Tag: Tariff War

  • Mexico Tariff Hike: ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা মেক্সিকোর

    Mexico Tariff Hike: ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা মেক্সিকোর

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমেরিকার পর এবার মেক্সিকো (Mexico Tariff Hike)। ভারতীয় পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা করল এই দেশটি। এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হবে আগামী বছর থেকে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত (India) জানিয়েছে, এই একতরফা শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা লাতিন আমেরিকার এই দেশটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। নয়াদিল্লি সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধান খুঁজে বের করতে আগ্রহী। একই সঙ্গে নিজেদের রফতানিকারীদের স্বার্থ রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকারের কথাও জানান। সংবাদ সংস্থায় উদ্ধৃত এক সরকারি কর্তা বলেন, “গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খোঁজার প্রচেষ্টা জারি রেখেই ভারত তার রফতানিকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করছে।”

    বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ম (Mexico Tariff Hike)

    ওই আধিকারিক আরও জানান, এ সংক্রান্ত একটি বিল প্রাথমিকভাবে উত্থাপিত হওয়ার সময়ই মেক্সিকোর সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধান খুঁজে বের করতে ভারতের বাণিজ্য দফতর মেক্সিকোর অর্থমন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।” বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল এবং মেক্সিকোর অর্থনীতি বিষয়ক উপমন্ত্রী লুইস রোসেন্দোর মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী বৈঠকগুলি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে (Mexico Tariff Hike) ।

    মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি

    মেক্সিকো ভারত, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া-সহ যেসব দেশের সঙ্গে তাদের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, সেই সব দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিবাদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির আপত্তি সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে (India)। ইতিমধ্যেই নিম্নকক্ষে পাস হওয়া এই বিলটি মেক্সিকোর সঙ্গে যেসব দেশের বাণিজ্য চুক্তি নেই, সেসব দেশ থেকে আমদানির ওপর বেশি কর আরোপের বিধান দিয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ, বস্ত্র, পোশাক, প্লাস্টিক এবং ইস্পাতের মতো নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে (Mexico Tariff Hike)।

    শুল্কের হার সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ

    অন্যান্য অধিকাংশ আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের হার সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকবে। সেনেটে এই প্রস্তাবের পক্ষে ৭৬টি ভোট পড়ে, বিপক্ষে পড়ে ৫টি। ভোটদানে বিরত ছিলেন ৩৫ জন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের পেছনে মূলত দুটি লক্ষ্য রয়েছে। প্রথমত, আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো–কানাডা চুক্তি (USMCA) পর্যালোচনার আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য প্রদর্শন করা এবং দ্বিতীয়ত, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করা। মেক্সিকো অবশ্য আশা করছে, এই শুল্ক (India) পরিবর্তনের ফলে আগামী বছরে প্রায় ৩.৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আসবে, যা দেশটির রাজস্ব ঘাটতি কমাতে সহায়ক হবে (Mexico Tariff Hike)।

  • PM Modi: ‘চাপ বাড়লেও আত্মসমর্পণ করব না’, ট্রাম্পের শুল্কবাণ নিয়ে হুঙ্কার মোদির

    PM Modi: ‘চাপ বাড়লেও আত্মসমর্পণ করব না’, ট্রাম্পের শুল্কবাণ নিয়ে হুঙ্কার মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বুধবার, ২৭ অগাস্ট থেকে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক লাগু করতে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তার আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়ে দিলেন, শুল্ক নিয়ে আমেরিকার কাছে মাথা নত করবে না ভারত। আমেরিকার অর্থনৈতিক চাপ সত্ত্বেও ভারত সরকার ঠিক রাস্তা খুঁজে বের করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কবাণ নিয়ে আমেদাবাদের জনসভা থেকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সোমবার নিজের রাজ্য গুজরাটে গিয়ে তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমাদের উপর চাপ বাড়তে পারে, কিন্তু আমরা তা সহ্য করব। যে কোনও চাপের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে যাব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়ে ছিলাম। সেই সংকল্পের পথে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। দেশ শক্তিশালী হয়েছে।’’

