মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পথকুকুরদের সরানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দেশজুড়ে শোরগোল ফেলেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে রাজধানী দিল্লিতে পথকুকুরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় বাতলালেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। তাঁর দাবি, পথকুকুরদের কোনও আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠালেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। তাঁর মতে, পথকুকুরদের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় কুকুরদের সংখ্যা এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা।
জন্মসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই সম্ভব
সম্প্রতি ওড়িশার কটকে ৫০০-এর বেশি সন্ন্যাসীদের একটি সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে পথ-কুকুর সমস্যা প্রসঙ্গে কথা বলেন আরএসএস প্রধান। তিনি বলেন, “সমস্যার সমাধান কেবলমাত্র পথকুকুরের জন্মসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই সম্ভব। কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে এই সংকট দূর করা যাবে না।” প্রসঙ্গত, দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে পথকুকুর সরানো সংক্রান্ত মামলায় রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ। দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে বাইরে শেল্টারে পাঠাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। সোমবার ওই রায় দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
প্রকৃতি ও মানব সমাজের মধ্যে ভারসাম্য
পশুচিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক ডঃ মোহন ভাগবত তাঁর বক্তব্যে ভারতীয় ঐতিহ্য ও প্রকৃতির সহাবস্থানের প্রথার উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “গ্রামবাসীরা গরুর দুধ দোয়ানোর সময় কিছুটা দুধ বাছুরের জন্য রেখে দেন—এটাই প্রকৃতি ও মানব সমাজের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কৌশল।” তিনি আরও বলেন, ভারতের কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতি প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। ইউরোপীয়দের আফ্রিকায় ভূমি শোষণের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, “ভারতের মাটি উর্বর কারণ ভারতীয় কৃষকরা মাটি থেকে অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করেন না। তাঁরা শুধু প্রয়োজনীয় শস্য উৎপাদনের জন্য মাটিকে ব্যবহার করেন, যেখানে ইউরোপীয়রা অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে আফ্রিকার মাটিকে নষ্ট করেছে।” তিনি বলেন, ‘মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। উন্নয়ন এবং পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করা উচিত।’ উল্লেখ্য, কুকুরদের আক্রমণে মানুষের মৃত্যু বাড়ছে। এই জন্য পথকুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে দায়ী করছেন অনেকেই। আবার, একাংশের মতে, পথকুকুরগুলিকে একেবারে সরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে সরকারি উদ্যোগে নির্বীজকরণ করে তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাগ্রহণ করা উচিত।