Tag: ramakrishna kathamrita

  • Ramakrishna 460: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলকাতায় শ্রীযুক্ত বলরামের বৈঠকখানায় ভক্তসমাবেশে বসিয়া আছেন

    Ramakrishna 460: ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলকাতায় শ্রীযুক্ত বলরামের বৈঠকখানায় ভক্তসমাবেশে বসিয়া আছেন

    দেবেন্দ্র এবার ঠাকুরকে বাড়ির ভিতর লইয়া যাইতেছেন। সেখানে ঠাকুরকে জল খাওয়াইবার ইচ্ছা। ঠাকুর ভিতরে গেলেন। ঠাকুর সহসাইদলের বাড়ির ভিতর হইতে ফিরিয়া আসিলেন ও আবার বৈঠকখানায় উপস্থিত হইলেন। ভক্তরা কাছে বসিয়া আছেন। উপেন্দ্র ও অক্ষয় ঠাকুরের দুই পাশে বসিয়া পদসেবা করিতেছেন। ঠাকুর দেশের বাড়ির মেয়েদের কথা বলিতেছেন — “বেশ মেয়েরা, পাদরগেয়ে মেয়ে কি না! খুব ভক্তি।”

    ঠাকুর আছাড়ায়? নিজে আনন্দে গান গাহিতেছেন! কি ভাবে গান গাহিতেছেন? নিজের অবস্থা স্মরণ করিয়া তাহার কি ভাবাবেশ হইল? তাই কি গান গাহি গাহিতেছেন?

    গান – সহজ মানুষ না হলে সহজকে না যায় চেনা।

    গান – দরবেশা দাড়ারে, সাধের কড়ওয়া কিস্তুধারী দাড়ারে, ও তোর ভাব (রূপ) নেহারি।।

    গান – এসেছেন এক ভাবে ফকিরা। (ও সে) হিন্দুর ঠাকুর, মুসলমানের পীর।।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলকাতায় শ্রীযুক্ত বলরামের বৈঠকখানায় ভক্তসমবেশে বসিয়া আছেন। গিরিশ, মাস্টার, বলরাম — ক্ৰমে ছোট নবেন, পুণ্য, নিত্য, পূর্ণ, মল্লিক, মুকুন্দ ইত্যাদি — অনেক ভক্ত উপস্থিত আছেন। ক্ৰমে ব্রাহ্মসমাজের শ্রীযুক্ত শ্রীলোকনাথ সান্যাল, জয়গোপাল সেন প্রভৃতি অনেকেই ভক্ত আসিলেন। মেয়েভক্তগণ অনেকেই আসিয়াছেন। তাহারা চিত্রের আড়ালে বসিয়া ঠাকুরের দর্শন করিতেছেন। মোহিনীর পরিবারও আসিয়াছেন — পূর্বশ্রেষ্ঠ উৎপাদনে ব্যয় — তিনি ও তাহার নাম্য সঙ্গিনী অনেকেই আসিয়াছেন, এই বিশ্বাস যে ঠাকুরের কাছে নিঃসন্দেহে শান্তিলাভ হইবে।

    আজ ১লা বৈশাখ, চৈত্র কৃষ্ণ একাদশী, ১২ই এপ্রিল, ১৮৮৫, শুক্রবার, বেলা ৩টা হইবে।

    মাস্টার আসিয়া দেখিলেন, ঠাকুর ভক্তের মজলিস করিয়া বসিয়া আছেন ও নিজের সাম্প্রতিক বিবরণ ও নানাবিধ আধ্যাত্মিক অবস্থার বর্ণনা করিতেছেন। মাস্টার আসিয়া ঠাকুরকে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিলেন ও তাহার কাছে আসিয়া বসিলেন।

  • Ramakrishna 459: ভক্তরা কাছে বসিয়া আছেন, উপেন্দ্র ও অক্ষয় ঠাকুরের দুই পাশে বসিয়া পদসেবা করিতেছেন

    Ramakrishna 459: ভক্তরা কাছে বসিয়া আছেন, উপেন্দ্র ও অক্ষয় ঠাকুরের দুই পাশে বসিয়া পদসেবা করিতেছেন

    শ্রীরামকৃষ্ণ — “বেশ কীর্ত্তন হল! গোপীদের অবস্থা বেশ বললে — ‘হে মাধব, আমার মাধব দাও।’ গোপীদের প্রেমান্দদের অবস্থা। কী আশ্চর্য! কৃষ্ণের জন্য পাগল!”

