মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ের হামলায় জড়িত জঙ্গিদের হদিশ সে জানে। এমনটাই পুলিশকে বলেছিল জঙ্গিদের সাহায্যকারী এক যুবক (Terrorist)। তার দাবি ছিল, ঘন জঙ্গলে জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে। একই সঙ্গে পুলিশের সামনে তার আরও স্বীকারোক্তি ছিল, জঙ্গিদের কাছে সে খাবার এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিয়েছে। এরপরেই জঙ্গিদের ঘাঁটি চেনাতে পুলিশ ও সেনাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে থাকে সে (Jammu And Kashmir)। আচমকাই পথের মাঝে নদীতে ঝাঁপ দেয় ওই যুবক। এরপরেই ভেসে যায় জঙ্গিদের সাহায্যকারী ওই যুবক। শনিবারই ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
জঙ্গিদের সাহায্যকারী ওই যুবকের নাম ইমতিয়াজ আহমেদ মাগরে
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম ইমতিয়াজ আহমেদ মাগরে (Jammu And Kashmir)। তার বয়স ২৩ বছর। জানা যাচ্ছে, জঙ্গিদের সাহায্যকারী ওই যুবকের বাড়ি কুলগাঁওয়ের বাসিন্দা। জঙ্গিদের সাহায্য করার অভিযোগে ওই যুবককে শনিবারই গ্রেফতার করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে জেরার মুখে তার বিরুদ্ধে ওঠা জঙ্গি যোগের যাবতীয় অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছিল ওই যুবক। নিরাপত্তা বাহিনীকে সে জানিয়েছিল, পাহাড়ের ওপরেই ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে আছে জঙ্গিরা। একইসঙ্গে জঙ্গিদের জন্য সে কী কী করেছে, তাও নিরাপত্তা বাহিনীকে (Jammu And Kashmir) জানায় ওই যুবক। খাবার সমেত এবং অন্য দরকারি জিনিস পৌঁছে দিয়ে আসার কথা বলে সে। এর পরেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পথ চিনিয়ে জঙ্গিদের ঘাঁটি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সে। কিন্তু সেই সময়েই আচমকাই নদীতে ঝাঁপ দেয় ওই যুবক। মনে করা হচ্ছে, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে সাঁতরে পালানোর ফন্দি এঁটেছিল ওই যুবক। তবে শেষ রক্ষা হল না।
ঝাঁপ দেওয়ার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। উঁচু থেকে ড্রোন ক্যামেরায় বন্দি করা হয়েছে গোটা ঘটনাটি। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যুবকের আশপাশে কোনও পুলিশ কর্মী ছিলেন না। জঙ্গিদের সাহায্যকারী ইমতিয়াজ একা হেঁটেই যাচ্ছিল। হঠাৎ করেই ঘন জঙ্গলের দিকে এক বার তাকিয়ে আচমকা নদীত ঝাঁপ দেয় সে (Terrorist)। সাঁতার কাটার চেষ্টা করতেও দেখা যায় তাকে। তবে স্রোতের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারেনি সে কোনওভাবেই। জলের তোড় তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় (Jammu And Kashmir)। গোটা ঘটনাই ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।
মেহবুবার মুফতির দাবি খারিজ পুলিশের
জঙ্গিদের সাহায্যকারী এই যুবকের মৃত্যু নিয়ে আবার প্রশ্নও তুলেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তাঁর দাবি, হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। মেহবুবার এমন দাবিকে নস্যাৎ করে পাল্টা বিবৃতি দেয় পুলিশ। শুধু তাই নয়, ড্রোনের ফুটেজও সামনে এনেছে পুলিশ। ওই যুবকের পরিবারও ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু, ওই যুবক যে পালাতে গিয়ে নিজেই নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে পুলিশ।
সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে জঙ্গি ডেরা ধ্বংস করল সেনা, উদ্ধার ৫টি আইইডি
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরেই জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি নিকেশ করতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে ভারতীয় সেনা। জানা গিয়েছে, সোমবার ভারতীয় সেনার রোমিও ফোর্স এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, সে রাজ্যের পুঞ্চ জেলাতে অভিযান চালায়। এই জেলায় অবস্থিত সুরানকোটে একটি জঙ্গি ডেরাকে ধ্বংস করে বাহিনী। শুধু তাই নয় এখান থেকে পাঁচটি আইইডি উদ্ধার করতেও সমর্থ হয়েছে ভারতীয় সেনা। একই সঙ্গে সেখান থেকে মিলেছে রেডিও সেট, দূরবীন এবং কম্বল। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার, বাইশে এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরেই উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে জম্মু কাশ্মীর জুড়ে। ২৬ জন পর্যটককে ধর্ম বেছে বেছে যারা হত্যা করল সেই সন্ত্রাসীদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চলছে। একাধিক জঙ্গির বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কোথাও বুলডোজার তো কোথাও বিস্ফোরকের মাধ্যমে। নৃশংস হামলায় যে সমস্ত জঙ্গি জড়িত তাদের খুঁজে বের করার জন্য তীব্র অভিযান চলছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ভিকে বির্দি সম্প্রতি একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা, সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা, গোয়েন্দা সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ। এই নিরাপত্তা বৈঠকের পরেই পুঞ্চ জেলায় ওই জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে বাহিনী।