Tag: Nepal Protests

  • India Welcomes Nepal: সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার’ আশা, নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানাল ভারত

    India Welcomes Nepal: সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার’ আশা, নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানাল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নেপালে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত (India Welcomes Nepal)। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির (Sushila Karki) নেতৃত্বাধীন এই সরকারকে “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছে নয়াদিল্লি। সরকার পতনের পর শুক্রবার অগ্নিগর্ভ নেপালের হাল ধরলেন সে দেশের প্রাক্তন বিচারপতি ৭৩ বছরের সুশীলা কার্কি। এদিন রাতে নেপালের রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্য প্রধানদের উপস্থিতিতে শপথ নিলেন তিনি। কাঠমান্ডুর রাষ্ট্রপতি ভবন শীতল আবাস থেকে বিবৃতি জারি করে সে কথা জানানো হয়েছে।

    স্বাগত বার্তা ভারতের

    নেপালের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহের নাম উঠছিল। কিন্তু ‘জেন জি’-র তরফে তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এরপরই কার্কির নাম ওঠে এবং তাঁর পক্ষেই সবচেয়ে বেশি সমর্থন মেলে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি শুক্রবার রাতে শপথগ্রহণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হলেন। সুশীলা (Sushila Karki) নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে দিল্লি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “আমরা নেপালে সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। আমরা আশাবাদী যে এই সরকার নেপালে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার পথে সহায়ক হবে। নিকট প্রতিবেশী, একত্রে গণতান্ত্রিক দেশ এবং দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে, ভারত নেপালের জনগণ এবং দেশের সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে।”

    নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী

    নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পোদেল শুক্রবার কাঠমান্ডুতে এক অনুষ্ঠানে সুশীলা কার্কিকে (Sushila Karki) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পাঠ করান। উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। ৭৩ বছর বয়সি কার্কি ছয় মাসের মধ্যে নতুন সংসদীয় নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন। সৎ ও স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত কার্কি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পরই কার্কির নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়। ওলি দেশজুড়ে নেপালের যুব সমাজের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়ে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। এই বিক্ষোভ শুরু হয় ওলির সরকারের বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত ঘিরে — যা নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন বলে বিবেচিত। রাষ্ট্রপতি, সেনাবাহিনী এবং “জেনারেশন জেড” আন্দোলনকারীদের মধ্যে একাধিক বৈঠকের পরই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর জন্য চূড়ান্ত করা হয়।

    ভারতকে পাশে থাকার আহ্বান

    প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলার নাম কার্যত নিশ্চিত হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, “মোদিকে আমি নমস্কার জানাই। আমি তাঁকে সম্মান করি। ভারতের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা এবং স্নেহ রয়েছে। কারণ, তাঁরা সর্বদা নেপালের পাশে থেকেছেন।” নেপালে সরকার পতনের তিন দিনের মাথায় গঠিত হল অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার রাতে তিনি রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের (Ramchandra Poudal) কাছে শপথবাক্য পাঠ করেন ৭২ বছর বয়সি সুশীলা (Sushila Karki)। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি রাম সহায় এবং প্রধান বিচারপতি প্রকাশ সিং রাওয়াত। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই।

    নেপালে পরবর্তী নির্বাচন কবে

    বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুশীলা কার্কিকে (Sushila Karki) মনোনীত করেন আন্দোলনকারী ছাত্র যুবরা। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় তাঁর কাছে এই প্রস্তাবে সম্মতি চাওয়া হলে তিনি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য কমপক্ষে ১ হাজার স্বাক্ষর চেয়েছিলেন। পরে তাঁর পক্ষে প্রায় ২ হাজার ৫০০ স্বাক্ষর জমা পড়ে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে সম্মত হন সুশীলা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির নিয়োগের কড়া সমালোচনা করেছে নেপালের মাওয়িস্ট পার্টি। শুক্রবার রাতে সুশীলা কার্কির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করে নেপালি সংসদের দুই কক্ষের প্রধানরা। রাষ্ট্রপতির পক্ষে থেকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে এবং জাতীয় সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ দাহাল শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। নেপালের জেন জি আন্দোলকারীদের কোর কমিটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা বেঁধে দেবার কথা জানিয়েছেন। তাদের দাবি, আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নেপালের পরবর্তী নির্বাচন করতে হবে। সূত্র অনুসারে, ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালের পরবর্তী নির্বাচন হবার কথা।

