Tag: Murder

Murder

  • TMC: ক্যানিংয়ে শাসক দলের কর্মীকে কুপিয়ে খুন, বাসন্তীতে চলল গুলি, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী

    TMC: ক্যানিংয়ে শাসক দলের কর্মীকে কুপিয়ে খুন, বাসন্তীতে চলল গুলি, গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার গভীর রাতে তৃণমূল কর্মীকে (TMC) ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিন ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার সাতমুখী গাজিপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নান্টি গাজি। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, আইএসএফ আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। যদিও আইএসএফের পক্ষ থেকে হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাসন্তীতে এক তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে। 

    ঠিক কী ঘটেছে?

    ক্যানিং থানার সাতমুখী গাজিপাড়া এলাকায় ভোটের ফল ঘোষণায় তৃণমূল জয়ী হয়। অনেক আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় তৃণমূল (TMC)  জয়লাভ করে। ভোটে জেতার আনন্দে শুক্রবার এলাকায় বিজয় উৎসব চলে। সেই ঘটনার পর রাতে এলাকায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। আইএসএফের বিরুদ্ধে এই বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে।  কয়েকজন তৃণমূল কর্মী এলাকায় বোমাবাজি করার প্রতিবাদ করতে যান। তারপরই আইএসএফ কর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের  লক্ষ্য করে তেড়ে যায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে  তৃণমূল কর্মীরা ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন। ছুটতে গিয়ে নান্টু গাজি নামে ওই তৃণমূল কর্মী রাস্তায় পড়ে যান। ওই অবস্থায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় বলে অভিযোগ। পরে, হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রাতেই ঘটনাস্থলে যায় ক্যানিং থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। জখম তৃণমূল কর্মীকে প্রথমে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চিকিৎসকরা কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তিরিত করা হয়।   সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।

    কী বললেন তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব?

    তৃণমূল (TMC) নেতাদের বক্তব্য, ভোট তৃণমূল অধিকাংশ আসনে জিতে গিয়েছে তা আইএসএফ কর্মীরা মেনে নিতে পারেননি। বিজয় মিছিল হওয়ার পর ওরা সন্ত্রাস করতে এলাকায় বোমাবাজি করা হয়েছিল। সেটার প্রতিবাদ করার দলীয় কর্মীকে এভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।

    বাসন্তীতে চলল গুলি

    বাসন্তীতে ফের চলল গুলি। গুলিতে জখম হয়েছেন এক তৃণমূল (TMC)  কর্মী। জখম তৃণমূল কর্মীর নাম শামিম সর্দার। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ভরতগড় এলাকায়। ঘটনায় অভিযোগের তির আর এস পির দিকে। রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল বিধয়াক পরেশরাম দাস বলেন, ভোটের ফল বের হওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাস চলছে। আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি। আরএসপি নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটছে। এরসঙ্গে আরএসপির কোনও সম্পর্ক নেই।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Murshidabad: নবগ্রামে দুধ ব্যবসায়ীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ

    Murshidabad: নবগ্রামে দুধ ব্যবসায়ীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের খুন মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। এবার খুনের ঘটনা ঘটল নবগ্রামের মাঝিগ্রাম এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম গৌর ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তার ধারে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এই জেলায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিনই সাগরদিঘি এলাকায় এক কংগ্রেস এজেন্টকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজেশ সেখ নামে কংগ্রেসের সেই এজেন্ট এতদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবারই তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার জের মিটতে না মিটতেই ফের জেলায় খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, এই খুনের ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সূত্র পাওয়া যায়নি।

    ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে?

    স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) নবগ্রামের মাঝিগ্রাম এলাকার দুধ ব্যবসায়ী গৌর ঘোষ প্রতিদিনের মতো দুধ দিতে জারুলিয়া গ্রামে যান। বুধবার রাতে তিনি সেই গ্রামে গিয়েছিলেন। রাতে জারুলিয়া থেকে ফেরার পথে মাঝিগ্রাম গ্রামে ঢোকার রাস্তায় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। কে বা কারা তাঁকে খুন করেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না তিনি। এমনকী কারও সঙ্গে বিবাদও ছিল না তাঁর। তা সত্ত্বেও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য নবগ্রামের মাঝিগ্রাম এলাকায়। ঘটনাস্থলে আসে নবগ্রাম থানার পুলিশ। পুলিশকে ঘিরে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে, ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।

    কী বললেন পরিবারের লোকজন?

    মৃতের দাদার বক্তব্য, পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে খুন করা হয়েছে। আমার ভাই কেমন তা এলাকার মানুষ জানেন। কারও সঙ্গে কোনও বিবাদ ছিল না। তারপরও এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই, যে বা যারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Barrackpore: অধ্যাপিকা খুনে সাজাপ্রাপ্ত আসিফই বারাকপুর খুনকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড?

