Tag: Ramakrishna Paramahansa

  • Ramakrishna 303: “আমার ভয় কি তাতে, কালী ব’লে কালেরে কলা দেখাব, ডাকিনী যোগিনী দিয়ে, তরকারী বানায়ে খাব”

    Ramakrishna 303: “আমার ভয় কি তাতে, কালী ব’লে কালেরে কলা দেখাব, ডাকিনী যোগিনী দিয়ে, তরকারী বানায়ে খাব”

    রামের বাটীতে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৮শে সেপ্টেম্বর

    মহাষ্টমীদিবসে রামের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ

    বিজয়, কেদার, রাম, সুরেন্দ্র, চুনি, নরেন্দ্র, নিরঞ্জন, বাবুরাম, মাস্টার 

    পূর্বকথা—প্রথম উন্মাদে ব্রহ্মজ্ঞান ও জাতিভেদবুদ্ধি ত্যাগ—কামারপুকুর গমন; ধনী কামারিনী; রামলালের বাপ—গোবিন্দ রায়ের নিকট আল্লামন্ত্র 

    “আমার কামারবাড়ির দাল খেতে ইচ্ছা ছিল; ছেলেবেলা থেকে কামাররা বলত বামুনরা কি রাঁধতে যানে? তাই খেলুম, কিন্তু, কামারে কামারে গন্ধ । (সকলের হাস্য)

    “গোবিন্দ (Kathamrita) রায়ের কাছে আল্লামন্ত্র নিলাম। কুঠিতে প্যাঁজ দিয়ে রান্না ভাত হল। খানিক খেলুম। মণি মল্লিকের (বরাহনগরের) বাগানে ব্যান্নুন রান্না খেলুম, কিন্তু কেমন একটা ঘেন্না হল।

    “দেশে গেলুম; রামলালের বাপ ভয় পেলে (Ramakrishna)। ভাবলে, যার তার বাড়িতে খাবে। ভয় পেলে, পাছে তাদের জাতে বার করে দেয়। আমি তাই বেশি দিন থাকতে পারলুম না; চলে এলুম।”

    বেদ, পুরাণ, তন্ত্রমতে শুদ্ধাচার কিরূপ 

    “বেদ পুরাণে বলেছে শুদ্ধাচার। বেদ পুরাণে যা বলে গেছে — ‘করো না, অনাচার হবে’ — তন্ত্রে আবার তাই ভাল বলেছে।

    “কি অবস্থাই গেছে! মুখ করতুম আকাশ-পাতাল জোড়া, আর ‘মা’ বলতুম (Ramakrishna)। যেন, মাকে পাকড়ে আনছি। যেন জাল ফেলে মাছ হড়হড় করে টেনে আনা (Kathamrita)। গানে আছে:

    এবার কালী তোমায় খাব। (খাব খাব গো দীন দয়াময়ী)।
    (তারা গণ্ডযোগে জন্ম আমার)
    গণ্ডযোগে জনমিলে সে হয় মা-খোকা ছেলে।
    এবার তুমি খাও কি আমি খাই মা, দুটার একটা করে যাব ॥
    হাতে কালী মুখে কালী, সর্বাঙ্গে কালী মাখিব।
    যখন আসবে শমন বাঁধবে কসে, সেই কালী তার মুখে দিব ॥
    খাব খাব বলি মা গো উদরস্থ করিব।
    এই হৃদিপদ্মে বসাইয়ে, মনোমানসে পূজিব ॥
    যদি বল কালী খেলে, কালের হাতে ঠেকা যাব।
    আমার ভয় কি তাতে, কালী ব’লে কালেরে কলা দেখাব ॥
    ডাকিনী যোগিনী দিয়ে, তরকারী বানায়ে খাব।
    মুণ্ডমালা কেড়ে নিয়ে অম্বল সম্বরা চড়াব ॥
    কালীর বেটা শ্রীরামপ্রসাদ, ভালমতে তাই জানাব।
    তাতে মন্ত্রের সাধন, শরীর পতন, যা হবার তাই ঘটাইব ॥

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 302: “হে ঈশ্বর তুমি আশীর্বাদ কর, যেন আমরা ভক্তি-নদীতে একেবারে ডুবে যাই”

    Ramakrishna 302: “হে ঈশ্বর তুমি আশীর্বাদ কর, যেন আমরা ভক্তি-নদীতে একেবারে ডুবে যাই”

    রামের বাটীতে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৮শে সেপ্টেম্বর

    মহাষ্টমীদিবসে রামের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ

    বিজয়, কেদার, রাম, সুরেন্দ্র, চুনি, নরেন্দ্র, নিরঞ্জন, বাবুরাম, মাস্টার

    কথাগুলি বলিতে বলিতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) প্রকৃতিস্থ হইলেন। এখন ভক্তদের সহিত কথা কহিতে পারিবেন।

    কেদারকে গান করিতে বলিলেন। কেদার গাইতেছেন:

        (১)   —   মনের কথা কইব কি সই কইতে মানা।
    দরদী নইলে প্রাণ বাঁচে না ॥
    মনের মানুষ হয় যে-জনা,
    ও তার নয়নেতে যায় গো চেনা, সে দুই-এক জনা,
    ভাবে ভাসে রসে ডোবে, ও সে উজান পথে করে আনাগোনা ॥
    (ভাবের মানুষ উজান পথে করে আনাগোনা।)

        (২)   —   গৌর প্রেমের ঢেউ লেগেছে গায়।
    তার হিল্লোলে পাষণ্ড-দলন এ-ব্রহ্মাণ্ড তলিয়ে যায় ॥
    মনে করি ডুবে তলিয়ে রই,
    গৌরচাঁদের প্রেম-কুমিরে গিলেছে গো সই।
    এমন ব্যথার ব্যথী কে আর আছে
    হাত ধরে টেনে তোলায় ॥

        (৩) —যে-জন প্রেমের ঘাট চেনে না।

    গানের পর আবার ঠাকুর ভক্তদের সহিত কথা কহিতেছেন। শ্রীযুক্ত কেশব সেনের ভাইপো নন্দলাল উপস্থিত ছিলেন। তিনি ও তাঁর দুই-একটি ব্রাহ্মবন্ধু ঠাকুরের কাছেই বসিয়াছিলেন (Kathamrita)।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বিজয়াদি ভক্তদের প্রতি)—কারণের বোতল একজন এনেছিল, আমি ছুঁতে গিয়ে আর পারলুম না।

    বিজয়—আহা!

