Tag: Russian oil

Russian oil

  • India Russia Relation: মার্কিন চাপ নয়, ব্যবসায়িক বাস্তবতা! রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের ব্যাখ্যা রিলায়েন্সের

    India Russia Relation: মার্কিন চাপ নয়, ব্যবসায়িক বাস্তবতা! রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের ব্যাখ্যা রিলায়েন্সের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি বছরের ২০ নভেম্বর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরআইএল) জানিয়েছে যে, তারা গুজরাটের জামনগরস্থিত শোধনাগারের জন্য রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আপাতত কিনবে না। আরআইএলের শোধনাগারের দুটি ইউনিট রয়েছে। সেটির একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এসইজেডে অবস্থিত। সেখান থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত (ইইউ) একাধিক দেশ এবং আমেরিকায় পেট্রোপণ্য সরবরাহ করে ওই সংস্থাটি। কিন্তু সম্প্রতি রুশ তেলের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় রফতানি বাণিজ্য ঠিক রাখতে আপাতত মস্কোর থেকে ‘তরল সোনা’ আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিলায়েন্স। এর পিছনে মার্কিন চাপের কোনও প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেই।

    ব্যবসায়িক ঝুঁকি এড়াতে সিদ্ধান্ত

    জামনগর এসইজেড রিফাইনারি ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানির প্রায় অর্ধেক প্রক্রিয়াজাত করে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করে। এই পণ্যের বড় অংশ যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে, যেখানে রিফাইন্ড ফুয়েলের দাম তুলনামূলক বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে রাশিয়ান ক্রুড থেকে উৎপাদিত পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও রুশ তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নতুন সময়সীমা ঘোষণা করেছে। ফলে রিলায়েন্স আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রফতানিমুখী ইউনিটে রাশিয়ান তেল বাদ দিচ্ছে, যাতে বাজার হারানো বা সেকেন্ডারি স্যাংশনের ঝুঁকি না থাকে। ইউরোপীয় বাজার যাতে হাতছাড়া না হয় তাই এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিলায়েন্স। রফতানির জন্য এসইজেড শোধনাগারে ব্যবহৃত তেল রুশ সংস্থা ‘রসনেফ্ট’-এর কাছ থেকে আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিলায়েন্স। মুকেশের সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের দাবি, নিষিদ্ধ সংস্থাগুলির কাছ থেকে তেল কিনলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে পারবে না রিলায়েন্স। ক্রেমলিনের তেল পরিশোধন করে পেট্রোপণ্য ইউরোপের বাজারে বিক্রি করে তাদের ঘাড়েও নিষেধাজ্ঞা চাপলে ব্যবসার পথও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

    দীর্ঘমেয়াদি রাশিয়া চুক্তি অটুট

    রিলায়েন্স পূর্বে রসনেফ্টের সঙ্গে দৈনিক প্রায় ৫ লাখ ব্যারেল রাশিয়ান তেল ক্রয়ের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছে। তবু, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও বাণিজ্য পরিস্থিতি বদলালে কর্পোরেট কৌশলও বদলাতে হয়। কোম্পানি জানিয়েছে, ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিশ্রুত কার্গো গ্রহণ করা হয়েছে, এবং শেষ রুশ তেল-কার্গো ১২ নভেম্বর লোড হয়েছে। সরকারি দৃষ্টিকোণ থেকে এটি “পিছু হটা” নয়—বরং বাস্তববাদী সামঞ্জস্য। ভারত রাশিয়ার সাথে তার কৌশলগত জ্বালানি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, আবার বেসরকারি খাতকে নিষেধাজ্ঞার বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। রাশিয়ার রসনেফ্ট নয়ারা এনার্জির ভাদিনার রিফাইনারিতে প্রায় ৪৯% অধিকার রয়েছে, অন্যদিকে ভারতীয় সরকারি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগ রয়েছে ভ্যাঙ্কর্নেফট, তাস-ইউরিয়াখ এবং সাখালিন-১ প্রকল্পে। অতএব, রিলায়েন্সের আংশিক কৌশলগত সমন্বয় ভারতের রাশিয়া-সম্পর্কের ওপর কোনও মৌলিক প্রভাব ফেলছে না।

    অভ্যন্তরীণ সরবরাহ স্বাভাবিক

    রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র এসইজেড রফতানি ইউনিটে প্রযোজ্য। দেশের অভ্যন্তরীণ (ডোমেস্টিক ট্যারিফ এরিয়া) রিফাইনারিগুলো এখনো বিভিন্ন উৎসের তেল—রাশিয়া থেকেই ক্রয় করছে। এতে সরকার একদিকে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রেখেছে, অন্যদিকে রফতানি বাজারকেও রক্ষা করেছে। সস্তা রাশিয়ান তেল আমদানির ফলে দেশীয় জ্বালানি খরচ কম এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে। সরকার কোথাও রাশিয়ান তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, রাষ্ট্রায়ত্ত রিফাইনারিগুলোকেও তা বন্ধ করতে বলেনি। অতএব, এটি সরকারি নীতি পরিবর্তন নয়—একটি কর্পোরেট ঝুঁকি-ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ। রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্ত সরকারের কাছে বরং ইতিবাচক—কারণ এটি রফতানি আয় রক্ষা করে।