    একজন ভক্ত আর একজনকে দেখাইয়া বলিতেছেন — **“এরই সঙ্গীতভাব — গোপীবাবা।”

    রাম বলিতেছেন — “এর ভিতর দুইই আছে। মধুরভাব আর জ্ঞানের কঠোর ভাবও আছে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ — “কি গা?”

    ঠাকুর এবার সুরেন্দ্রর কথা বলিতেছেন।

    রাম — আমি খবর দিছিলাম, কই এলেন না। শ্রীরামকৃষ্ণ — কর্ম থেকে এসে আর পারা যায় না।

    একজন ভক্ত — রামবাবু আপনার কথা লিখেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্য) — কি লিখেছে? ভক্ত — পরমহংসের ভুক্তি — এই বলে একটি বিষয় লিখেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ — তবে আর কি, রামের খুব নাম হবে। গিরিশ (সহাস্য) — সে আপনার চেলা বলে। শ্রীরামকৃষ্ণ — আমার চেলা-টেলা নাই। আমি রামের দাসানুদাস।

    পাড়ার লোকেরা কেহ কেহ আসিয়াছিলেন। কিন্তু তাহাদের দেখিয়া ঠাকুরের আনন্দ হয় নাই। ঠাকুর একবার বলিলেন, “এ কি পাড়া! এখানে দেখছি কেউ নাই।”

    দেবেন্দ্র এবার ঠাকুরকে বাড়ির ভিতর লইয়া যাইতেছেন। সেখানে ঠাকুরকে জল খাওয়াইবার ইচ্ছা। ঠাকুর ভিতরে গেলেন। ঠাকুর সহসাইদলের বাড়ির ভিতর হইতে ফিরিয়া আসিলেন ও আবার বৈঠকখানায় উপস্থিত হইলেন। ভক্তরা কাছে বসিয়া আছেন। উপেন্দ্র ও অক্ষয় ঠাকুরের দুই পাশে বসিয়া পদসেবা করিতেছেন। ঠাকুর দেশের বাড়ির মেয়েদের কথা বলিতেছেন — “বেশ মেয়েরা, পাদরগেয়ে মেয়ে কি না! খুব ভক্তি।”

    ঠাকুর আছাড়ায়? নিজে আনন্দে গান গাহিতেছেন! কি ভাবে গান গাহিতেছেন? নিজের অবস্থা স্মরণ করিয়া তাহার কি ভাবাবেশ হইল? তাই কি গান গাহি গাহিতেছেন?

    গান – সহজ মানুষ না হলে সহজকে না যায় চেনা।

    গান – দরবেশা দাড়ারে, সাধের কড়ওয়া কিস্তুধারী
    দাড়ারে, ও তোর ভাব (রূপ) নেহারি।।

    গান – এসেছেন এক ভাবে ফকিরা।
    (ও সে) হিন্দুর ঠাকুর, মুসলমানের পীর।।

  • Ramakrishna 458: শ্রীরামকৃষ্ণ বলিলেন, আমার চেলা-টেলা নাই, আমি রামের দাসানুদাস

    Ramakrishna 458: শ্রীরামকৃষ্ণ বলিলেন, আমার চেলা-টেলা নাই, আমি রামের দাসানুদাস

    যেন একটি ছোট ছেলে দূর হইতে মার ডাক শুনিয়া উত্তর দিতেছে! ঠাকুর আবার নিঃস্পন্দ দেখ, সমাধিস্থ বসিয়া আছেন। ভক্তেরা অনিমেষনয়নে নিঃশব্দে দেখিতেছেন।

