Tag: Paresh Baruah

  • NIA: অসম বিস্ফোরণকাণ্ডে পরেশ বড়ুয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল এনআইএ-র

    NIA: অসম বিস্ফোরণকাণ্ডে পরেশ বড়ুয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল এনআইএ-র

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অসমে গত বছর একাধিক আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিষিদ্ধ সংগঠন আলফা (আই) প্রধান পরেশ বড়ুয়াসহ (Paresh Baruah) তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে শুক্রবার চার্জশিট দায়ের করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। শনিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে এনআইএ (NIA)। অনেক নামে পরিচিত পরেশ বড়ুয়া নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম-ইন্ডিপেন্ডেন্ট (আলফা-আই) এর চেয়ারম্যান এবং স্বঘোষিত কমান্ডার-ইন-চিফ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

    কোন কোন ধারায় অভিযুক্ত পরেশ

    এনআইএ (NIA) সূত্রে জানা গিয়েছে, পরেশ বড়ুয়ার (Paresh Baruah) সঙ্গে অভিজিৎ গগৈ এবং জাহ্নু বড়ুয়াকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন এবং বিস্ফোরক পদার্থ আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসাম জুড়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ব্যাহত করার জন্য গত বছরের স্বাধীনতা দিবসে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটানোর বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গুয়াহাটির দিসপুর লাস্ট গেটে পুঁতে রাখা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এর সাথে এই তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে এনআইএ অভিযোগপত্রে জানিয়েছে।

    কোন কোন ধারায় অভিযুক্ত পরেশ

    গত বছর স্বাধীনতা দিবসের এই ঘটনার পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তদন্তের দায়িত্ব নেয় এনআইএ (NIA)। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, মৃত্যু বা আহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করা, ভারতের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি করা এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আইইডিগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। এই মামলার পরবর্তী শুনানি গুয়াহাটি আদালতে হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, আটের দশকের গোড়া থেকেই সার্বভৌম অসমের দাবিতে উত্তপ্ত হয়েছিল ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্য। পরেশ বড়ুয়ার (Paresh Baruah) নেতৃত্বে আগুন জ্বলেছিল অসমে। শেষ পর্যন্ত ১৯৯০-এ আলফাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরেও হামলা চালিয়ে গিয়েছে বিচ্ছিন্নবাদীরা। বছর চারেক আগে শোনা যায়, পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা জঙ্গিরা চিনের ইউনান প্রদেশে ঘাঁটি গেড়েছে। সেখান থেকেই ভারতে নাশকতার চক্রান্ত চলছে।

  • Paresh Baruah: উলফা নেতা পরেশকে হাতের পুতুল বানিয়ে ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টায় চিন, বাংলাদেশ, আইএসআই!

    Paresh Baruah: উলফা নেতা পরেশকে হাতের পুতুল বানিয়ে ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টায় চিন, বাংলাদেশ, আইএসআই!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য সক্রিয় হয়ে উঠছে উলফা! ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, চিন, বাংলাদেশ এবং আইএসআই ‘অলিখিত ত্রয়ী’ আঁতাঁত গড়ে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি পরেশ (Paresh Baruah) তাঁর গোপন ডেরা পরিবর্তন করেছে। অরুণাচল প্রদেশ-মায়ানমার সীমান্তের রুইলি এলাকায় চিনের পশ্চিম ইউনান প্রদেশে থাকতেন বড়ুয়া। এখন তিনি চিনের সিশুয়াংবান্না দাই অঞ্চল রয়েছেন তিনি। এটি অসমের অহম জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং জাতিগত সম্পর্কযুক্ত তাই জনগণের একটি শক্তিশালী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। বড়ুয়া সম্ভবত এরপর মং লা শহরে পৌঁছবেন যা মায়ানমারের অন্তর্গত হলেও চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

    কে এই পরেশ বড়ুয়া?