    Barrackpore: অধ্যাপিকা খুনে সাজাপ্রাপ্ত আসিফই বারাকপুর খুনকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভরসন্ধ্যায় বারাকপুরের (Barrackpore) আনন্দপুরীতে সোনার দোকানে ঢুকে মালিকের ছেলেকে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম আশিস কুমার ওরফে আসিফ নামে একজন পাটনায় এক অধ্যাপিকা সহ দুজনকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল। সেই দুষ্কৃতী জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই বারাকপুরে সোনার দোকানে খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে। ঘটনার পর তার নাগাল পায়নি পুলিশ।

    অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে?

    ২০০৬ সালের ৩ ডিসেম্বর পাটনার অভিজাত পাটলিপুত্র কলোনিতে এক আইএএস অফিসার টুকটুক ঘোষ এর বাংলোয় ডাকাতি করতে আসে আশিস কুমার সহ কয়েকজন দুষ্কৃতী। বাধা দিতে গিয়ে খুন হয়েছিলেন আইএএস অফিসারের বোন পাপিয়া ঘোষ। তিনি দিল্লি ও পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপিকা ছিলেন। সেই সঙ্গে খুন হন তাঁর বৃদ্ধা পরিচারিকা মালতি দেবী। ডাকাতিতে বাধা পেয়ে রান্নাঘরের ছুরি দিয়ে ৩৪ বার নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল ৫৩ বছরের পাপিয়াকে। তাঁর বাবা পাটনার আইএএস অফিসার উজ্জ্বল কুমার ঘোষও খুন হন ১৯৫৭ সালে। তার ঠিক ৫০ বছর পর নৃশংসতায় খুন হন তাঁর মেয়ে। বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নীতীশ কুমার। তাঁর শিক্ষা দফতরের কাজে অন্যতম সহায়িকা ছিলেন পাপিয়া। তাঁর দিদি টুকটুক ঘোষ তখন ছিলেন লোকসভার তৎকালীন স্পিকার প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিশেষ সচিব। দেশের শিক্ষামহলে শোরগোল ফেলে দেওয়া সেই খুনে ধরা পড়েছিল আশিস কুমার নামের এক দুষ্কৃতী। ২০০৮ সালে সেই খুনে সাজা হয় আশিসের। সাজা শেষ করে গত বছরই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল ওই কুখ্যাত দুষ্কৃতী। সেই আশিসই নাম পাল্টে আসিফ নাম নিয়ে অপরাধ জগতে পা দেয়। বারাকপুরের (Barrackpore) স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ছেলে খুনের ঘটনায় এই আশিসের ওরফে আসিফের যোগ উঠে এসেছে তদন্তকারী গোয়েন্দাদের হাতে। আশিস ওরফে আসিফই বারাকপুরের (Barrackpore) ঘটনার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এমনটাই উঠে এসেছে পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের হাতে।

    অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ

    পুলিশ সূত্রে খবর, ২৪ মে বারাকপুরের (Barrackpore) আনন্দপুরীর সোনার দোকানে যে চারজন দুষ্কৃতী ঢুকেছিল, তারমধ্যে শফি খান, জামশেদ আনসারিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে, এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আসিফ সহ দুজন পলাতক। সূত্র অনুযায়ী, আসিফের মোবাইল টাওয়ারের শেষ লোকেশন ওড়িশায় পাওয়া গিয়েছে। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শফি ২২ লক্ষ টাকা ডাকাতির মামলায় জেল খেটেছিল। পরে, ছাড়া পেয়ে পরিবার নিয়ে সে ঝাড়খণ্ডে চলে যায়। কিন্তু সেখান থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে সে রহড়ার পাতুলিয়ার একটি অভিজাত আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করে। ঘটনায় আর এক ধৃত শফির মামা জামশেদ আনসারিও একটি অপহরণের ঘটনায় বিহারের ভাগলপুর জেলে বন্দি ছিল। সেখানে আসিফের সঙ্গে তার আলাপ। জেল  থেকে বেরিয়ে ফের অপরাধ জগতে পা রাখে তারা।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Life Imprisonment: ফলতার মিষ্টি ব্যবসায়ী খুনে ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

    Life Imprisonment: ফলতার মিষ্টি ব্যবসায়ী খুনে ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফলতার সহরারহাটে মিষ্টি ব্যবসায়ী খুনে সাজা ঘোষণা করলেন ডায়মন্ড হারবারের এডিজি জয়প্রকাশ সিংহ। অভিযুক্ত ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (Life Imprisonment) এবং ১ জনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন তিনি।

    কী ঘটনা ঘটেছিল?

