দশায় অহিংসা ও আধ্যাত্মিক স্বাধীনতার প্রচার করেছিলেন এবং মানুষকে সকল জীবের প্রতি সম্মান করতে শিখিয়েছিলেন। তিনি সত্য ও অহিংসার মতো বিশেষ শিক্ষার মাধ্যমে বিশ্বকে সঠিক পথ দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। অসংখ্য মানুষকে জীবনের আধ্যাত্মিক মার্গ দেখিয়েছিলেন তিনি।
মহাবীরের জীবন (Mahaveer Jayanti)
কথিত আছে যে, ভগবান মহাবীর বিহারের কুন্দলপুরের রাজ ঘরানায় ৫৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শৈশবে তাঁর নাম ছিল বর্ধমান। ৩০ বছর বয়সে তিনি সিংহাসন ত্যাগ করে আধ্যাত্মিকতার পথে হাঁটেন। জৈন ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে, ১২ বছরের কঠোর নীরব তপস্যার পর ভগবান মহাবীর তাঁর ইন্দ্রিয়কে জয় করে ছিলেন। নির্ভীক, সহনশীল এবং অহিংস হওয়ার কারণে তাঁকে মহাবীর নাম দেওয়া হয়েছিল। ৭২ বছর বয়সে তিনি পাওয়াপুরী থেকে মোক্ষলাভ করেন। সাধকদের মধ্যে মহাবীর যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁকে শান্তি, সম্প্রীতি, পবিত্রতা, ধর্ম প্রচারকের একজন বলে মনে করা হতো। মহাবীর ছিলেন জৈন ধর্মের সব থেকে বড় গুরু এবং ২৪ তম সর্বশেষ তীর্থঙ্কর।
কীভাবে পালন করা হয় এই দিনটি
সর্বোপরি মহাবীর জয়ন্তীর (Mahavir Jayanti 2025) উৎসব জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতাকে উৎসর্গ করা হয়। মহাবীর জয়ন্তীর দিন, জৈন ধর্মের লোকেরা প্রভাতফেরি, শোভাযাত্রা বের করেন। তার পরে মহাবীরের মূর্তি সোনা ও রুপোর কলসে অভিষেক করা হয়। এই সময়, জৈন সম্প্রদায়ের গুরু ভগবান মহাবীরের (Mahavir Jayanti) শিক্ষার কথা বলা হয় এবং সেগুলিকে অনুসরণ করতে শেখানো হয়।
মহাবীরের বাণী:-
১) কোনও প্রাণী বা জীবকে আঘাত, গালিগালাজ, নিপীড়ন, দাসত্ব করানো, অপমান, যন্ত্রণা দেওয়া, নির্যাতন বা হত্যা করা অনুচিত।
২) রাগ থেকেই আরও রাগের জন্ম দেয়। ক্ষমা ও ভালোবাসা আরও ক্ষমা ও ভালোবাসার দিকে পরিচালিত করে।
৩) নিজে বাঁচো, সকলকে বাঁচতে দাও, কাউকে আঘাত কোরোনা। জীবন সকলের কাছে প্রিয়।
৪) আনন্দেই হোক বা কষ্টেই হোক, সুখেই হোক বা দুঃখে, সকল প্রাণীকে সেই নজরেই দেখা উচিত, যেভাবে আমরা নিজেদের দেখি।
৫) অহিংসাই হল সবচেয়ে বড় ধর্ম।