    ভারত এখনও রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার

    সূত্রের খবর, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ আপাতত স্পট মার্কেট থেকেই তেল কেনার পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তেল পরিশোধনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার রাশিয়ার থেকে তেল কেনাবেচার পরিসংখ্যান কিন্তু ভিন্ন। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এক রিপোর্ট বলছে, এখনও দেশে অপরিশোধিত তেলের সিংহভাগই আমদানি করা হয় রাশিয়া থেকে। গত পাঁচ বছরে তা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। ২০২১-’২২ সালে ৪০ লক্ষ টন তেল কেনা হয়েছিল। গত অর্থবর্ষে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৮ কোটি টন। চলতি অর্থবর্ষে এপ্রিলের পর থেকে অগস্টের শেষ পর্যন্ত তেল কেনা হয়েছে ৪ কোটি টন। ফলে চলতি অর্থবর্ষে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি কমবে না, বরং আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞমহলের। শুধু অক্টোবরেই মস্কোর তেল কিনতে ২৫০ কোটি ইউরো (প্রায় ২৬,২৫০ কোটি টাকা) খরচ করেছে ভারত। উপদেষ্টা সিইআরএ-র দাবি, সেপ্টেম্বরে একই মূল্যের আমদানি হয়েছিল। তবে গত মাসে পরিমাণে ১১ শতাংশ বেশি কিনেছে দেশীয় সংস্থাগুলি। ফলে ভারত এখনও রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার।

    বাজারভিত্তিক কৌশলগত পুনর্বিন্যাস

    রিলায়েন্সের পরিবর্তন কেবল “রফতানি নোড”-এ সীমাবদ্ধ। ভারতের সামগ্রিক রাশিয়ান তেল আমদানি এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে। কূটনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারত–রাশিয়া সহযোগিতা আগের মতই চলছে। মোদি সরকারের নীতি হলো— “যেখানে দরকার সমন্বয়, যেখানে সম্ভব স্বায়ত্তশাসন”—যা ভারতের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অতএব বোঝা যাচ্ছে, রিলায়েন্সের রফতানি ইউনিটে রাশিয়ান তেল বন্ধের সিদ্ধান্তটি মার্কিন চাপের ফল নয়—এটি একটি বাজার-চালিত, ঝুঁকি-সচেতন কর্পোরেট সিদ্ধান্ত, যেখানে ভারত সরকার সীমিত হস্তক্ষেপ করে কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় নীতি-স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিশ্চিত বিশ্বে নিষেধাজ্ঞা ও ভূরাজনৈতিক চাপের সময় এটি ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের বাস্তব প্রয়োগ।

  • India: ‘পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে ভারত’, দাবি রুশ রাষ্ট্রদূতের

    India: ‘পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে ভারত’, দাবি রুশ রাষ্ট্রদূতের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর হয়েছে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা। তা সত্ত্বেও ভারত (India) এখনও রাশিয়া (Russian Oil Imports) থেকে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভ। সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের হিসেবে ভারত প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ১৭ লাখ ব্যারেল রুশ তেল কিনছে। এ মাসেও গড়ে এই পরিমাণ তেল কেনা চলছে।”

    রাশিয়ান ফিডস্টক (India)

    আলিপভ বলেন, “অক্টোবরের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়, ভারত এখনও বিপুল পরিমাণ রাশিয়ান ফিডস্টক কিনছে। সাম্প্রতিক সময়ের মতোই প্রায় প্রতিদিন ১৭.৫ লাখ ব্যারেল।” তিনি বলেন, “এই সংখ্যাটি আগেও ওঠানামা করেছে, এখনও করছে। কখনও কিছু মাসে বেশি, কখনও কম। তবে গড় প্রায় একই রয়েছে।” ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার পর পরই এমন মন্তব্য করেন আলিপভ (India)।

    নতুন করে নিষেধাজ্ঞা

    প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রসনেফত এবং লুকোইলের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। এরাই একসঙ্গে রাশিয়ার মোট অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৫৭ শতাংশ উৎপাদন করে। নয়া নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে আগামী ২১ নভেম্বর থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ান ক্রুড এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে। ভারতের অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ভারতের বিদেশমন্ত্রক ফের একবার জানিয়ে দিয়েছে যে, দেশের জ্বালানি নীতি জাতীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ফের বলেন, “ভারতের তেল ক্রয়–নীতি বৈশ্বিক বাজারের পরিস্থিতি এবং দামের ওঠানামার ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়। দেশের ১৪০ কোটি নাগরিকের জন্য স্থিতিশীল ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই শক্তি–সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলি জাতীয় দায়বদ্ধতা এবং অর্থনৈতিক প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নেওয়া হয়।

    প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই দিব্যি রাশিয়া (Russian Oil Imports) থেকে তেল কিনে চলেছে ভারত। তার জেরে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে ভারতকে। তা সত্ত্বেও দেশবাসীর স্বার্থে রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে নয়াদিল্লি (India)।

  • India-US Relations: মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি অসত্য! ‘ফোনে কথাই হয়নি’ ট্রাম্প-মোদির, জানাল ভারত

