Tag: malaria in kolkata

  • Malaria in Kolkata: সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত হাজারের বেশি! কলকাতা পুর-এলাকায় অব্যাহত ম্যালেরিয়ার দাপট

    Malaria in Kolkata: সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত হাজারের বেশি! কলকাতা পুর-এলাকায় অব্যাহত ম্যালেরিয়ার দাপট

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    উৎসবের মরশুমে ফের বিপদ বাড়ছে। আগাম সতর্কতা জারির পরেও পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সচেতন না হলে অবস্থা আরও জটিল হতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। দুর্গাপুজো শেষ! কিন্তু আর মাত্র কয়েক দিন পরেই দীপাবলির উৎসবে মেতে উঠবেন বঙ্গবাসী। কিন্তু তার মধ্যেই ম্যালেরিয়ার দাপট নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য প্রশাসন। স্বাস্থ্য ভবনের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় মাসে মারাত্মক হারে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। উৎসবের আমেজের তাল কাটতে পারে মশাবাহিত এই রোগ। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চিকিৎসক মহল।

    কী বলছে তথ্য?

    স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র কলকাতা কর্পোরেশন এলাকাতেই নতুন ভাবে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৫৬ জন। কিন্তু অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৮০ জন। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে মারাত্মক হারে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বিগত বছরে কেন্দ্রের তরফে কলকাতার ৬৯টি ওয়ার্ডকে ম্যালেরিয়া প্রবণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই সমস্ত এলাকায় বাড়তি নজরদারির পরামর্শ ও দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরে কলকাতার ১১টি ওয়ার্ডকে বিশেষ স্পর্শকাতর এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরে শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক থেকে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর, টালিগঞ্জের বিস্তৃর্ণ এলাকায় বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার পাশপাশি হুগলি, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাতেও গত এক মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তাই ম্যালেরিয়ার দাপট নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।

    উৎসবের মরশুমে কেন ম্যালেরিয়ার দাপট বাড়ছে?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের দাপ‌ট বৃদ্ধির পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো আবহাওয়া। তাঁরা জানাচ্ছেন, অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বর এই দুই মাসে রাজ্যে প্রবল বৃষ্টি হয়। রাজ্যের অধিকাংশ জায়গা থাকে জলমগ্ন। আর এই আর্দ্র আবহাওয়া এবং জলমগ্ন পরিবেশ মশার বংশবিস্তারের আদর্শ। তাই বছরের এই সময়ে মশাবাহিত রোগের দাপট বাড়ে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মশাবাহিত রোগ এই রাজ্যে নতুন স্বাস্থ্য সঙ্কট নয়। তাই বছরের এই সময়ে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার দাপট রুখতে আগাম পরিকল্পনা জরুরি। স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সাল থেকেই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, আগামী কয়েক বছরে দেশজুড়ে ম্যালেরিয়ার দাপট বাড়তে পারে। ট্রপিক্যাল আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরেই এই সমস্যা হবে। তাই আগাম নানান পরিকল্পনা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো বিভিন্ন স্তরে একাধিক বৈঠক হয়। কিন্তু বাস্তবিক পরিস্থিতি আশানুরূপ হয়নি এমনটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ।

    পুজো কমিটি ও প্রশাসনের সমন্বয়ের অভাব এবং সর্বপরি সচেতনতার অভাবকেই ম্যালেরিয়ার দাপট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, একাধিক জায়গায় দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল তৈরির জন্য জমা জল‌ পরিষ্কার হয়নি। এমনকি আশপাশের আবর্জনা ও সময় মতো পরিষ্কার করা হয়নি। পাশপাশি দুর্গাপুজোর উৎসব শেষের পরেও কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় বর্জ্য পদার্থ পড়ে রয়েছে। এর ফলে মশার দাপট বাড়ছে। তাই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। যদিও কলকাতার অধিকাংশ পুজো কমিটি এবং পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, শহর পরিষ্কারের কাজ তৎপরতার সঙ্গে হয়েছে। ম্যালেরিয়া রুখতে সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হতে হবে। তাই ওয়ার্ড ভিত্তিক সচেতনতা কর্মসূচি চলছে।

    সুস্থ থাকতে কী পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল?

    ম্যালেরিয়ার বিপদ এড়াতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, মশা কামড়ানোর ঝুঁকি কমাতে মশারি টাঙানোর রেওয়াজ ফিরিয়ে আনা জরুরি। এছাড়া আশপাশের এলাকা পরিষ্কার দিকে নজরদারি প্রয়োজন। জমা জল মশার বংশবিস্তারে সাহায্য করে। তাই বাড়িতে কিংবা আশপাশের এলাকায় জমা জল যাতে না থাকে, সে ব্যাপারে প্রশাসনের পাশপাশি সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হতে হবে। জ্বরে তিন দিনের বেশি সময় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো রক্তপরীক্ষা জরুরি। তাতে রোগ সহজে ধরা পড়বে। সময় মতো‌ ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা শুরু হলে বড় বিপদ এড়ানো সহজ হবে।

LinkedIn
Share