মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমেরিকায় ১৮ হাজার ভারতীয়কে অবৈধ অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন সূত্রে খবর, এই অবৈধ অভিবাসীদের (Illegal Immigrants) ভারতে ফেরানো হবে। বুধবার বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, ভারত সরকার বরাবরই অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর পক্ষে।
কী বললেন রণধীর জয়সওয়াল (Illegal Immigrants)
শুক্রবার একই কথা বললেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি জানান, যাঁদের অবৈধ অভিবাসী বলা হচ্ছে, তাঁরা প্রকৃতই ভারতীয় নাগরিক কিনা, তা যাচাই করে তবেই দেশে ফেরানো হবে। জয়সওয়াল (Randhir Jaiswal) বলেন, “আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে। এর সঙ্গে নানা সংগঠিত অপরাধ যুক্ত থাকে। শুধু আমেরিকা কেন, বিশ্বের যে কোনও দেশে যদি ভারতীয় নাগরিকরা ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও থেকে যান, অথবা তাঁদের কাছে সেই দেশে থাকার যথাযথ নথিপত্র না থাকে, তাহলে তাদের ফিরিয়ে নিতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। তবে তার আগে সেই দেশকে প্রমাণ দিতে হবে, তাঁরা প্রকৃতই ভারতীয় নাগরিক। তাঁরা সত্যিই ভারতীয় নাগরিক কিনা, আমরা তা যাচাই করব। যদি তাঁরা ভারতীয় নাগরিক হন, আমরা তাঁদের ফিরিয়ে আনব।”
ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক
ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপরও জোর দিয়েছেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, “ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী ও বহুমুখী। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো। যে কোনও বিষয় অথবা বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয় নিয়েও আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে আলোচনার পথ খোলা আছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি (Randhir Jaiswal) হল, দুই দেশের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গঠনমূলক ভাবে সমস্ত বিষয়ের সমাধান করা। আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প
২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তার পরেই তিনি আমেরিকায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের (Illegal Immigrants) স্বদেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ধরপাকড়ও শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৩৮ জন অবৈধ অভিবাসীকে। হোয়াইট হাউসের তরফে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিট। শুক্রবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “কেবল আমেরিকা বলে নয়, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যদি কোনও ভারতীয় অবৈধভাবে বসবাস করেন, আমরা তাঁদের ফিরিয়ে নেব। তবে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টের নথিপত্র ভাগ করে নিতে হবে, যাতে আমরা যাচাই করতে পারি তিনি সত্যিই ভারতীয় কিনা। যদি তা হয়, আমরা তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”
ভারতীয় অভিবাসী
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় কোনও অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী থাকলে, তাঁদের দেশে ফেরাতে কোনও আপত্তি নেই। দিল্লির অবস্থান এদিন ফের (Randhir Jaiswal) স্পষ্ট করে দিল বিদেশমন্ত্রক। শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের যে কোনও দেশের ক্ষেত্রেই অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে একই অবস্থান নরেন্দ্র মোদি সরকারের। এ ক্ষেত্রে অবশ্য শর্তও বুঝিয়ে দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে যাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাঁদের বিষয়ে তথ্য এবং প্রয়োজনীয় নথি ভারতকে দিতে হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসী ভারতীয় কিনা, তা যাচাই করতে পারে দিল্লি। ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বস্তুত তিনি ছিলেন একেবারে সামনের সারিতে। পরে ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস থেকে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে নয়াদিল্লির নীতিগত অবস্থানও বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনিও জানিয়েছিলেন, দিল্লি কখনওই অবৈধ অভিবাসন সমর্থন করে না।
অবৈধ অভিবাসী
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্পের নজর রয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের ওপর। চুরি-ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় করতে ‘লেকেন রিলে অ্যাক্ট’ নামে নয়া একটি নতুন আইন আনার পথে এগোচ্ছে আমেরিকা। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকার সেনেটে এ সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে ৬৪-৩৫ ভোটে। বিলটি আইনে পরিণত হলে অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে আমেরিকার প্রশাসন। সূত্রের খবর, সেনেটে বিলটিকে সমর্থন জানিয়েছেন ১২ জন ডেমোক্র্যাটও। বিলটি এবার যাবে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে। সেখানে বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্টের সবুজ সঙ্কেত মিললেই তা পরিণত হবে আইনে। উল্লেখ্য, এই বিল অনুযায়ী, চুরি, ছিনতাই, লুটপাট বা দোকান থেকে জিনিসপত্র (Randhir Jaiswal) হাতানোর মতো ঘটনায় অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (Illegal Immigrants)।