    India-US Relations: মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি অসত্য! ‘ফোনে কথাই হয়নি’ ট্রাম্প-মোদির, জানাল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি ভারতের (India-US Relations) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বৃহস্পতিবার তা স্পষ্ট করে দিল নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করার বিষয়ে বুধবার তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির (Donald Trump-Narendra Modi) কথা হয়েছে। তবে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্পের সেই দাবি খারিজ করে দিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই দাবিকে নাম না করে মিথ্যাচার বলে অভিহিত করল ভারত। উল্লেখ্য, ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির সময়েও কৃতিত্ব দাবি করে ‘মিথ্যাচার’ করেছিলেন ট্রাম্প। এবার রুশ তেল কেনা নিয়েও তাঁর একই আচরণ।

    বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি

    বাণিজ্যশুল্ক নিয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্যেই বড় দাবি করেছেন ট্রাম্প (Trump-Modi Meeting)। তাঁর দাবি, ফোনে ভারতের (India-US Relations) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। বুধবার হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, রাশিয়া থেকে আর তেল কিনবে না ভারত। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাকি এই আশ্বাস দিয়েছেন। ট্রাম্পের সেই দাবি এবার উড়িয়ে দিল বিদেশমন্ত্রক। বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়,অতি সম্প্রতি দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ফোনে কথাই হয়নি। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমেরিকা জ্বালানি নিয়ে যে মন্তব্য করেছে, আমরা ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছি, যা তুলে ধরা যেতে পারে। আর ফোনে হোক বা সামনাসামনি আলোচনা, গতকাল কোনওটাই হয়নি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি।”

    মার্কিন প্রেসিডেন্টের অদ্ভুত দাবি

    রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই টানাপোড়েন চলছে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে। নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার দরুণ ভারতের উপর দুই দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। সেই নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার মধ্যেই বুধবার বড় দাবি করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ও ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অসাধারণ মানুষ বলে অ্যাখ্য়া দেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে মোদী যে প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন, সে কথাও উল্লেখ করেন। এরপরই ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ হবে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন মোদি। ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, “আজই আমাকে আশ্বস্ত করেছেন উনি (মোদি) যে, আর রাশিয়ার থেকে তেল কিনবেন না ওঁরা। এটা ব্রেকিং স্টোরি। তবে সঙ্গে সঙ্গে তো হয় না। এটা একটা প্রক্রিয়া। তবে শীঘ্রই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমরা শুধু চাই প্রেসিডেন্ট পুতিন এসব বন্ধ করুন।” ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করলেই যুদ্ধ থামানোর কাজ সহজ হবে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। যুদ্ধ শেষ হলে ভারত আবারও রাশিয়ার কাছে ফিরে যেতে পারে বলেও দাবি করেন।

    ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে ভারত

    ট্রাম্পের এই দাবি গোড়াতেই খারিজ করে দেয় ভারত (India-US Relations) । বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, “ভারত তেল ও গ্যাস আমদানিকারী গুরুত্বপূর্ণ দেশ। জ্বালানি ক্ষেত্রে যে ওঠাপড়া দেখা যায়, তার মধ্যে ভারতীয় গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের আমদানি নীতিও এর উপর নির্ভরশীল। জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা ও ডোগান অব্যাহত রাখাই লক্ষ্য় থেকেছে বরাবর।” তবে ৯ অক্টোবর দু’দেশের রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ফোনে কথা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রণধীর। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, গত ৯ অক্টোবরের ফোনালাপের সময়ে গাজা শান্তিচুক্তির সাফল্যের জন্য ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মোদি। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা কী অবস্থায় রয়েছে, তা-ও পর্যালোচনা করেন তাঁরা। উভয়েই এ বিষয়ে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে সম্মত হন।

    ভারতীয় গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই লক্ষ্য

    ভারতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভও এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “ভারত এবং আমেরিকা, স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকার আছে দুই দেশেরই। আমরা তাতে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের তেল আমদানি করে ভারতের অর্থনীতির লাভ হয়েছে, ভারতীয় নাগরিকরা উপকৃত হয়েছেন। আমেরিকা এবং ভারতের যেমন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক (India-US Relations) রয়েছে, রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে।” সোভিয়েত আমল থেকেই মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত। ঠান্ডা যুদ্ধের আমলেও দ্বিমেরুকৃত বিশ্বে বহু ঘটনায় ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। সোভিয়েত ইউনিয়ান ভেঙে যাওয়ার পরেও, এমনকি পুতিনের আমলেও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অটুটই থেকেছে। তেল আমদানি নিয়ে মার্কিন চাপের মুখে এর আগে ভারত বহু বার জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে তারা। তবে একই সঙ্গে সাউথ ব্লক জানিয়েছে, ভারত তেল কেনার বাজারকে আরও বিস্তৃত এবং‌ বৈচিত্রময় করতে চায়। এই সূত্রেই ভারত জানিয়েছে, জ্বালানি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করতে আমেরিকার সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে।

  • MEA: ট্রাম্পের দাবির প্রেক্ষিতে রুশ তেল কেনা নিয়ে কী বলল ভারত?