    বিশ্বে  যে যার স্বার্থ দেখে

    আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার আমেদাবাদের জনসভায় জানান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক ও পশুপালকদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁর সরকার সর্বদা অটল থাকবে। তিনি বলেন, “আজকের দুনিয়ায় সবাই অর্থনৈতিক স্বার্থের উপর ভিত্তি করে রাজনীতি করছে। এই আমেদাবাদের মাটি থেকে আমি আমার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের, দোকানদার ভাই-বোনদের, কৃষক ভাই-বোনদের, পশুপালক ভাই-বোনদের বলতে চাই—আপনাদের স্বার্থই মোদির কাছে সবার আগে। আমি বারবার আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কোনও চাপ আসুক না কেন, আপনাদের ক্ষতি হতে দেব না। আজ ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ গুজরাট থেকেই নতুন শক্তি পাচ্ছে, আর এর পেছনে রয়েছে দুই দশকের কঠোর পরিশ্রম।”

    কাঠগড়ায় কংগ্রেস

    বাড়তি মার্কিন শুল্কের জেরে ভারতীয় অর্থনীতিতে সম্ভাব্য আঘাতের জন্যেও নাম না করে কংগ্রেসকে দুষেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘৬০-৬৫ বছর ধরে ভারত শাসনকারী দল ‘আমদানি কেলেঙ্কারি’ করার কারণেই আজ আমাদের দেশ অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।’’ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ট্রাম্প সরকার ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপলে প্রায় ৪০০০ কোটি ডলারের রফতানি ধাক্কা খাবে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারে কেনাকাটা বাড়ালে সেই ধাক্কা সামাল দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি নতুন লগ্নি টানার রাস্তা খুললেও শুল্ক-অভিঘাত কিছুটা সামলানো যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। আমেদাবাদের সভায় সেই লক্ষ্যেই জনতার কাছে মোদির আবেদন, ‘‘আমাদের সকলেরই কেবল ‘ভারতে তৈরি পণ্য কেনার মন্ত্র’ অনুসরণ করা উচিত। ব্যবসায়ীদের উচিত তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে একটি বড় বোর্ড ঝোলানো। যাতে লেখা থাকে যে তাঁরা কেবল স্বদেশী পণ্য বিক্রি করেন।’’

    উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক

    আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না হওয়ায় প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ, পরে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের দাবি, ভারতের তেল কেনার জন্যই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে। যদিও ভারত আমেরিকার এই দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের যুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং অপরিশোধিত তেল কিনছে। আমেরিকাও রুশ পণ্য কেনায় পিছিয়ে নেই। এই অবস্থায় ভারতের উপর শুল্ক চাপানো অন্যায়। স্পষ্টভাবে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যেখানে কম দামে তেল পাওয়া যাবে সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত। প্রসঙ্গত, ভারতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি আগামী বুধবার, ২৭ অগাস্ট থেকেই কার্যকর হতে চলেছে। তার আগে আজ, ২৬ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতরে হাই প্রোফাইল একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো হবে, সরকারের পরবর্তী নীতি ও পদক্ষেপ নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা।

  • Tariff War: “দাম কম, দম বেশি মন্ত্র অনুসরণ করতে হবে ভারতকে,” লালকেল্লায় বললেন মোদি

    Tariff War: “দাম কম, দম বেশি মন্ত্র অনুসরণ করতে হবে ভারতকে,” লালকেল্লায় বললেন মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “ভারতকে উচ্চমানের ও সাশ্রয়ী পণ্যের ওপর জোর দিতে হবে “দাম কম, দম (গুণমান) বেশি” মন্ত্র অনুসরণ করে, যাতে একটি সমৃদ্ধশালী,  স্বনির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তোলা যায়, যা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ত্যাগকে সম্মান জানায়।”  শুক্রবার ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দিল্লির লালকেল্লায় ভাষণ দিতে (Tariff War) গিয়ে কথাগুলি বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। শুধু তাই নয়, দেশবাসীকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “অন্যদের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করতে পারে”। ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক নিয়ে দড়ি টানাটানির আবহে তিনি বলেন, “যারা অন্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভর করে, তারা নিজের স্বাধীনতার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন ডেকে আনে।”

    কী বললেন প্রধানমন্ত্রী (Tariff War)

