Tag: Pahalgam Terror Attack

  • Pahalgam Terror Attack: ভারতের ভয়ে বিদেশ পালালেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির! প্রাণভয়ে কোথায় লুকোলেন, জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়

    Pahalgam Terror Attack: ভারতের ভয়ে বিদেশ পালালেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির! প্রাণভয়ে কোথায় লুকোলেন, জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরীহ হিন্দু পর্যটক খুনের (Pahalgam Terror Attack) ঘটনায় আগুনে ফুটছে ভারত। পাকিস্তানের উপর প্রত্যাঘাত শানাতে কূটনৈতিক ও সামরিক— দু’ধরনের প্রস্তুতিই নিচ্ছে নয়াদিল্লি। এরই মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে, ভারতের ভয়ে নাকি পাকিস্তান ছেড়ে সপরিবারে বিদেশ পালিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির (Asim Munir)।

    কোথায় আছেন মুনির

    পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ইসলামাবাদের উপর নয়াদিল্লি চাপ বাড়াতেই সমাজমাধ্যমে জেনারেল মুনিরকে নিয়ে একাধিক খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তেই পাক সেনাপ্রধান দেশে ছেড়ে চম্পট দিয়েছেন বলে জল্পনা তীব্র হয়েছে। সেই কারণেই গত ২ দিন ধরে তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না, দাবি সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের। এ ব্যাপারে স্থানীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলিও একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই সব প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। আর তাই নাকি তাঁর নাম ‘মিসিং ইন অ্যাকশন’ বা এমআইএতে রেখেছে রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দফতর। অনেকে বলছেন, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কিছু অফিসারকে নিয়ে রাওয়ালপিন্ডির একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন জেনারেল মুনির।

    ‘মুনির আউট’ ট্রেন্ডিং

    ‘মুনির আউট’ (Munir Out) হ্যাশট্যাগটি পাকিস্তানসহ ভারতেও ট্রেন্ডিং হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে মুনির এবং তার পরিবার পাকিস্তান ত্যাগ করেছেন। কিছু অনির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, মুনির, আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিক এবং চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি জেনারেল সাহির শামশাদ মিরজা যুক্তরাজ্য ও নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। তবে, এসব তথ্যের কোনও সরকারি প্রমাণ পাওয়া যায়নি।​ যদিও এই দুই খবরই জল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদ। তারা জানিয়েছে ঠিক রয়েছেন মুনির। গত ২৭ এপ্রিল জেনারেল মুনিরের একটি গ্রুপ ছবি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেখানে একাধিক সেনা অফিসার এবং প্রধানমন্ত্রী শরিফের সঙ্গে পাক সেনাপ্রধানকে সামনের সারিতে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল ওই ছবি অ্যাবটাবাদের সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তোলা হয় বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

    পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমত

    পহেলগাঁও হামলার পর ভারত পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতির পাশাপাশি, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমতও তীব্র হয়েছে। অনেক পাকিস্তানি নাগরিক সোশ্যাল মিডিয়ায় মুনিরের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ‘#ResignAsimMunir’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন। একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, মুনির আইএসআইকে পহেলগাঁও হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।​ এদিকে, ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও ‘#PakistanBehindPahalgam’ হ্যাশট্যাগে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

  • Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলরা জবাবে ভারতে নিষিদ্ধ ১৬ পাক ইউটিউব চ্যানেল, নোটিশ বিবিসি-কেও

    Pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁও হামলরা জবাবে ভারতে নিষিদ্ধ ১৬ পাক ইউটিউব চ্যানেল, নোটিশ বিবিসি-কেও

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terror Attack) জবাবে এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’ ভারতের। এর আগে পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে প্রায় সবরকম কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এবার বেশকিছু পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল (Pakistan Youtube Channel) ব্যান করল ভারত (India)। উল্লেখ্য, এর আগে নিষিদ্ধের তালিকায় ছিল পাকিস্তান সরকারের সোশ্যাল মিডিয়া, এবং পাক সংবাদমাধ্যমের সোশ্যাল সাইট। আর এবার নিষিদ্ধ করা হল পাকিস্তানি সমস্ত ইউটিউব চ্যানেল। ভারতে বসে আর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম বা অন্য কোনও ব্যক্তির ইউটিউব চ্যানেল দেখা যাবে না। এই চ্যানেলগুলির সম্মিলিত গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষপাশাপাশি বিবিসি-কেও চিঠি লিখে সতর্ক করা হয়েছে।

    কোন কোন চ্যানেল বন্ধ

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, সিন্ধু জল চুক্তি, বন্ধ সীমান্ত, পাকিস্তানিদের আর দেওয়া হবে না ভিসা-ও। এবার আরও এক বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের। ডন নিউজ, ইরসাদ ভাটি, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, রফতার, দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স, জিও নিউজ, সামা স্পোর্টস, জিএনএন, উজায়ের ক্রিকেট, উমর চিমা এক্সক্লুসিভ, আসমা সিরাজি, মুনিব ফারুক, শুনো নিউজ, রাজি নামা নামের চ্যানেলগুলি ব্যান করা হয়েছে। ভারতীয় ইউজাররা এখন এসব ইউটিউব চ্যানেল দেখতে গেলে একটি বার্তা দেখতে পাচ্ছেন। দেখাচ্ছে, “এই বিষয়বস্তু এই দেশে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে না, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কারণে সরকারের নির্দেশে সরানো হয়েছে। সরকারি অনুরোধ সম্পর্কে আরও জানতে গুগল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট দেখুন।” প্রসঙ্গত, আজ সরকারি তরফে যে সমস্ত অ্যাকাউন্টের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে অনেক চ্যানেলকেই চিরতরে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের ওই সমস্ত চ্যানেলে কোনওদিন ভারত থেকে ‘অ্যাকসেস’ করা যাবে না। যদিও অ্যাকাউন্ট ব্যানড হলেও সেখানে আপলোড করা অনেক পুরনো ভিডিও ইউটিউবের অ্যাপ ও ওয়েবসাইট—দু’জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে।

    বন্ধ আখতারের চ্যানেলও

    প্রাক্তন ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের চ্যানেলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। যার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ৩৫ লক্ষ। উল্লেখ্য, রশিদ লতিফ, বাসিত আলির মতো একাধিক ক্রিকেটারের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হলেও ভারতে তাদের বাজার বেশ জনপ্রিয়। কেন্দ্রের কোপে আপাতত সমস্ত চ্যানেলই ‘ব্যানড’। এই তালিকায় রয়েছেন শোয়েব আখতারও। যদিও বাকিদের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’। বিভিন্ন বিষয়ে অকপট মন্তব্যের জন্য দুই মুলুকের তামাম ক্রিকেটভক্তের মধ্যে সুখ্যাতি রয়েছে শোয়েবের।

    কেন বন্ধ চ্যানেলগুলি

    সরকারের অভিযোগ, পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে ভারত, ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক, সাম্প্রদায়িক ও মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। সেই কারণেই ইউটিউব চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হল। সরকারি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সম্প্রতিই কেন্দ্রের নজরে এসেছে যে পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য় সম্প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পর এমন কিছু কন্টেট পোস্ট করা হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বা হিংসার সৃষ্টি করতে পারে। জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলগুলি ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    বিবিসি-র উপর ক্ষুব্ধ সরকার

