Tag: Nepal-West Bengal Border

  • Nepal Unrest: গণবিদ্রোহের জেরে পদত্যাগ নেপালের প্রধানমন্ত্রীর, সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াল ভারত, জারি হাই অ্যালার্ট

    Nepal Unrest: গণবিদ্রোহের জেরে পদত্যাগ নেপালের প্রধানমন্ত্রীর, সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াল ভারত, জারি হাই অ্যালার্ট

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গণবিদ্রোহে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নেপালে (Nepal Unrest)। প্রবল চাপের মুখে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। বাংলাদেশ মডেলেই নেপালে ওলি সরকারের পতন হল। সংসদ ভবনে ঢুকে পড়লেন আন্দোলনকারীরা। উপ প্রধানমন্ত্রী-সহ একের পর মন্ত্রীরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। মন্ত্রীদের সেনা হেলিকপ্টারে দ্রুত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্ধ বিমানবন্দর। বাতিল সমস্ত উড়ান। এই আবহে পড়শি দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল ভারত। মঙ্গলবার সকালে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে নেপালে বসবাস করা ভারতীয়দের সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    ভারতের সতর্কবার্তা

    নেপালকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান হবে বলে ভারত আশাবাদী। ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা নেপালের পরিস্থিতির উপর নিবিড় ভাবে নজর রেখেছি। বহু তরতাজা প্রাণের মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।” নেপালে বসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশে নয়াদিল্লির বার্তায় বলা হয়েছে, “কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডু এবং আরও কয়েকটি শহরে অনির্দিষ্টকালের কার্ফু জারি করেছেন। নেপালে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং নেপাল প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে বলা হচ্ছে।”

    পানিট্যাঙ্কিতে সীমান্ত বন্ধ

    নেপালে হিংসায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক ভারতীয় ট্রাকচালক। গুলিবিদ্ধ সেই ট্রাকচালক নেপালে ট্রাক ফেলে ভারতে ফিরে এসেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে পানিট্যাঙ্কিতে সীমান্ত বন্ধ রয়েছে অশান্তির জেরে। রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে নেপাল সীমান্তে কয়েকশো ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে ওপারের অশান্তির জন্য। এদিকে পানিট্যাঙ্কিতেও দোকানপাট বন্ধ। এদিকে সীমান্তে সোমবার দুপুর থেকেই কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। পরিচয়পত্র পরীক্ষা ছাড়া সীমান্ত পারাপার কঠিন। এপাশে এসএসবি, ওপাশে নেপালি সেনা সতর্ক রয়েছে। রাজ্যের তরফেও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। জানানো হয়েছে, সামনে দুর্গা পুজো নেপালের পরিস্থিতি অস্থির থাকলে পর্যটনে বড় প্রভাব পড়বে, ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

    ভারত-নেপাল সীমান্তে কড়া প্রহরা

    নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য নেপালের সীমান্তবর্তী। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যেই সীমান্তে তৎপরতা বেড়েছে। বিহারের নেপাল সীমান্তবর্তী সাতটি জেলায় নজরদারি বাড়িয়েছে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) এবং বিহার পুলিশ। পশ্চিম চম্পারণ, সীতামারি, মধুবনী, আরারিয়া, সুপৌল, পূর্ব চম্পারণ এবং কিষাণগঞ্জে টহলদারি বেড়েছে। পাশাপাশি, আশপাশের এলাকায় সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তল্লাশি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও রাখা হচ্ছে কড়া নজর। সূত্রের খবর, এরই মধ্যে সীমান্তে যৌথ টহলদারি শুরু করেছে পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের  ‘হাই অ্যালার্ট’

    প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জারি হয়েছে ‘হাই অ্যালার্ট’। ভারতের তরফে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বেশির ভাগ সীমান্তে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কিতেও থমথমে পরিবেশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেখানে নাকাতল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। যেখানে প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে দিনে প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার মানুষ পারাপার করত, সেখানে এদিন যেন থমথমে পরিবেশ। হাতেগোনা দু-একটি গাড়ি পারাপার করছে। প্রত্যেক গাড়ির চালকের নাম, যাত্রীর নাম-সহ অন্যান্য তথ্যসংগ্রহ করছে পুলিশ। নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। সীমান্তের দু’পারেই আটকে রয়েছে শয়ে শয়ে ট্রাক। ভারতের প্রায় শতাধিক ট্রাক চালক নেপাল সীমান্তে আটকে রয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা সচল কন্ট্রোল রুম

    নেপালে আটকে থাকা ভারতীয়দের জন্য ২৪ ঘণ্টা সচল কন্ট্রোল রুমও চালু করেছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। ওপার থেকে আসা পর্যটক থেকে শুরু করে ভারতীয়দের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। আন্দোলনকারীদের চাপ, পুলিশের গোলাগুলি, লাঠিচার্জ, জলকামান এসব উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখে যতদ্রুত সম্ভব নেপাল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছেন সেখানে আটকে থাকা ভারতীয়রা। মঙ্গলবার সকালে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের পরিস্থিতি যাচাই করেন দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সীমান্তে নাকাতল্লাশি শুরু করেছি। এখনও পর্যন্ত এ পারে কোনও অশান্তি নেই। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি৷ নেপাল পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’’ এসএসবি-র মুখপাত্র ডিসি অমিত কুশওয়াহা বলেন, ‘‘আপাতত সীমান্তবর্তী এলাকায় উদ্বেগের কিছু নেই। এসএসবি সর্বক্ষণ সজাগ রয়েছে এবং নেপালের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। আমরা আশা করি, শীঘ্রই সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।’’ নেপাল যে যুবদের আন্দোলনে জ্বলছে, তা সীমান্ত থেকেই স্পষ্ট। নেপালের বিরতামোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানেও মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। যে কারণে কোনরকম ঝুঁকি না-নিয়ে সীমান্তে নিরাপত্তা আঁটোসাটো করা হয়েছে।

LinkedIn
Share