Tag: ramakrishna

ramakrishna

  • Ramakrishna 46: “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

    Ramakrishna 46: “তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?”

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) এখনও দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন কেন? মূলমন্ত্র করে জপিতেছেন; জপিতে জপিতে ভাবাবিষ্ট হইয়াছেন। অহেতুক কৃপাসিন্ধু! বুঝি যাইবার সময় মহাত্মা বিদ্যাসাগরের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের জন্য মার কাছে প্রার্থনা করিতেছেন।

    ঠাকুর ভক্তসঙ্গে সিঁড়ি দিয়া নামিতেছেন। একজন ভক্তের হাত ধরিয়া আছেন। বিদ্যাসাগর স্বজনসঙ্গে আগে আগে যাইতেছেন—হাতে বাতি, পথ দেখাইয়া আগে আগে যাইতেছেন। শ্রাবণ কৃষ্ণষষ্ঠী, এখনও চাঁদ উঠে নাই। তমসাবৃত উদ্যানভূমির মধ্য দিয়া সকলে বাতির ক্ষীনালোক লক্ষ্য করিয়া ফটকের দিকে আসিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভক্তসঙ্গে ফটকের কাছে যাই পৌঁছিলেন, সকলে একটি সুন্দর দৃশ্য দেখিয়া দাঁড়িয়া পড়িল। সম্মুখে বাঙালীর পরিচ্ছদধারী একটি গৌরবর্ণ শ্মশ্রুধারী পুরুষ, বয়স আন্দাজ ৩৬/৩৭, মাথায় শিখদিগের ন্যায় শুভ্র পাগড়ি, পরনে কাপড়, মোজা, জামা। চাদর নাই। তাঁহারা দেখিলেন, পুরুষটি শ্রীরামকৃষ্ণকে দর্শন করিবামাত্র মাটিতে উষ্ণীষসমেত মস্তক অবলুণ্ঠিত করিয়া ভূমিষ্ঠ হইয়া রহিছেন। তিনি দাঁড়াইলে ঠাকুর বলিলেন, বলরাম! তুমি? এত রাত্রে?

    বলরাম (সহাস্যে)—আমি অনেকক্ষণ এসেছি, এখানে দাঁড়িয়েছিলাম।

    শ্রীরামকৃষ্ণ—ভিতরে কেন যাও নাই?

    বলরাম–আজ্ঞা, সকলে আপনার কথাবার্তা শুনিছেন, মাঝে গিয়া বিরক্ত করা।

    (এই বলিয়া বলরাম হাসিতে লাগিলেন।)

    ঠাকুর (Ramakrishna) ভক্তসঙ্গে গাড়িতে উঠিতেছেন।

    বিদ্যাসাগর (মাস্টারের প্রতি মৃদুস্বরে)—ভাড়া কি দেব?

    মাস্টার—আজ্ঞা না, ও হয়ে গেছে।

    বিদ্যাসাগর ও অন্যান্য সকলে ঠাকুরকে প্রণাম করিলেন।

    গাড়ি উত্তরাভিমুখে হাঁকাইয়া দিল। গাড়ি দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে যাইবে। এখনও সকলে গাড়ির দিকে তাকাইয়া দাঁড়াইয়া আছেন। বুঝি ভাবিতেছেন, এ মহাপুরুষ কে? যিনি ঈশ্বরকে ভালবাসেন, আর যিনি জীবের ঘরে ঘরে ফিরছেন, আর বলছেন, ঈশ্বরকে ভালবাসাই জীবনের উদ্দেশ্য।

     

    আরও পড়ুনঃ“গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “পাপ করলে তার ফল পেতে হবে! লঙ্কা খেলে তার ঝাল লাগবে না?”

    আরও পড়ুনঃ “ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না, সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 45: “আমরা জেলেডিঙি, খাল বিল আবার বড় নদীতেও যেতে পারি, কিন্তু আপনি জাহাজ!”

    Ramakrishna 45: “আমরা জেলেডিঙি, খাল বিল আবার বড় নদীতেও যেতে পারি, কিন্তু আপনি জাহাজ!”

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু

    বিদ্যাসাগর (সহাস্যে)—তা আপনি বলতে পারেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (সহাস্যে)—হাঁ গো, অনেক বাবু জানে না চাকর-বাকরের নাম (সকলের হাস্য)—বা বাড়ির কোথায় কি দামী জিনিস আছে।

    কথাবার্তা শুনিয়া সকলে আনন্দিত। সকলে একটু চুপ করিয়াছেন। ঠাকুর আবার বিদ্যাসগারকে সম্বোধন করিয়া কথা কহিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—একবার বাগান দেখতে যাবেন, রাসমণির বাগান। ভারী চমৎকার জায়গা।

    বিদ্যাসাগর-যাব বই কি। আপনি এলেন আর আমি যাব না!