    MEA: ট্রাম্পের দাবির প্রেক্ষিতে রুশ তেল কেনা নিয়ে কী বলল ভারত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারত তেল ও গ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকারী দেশ। অস্থির জ্বালানি পরিস্থিতিতে ভারতীয় উপভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা আমাদের অগ্রাধিকার। আমাদের আমদানি নীতিগুলি সম্পূর্ণভাবে এই লক্ষ্য সামনে রেখেই পরিচালিত হয়।” এক বিবৃতি জারি করে এ কথা সাফ জানিয়ে দিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক (MEA)। বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ভারত তেল কেনার (Russian Oil) বাজারকে আরও বিস্তৃত এবং বৈচিত্রময় করতে চায়। জ্বালানি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করতে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের আলোচনাও চলছে।” যদিও সরাসরি ট্রাম্পের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত।

    ট্রাম্পের দাবি (MEA)

    প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক প্রশ্নের জবাবে ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “তিনি (মোদি) আমার বন্ধু, আমাদের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল কেনায় আমরা খুশি ছিলাম না। কারণ এর ফলে রাশিয়া এই হাস্যকর যুদ্ধ (ইউক্রেনের সঙ্গে) চালিয়ে যেতে পেরেছে,  যেখানে তারা পনেরো লাখ মানুষ হারিয়েছে।” তিনি এও বলেন, “আমি খুশি ছিলাম না যে ভারত তেল কিনছে (রাশিয়া থেকে)। আর (মোদি) আজ আমায় আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে তাঁরা রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবেন। এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এখন আমাদের চিনকে দিয়েও একই কাজ করাতে হবে।” মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভারত হয়ত এখনই রাশিয়া থেকে তেল কেনা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না, তবে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে গিয়েছে।” ট্রাম্পের এহেন বার্তার প্রেক্ষিতেই এদিন মুখ খুলল ভারতের বিদেশমন্ত্রক।

    সস্তায় অপরিশোধিত তেল

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মস্কো থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় ভারত। রাশিয়ার ওপর এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ (MEA)। যার ফলে দাম কমতে থাকে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের। প্রত্যাশিতভাবেই ০.২ শতাংশ থেকে ভারতে রুশ তেল আমদানির পরিমাণ বেড়ে হয় ৩৫ শতাংশ। মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি কেনা চালিয়ে যেতে থাকে ভারত। যার জেরে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। তার পরেও দমানো (Russian Oil) যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতকে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ভারতের আগের অবস্থানেও যে কোনও বদল হয়নি, এদিন বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতেই তা স্পষ্ট (MEA)।

  • Trump Tariffs: মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়ান তেল কেনা বাড়িয়েছে ভারত

    Trump Tariffs: মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়ান তেল কেনা বাড়িয়েছে ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মার্কিন রক্তচক্ষু (Trump Tariffs) উপেক্ষা করেই চলতি মাসে ভারত ব্যাপকভাবে আমদানি বাড়িয়েছে রাশিয়ান তেলের (Russian Oil)। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলি প্রতিদিন রাশিয়া থেকে প্রায় ৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনছে। অগাস্টের তুলনায় চলতি মাসে বৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ।

    বাড়তি ছাড় (Trump Tariffs)

    এই বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হল ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য রাশিয়ার দেওয়া বাড়তি ছাড়। জুলাই মাসে যেখানে প্রতি ব্যারেলে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১ থেকে ২.৫ মার্কিন ডলার, সেখানে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩–৪ ডলার। এর ফলে আগামী মাসগুলিতেও ভারতে যে রাশিয়ান তেলের প্রবাহ বজায় থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ান তেল আমদানি করায় ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্কের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। বর্তমানে ভারত ও ব্রাজিল এই দুই দেশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব চেয়ে বেশি শুল্কের মুখোমুখি, উভয়ের ক্ষেত্রেই এই হারের পরিমাণ ৫০ শতাংশ। তবুও ভারত এখনও রাশিয়া থেকেই অন্য যে কোনও সরবরাহকারীর তুলনায় বেশি অপরিশোধিত তেল কিনছে। ভারতীয় রিফাইনারিগুলি সরবরাহের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও আফ্রিকান কয়েকটি দেশ থেকেও তেল কেনা বাড়িয়েছে ভারত।

    বাজার দর

    সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজার দর অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬৮.৪৫ মার্কিন ডলার। রাশিয়ার ইউরালস প্রকারভেদ, যা ভারত বিপুল পরিমাণে আমদানি করে, তার দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬২.৮৯ মার্কিন ডলার। এর ওপর মস্কো অতিরিক্ত ৩–৪ ডলার ছাড় দিচ্ছে (Russian Oil)। তাই ভারতীয় জীবাশ্ম জ্বালানি কিনতে ক্রেতাদের দিতে হচ্ছে ব্যারেল প্রতি ৫৮–৫৯ ডলার (Trump Tariffs)। সম্প্রতি ব্রেন্ট ও ইউরালসের বাজার মূল্যের ব্যবধান গড়ে প্রায় ৬ মার্কিন ডলার হয়েছে।
    বর্তমানে ব্রেন্টের দাম প্রতি ব্যারেল ৬৬.৬৮ মার্কিন ডলার, আর ইউরালসের দাম ৬৩.১৯ মার্কিন ডলার। রাশিয়ার সর্বশেষ দেওয়া ছাড় হিসেব করলে দেখা যায় ভারতীয় কোম্পানিগুলি প্রতি ব্যারেল মাত্র ৫৯–৬০ মার্কিন ডলারে চুক্তি করছে। এটি রাশিয়ার তেল সরবরাহকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে (Trump Tariffs)।