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সহজানন্দ হলে অমনি নেশা হয়ে যায়! মদ খেতে হয় না। মার চরণামৃত দেখে আমার নেশা হয়ে যায়। ঠিক যেন পাঁচ বোতল মদ খেলে হয়!

    জ্ঞানী ও ভক্তদের অবস্থা—জ্ঞানী ও ভক্তদের আহারের নিয়ম 

    “এ অবস্থায় সব সময় সবরকম খাওয়া চলে না।”

    নরেন্দ্র—খাওয়া-দাওয়া সম্বন্ধে যদৃচ্ছালাভই ভাল।

    শ্রীরামকৃষ্ণ(Kathamrita)—অবস্থা বিশেষে উটি হয়। জ্ঞানীর পক্ষে কিছুতেই দোষ নাই। গীতার মতে জ্ঞানী আপনি খায় না, কুণ্ডলিনীকে আহুতি দেয়।

    “ভক্তের পক্ষে উটি নয়। আমার এখনকার অবস্থা,—বামুনের দেওয়া ভোগ না হলে খেতে পারি না! আগে এমন অবস্থা ছিল, দক্ষিণেশ্বরের ওপার থেকে মড়াপোড়ার যে গন্ধ আসতো, সেই গন্ধ নাক দিয়ে টেনে নিতাম এত মিষ্ট লাগতো। এখন সব্বাইয়ের খেতে পারি না।

    “পারি না বটে, আবার এক-একবার হয়ও। কেশব সেনের ওখানে (নববৃন্দাবন) থিয়েটারে আমায় নিয়ে গিয়েছিল। লুচি, ছক্কা আনলে। তা ধোবা কি নাপিত আনলে, জানি না (Kathamrita)। (সকলের হাস্য) বেশ খেলুম। রাখাল বললে, একটু খাও।

    নরেন্দ্রের (Ramakrishna) প্রতি—“তোমার এখন হবে। তুমি এতেও আছ, আবার ওতেও আছ! তুমি এখন সব খেতে পারবে।

    (ভক্তদের প্রতি)—“শূকর মাংস খেয়ে যদি ঈশ্বরে টান থাকে, সে লোক ধন্য! আর হবিষ্য করে যদি কামিনী-কাঞ্চনে মন তাকে তাহলে সে ধিক্‌।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 301: “বেদে আছে, হোমাপাখির কথা…যখন মাটির কাছে এসে পড়ে, তখন তার চৈতন্য হয়”

    Ramakrishna 301: “বেদে আছে, হোমাপাখির কথা…যখন মাটির কাছে এসে পড়ে, তখন তার চৈতন্য হয়”

    রামের বাটীতে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৮শে সেপ্টেম্বর

    মহাষ্টমীদিবসে রামের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ

    বিজয়, কেদার, রাম, সুরেন্দ্র, চুনি, নরেন্দ্র, নিরঞ্জন, বাবুরাম, মাস্টার 

    “স্থূল, সূক্ষ্ম, কারণ, মহাকারণ! মহাকারণে গেলে চুপ। সেখানে কথা চলে না!

    “ঈশ্বরকোটি (Ramakrishna) মহাকারণে গিয়ে ফিরে আসতে পারে। অবতারাদি ঈশ্বরকোটি। তারা উপরে উঠে, আবার নিচেও আসতে পারে। ছাদের উপরে উঠে, আবার সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচে আনাগোনা করতে পারে। অনুলোম, বিলোম। সাততোলা বাড়ি, কেউ বারবাড়ি পর্যন্ত যেতে পারে। রাজার ছেলে, আপনার বাড়ি সাততোলায় যাওয়া আসা করতে পারে।

    “এক একরকম তুবড়ি আছে, একবার একরকম ফুল কেটে গেল, তারপর খানিকক্ষণ আর-একরকম ফুল কাটছে তারপর আবার আর-একরকম। তার নানারকম ফুলকাটা ফুরোয় (Kathamrita) না।

    “আর একরকম তুবড়ি আছে, আগুন দেওয়ার একটু পরেই ভস্‌ করে উঠে ভেঙে যায়! যদি সাধ্য-সাধনা করে উপরে যায়, তো আর এসে খপর দেয় না। জীবকোটির সাধ্য-সাধনা করে সমাধি হতে পারে। কিন্তু সমাধির পর নিচে আসতে বা এসে খপর দিতে পারে না।

    “একটি আছে, নিত্যসিদ্ধের থাক্‌। তারা জন্মাবধি ঈশ্বরকে (Ramakrishna) চায়, সংসারে কোন জিনিস তাদের ভাল লাগে না। বেদে আছে, হোমাপাখির কথা। এই পাখি খুব উঁচু আকাশে থাকে। ওই আকাশেই ডিম পাড়ে। এত উঁচুতে থাকে যে ডিম অনেকদিন ধরে পড়তে থাকে। পড়তে পড়তে ডিম ফুটে যায়। তখন ছানাটি পড়তে থাকে। অনেকদিন ধরে পড়ে। পড়তে পড়তে চোখ ফুটে যায়। যখন মাটির কাছে এসে পড়ে, তখন তার চৈতন্য হয়। তখন বুঝতে পারে যে, মাটি গায়ে ঠেকলেই মৃত্যু। পাখি চিৎকার করে মার দিকে চোঁচা দৌড়। মাটিতে মৃত্যু, মাটি দেখে ভয় হয়েছে! এখন মাকে চায়! মা সেই উঁচু আকাশে আছে। সেই দিকে চোঁচা দৌড়! আর কোন দিকে দৃষ্টি নাই (Kathamrita)।