    অন্যদিকে, কেন্দ্রের তরফে বিবিসি-কেও চিঠি লিখে সতর্ক করা হয়েছে তাদের সংবাদ পরিবেশন নিয়ে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার খবরের শিরোনামে লেখা ছিল “কাশ্মীরের হামলার পর পাকিস্তান ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করল।” এছাড়া সন্ত্রাসবাদী হামলাকেও ‘মিলিট্যান্ট অ্যাটাক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই কেন্দ্রের তরফে বিবিসি ইন্ডিয়ার প্রধান জ্যাকি মার্টিনকে চিঠি লেখা হয় এবং জানানো হয় যে বিদেশ মন্ত্রক বিবিসির রিপোর্টিংয়ে নজর রাখবে।

    মোদি-রাজনাথ বৈঠক

    এর আগে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলা চালায় লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। ২২ এপ্রিলের ওই নাশকতায় প্রাণ হারান ২৬ জন। তাঁদের অধিকাংশই ভারতীয় হিন্দু পর্যটক। এই হামলার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি বিবৃতি পেশ করে। যেখানে বলা হয়, ‘উস্কানিমূলক ও ‘সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীল কন্টেন্ট তৈরি, বিভ্রান্তিমূলক ন্যারেটিভ বানানো এবং ভারত নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলি ব্যান করা হল।’ এরপর কোন কোন চ্যানেল পুরোপুরি নিষিদ্ধ, তার তালিকা পেশ করেছে কেন্দ্র। সামা টিভি, ডন নিউজ, ইরশাদ ভাট্টি-র মতো একগুচ্ছ চ্যানেল এই তালিকায় রয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পাকিস্তানের বিরদ্ধে কোন পথে সেনা এগোবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া-সহ গোটা বিশ্বই।

  • NIA: হামলায় পাকিস্তান যোগ স্পষ্ট, পহেলগাঁওয়ের তদন্তভার নিল এনআই, ২০ এপ্রিলের আগে রেইকি করে জঙ্গিরা

    NIA: হামলায় পাকিস্তান যোগ স্পষ্ট, পহেলগাঁওয়ের তদন্তভার নিল এনআই, ২০ এপ্রিলের আগে রেইকি করে জঙ্গিরা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam Aerror Attack) ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়। ধর্ম বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের হত্যা করা হয়। পাকিস্তানের মদতে সংঘটিত হওয়া এই হত্যাকাণ্ডে লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ এই হত্যা লীলা চালিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এবার পেহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্তভার নিল এনআইএ (NIA)। রবিবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। নিজেদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্র উন্মোচনের জন্য পুরো এলাকা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা। অন্যদিকে, এই ঘটনায় পাকিস্তান যোগের প্রমাণও মিলেছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। ২০ এপ্রিলের আগেই জঙ্গিরা হামলার স্থান রেকি করে যায়।

    জঙ্গিদের প্রবেশ ও প্রস্থান পথকে পর্যবেক্ষণ করছে এনআইএ (NIA)

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছ থেকে এই মামলার যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে এনআইএ। এনআইএ-র (NIA) ইন্সপেক্টর জেনারেল বিজয় সাখারের নেতৃত্বে একজন ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এবং একজন পুলিশ সুপারিটেনডেন্টের সমন্বয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এরপরেই এনআইয়ের দল পেহেলগাঁওয়ে অবস্থিত বৈসরনে যেখানে হামলা চালানো হয় সেখানে তদন্তে নামে। এনআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। যাঁরা নিজেদের চোখের সামনে এই হত্যালীলা সংঘটিত হতে দেখেছিলেন। সন্ত্রাসবাদীদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার জন্য তদন্তকারী দলগুলি বৈসারনে জঙ্গিদের প্রবেশ ও প্রস্থান পথকেও পর্যবেক্ষণ করছে। একইসঙ্গে ফরেনসিক এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দল সেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করছে, যাতে সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রকে উন্মোচন করা যায়।

    ২০ এপ্রিলের আগেই পহেলগাঁওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জঙ্গিরা

    এনআইএ-র (NIA) তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যে যে সমস্ত পর্যটক পহেলগাঁও হামলার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বর্তমানে জেলে থাকা লস্কর-ই-তৈবা, জৈশ-ই-মহম্মদ এবং অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। আতস কাচের তলায় রয়েছে অসংখ্য সহযোগী, তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, পহেলগাঁও হামলায় জড়িতদের খোঁজে চলছে চিরুনি তল্লাশি। এই কাজে একসঙ্গে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। এনআইএ-র তরফ থেকে তদন্তে উঠে এসেছে যে ২০ এপ্রিলের আগেই পেহেলগাঁওয়ের (Pahalgam Aerror Attack) বৈসরনে এবং আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরে নজরদারি চালিয়েছিল ওই জঙ্গিরা।

    পাকিস্তান যোগের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে

    ইতিমধ্যে একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলির কাছে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে মুজাফফরবাদ এবং করাচির কিছু জায়গায় যোগ রয়েছে এই সন্ত্রাসী হামলায়। তাই স্বাভাবিকভাবে এখানে পাকিস্তানের হাত স্পষ্টভাবেই রয়েছে। ঠিক যেমনটা ২৬/১১ তে মুম্বাই হামলার সময় পাকিস্তান করেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে যে তথ্য অনুযায়ী, চার থেকে পাঁচ জন সন্ত্রাসবাদি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তাদের কাছে অত্যাধুনিক মাধ্যমের যোগাযোগ যন্ত্র ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ সামরিক পোশাকও পরেছিল এবং হাতে ছিল একে-৪৭। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সেখানে জানতে পারা যাচ্ছে পাকিস্থানে বসে থাকা এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ডদের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র ছিল হামলাকারী সন্ত্রাসবাদীদের। মুজাফফরবাদ এবং করাচিতে বেশ কিছু জায়গায় এমনই ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

    স্থানীয় মাঠকর্মীরাই ওই সন্ত্রাসবাদীদের খাদ্য আশ্রয় এবং অন্যান্য ব্যবস্থা করে

    শুধু তাই নয় গোয়েন্দাদের আরও দাবি, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং আইএসআই এই বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশের জন্য সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এবং মার্চ মাসে এনআইএ জম্মু-কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি স্থানে ব্যাপক তল্লাশি চালায় তখনই উঠে আসে এমন তথ্য।
    এনআইএ-র সন্দেহ ভারতে প্রবেশের পরে স্থানীয় মাঠকর্মীরাই ওই সন্ত্রাসবাদীদের খাদ্য আশ্রয় এবং অন্যান্য ব্যবস্থা করে। জানা গিয়েছে, এনআইয়ে নিজেই মার্চ মাসে একটি বিবৃতি জারি করেছিল। ওই বিবৃতি অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা কাঠুয়া, উধমপুর, ডোডা, কিস্তোয়ার এবং পুঞ্চে উপত্যকায় প্রবেশ করেছে।

    চিহ্নিত আরও ১৪ সন্ত্রাসবাদী

    ইতিমধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ গত শুক্রবারই তিনজন সন্ত্রাসীর স্কেচ প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে দুজনকে পাকিস্তানি বলে জানা গিয়েছে। এরা হল আলি ভাই এবং হাসিম মুসা। স্থানীয় জঙ্গি আদিলের নাম রয়েছে। এদের প্রত্যেকের মাথার দাম কুড়ি লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে যে মুসা জম্মু কাশ্মীরের আগে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কনভয়ের ওপর অতর্কিত হামলাতেও সে জড়িত ছিল। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আরও ১৪ জন সন্ত্রাসবাদীকে চিহ্নিত করেছে। এদের মধ্যে ৮ জন লস্কর-ই-তৈবার তিনজন জৈশ-ই-মহম্মদের এবং ৩ জন হিজবুল মুজাহিদিনের।

  • Pahalgam Terror Attack: উপস্থিত বুদ্ধিতে বাজিমাত! জানেন কীভাবে পহেলগাঁওয়ে ৪০ জনের প্রাণ বাঁচালেন প্রাক্তন সেনাকর্তা?