    অসমের একটি ছোট পরিবারে জন্ম পরেশের (Paresh Baruah)। তাঁর জন্ম সূত্রে যে ছিল বিপ্লব-প্রতিবাদের ধারা। অসমের মতক পরিবারে জন্ম হয় তাঁর। এই মতকদের পূর্বসূরি আবার অহম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। ফলত সংগ্রাম যে পরেশ বড়ুয়ার রক্তধারায় বইছে তা সন্দেহাতীত। পরেশও তার ব্যতিক্রম ছিল না। চাকরি ছেড়ে ১৯৮১ সালে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম (সংক্ষেপে উলফা) গঠনের দু’বছর পর পরেশও এই ভারত-বিরোধী সংগঠনে নাম লেখায়। তৎকালীন পরিস্থিতিতে অসমে চলা দুরাবস্থা, অর্থনৈতিক ধস, বেকারত্ব প্রতিটি সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটই পরেশের ভাবাবেগে আঘাত করে। যার জেরে অসাধ্য সাধনের পথে, দুর্নীতি-দুরাবস্থা থেকে অসমের স্বাধীনতা দাবিতে সরসরি রাষ্ট্রবিরোধী সংগঠন উলফায় নাম লেখান তিনি।

    কী এই উলফা?

    ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল, এক দল যুবকের নেতৃত্বে গঠন করা হয় ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম। সে রাজ্যের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে উলফা। রাজনৈতিক আন্দোলন কিংবা অহিংসার পথ ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ থেকেই স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া আর্দশে এগোতে শুরু করে উলফা। ঝরে রক্ত, চলে আন্দোলন। গঠনের কয়েক বছরের মধ্যেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তকমা পেয়ে যায় উলফা। উত্তর-পূর্বে নিজেদের আস্ফালন তৈরিতে বিপুল অস্ত্রের সম্ভার তৈরি করে তারা। সেই সূত্রেই বাড়ে চিনের সঙ্গে যোগাযোগ। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এক বান্ধবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রায়ই মায়ানমারের জঙ্গলে পেরিয়ে চিনে যেতেন তিনি। সেই বান্ধবী নাকি আবার ছদ্মবেশী চিনা গোয়েন্দা বলেই খবর।

    চিনের কাছাকাছি

    রাষ্ট্রের কাছে পরেশ বড়ুয়ার (Paresh Baruah) অপরাধী রূপে দর যত বেড়েছে। তত নিজের গা ঢাকা দিতে চিনের দিকে পা বাড়িয়েছেন পরেশ। এমনকি ভারতের উত্তর-পূর্বে সন্ত্রাস চালাতে বরাবরই বাংলাদেশকে মাধ্যম করেছেন পরেশ। অবশেষে ২০০৪ সালের অস্ত্র পাচার নাম জড়ায় পরেশ বড়ুয়ার। গা ঢাকা দিতে বারংবার চিনে গিয়ে লুকিয়েছিলেন তিনি। তবু মেলেনি স্বস্তি। বাংলাদেশ আদালত রায় দিয়েছিল পরেশের মৃত্যুদণ্ডের। সেই রায় বদলে গেল ইউনূস সরকারের আমলে। ফাঁসির সাজা মকুব হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান পরেশ বড়ুয়া।

    ভারতের ভয়

    বাংলাদেশ এখন ভারতের শত্রু দেশ চিন ও পাকিস্তানের কাছাকাছি চলে এসেছে, যা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর মৌলবাদী সহিংসতা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ইউনূস-নেতৃত্বাধীন সরকার এই সহিংসতাগুলিকে থামানোর জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, এমনকি মৌলবাদী উপাদানগুলির দ্বারা সৃষ্ট নৃশংসতাকে অগ্রাহ্য করেছে বলে অভিযোগ। এই আবহে উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার শাস্তি কমিয়ে দিয়ে ইউনূস সরকার ভারত-বিরোধী মনোভাব স্পষ্ট করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের আইএসআই, চিন এবং বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে পরেশ বড়ুয়াকে একটি পুতুল হিসেবে ব্যবহার করছে।