    শ্রীরামকৃষ্ণ—আমার কাছে? ছি! ছি!

    বিদ্যাসাগর—সে কি! এমন কথা বললেন কেন? আমায় বুঝিয়ে দিন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (সহাস্যে)—আমরা জেলেডিঙি। (সকলের হাস্য) খাল বিল আবার বড় নদীতেও যেতে পারি। কিন্তু আপনি জাহাজ, কি জানি যেতে গিয়ে চড়ায় পাছে লেগে যায়। (সকলের হাস্য)

    বিদ্যাসাগর সহাস্যবদন, চুপ করিয়া আছেন। ঠাকুর হাসিতেছেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্য)—তার মধ্যে এ-সময় জাহাজও যেতে পারে।

    বিদ্যাসাগর (সহাস্য)—হাঁ, এটি বর্ষাকাল বটে! (সকলের হাস্য)

    মাস্টার (স্বগতঃ)—নবানুরাগের বর্ষা, নবানুরাগের সময় মান-অপমান বোধ থাকে না বটে!

    ঠাকুর গাত্রোত্থান করিলেন ভক্তসঙ্গে। বিদ্যাসাগর আত্মীয়গণসঙ্গে দাঁড়াইয়াছেন। ঠাকুরকে গাড়িতে তুলিয়া দিবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) এখনও দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন কেন? মূলমন্ত্র করে জপিতেছেন; জপিতে জপিতে ভাববিষ্ট হইয়াছেন। অহেতুক কৃপাসিন্ধু! বুঝি যাইবার সময় মহাত্মা বিদ্যাসাগরের আধ্যাত্মিক মঙ্গলের জন্য মার কাছে প্রার্থনা করিতেছেন।

    ঠাকুর ভক্তসঙ্গে সিঁড়ি দিয়া নামিতেছেন। একজন ভক্তের হাত ধরিয়া আছেন। বিদ্যাসাগর স্বজনসঙ্গে আগে আগে যাইতেছেন—হাতে বাতি, পথ দেখাইয়া আগে আগে যাইতেছেন। শ্রাবণ কৃষ্ণষষ্ঠী, এখনও চাঁদ উঠে নাই। তমসাবৃত উদ্যানভূমির মধ্য দিয়া সকলে বাতির ক্ষীনালোকে লক্ষ্য করিয়া ফটকের দিকে আসিতেছেন।

     আরও পড়ুনঃ “মৃত্যুকে সর্বদা মনে রাখা উচিত, মরবার পর কিছুই থাকবে না।”

    আরও পড়ুনঃ“গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ “পাপ করলে তার ফল পেতে হবে! লঙ্কা খেলে তার ঝাল লাগবে না?”

    আরও পড়ুনঃ “ব্যাকুলতা না এলে কিছুই হয় না, সাধুসঙ্গ করতে করতে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 44: “নিষ্কামকর্ম করতে পারলে ঈশ্বরে ভালবাসা হয়, ক্রমে তাঁর কৃপায় তাঁকে পাওয়া যায়”

    Ramakrishna 44: “নিষ্কামকর্ম করতে পারলে ঈশ্বরে ভালবাসা হয়, ক্রমে তাঁর কৃপায় তাঁকে পাওয়া যায়”

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্য—The End of life

                                                                                                                    নিষ্কামকর্মের উদ্দেশ্যে-ঈশ্বরদর্শন

    অন্তরে সোনা আছে, এখনও খবর পাও নাই। একটু মাটি চাপা আছে। যদি একবার সন্ধান পাও, অন্য কাজ কমে যাবে। গৃহস্থের বউ-এর ছেলে হলে ছেলেটিকেই নিয়ে থাকে, ওইটিকে নিয়েই নাড়াচাড়া; আর সংসারের কাজ শাশুড়ী করতে দেয় না। (সকলের হাস্য)