    Pahalgam Terror Attack: উপস্থিত বুদ্ধিতে বাজিমাত! জানেন কীভাবে পহেলগাঁওয়ে ৪০ জনের প্রাণ বাঁচালেন প্রাক্তন সেনাকর্তা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চোখের সামনে তখন শুরু হয়ে গিয়েছে হত্যালীলা। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। শুধু নিজের ভাই, প্রাক্তন সেনাকর্তার উপস্থিত বুদ্ধির জোরে জঙ্গিদের চোখে ধুলো দিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন মাইসোরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র প্রসন্ন কুমার ভাট। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে (Pahalgam Terror Attack) উপস্থিত ছিলেন তিনিও। চোখের সামনেই দেখেছেন জঙ্গিদের হাতে একে একে ২৬টি ভ্রমণপ্রেমীকে লাশ হয়ে যেতে। সেদিন মৃত্যুর মুখ থেকে কী ভাবে বেঁচে ফিরেছেন, তাই এক্স হ্যান্ডলে দেশবাসীকে জানালেন প্রসন্ন।

    কী ভাবে বেঁচে গিয়েছেন

    বাকিদের মতোই বৈসরনের স্বর্গীয় সৌন্দর্য গায়ে মেখে সারাজীবনের মতো মুহূর্তগুলোকে ক্যামেরাবন্দি করছিলেন প্রসন্ন। তাঁর স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রী একটি ক্যাফেতে বসে কাওয়া (কাশ্মীরি চা) পান করছিলেন। হঠাতই দুটো গুলির শব্দ। আচমকা জঙ্গি হামলা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলছে গুলি। ওখানে উপস্থিত সকলকে প্রায় ঘিরে ফেলেছে জঙ্গিরা। গুলির শব্দ শুনে বেরোনোর জন্য গেটের দিকে পালাবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক, পালাচ্ছিলেনও সকলে। কিন্তু গুলি মারার জন্য সেখানেই ওঁত পেতে বসেছিল জঙ্গিরা। সে দিন সঙ্গে তাঁর ভাই না থাকলে তিনি বাঁচতেন না বলে পোস্টে দাবি করেছেন ভাট। আসলে তাঁর ভাই প্রাক্তন সেনাকর্মী।

    ভয়ঙ্কর স্মৃতি ভোলার নয় 

    সে দিনের ভয়ঙ্কর স্মৃতি মনে করে প্রসন্ন লিখেছেন, ‘খারাপ আবহাওয়ার কারণে ভ্রমণ দু’দিন স্থগিত রাখার পর, ২২ এপ্রিল দুপুর নাগাদ বৈসরন যাই। সঙ্গে বাচ্চারা ছাড়াও ছিলেন আমার স্ত্রী, ভাই ও ভ্রাতৃবধূ। ঘড়িতে তখন দুপুর ২.২৫। বাচ্চারা পিকনিকের মুডে খেলা করছিল। হঠাৎ ভেসে এল গুলির শব্দ। ভাই শুনেই বুঝতে পারে এটা একে-৪৭-এর আওয়াজ। বাচ্চাদের টেনে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে কাছের ভ্রাম্যমান শৌচাগারের পাশে লুকোলাম। ততক্ষণে সেখান থেকে মাঠে দুটো মৃতদেহ পড়তে দেখা হয়ে গিয়েছে। ভাই বলল জঙ্গি হামলা। সঙ্গে সঙ্গে উল্টো দিকে দৌড়নোর পরামর্শ দিল। ভাই শুধু আমাদের পরিবারকেই নয়, আশপাশে থাকা ৩৫-৪০ জনকেও নির্দেশ দেন উল্টো দিকে দৌড়তে।’

    প্রাক্তন সেনাকর্তার উপস্থিত বুদ্ধি 

    এখানেই শেষ নয়, প্রাক্তন সেনাকর্তা হওয়ার দরুণ ভাই বুঝেছিলেন প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে পালানোর চেষ্টা মানেই মৃত্যুর ফাঁদে পড়া। সেই মুহূর্তে তিনি প্রায় ৩৫-৪০ জন পর্যটককে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে একটি জলনিষ্কাশনের পাইপের ফাঁকা জায়গা দিয়ে বের করে দেন। ভাট লেখেন, “ভাই বললেন, সবাই যেন দল বেঁধে না দৌড়ায়, বরং আলাদা আলাদা হয়ে স্লোপ ধরে নিচে নেমে যাই। স্লোপে জল ছিল, কাদা ছিল, অনেকে পিছলে পড়ে যাচ্ছিল, কিন্তু তাতেই জীবন রক্ষা পেয়েছে।” তাঁর নির্দেশ মতোই, বেড়ার নীচের গর্ত দিয়ে বেড়িয়ে নীচের ঢালে সবাই নেমে গিয়েছিলেন, যাতে জঙ্গিদের চোখের আড়ালে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে দৌড়ও প্রায় প্রাণে হাতে করে দৌড়ের সামিল ছিল বলে জানিয়েছেন প্রসন্ন কুমার ভাট। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চলে লাগাতার গুলি। বহুক্ষণ ওখানেই ছিলেন তাঁরা।

    চারিদিকে চিৎকার, আর্তনাদ, কান্না আর ছুটোছুটি

    অত্যন্ত দুর্বল মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকা সত্ত্বেও গর্তের নীচ থেকেই ভাটের ভাই স্থানীয় সেনা ইউনিট এবং শ্রীনগরের হেডকোয়ার্টারে খবর পাঠাতে সক্ষম হন। দীর্ঘক্ষণ ওই ঢালে থাকার প্রায় ৪০ মিনিট পরে হেলিকপ্টারে শব্দ পেয়ে তাঁরা আবার উপত্যকার উপরে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানে আসার পর যে দৃশ্য তাঁরা দেখেছেন তা লাইফটাইম ট্রমা বলে জানাচ্ছেন এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ভাট বলেন, “রক্তাক্ত দেহ, কাঁদতে থাকা মানুষ—এই দৃশ্য আমাদের সারা জীবনের জন্য এক ক্ষত দিয়ে গেল।” তিনি জানিয়েছেন, এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনো তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মানসিকভাবে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রসন্ন কুমার ভাট লেখেন, “আমরা ওই বিভীষিকা থেকে বেঁচে ফিরেছি, গুলির শব্দ এখনও কানে বাজছে। ঘুম উড়েছে প্রায় সকলের। চারিদিকে চিৎকার, আর্তনাদ, কান্না আর ছুটোছুটি। ভুলতে পারছি না।” এই হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের সবচেয়ে ভয়ানক জঙ্গি হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    ভারতীয় সেনার প্রতি কৃতজ্ঞ

    প্রসন্ন লিখেছেন, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার (Pahalgam Terror Attack) সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। সেদিন স্বর্গীয় সেই সৌন্দর্য রক্তের লাল রঙে ভাসছিল। ঈশ্বরের কৃপা, ভাগ্য এবং একজন সেনা অফিসারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং ক্ষিপ্রতাই আমাদের গোটা পরিবার-সহ ৩৫-৪০ জনের জীবন বাঁচিয়েছিল। পোস্টের একদম শেষে নিজের ভাই এবং ভারতীয় সেনার সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান যুবক। নিরাপদে কর্নাটকে ফিরে গিয়েছেন বলেও জানান প্রসন্ন। এখন তাঁদের একটাই আশা, কেউ যেন আর কখনও এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন না হন।

