Tag: MGNREGA

MGNREGA

  • MGNREGA: চুরির টাকা উদ্ধার হলে তবেই বরাদ্দ ১০০ দিনের কাজে, কেন্দ্রের ফরমানে ফাঁপরে রাজ্য

    MGNREGA: চুরির টাকা উদ্ধার হলে তবেই বরাদ্দ ১০০ দিনের কাজে, কেন্দ্রের ফরমানে ফাঁপরে রাজ্য

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অনিয়ম ধরা পড়েছে। জবকার্ডধারীদের টাকা আত্মসাতও হয়েছে। সেই টাকা উদ্ধার করে সরকারি তহবিলে জমা করার নিদান দিয়েছিলেন দিল্লি থেকে আসা জাতীয় স্তরের মনিটরেরাও। কিন্তু গত তিন বছরে তা করে উঠতে পারেনি রাজ্য। ফলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক নবান্নকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের টাকায় চুরির টাকা উদ্ধার না হলে এক পয়সাও দেওয়া হবে না। 

    রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি লিখে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তিরা ১০০ দিনের টাকা চুরি করেছেন, তাঁদের থেকে সে সব উদ্ধার করে ব্যবস্থা না নিলে আপাতত কোনও বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের খবর।

    প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের নাম বদলে বাংলা আবাস যোজনা করেছিল রাজ্য। ফলে টাকা বরাদ্দও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি গ্রামে গ্রামে সেই ‘বাংলা’ নাম মুছে এখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লেখা আবার শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ১০০ দিনের চুরির টাকা উদ্ধারেও রাজ্য নাকি পদক্ষেপ করবে। এক কর্তার কথায়, উপায় নেই কিছু লোকের থেকে টাকা উদ্ধার করে এফআইআর না করলে এক টাকাও দেবে না কেন্দ্র।

    রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে কী কী গরমিল ধরা পড়েছে?

    গত চার বছরে তিনবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল এসে সরেজমিনে ১০০ দিনের কাজ কেমন চলছে তা ঘুরে দেখেছে। প্রতিবারই যা যা অনিয়িম, দুর্নীতি ধরা পড়েছে তা রাজ্যকে জানিয়ে রিপোর্ট পাঠিয়েছে দিল্লি। ব্যবস্থাগ্রহণের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তারপরেও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি দিল্লি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক চেয়েছিল, যাঁরা গরমিল করেছেন, দুর্নীতি করেছেন তাঁদের থেকে টাকা উদ্ধার করা হোক। 

    আরও পড়ুন: বাংলা আবাস যোজনা নাম মুছলে তবেই মিলবে টাকা, রাজ্যকে জানিয়ে দিল কেন্দ্র

    তিন বছর ধরে রাজ্য বার বার চাইলেও সেই কাজ করেনি নবান্ন। টাকা বন্ধ হওয়ার পরে অন্য তহবিলের টাকা ১০০ দিনের কাজে জমা করে দিয়ে টাকা উদ্ধারের দাবি করেছে তারা। কেন্দ্র এতেও ক্ষুব্ধ। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সাফ কথা, আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে টাকা উদ্ধার করে ১০০ দিনের কাজের তহবিলে জমা করতে হবে। তবেই নতুন করে বরাদ্দ মিলবে।

    মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যে কাজ ১০০ দিনের প্রকল্পে করা যায় না সেই কাজ হয়েছে। গ্রামে প্রভাবশালীদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের রাস্তাও ১০০ দিনের টাকায় কংক্রিট করা হয়েছে। এই টাকাতে নেতাদের বাড়ির বাগানে বাহারি গাছ লাগানো হয়েছে, তাও ধরা পড়েছে। কাজ না করেই টাকা তোলা হয়েছে, এক জায়গায় কাজ হয়েছে কিন্তু প্রকল্পটির বরাদ্দ টাকা রয়েছে অন্যত্র। একই কাজ ভেঙে ভেঙে অনেক কাজ দেখানো হয়েছে। ভুয়ো মাস্টার রোল তৈরি, যে পরিমাণ কাজ হয়েছে তার চেয়ে বেশি টাকার সরঞ্জামের খরচ ও মজুরি দেখানো হয়েছে। কেন্দ্র চুরির জন্য পুলিশে অভিযোগ জানাতে বললেও রাজ্য গা করছে না। ফলে টাকা না দিয়ে উপায় নেই।

    আরও পড়ুন: তৃণমূলের ‘হিসাব’ রাখা আইনজীবীর বাড়িতে আয়কর হানা কেন? কী পাওয়া গেল জানেন?

    রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা জানান, ১০০ দিনের কাজে চুরির টাকা উদ্ধার করতে হলে গ্রামে গ্রামে তৃণমূলের নেতাদের গায়ে হাত দিতে হবে। হাত পড়বে নীচের স্তরের অফিসার-কর্মীদের গায়েও। এটা হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে। ফলে ৩ বছর ধরে কিছুই করা হয়নি। এখন টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দিল্লিকে দেখানোর জন্য অন্তত কিছু নেতা-অফিসারের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতেই হবে। বছরে ৬০০০ কোটি টাকা পেতে হলে অন্তত ৬০০ জনের নামে দুর্নীতির মামলা করা ছাড়া উপায় নেই। তবে নবান্ন কিছুই জানাচ্ছে না।  

  • MGNREGA: কেন ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের টাকা আটকেছে কেন্দ্র? রইল ৮ কারণ