    আরও এগিয়ে যাও। কাঠুরে কাঠ কাটতে গিছিল; ব্রহ্মচারী বললে, এগিয়ে যাও। এগিয়ে গিয়ে দেখে চন্দনগাছ। আবার কিছুদিন পরে ভাবলে, তিনি এগিয়ে যেতে বলেছিলেন, চন্দনগাছ পর্যন্ত তো যেতে বলেন নাই। এগিয়ে গিয়ে দেখে রূপার খনি। আবার কিছুদিন পরে এগিয়ে গিয়ে দেখে, সোনার খনি। তারপর কেবল হীরা মাণিক। এই সব লয়ে একেবারে আণ্ডিল হয়ে গেল।

    নিষ্কামকর্ম করতে পারলে ঈশ্বরে Ramakrishna) ভালবাসা হয়, ক্রমে তাঁর কৃপায় তাঁকে পাওয়া যায়। ঈশ্বরকে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে কথা কওয়া যায়, যেমন আমি তোমার সঙ্গে কথা কচ্ছি। (সকলে নিঃশব্দ)   

    সপ্তম পরিচ্ছেদ

    ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু

    সকলে অবাক ও নিস্তব্ধ হইয়া এই সকল কথা শুনতেছেন। যেমন সাক্ষাৎ বাগ্বাদিনী শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) জিহ্বাতে অবতীর্ণ হইয়া বিদ্যাসাগরকে উপলক্ষ করিয়া জীবের মঙ্গলের জন্য কথা বলিতেছেন। রাত্রি হইতেছে; নয়টা বাজে। ঠাকুর এইবার বিদায় গ্রহণ করিবেন।

    শ্রীরামকৃষ্ণ (বিদ্যাসাগরের প্রতি সহাস্যে)—এ-যা বললুম, বলা বাহুল্য আপনি সব জানেন—তবে খপর নাই! (সকলের হাস্য) বরুণের ভাণ্ডারে কত কি রত্ন আছে! বরুণ রাজার খপর নাই!

    আরও পড়ুনঃ “মহাকাল জেনেছেন কালীর মর্ম, অন্য কেবা জানে তেমন”

    আরও পড়ুনঃ“এই স্থানে নরেন্দ্রের গান ঠাকুর প্রথমে শুনেন ও তাঁহাকে দক্ষিণেশ্বরে যাইতে বলেন”

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 43: “যদি দক্ষিণে হাওয়া আপনি আসে, পাখা রেখে দেওয়া যায়, আর পাখার কি দরকার?”

    Ramakrishna 43: “যদি দক্ষিণে হাওয়া আপনি আসে, পাখা রেখে দেওয়া যায়, আর পাখার কি দরকার?”

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্য—The End of life

    চিত্ত তদগত হওয়া, তাঁকে খুব ভালবাসা। সুধাহ্রদ কিনা অমৃতের হ্রদ। ওতে ডুবলে মানুষ মরে না। অমর হয়। কেউ কেউ মনে করে, বেশি ঈশ্বর ঈশ্বর (Ramakrishna) করলে মাথা খারাপ হয়ে যায়। তা নয়। এ-যে সুধার হ্রদ! অমৃতের সাগর। বেদে তাঁকে অমৃত বলেছে, এতে ডুবে গেলে মরে না—অমর হয়।

    নিষ্কামকর্ম বা কর্মযোগ ও জগতের উপকার

    পূজা, হোম, যাগ কিছুই কিছু নয়। যদি তাঁর উপর ভালবাসা আসে, তাহলে আর এ-সব কর্মের বেশি দরকার নাই। যতক্ষণ হাওয়া পাওয়া না যায়, ততক্ষণই পাখার দরকার, যদি দক্ষিণে হাওয়া আপনি আসে, পাখা রেখে দেওয়া যায়। আর পাখার কি দরকার?

    তুমি যে-সব কর্ম করছ, এ-সব সৎকর্ম। যদি আমি কর্তা এই অহংকার ত্যাগ করে নিস্কামভাবে করতে পার, তাহলে খুব ভাল। এই নিস্কামকর্ম করতে করতে ঈশ্বরেতে (Ramakrishna) ভক্তি ভালবাসা আসে। এইরূপ নিস্কামকর্ম করতে করতে ঈশ্বরলাভ হয়।