    চিন-যাত্রা বড়ুয়ার

    নয়ের দশকে, ভারতের সেনাবাহিনী উলফার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পর, বড়ুয়া বাংলাদেশে পালিয়ে যান, যেখানে তাকে আইএসআই এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকারের কাছ থেকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় পদ্মাপাড় থেকেই উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে চরমপন্থী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন বড়ুয়া। তবে ২০০৬ সালের পর, যখন জিয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়, বড়ুয়া মনে করেন যে ঢাকা তাঁকে ভারতের ক্রোধ থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তখনই তিনি চিনের রুইলি চলে যান। ২০০৯ সালে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামি লিগ সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে। এরপর অস্ত্র পাচার মামলায় পরেশ বড়ুয়াকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশ।

    চট্টগ্রাম অস্ত্র চোরাচালান কাণ্ড

    ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ধারের জেটিঘাটে উদ্ধার হয় ১০ ট্রাক ভর্তি চিনা অস্ত্র। যার মধ্যে রকেট ও গ্রেনেড ছিল। পদ্মা নদীর পাড়ে তখন জোর শোরগোল। নাম জড়াচ্ছে একের পর এক বিএনপি নেতার। নাম জড়াল খোদ প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের। অবশেষে অস্ত্র পাচার মামলায় প্রকাশ্যে এল মাস্টারমাইন্ডের নাম। পরেশ বড়ুয়া। অভিযোগ, তখনকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি (বিএনপি) সরকারের সহায়তায় এবং পাকিস্তানের আইএসআইর মাধ্যমে এসব অস্ত্র উলফা ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে পাঠানো হচ্ছিল। এই চট্টগ্রাম অস্ত্র চোরাচালান কাণ্ডটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা হিসেবে পরিচিত, যেখানে ৪,৯৩০টি অস্ত্র, ২৭,০২০টি গ্রেনেড, ৮৪০টি রকেট লঞ্চার, ৩০০টি রকেট, ৬,৩৯২টি ম্যাগাজিন এবং ১,১৪০,৫২০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছিল। পরেশ তখন ঢাকাতেই ছিলেন।

    ভারতের জন্য কেন উদ্বেগের?

    পরেশ বড়ুয়াকে (Paresh Baruah) ওই মামলায় ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর ফাঁসির সাজা কমানো হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ আদালত পাকিস্তান এবং আইএসআইকে সন্তুষ্ট করতে প্রয়াস চালাচ্ছে। যেমন খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য পাকিস্তানপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা এবং গুরুতর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির একটি মামলায় অব্যাহতি দিয়েছে, যেখানে তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা পরে ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেরকম ভাবেই সাজা কমানো হয় পরেশের। ভারতের সীমান্তের কাছে চিনের সিশুয়াংবান্নায় এখন রয়েছেন পরেশ। তাঁকে ধরতে পারা যায়নি। দিল্লির ধারণা, বড়ুয়া এই কৌশলগত অবস্থানটি ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। উলফার সমর্থনও বাড়াতে পারেন বড়ুয়া। কারণ সিশুয়াংবান্নায় তাই সম্প্রদায়ের সাথে অসমের অহম সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

    শান্ত অসমকে অশান্ত করার চেষ্টা

    ৯০-এর দশকের সঙ্গে এখন যদিও কোনও মিল নেই। কেন্দ্রে মোদি সরকার ও অসমে হিমন্ত বিশ্বশর্মার ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সৌজন্যে এখন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন নামমাত্র রয়েছে অসমে। আন্দোলনকারীদের মূল স্রোতে ফেরাতে গত কয়েক বছর বড় পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্র ও অসম সরকার। উলফার আলোচনাপন্থীদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল অসম সরকার ও কেন্দ্র। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনে অপর একটি শাখা আলফা (স্বাধীন) এই চুক্তির অংশ হয়নি। ফলে পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড খারিজ হয়ে যাওয়ায় ফের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে নাশকতা বাড়বে বলে আশঙ্কা দিল্লির। চিন থেকেই ভারতে নাশকতার চক্রান্ত চালাবেন পরেশ এমনই অনুমান গোয়েন্দাদের।

LinkedIn
Share