  • Pahalgam Terror Attack: উপত্যকায় আরও তিন জঙ্গির ঘর গুঁড়িয়ে দিল সেনা, মোট সংখ্যা ৯! তল্লাশি অভিযানে মিলল বাঙ্কারের হদিস

    Pahalgam Terror Attack: উপত্যকায় আরও তিন জঙ্গির ঘর গুঁড়িয়ে দিল সেনা, মোট সংখ্যা ৯! তল্লাশি অভিযানে মিলল বাঙ্কারের হদিস

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার (Pahalgam Terror Attack) পর থেকে জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে নিরাপত্তাবাহিনী। জঙ্গিদের তালিকা তৈরি করে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। গুঁড়িয়েও দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়ি। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের ঘর ধ্বংসে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিনামাইট ও প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ। তল্লাশি অভিযানে জঙ্গিদের একটি বাঙ্কারেরও হদিস পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী।

    কাদের বাড়ি ধ্বংস করা হল

    দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার ওয়ানডিনা গ্রামে আদনান শফির বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সে গত বছর সন্ত্রাসবাদী দলে যোগ দিয়েছিল। একইভাবে পুলওয়ামা জেলায় উড়িয়ে দেওয়া হয় আরেক সক্রিয় জঙ্গি আমির নাজিরের বাড়ি। উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলায় ধ্বংস করা হয়েছে ২০১৬ সাল থেকে সক্রিয় লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি জামিল আহমদ শেরগোজরির বাড়ি। শুক্রবার ধ্বংস করা হয়েছিল পুলওয়ামার কচিপোরা এলাকার হারিস আহমদের (সক্রিয় ২০২৩ সাল থেকে), শোপিয়ানের চোটিপোরা গ্রামের শাহিদ আহমদ কুটাই (সন্ত্রাসবাদে যোগ দেয় মার্চ ২০২৩), এবং পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি ফারুক তিদওয়ার বাড়ি।

    নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনকে সহায়তা

    প্রশাসনের মতে, দক্ষিণ কাশ্মীরের চার জেলা থেকে বহু জঙ্গি সমর্থকদের আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাহির আহমদ কুমার ও শবির আহমেদ গনাই-কে জননিরাপত্তা আইনের (PSA) অধীনে আটক করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, “এই দুজন সক্রিয়ভাবে জঙ্গি কার্যকলাপে সহায়তা করছিল — যেমন চলাফেরা, আশ্রয়, লজিস্টিক সহায়তা। এদের কাজই ছিল তরুণদের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা।” সূত্রের খবর, পহেলগাঁও এবং পুলওয়ামাকাণ্ডের সঙ্গে যে সব স্থানীয় জঙ্গির নাম উঠে এসেছে, সে রকম ১৪ জঙ্গির একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ বার সেই জঙ্গিদের খুঁজে বার করে খতম করার কাজ শুরু করে দিয়েছে সেনা।

    সেই তালিকায় রয়েছে—

    ১। আদিল রহমান দেন্তু: জম্মু-কাশ্মীরের সপোরের লস্কর কমান্ডার। ২০২১ সাল থেকে সক্রিয়। আদিলের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।

    ২। আসিফ আহমেদ শেখ: জইশ জঙ্গি। অবন্তীপুরার জেলা কমান্ডার। ২০২২ সাল থেকে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।

    ৩। এহসান আহমেদ শেখ: পুলওয়ামার লস্কর জঙ্গি।

    ৪। হরিশ নাজির: পুলওয়ামার বাসিন্দা। লস্কর জঙ্গি।

    ৫। আমির নাজির ওয়ানি: জইশ জঙ্গি। পুলওয়ামায় সক্রিয়।

    ৬। ইয়াবর আহমদ ভট্ট: জইশ জঙ্গি। পুলওয়ামায় সক্রিয়।

    ৭। আসিফ আহমেদ কন্ডে: সোপিয়ানের বাসিন্দা। ২০১৫ থেকে হিজবুল জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে। পাক জঙ্গিদের মদতদাতা।

    ৮। নাসির আহমেদ ওয়ানি: লস্করের  সক্রিয় সদস্য। সোপিয়ানের বাসিন্দা।

    ৯। শাহিদ আহমেদ কুটে: লস্কর আর টিআরএফের সঙ্গে যুক্ত। সোপিয়ানে সক্রিয়।

    ১০। আমির আহমেদ দার: লস্কর আর টিআরএফের সক্রিয় সদস্য।

    ১১। আদনান সফি দার: ২০২৪ সালে লস্কর আর টিআরএফ-এ যোগ দিয়েছে। পাক জঙ্গিদের মদতদাতা।

    ১২। জুবেইর আহমেদ ওয়ানি: হিজবুল জঙ্গি। অনন্তনাগে হিজবুলের অপারেশনাল কমান্ডার।

    ১৩। হারুন রশিদ গনি: হিজবুল জঙ্গি। অনন্তনাগে সক্রিয়। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে সম্প্রতি।

    ১৪। জুবেইর আহমেদ গনি: লস্কর জঙ্গি। কুলগামে সক্রিয়।

    উদ্ধার প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র

    গত ২২ তারিখ পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে হত্যা করে জঙ্গিরা। ধর্ম জেনে বেছে বেছে খুন করা হয় বলে সেখানে উপস্থিত নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান। এরপর থেকেই উপত্যকাজুড়ে চিরুনি তল্লাশিতে নেমেছে সেনা। চলছে অভিযান। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়ার পরেই উপত্যকার সেদোরি নালা মুস্তাকাবাদ মছিলের জঙ্গলে সম্প্রতি অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকেই জঙ্গিদের বাঙ্কারের হদিসও মিলেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ। সেগুলির মধ্যে রয়েছে পাঁচটি একে-৪৭ রাইফেল, আটটি একে-৪৭ ম্যাগাজিন, একটি পিস্তল, একটি পিস্তল ম্যাগাজিন, একে-৪৭-এর ৬৬০টি কার্তুজ এবং এম৪ বন্দুকের ৫০টি কার্তুজ। পহেলগাঁও জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার অন্তর্গত। গোটা জেলা জুড়ে তল্লাশি অভিযানে এখনও পর্যন্ত আটক হয়েছেন ১৭৫ জন। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    জঙ্গিদের গ্রেফতারই লক্ষ্য

    পহেলগাওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terror Attack) পর সন্ত্রাস দমনে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। গত কয়েক দিনে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে জম্মু কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে সুরক্ষা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, জঙ্গিদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। এ বার সেই কাজই শুরু হয়ে গেল জম্মু-কাশ্মীরে। তবে সেনার তরফে এও জানানো হয়েছে, শুধু জঙ্গিদের বাড়ি ধ্বংস করা নয়, তাদের গ্রেফতার করাটাই মূল উদ্দেশ্য। কুলগামের কাইমো এলাকার ঠোকরপোরা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা জঙ্গিদের সহযোগী ছিল বলে সেনার অনুমান।

  • India’s ‘Aakraman’ Exercise: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলা, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝেই ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া কিসের ইঙ্গিত?