    কিন্তু যত তাঁর উপর ভক্তি ভালবাসা আসবে, ততই তোমার কর্ম কমে যাবে। গৃহস্থের বউ, পেটে যখন ছেলে হয়—শাশুড়ী তার কর্ম কমিয়ে দেয়। যত মাস বাড়ে, শাশুড়ী কর্ম কমায়। দশমাস হলে আপদে কর্ম করতে দেয় না, পাছে ছেলের কোন হানি হয়, প্রসবের কোন ব্যাঘাত হয়। (হাস্য) তুমি যে-সব কর্ম করছ এতে তোমার নিজের উপকার। নিস্কামভাবে কর্ম করতে পারলে চিত্তশুদ্ধি হবে। ঈশ্বরের (Ramakrishna) উপর তোমার ভালবাসা আসবে। ভালবাসা এলেই তাঁকে লাভ করতে পারবে। জগতের উপকার মানুষ করে না, তিনিই করেছেন, যিনি চন্দ্র-সূর্য করেছেন, যিনি মা-বাপের স্নেহ, যিনি মহতের ভিতর দিয়া, যিনি সাধু-ভক্তের ভিতর ভক্তি দিয়েছেন। যে-লোক কামনাশূন্য হয়ে কর্ম করবে সে নিজেরই মঙ্গল করবে।

    আরও পড়ুন:“ঠাকুর প্রকৃতিস্থ হইলেন, দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া আবার সহাস্যে কথা কহিতেছেন”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

    আরও পড়ুনঃ“বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 42: “ঠাকুর প্রকৃতিস্থ হইলেন, দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া আবার সহাস্যে কথা কহিতেছেন”

    Ramakrishna 42: “ঠাকুর প্রকৃতিস্থ হইলেন, দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া আবার সহাস্যে কথা কহিতেছেন”

    ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্য—The End of life

    ঠাকুর সমাধি মন্দিরে

    গান গাইতে গাইতে ঠাকুর সমাধিস্থ হইয়াছেন! হাত অঞ্জলিবদ্ধ! দেহ উন্নত ও স্থির! নেত্রদ্বয় স্পন্দনহীন! সেই বেঞ্চের উপর পশ্চিমাস্য হইয়া পা ঝুলাইয়া বসিয়া আছেন। সকলে উদগ্রীব হইয়া এই অদ্ভুত অবস্থা দেখিতেছেন। পণ্ডিত বিদ্যাসাগরও নিস্তব্ধ হইয়া একদৃষ্টে দেখিতেছেন।

    ঠাকুর (Ramakrishna) প্রকৃতিস্থ হইলেন। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া আবার সহাস্যে কথা কহিতেছেন।–ভাব ভক্তি, এর মানে-তাঁকে ভালবাসা। যিনিই ব্রহ্ম তাঁকেই মা বলে ডাকছে।

    প্রসাদ বলে মাতৃভাবে আমি তত্ত্ব করি যাঁরে।

    সেটা চাতরে কি ভাঙব হাঁড়ি, বোঝ না রে মন ঠারে ঠারে।।

    রামপ্রসাদ (Ramakrishna) মনকে বলছে—ঠারে ঠারে বুঝতে। এই বুঝতে বলছে যে, বেদে যাঁকে ব্রহ্ম বলেছে—তাঁকেই আমি মা বলে ডাকছি। যিনিই নির্গুণ, তিনিই সগুণ, যিনি ব্রহ্ম, তিনি শক্তি। যখন নিস্ক্রিয় বলে বোধ হয়, তখন তাঁকে ব্রহ্ম বলি। যখন ভাবি সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় করছেন, তখন তাঁকে আদ্যাশক্তি বলি, কালী বলি।

    ব্রহ্ম আর শক্তি অভেদ। যেমন অগ্নি আর দাহিকাশক্তি, অগ্নি বললেই দাহিকাশক্তি বুঝা যায়; দাহিকাশক্তি বললেই অগ্নি বুঝা যায়; একটিকে মানলেই আর একটিকে মানা হয়ে যায়।

    তাঁকেই মা বলে ডাকা হচ্ছে। মা বড় ভালবাসার জিনিস কিনা। ঈশ্বরকে (Ramakrishna)  ভালবাসতে পারলেই তাঁকে পাওয়া যায়। ভাব, ভক্তি, ভালবাসা আর বিশ্বাস। আর একটা গান শোনঃ

    উপায়-আগে বিশ্বাস-তারপর ভক্তি

    ভাবিলে ভাবের উদয় হয়।

    (ও সে) যেমন ভাব, তেমনি লাভ, মূল সে প্রত্যয়।।

    কালীপদ-সুধাহ্রদে, চিত্ত যদি রয় (যদি চিত্ত ডুবে রয়)।

    তবে পূজা, হোম, যাগযজ্ঞ, কিছুই কিছু নয়।।

    আরও পড়ুনঃ “কাপড়ের খুঁটটি খুলে দেখে যে শুধু রাম নাম লেখা একটি পাতা রয়েছে”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