    “অবতারে সঙ্গে যারা আসে, তারা নিত্যসিদ্ধ, কারু বা শেষ জন্ম।

    (বিজয়ের প্রতি)—“তোমাদের দুই-ই আছে। যোগ ও ভোগ। জনক রাজার যোগও ছিল, ভোগও ছিল। তাই জনক রাজর্ষি (Ramakrishna), রাজা ঋষি, দুই-ই। নারদ দেবর্ষি। শুকদেব ব্রহ্মর্ষি।

    “শুকদেব ব্রহ্মর্ষি, শুকদেব জ্ঞানী নন, জ্ঞানের ঘনমূর্তি। জ্ঞানী কাকে বলে? জ্ঞান হয়েছে যার— সাধ্য-সাধনা করে জ্ঞান হয়েছে। শুকদেব জ্ঞানের মূর্তি অর্থাৎ জ্ঞানের জমাটবাঁধা। এমনি হয়েছে সাধ্য-সাধনা করে নয়।”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 300: “আন্তরিক হলে সংসারেও ঈশ্বরলাভ করা যায়, ‘আমি-আমার’—এইটি অজ্ঞান, হে ঈশ্বর, ‘তুমি-তোমার’—এইটি জ্ঞান”

    Ramakrishna 300: “আন্তরিক হলে সংসারেও ঈশ্বরলাভ করা যায়, ‘আমি-আমার’—এইটি অজ্ঞান, হে ঈশ্বর, ‘তুমি-তোমার’—এইটি জ্ঞান”

    সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে শ্রীরামকৃষ্ণ—দুর্গাপূজা দিবসে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে সেপ্টেম্বর

    বিজয় গোস্বামীর প্রতি উপদেশ

    বিজয় (কৃতাঞ্জলি হইয়া)—আপনি একটু আশীর্বাদ করুন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ও-সব অজ্ঞানের কথা। আশীর্বাদ ঈশ্বর করবেন।

    গৃহস্থ ব্রহ্মজ্ঞানীকে উপদেশ—গৃহস্থাশ্রম ও সন্ন্যাস 

    বিজয়—আজ্ঞা, আপনি কিছু উপদেশ দিন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সমাজগৃহের চতুর্দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া, সহাস্যে)—এ এরকম বেশ! সারে মাতে সারও আছে, মাতও আছে। (সকলের হাস্য) আমি বেশ কাটিয়ে জ্বলে গেছি। (সকলের হাস্য) নক্স খেলা জান? সতের ফোঁটার বেশি হলে জ্বলে যায়। একরকম তাস খেলা। যারা সতের ফোঁটার কমে থাকে, যারা পাঁচে থাকে, সাত থাকে, দশে থাকে, তারা সেয়ানা। আমি বেশি কাটিয়ে জ্বলে গেছি (Kathamrita)।

    “কেশব সেন বাড়িতে লেকচার দিলে। আমি শুনেছিলুম। অনেক লোক বসে ছিল। চিকের ভিতরে মেয়েরা ছিল। কেশব বললে, ‘হে ঈশ্বর (Kathamrita), তুমি আশীর্বাদ কর, যেন আমরা ভক্তি-নদীতে একেবারে ডুবে যাই।’ আমি হেসে কেশবকে বললুম, ভক্তি-নদীতে যদি একেবারে ডুবে যাবে তাহলে চিকের ভিতর যাঁরা রয়েছেন, ওঁদের দশা কি হবে? তবে এক কর্ম করো, ডুব দেবে, আর মাঝে মাঝে আড়ায় উঠবে। একেবারে ডুবে তলিয়ে যেও না। এই কথা শুনে কেশব আর সকলে হো-হো করে হাসতে লাগল।

    “তা হোক। আন্তরিক হলে সংসারেও ঈশ্বরলাভ করা যায়। ‘আমি ও আমার’—এইটি অজ্ঞান। হে ঈশ্বর, তুমি ও তোমার—এইটি জ্ঞান।

    “সংসারে থাকো, যেমন বড়মানুষের বাড়ির ঝি। সব কাজ করে, ছেলে মানুষ করে, বাবুর ছেলেকে বলে আমার হরি কিন্তু তার মন দেশে পড়ে থাকে। তেমনি সংসারে সব কর্ম কর কিন্তু ঈশ্বরের (Kathamrita) দিকে মন রেখো। আর জেনো যে, গৃহ, পরিবার পুত্র—এ-সব আমার নয়, এ-সব তাঁর। আমি কেবল তাঁর দাস।

    “আমি মনে ত্যাগ করতে বলি। সংসারত্যাগ বলি না। অনাসক্ত হয়ে সংসারে থেকে, আন্তরিক চাইলে, তাঁকে পাওয়া যায়।”

    ব্রাহ্মসমাজ ও ধ্যানযোগ—Subjective and Objective

    (বিজয়ের প্রতি)—“আমিও চক্ষু বুজে ধ্যান কত্তুম। তারপর ভাবলুম। এমন কল্‌লে (চক্ষু বুজলে) ঈশ্বর (Ramakrishna) আছেন, আর এমন কল্‌ লে (চক্ষু খুললে) কি ঈশ্বর নাই, চক্ষু খুলেও দেখছি, ঈশ্বর সর্বভূতে রয়েছেন। মানুষ, জীবজন্তু, গা ছপালা, চন্দ্রসূর্যমধ্যে, জলে, স্থলে—সর্বভূতে তিনি আছেন।”

    শিবনাথ—শ্রীযুক্ত কেদার চাটুজ্যে 

    “কেন শিবনাথকে চাই? যে অনেকদিন ঈশ্বরচিন্তা (Ramakrishna) করে, তার ভিতর সার আছে। তার ভিতর ঈশ্বরের শক্তি আছে। আবার যে ভাল গায়, ভাল বাজায়, কোন একটা বিদ্যা খুব ভালরকম জানে, তার ভিতরেও সার আছে (Kathamrita)। ঈশ্বরের শক্তি আছে। এটি গীতার মত। চন্ডীতে আছে, যে খুব সুন্দর, তার ভিতরও সার আছে, ঈশ্বরের শক্তি আছে। (বিজয়ের প্রতি) আহা! কেদারের কি স্বভাব হয়েছে! এসেই কাঁদে! চোখ দুটি সর্বদাই যেন ছানাবড়া হয়ে আছে।”

    “বিজয়—সেখানে কেবল আপনার কথা, আর তিনি আপনার কাছে আসবার জন্য ব্যাকুল!

    কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর গাত্রোত্থান করিলেন। ব্রাহ্মভক্তেরা নমস্কার করিলেন। তিনিও তাঁহাদিগকে নমস্কার করিলেন। ঠাকুর (Ramakrishna) গাড়িতে উঠিলেন। অধরের বাড়িতে প্রতিমাদর্শন করিতে যাইতেছেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 299: “কেউ কেউ সাপের স্বভাব, তুমি জান না, তোমায় ছোবল দেবে, সামলাতে অনেক বিচার আনতে হয়”

    Ramakrishna 299: “কেউ কেউ সাপের স্বভাব, তুমি জান না, তোমায় ছোবল দেবে, সামলাতে অনেক বিচার আনতে হয়”

    সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে শ্রীরামকৃষ্ণ— দুর্গাপূজা দিবসে

    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে সেপ্টেম্বর

    বিজয় গোস্বামীর প্রতি উপদেশ

    বিজয় তখনও সাধারণ ব্রাহ্মসমাজভুক্ত, ওই ব্রাহ্মসমাজে একজন বেতনভোগী আচার্য। আজকাল তিনি ব্রাহ্মসমাজের সব নিয়ম মানিয়া চলিতে পারিতেছেন না। সাকারবাদীদের সঙ্গেও মিশিতেছেন। এই সকল লইয়া সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের কর্তৃপক্ষীয়দের সঙ্গে তাঁহার মনান্তর হইতেছে। সমাজের ব্রাহ্মভক্তদের (Ramakrishna) অনেকেই তাঁহার উপর অসন্তুষ্ট হইয়াছেন। ঠাকুর হঠাৎ বিজয়কে লক্ষ্য করিয়া আবার বলিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বিজয়ের প্রতি সহাস্যে)—তুমি সাকারবাদীদের সঙ্গে মেশো বলে তোমার নাকি বড় নিন্দা হয়েছে? যে ভগবানের ভক্ত তার কূটস্থ বুদ্ধি হওয়া চাই। যেমন কামারশালের নাই। হাতুড়ির ঘা অনবরত পড়ছে, তবু নির্বিকার। অসৎ লোকে তোমাকে কত কি বলবে, নিন্দা করবে! তুমি যদি আন্তরিক ভগবানকে চাও, তুমি সব সহ্য করবে। দুষ্টলোকের মধ্যে থেকে কি আর ঈশ্বরচিন্তা হয় না? দেখ না, ঋষিরা বনের মধ্যে ঈশ্বরকে চিন্তা করতো। চারিদিকে বাঘ, ভাল্লুক, নানা হিংস্র জন্তু। অসৎ লোকের, বাঘ ভাল্লুকের স্বভাব (Kathamrita); তেড়ে এসে অনিষ্ট করবে।

    “এই কয়েকটির কাছ থেকে সাবধান হতে হয়! প্রথম, বড়মানুষ (Ramakrishna)। টাকা লোকজন অনেক, মনে করলে তোমার অনিষ্ট করতে পারে; তাদের কাছে সাবধানে কথা কইতে হয়। হয়তো যা বলে, সায় দিয়ে যেতে হয়! তারপর কুকুর। যখন কুকুর তেড়ে আসে কি ঘেউ ঘেউ করে, তখন দাঁড়িয়ে মুখের আওয়াজ করে তাকে ঠাণ্ডা করতে হয়। তারপর ষাঁড়। গুঁতুতে এলে, তাকেও মুখের আওয়াজ করে ঠাণ্ডা করতে হয়। তারপর মাতাল। যদি রাগিয়ে দাও, তাহলে বলবে, তোর চৌদ্দপুরুষ, তোর হেন তেন,—বলে গালাগালি দিবে। তাকে বলতে হয়, কি খুড়ো কেমন আছ? তাহলে খুব খুশি হয়ে তোমার কাছে বসে তামাক খাবে।

    “অসৎ লোক দেখলে আমি সাবধান হয়ে যাই। যদি কেউ এসে বলে, ওহে হুঁকোটুকো আছে? আমি বলি আছে।

    “কেউ কেউ সাপের স্বভাব। তুমি জান না, তোমায় ছোবল দেবে। ছোবল সামলাতে অনেক বিচার আনতে হয়। তা না হলে হয়তো তোমার এমন রাগ হয়ে গেল যে, তার আবার উলটে অনিষ্ট করতে ইচ্ছা হয়। তবে মাঝে মাঝে সৎসঙ্গ বড় দরকার। সৎসঙ্গ কল্লে তবে সদসৎ বিচার আসে।”

    বিজয়—অবসর নাই (Kathamrita), এখানে কাজে আবদ্ধ থাকি।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তোমরা আচার্য; অন্যের ছুটি হয়, কিন্তু আচার্যের ছুটি নাই। নায়েব একধার শাসিত কল্লে পর, কমিদার আর-একধার শাসন করতে তাকে পাঠান। তাই তোমার ছুটি নাই। (সকলের হাস্য)

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 298: “সবুজ গিরগিটি দেখে এলুম, জানোয়ারটি কখন লাল, সবুজ, কখন হলদে, আবার কখন কোন রঙ থাকে না ”