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আসল দুর্ভাগ্য শুরু হয় তখন, যখন নির্ভরতা অভ্যাসে পরিণত হয়। আর বুঝতেই না পেরে আমরা আত্মনির্ভর হওয়া বন্ধ করে দিই এবং অন্য কারও ওপর নির্ভর করতে শুরু করি। এই অভ্যাস ঝুঁকিমুক্ত নয়, তাই আত্মনির্ভর থাকতে হলে আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আত্মনির্ভরতা কেবলমাত্র আমদানি, রফতানি বা মুদ্রা বিনিময়ের সীমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের সক্ষমতার সঙ্গেও যুক্ত। যখন আত্মনির্ভরতা ক্ষয় হতে শুরু করে, তখন আমাদের শক্তিও ক্ষয় হয়। আমাদের সক্ষমতা রক্ষা, বজায় রাখা এবং উন্নত করার জন্য আত্মনির্ভরতা অপরিহার্য।”

    বিশ্বে সম্মান অর্জনের জন্য ভারতীয়দের করণীয়

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক স্বার্থপরতার এই (Tariff War) সময়ে (PM Modi), বিশ্বে সম্মান অর্জনের জন্য ভারতকে অন্যদের সীমিত করার বদলে নিজেকে শক্তিশালী করায় মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের উচিত নয় অন্য কারও লাইন ছোট করার চেষ্টা করে নিজের শক্তি নষ্ট করা। বরং আমাদের নিজের লাইনকে সর্বশক্তি দিয়ে দীর্ঘায়িত করতে হবে। বিশ্ব আমাদের শক্তিকেই সম্মান দেবে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে, যেখানে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে, সেখানে প্রয়োজন কাঁদতে বসে থাকা নয়, বরং সাহসের সঙ্গে নিজের লাইন দীর্ঘ করা।” এর পরেই তিনি বলেন, “আমাদের কাজ করা উচিত এই মন্ত্র (PM Modi) নিয়ে—‘দাম কম, দম বেশি’, অর্থাৎ খরচ কম, গুণমান বেশি। মনে রাখতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা এসেছে অসীম ত্যাগের মাধ্যমে (Tariff War)।”

  • RICH Alliance: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ, তাই কি কাছাকাছি আসছে রাশিয়া-ভারত-চিন?

    RICH Alliance: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ, তাই কি কাছাকাছি আসছে রাশিয়া-ভারত-চিন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিয়রে ট্রাম্পের শুল্ক বিপদ। তাই কি কাছাকাছি আসছে ভারত-চিন-রাশিয়া? গঠিত হচ্ছে নয়া জোট ‘রিচ অ্যালায়েন্স’ (RICH Alliance)? অন্তত এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে তামাম বিশ্বে (Trumps Tariff War)। ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে এক দফা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ান তেল কেনার জন্যই এই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়। পরে ট্রাম্পের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়া যান ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তারপর ফের ভারতীয় পণ্যের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বুধবার ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য এও জানিয়েছেন, তিনি ভারতের ওপর শুল্ক বাড়াবেন বহুলাংশে। তবে ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনওপ্রকার চাপের কাছেই নতিস্বীকার করবে না নয়াদিল্লি। ভারতের পাশাপাশি ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়াও।

    আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক! (RICH Alliance)

    প্রাক্তন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, “আমেরিকার শত্রু হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কিন্তু বন্ধু হওয়া মারাত্মক।” এই কথারই প্রতিধ্বনি যেন শোনা যাচ্ছে বর্তমানে। কারণ ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পাক খাচ্ছে শুল্ক-যুদ্ধের ঘূর্ণিপাকে। সম্প্রতি রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে মুখপাত্র মারিয়া জাখালোভা বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলির ওপর আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে শুল্ক আরোপ করছে। যারা ওয়াশিংটনের ভিন্ন পথে চলেছে, তাদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া একটি মাল্টিপোলার ও ন্যায়ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে। তাই রাশিয়া ভারতের পাশেও রয়েছে, রয়েছে চিনের সঙ্গেও, এক কথায় আমেরিকার একাধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে।”