    ঠাকুর ভাবে আবার বলছেন, “আমি লুচি আর খাব না।”

    পাড়া হইতে দুই-একটি গোস্বামী আসিয়াছিলেন — তাহারা উঠিয়া গেলেন।

    পরবর্তী পরিচ্ছেদ

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ১৮৮৫, ৬ এপ্রিল ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবেন্দ্রের বাটীতে ভক্তসম্ভাষণে

    ঠাকুর ভক্তসম্ভাষে আনন্দে কথাবার্তা কহিতেছেন। চৈত্র মাস, বড় গরম! দেবেন্দ্র কুলপি বরফ তৈয়ার করিয়াছেন। ঠাকুরকে ও ভক্তদের খাওয়াইতেছেন। ভক্তগণও কুলপি খাইয়া আনন্দ করিতেছেন। মণি বলিতেছেন, “এনেকোর! এনেকোর!” (অর্থাৎ আরও কুলফি দাও) ও সকলে হাসিতেছেন। কুলফি খাইয়া ঠাকুরের ঠিক বালকের ন্যায় আনন্দ হইতেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — “বেশ কীর্ত্তন হল! গোপীদের অবস্থা বেশ বললে — ‘হে মাধব, আমার মাধব দাও।’ গোপীদের প্রেমান্দদের অবস্থা। কী আশ্চর্য! কৃষ্ণের জন্য পাগল!”

    একজন ভক্ত আর একজনকে দেখাইয়া বলিতেছেন — **“এরই সঙ্গীতভাব — গোপীবাবা।”

    রাম বলিতেছেন — “এর ভিতর দুইই আছে। মধুরভাব আর জ্ঞানের কঠোর ভাবও আছে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ — “কি গা?”

    ঠাকুর এবার সুরেন্দ্রর কথা বলিতেছেন।

    রাম — আমি খবর দিছিলাম, কই এলেন না।
    শ্রীরামকৃষ্ণ — কর্ম থেকে এসে আর পারা যায় না।

    একজন ভক্ত — রামবাবু আপনার কথা লিখেছেন।
    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্য) — কি লিখেছে?
    ভক্ত — পরমহংসের ভুক্তি — এই বলে একটি বিষয় লিখেছেন।
    শ্রীরামকৃষ্ণ — তবে আর কি, রামের খুব নাম হবে।
    গিরিশ (সহাস্য) — সে আপনার চেলা বলে।
    শ্রীরামকৃষ্ণ — আমার চেলা-টেলা নাই। আমি রামের দাসানুদাস।

    পাড়ার লোকেরা কেহ কেহ আসিয়াছিলেন। কিন্তু তাহাদের দেখিয়া ঠাকুরের আনন্দ হয় নাই। ঠাকুর একবার বলিলেন, “এ কি পাড়া! এখানে দেখছি কেউ নাই।”

  • Ramakrishna 457: গোপীদের প্রেমান্দদের অবস্থা, কী আশ্চর্য! কৃষ্ণের জন্য পাগল!”

    Ramakrishna 457: গোপীদের প্রেমান্দদের অবস্থা, কী আশ্চর্য! কৃষ্ণের জন্য পাগল!”

    ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের ভাব আবার ঘনীভূত হইতেছে। আবার মার সঙ্গে কথা কহিতেছেন, “মা! যে ভাল আছে তাকে ভাল করতে যাওয়া কি বাহাদুরি? মা! মরারকে বাঁচাইতে হইবে? যে খাদ্য হয়ে রয়েছে তাকে খাওলে তবে তো তোমার মহিমা!” ঠাকুর কিন্তু স্থির হইয়া ঠাঁই একটুখানি উচ্চঃস্বরে বলিতেছেন — “আমি দক্ষিণেশ্বর থেকে এসেছি। যাচ্ছি গো মা!!”

