মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দু নিধন চলছেই। আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড শোকের ছায়া ফেলে দিয়েছে। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একটি জনসমক্ষে প্রকাশ্য রাস্তায় সুব্রত দাস নামে এক হিন্দু যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় রীতিমতো এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। আশেপাশের (Noakhali) লোকজন আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গত ২০২৪ সালের ৫ অগাস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে বিতাড়িত করে গদিতে ইউনূস বসার পর থেকেই লাগাতার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ব্যাপক অত্যাচার শুরু হয়েছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা হিন্দু নিপীড়নের কথা মানতে নারাজ।
কীভাবে ঘটেছে ঘটনা?
পুলিশ সূত্রে জানা, গিয়েছে সুব্রত বেকার ছিলেন। তাঁর স্ত্রী রিক্তা রানি দাস উপজেলার চর হাসান ভূঞারহাটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে চাকরি করেন। সুব্রত দুপুরে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে স্ত্রীকে তাঁর কর্মস্থল থেকে নিয়ে আসার জন্য বেরিয়েছিলেন। তবে রাস্তায় হারিছ চৌধুরী বাজারের পশ্চিমে পলোয়ান বাড়ির সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা সুব্রতের মোটরসাইকেলে আক্রমণ করে। এরপর সেখানে তাঁকে গলা কেটে ও মাথায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং মৃতদেহ রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।
পুলিশ বা সেনাবাহিনীর শাসনকে আর ভয় পাচ্ছে না (Bangladesh)
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাতপরিচয় একদল হামলাকারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে সুব্রতের উপর হামলা চালায়। অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। লাগতার আঘাতে অতরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়। ফলে তাঁকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে (Bangladesh) নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, এই আক্রমণকে অত্যন্ত বর্বর এবং ইচ্ছাকৃত ভাবেই করা। দেশে আইনের রক্ষক নেই, দুষ্কৃতীরা খোলা ছুট পেয়ে গিয়েছে। খুনিরা পুলিশ বা সেনাবাহিনীর শাসনকে আর ভয় পাচ্ছে না। আইনের শাসন না থাকায় সমাজবিরোধীরা এক তরফা নিজেদের শাসন চালাচ্ছে। যদিও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রেফতারির খবর পাওয়া যায়নি।
হিন্দুদের খুব সহজেই লক্ষ্যবস্তু করে তোলা হয়
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বাংলাদেশের (Bangladesh) হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনও সময়ে হিন্দুদের খুব সহজেই লক্ষ্যবস্তু করে তোলা কীভাবে হয় তাঁরও একটি বাস্তব চিত্র সুব্রতর ঘটনা। দেশজুড়ে প্রতিদিন হুমকি, অপহরণ এবং হত্যার Bangladesh মুখোমুখি হচ্ছেন হিন্দুরা। দেশের একাংশ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের অভিযোগ, যে আইন প্রয়োগকারী প্রশাসনের কর্মকর্তারা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে ব্যর্থ হওয়ায় হিন্দুরা ক্রমে ক্রমেই নিরাপত্তাহীন ঝুঁকিপূর্ণ জীবনের দিকে চলে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সংগঠন এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীরা সৌমিক দাসের হত্যার নিন্দা জানিয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারী পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা বাংলাদেশে (Noakhali) দ্রুত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ঘটাতে পারে ওয়াকিবহাল মহল চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশের বক্তব্য
চরজব্বর থানার ওসি শাহিন মিঞাঁ বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। সুব্রত নামের ওই যুবককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তাঁর মাথায় কোপের ক্ষত রয়েছে। কে বা কারা তাঁকে হত্যা করেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশ হত্যার কারণ ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবার তার ভিত্তিতেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দোষীর শাস্তি চাই
নিহত সুব্রতর আত্মীয় লিটন চন্দ্র দাস বলেন, “স্ত্রীকে কর্মস্থল থেকে আনতে যাওয়ার পথে সুব্রত খুন হন। তবে হত্যাকাণ্ডের সময় বিষয়টি কেউ দেখেননি। তাঁর মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে।” আবার সুব্রতর বাবা চিরু রঞ্জু দাস বলেন, “আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার জানামতে, তাঁর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।”