  • India-US Relation: “ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরেছে”! ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে সুর নরম করলেন ট্রাম্প

    India-US Relation: “ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরেছে”! ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে সুর নরম করলেন ট্রাম্প

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের (India-US Relation) উপর শুল্ক চাপানো যে সহজ নয়, তা মানলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ করা “সহজ কাজ নয়” কারণ এটি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করে। শুল্কের কাঁটায় ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়েছে তিক্ত। এ কথা নিজেই স্বীকার করে নিলেন ট্রাম্প (Donald Trump)।

    কী বললেন ট্রাম্প

    ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “দেখুন, ভারত ওদের (রাশিয়া) সবথেকে বড় গ্রাহক ছিল। আমি ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক (Trump Tariff on India) চাপিয়েছি কারণ ওরা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। এটা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু আমি তা করেছি। আমি অনেক করেছি। মনে রাখবেন, এটা আমাদের সমস্যার থেকেও বেশি ইউরোপের সমস্যা।” শুক্রবার ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ইতিমধ্যেই অনেক কিছু করেছি। আমি সাতটা যুদ্ধ সমাধান করেছি। আমি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যেকার উত্তেজনাসহ অনেক কিছু সমাধান করেছি। যেগুলো অসম্ভব মনে করা হত যেমন কঙ্গো আর রুয়ান্ডা। আমি তা সমাধান করেছি। এটি ৩১ বছর ধরে চলছিল, লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। আমি এমন যুদ্ধও শেষ করেছি, যেগুলোকে বলা হত সমাধান অযোগ্য।”

    ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি

    একদিকে শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প যখন ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক অবনতি হওয়ার কথা বলছেন, সেখানেই বৃহস্পতিবার তাঁরই মনোনীত ভারতে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত সার্গিও গোর বলেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসন চায় ভারত রাশিয়ার থেকে তেল ও ক্রুড পণ্য না কিনে, তা আমেরিকার থেকে কিনুক। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দুই দেশের আলোচনা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। প্রসঙ্গত, ভারতের উপরে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই যুক্তিই দিয়েছিলেন যে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনছে। ভারত ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে এবং এই সিদ্ধান্তকে অনৈতিক বলে উল্লেখ করেছে। সম্প্রতি চিন-রাশিয়া ভারতের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতেই আবার সুর নরম করেছেন ট্রাম্প। বারবার উল্লেখ করেছেন বন্ধুত্ব ও দীর্ঘ সম্পর্কের কথা। সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এক সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দেন যে, ভারতের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত এগোতে পারে। লুটনিক বলেন, “আসলে আমরা ভারতের ব্যাপারটা সমাধান করব, সেখানে বিশেষ কোনও সমস্যা হবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, অগ্রগতি অনেকটাই নির্ভর করছে ভারত রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করছে কিনা তার ওপর।

  • India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    India-Russia Relationship: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের মুনাফা ১২৬০ কোটি ডলার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বজুড়ে যখন তেলের দাম চড়া, তখন ভারত এক কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়ে রুশ তেলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে রাশিয়া (India-Russia Relationship) থেকেই তেল আমদানি করে ভারত। অন্যদিকে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মস্কোও ভারতকে বড়সড় ছাড়ে তেল (Russian Oil) দিতে শুরু করে। এই সিদ্ধান্তে ভারতের জ্বালানি আমদানির খরচ ৩৯ মাসে কমেছে কমপক্ষে ১৭ বিলিয়ন ডলার। তথ্য-পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট গত সাড়ে তিন বছরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করায় বিপুল আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে ভারতের। সরকারি সূত্রে খবর, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ৩৯ মাসে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে অন্তত ১২৬০ কোটি ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ১১ হাজার কোটি টাকা) মুনাফা করেছে ভারত।

    বিশ্ব-বাজারে ভারতের বড় ভূমিকা

    রাশিয়ার তেল (Russian Oil) কেনায় ভারতের উপর গোঁসা করেছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে তেল কেনার অভিযোগে ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ ট্যারিফ চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিটার নাভারোর দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধ আসলে ‘মোদির যুদ্ধ’। তাঁর অভিযোগ, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে আসলে মস্কোকে সহায়তা করছে ভারত।’ পিটার নাভারোর অভিযোগ ভিত্তিহীন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতের তেল কেনার কারণেই বিশ্ববাজারে বড়সড় সঙ্কট এড়ানো গিয়েছে। যদি ভারত রাশিয়ার তেল না কিনত, তাহলে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলার ছুঁয়ে যেত। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারত শুধু সরাসরি সাশ্রয়ই করেনি, বরং বিশ্ববাজারে দাম নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি রুশ তেল না কিনত, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০-২০ ডলার বেড়ে যেতে পারত, যা ৩৯ মাসে আমদানির খরচ বাড়িয়ে দিত ৫৮ থেকে ১১৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

    রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বেড়েছে

    ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিলেন পুতিন। তার পরেই আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছিল। যদিও তাতে গুরুত্ব না দিয়ে গত সাড়ে তিন বছর ধরে নয়াদিল্লি-মস্কো বাণিজ্যিক লেনদেন চলেছে সমানতালে। গত অর্থবর্ষের (২০২৪-২৫) ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সার্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে পৌঁছেছে ৬৮০০ কোটি ডলার (প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা)। তার মধ্যে ভারত থেকে রাশিয়ায় (India-Russia Relationship) রফতানি করা হয়েছে ৪৯০ কোটি ডলারের (৪২ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। আর রাশিয়া থেকে ভারত আমদানি করেছে ৬৩০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা) পণ্য। যার বড় অংশই সামরিক সরঞ্জাম এবং অশোধিত তেল। বস্তুত ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর অনেক আগে থেকেই রুশ অশোধিত তেলের ক্রেতা ভারত। তবে আগে রাশিয়া থেকে তারা কম তেল আমদানি করত। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। তেল আমদানিকারী দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এই মোট আমদানির ৩৫ শতাংশই এখন আসে রাশিয়া থেকে।

    কতটা সাশ্রয় করল ভারত

    প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারত ১৬২২ কোটি ডলারের তেল আমদানি করেছিল। রাশিয়ার তেল না কিনে অন্য দেশ থেকে কিনলে এই খরচ আরও ৪৮৭ কোটি ডলার বেশি পড়ত। ২০২৩-২৪ অর্থবর্যে রাশিয়ার তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও আমদানি বাড়ায় সাশ্রয় দাঁড়ায় ৫৪১ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ছাড় নেমে আসে মাত্র ২.৮ শতাংশে। এতে সাশ্রয় হয় মাত্র ১৪৫ কোটি ডলার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষএ ছাড় কিছুটা বাড়ার ফলে প্রায় ৮৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হয়েছে। প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষপর্বে রুশ তেল আমদানি কিছুটা কমলেও অগস্ট থেকে তা বাড়তে শুরু করেছে আবার।

    রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ভারত

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া ভারতের মোট তেল আমদানির ২%-এরও কম সরবরাহ করত। এখন সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬%, যেখানে প্রতিদিন আমদানি হয় প্রায় ১.৭৮ মিলিয়ন ব্যারেল। এশিয়ায় চিনের পর ভারত এখন রুশ তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। মূলত মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ভারতকে ছাড়ে তেল দেয়, আর ভারত কৌশলগতভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সাশ্রয় করে।

    লাভ সাধারণ জনগণের

    ভারতের সরকারি (India-Russia Relationship) হিসাব ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, দেশের এই সাশ্রয় শুধুমাত্র বড় ব্যবসায়ীদের নয়, সাধারণ ভারতীয়দেরও উপকৃত করেছে— মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থেকেছে, রুপি স্থিতিশীল থেকেছে, এবং রিফাইনিং শিল্পে কর্মসংস্থান বজায় রয়েছে। একইসঙ্গে, ভারত এই রফতানিকৃত রিফাইন্ড তেল (বিশেষত রিলায়েন্স ও নয়ারা এনার্জির মাধ্যমে) বিক্রি করে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯৭.৪৭ বিলিয়ন, এবং ২০২৪-২৫-এ ৬৩.৩৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেলের এই কৌশলগত চুক্তি ভারতের অর্থনীতিকে এক বড় ধাক্কা থেকে রক্ষা করেছে।

    দেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত

    ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার থেকে তেল (Russian Oil) কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের পরেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ থেকে থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার। অদূর ভবিষ্যতে তার কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে মনে করছেন কূটনীতি এবং বণিকমহলের অনেকেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, এই তেল আমদানির মাধ্যমে ১.৪ বিলিয়ন ভারতীয়ের জন্য “সাশ্রয়ী জ্বালানি” নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, মার্কিন সমালোচনা দ্বিচারিতায় ভরপুর। ইউরোপ এখনও রাশিয়া থেকে পণ্য কিনছে। তাই ভারতকে বাধা দেওয়ার মানেই হয় না। ভারত জানিয়ে দিয়েছে — ‘যেখানে ভালো দাম, সেখানেই আমরা যাব’ — কৌশলগতভাবে নয়, অর্থনৈতিকভাবে।

  • S Jaishankar: “ভারতকে আক্রমণ করতে যে যুক্তিগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি চিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি,” পশ্চিমী বিশ্বকে নিশানা জয়শঙ্করের

    S Jaishankar: “ভারতকে আক্রমণ করতে যে যুক্তিগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি চিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি,” পশ্চিমী বিশ্বকে নিশানা জয়শঙ্করের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারতকে আক্রমণ করতে যে যুক্তিগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি চিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি।” ঠিক এই ভাষায়ই পশ্চিমী বিশ্বকে আক্রমণ শানালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar)। ইকনমিক টাইমস ওয়ার্ল্ড লিডারশিপ ফোরামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি ভারতের রুশ তেল আমদানিকে সঠিক বলেই সমর্থন করেন। তিনি এদিন ফের একবার সাফ জানিয়ে দেন, ভারত (India) কেবলমাত্র তার জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে, এমনকি যদি তা অন্য দেশগুলির প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হয়, তাহলেও।

    জয়শঙ্করের সাফ কথা (S Jaishankar)

    তিনি বলেন, “যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলি রাশিয়ার তেল পছন্দ না করে, তবে তাদের উচিত নয় ভারত থেকে সেই পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনা, যা রুশ অপরিশোধিত তেল শোধন করে তৈরি হয়।” তিনি জানান, রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত ভারতের নিজের স্বার্থে, আবার বৈশ্বিক স্বার্থেও। তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমরা সেই সিদ্ধান্তই নেব, যা জাতীয় স্বার্থে হবে। ভারতের মতো একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা কোনওভাবেই আপসযোগ্য নয়।”

    বিমাতৃসুলভ আচরণ!