    MGNREGA: কেন ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের টাকা আটকেছে কেন্দ্র? রইল ৮ কারণ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মনরেগা (MGNREGA) বা ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া টাকা কেন কেন্দ্র আটকে রেখেছে, তার আসল কারণ বা বলা ভালো কারণগুলি জানা গেল। যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, রাজ্যের অসহযোগিতার কারণে কার্যত বাধ্য হয়েই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে কেন্দ্রকে।

    রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা (Mamata) বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার অভিযোগ করছেন যে, ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। এমনকি, বকেয়া টাকা যাতে রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Modi) কাছে চিঠিও লিখেছেন।

    কিন্তু, মমতা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুললেও, সত্য ঘটনা একেবারেই উল্টো। আসল তথ্য যাতে বাইরে না আসে, তাই নিয়ে কেন্দ্রের ওপর দোষ চাপিয়ে গোটা বিষয়টিকে যাতে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একবারের জন্যও রাজ্যবাসীর কাছে খোলসা করেননি যে, কেন বা কী কারণে কেন্দ্র এই বরাদ্দ অর্থ প্রদান করা থেকে বিরত থেকেছে। অথবা, বলা ভালো কেন রাজ্যের টাকা আটকে দিয়েছে কেন্দ্র। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী বিলক্ষণ জানেন, এক্ষেত্রে ঝুলি থেকে অনেক বেড়াল বেরিয়ে পড়বে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কোথায় কোথায় কারচুপি করা হয়েছে, কোথায় কোথায় গরমিল করে রাখা হয়েছে, সেই সব ঘটে যাওয়া বিস্তর দুর্নীতির খতিয়ান প্রকাশ্যে চলে আসবে।

    সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ বা মনরেগা প্রকল্প নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। আন্তঃ মন্ত্রক ওই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ঠিক কেন ও কীসের ভিত্তিতে কেন্দ্র রাজ্যের অর্থ আটকে রেখেছে। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, কীভাবে পশ্চিমবঙ্গে মনরেগা বা ১০০ দিনের কাজে প্রকল্পে ব্যাপকহারে কারচুপি হয়েছে। একাধিক ক্ষেত্রে রয়েছে বিস্তর গরমিল। এই নিয়ে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে বিভিন্ন সময়ে চিঠি পাঠানো হলেও, রাজ্য থেকে কোনও জবাব না আসায় বাধ্য হয়ে অর্থ বন্ধ করতে হয়েছে কেন্দ্রকে।

    ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে যুগ্ম সচিব পর্যায়ের আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত করে। রিপোর্ট মূলত ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রদেয় অর্থের প্রেক্ষিতে তৈরি। রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী টিমের তদন্তে উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বলা হয়েছে, অন্তত ৩১টি কাজে বিস্তর গোলযোগ ধরা পড়েছে। তদন্তকারী টিমের মতে, ভূমি সংক্রান্ত কাজে বিশেষ করে বিস্তর গোলমাল রয়েছে। 

    কেন্দ্রীয় টিম যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতে একাধিক গাফিলতি ও গরমিলের উল্লেখ করা হয়েছে—

    ১. কাজের অনুমতি জন্য উচ্চতর কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রয়োজনীয় স্ক্রুটিনি এড়াতে একটি বড় কাজকে ছোট ছোট কাজে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

    ২. সেচ দফতরের সঙ্গে কোনও প্রকার শলা-পরামর্শ না করে বা কোনওরকম পরিকল্পনা ছাড়াই বন্যা রোধ প্রকল্পের আওতায় যত্রতত্র এবং যথেচ্ছভাবে পলি তোলার কাজ করা হয়েছে। 

    ৩. জমির ধরণ বিবেচনা না করেই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। কতটা কাজের আদৌ প্রয়োজন তা বিচার না করেই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। এমনকি, কতটা কাজ হয়েছে তা যাচাই না করেই পেমেন্ট করা হয়েছে। 

    ৪. পুরনো বা চলমান কাজ নতুন রূপে মনরেগা প্রকল্পের আওতায় আবেদন করা হয়েছে।  

    ৫. কেনার বিষয়ে কোনও নিয়ম মানা হয়নি। টেন্ডার প্রক্রিয়া যথাযথভাবে পালন করা হয়নি। কাজের অনুমতি মেলার ১৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ দেখানো হয়েছে। 

    ৬. মনরেগা প্রকল্পে অধীনে থাকতে পারে না এমন কাজ যেমন— বন্যা প্রতিরোধে বালির বস্তা ফেলা, কাঁটাতার দেওয়া, বাহারি গাছ লাগানো ইত্যাদিকেও এর আওতায় এনে দেখানো হয়েছে। 

    ৭. যে সব কাজ অপ্রয়োজনীয়, সেগুলিকেও মনরেগা প্রকল্পের আওতায় এনে করা হয়েছে। 

    ৮. কাজের খতিয়ান নথিভুক্ত বা ফাইল রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত দায়সারাভাবে করা হয়েছে। 

    কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় টিমের পাওয়া তদন্ত রিপোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফ থেকে একটি অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠানো হয়। কিন্তু, ওই এটিআর রিপোর্ট দেখে একেবারেই সন্তুষ্ট হতে পারেনি কেন্দ্র। কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্যের জবাবে খামতি পাওয়া গিয়েছিল। এরপর রাজ্যকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও, মমতা প্রশাসনের তরফে থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।

    এদিনই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। এপ্রসঙ্গে, প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি (BJP Bengal) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, সকলেই চায় ১০০ দিনের কাজ হোক। কিন্তু, কেন্দ্রের টাকা সাধারণ মানুষের জন্য। তৃণমূলের নেতাদের প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরির জন্য নয়। 

LinkedIn
Share