    যেন একটি ছোট ছেলে দূর হইতে মার ডাক শুনিয়া উত্তর দিতেছে! ঠাকুর আবার নিঃস্পন্দ দেখ, সমাধিস্থ বসিয়া আছেন। ভক্তেরা অনিমেষনয়নে নিঃশব্দে দেখিতেছেন।

    ঠাকুর ভাবে আবার বলছেন, “আমি লুচি আর খাব না।”

    পাড়া হইতে দুই-একটি গোস্বামী আসিয়াছিলেন — তাহারা উঠিয়া গেলেন।

    পরবর্তী পরিচ্ছেদ

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ
    ১৮৮৫, ৬ এপ্রিল
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবেন্দ্রের বাটীতে ভক্তসম্ভাষণে

    ঠাকুর ভক্তসম্ভাষে আনন্দে কথাবার্তা কহিতেছেন। চৈত্র মাস, বড় গরম! দেবেন্দ্র কুলপি বরফ তৈয়ার করিয়াছেন। ঠাকুরকে ও ভক্তদের খাওয়াইতেছেন।
    ভক্তগণও কুলপি খাইয়া আনন্দ করিতেছেন। মণি বলিতেছেন,

    “এনেকোর! এনেকোর!”
    (অর্থাৎ আরও কুলফি দাও) ও সকলে হাসিতেছেন। কুলফি খাইয়া ঠাকুরের ঠিক বালকের ন্যায় আনন্দ হইতেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ —
    “বেশ কীর্ত্তন হল! গোপীদের অবস্থা বেশ বললে — ‘হে মাধব, আমার মাধব দাও।’ গোপীদের প্রেমান্দদের অবস্থা। কী আশ্চর্য! কৃষ্ণের জন্য পাগল!”

    একজন ভক্ত আর একজনকে দেখাইয়া বলিতেছেন —
    **“এরই সঙ্গীতভাব — গোপীবাবা।”

    রাম বলিতেছেন —
    “এর ভিতর দুইই আছে। মধুরভাব আর জ্ঞানের কঠোর ভাবও আছে।”

    শ্রীরামকৃষ্ণ —
    “কি গা?”

    ঠাকুর এবার সুরেন্দ্রর কথা বলিতেছেন।

    রাম —
    “আমি খবর দিছিলাম, কই এলো না।”

  • Ramakrishna 458: ঠাকুর ভাবে আবার বলছেন, “আমি লুচি আর খাব না”

    Ramakrishna 458: ঠাকুর ভাবে আবার বলছেন, “আমি লুচি আর খাব না”

    শ্রী রামকৃষ্ণ (ভাবস্থ) — মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!! (মাস্টারের দিকে) তোমার সম্পত্তি — তার দিকে একটু মন আছে।

    (গিরিশের প্রতি) — “তুমি মালামাল, খাবার কথা, অনেক বল; তা হউক, ওসব বেরিয়ে যাওয়া‌ই ভালো। বদরোগ কাকের কাকর আছে। যত বেরিয়ে যায় ততই ভালো। “উচ্চারিত নামের সময়ই শব্দ হয়। কাঁঠ পোড়াবার সময় চড়চড় শব্দ করে। সব পুড়ে গেলে আর শব্দ থাকে না। “তুমি দিন দিন শুভ হবে। তোমার দিন দিন খুব উন্নতি হবে। লোকে দেখে অবাক হবে। আমি বেশি আসতে পারব না, — তা হউক, তোমার এমনি হবে।” ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের ভাব আবার ঘনীভূত হইতেছে। আবার মার সঙ্গে কথা কহিতেছেন, “মা! যে ভাল আছে তাকে ভাল করতে যাওয়া কি বাহাদুরি? মা! মরারকে বাঁচাইতে হইবে? যে খাদ্য হয়ে রয়েছে তাকে খাওলে তবে তো তোমার মহিমা!” ঠাকুর কিন্তু স্থির হইয়া ঠাঁই একটুখানি উচ্চঃস্বরে বলিতেছেন — “আমি দক্ষিণেশ্বর থেকে এসেছি। যাচ্ছি গো মা!!”