    পশ্চিমী দেশগুলির সমালোচনার জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, “ভারতের তেল বাণিজ্যকে আলাদা করে দেখা উচিত নয়। একে তেলের সমস্যা হিসেবে দেখানো হয়, অথচ বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক চিনের ক্ষেত্রে একই যুক্তি প্রয়োগ করা হয় না। ভারতকে আক্রমণ করতে যে যুক্তিগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি চিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি।” এর পরেই ভারতের অবস্থান নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের উদ্দেশে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আপনারা যদি পছন্দ না করেন, তবে কিনবেন না। কিন্তু ইউরোপও কেনে, আমেরিকাও কেনে। যদি পছন্দ না হয়, আমাদের কাছ থেকে কিনবেন না (S Jaishankar)।” জয়শঙ্কর মনে করিয়ে দেন, ২০২২ সালে যখন বৈশ্বিক তেলের দাম দ্রুত বাড়ছিল, তখন অনেক দেশই ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার বিষয়ে কোনও আপত্তি করেনি। কারণ এতে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য হয়েছিল (India)। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “সেই সময় অনেকে বলেছিল, যদি ভারত রাশিয়ান তেল কিনতে চায়, তাহলে কিনুক, কারণ এতে দামের স্থিতিশীলতা আসবে (S Jaishankar)।”

  • India Russia Relation: মস্কোর বাজারে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আহ্বান, তেলের ওপর ভারতকে আরও ৫ শতাংশ ছাড় রাশিয়ার

    India Russia Relation: মস্কোর বাজারে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আহ্বান, তেলের ওপর ভারতকে আরও ৫ শতাংশ ছাড় রাশিয়ার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করে ভারতের সঙ্গে তেল বাণিজ্য (Oil Business) থামবে না রাশিয়া। বরং আলোচনার ভিত্তিতে ভারতীয় ক্রেতারা ৫ শতাংশ ছাড়ে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল পাবেন। এমন মন্তব্য করলেন ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ইয়েভগেনি গ্রিভা (Yevgeny Griva)। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন (Roman Babushkin)। তিনি বললেন, ‘‘ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে আমাদের আস্থা আছে। আমরা নিশ্চিত, বাইরের চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া (India-Russia Relations) তেল বাণিজ্য চলতে থাকবে।’’

    কী বললেন গ্রিভা

    রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ এভজেনি গ্রিভা বলেছেন, ‘‘ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনার ক্ষেত্রে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ শতাংশ ছাড় পাচ্ছে ভারত।’’ গ্রিভা আরও বলেছেন, ‘‘বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও ভারত প্রায় একই পরিমাণ তেল আমদানি করবে।’’ দুই দেশের ছাড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি বাণিজ্যিক গোপনীয়তার বিষয়। আমার মনে হয়, এই বিষয়ে সাধারণত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এই চুক্তির পরিমাণ ওঠানামা করে, তবে সাধারণত এটি প্লাস-মাইনাস ৫ শতাংশ।’’

    বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চলবেই

    রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের (India-Russia Relations) উপর অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতকে তেল বিক্রির লভ্যাংশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ব্যবহার করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সাম্প্রতিক সময়ে বার বার এই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণেই যে ভারতের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপাচ্ছে আমেরিকা, সে কথাও গোপন রাখেননি ট্রাম্প। এই আবহে গত ১ অগস্ট এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড রাশিয়া থেকে তেল কেনা স্থগিত রেখেছে। যদিও তার পরের দিনই নয়াদিল্লির সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ জানায়, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করছে না ভারত। রাশিয়ার থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ রাখার দাবি উড়িয়ে দেয় ভারতের ওই সরকারি সূত্র।

    রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ বাড়াল ভারত

    বুধবার জানা যায়, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য ভারত রাশিয়ায় বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দিয়েছে। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেল প্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ হতে চলেছে। ভারত প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করে। ফলে প্রতি ব্যারেলে তিন ডলার ছাড়টাই শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য বিরাট অঙ্কের সাশ্রয় হবে। তারপর তো আরও কিছু ছাড় পাওয়ার কথা রয়েছে। দেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার থেকে ব্যয় কমবে। মুনাফার এই অঙ্কগুলি মাথায় রেখে রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিল ভারত। তবে এনিয়ে সরকারিভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

    মস্কোর মত

    সিনিয়র রাশিয়ান কর্মকর্তারা বলেছেন যে জ্বালানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এড়াতে মস্কোর একটি ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ রয়েছে। এই নিয়ে রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড কমিশনার ইভজেনি গ্রিভা বলেছেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও, আমরা আশা করতে পারি যে ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানির মাত্রা প্রায় একই থাকবে।’ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ান এনার্জি জায়ান্ট রসনেফ্ট এবং একটি বিনিয়োগ কনসোর্টিয়ামের যৌথ মালিকানাধীন গুজরাটের ভাদিনার শোধনাগারে তেল সরবরাহে কোনও প্রভাব পড়েনি। ভাদিনার শোধনাগারে রসনেফ্টের ৪৯.১৩% শেয়ার রয়েছে, এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শোধনাগার। এর বার্ষিক ক্ষমতা ২০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এই আবহে গ্রিভা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজ ও বিমা সম্পর্কিত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য রাশিয়ার ‘একটি ব্যবস্থা’ রয়েছে এবং অপরিশোধিত তেল সরাসরি শোধনাগারে সরবরাহ করা হয় কারণ এটি রসনেফ্টের একটি সহায়ক সংস্থা।