    প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ শে মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার সহরারহাটের একটি মিষ্টির দোকানের মালিক কার্তিক ঘোষকে দোকানে ঢুকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পর মোট ১১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এদের মধ্যে দুজন ফেরার থাকলেও ৯ জনকে গ্রেফতার করে ফলতা থানার পুলিশ। এরই মাঝে জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় এক বন্দির মৃত্যু হয়। 
    গত সোমবার ডায়মন্ড হারবার এডিজি আদালতে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। মঙ্গলবার সেই মামলার রায়ে অভিযুক্ত রাজা খানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক জয়প্রকাশ সিংহ। অন্যদিকে বাকি সাতজন অভিযুক্ত মুজফফর মিস্ত্রী, উত্তম দোলুই, সবেদ আলি সেখ, সাহাজাদা পাইক, আক্তার উদ্দিন মোল্লা, কাদের সেখ এবং সাইদুল সেখকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life Imprisonment) নির্দেশ দেন বিচারক।

    খুশি নন নিহতের মেয়ে

    অবশ্য নিজের বাবার খুনিদের সাজা ঘোষণার পর নিহত কার্তিক ঘোষের মেয়ে বলেন, তাঁর মৃত বাবা বিচার পেল না। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজা খানের মাত্র ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আগামী দিনে মূল অভিযুক্ত রাজা খানের সর্বোচ্চ শাস্তির (Life Imprisonment) দাবি জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা। অপরদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আইনজীবী সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, তাঁর মক্কেলদের ফাঁসানো হয়েছে। এডিজি আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা।

    কী বললেন সরকারি আইনজীবী?

    এই ঘটনায় সরকারি আইনজীবী স্বপনকুমার কপাট বলেন, ২০১৪  থেকে কার্তিক ঘোষ খুনের মামলা চলছিল। এই মামলায় মোট ৩৫ জন সাক্ষী ছিলেন। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার পর বিচারক মঙ্গলবার সাজা (Life Imprisonment) ঘোষণা করেন। সরকারি আইনজীবী পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Kaliaganj: কালিয়াগঞ্জের সেই নিহত নাবালিকা পাশ করল উচ্চ মাধ্যমিকে, হল না স্বপ্ন পূরণ

    Kaliaganj: কালিয়াগঞ্জের সেই নিহত নাবালিকা পাশ করল উচ্চ মাধ্যমিকে, হল না স্বপ্ন পূরণ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘বড় হয়ে নার্স হওয়ার ইচ্ছে ছিল মেয়ের। কিন্তু তা আর পূরণ হল না।’ আক্ষেপ কালিয়াগঞ্জের (Kaliaganj) নিহত সেই নাবালিকার মায়ের। বুধবার প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। আর সেখানে ২৪৩ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে কালিয়াগঞ্জের ওই নাবালিকা ছাত্রী, যার মৃত্যুতে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। দফায় দফায় উত্তেজনা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর চলেছিল কালিয়াগঞ্জে। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত, গ্রামটিও এখন নীরব। শুধু সমাধির নিচে শায়িত রয়েছে সেই নাবলিকার মৃতদেহ। মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস নেই পরিবারের মধ্যে, রয়েছে শুধু বিষাদের ছাপ। নাবলিকার মা অশ্রুভেজা কণ্ঠে বলেন, “মেয়ে পড়াশোনায় খুবই ভালো ছিল। ইচ্ছে ছিল মানুষের মতো মানুষ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। মেয়ের ইচ্ছে ছিল, সে একজন নার্স হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট দেখে খুবই দুঃখ হচ্ছে, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সেই আশা আর পূর্ণ হল না। যদি আজ মেয়ে বেঁচে থাকত, তাহলে রেজাল্ট দেখে কত আনন্দ পেত। দোষীদের চরম শাস্তি চাই। সিবিআই তদন্ত চাই।”

    বিষাদের সুর গ্রাম জুড়ে (Kaliaganj)

    ইতিমধ্যেই ওই নাবালিকার মৃত্যুর (Kaliaganj) তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এমনকী দরকারে মৃতদেহ তুলতেও পারবে তদন্তকারী দল। এতকিছুর মধ্যেও মেয়েটির উচ্চ মাধ্যমিকের সফলতার পরও বিষাদের সুর গ্রাম জুড়ে। এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, “ছোটবেলা থেকেই ও পড়াশোনায় ভালো ছিল। মাধ্যমিকে রেজাল্ট ভালো করেছে। উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো ফল করেছে। কিন্তু মেয়েটাই তো নেই, রেজাল্ট নিয়ে আর কী হবে? বলার ভাষা নেই। শুনেছি সিট গঠন করেছে। কিন্তু কী যে হচ্ছে?” তদন্ত তাড়াতাড়ি হোক, এটাই আশা গ্রামবাসীদের। অপরদিকে, সাহেবঘাটা এন এন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, “মেয়েটি ভালো রেজাল্ট করেছে। ক্লাস ফাইভ থেকেই ভা্লো ছাত্রী ছিল। খেলাধূলাতেও ভালো ছিল। আচার-আচরণও ছিল ভালো। মেয়েটি আজ নেই, খুব খারাপ লাগছে। আমরা বাকরুদ্ধ।”

    দোষীদের চরমতম শাস্তি চায় পরিবার (Kaliaganj)

    মেয়েটির স্বপ্ন পূরণ হল না। এই আক্ষেপেই দিন কাটাচ্ছোন নাবালিকার পরিবারের সদস্যরা।  তাঁদের একটাই আশা, যে বা যারা প্রকৃত দোষী, তাদের চরমতম শাস্তি হোক। আর এই আশাতেই বুক বাঁধছে নাবালিকার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা। এখন কবে তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবে, সেটা সময়ের অপেক্ষা। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Balurghat: ত্রিশূল দিয়ে ঠাকুমাকে খুন করার অভিযোগ নাতির বিরুদ্ধে, কেন জানেন?