    আরও পড়ুনঃ“বেঙাচির ল্যাজ খসলে জলেও থাকতে পারে, আবার ডাঙাতেও থাকতে পারে”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 41: “কাপড়ের খুঁটটি খুলে দেখে যে শুধু রাম নাম লেখা একটি পাতা রয়েছে”

    Ramakrishna 41: “কাপড়ের খুঁটটি খুলে দেখে যে শুধু রাম নাম লেখা একটি পাতা রয়েছে”

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্তিযোগের রহস্য—The Secret of Dualism

    বিশ্বাসের জোরঈশ্বরের বিশ্বাস মহাপাতক

    বিশ্বাস আর ভক্তি চাই—বিশ্বাসের কত জোর শুনঃ একজন লঙ্কা থেকে সমুদ্র পার হবে, বিভীষণ বললে, এই জিনিসটি কাপড়ের খুঁটে বেঁধে লও। তাহলে নির্বিঘ্নে চলে যাবে; জলের উপর দিয়ে চলে যেতে পারবে। কিন্তু খুলে দেখো না; খুলে দেখতে গেলেই ডুবে যাবে। সে লোকটা সমুদ্রের উপর দিয়ে বেশ চলে যাচ্ছিল। বিশ্বাসের এমন জোর। খানিক পথ গিয়ে ভাবছে, বিভীষণ এমন কি জিনিস বেঁধে দিলেন যে, জলের উপর দিয়ে চলে যেতে পাচ্ছি? এই বলে কাপড়ের খুঁটটি খুলে দেখে, যে শুধু রাম (Ramakrishna) নাম লেখা একটি পাতা রয়েছে। তখন সে ভাবলে, এঃ এই জিনিস! ভাবাও যা, অমনি ডুবে যাওয়া।

    কথায় বলে হনুমানের রামনামে এত বিশ্বাস যে, বিশ্বাসের গুণে সাগর লঙ্ঘন করলে! কিন্তু স্বয়ং রামের সাগর বাঁধতে হল!

    যদি তাঁতে বিশ্বাস থাকে, তাহলে পাপই করুক, আর মহাপাতক করুক, কিছুতেই ভয় নাই।

    এই বলিয়া ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) ভক্তের ভাব আরোপ করিয়া ভাবে মাতোয়ারা হইয়া বিশ্বাসের মাহাত্ম্য গাহিতেছেনঃ

    আমি দুর্গা দুর্গা বলে মা যদি মরি।

    আখের এ-দীনে, না তারো কেমনে জানা যাবে গো শঙ্করী।

     ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

    ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্যে—The End of life

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বিশ্বাস আর ভক্তি। তাঁকে ভক্তিতে সহজে পাওয়া যায়। তিনি ভাবের বিষয়।

    এ-কথা বলিতে বলিতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আবার গান ধরিলেনঃ

    মন কি তত্ত্ব কর তাঁরে, যেন উন্মত্ত আঁধার ঘরে।

    সে যে ভাবের বিষয় ভাব ব্যতীত, অভাবে কি ধরতে পারে।।

    অগ্রে শশী বশীভূত কর তব শক্তি-সারে।

    ওরে কোঠার ভিতর চোর-কুঠরি, ভোর হলে সে লুকাবে রে।।

    ষড় দর্শনে না পায় দরশন, আগম-নিগম তন্ত্রসারে।

    সে যে ভক্তিরসের রসিক, সদানন্দ বিরাজ করে পুরে।।

    সে ভাব লাগি পরম যোগী, যোগ করে যুগ-যুগান্তরে।

    হলে ভাবের উদয় লয় সে যেমন লোহাকে চুম্বকে ধরে।।

    প্রসাদ বলে মাতৃভাবে আমি তত্ত্ব করি যাঁরে।

    সেটা চাতরে কি ভাঙব হাঁড়ি, বোঝ না রে মন ঠারে ঠারে।।

    আরও পড়ুনঃ “মহাকাল জেনেছেন কালীর মর্ম, অন্য কেবা জানে তেমন”

    আরও পড়ুনঃ“এই স্থানে নরেন্দ্রের গান ঠাকুর প্রথমে শুনেন ও তাঁহাকে দক্ষিণেশ্বরে যাইতে বলেন”

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 40: “মহাকাল জেনেছেন কালীর মর্ম, অন্য কেবা জানে তেমন”

    Ramakrishna 40: “মহাকাল জেনেছেন কালীর মর্ম, অন্য কেবা জানে তেমন”

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্তিযোগের রহস্য—The Secret of Dualism