    India’s ‘Aakraman’ Exercise: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলা, পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝেই ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া কিসের ইঙ্গিত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান (Indi – Pakistan) উত্তেজনা যখন চরমে, তখনই ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF) শুরু করেছে এক বড় সামরিক মহড়া। যার নাম ‘আক্রমণ’। নামেই পরিষ্কার এই মহড়ার (India’s ‘Aakraman’ Exercise) উদ্দেশ্য ও বিধেয়। দেশের মধ্যাঞ্চলে শুরু হওয়া এই মহড়ার অংশ নিয়েছে বায়ুসেনার (Indian Air Force) তুখোড় যুদ্ধবিমানের বহর, যার নেতৃত্বে রয়েছে রাফাল ও সুখোই-৩০ এমকেআই স্কোয়াড্রন।

    নিয়মিত প্রস্তুতির অঙ্গ

    রাফাল স্কোয়াড্রন দুটি, আম্বালা ও হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে, সেখান থেকে বিমানগুলি এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। পূর্বাঞ্চল থেকেও বেশ কিছু বিমান ও সেনা-সরঞ্জাম এই মহড়ার জন্য স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বায়ুসেনার এক অফিসার জানিয়েছেন, “এটি নিয়মিত প্রস্তুতির অঙ্গ হলেও, পহেলগাঁওয়ে হামলার পর মহড়ার সময়সূচি তাৎপর্যপূর্ণ। রাফাল ও সুখোই বিমানগুলি নির্ভুল ভুমি-আক্রমণ ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধাভিযান অনুশীলন করছে।” যদিও ভারত সরকার বলছে এটি একটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ, তবে ইতিহাস বলছে অন্য কথা। অতীত বলছে, ২০২০ সালে লাদাখ সংঘাতের আগে চিন সীমান্তে একাধিক সামরিক মহড়া চালিয়েছিল। তার মাসখানেকের মধ্যেই গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহিদ হন। চিনেরও প্রায় চল্লশিের বেশি সৈন্য নিহত হয়। আবার ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ঠিক আগে, তারা Zapad নামে বিশাল সামরিক মহড়া চালিয়েছিল, যেখানে ২ লক্ষ সেনা, ৮০টির বেশি বিমান, ১৫টি যুদ্ধজাহাজ অংশ নিয়েছিল। এইসব নজির ইঙ্গিত দেয় যে, ভারতের ‘আক্রমণ’ মহড়া নিছক ট্রেনিং নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তা—যেটি যেমন দেশের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির প্রতিফলন, তেমনি শত্রু পক্ষের কাছে একটি সতর্ক সংকেত।

    কেমন চলছে অনুশীলন

    এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে মিগ-২১, এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, AWACS (এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম), মিড-এয়ার রিফুয়েলার ও গরুড় কমান্ডোরা। মহড়ার অনুশীলনে সমতল এলাকা থেকে শুরু করে পার্বত্য অঞ্চলে আক্রমণের অনুশীলন করা হচ্ছে, যা বাস্তব অভিযানের অনুরূপ। সূত্রের খবর, ইস্টার্ন সেক্টর থেকে সেন্ট্রাল সেক্টরে অনেক বায়ুসেনার সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। যেখানে এই মহড়ার আওতায় দূরদূরান্তে গিয়ে শত্রুর অবস্থানে সুনির্দিষ্ট বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। পাইলটরা বাস্তব যুদ্ধের পরিস্থিতিতে অনুশীলন করছেন, যাতে তাঁরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।

    আরব সাগরে নৌ মহড়া শুরু

    মহড়ার ঠিক আগেই পাকিস্তান আরব সাগরে নৌ-মহড়া শুরু করে এবং ২৪ ও ২৫ এপ্রিল তারিখে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য এনওটিএএম (Notice to Airmen/Mariners) জারি করে। একই সময় ভারতীয় নৌবাহিনী আরব সাগরে গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার আইএনএস সুরাটের মাধ্যমে সফলভাবে একটি মিড-রেঞ্জ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল (MR-SAM) উৎক্ষেপণ করে, যা তাদের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার প্রমাণ দেয়।

    দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অঙ্গীকার 

    পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে নানা পাল্টা পদক্ষেপ করেছে—ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত এবং সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য’ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নয়াদিল্লি যে এ বার কঠোর অবস্থান নিয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তা স্পষ্ট করতে বিহারে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার বলেন, “২৬ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের রক্ত বৃথা যাবে না। ভারত প্রতিটি জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বার করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে।”

    সক্রিয় প্রতিরোধে বিশ্বাস 

    পহেলগাঁওয়ে হামলায় সাতজন জঙ্গি শরিক ছিল, যাদের অধিকাংশই পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবার (LeT) সাথে যুক্ত। তারা বডি-ক্যামেরা ও স্টিল কোর গোলাবারুদসহ একে-৪৭ নিয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়, বিশেষত হিন্দু পুরুষদের টার্গেট করে। এরপরই ভারতের সামরিক মহড়া এবং কূটনৈতিক কৌশল থেকে স্পষ্ট—দেশ এখন আর প্রতিক্রিয়ার নীতিতে নয়, বরং সক্রিয় প্রতিরোধে বিশ্বাস করছে। ‘আক্রমণ’ মহড়া সেই বার্তাই বহন করছে। কেন্দ্রীয় সেক্টরে বর্তমানে যুদ্ধ মহড়া চলছে। এই মহড়ায় বিমান বাহিনীর পাইলটরা পাহাড়ি ও স্থল লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অনুশীলন করছেন।

    থর মরুভূমিতে যুদ্ধ-প্রস্তুতি

    ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “২৫-২৬ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একাধিক পোস্ট থেকে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে অপ্রীতিকরভাবে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনারা ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে উপযুক্তভাবে জবাব দিয়েছে। এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।” এই আবহে শুরু হয়েছে বায়ুসেনার আক্রমণ মহড়া, চলছে নৌসেনার প্রস্তুতি। একইসঙ্গে রাজস্থানে যুদ্ধ-প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। জয়পুরে সপ্তশক্তি কামান নিয়ে রাজস্থানের থর মরুভূমিতে পাক বর্ডারের কাছে যুদ্ধ-প্রস্তুতি। পাকিস্তানের সীমা অতিক্রম করে স্ট্রাইক ? এই যুদ্ধ-প্রস্তুতির মাধ্যমে। প্রতিপক্ষের সীমা অতিক্রম করে কীভাবে স্ট্রাইক করা যায়, তার জন্যই ভারতের এই যুদ্ধ-প্রস্তুতি। এই যুদ্ধ-প্রস্তুতিতে প্যারা-এসএফ কম্যান্ডোর সঙ্গে ট্যাঙ্ক ও স্পেশাল আর্মড ভেহিক্যালসের ব্যবহার করা হয়েছে। শত্রুদের এলাকা কব্জা করতে এই ট্যাঙ্কের ব্যবহার করা হয়, সূত্রের খবর। এরপর প্যারা কম্যান্ডো অপারেশনের পর ফিরে আসে।

  • Pahalgam Terror Attack: ‘‘প্ল্যান এ ফেল, উপত্যকার ঘাসে রয়েছে ৩৫টি বন্দুক’’! আটক ঘোড় সহিসের ‘প্ল্যান বি’-ই কি বৈসরনে হামলা?

