Tag: Supreme Court Waqf Act

  • Supreme Court: সংশোধিত ওয়াকফ আইনের ওপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট

    Supreme Court: সংশোধিত ওয়াকফ আইনের ওপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ওয়াকফ আইনের ( Waqf Amendment Act 2025) বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। সেই মামলায় অন্তর্বর্তী নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিল, পুরো ওয়াকফ আইন স্থগিত রাখার কোনও যুক্তি নেই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, এই আইনের কয়েকটি ধারাকে স্থগিত রাখা গেলেও গোটা আইনকে স্থগিত রাখা যায় না। গত ২২ মে ওই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতিতে তৈরি হয় সংশোধিত ওয়াকফ আইন, ২০২৫। তারপর দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় এই আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আপত্তি তুলে বিক্ষোভ দেখায় বেশ কয়েকটি মৌলবাদী সংগঠন। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিজেপি বিরোধী দলগুলি। আদালতে দায়ের হয় মামলা।

    কোন কোন ধারা স্থগিত হল (Supreme Court)

    আইন অনুযায়ী, কেউ ওয়াকফ তৈরি করতে চাইলে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম অনুশীলনকারী হতে হবে—এই ধারা স্থগিত রাখা হয়েছে। আদালত বলেছে, এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে নির্ধারণের স্পষ্ট নিয়ম হয়নি।

    জেলা কালেক্টর বা প্রশাসক যাতে ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি জমি কি না তা নির্ধারণ করতে পারেন—এই ক্ষমতাও আপাতত বাতিল করা হল। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই স্পষ্ট মন্তব্য করেন, “কালেক্টররা ব্যক্তিগত নাগরিকদের অধিকার নির্ধারণ করতে পারবেন না। এটি ক্ষমতার বিভাজন নীতির পরিপন্থী।”

    অমুসলিমরাও ওয়াকফ বোর্ড ও কাউন্সিলের সদস্য হতে পারবেন

    সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশ অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ড বা কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য মনোনয়নের বিধান বহাল থাকছে। তবে আদালতের মত, বোর্ডের ( Waqf Amendment Act 2025) বেশিরভাগ সদস্য যেন মুসলিম সম্প্রদায়ের হন, সেই দিকেই গুরুত্ব দিতে হবে। আদালত স্পষ্ট করেছে, অমুসলিমরাও ওয়াকফ বোর্ড ও কাউন্সিলের সদস্য হতে পারবেন, কিন্তু নেতৃত্বের দায়িত্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কারও হাতে দেওয়াই উচিত। নির্দেশে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে চারজনের বেশি অমুসলিম সদস্য রাখা যাবে না এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অন্য ধর্মীয় সদস্যের সংখ্যা তিনজনের বেশি হওয়া চলবে না। আদালত জানিয়েছে, ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার না হওয়া পর্যন্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের অধিকার সৃষ্টি করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো তাই স্থগিত থাকবে।

    মামলাকারী আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া

    মামলাকারী আইনজীবী আনাস তানভির বলেন, আদালত প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে যে কিছু ধারায় সমস্যা আছে। পুরো আইন নয়, শুধু বিতর্কিত অংশই স্থগিত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম চর্চার শর্ত বাতিল হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কমবে।

    কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান

    কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে যুক্তি দিয়েছিল, সংসদে গৃহীত কোনও আইনের ধারা স্থগিত করা উচিত নয়। সংশোধনী মূলত ওয়াকফ সম্পত্তির ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের জন্য, ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর এর কোনও প্রভাব নেই। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ২০১৩ সালের সংশোধনীর আগেই অ-মুসলিমরা ওয়াকফ তৈরি করতে পারতেন না; অতীতে এ নিয়ে প্রতারণার আশঙ্কাও ছিল।

    ওয়াকফ বোর্ডের কার্যপ্রণালীতে স্বচ্ছতা আনতেই এই আইন

    লোকসভায় ২৮৮ জন সাংসদ সমর্থন জানিয়ে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের পক্ষে ভোট দেন, অন্যদিকে ২৩২ জন সাংসদ এর বিরোধিতা করেন। রাজ্যসভায়ও একই চিত্র—সেখানে ১২৮ জন সদস্য বিলের পক্ষে ভোট দেন এবং ৯৫ জন সদস্য বিপক্ষে থাকেন। ভোটাভুটির পর একাধিক রাজনৈতিক দল, মুসলিম সংগঠন এবং এনজিও আইনটির সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইন সংশোধনের উদ্দেশ্যে এই নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইন সংসদে পাস করানো হয়েছিল। বিজেপির দাবি, সংশোধিত আইন মূলত ওয়াকফ বোর্ডের কার্যপ্রণালীতে স্বচ্ছতা আনতে এবং বোর্ডগুলিতে মহিলাদের বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতেই আনা হয়েছে।

    ১.২ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে

    ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে রয়েছে প্রায় ৮.৭ লক্ষ সম্পত্তি এবং ৯.৪ লক্ষ একর জমি। এই বিপুল সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে জমির পরিমাণের বিচারে ওয়াকফ বোর্ড ভারতীয় রেলওয়ে ও সশস্ত্র বাহিনীর পর দেশের তৃতীয় বৃহত্তম জমির মালিকানা ধরে রেখেছে। বর্তমানে সারা দেশে মোট ৩০টি ওয়াকফ বোর্ড কার্যকর রয়েছে। অতীতে একাধিকবার এনিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। দুর্নীতিমুক্ত ওয়াকফ বোর্ড গড়তেই বিজেপি সরকার এই আইন পাশ করায়।

LinkedIn
Share