    Balurghat: ত্রিশূল দিয়ে ঠাকুমাকে খুন করার অভিযোগ নাতির বিরুদ্ধে, কেন জানেন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঠাকুমাকে খুন করার অভিযোগ উঠল নাতির বিরুদ্ধে। পরে, নিজেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করল অভিযুক্ত নাতি। ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট (Balurghat) ব্লকের চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শোবরা শ্যামপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুশীলা বর্মন (৫১)। আর অভিযুক্ত যুবকের নাম নয়ন বর্মন। সে বর্তমানে বালুরঘাট (Balurghat) সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকলেও পরিবারের কেউই তার সঙ্গে দেখা করতে যায়নি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, হাসপাতালে পুলিশি নজরদারিতে রয়েছে অভিযুক্ত যুবক। সুস্থ হলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

    ঠিক কী ঘটেছিল?

    বালুরঘাট ব্লকের শ্যামপুর এলাকার  সুশীলাদেবীর স্বামী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। ছেলে অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। পুত্রবধূ অন্যত্র সংসার পেতেছেন। ছোটবেলা থেকে তাই এক নাতি ও নাতনিকে নিজের সন্তানের মতো করেই মানুষ করেছেন সুশীলাদেবী। বেশ কয়েক বছর আগে নাতি-নাতনির বিয়েও দিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু নাতি নয়ন বর্মন প্রায় নিয়মিত মদ খেয়ে এসে বাড়িতে অশান্তি করে বলে অভিযোগ। ৪ মে রাতে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে নয়ন তার স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করে। নাতবউকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন ঠাকুমা। আর ওই সময়ই পাশের মন্দির থেকে ত্রিশূল তুলে এনে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। পরে, মেঝেতে ফেলে বেধড়ক মারধর চলে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বালুরঘাট (Balurghat) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫ মে সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে ঠাকুমার মৃত্যুর খবর পেয়ে অভিযুক্ত নয়ন বর্মন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজর আসতেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসার জন্য বালুরঘাট (Balurghat) জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। 

    কী বললেন অভিযুক্ত যুবকের পরিবারের লোকজন?

    অভিযুক্ত যুবকের বোন সনেকা বর্মন শনিবারই দাদার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিন তিনি  বলেন, দাদা মদ্যপ অবস্থায় মাঝে মাঝেই আমার বউদি ও ঠাকুমাকে মারধর করত। ঘটনার দিন রাতে দাদা বাড়িতে এসে বউদিকে মারছিল। সেই সময় আমার ঠাকুমা প্রতিবাদ করলে ঠাকুমাকেই ত্রিশূল দিয়ে হামলা চালায় দাদা। যার জেরে ঠাকুমার মৃত্যু হয়েছে। আমি  দাদার কঠোর শাস্তি চাই। তাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। শুনেছি, সে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমরা দেখতে যাইনি। যাবও না। অভিযুক্ত যুবকের স্ত্রী আশা রায় বলেন, খুব ভালো মানুষ ছিলেন ঠাকুমা। তিনিই কষ্ট করে মানুষ করলেন, আর তাঁকেই যদি ও মেরে ফেলতে পারে, তাহলে তো সকলকেই মেরে ফেলতে পারে। তাই আমি চাই, ও যেন সারাজীবন জেলেই থাকে। স্বামীর জন্য একটুও আফশোস হবে না আমার।

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    Post Poll Violence: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের সপ্তম পর্ব।

     

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিজের পছন্দের রাজনৈতিক দলকে ভোট দিয়েছিলেন। অভিযোগ, ফলাফল ঘোষণার পর স্থানীয় শাসকদলের মদতপুষ্ট মস্তানদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হন (Post Poll Violence)। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অবহেলায় বাঁচানো যায়নি ধর্ম মণ্ডলকে। নদিয়ার চাপড়া, হৃদয়পুর সীমান্তের বাসিন্দা। মূলত চাষাবাদ করতেন। বিজেপির সক্রিয় সদস্য এবং কর্মী ছিলেন। ছয় বছর ধরে পার্টি করতেন বলে জানা যায়। বিজেপি করার জন্য সরকারি সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল এই পরিবার। দোষ একটাই, কেন বিজেপি করবে?

    হত্যার প্রেক্ষাপট

    পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি করার জন্য তৃণমূলের গুন্ডারা বাড়ি থেকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করে নিয়ে যায় ফলাফল বের হওয়ার আগেই। ধর্ম মণ্ডলকে অনেকদিন ধরেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, বিজেপি ছেড়ে যেন তৃণমূলে যোগদান করে। ঝগড়া হলেই তৃণমূলের দুই মাতব্বর হুমকি দিত, ভোট মিটলেই দেখে নেব (Post Poll Violence)। সারাদিন মাঠে কাজকর্ম করার পর সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে গেলে তৃণমূলের গুন্ডারা রীতিমতো হুমকি দিত। 

    পুলিশ ছিল কাছেই, তবুও খুন!

    পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর বাড়ি থেকে দোকানের কাছে পাকা রাস্তায় যেতেন না ধর্ম মণ্ডল। কারণ, একটা আতঙ্ক কাজ করত, উনি বিজেপি করতেন বলে। ঈদের দিন ছিল ১৪ মে। চাষের জমিতে ধর্মবাবু গরুর জন্য ঘাস তুলতে যান। ঠিক দুপুর সাড়ে ১২ টায় বাড়ির লিচুবাগানে তৃণমূল সমর্থক প্রায় ২০ জন মিলে ধর্ম মণ্ডলের ভাই সঞ্জিতকে আক্রমণ করে। ধর্ম মণ্ডলের ভাইকে মস্তানরা বাঁশ দিয়ে মেরে হাত ভেঙে দেয়। পরিস্থিতি বুঝে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান স্থানীয় এক ব্যক্তি। ঠিক সেই সময় ধর্ম মণ্ডল বাঁচাতে যান ভাইকে। আর তখনই ধর্ম মণ্ডলকেও রড দিয়ে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। আটকাতে গেলে ধর্মবাবুর স্ত্রীকে লাথি মেরে দূরে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। ধর্ম মণ্ডলের স্ত্রী পা ধরে মাফ চান। কিন্তু নির্মম কসাইদের মনে কোনও দয়ার ছাপ ছিল না। উজ্জ্বল নামে একজন একটা বড় দা দিয়ে ধর্ম মণ্ডলকে কোপ দেয় (Post Poll Violence)। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত কালু মস্তান বলে, একেবারে শেষ করে দে! উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলের সামান্য দূরেই পুলিশ এসে উপস্থিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। পরে আহত ধর্মবাবুকে গাড়িতে করে প্রথমে বাঙ্গালঝী, তারপর শক্তিনগর এবং পরবর্তীতে কলকাতায় নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু রক্তক্ষরণ এতই হয়েছিল যে শেষরক্ষা হয়নি।

    তদন্তে সিবিআই, ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় পরিবার

    আতঙ্কিত পরিবার ঘটনার প্রায় দু দিন পর চাপড়া থানায় অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করে। কিন্তু লাভ হয়নি। ধর্ম মণ্ডলের স্ত্রী-ছেলের কোনও অভিযোগ জমা নেয়নি পুলিশ। ঘটনার সমস্ত ভিডিও মোবাইল থেকে পুলিশ জোর করে নিয়ে নেয়। সমস্ত ঘটনাটি পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটে বলে পরিবারের দাবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলা দায়ের করা হয় এবং তদন্ত সিবিআই করবে, আদেশ দেয় হাইকোর্ট। খুনে প্রধান অভিযুক্ত হল লাল্টু ঘোষ (তৃণমূলের যুব সভাপতি) কালু শেখ, কিংকর মণ্ডল, বিজয় শেখ, পিন্টু ঘোষ, আবুল শেখ, আলমগীর শেখ, ভগীরথ দাস, গণেশ মণ্ডল এবং আরও অনেকে। অভিযুক্তদের মোট ১৮ জন ধরা পড়ে এবং চারজন পলাতক ছিল। সিবিআই প্রথমদিন তদন্ত করতে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা, গাড়িতেও ভাঙচুর (Post Poll Violence) করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী ছেলে-বৌমাকে নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ন্যায় এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। 

     

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    পর্ব ২: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    Post Poll Violence: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ষষ্ঠ পর্ব।

     

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর ‘খেলা হবে, কঠিন খেলা হবে’-এই স্লোগান দিয়ে বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড (Post Poll Violence) চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সন্তান হারানো মায়ের আর্তনাদ, স্বামী হারানো স্ত্রীর কান্না, পিতা হারানো সন্তানের বেদনা আপামর বঙ্গবাসীর কাছে ছিল জাতীয় বিভীষিকা, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। না হলে শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট হয়েছিলেন বলে এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়!

    কে এই অরূপ রুইদাস?

    অরূপ রুইদাস ছিলেন বাঁকুড়ার ইন্দাসের তফশিলি সমাজের মানুষ। বাবা গণেশ রুইদাস এবং মা কাঞ্চন রুইদাস দুজনই বৃদ্ধ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে এমএ পাশ করেন অরূপ। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ না থাকায় কলকাতায় একটি বইয়ের দোকানে কাজ করতেন। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন অরূপ। প্রধানমন্ত্রীর মিটিং-এ গিয়ে বিজেপির পতাকা লাগিয়েছিলেন। ভোটের দিন বুথে বিজেপির এজেন্ট হিসাবেও বসেছিলেন অরূপ। আর তারই খেসারত দিতে হল তাঁকে। শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট হওয়ার জন্যই তাঁকে খুন (Post Poll Violence) হতে হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের।

    কীভাবে হল নির্মম হত্যা!