    যেন একটি ছোট ছেলে দূর হইতে মার ডাক শুনিয়া উত্তর দিতেছে! ঠাকুর আবার নিঃস্পন্দ দেখ, সমাধিস্থ বসিয়া আছেন। ভক্তেরা অনিমেষনয়নে নিঃশব্দে দেখিতেছেন।

    ঠাকুর ভাবে আবার বলছেন, “আমি লুচি আর খাব না।”

    পাড়া হইতে দুই-একটি গোস্বামী আসিয়াছিলেন — তাহারা উঠিয়া গেলেন।

    পরবর্তী পরিচ্ছেদ

    চতুর্দশ পরিচ্ছেদ
    ১৮৮৫, ৬ এপ্রিল
    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবেন্দ্রের বাটীতে ভক্তসম্ভাষণে

    ঠাকুর ভক্তসম্ভাষে আনন্দে কথাবার্তা কহিতেছেন। চৈত্র মাস, বড় গরম! দেবেন্দ্র কুলপি বরফ তৈয়ার করিয়াছেন। ঠাকুরকে ও ভক্তদের খাওয়াইতেছেন।
    ভক্তগণও কুলপি খাইয়া আনন্দ করিতেছেন।

  • Ramakrishna 457: মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!

    Ramakrishna 457: মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!

    বে মাধবী! আমার মাধব দে! (দে দে দে, মাধব দে!) আমার মাধব আমায় দে, দিয়ে বিনামূল্যে কিনে নে। মীনর জীবন, জীবন যেমন, আমার জীবন মাধব তেমন। (তুই লুকাইছিস বেখয়াল, ও মাধবী!)

    (অবলা সরলা পেয়ে!) (আমি বাঁচি না, বাঁচি না) (মাধবী, ও মাধবী, মাধব দে না) (মাধব অপহরণ)।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মাধব আখর দিতেছেন,

    (সে ময়ূর কন্দর! যেখানে আমার প্রাণনন্দন!)

    ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন।

    ঠাকুর যদিও প্রকৃতিস্থ; কিন্তু এখনও ভাবাবিষ্ট। এই অবস্থায় ভাব বলিতেছেন। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে কথা বলিতেছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ (ভাবস্থ) — মা! তাকে টেনে নিও, আমি আর ভাবতে পারি না!!
    (মাস্টারের দিকে) তোমার সম্পত্তি — তার দিকে একটু মন আছে।

    (গিরিশের প্রতি) — “তুমি মালামাল, খাবার কথা, অনেক বল; তা হউক, ওসব বেরিয়ে যাওয়া‌ই ভালো। বদরোগ কাকের কাকর আছে। যত বেরিয়ে যায় ততই ভালো।

    “উচ্চারিত নামের সময়ই শব্দ হয়। কাঁঠ পোড়াবার সময় চড়চড় শব্দ করে। সব পুড়ে গেলে আর শব্দ থাকে না।

    “তুমি দিন দিন শুভ হবে। তোমার দিন দিন খুব উন্নতি হবে। লোকে দেখে অবাক হবে। আমি বেশি আসতে পারব না, — তা হউক, তোমার এমনি হবে।”

    ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের ভাব আবার ঘনীভূত হইতেছে। আবার মার সঙ্গে কথা কহিতেছেন, “মা! যে ভাল আছে তাকে ভাল করতে যাওয়া কি বাহাদুরি? মা! মরারকে বাঁচাইতে হইবে? যে খাদ্য হয়ে রয়েছে তাকে খাওলে তবে তো তোমার মহিমা!”

    ঠাকুর কিন্তু স্থির হইয়া ঠাঁই একটুখানি উচ্চঃস্বরে বলিতেছেন — “আমি দক্ষিণেশ্বর থেকে এসেছি। যাচ্ছি গো মা!!”