    Pahalgam Terror Attack: ‘‘প্ল্যান এ ফেল, উপত্যকার ঘাসে রয়েছে ৩৫টি বন্দুক’’! আটক ঘোড় সহিসের ‘প্ল্যান বি’-ই কি বৈসরনে হামলা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ের (Pahalgam Terror Attack) হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শুক্রবার এক সহিসকে আটক করেছে গান্দেরবাল পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওর ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন এক মহিলা পর্যটক। ভিডিওতে তিনি ওই ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেছেন, সন্দেহভাজন পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীদেরই একজন। তাঁর আরও দাবি, তিনি যখন কাশ্মীরে ঘুরতে এসেছিলেন ওই ব্যক্তি তাঁর ধর্ম পরিচয় জানতে চেয়েছিল। ওই ছবির ভিত্তিতে দ্রুত ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে পুলিশ।

    অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয়

    গান্দেরবাল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সহিসের নাম আইয়াজ আহমেদ জুঙ্গাল। তাঁর বাবার নাম নবি জুঙ্গাল। গান্দেরবালের গোহিপোড়া রাইজানের বাসিন্দা তিনি। সোনমার্গের থাজওয়াস হিমবাহে পর্যটকদের খচ্চরের সওয়ারি করান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই আইয়াজের সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার কোনও যোগ রয়েছে কি না, মহিলা যে সহিসের কথা বলেছেন, ধৃত তিনিই কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত তিন জনের স্কেচ প্রকাশ করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। সেই স্কেচ দেখার পরে একতা তিওয়ারি নামে এক মহিলা পর্যটক দাবি করেছেন, ওই তিন জনের মধ্যে এক জনের সঙ্গে গত ২০ এপ্রিল তাঁর দেখা হয়েছিল পহেলগাঁওয়ে। একতা উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর থেকে ২০ জনের একটি দলের সঙ্গে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

    ভাইয়ের হাতে রুদ্রাক্ষ কেন

    একতা নিজের মোবাইলে মেরুন জ্যাকেট, পাজামা পরা এক ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে দাবি করেন, ওই ব্যক্তিই পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Terror Attack) সঙ্গে জড়িত। ওই ব্যক্তি তাঁকে ধর্ম নিয়েও জিজ্ঞাসা করেছিলেন বলে দাবি একতার। তিনি আরও জানিয়েছেন, বৈসরন উপত্যকাতেই ওই ব্যক্তির ছবি তুলেছেন তিনি। তবে তাঁর নাম জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়েছেন। ভিডিওতে একতা আরও দাবি করেন, তাঁর বন্ধুরাও ওই ব্যক্তিকে চিনতে পেরেছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না। তবে তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অন্যরাও জঙ্গিদের স্কেচ থেকে সন্দেহভাজনদের চিনতে পেরেছেন। একতা জানিয়েছেন, ওই সহিস তাঁকে তাঁর নাম এবং ধর্ম জিজ্ঞাসা করেছিলেন। একতার ভাইয়ের হাতে রুদ্রাক্ষ দেখে ওই ব্যক্তি জানতে চান, কেন তাঁর ভাই হাতে ওটা পরেছেন?

    অজমের শরিফ গিয়েছেন

    একতার দাবি, ওই ঘোড় সহিস এ-ও জিজ্ঞাসা করেন যে, একতা কখনও অজমের শরিফ বা অমরনাথ গিয়েছেন কি না। তাঁর কত জন হিন্দু বা মুসলিম বন্ধু রয়েছেন। তিনি অমরনাথ যেতে চান কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করেছিলেন ওই সহিস। তাঁর অমরনাথ যাত্রার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন বলেও দাবি করেছিলেন সহিস। একতা কোরান পড়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও করেন তিনি। একতার দাবি, তিনি জবাবে জানিয়েছিলেন, উর্দু পড়তে পারেন না। তাই কোরান পড়া হয়নি। তখন সহিস জানিয়েছিলেন, হিন্দিতে লেখা কোরানও পাওয়া যায়। একতা জানিয়েছেন, এ সব প্রশ্নের পরে তিনি ভয় পেয়ে যান।

    প্ল্যান এ ফেল, প্ল্যান বি!

    একতা জানান, এসব কথা শুনে তিনি ও তাঁর দল সিদ্ধান্ত নেন যে, বৈসরনে যাবেন না। তাঁরা ফিরে আসেন। এর মধ্যেই ওই সহিসের কাছে একটা ফোন আসে। একতা জানান, তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের সময়ই ওই ব্যক্তির ফোন আসে। সেই ফোনে তাঁকে বলতে শুনেছিলেন, ‘‘প্ল্যান এ ব্রেক ফেল। প্ল্যান বি ৩৫ বন্দুক পাঠানো হয়েছে। উপত্যকার ঘাসে রয়েছে।’’ যখন সহিস বুঝতে পারেন একতা তাঁর কথা শুনছেন, তখন অন্য ভাষায় তিনি কথা বলতে শুরু করেন, এমনটাই জানিয়েছেন একতা। এখন প্রশ্ন তবে কি প্ল্যান বি-ই বৈসরনে হামলা! ২৬ নিরীহ হিন্দু পর্যটককে হত্যা! বৈসরনের ঘাসেই কি লুকানো ছিল আগ্নেয়াস্ত্র! যা দিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা!

    জেরা শুরু আইয়াজের

    মহিলার আরও দাবি, কথা শুনে ওই সহিসকে পাকিস্তানি বলে মনে হয়েছিল তাঁর। প্রশ্ন উঠেছে, এইসব শোনার পরেও পুলিশকে কেন জানাননি তিনি? একতার দাবি, পর্যটকদের বুথে কোনও লোক ছিল না। এমনকি, পহেলগাঁওয়ের ৭-৮ কিলোমিটার আগে একটি চেকপোস্ট ছিল। তিনি যখন ফিরছিলেন, তখন সেই চেকপোস্টেও কেউ ছিলেন না। কিন্তু একতা বারবার দাবি করেছেন, পুলিশ যে তিনজনের স্কেচ প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল পহেলগাঁওতেই। একতার অভিযোগের ভিত্তিতেই আইয়াজকে গ্রেফতার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। এখন তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। তবে, ধৃত ব্যক্তির সঙ্গে সত্যিই পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Terror Attack) যোগ রয়েছে কি না সেই বিষয়ে স্পষ্ট করেনি পুলিশ।

  • Pahalgam Terror Attack: জোর করে পাহাড়ে তোলা হয়েছিল,পুলিশ দেখেও নীরব! পহেলগাঁও হামলায় নিহত শুভমের স্ত্রীর বিস্ফোরক দাবি

    Pahalgam Terror Attack: জোর করে পাহাড়ে তোলা হয়েছিল,পুলিশ দেখেও নীরব! পহেলগাঁও হামলায় নিহত শুভমের স্ত্রীর বিস্ফোরক দাবি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র দু’মাস আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দম্পতি। ফেব্রুয়ারিতে চার হাত এক হয়েছিল কানপুরের ব্যবসায়ী শুভম দ্বিবেদীর। গা থেকে এখনও মুছে যায়নি নতুন বিয়ের গন্ধটুকু। স্ত্রী ঐশ্বন্যাকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ভূস্বর্গকে। কিন্তু সেই মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে বিধবা হলেন ঐশ্বন্যা। সিঁথির লাল রং মুছে গেল রক্তের দাগে। মঙ্গলবার দুপুরে অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ব্যবসায়ী শুভম। অতর্কিতে হামলার ফলে এলোপাথাড়ি গুলিতে রক্তে ভেসে যায় বৈসরন। এখনও পর্যন্ত সেই ঘটনায় ২৬ জন হিন্দুর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই পর্যটক। হামলায় কেউ স্বামীকে হারিয়েছেন, কেউ পুত্রকে! মাত্র কয়েক মিনিটের তাণ্ডবের নেপথ্যে ছিল চার থেকে ছ’জন জঙ্গি। কিন্তু শুভমের স্ত্রীর দাবি, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বড় চক্রান্ত। রয়েছে স্থানীয় যোগাযোগ।