    Ramakrishna 298: “সবুজ গিরগিটি দেখে এলুম, জানোয়ারটি কখন লাল, সবুজ, কখন হলদে, আবার কখন কোন রঙ থাকে না ”

    সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে শ্রীরামকৃষ্ণ— দুর্গাপূজা দিবসে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে সেপ্টেম্বর

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সাধারণ ব্রাহ্মসমাজমন্দিরে

    মাস্টার, হাজরা, বিজয়, শিবনাথ, কেদার 

    সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ ও সাইনর্বোড সাকার-নিরাকার—সমন্বয় 

    শ্রীরামকৃষ্ণে (বিজয়কে, সহাস্যে)—শুনলাম, এখানে নাকি সাইনবোর্ড আছে। অন্য মতের লোক নাকি এখানে আসবার জো নাই! নরেন্দ্র বললে, সমাজে গিয়ে কাজ নাই, শিবনাথের (Ramakrishna) বাড়িতে যেও।

    “আমি বলি সকলেই তাঁকে ডাকছে। দ্বেষাদ্বেষীর দরকার নাই। কেউ বলছে সাকার, কেউ বলছে নিরাকার। আমি বলি, যার সাকারে বিশ্বাস, সে সাকারই চিন্তা করুক। যার নিরাকারে বিশ্বাস, সে নিরাকারেই চিন্তা করুক। তবে এই লা যে, মতুয়ার বুদ্ধি (Dogmatism) ভাল নয়, অর্থাৎ আমার ধর্ম ঠিক আর সকলের ভুল। আমার ধর্ম ঠিক; আর ওদের ধর্ম ঠিক কি ভুল, সত্য কি মিথ্যা; এ আমি বুঝতে পাচ্ছিনে—এ-সব ভাল। কেননা ঈশ্বরের (Ramakrishna)  সাক্ষাৎকার না করলে তাঁর স্বরূপ বুঝা যায় না। কবীর বলত, ‘সাকার আমার মা, নিরাকার আমার বাপ। কাকো নিন্দো, কাকো বন্দো, দোনো পাল্লা ভারী।’

    “হিন্দু, মুসলামান, খ্রীষ্টান, শাক্ত, শৈব, বৈষ্ণব, ঋষিদের কালের ব্রহ্মজ্ঞানী ও ইদানীং ব্রহ্মজ্ঞানী তোমরা—সকলেই এক বস্তুকে চাহিছো। তবে যার যা পেটে সয়, মা সেইরূপ ব্যবস্থা করেছেন। মা যদি বাড়িতে মাছ আনেন, আর পাঁচটি ছেলে থাকে, সকলকেই পোলাও কালিয়া করে দেন না। সকলের পেট সমান নয়। কারু জন্য মাছের ঝোলের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু মা সকলকেই সমান ভালবাসেন (Kathamrita)।

    “আমার ভাব কি জানো? আমি মাছ সবরকম খেতে ভালবাসি। আমার মেয়েলি স্বভাব! (সকলের হাস্য) আমি মাছ ভাজা, হলুদ দিয়ে মাছ, টকের মাছ, বাটি-চচ্চড়ি—এ-সব তাতেই আছি। আবার মুড়িঘন্টোতেও আছে, কালিয়া পোলোয়াতেও আছি। (সকলের হাস্য)

    “কি জানো? দেশ-কাল-পাত্র ভেদে ঈশ্বর নানা ধর্ম করেছেন। কিন্তু সব মতই পথ, মত কিছু ঈশ্বর নয়। তবে আন্তরিক ভক্তি করে একটা মত আশ্রয় কল্লে তাঁর কাছে পোঁছানো যায়। যদি কোন মত আশ্রয় করে তাতে ভুল থাকে আন্তরিক হলে তিনি সে ভুল শুধরিয়ে দেন। যদি কেউ আন্তরিক জগন্নাথদর্শনে বেরোয়, আর ভুলে দক্ষিণদিকে না গিয়ে উত্তরদিকে যায়, তাহলে অবশ্য পথে কেউ বলে দেয় ওহে, ওদিকে যেও না—দক্ষিণদিকে যাও। সে ব্যক্তি কখনও না কখনও জগন্নাথদর্শন করবে।

    “তবে অন্যের মত ভুল হয়েছে, এ-কথা আমাদের দরকার নাই। যাঁর জগৎ, তিনি ভাবছেন। আমাদের কর্তব্য, কিসে জো সো করে জগন্নাথদর্শন হয়। তা তোমাদের মতটি বেশ তো। তাঁকে নিরাকার বলছ (Kathamrita), এ তো বেশ। মিছরির রুটি সিধে করে খাও, আর আড় করে খাই, মিষ্টি লাগবে।

    “তবে মতুয়ার বুদ্ধি ভাল নয়। তুমি বহুরূপির গল্প শুনেছ। একজন বাহ্যে কত্তে গিয়ে গাছের উপর বহুরূপী দেখেছিল, বন্ধুদের কাছে এসে বললে, আমি একটি লাল গিরগিটি দেখে এলুম। তার বিশ্বাস, একবারে পাকা লাল। আর-একজন সেই গাছতলা থেকে এসে বললে যে আমি একটি সবুজ গিরগিটি দেখে এলুম। তার বিশ্বাস একেবারে পাকা সবুজ। কিন্তু যে গাছতলায় বাস কত্তো, সে এসে বললে, তোমরা যা বলছো (Kathamrita) সব ঠিক তবে জানোয়ারটি কখন লাল কখন সবুজ, কখন হলদে, আবার কখন কোন রঙ থাকে না।

    “বেদে তাঁকে (Ramakrishna) সগুণ নির্গুণ দুই বলা হয়েছে। তোমরা নিরাকার বলছো। একঘেয়ে। তা হোক। একটা ঠিক জানলে, অন্যটাও জানা যায়। তিনিই জানিয়ে দেন। তোমাদের এখানে যে আসে, সে এঁকেও জানে ওঁকেও জানে। ” (দুই-একজন ব্রাহ্মভক্তের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ)