    ভারতের জন্য রাশিয়ার বাজার খোলা

    বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার রাশিয়ার সংস্থাগুলিকে ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। মস্কোয় ভারত-রাশিয়া বিজনেস ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, মেক ইন ইন্ডিয়া এবং এই ধরনের অন্যান্য উদ্যোগ বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। উভয় দেশকে আরও বিনিয়োগ, যৌথ উদ্যোগ এবং অন্যান্য ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে ‘শুল্ক শাস্তি’ দিয়েছে আমেরিকা। দুই দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে ভারতীয় পণ্যের উপর। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ব্য়বসায়ীদের জন্য দেশের বাজার খুলে দিয়েছে রাশিয়া। মস্কো জানিয়েছে, আমেরিকার বাজারে যদি সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার বাজারে পণ্য পাঠাতে পারে ভারত। রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অফ মিশন রোমান বাবুশকিন এই ঘোষণা করেছেন। ভারতের উপর যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘একতরফা’ বলে উল্লেখ করেন বাবুশকিন। তিনি বলেন, “আমেরিকার বাজারে ঢুকতে সমস্যা হলে, রাশিয়া ভারতকে রফতানিতে স্বাগত জানাচ্ছে। যারা নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে, তাদেরই ক্ষতি হচ্ছে।”

  • Putin Modi Talk: আলাস্কার বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, ফোনে বন্ধু মোদিকে বললেন পুতিন

    Putin Modi Talk: আলাস্কার বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, ফোনে বন্ধু মোদিকে বললেন পুতিন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin)। সেই বৈঠকে ঠিক কী কথা হয়েছে, ফোন করে তা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের এই বিষয়টি নিজের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে এই বিষয়টি জানানোর জন্য পুতিনকে  ধন্যবাদ দিয়েছেন মোদি। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথাও প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

    সমাজ মাধ্যমে পোস্ট মোদির (PM Modi)

    এক্স পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi) পুতিনকে বন্ধু হিসাবে উল্লেখ করে লেখেন, ‘‘সম্প্রতি আলাস্কায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর (পুতিন) বৈঠকের বিষয়বস্তু আমার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’’ মোদি আরও জানিয়েছেন, ভারত ধারাবাহিক ভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়ে এসেছে। যুদ্ধ বন্ধের সকল প্রচেষ্টাকে ভারত সমর্থন করে বলেও জানিয়েছেন মোদি।

    কথা দুই দেশের সম্পর্ক নিয়েও

    জানা যাচ্ছে, আলাস্কার বৈঠক বা ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গই নয়, মোদি এবং পুতিনের (Putin) মধ্যে এই কথোপকথনের মধ্যে উঠে এসেছে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়েও একাধিক প্রসঙ্গ। ভ্লাদিমির পুতিন এবং নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া ও ভারতের সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন বলেও জানা যাচ্ছে।

    ১৫ অগাস্ট আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

    এক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার, গত ১৫ অগাস্ট আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বৈঠকের দিকে নজর ছিল ভারতেরও, কারণ সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের ওপর শুল্কও বৃদ্ধি করেন তিনি।

    বৈঠক নিয়ে কী জানিয়েছিলেন ট্রাম্প

    বৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন যে, এই বৈঠক হতে চলেছে মূলত রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সংঘাত থামানোর বিষয়ে। কিন্তু অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই মনে করেছিলেন যে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার প্রসঙ্গ উঠতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের এই বৈঠকে। প্রসঙ্গত, আলাস্কায় গত ১৫ অগাস্ট এই বৈঠক ৩ ঘণ্টা ধরে চলে। জানা যাচ্ছে, এই বৈঠকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কোনও সমাধানসূত্রই বের করা যায়নি। কিন্তু বৈঠকের পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট দুজনেই বলেন বৈঠক ফলপ্রসূ।

    বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে ভারত

    অন্যদিকে, গত শনিবারে ভারত আলাস্কায় রাশিয়া এবং আমেরিকার এই বৈঠকে স্বাগত জানায়। এ নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি আসে যে, ভারত স্বাগত জানাচ্ছে আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Putin) এই বৈঠককে।

    ট্রাম্পের সুর নরম

    প্রসঙ্গত রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে শুল্ক চড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপরে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্পের সুর কিছুটা নরম বলেই মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। কারণ, ওই বৈঠকের পরে তিনি বলেন, “আজ যা হল, আশা করি এর পর আর ওটা (শুল্ক) নিয়ে ভাবতে হবে না। তবে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হয়তো ওটা নিয়ে আমাকে আবার ভাবতে হবে। এখন কিছু নয়। আমার মনে হয়, বৈঠক খুব ভালো হয়েছে।’’

LinkedIn
Share