  • PM Modi: অশান্ত নেপাল, শান্তির বার্তা মোদির, হিংসার আগুনে মৃত্যু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর, রাস্তার দখল নিল সেনা

    PM Modi: অশান্ত নেপাল, শান্তির বার্তা মোদির, হিংসার আগুনে মৃত্যু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর, রাস্তার দখল নিল সেনা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নেপালের (Nepal Violence) অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে ভারত। প্রতিবেশী দেশে সরকারের বিরুদ্ধে ‘জেন জি’ প্রজন্মের বিক্ষোভ ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। সর্বত্র চলছে ধ্বংসলীলা। চাপে পড়ে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন। তাঁর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জল্পনাও জোরালো। রাষ্ট্রপতির ইস্তফার বর্তমানে শাসনভার গিয়েছে সেনার হাতে। এই প্রেক্ষাপটে বন্যাকবলিত রাজ্যগুলির পরিদর্শন শেষে নয়াদিল্লি ফিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) মন্ত্রিসভায় একটি উচ্চপর্যায়ের জরুরি বৈঠক করেন। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি জানান, নেপালের পরিস্থিতির ওপর ভারত নিবিড় নজর রাখছে।

    কী লিখলেন প্রধানমন্ত্রী?

    নিজের পোস্টে প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) লেখেন, ‘‘নেপালে ঘটে যাওয়া সহিংসতা হৃদয়বিদারক। অনেক তরুণ প্রাণ হারিয়েছে, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। নেপালের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও উল্লেখ করেন (PM Modi), ‘‘আমি নেপালের সমস্ত ভাই ও বোনদের প্রতি বিনীতভাবে আহ্বান জানাই, শান্তি বজায় রাখুন এবং একসঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করুন।’’

    প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, প্রাণ হারালেন তাঁর স্ত্রী

    সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ক্ষোভে জ্বলছে নেপাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র-যুবদের রোষ আছড়ে পড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন মন্ত্রীরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে। বিদ্রোহীদের হামলা থেকে রেহাই পাননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানালও। কাঠমান্ডুর ডাল্লুতে তাঁর বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলে প্রাণ হারান তাঁর স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর। পরিবারের অভিযোগ, আগুন লাগানোর আগে বিদ্রোহীরা তাঁকে জোর করে বাড়ির ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয়। প্রধানমন্ত্রী ওলি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েলের বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ললিতপুর জেলার খুমালতারে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’-র বাসভবনে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর করা হয় তাঁর বাড়ি। দেশের যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের সুনাকোঠী বাড়িও ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়ে। ওলি মন্ত্রিসভার সদস্যরাও বিক্ষোভের আঘাতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। একাধিক মন্ত্রীর বাড়ি এবং ওলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে রাস্তায় তাড়া করে পেটায় সেদেশের বিক্ষুব্ধ জনতা। তাঁর বাড়িও আক্রান্ত। মঙ্গলবার দুপুরে সেই ঘটনার অসংখ্য ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।

    রাস্তার দখল নিল সেনা

    অশান্ত পরিস্থিতি সামলাতে সেনার দখলে গিয়েছে গোটা দেশ। সোমবার রাতে নেপাল (Nepal Violence) সেনার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, রাত ১০টা থেকে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তায় নামবে। সেনার বক্তব্য, অরাজকতার সুযোগ নিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালাচ্ছে। এসব বন্ধ না হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে সেনা। প্রধানমন্ত্রী ওলির ইস্তফার পর আন্দোলনকারীদের উল্লাস দেখা গিয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তই যে এই আন্দোলনের প্রধান কারণ, তা স্পষ্ট। তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছিল সরকার—এমন অভিযোগও উঠেছে ওলি সরকারের বিরুদ্ধে।