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 297: “ঠাকুর অধরের বাড়ি প্রতিমাদর্শন করিবেন ও আনন্দময়ীর আনন্দোৎসবে যোগদান করিবেন”

    Ramakrishna 297: “ঠাকুর অধরের বাড়ি প্রতিমাদর্শন করিবেন ও আনন্দময়ীর আনন্দোৎসবে যোগদান করিবেন”

    সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে শ্রীরামকৃষ্ণ— দুর্গাপূজা দিবসে

    প্রথম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২৬শে সেপ্টেম্বর

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সাধারণ ব্রাহ্মসমাজমন্দিরে

    মাস্টার, হাজরা, বিজয়, শিবনাথ, কেদার 

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) কলিকাতা নগরীতে আগমন করিয়াছেন। সপ্তমীপূজা, শুক্রবার, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দ। ঠাকুরের অনেকগুলি কাজ। শারদীয় মহোৎসব — রাজধানীমধ্যে হিন্দুর প্রায় ঘরে ঘরে আজ মায়ের সপ্তমী পূজা আরম্ভ। ঠাকুর অধরের বাড়ি প্রতিমাদর্শন করিবেন ও আনন্দময়ীর আনন্দোৎসবে যোগদান করিবেন। আর একটি সাধ, শ্রীযুক্ত শিবনাথকে দর্শন (Kathamrita) করিবেন।

    বেলা আন্দাজ দুই প্রহর হইতে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের ফুটপাথের উপর একটি ছাতি হাতে করিয়া মাস্টার পাদচারণ করিতেছেন। একটা বাজিল, দুইটা বাজিল, ঠাকুর আসিলেন না। শ্রীযুক্ত মহলানবিশের ডিস্পেনসারির ধাপে মাঝে মাঝে বসিতেছেন; দুর্গাপূজা (Ramakrishna)  উপলক্ষে ছেলেদের আনন্দ ও আবালবৃদ্ধ সকলের ব্যস্তভাব দেখিতেছেন।

    বেলা তিনটা বাজিল। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুরের গাড়ি আসিয়া উপস্থিত। গাড়ি হইতে অবতরণ করিয়াই সমাজমন্দির দৃষ্টে ঠাকুর করজোড়ে প্রণাম করিলেন। সঙ্গে হাজরা ও আর দুই-একটি ভক্ত। মাস্টার ঠাকুরের দর্শন লাভ করিয়া তাঁহার চরণবন্দনা করিলেন। ঠাকুর বলিলেন, “আমি শিবনাথের বাড়ি যাইব।” ঠাকুরের আগমনবার্তা শুনিয়া দেখিতে দেখিতে কয়েকটি ব্রাহ্মভক্ত আসিয়া জুটিলেন। তাঁহারা ঠাকুরকে সঙ্গে করিয়া ব্রাহ্মপাড়ার মধ্যে শিবনাথের বাড়ির দ্বারদেশে তাঁহাকে লইয়া গেলেন। শিবনাথ বাড়িতে নাই। কি হইবে? দেখিতে দেখিতে শ্রীযুক্ত বিজয় (গোস্বামী), শ্রীযুক্ত মহলানবিশ ইত্যাদি ব্রাহ্মসমাজের কর্তৃপক্ষেরা উপস্থিত হইলেন ও ঠাকুরকে অভ্যর্থনা করিয়া সমাজমন্দিরমধ্যে লইয়া গেলেন। ঠাকুর একটু বসুন—ইতিমধ্যে শিবনাথ আসিয়া (Kathamrita) পড়িলেও পড়িতে পারেন।

    ঠাকুর (Ramakrishna) আনন্দময়, সহাস্যবদনে আসন গ্রহণ করিলেন। বেদীর নিচে যে স্থানে সংকীর্তন হয়ে সেই স্থানে বসিবার আসন করিয়া দেওয়া হইল। বিজয়াদি অনেকগুলি ব্রাহ্মভক্ত সম্মুখে বসিলেন।

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 296: “হা কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! জ্ঞান কৃষ্ণ! প্রাণ কৃষ্ণ! মন কৃষ্ণ! আত্মা কৃষ্ণ! দেহ কৃষ্ণ! প্রাণ হে গোবিন্দ, মম জীবন!”

    Ramakrishna 296: “হা কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! জ্ঞান কৃষ্ণ! প্রাণ কৃষ্ণ! মন কৃষ্ণ! আত্মা কৃষ্ণ! দেহ কৃষ্ণ! প্রাণ হে গোবিন্দ, মম জীবন!”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    অষ্টম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    গৌরাঙ্গপ্রেমে মাতোয়ারা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ

    অভিনয় সমাপ্ত হইল। ঠাকুর (Ramakrishna) গাড়িতে উঠিতেছেন। একজন ভক্ত জিজ্ঞাসা করিলেন কেমন দেখলেন? ঠাকুর হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “আসল নকল এক দেখলাম।”

    গাড়ি মহেন্দ্র মুখুজ্জের কলে যাইতেছে। হঠাৎ ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হইলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে প্রেমভরে আপনা-আপনি বলিতেছেন, —

    “হা কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! জ্ঞান কৃষ্ণ! প্রাণ কৃষ্ণ! মন কৃষ্ণ! আত্মা কৃষ্ণ! দেহ কৃষ্ণ!” আবার বলিতেছেন, “প্রাণ হে গোবিন্দ, মম জীবন!”

