Tag: Pakistan’s Gaza Troop Gamble

  • Pakistan’s Gaza Troop: গাজায় সেনা পাঠাবে পাকিস্তান! ইসলামাবাদের প্যালেস্টাইন নীতি প্রশ্নের মুখে

    Pakistan’s Gaza Troop: গাজায় সেনা পাঠাবে পাকিস্তান! ইসলামাবাদের প্যালেস্টাইন নীতি প্রশ্নের মুখে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক “স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স”-এ (ISF) পাকিস্তানি সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা দেশটির ভেতরে ও মুসলিম বিশ্বে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচিত এই পরিকল্পনায় যুদ্ধ থামার পর গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখা, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন তদারকির কথা বলা হয়েছে। তবে সমালোচকদের মতে, এর বাস্তব প্রভাব হবে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও ইজরায়েলের নিরাপত্তা স্বার্থের অনুকূলে গাজাকে “শান্ত” রাখা—যা পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের প্যালেস্টাইন-সমর্থক অবস্থানের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।

    ফের বিশ্বাসভঙ্গ করল পাকিস্তান!

    পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি পাকিস্তানের পাসপোর্টে ইজরায়েলে ভ্রমণ নিষিদ্ধ। পাক সংসদও সম্প্রতি গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে প্যালেস্টাইনের প্রতি “ঐতিহাসিক ও অটল সমর্থন” পুনর্ব্যক্ত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে গোপনে “স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স”-এ (ISF) যোগ দেওয়ার আলোচনা পাকিস্তানের নীতিগত অবস্থানে বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশের ভেতরে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করে হামাস নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকা রাখা হলে তা শান্তিরক্ষার চেয়ে ইজরায়েলের কৌশলগত লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা হিসেবে বিবেচিত হবে। জনমত পাকিস্তানে ব্যাপকভাবে প্যালেস্টাইনপন্থী ও ইজরায়েল-বিরোধী হওয়ায় এই উদ্যোগকে “বিশ্বাসভঙ্গ” বলেও আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

    পাক রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

    আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়াও নেতিবাচক। ইরান, তুরস্ক ও কাতারসহ কয়েকটি প্রভাবশালী মুসলিম দেশের নীতিনির্ধারকেরা পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সমালোচকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকে মুসলিম বিশ্বের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। দেশীয় রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র। ইসলামি দলগুলো সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত পরিকল্পনাকে “প্যালেস্টাইনকে অধীনস্থ করার ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করে প্রতিবাদে নেমেছে। সরকারি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মুখে সংঘর্ষের খবরও আসে; পরবর্তীতে ব্যাপক ধরপাকড়, গ্রেফতার ও নানা নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ উঠেছে। জামায়াতে ইসলামী সংসদে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে যে কোনো সমঝোতা প্যালেস্টাইনের অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে বলে সতর্ক করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সংসদীয় আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়াকে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন।

    রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকট

    সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির। সমালোচকরা দাবি করছেন, অর্থনৈতিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক সুবিধার বিনিময়ে এই পরিকল্পনায় এগোনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু প্রতিবেদনে সেনা মোতায়েনের জন্য অর্থনৈতিক দরকষাকষির অভিযোগও তোলা হয়েছে, যদিও এসব দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত নয়। আরও বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ-সহজীকরণ বা নতুন তহবিলের আশ্বাস এই পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে। সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, এটি একটি শান্তিরক্ষামূলক অবদান। তবে বিরোধীদের চোখে, এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের প্যালেস্টাইন নীতিকে দুর্বল করবে, অভ্যন্তরীণ ঐক্যে ফাটল ধরাবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। গাজায় সেনা পাঠানোর প্রশ্নটি এখন পাকিস্তানের জন্য এক বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

LinkedIn
Share