Tag: rss Panch Parivartan

  • RSS: হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করতে পাঁচ পরিবর্তনের কথা শোনালেন মোহন ভাগবত

    RSS: হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করতে পাঁচ পরিবর্তনের কথা শোনালেন মোহন ভাগবত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সরসংঘচালক মোহন ভাগবত আরএসএসের পঞ্চ পরিবর্তন নীতিকে ব্যাখ্যা করলেন। প্রসঙ্গত, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠন বলে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে আরএসএসের। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অধীনে কাজ করছে ৬৩টিরও বেশি শাখা সংগঠন। হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করতে প্রত্যেক জায়গাতেই রয়েছেন রাষ্ট্রের স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) প্রচারকরা। ব্যক্তি নির্মাণের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্র নির্মাণ- এই তত্ত্বে বিশ্বাস রাখা আরএসএস পঞ্চ পরিবর্তনের কথা বলছে। এরই ব্যাখ্যা গতকাল রবিবার অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি গুয়াহাটিতে দিয়েছেন সংঘের সর সংঘচালক মোহন ভাগবত। প্রসঙ্গত অসমের গুয়াহাটি মহানগর শাখার পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় রবিবারই। সেখানেই হাজির ছিলেন সংঘপ্রধান (Mohan Bhagwat)।

    পঞ্চ পরিবর্তন নীতি

    এই অনুষ্ঠানে হাজারেরও বেশি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) স্বয়ংসেবককে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। তাঁরা সমবেত হয়েছিলেন গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া সাউথ পয়েন্ট স্কুলের মাঠে। সেখানেই বক্তব্য রাখেন সর সংঘচালক মোহন ভাগবত। তাঁর বক্তব্যেই উঠে আসে সমাজ পরিবর্তনের নানা বিষয়। সামাজিক সম্প্রীতি কিভাবে রক্ষা হবে, পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য আমাদের ভূমিকা কী এবং সাংস্কৃতিক পুনরুত্থানের জন্য আমরা ঠিক কী কী করব। এই সমস্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। গতকাল রবিবার তিনি এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বক্তব্য রাখেন । তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে পঞ্চ পরিবর্তনের কথা। এই পঞ্চ পরিবর্তন হল-

    – সামাজিক সম্প্রীতি
    -পারিবারিক মূল্যবোধ
    -পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা
    – স্বদেশিয়ানার অভ্যাস
    -নাগরিক কর্তব্য

    কী বললেন মোহন ভাগবত?

    নিজের বক্তব্যে সংঘ প্রধান জোর দেন ভারতবর্ষের ঐক্য এবং বিবিধতার ওপরে। এদিন তিনি ডাকও দেন ভারতবর্ষের জাতপাত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে একত্রিত হওয়ার। নিজের বক্তব্যে মোহন ভাগবত বলেন, ‘‘সম্প্রীতির পরিবেশ যখন সমাজে গড়ে ওঠে, তখন সেটা পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই তৈরি হয়। আমাদেরকে অন্য জাতির প্রতিও শ্রদ্ধা জানাতে হবে। সমস্ত হিন্দু মন্দির, যে জায়গাগুলো আমরা জল সংগ্রহ করছি সেগুলি, যেখানে হিন্দুদের মৃতদেহ সৎকার করা হয় সেই মাঠগুলি- এই সব কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ঐক্য প্রয়োজন এবং পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’’

    গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক সম্পর্কের ওপর

    রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সরসংঘচালকের বক্তব্যে এদিন উঠে আসে পারিবারিক মূল্যবোধের কথা। প্রকৃতিকে রক্ষা করার কথা। প্রতিটি পরিবারকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে কথা। প্রসঙ্গত সংঘের সর্বভারতীয় প্রচার প্রমুখ সুনীল আম্বেকর দিন কয়েক আগেই বলেছিলেন, ‘‘যে কাজ ব্যক্তি তাঁর পরিবারের জন্য করেন, সেই কাজই যখন তিনি সমাজের জন্য করতে শুরু করেন, তখনই তাঁকে স্বয়ংসেবক বলা হয়।’’ পারিবারিক মূল্যবোধের মাধ্যমে সমাজ গঠন। সেই তত্ত্বই এদিন যেন প্রতিফলিত হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সর সংঘচালকের ভাষণে। নিজের বক্তব্যে মোহন ভাগবত বলেন, ‘‘সর্বদাই আমাদের চিন্তা করতে হবে, সামাজিক সুখের কথা। সর্বদাই আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক সম্পর্কের ওপর। সেখানে যেন আমরা একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করতে পারি। আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক মূল্যবোধের ওপরেও। কারণ এই পারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ থেকেই তৈরি হয় একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ সমাজ।’’

    বাঁচাতে হবে প্রকৃতিকে

    তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের সামনে অনেক কিছু পরিবেশের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। জলবায়ুর দূষণ থেকে প্রকৃতিকে ধ্বংস করার মতো নানা রকমের কাজ। এখন চোখের সামনে দেখা যায়। আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। জলের অপচয় বন্ধ করতে হবে। জল সংরক্ষণ করতে হবে। প্লাস্টিকের ওপর যে নির্ভরশীলতা আমাদের রয়েছে তা আমাদের কমাতে হবে।’’ একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে তুলে ধরেন বৃক্ষরোপণ। তিনি বলেন, চারা গাছ আমাদেরকে রোপণ করতেই হবে এবং এটা কোন পছন্দের বা অপছন্দের বিষয় নয়। এটা আমাদের কর্তব্য হিসেবে দেখতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করার জন্য।

    গুরুত্ব স্বদেশিয়ানায়

    এদিন নিজের বক্তব্যে মোহন ভাগবত স্মরণ করিয়েছেন, আমাদের স্বদেশিয়ানার কথা। তিনি বলেন, ‘‘সর্বদাই আমাদের অভ্যাস করতে হবে মাতৃভাষার চর্চার। আমার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা কথা বলব মাতৃভাষায় এবং ব্যবহার করব তাঁতের তৈরি কাপড়। এর মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত হবে। নাগরিক কর্তব্যের দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘সর্বদাই আমাদের মেনে চলতে হবে আমাদের সমাজে চলার জন্য যে ঐতিহ্যবাহী নিয়মগুলি রয়েছে সেগুলি। আমাদের মনে রাখতে হবে, এগুলি কোনও আইনের বইতে বলা নেই। নাগরিক কর্তব্য শুধুমাত্র সীমাবদ্ধ নেই যে আমি ট্রাফিক নিয়ম মানলাম কিংবা ট্যাক্স দিলাম। এটা সম্পূর্ণটাই দাঁড়িয়ে আছে নৈতিকতার ওপরে। আমাদের সামাজিক সদ্ভাবকে বজায় রাখতে গেলে এটি ভালো করে আমাদেরকে পালন করতে হবে।’’

LinkedIn
Share