    ভগবান দুই কথায় হাসেন। কবিরাজ যখন রোগীর মাকে বলে, মা! ভয় কি? আমি তোমার ছেলেকে ভাল করে দিব—তখন একবার হাসেন; এই বলে হাসেন, আমি মরছি, আর এ কিনা বলে আমি বাঁচব! কবিরাজ ভাবছে, আমি কর্তা, ঈশ্বর যে কর্তা—এ-কথা ভুলে গেছে। তারপর যখন দুই ভাই দড়ি ফেলে জায়গা ভাগ করে, আর বলে এদিকটা আমার, ওদিকটা তোমার, তখন ঈশ্বর আর-একবার হাসেন; এই মনে করে হাসেন; আমার জগদ্‌ব্রহ্মাণ্ড, কিন্তু ওরা বলছে, এ-জায়গা আমার আর তোমার।

    উপায়বিশ্বাস ও ভক্তি

    তাঁকে কি বিচার করে জানা যায়? তাঁর দাস হয়ে, তাঁর শরণাগত হয়ে তাঁকে ডাক।

    বিদ্যাসাগরের প্রতি সহাস্যে-আচ্ছা তোমার কি ভাব?

    বিদ্যাসাগর মৃদু মৃদু হাসিতেছেন। বলিতেছেন, আচ্ছা সে কথা আপনাকে একলা-একলা একদিন বলব।(সকলের হাস্য)

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (সহাস্যে)—তাঁকে পাণ্ডিত্য দ্বারা বিচার করে জানা যায় না।

    এই বলিয়া ঠাকুর প্রমোন্মত্ত হইয়া গান ধরিলেনঃ

    ঈশ্বর অগম্য অপার

    কে জানে কালী কেমন?

    ষড় দর্শন না পায় দরশন।।

    মূলাধারে সহস্রারে সদা যোগী করে মনন।

    কালী পদ্মবনে হংস-সনে, হংসীরূপে করে রমণ।।

    আত্মারামের আত্মা কালী প্রমাণ প্রণবের মতন।

    তিনি ঘটে ঘটে বিরাজ করেন, ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছা যেমন।।

    মায়ের উদরে ব্রহ্মাণ্ড ভাণ্ড, প্রকাণ্ড তা জানো কেমন।

    মহাকাল জেনেছেন কালীর মর্ম, অন্য কেবা জানে তেমন।।

    প্রসাদ ভাষে লোকে হাসে, সন্তরণে সিন্ধু-তরণ।

    আমার মন বুঝেছে প্রাণ বুঝে না ধরবে শশী হয়ে বামন।।

    দেখলে, কালীর (Ramakrishna) উদরে ব্রহ্মাণ্ড প্রকাণ্ড ভাণ্ড তা জানো কেমন! আর বলছে ষড় দর্শনে না পায় দরশন। পাণ্ডিত্যে তাঁকে পাওয়া যায় না।

    আরও পড়ুনঃ “মৃত্যুকে সর্বদা মনে রাখা উচিত, মরবার পর কিছুই থাকবে না।”

    আরও পড়ুনঃ“গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ“এই স্থানে নরেন্দ্রের গান ঠাকুর প্রথমে শুনেন ও তাঁহাকে দক্ষিণেশ্বরে যাইতে বলেন”

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 39: “মৃত্যুকে সর্বদা মনে রাখা উচিত, মরবার পর কিছুই থাকবে না।”

    Ramakrishna 39: “মৃত্যুকে সর্বদা মনে রাখা উচিত, মরবার পর কিছুই থাকবে না।”

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্তিযোগের রহস্য—The Secret of Dualism

    তবুও নিস্তার নাই। শেষে নাড়ীভুঁড়ি থেকে তাঁত তৈয়ার হয়। সেই তাঁতে ধুনুরীর যন্ত্র হয়। তখন আর আমি বলে না, তখন বলে তুঁহু তুঁহু (অর্থাৎ তুমি, তুমি)। যখন তুমি, তুমি বলে তখন নিস্তার। হে ঈশ্বর, আমি দাস, তুমি প্রভু, আমি ছেলে, তুমি মা।

    রাম (Ramakrishna) জিজ্ঞাসা করলেন, হনুমান, তুমি আমায় কিভাবে দেখ? হনুমান বললে, রাম! যখন আমি বলে আমার বোধ থাকে, তখন দেখি, তুমি পূর্ণ, আমি অংশ; তুমি প্রভু, আমি দাস। আর রাম! যখন তত্ত্বজ্ঞান হয়, তখন দেখি, তুমিই আমি, আমিই তুমি।