    গাড়ি মুখুজ্জেদের কলে পৌঁছিল। অনেক যত্ন করিয়া মহেন্দ্র ঠাকুরকে খাওয়াইলেন। মণি কাছে বসিয়া। ঠাকুর সস্নেহে তাঁহাকে বলিতেছেন(Ramakrishna), তুমি কিছু খাও না। হাতে করিয়া মেঠাই প্রসাদ দিলেন।

    এইবার শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়িতে যাইতেছেন (Kathamrita)। গাড়িতে মহেন্দ্র মুখুজ্জে আরও দু-তিনটি ভক্ত। মহেন্দ্র খানিকটা এগিয়ে দেবেন। ঠাকুর আনন্দে যাইতেছেনও গান আরম্ভ করিলেন।

    গৌর নিতাই তোমরা দু ভাই।

    মণি সঙ্গে সঙ্গে গাইতেছেন।

    মহেন্দ্র তীর্থে যাইবেন। ঠাকুরের (Ramakrishna) সহিত সেই সব কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মহেন্দ্রের প্রতি, সহাস্যে) — প্রেমের অঙ্কুর না হতে হতে সব শুকিয়ে যাবে।

    “কিন্তু শীঘ্র এস। আহা অনেকদিন থেকে তোমার বাড়িতে যাব মনে করেছিলাম, তা একবার দেখা হল বেশ হল।”

    মহেন্দ্র—আজ্ঞা, জীবন সার্থক হল!

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সার্থক তো আছেনই। আপনার বাপও বেশ! সেদিন দেখলাম; অধ্যাত্মে বিশ্বাস।

    মহেন্দ্র—আজ্ঞা, কৃপা রাখবেন যেন ভক্তি হয়।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—তুমি খুব উদার সরল। উদার সরল না হলে ভগবানকে (Kathamrita) পাওয়া যায় না। কপটতা থেকে অনেক দূর।

    মহেন্দ্র শ্যামবাজারের কাছে বিদায় লইলেন। গাড়ি চলিতেছে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি)—যদু মল্লিক কি করলে?

    মাস্টার (স্বগত)—ঠাকুর (Kathamrita) সকলের মঙ্গলের জন্য ভাবিতেছেন। চৈতন্যদেবের ন্যায় ইনিও কি ভক্তি শিখাইতে দেহধারণ করিয়াছেন?

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 295: “কই কৃষ্ণ এল কুঞ্জে প্রাণ সই! দে রে কৃষ্ণ দে, কৃষ্ণ এনে দে, রাধা জানে কি গো কৃষ্ণ বই”

    Ramakrishna 295: “কই কৃষ্ণ এল কুঞ্জে প্রাণ সই! দে রে কৃষ্ণ দে, কৃষ্ণ এনে দে, রাধা জানে কি গো কৃষ্ণ বই”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    নাট্যালয়ে নিত্যানন্দবংশ ও শ্রীরামকৃষ্ণের উদ্দীপন

    মাস্টার, বাবুরাম, খড়দার নিত্যানন্দবংশের গোস্বামী 

    নবদ্বীপে নিত্যানন্দ (Ramakrishna) আসিয়াছেন, তিনি নিমাইকে খুঁজিতেছেন এমন সময় নিমাই-এর সহিত দেখা হইল। নিমাইও তাঁহাকে খুঁজিতেছিলেন (Kathamrita)। মিলনের পর নিমাই বলিতেছেন —

    সার্থক জীবন; সত্য মম ফলেছে স্বপন;
    লুকাইলে স্বপ্নে দেখা দিয়ে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারকে গদ্‌গদ স্বরে) — নিমাই বলছে, স্বপ্নে দেখেছি!

    শ্রীবাস ষড়্‌ভুজ দর্শন করছেন, আর স্তব করছেন।

    ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভাবাবিষ্ট হইয়া ষড়্‌ভুজ দর্শন করিতেছেন।

    গৌরাঙ্গের ঈশ্বর আবেশ হইয়াছে। তিনি অদ্বৈত, শ্রীবাস, হরিদাস ইত্যাদির সহিত ভাবে কথা কহিতেছেন।

    গৌরাঙ্গের ভাব বুঝিতে পারিয়া নিতাই গান গাইতেছেন:

                কই কৃষ্ণ এল কুঞ্জে প্রাণ সই!
    দে রে কৃষ্ণ দে, কৃষ্ণ এনে দে, রাধা জানে কি গো কৃষ্ণ বই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) গান শুনিতে শুনিতে সমাধিস্থ হইলেন। অনেকক্ষণ ওইভাবে রহিলেন। কনসার্ট চলিতে লাগিল। ঠাকুরের সমাধি ভঙ্গ হইল। ইতিমধ্যে খড়দার নিত্যানন্দ গোস্বামীর বংশের একটি বাবু আসিয়াছেন ও ঠাকুরের চেয়ারের পশ্চাতে দাঁড়াইয়া আছেন। বয়স ৩৪/৩৫ হইবে। ঠাকুর তাঁহাকে দেখিয়া আনন্দে ভাসিতে লাগিলেন। তাঁহার হাত ধরিয়া কত কথা কহিতেছেন। মাঝে মাঝে তাঁহাকে বলিতেছেন, “এখানে বসো না; তুমি এখানে থাকলে খুব উদ্দীপন (Kathamrita) হয়।” সস্নেহে তাহার হাত ধরিয়া যেন খেলা করিতেছেন। সস্নেহে মুখে হাত দিয়া আদর করিতেছেন।

    গোস্বামী চলিয়া গেলে মাস্টারকে বলিতেছেন, “ও বড় পণ্ডিত, বাপ বড় ভক্ত। আমি খড়দার শ্যামসুন্দর দেখতে গেলে, যে ভোগ একশ টাকা দিলে পাওয়া যায় না সেই ভোগ এনে আমায় খাওয়ায়।

    “এর লক্ষণ বড় ভাল; একটু নেড়েচেড়ে দিলে চৈতন্য হয়। ওকে দেখতে দেখতে বড় উদ্দীপন হয়। আর একটু হলে আমি দাঁড়িয়া পড়তুম।”