    বিমানবন্দরের দখল নিল সেনা

    বিক্ষোভকারীরা ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী দ্রুত সেখানে নিয়ন্ত্রণ নেয়। বর্তমানে বিমান পরিষেবা আংশিকভাবে স্থগিত রয়েছে। ইন্ডিগো ও নেপাল এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যেই দিল্লি-কাঠমাণ্ডু রুটে বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে। প্রতিদিন এয়ার ইন্ডিয়ার ছয়টি ফ্লাইট এই পথে চলাচল করে, তবে মঙ্গলবার সংস্থাটি চারটি ফ্লাইট বাতিল করেছে। শুধু বিমানবন্দর নয়, নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনও এখন সেনার নিয়ন্ত্রণে।

    নিজেদের বিবৃতিতে কী জানাল সেনা?

    মঙ্গলবার সেনার তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে তারা গভীরভাবে মর্মাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সেনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় তারা সংবিধান অনুযায়ী অটল। তরুণ প্রজন্মকে সেনার আহ্বান, এই সংকটকালে শান্তি, সামাজিক সম্প্রীতি ও জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে এগিয়ে আসতে হবে।

    বিদ্রোহের সূত্রপাত

    এই সংকটের সূত্রপাত হয় নেপাল সরকারের সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। বহুদিনের জমে থাকা অসন্তোষে ঘৃতাহুতি দেয় সেই পদক্ষেপ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামে ছাত্র-যুব সমাজ। সোমবারই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রাজধানী কাঠমান্ডু। পুলিশ গুলি চালালে প্রাণ হারান অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারী। এর পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। চাপে পড়ে রাতেই সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওলির পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

  • Nepal: বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার পর নেপাল! গণবিক্ষোভে পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রী ওলির, ছাড়ছেন দেশ? জল্পনা

    Nepal: বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার পর নেপাল! গণবিক্ষোভে পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রী ওলির, ছাড়ছেন দেশ? জল্পনা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার পর নেপাল। প্রবল গণবিক্ষোভের জেরে পদত্যাগ করলেন নেপালের (Nepal) প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবারই তিনি ইস্তফা দেন। সূত্রের খবর, সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল মঙ্গলবার ওলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের অনুরোধ জানান। এর পর সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান তিনি। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ওলি (KP Sharma Oli)। সেখানে তিনি লিখেছেন, “সমস্যার সহজ ও রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার স্বার্থে আমি পদত্যাগ করছি।”

    মনে করাল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার গণ-অভ্যুত্থান

    অনেকটা বাংলাদেশ বা তার আগে শ্রীলঙ্কা মডেলেই নেপালে ওলি সরকারের পতন হল। দুর্নীতি, বেকারত্ব নিয়ে, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুনটা ধিকিধিকি জ্বলছিলই। কর্মহীনতার অন্ধকার গ্রাস করছিল দেশটাকে, সেই সঙ্গে ক্রমাগত নিম্নগামী হচ্ছিল সাধারণ মানুষের অবস্থা। তার মধ্যেই, সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তই ঘি ঢালে। তারপরই এই গণবিদ্রোহ বড় আকার ধারণ করে। সম্প্রতি নেপালের শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র বিক্রম দেশে ফেরার পর থেকে তাঁকে ঘিরে উৎসাহ তৈরি হয়। ফের একবার নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি উঠতে শুরু করে। ফের নেপালকে হিনদু রাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন গড় উঠতে শুরু করে। কয়েক মাস আগেই রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কাঠমান্ডুতে। পরিস্থিতি সামলাতে নামাতে হয়েছিল সেনা। সেই বিক্ষোভের আগুনই জ্বলছিল ধিকিধিকি করে, যা ফের জ্বলে উঠল।

    ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকেই পালাতে পারেন ওলি

    এদিকে, সূত্রের দাবি, দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনাও করছেন ওলি। তাঁর সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই, যদিও তা এখনও নিশ্চিত নয়।দেশ ছাড়তে ওলি ত্রিভুবন বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারেন বলে খবর। ইতিমধ্যেই বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং সব উড়ান বাতিল হয়েছে। ওলি ও অন্যান্য মন্ত্রীদের সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৩০০-র বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বিমানবন্দরে (Nepal)।

    মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা, রাস্তায় তাড়া করে পেটানো হল উপপ্রধানমন্ত্রীকে

    প্রধানমন্ত্রী ওলি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েলের বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ললিতপুর জেলার খুমালতারে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’-র বাসভবনে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর করা হয় তাঁর বাড়ি। দেশের যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের সুনাকোঠী বাড়িও ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়ে। ওলি মন্ত্রিসভার সদস্যরাও বিক্ষোভের আঘাতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। একাধিক মন্ত্রীর বাড়ি এবং ওলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে রাস্তায় তাড়া করে পেটালেন সেদেশের বিক্ষুব্ধ জনতা। তাঁর বাড়িও আক্রান্ত। মঙ্গলবার দুপুরে সেই ঘটনার অসংখ্য ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে। নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির দফতরেও চলে হামলা। ললিতপুরে যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তিনিই সমাজমাধ্যম নিষিদ্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগের পর মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়িতেও আগুন ধরায় বিক্ষোভকারীরা।

    নেপালের সংসদ ভবনে আগুন, হামলা কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে

    বিক্ষোভকারীদের (Nepal) লাগানো আগুনে জ্বলে ওঠে নেপালের সংসদ। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ঘন কালো ধোঁয়া। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি ক্রমে আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে ওলি প্রথমে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন (KP Sharma Oli)। মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে সন্ধ্যায় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানের পথ খুঁজবেন। কিন্তু তীব্র বিক্ষোভের চাপে বৈঠক হওয়ার আগেই তাঁকে ইস্তফা দিতে হল। বিক্ষুব্ধ জনতা নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় দফতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালিয়েছে। ভবন থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে দলের পতাকাও।

    নেপালের (Nepal) সুপ্রিম কোর্টে হামলা! কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন

    কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পরও শান্ত হয়নি পরিস্থিতি। খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুরে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা নেপালের সংসদে আগুন ধরিয়ে দেয়। সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ও। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নেপালের ত্রিভূবন বিমানবন্দর বন্ধ করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। মন্ত্রীদের নিরাপদে সরাতে বাসভবনে হেলিকপ্টার পাঠানো হচ্ছে বলে খবর (প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)। কাঠমান্ডুতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফের ছড়ায় অস্থিরতা। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন ধরানোর পাশাপাশি সনেপায় অবস্থিত নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও অগ্নিসংযোগ ঘটায়।

    ভারত-নেপাল সীমান্তে কড়া নজরদারি, বিবৃতি দিল দিল্লি

    নেপালের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে ভারতের পাঁচ সীমান্তবর্তী রাজ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিহারের সাতটি জেলা—পশ্চিম ও পূর্ব চম্পারণ, সীতামারি, মধুবনী, আরারিয়া, সুপৌল ও কিষাণগঞ্জে এসএসবি ও পুলিশ টহল বাড়িয়েছে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই তল্লাশি চলছে। সীমান্তে যাতে অশান্তির প্রভাব না পড়ে, সে জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলিয়ে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। নেপালের পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে ভারত। দিল্লির বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেপালে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের সাবধান থাকতে হবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।

    বিদ্রোহের সূত্রপাত

    এই সংকটের সূত্রপাত হয় নেপাল সরকারের সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। বহুদিনের জমে থাকা অসন্তোষে ঘৃতাহুতি দেয় সেই পদক্ষেপ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামে ছাত্র-যুব সমাজ। সোমবারই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রাজধানী কাঠমান্ডু। পুলিশ গুলি চালালে প্রাণ হারান অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারী। এর পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। চাপে পড়ে রাতেই সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওলির পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

LinkedIn
Share