    স্থানীয় কয়েকজন ঘোড়াওয়ালাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

    কানপুরের বাসিন্দা শুভম দ্বিবেদীর মরদেহ তাঁর শহরে নিয়ে আসা হয়। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে নিজে উপস্থিত হন। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ে শুভমের স্ত্রী ঐশান্যা (Aishanya)। তিনি জানান, হামলার আগেই কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছিল, যা থেকে স্পষ্ট হয় যে স্থানীয়দের কেউ কেউ এই হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। ঐশান্যা জানিয়েছেন, তাঁরা দু’জনে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন, তবে তাঁরা আগেই ঘোড়াওয়ালাকে বলে দিয়েছিলেন বেশি উঁচুতে না নিয়ে যেতে। কিন্তু সেই ঘোড়াওয়ালা জোর করে তাঁদের পাহাড়ের শীর্ষে নিয়ে যেতে থাকে। শুভম তাঁকে অনুরোধ করেন যে পুরো টাকা নিয়ে নিলেও যেন নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু সেই অনুরোধ উপেক্ষিত হয়।

    জড়িত কয়েকজন কাশ্মীরি পুলিশকর্মী

    কয়েকটি পরিবারের অভিযোগ, ঘোড়াওয়ালারা ইচ্ছাকৃতভাবে পর্যটকদের ওপর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এবং যখন গুলি চলতে শুরু করে, তখন চারদিকে হইচই পড়ে যায়। সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত তিনজন কাশ্মীরি পুলিশকর্মী ছিলেন, কিন্তু তাঁরা কিছুই করেননি। পর্যটকদের সাহায্যের জন্য বারবার চিৎকার করা হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। শুভমের বাবা জানান, পহেলগাঁওয়ে তাঁদের হোটেলে কিছু স্থানীয় ব্যক্তি পর্যটকদের সম্পর্কে — কে কোথা থেকে এসেছে, কতজন, নাম ও ফোন নম্বর — এসব জানার চেষ্টা করছিল। অন্যদিকে, এক মহিলা পর্যটক অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ঘোড়াওয়ালা ঘন ঘন ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাইছিল এবং কোরান নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল। সেই ব্যক্তি জানতে চেয়েছিল, তাঁদের দলের সদস্যরা মুসলিম না হিন্দু। সন্দেহবশত ওই মহিলা তাঁকে বলেন যে তাঁরা সবাই মুসলিম, তখন সে বলেছিল যে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই তারা অমরনাথে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। এমনকি ফোনে কথা বলার সময় ঘোড়াওয়ালা ৩৫টি বন্দুকের কথাও বলেছিল, বলে দাবি ওই মহিলা পর্যটকের।

    হামলার পেছনে কি স্থানীয় স্লিপার সেল 

    এই সমস্ত ঘটনাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে, পহেলগাঁওয়ে এই হামলার পেছনে কি স্থানীয় স্লিপার সেল বা মৌলবাদী চক্র কাজ করেছে? এত বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা স্থানীয় সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। পহেলগাঁও থেকে বৈসরন উপত্যকা যাওয়ার পথ বেশ দুর্গম। সেখানে গাড়ি চলাচলের কোনও পথ নেই। হয় পায়ে হেঁটে অথবা ঘোড়ায় বা খচ্চরে চেপে যেতে হয় সেখানে। এতটা পথ পার হয়ে জঙ্গিরা পৌঁছে গেল সেখানে। তারা রেইকি করল, সেনার পোশাক গায়ে সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে ঘাপটিও মেরে থাকল। অথচ স্থানীয়রা কিছুই টের পেল না? উঠছে এই ধরনের নানা প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, এই ঘটনার জবাব সঠিক সময়ে দেওয়া হবে এবং সন্ত্রাসবাদকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলা হবে।

    জানা যাচ্ছে, পিওকে ও পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের সহায়তায় নাশকতার এই ছক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করা হয়েছিল। ওপার থেকে অস্ত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের এদেশে পাঠানোর পাশাপাশি খোঁজা হয়েছিল এমন পর্যটনস্থল, যেখানে পর্যটকের সংখ্যা প্রচুর হলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে তুলনামূলক কম। শুধু তাই নয়, আততায়ীদের কাছে ওপার থেকে রিয়াল টাইম নানা নির্দেশও পাঠানো হচ্ছিল বলেও শোনা যাচ্ছে। যে চার আততায়ী মঙ্গলবার নাশকতা চালিয়েছিল, তাদের হেলমেটে ক্যামেরা লাগানো ছিল। যার ফলে ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং ও রিয়াল টাইম আপডেটও নিচ্ছিল তাদের ‘আকা’-রা। স্থানীয় সহযোগিতা ছাড়া সীমান্তের ওপার থেকে এসে এত নিখুঁত পরিকল্পনা সম্ভব নয় বলেই মনে করেছে বিশেষজ্ঞরা।

     

     

     

     

  • Mohan Bhagwat On Pahalgam: “লড়াইটা ধর্ম বনাম অধর্মের, হিন্দুরা হলে কোনওদিন এমন করত না”, পহেলগাঁও ইস্যুতে মন্তব্য মোহন ভাগবতের

    Mohan Bhagwat On Pahalgam: “লড়াইটা ধর্ম বনাম অধর্মের, হিন্দুরা হলে কোনওদিন এমন করত না”, পহেলগাঁও ইস্যুতে মন্তব্য মোহন ভাগবতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ লড়াই ধর্ম বনাম অধর্মের। একজোট হতে হবে। পহেলগাঁও হামলা নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat On Pahalgam)। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আরএসএস প্রধান বলেন, ‘এই যুদ্ধ ধর্ম এবং অধর্মের মধ্যে। আমরা প্রত্যেকে এই ঘটনায় ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। কিন্তু শয়তানকে ধ্বংস করতে গেল পূর্ণ শক্তি প্রদর্শন করতে হবে। যেমন রাবণ নিজেকে শোধরাতে অসম্মত ছিলেন। তাই রামের হাতে আর কোনও বিকল্প ছিল না। তবু রাবণ শোধরানোর একটা সুযোগ দিয়ে তার পরই হত্যা করেছিলেন রাম।’ ভাগবতের কথায়, “একজন প্রকৃত হিন্দু কখনও ধর্ম জিজ্ঞাসা করে কাউকে হত্যা করতে পারে না। পহেলগাঁওয়ে যা ঘটেছে, তা রাক্ষসোচিত আচরণ—মানবতাবিরোধী ও ধর্মের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

    ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে হিন্দুদের

    ‘হিন্দু’ শব্দটির উল্লেখ না করেও আরএসএস প্রধান বুঝিয়ে দিলেন, এই কঠিন সময়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে সংখ্যাগুরুদের। তবে একই সঙ্গে মোদি সরকারকে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এবার কড়া জবাব দিতেই হবে। বৃহস্পতিবার আরএসএস প্রধান পহেলগাঁও ইস্যুতে মুখ খুলে বললেন, “ধর্ম জিজ্ঞেস করে করে মানুষ মারা হয়েছে। হিন্দুরা হলে কোনওদিন এমন করত না। এই লড়াইটা এখন ধর্ম বনাম অধর্মের।” সংঘপ্রধান বলছেন, “আমাদের হৃদয় ব্যাথিত। আমরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু শয়তানকে শেষ করতে হলে নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে হয়। রাবণও নিজেকে বদলাতে চায়নি। তাই অন্য কোনও বিকল্প না দেখে রাম তাঁকে হত্যা করেন। তবে সেটার আগে একবার মত বদলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল রাবণকে।” ভাগবত বলেন, “আজকের রাবণ ধ্বংসে দরকার মা দুর্গার মতো শক্তি—অষ্টাদশ ভুজা শক্তি। সেই শক্তি আমাদের ঐক্য, আমাদের সংগঠন, আমাদের নৈতিক অবস্থান।”

    একত্রিত হওয়ার ডাক

    সরসংঘপ্রধান (Mohan Bhagwat On Pahalgam) বলছেন, “এবার আমাদের একত্রিত হতে হবে। আমরা একত্রিত থাকলে কেউ আমাদের দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। আর যদি কেউ চোখ তুলে তাকায় তাহলে সেই চোখ গেলে দেওয়া হবে। ঘৃণা বা নৃশংসতা কোনওটাই আমাদের স্বভাব নয়। কিন্তু চুপচাপ নিজের ক্ষতি সহ্য করাও যাবে না। অহিংসদেরও শক্তিশালী হতে হয়। শক্তি না থাকলে কোনও বিকল্প থাকে না। আর শক্তি থাকলে সেটা দৃশ্যমান হওয়া উচিত।” ভাগবত বলেন, “এটি কোনো ধর্মীয় সংঘর্ষ নয়, এটি ন্যায় ও অন্যায়ের লড়াই। রাবণও শিবের ভক্ত ছিলেন, পণ্ডিত ছিলেন। কিন্তু তিনি অধর্মের পথে চলেছিলেন—তাই রামের হাতে নিহত হন। তেমনি যারা আজ ঘৃণা ও সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, তাদেরও নির্মূল করতে হবে ধর্ম রক্ষার তাগিদে।”

    জোরালো প্রতিক্রিয়া

    আরএসএস প্রধান ভাগবতের মতে, ‘এই কঠিন সময়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা, শয়তানি শক্তিকে আটকাতে হলে আমাদের আরও শক্ত হবে। আমরা দেশবাসীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই। তাহলে কেউ আমাদের দিকে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে তাকাতেও সাহস পাবে না। আর কেউ যদি সে সাহস করে তার চোখ যেন উপড়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনার জোরালো প্রতিক্রিয়া দরকার।’ মোহন ভাগবতের কথায়, ভারতবাসীর স্বভাবে হয়তো শত্রুতা ঘৃণা নেই। কিন্তু তা বলে তাঁরা নীরবেও ক্ষতি সহ্য করবে না। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনও যুদ্ধ নয়। এটি ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে একটি যুদ্ধ। কারণ যারা নিহত হয়েছে তাদের ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। কোনও হিন্দু বা আমাদের সৈন্য কখনও তাদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে কাউকে হত্যা করেনি। কিছু চরমপন্থী তাদের নিজস্ব ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করেছে এবং এই ধরনের কাজ করেছে। সবার মধ্যে ক্রোধ এবং শোক রয়েছে। তবে গোটা জাতিকে আরও শক্তিশালী হতে হবে।’

    সরছে পর্যটকরা

    জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের (Pahalgam Terror Attack) বৈসরন উপত্যকায় মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার ঘটনায় অন্তত ২৫ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৮। সূত্রের খবর, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল পাঁচ-ছ’জন। পহেলগাঁও হামলার পরে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে অন্তত ১০ হাজার পর্যটক ইতিমধ্যেই সরে গেছেন। ২৪ এপ্রিল শুধুমাত্র শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ১১০টি ফ্লাইটে ১৪,০০০-এরও বেশি যাত্রীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চ পর্যায়ে নিরাপত্তা পর্যালোচনা শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহনের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আইবি ও র’ প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

  • India-Pak Simla Agreement: যুদ্ধের পথে পাকিস্তান! সিমলা চুক্তি স্থগিত, এখনও কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সন্ধি?

    India-Pak Simla Agreement: যুদ্ধের পথে পাকিস্তান! সিমলা চুক্তি স্থগিত, এখনও কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সন্ধি?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটকের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে তলানিতে পৌঁছেছে। ভারতের কঠোর পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, তারা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি (Simla Agreement) সহ ভারতের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করা হচ্ছে।

    সিমলা চুক্তি কী

    ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যুদ্ধের পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তি (India-Pak Simla Agreement) স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তি মূলত একটি শান্তিচুক্তি, যার আওতায় নিয়ন্ত্রণরেখার দুই তরফে শান্তি বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয় দুই দেশ। ১৯৭২ সালের ২ জুলাই, হিমাচলপ্রদেশের সিমলায় ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকর ভুট্টোর মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে গণ্য হয় এই চুক্তি। এর ফলে যুদ্ধ ভুলে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সৌজন্য বজায় রাখার পাশাপাশি, সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে শান্তি টিকিয়ে রাখতে সম্মত হয় দুই দেশ।

    চুক্তিতে কী ছিল

    ● দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে মধ্যস্থতা করবে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

    ● যাবতীয় সংঘাত, মতানৈক্য শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে মেটাবে দুই দেশ, পারস্পরিক বোঝাপড়াকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

    ● কোনও পক্ষ শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিঘ্ন ঘটাবে না, কোনও সংগঠন বা গোষ্ঠী শান্তি ও সম্প্রীতি ভঙ্গ করতে চাইলে, তা রুখবে।

    ● প্রতিবেশী দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ অবস্থান, পরস্পরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমিকতাকে সম্মান জানাবে দুই দেশ। একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না।

    ● রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি মেনে কেউ কাউকে হুমকি দেবে না, কেউ কারও আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার উপর বলপ্রয়োগ করবে না।

    ● ওই চুক্তি মেনে যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের যে ১৩০০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা ভারত দখল করেছিল, তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ টুরটুক এবং চালুঙ্কা ধরে রাখে ভারত।

    ● আর এই সিমলা চুক্তির পরই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তান, যার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভারত।

    চুক্তির পরবর্তী প্রভাব 

    চুক্তিটি (India-Pak Simla Agreement) একটি কূটনৈতিক কাঠামো তৈরি করলেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চিরস্থায়ী শান্তি দেখেনি। সিয়াচেন সংঘর্ষ (১৯৮৪), কারগিল যুদ্ধ (১৯৯৯) এবং নিয়মিত সীমান্ত উত্তেজনা প্রমাণ করে যে, সিমলা চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত হয়নি। ভারত আজও সিমলা চুক্তিকে আন্তর্জাতিক ফোরামে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যানের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে। পাকিস্তান কখনো কখনো কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ চায়, যা এই চুক্তির ব্যাখ্যা নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি করে।

    চুক্তির স্থগিতকরণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ

    পাকিস্তানের তরফ থেকে সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে একটি বড় ধাক্কা। এটি একদিকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে থাকা একটি ঐতিহাসিক চুক্তির কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও চুক্তিটি অনেক সময়েই উপেক্ষিত হয়েছে, তবু এটি দুই দেশের সম্পর্কের মৌলিক কাঠামো হিসেবে গণ্য ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ ও উপযোগিতা নিয়ে ফের একবার আলোচনা শুরু হয়েছে।

LinkedIn
Share