  • Ramakrishna 456: ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন

    Ramakrishna 456: ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ১৮৮৫, ৬ই এপ্রিল

    দেবেন্দ্র-ভবনে ঠাকুরের কীর্ত্তনানন্দ ও সমাধিধন্দিতে এইবার খোল-করতাল লইয়া সংগীতন উঠিতেছে। কীর্ত্তনিয়া গাহিতেছেন: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে, অপরূপ জ্যোতিষি; শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্তি, দুনু চক্ষে প্রেম বয়ে শতধারে। গৌর মন্মথতন্ত্র প্রায়, প্রেমাবেশে নাচে গায়, কড়ু ধরাতে লুয়া, নয়নজলে ভাসে রে, কাঁদে আর বলে হরি, স্বর্ণ-মর্ত্ত্য ভেদ করি, সিংহদ্বারে রে, আবাব ফুল লয়ে কুন্তাঞ্জলি হয়, দাস মুক্তি যাত্রে দ্বারে দ্বারে।। কিবা মূরছায়ে চটক বেস, ধরেছেন যোগীর বেস, দেখে ভক্তি প্রেমাবেশ, প্রাণ কেঁদে উঠে রে। জীবের দুঃখে কাতর হয়ে, এলেন সর্ব্ব ত্যাগিয়ে, প্রেম বিলাতে রে,

    ঠাকুর গান শুনিতে শুনিতে ভাবাবিষ্ট হইয়াছেন। কীর্তনীয়া শ্রীরামকৃষ্ণের রজোগোপীর অবস্থা বর্ণনা করিতেছেন।

    রজোগোপী মাধবীকৃষ্ণে মাঝে মাঝে অজ্ঞান করিতেছেন—

    বে মাধবী! আমার মাধব দে!
    (দে দে দে, মাধব দে!)
    আমার মাধব আমায় দে, দিয়ে বিনামূল্যে কিনে নে।
    মীনর জীবন, জীবন যেমন, আমার জীবন মাধব তেমন।
    (তুই লুকাইছিস বেখয়াল, ও মাধবী!)

    (অবলা সরলা পেয়ে!) (আমি বাঁচি না, বাঁচি না)
    (মাধবী, ও মাধবী, মাধব দে না) (মাধব অপহরণ)।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মাধব আখর দিতেছেন,

    (সে ময়ূর কন্দর! যেখানে আমার প্রাণনন্দন!)

    ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন।

    ঠাকুর যদিও প্রকৃতিস্থ; কিন্তু এখনও ভাবাবিষ্ট। এই অবস্থায় ভাব বলিতেছেন। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে কথা বলিতেছেন।

  • Ramakrishna 455: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,

    Ramakrishna 455: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

    [কৌমার্যব্রত্য আশ্চর্য — বেশ্যার উদ্ধার কিরূপে হয়]

    শ্রীরামকৃষ্ণ — ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য। খুব কম লোকের হয়! তা না হলে যেমন শিল-থেকে আম — ঠাকুরের সেবায় লাগে না — নিজে খেতে ভয় হয়।

    “আগে অনেক পাপ করেছে, তারপরে বুড়ো বয়সে হরিনাম করছে এ মন্দের ভাল।

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

    ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
    ১৮৮৫, ৬ই এপ্রিল 1885/04/06/iii

    43.13 দেবেন্দ্র-ভবনে ঠাকুরের কীর্ত্তনানন্দ ও সমাধিধন্দিতে

    এইবার খোল-করতাল লইয়া সংগীতন উঠিতেছে। কীর্ত্তনিয়া গাহিতেছেন:

    কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে,
    অপরূপ জ্যোতিষি; শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্তি,
    দুনু চক্ষে প্রেম বয়ে শতধারে।

    গৌর মন্মথতন্ত্র প্রায়, প্রেমাবেশে নাচে গায়,
    কড়ু ধরাতে লুয়া, নয়নজলে ভাসে রে,
    কাঁদে আর বলে হরি, স্বর্ণ-মর্ত্ত্য ভেদ করি, সিংহদ্বারে রে,
    আবাব ফুল লয়ে কুন্তাঞ্জলি হয়,
    দাস মুক্তি যাত্রে দ্বারে দ্বারে।।

    কিবা মূরছায়ে চটক বেস, ধরেছেন যোগীর বেস,
    দেখে ভক্তি প্রেমাবেশ, প্রাণ কেঁদে উঠে রে।
    জীবের দুঃখে কাতর হয়ে, এলেন সর্ব্ব ত্যাগিয়ে,
    প্রেম বিলাতে রে,

  • Ramakrishna 454: ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য, খুব কম লোকের হয়!