    পরিবারের সদস্যদের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, ২ মে ফলাফল ঘোষণার পরদিন, অর্থাৎ ৩ মে সকাল ১১ টা নাগাদ বাড়িতে এসে ৫-৬ জন প্রথমে দেখে নেবো বলে হুমকি দিয়ে যায়। তারপর ৪ মে ঠিক দুপরবেলা ‘খেলা হবে খেলা হবে/ ঠিক ঠিক খেলা হবে’ ডিজে গান আর অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু হয়। দুপুরের খাবার খাওয়া হয়নি তখনও, এমন সময় প্রায় ১০০ জন তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডা বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে বাবা-মাকে বেধড়ক মারধর করে। তারপরই অরূপের গায়ের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং গলায় একটা লাল গামছা বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে যায় খামারের দিকে। এরপর আর অরূপকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরের দিন ৫ মে সকালে বর্ধমানের বল্লভপুর এবং দিগল গ্রামের মাঝের এক বটগাছে ঝুলন্ত দেহ (Post Poll Violence) খুঁজে পাওয়া যায়। পুলিশ এসে দেহ শনাক্ত করে। বৃদ্ধ নিরুপায় বাবা-মা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

    একইসঙ্গে চলেছিল লুটপাট 

    সেই হামলা ছিল ভয়াবহ। পরিবারের বিবরণ অনুযায়ী, মাটির ঘরের সিমেন্টের সব চাল ভেঙে ফেলা হয়। বাড়িতে পায়খানা, রান্নাঘরের গেট ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। লোহার করাত দিয়ে বাঁশ-বেত কেটে নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির চাল, ডাল, শাক-সবজি, গচ্ছিত টাকা, গয়না সব লুট করে নিয়ে চলে যায় তারা। হত্যার (Post Poll Violence) পর অরূপের কাকা প্রায় ৬ মাস ঘরছাড়া ছিলেন।

    পুলিশ উল্টে বাড়ির লোকের বিরুদ্ধেই মামলা করল

    পরিবারের অভিযোগ, খুনের (Post Poll Violence) বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কোনও অভিযোগ জমা নেয়নি। উল্টে পুলিশ বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে কেস দায়ের করে বলে অভিযোগ মায়ের। পুলিশ পরিবারের বিরুদ্ধে ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭, ৫০৬ ধারায় মামলা করেছিল। পুলিশের প্রতি পরিবারের কোনও আস্থাই নেই বলে পরিবারের লোকজন সেই সময় মন্তব্য করেছিলেন।

    সিবিআই তদন্ত চলছে

    নির্যাতনের সময় এবং পরে পরিবারের সঙ্গে পুলিশ অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করে বলে অভিযোগ। পরিবার বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করে। চাপে পড়ে পুলিশ বাড়িতে একজন রক্ষী নিযুক্ত করে। মায়ের দাবি, প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে ছিল শেখ সইফুদ্দিন, শেখ হামিদ, শেখ নাসের, শেখ কালু, ফকির আহম্মদ শেখ, শেখ বাবু। এই খুনের পিছনে প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে অধিকাংশ শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। হাইকোর্টের নির্দেশে পরবর্তীতে সিবিআই খুনের (Post Poll Violence) তদন্ত করছে। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে। কিন্তু পরিবারের দাবি, হত্যাকারীদের ফাঁসিকাঠে ঝোলাতে হবে।

     

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    পর্ব ২: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩ : ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে! 

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    Post Poll Violence: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পঞ্চম পর্ব।

     

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গণতন্ত্র, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারের চূড়ান্ত কালা অধ্যায় ছিল ভোট-পরবর্তী মাসগুলি। এমনটাই মনে করেন বিরোধীরা। তা না হলে কৃষ্ণনগরের অত্যন্ত সাধারণ এবং সামান্য দিনমজুর পলাশ মণ্ডলকে কেবলমাত্র বিজেপিকে সমর্থন করা এবং নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য দুষ্কৃতীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন (Post Poll Violence) হতে হয়!

    কে এই পলাশ মণ্ডল? কীভাবে খুন করা হয়েছিল তাঁকে?