    গোস্বামীকে দেখিতে দেখিতে আর একটু হলে ঠাকুরের ভাবসমাধি হইত; এই কথা বলিতেছেন।

    যবনিকা উঠিয়া গেল। রাজপথে নিত্যানন্দ মাথায় হাত দিয়া রক্তস্রোত বন্ধ করিতেছেন। মাধাই কলসির কানা ছুঁড়িয়া মারিয়াছেন; নিতাইয়ের ভ্রূক্ষেপ নাই। গৌরপ্রেমে গরগর মাতোয়ারা! ঠাকুর ভাবাবিষ্ট। দেখিতেছেন (Kathamrita), নিতাই জগাই মাধাইকে কোল দিবেন। নিতাই বলিতেছেন:

    প্রাণ ভরে আয় হরি বলি, নেচে আয় জগাই মাধাই।
    মেরেছ বেশ করেছ, হরি বলে নাচ ভাই ॥
    বলরে হরিবোল; প্রেমিক হরি প্রেমে দিবে কোল।
    তোল রে তোল হরিনামের রোল ॥
    পাওনি প্রেমের স্বাদ, ওরে হরি বলে কাঁদ, হেরবি হৃদয় চাঁদ।
    ওরে প্রেমে তোদের নাম বিলাব, প্রেমে নিতাই ডাকে তাই ॥

    এইবার নিমাই শচীকে সন্ন্যাসের কথা বলিতেছেন।

    শচী মূর্ছিতা হইলেন। মূর্ছা দেখিয়া দর্শকবৃন্দ অনেকে হাহাকার করিতেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) অণুমাত্র বিচলিত না হইয়া একদৃষ্টে দেখিতেছেন; কেবল নয়নের কোণে একবিন্দু জল দেখা দিয়াছে!

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

  • Ramakrishna 294: “কই প্রভু কই মম কৃষ্ণভক্তি হলো, অধম জনম বৃথা কেটে গেল”

    Ramakrishna 294: “কই প্রভু কই মম কৃষ্ণভক্তি হলো, অধম জনম বৃথা কেটে গেল”

    শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভক্তসঙ্গে ও কলিকাতায় চৈতন্যলীলা-দর্শন

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ১৮৮৪, ২১শে সেপ্টেম্বর

    চৈতন্যলীলাদর্শন—গৌরপ্রেমে মাতোয়ারা শ্রীরামকৃষ্ণ

    নিমাই বাটীতে আছেন। শ্রীবাস (Ramakrishna) দেখা করিতে আসিয়াছেন। আগে শচির সঙ্গে দেখা হইল। শচী কাঁদিতে লাগিলেন। বলিলেন, পুত্র আমার গৃহধর্মে মন দেয় না।

          ‘যে অবধি গেছে বিশ্বরূপ,
    প্রাণ মম কাঁপে নিরন্তর, পাছে হয় নিমাই সন্ন্যাসী।’

    এমন সময় নিমাই আসিতেছেন। শচী শ্রীবাসকে বলিতেছেন —

          ‘আহা দেখ দেখ পাগলের প্রায়,
    আঁখিনীরে বুক ভেসে যায়, বল বল এ ভাব কেমনে যাবে?’

    নিমাই শ্রীবাসকে দেখিয়া তাঁহার পায়ে জড়াইয়া কাঁদিতেছেন—আর বলিতেছেন —

    কই প্রভু কই মম কৃষ্ণভক্তি হলো,
    অধম জনম বৃথা কেটে গেল।
    বল প্রভু, কৃষ্ণ কই, কৃষ্ণ কোথা পাব,
    দেহ পদধূলি বনমালী যেন পাই।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) মাস্টারের দিকে তাকাইয়া কথা কহিতে যাইতেছেন, কিন্তু পারিতেছেন না। গদগদ স্বর! গণ্ডদেশ নয়নজলে ভাসিয়া গেল। একদৃষ্টে দেখিতেছেন, নিমাই শ্রীবাসের পা জড়াইয়া রহিয়াছেন। আর বলিতেছেন, ‘কই প্রভু কৃষ্ণভক্তি তো হল না।’

    এদিকে নিমাই পড়ুয়াদের আর পড়াইতে পারিতেছেন না। গঙ্গাদাসের কাছে নিমাই পড়িয়াছিলেন। তিনি নিমাইকে বুঝাইতে আসিয়াছেন। শ্রীবাসকে বলিলেন (Kathamrita) — শ্রীবাস ঠাকুর, আমরাও ব্রাহ্মণ, বিষ্ণুপূজা করে থাকি, আপনারা মিলে দেখছি সংসারটা ছারখার করলেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারকে)—এ সংসারীর শিক্ষা—এও কর, ওও কর। সংসারী যখন শিক্ষা দেয়, তখন দুদিক রাখতে বলে।

    মাস্টার—আজ্ঞা, হাঁ।

    গঙ্গাদাস নিমাইকে আবার বুঝাইতেছেন—‘ওহে নিমাই, তোমার তো শাস্ত্রজ্ঞান হয়েছে? তুমি আমার সঙ্গে তর্ক কর। সংসারধর্ম অপেক্ষা কোন্ ধর্ম প্রধান, আমায় বোঝাও। তুমি গৃহী, গৃহীর মতো আচার না করে অন্য আচার কেন কর?’

    শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারকে)—দেখলে? দুইদিক রাখতে বলছে!

    মাস্টার—আজ্ঞা, হাঁ।

    নিমাই (Ramakrishna) বলিলেন, আমি ইচ্ছা করে সংসারধর্ম উপেক্ষা করি নাই; আমার বরং ইচ্ছা যাতে সব বজায় থাকে। কিন্তু —

    প্রভু কোন্‌ হেতু কিছু নাহি জানি,
    প্রাণ টানে কি করি কি করি,
    ভাবি কুলে রই, কুলে আর রহিতে না পারি,
    প্রাণ ধায় বুঝালে না ফেরে,
    সদা চায় ঝাঁপ দিতে অকুল পাথারে।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Kathamrita)—আহা!

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

    আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

    আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

    আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

LinkedIn
Share