    Ramakrishna 454: ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য, খুব কম লোকের হয়!

    শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন— “সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

    ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি) — মন থেকে কামিনী-কাঞ্চন সব না গেলে অবতারকে চিনতে পারা কঠিন। বেগুনওলাকে হীরার দাম জিজ্ঞাসা করেছিল, সে বললে, আমি এর বদলে নয় সের বেগুন দিতে পারি, এর একটাও বেশি দিতে পারি না। (সকলের হাস্য ও ছোট নরেনের উচ্ছ্বাস)

    ঠাকুর দেখিলেন, ছোট নরেন কথার মর্ম ফস করিয়া বুঝিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ — এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

    [কৌমার্যব্রত্য আশ্চর্য — বেশ্যার উদ্ধার কিরূপে হয়]

    শ্রীরামকৃষ্ণ — ছেলেবেলা থেকে কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ, এটি খুব আশ্চর্য। খুব কম লোকের হয়! তা না হলে যেমন শিল-থেকে আম — ঠাকুরের সেবায় লাগে না — নিজে খেতে ভয় হয়।

    “আগে অনেক পাপ করেছে, তারপরে বুড়ো বয়সে হরিনাম করছে এ মন্দের ভাল।

    “অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”

  • Ramakrishna 454: এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত

    Ramakrishna 454: এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত

    ভক্ত সহস্রের মধ্যে কতককে দেখেছি—কেউ কাম-ক্রোধ, লোভ-মোহ প্রভৃতির ভারে জর্জরিত; কেউ আবার সেই ভারের উপর বসে আছে, কেউ কেউ কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী লোকদের অবস্থা দেখেছেন—যারা ঈশ্বরকে ভুলে গেছেন, তাদের সেই করুণ দশা তিনি অনুভব করেছেন। তাই তাঁর মন থেকে নিজেই সব ত্যাগ হয়ে গিয়েছে।

    “ও কী আশ্চর্য!” — আমি তো কত জপ-ধ্যান করেছি, তারপর গিয়ে তবে কিছুটা ফল পেয়েছিলাম। কিন্তু উনি (ঠাকুর) তো একেবারে এমন শীঘ্র কেমন করে সব ত্যাগ করলেন? কাম (কামনা) মন থেকে চলে যাওয়া কি এত সহজ ব্যাপার?

    আমার নিজের মনে পড়ে, প্রায় ছয় মাস পরে যখন বুক ভারী হয়ে এলো, আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম। বললাম— “মা! যদি সত্যিই ত্যাগ হয় না, তাহলে গলায় ছুরি দেব।”

    “যদি কামিনী-কাঞ্চনের মোহ মন থেকে চলে যায়, তবে আর বাকি কী থাকে? তখনই কেবল ‘ব্রহ্মানন্দ’।”

    শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

    শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন— “সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

    ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি) —
    মন থেকে কামিনী-কাঞ্চন সব না গেলে অবতারকে চিনতে পারা কঠিন।
    বেগুনওলাকে হীরার দাম জিজ্ঞাসা করেছিল, সে বললে, আমি এর বদলে নয় সের বেগুন দিতে পারি, এর একটাও বেশি দিতে পারি না। (সকলের হাস্য ও ছোট নরেনের উচ্ছ্বাস)

    ঠাকুর দেখিলেন, ছোট নরেন কথার মর্ম ফস করিয়া বুঝিয়াছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ —
    এর কী সূক্ষ্মবুদ্ধি! ন্যাংটা এইরকম ফস করে বুঝে নিত — গীতা, ভাগবত, যেখানে যা, সে বুঝে নিত।

LinkedIn
Share