    পলাশ মণ্ডলের জন্ম ১৯৭৬ সালের ২ জুন এবং মৃত্যু হয় ২০২১ সালের ১৪ জুন। বাড়ি কৃষ্ণনগরের মনীন্দ্রপল্লি, বারইহুদায়। বিজেপির একজন সাধারণ কর্মী ছিলেন। ঘটনার একদিন আগে রাত এগারোটা নাগাদ আচমকা হামলা করে খুনের হুমকি দিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের গুন্ডারা, এমনটাই পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় গুন্ডারা বাড়িতে ঢুকে দরজায় প্রথমে আঘাত করে। তারপর খুলতে না পেরে উপরের টিন কেটে রড, দা, কাঁচি, চাকু, তলোয়ার ইত্যাদি নিয়ে হামলা (Post Poll Violence) চালায়। দলে তারা ছিল প্রায় ২০০ জন। বাড়িতে টিভি, বাসনপত্র, শাড়ি, গয়না আসবাবপত্র লুট করে গুন্ডারা। সেই সঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাড়ির দেওয়ালে কোপ দেয়। ভয়ে পলাশ নিজের জীবন বাঁচাতে ঘরের খাটের নীচে আশ্রয় নেন। কিন্তু হিংস্র গুন্ডারা ঘরে ঢুকে রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারতে মারতে খাটের নিচ থেকে বের করে তাকে। এরপর ঘর থেকে বের করে বাঁশ দিয়ে আঘাত করে এবং পরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে কানের কাছে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করে ডাক্তার। উল্লেখ্য, সবটাই পলাশবাবুর দুই মেয়ে এবং স্ত্রীর সামনে ঘটে। স্ত্রী শেফালি মণ্ডল কৃষ্ণনগর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
    এত নির্মমভাবে হত্যা (Post Poll Violence) করা হয় যে আশপাশের মানুষ বাঁচানোর সাহস করেনি। পরিবারের অভিযোগ ছিল, পলাশবাবুর দোষ একটাই ছিল, উনি বিজেপির পতাকা-পোস্টার লাগাতেন এবং বিজেপির মিটিং-মিছিলে যেতেন। বাড়ির দেওয়ালে তারপরেও ছিল রক্তের দাগ। দরজায় ছিল দা দিয়ে বড় বড় কোপের দাগ। পলাশবাবু গেঞ্জির রিপ কাটার কাজ করতেন। ঘটনার দিন খুন করে আততায়ীরা রিপকাটার মেশিনটিও তুলে নিয়ে চলে যায়।

    পরিবার ঘরছাড়া, দিন কেটেছে অসহায় অবস্থায়

    পরিবারে উপার্জনের একটা বড় দায়িত্ব ছিল পলাশের উপর। পলাশবাবুর মেয়ে পম্পা মণ্ডল তখন দশম ক্লাসের ছাত্রী। শক্তিনগর গার্লস স্কুলে পড়াশুনা করত। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী কলকাতায় গিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালাতেন। পলাশবাবুর মায়ের কথা সূত্রে জানা গিয়েছিল, তাঁরা পূর্ববঙ্গের ফরিদপুরের বাসিন্দা ছিলেন। দেশ ছেড়ে এসে ছেলেকে এইভাবে মরতে হবে, কেউ ভাবতে পারেননি। শুধু খুন (Post Poll Violence) করেই আততায়ীরা ক্ষান্ত হয়নি। এলাকায় বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হলে অপরাধীদের আত্মীয়রা প্রভাতী দেবনাথ, মাম্পী দেবনাথ, মান্তু দেবনাথ রোজ হুমকি দিয়ে যেত বলে অভিযোগ। গালিগালাজ এবং লোক লাগিয়ে মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করবে বলেও হুমকি চলেছিল প্রতিনিয়ত।

    সিবিআই তদন্ত চলছে, বিচার সময়ের অপেক্ষা

    বর্তমানে ওই হত্যার (Post Poll Violence) তদন্ত সিবিআই করছে। প্রধান অভিযুক্ত হল আজাহার শেখ, কুষাই দাস, পাপ্পু মুখার্জি, বলরাম দাস, অপু দেব, বাবু সোনা মুখার্জি, আনন্দ সরকার, হারান চাকি, হুদা চাকি, অখিল ভৌমিক, সুরেষ পারসি, তাপস দেবনাথ। অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। তৎকালীন তৃণমূলের কাউন্সিলর নিত্য প্রামাণিকের পরোক্ষ ইন্ধন আছে বলে পরিবারের অভিযোগ। তদন্ত এখনও চলছে। হত্যার বিচার এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    পর্ব ২: ৩–৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Post Poll Violence: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    Post Poll Violence: ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন, দুষ্কৃতীরা ছাড়েনি অন্তঃসত্ত্বাকেও!

    ঠিক দু-বছর আগের কথা। ২০২১ সালের ২ মে। কোভিড দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু তাতে কী। শাসক তৃণমূল তখন ফের ‘মধুভাণ্ড’ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ। ভোটের ফলে যখন পরিষ্কার হয়ে গেল, তৃতীয়বারের জন্য মসনদের দখলদারি তাদের হাতেই থাকছে, তখনই যেন বেরিয়ে পড়ল নখ-দন্ত। বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অন্তত তেমনটাই। তাদের অভিযোগ, বিজয়োল্লাসের নামে শুরু হয়ে গেল প্রতিপক্ষকে ‘টাইট’ দেওয়ার কাজ। তাদের স্মৃতিতে ভাসছে, চটুল গান, অশ্রাব্য গালিগালাজ, অভব্য অঙ্গভঙ্গি, রাস্তার দোকানে ভাঙচুর এবং বিরোধী দলের কর্মীদের প্রতি হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড-কিছুই বাদ যায়নি। ভয়ঙ্কর সেইসব ঘটনা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব।

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করাটাই কি ছিল এই রাজ্যের মানুষের সবচেয়ে বড় অপরাধ? বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর মে মাস জুড়ে রাজ্যজুড়ে যে হত্যালীলা চলেছে, তাতে এমনটাই মনে করছেন বিরোধীরা। তাদের আরও অভিযোগ, একদিকে যখন একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন পুলিশ-প্রশাসন ছিল সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। ফলে নিরুপায় এবং অসহায় সাধারণের একমাত্র আশ্রয় ছিল সাংবিধানিক বিচার বিভাগ।