    সেব্য-সেবক ভাবই ভাল। আমি তো যাবার নয়। তবে থাক শালা দাস আমি হয়ে।

    বিদ্যাসাগরকে শিক্ষা—“আমি ও আমার” অজ্ঞান

    আমি ও আমার এই দুটি অজ্ঞান। আমার বাড়ি, আমার টাকা, আমার বিদ্যা, আমার এই সব ঐশ্বর্য–এই যে-ভাব এটি অজ্ঞান থেকে হয়। হে ঈশ্বর (Ramakrishna), তুমি কর্তা আর এ-সব তোমার জিনিস—বাড়ি, পরিবার, ছেলেপুলে, লোকজন, বন্ধু-বান্ধব—এ সব তোমার জিনিস–এ-ভাব থেকে জ্ঞান হয়।

    মৃত্যুকে সর্বদা মনে রাখা উচিত। মরবার পর কিছুই থাকবে না। এখানে কতগুলি কর্ম করতে আসা। যেমন পাড়াগাঁয়ে বাড়ি—কলকাতায় কর্ম করতে আসা। বড় মানুষের বাগানের সরকার, বাগান যদি কেউ দেখতে আসে, তা বলে এ-বাগানটি আমাদের, এ-পুকুর আমাদের পুকুর। কিন্তু কোন দোষ দেখে বাবু যদি ছাড়িয়ে দেয়, আর আমের সিন্দুকটা লয়ে যাবার যোগ্যতা থাকে না; দারোয়ানকে দিয়ে সিন্দুকটা পাঠিয়ে দেয়। (হাস্য)

    আরও পড়ুনঃ“গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    আরও পড়ুনঃ“এই স্থানে নরেন্দ্রের গান ঠাকুর প্রথমে শুনেন ও তাঁহাকে দক্ষিণেশ্বরে যাইতে বলেন”

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 38: “গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    Ramakrishna 38: “গীতা গীতা দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়”

    চতুর্থ অধ্যায়

    শুধু পাণ্ডিত্য, পুঁথিগত বিদ্যা অসার—ভক্তিই সার

    শ্রীরামকৃষ্ণ—শুধু পাণ্ডিত্যে কিছু নাই। তাঁকে পাবার উপায়, তাঁকে জানবার জন্যই বইপড়া। একটি সাধুর পুঁথিতে কি আছে, একজন জিজ্ঞাসা করলে, সাধু খুলে দেখালে। পাতায় পাতায় ওঁ রামঃ লেখা রয়েছে, আর কিছুই লেখা নাই!

    গীতার অর্থ কি? দশবার বললে যা হয়। গীতা গীতা, দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়। গীতায় এই শিক্ষা—হে জীব, সব ত্যাগ করে ভগবানকে লাভ করবার চেষ্টা কর। সাধুই হোক, সংসারীই হোক, মন থেকে সব আসক্তি ত্যাগ করতে হয়।

    চৈতন্যদেব যখন দক্ষিণে তীর্থভ্রমণ করছিলেন—দেখলেন, একজন গীতা পড়ছে। আর-একজন একটু দূরে বসে শুনছে, আর কাঁদছে—কেঁদে চোখ ভেসে যাচ্ছে। চৈতন্যদেব জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি এ-সব বুঝতে পারছ? সে বললে, ঠাকুর! আমি শ্লোক এ-সব কিছু বুঝতে পারছিনা। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তবে কেন কাঁদছো? ভক্তটি বললে, আমি দেখছি অর্জুনের রথ, আর তার সামনে ঠাকুর আর অর্জুন কথা কচ্চেন। তাই দেখে আমি কাঁদছি।

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ

    ভক্তিযোগের রহস্য—The Secret of Dualism

    শ্রীরামকৃষ্ণ-বিজ্ঞানী কেন ভক্তি লয়ে থাকে? এর উত্তর এই যে, আমি যায় না। সমাধি অবস্থায় যায় বটে, কিন্তু আবার এসে পড়ে। আর সাধারণ জীবের ‘অহং’ যায় না। অশ্বত্থগাছ কেটে দাও, আবার তার পরদিন ফেঁক্‌ড়ি বেরিয়েছে। (সকলের হাস্য)

    জ্ঞানলাভের পরও আবার কোথা থেকে আমি এসে পড়ে! স্বপনে বাঘ দেখেছিলে, তারপর জাগলে, তবুও তোমার বুক দুড়দুড় করছে। জীবের আমি লইয়েই তো যত যন্ত্রণা। গরু হাম্বা (আমি) হাম্বা করে, তাই তো অত যন্ত্রণা। লাঙলে জোড়ে, রোদ বৃষ্টি গায়ের উপর দিয়ে যায়, আবার কসাইয়ে কাটে, চামড়ায় জুতো হয়, ঢোল হয়—তখন খুব পেটে। (হাস্য)

    আরও পড়ুনঃ বর্ধমান জেলা বিজেপির অফিসে হামলা তৃণমূল দুষ্কৃতীদের, একাধিক গাড়ি ভাঙচুর!

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

    আরও পড়ুনঃ “দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  • Ramakrishna 37: “তিনি বিভুরূপে সর্বভূতে আছেন, পিঁপড়েতে পর্যন্ত, কিন্তু শক্তিবিশেষ”

    Ramakrishna 37: “তিনি বিভুরূপে সর্বভূতে আছেন, পিঁপড়েতে পর্যন্ত, কিন্তু শক্তিবিশেষ”

    চতুর্থ অধ্যায়

    জ্ঞান ও বিজ্ঞান, অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতবাদ—এই তিনের সমন্বয়

    Reconciliation of Non-Dualism, Quality Non-Dualism.

    জ্ঞানীর পথও পথ। জ্ঞান-ভক্তির পথও পথ। আবার ভক্তির পথও পথ। জ্ঞানযোগও সত্য, ভক্তিপথও সত্য—সব পথ দিয়ে তাঁর কাছে যাওয়া যায়। তিনি যতক্ষণ আমি রেখে দেন, ততক্ষণ ভক্তিপথই সোজা।

    বিজ্ঞানী দেখে ব্রহ্ম অটল, নিস্ক্রিয়, সুমেরুবৎ। এই জগৎসংসার তাঁর সত্ত্ব রজঃ তমঃ তিন গুণে রয়েছে। তিনি নির্লিপ্ত (Ramakrishna)।

    বিজ্ঞানী দেখে যিনিই ব্রহ্ম তিনিই ভগবান, যিনিই গুণাতীত, তিনিই ষড়ৈশ্বর্যপূর্ণ ভগবান। এই জীবজগৎ মন-বুদ্ধি, ভক্তি-বৈরাগ্য-জ্ঞান—এ-সব তাঁর ঐশ্বর্য। (সহাস্য) যে বাবুর ঘর-দ্বার নাই, হয়তো বিকিয়ে গেল সে বাবু কিসের বাবু। (সকলের হাস্য) ঈশ্বর (Ramakrishna) ষড়ৈশ্বর্যপূর্ণ। সে ব্যক্তির যদি ঐশ্বর্য না থাকত তাহলে কে মানত! (সকলের হাস্য)

    বিভুরূপে এক—কিন্তু শক্তিবিশেষ

    দেখ না, এই জগৎ কি চমৎকার। কতরকম জিনিস—চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র। কতরকম জীব। বড়, ছোট, ভাল, মন্দ, কারু বেশি শক্তি, কারু কম শক্তি।

    বিদ্যাসাগর—তিনি কি কারুকে বেশি শক্তি, কারুকে কম শক্তি দিয়েছেন?

    শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তিনি বিভুরূপে সর্বভূতে আছেন, পিঁপড়েতে পর্যন্ত, কিন্তু শক্তিবিশেষ। তা না হলে একজন লোকে দশজনকে হারিয়ে দেয়, আবার কেউ একজনের কাছ থেকে পালায়, আর তা না হলে তোমাকেই বা সবাই মানে কেন? তোমার কি শিং বেরিয়েছে দুটো? (হাস্য) তোমার দয়া, তোমার বিদ্যা আছে—অন্যের চেয়ে, তাই তোমাকে লোকে মানে, দেখতে আসে। তুমি এ-কথা মানো কি না? (বিদ্যাসাগর মৃদু মৃদু হাসিতেছেন)।

    আরও পড়ুনঃ “ছাদ যে জিনিসে তৈয়ারি—সেই ইঁট, চুন, সুরকিতেই সিঁড়িও তৈয়ারি”

    আরও পড়ুনঃ “সাপের ভিতরে বিষ আছে, অন্যকে কামড়ালে মরে যায়, সাপের কিন্তু কিছু হয় না।

    আরও পড়ুনঃ “বিদ্যাসাগরের অনেক গুণ…দয়া সর্বজীবে, বিদ্যাসাগর দয়ার সাগর”

    আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ। 

LinkedIn
Share