    মে মাসে ভোট-পরবর্তী হত্যালীলার খতিয়ান

    ২ মে ভোট গণনার সময় বীরভূমের ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। সোনারপুরের প্রতাপনগরে হারান অধিকারীকে বোমা মেরে হত্যা (Post Poll Violence) করা হয়। জামদার বস গ্রামে গুলিতে খুন হন হারাধন রায়। সব ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার আনন্দে মত্ত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। চাকদায় বিজেপি দাবি করে, তাদের কর্মী উত্তম ঘোষকে গুলি করে হত্যা করেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। ফলাফল প্রকাশের পর আক্রমণ এবং হিংসা যে হয়েছে, একথা বার বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও বিবৃতি এবং এলাকা পরিদর্শন করে সেই সময় জানিয়েছিলেন।

    ৩ মে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের উলাগ্রামে খুন হন বিজেপি সদস্য মহম্মদ আলি। শীতলকুচিতে হত্যা করা হয় মানিক মৈত্রকে। মগরাহাটে খুন হন সৌরভ বর, বর্ধমানের রায়নায় খুন হন দুর্গাবালা বাগ, জগদ্দলে মৃত্যু হয় শোভারানী মণ্ডলের। ভাঙড়ে হাসানুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে দুষ্কৃতীরা একমাত্র বিরোধী দল করায় বল্লম, চাকু, তলোয়ার দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। সেই সঙ্গে হাসানুজ্জামানের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে পেটে লাথি মেরে গুরুতর জখম করে।

    পর্ব ১: গলায় সিসিটিভি-র তার পেঁচিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছিল অভিজিৎ সরকারকে!

    ৪ মে বাঁকুড়ার ইন্দাসে খুন হন অরূপ রুইদাস। বুথে বিজেপির এজেন্ট হওয়াটাই তাঁর একমাত্র অন্যায় ছিল। একই দিনে দিনহাটায় খুন হন বিজেপি সমর্থক হারাধন রায়।  

    ৫ মে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় বিজেপি কর্মী রসিদুল হকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের শ্রীপুরে বলরাম মাঝিকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মেদিনীপুরের সবংয়ের বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত মার্কণ্ডচক গ্রামের বিশ্বজিৎ মহেশ নির্মমভাবে খুন হন। ঝাড়গ্রাম কিষাণ মোর্চার জাম্বনির ভাডুয়া গ্রামের কিশোর মাণ্ডিকে খাটসুরা এলাকার মহুয়াচকের কাছে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। 

    এই মাসেই ৬ মে কোতুলপুরে কুশ ক্ষেত্রপাল, ৭ মে নলহাটিতে মনোজ জসওয়াল, ১০ মে সন্দেশখালিতে আস্তিক দাস, ১১ মে আমডাঙায় রঞ্জিত দাস, ১২ মে বারাসতে জ্যোৎস্না মল্লিক, ১৩ মে নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি, ১৬ মে নদিয়ার চাপড়ায় ধর্ম মণ্ডল, ২০ মে নির্মল মণ্ডল, ২৩ মে রাজারহাটে প্রসেনজিৎ দাস, ৩০ মে কোচবিহারের সিতাইয়ে অনিল বর্মনকে হত্যা করা হয়। এই নিরীহ মানুষগুলিকে হত্যা করার দায় কার, মানবাধিকার কর্মীরা সেই প্রশ্ন তুলছেন। বিরোধীরা এই হত্যার পিছনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদেরই দায়ী করছেন। প্রত্যেকটি কেস এখন সিবিআই তদন্তের অধীনে।  

    ৩-৪ মাসে খুন ৬২ জন! 

    বিভিন্ন সূত্রের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, ভোট-পরবর্তী তিন-চার মাসে প্রায় ৬২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছিল সাধারণ নাগরিক সমাজ। জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বে গড়া বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ ভোট পরবর্তী হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। খুনের মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনেক কেসে সিবিআই লুক আউট নোটিস জারি করেছে। বর্তমানে ন্যায় বিচারের আশায় নিহতদের পরিবারগুলি দিন গুনছে। সেই বিচার এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। (চলবে)

     

    পর্ব ৩: ৪০ হাজার ঘরবাড়িতে লুটপাট, এক লক্ষ পরিবার ঘরছাড়া, হামলা চলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়েও!

    পর্ব ৪: ছেলে বিজেপি করে, এই ‘অপরাধে’ই কি নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মাকে!

    পর্ব ৫: পলাশকে খাটের নিচ থেকে খুঁচিয়ে বের করে নৃশংসভাবে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা!

    পর্ব ৬: এমএ পাশ অরূপকে অকালে চলে যেতে হয়েছিল শুধুমাত্র বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন বলে?

    পর্ব ৭: দরিদ্র চাষিকে রাজনৈতিক মত প্রকাশের মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে!

    পর্ব ৮: কমিশনের কোর্টে বল ঠেলে ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় এড়িয়েছিলেন তিন-তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী!

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share