    হতাশার গর্ভে জন্ম রাশিয়ার এই প্রতিক্রিয়া

    তাঁর দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিক্রিয়ার জন্ম হতাশা থেকেই। কারণ তারা নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থায় নিজেদের ক্রমহ্রাসমান প্রভাব মেনে নিতে পারছে না। তাঁর মতে, শুল্ক আর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিশ্বব্যবস্থার বদল রোখা যাবে না (Trumps Tariff War)। জাখারোভার কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নয়া শুল্ক ঘোষণার পর এক নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া, ভারত এবং চিনের মধ্যে যে এই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছে, তা বিশ্বে শক্তির ভারসাম্য নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারে (RICH Alliance)।

    অমোঘ প্রশ্ন

    এখানেই উঠছে সেই অমোঘ প্রশ্নটি, ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতি কি একটি শক্তিশালী ‘রিচ’ (Russia-India-China) জোটের উত্থান ডেকে এনেছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রিচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ব্রিকসের (BRICS) চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। কারণ রাশিয়া-ভারত-চিনের (রিচ) এই সংক্ষিপ্ত রূপটিই ধন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে এক শক্তিশালী জোটের ইঙ্গিত দেয়।

    আমেরিকার শিয়রে বিপদ!

    বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘রিচ’ (RICH Alliance) গঠিত হলে বিপাকে পড়বে আমেরিকা। সে দেশের জিডিপি হল প্রায় ২৩ লাখ কোটি টাকা। অন্যদিকে, রাশিয়া, ভারত ও চিনের সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকা। ভারত, চিন ও রাশিয়ার সম্মিলিত জনসংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৭ শতাংশ। উল্টো দিকে, আমেরিকার জনসংখ্যা মাত্র ৩৩ কোটি, বিশ্ব জনসংখ্যার মাত্র ৪ শতাংশ। ত্রিদেশীয় এই সম্ভাব্য জোটের সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৪৮ লাখ, সেখানে আমেরিকার মাত্র ১৩ লাখ। ন্যাটো মিত্রদের যুক্ত করলেও, সেনা সংখ্যায় এগিয়ে ‘রিচ’-ই। পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের দিক থেকেও এগিয়ে ‘রিচ’। এই সম্ভাব্য জোটের দেশগুলির কাছে আনুমানিক ৬,৩০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আর আমেরিকার রয়েছে প্রায় ৫,২০০টি (Trumps Tariff War)।

    কে এগিয়ে, পিছিয়েই বা কে

    যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বের সর্ববৃহৎ অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ, তবুও রাশিয়া এবং চিনও শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতা দেশগুলির মধ্যেই রয়েছে। ভারতও প্রতিরক্ষা উৎপাদনে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে দ্রুত এগোচ্ছে। এই ত্রিদেশীয় জোট গঠিত হলে স্থল, জল ও আকাশে ন্যাটোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে (RICH Alliance)। ‘রিচে’র সদস্য দেশগুলি প্রাকৃতিক সম্পদেও সমৃদ্ধ। রাশিয়ার রয়েছে তেল, গ্যাস ও কয়লার বিশাল ভাণ্ডার। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির প্রধান রপ্তানিকারক। ভারত পারমাণবিক ও সৌরশক্তিতে ব্যাপক এগিয়েছে। আর চিন সৌর প্যানেল ও উইন্ড টারবাইনের শীর্ষ উৎপাদক।

    প্রাকৃতিক সম্পদেও ঋদ্ধ এই তিন দেশ। রাশিয়ার রয়েছে টাইটানিয়াম, নিকেল, কোবাল্ট ও ইউরেনিয়ামের বিপুল ভাণ্ডার। চিন বিশ্বব্যাপী বিরল খনিজের ৬০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন করে। আর ভারত সমৃদ্ধ বক্সাইট, লোহা আকরিক, গ্রাফাইট ও ম্যাঙ্গানিজে। কৃষিতেও এগিয়ে ‘রিচ’। ভারত দুধ ও ডালের বিশ্বের সর্ববৃহৎ উৎপাদক। রাশিয়া গম রফতানিতে রয়েছে শীর্ষে। আর চিন দক্ষ কৃষিযন্ত্র ও খাদ্য উৎপাদনে। চুম্বকে, এই তিন দেশের জোট গঠিত হলে জ্বালানি, খাদ্য বা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাইরের সাহায্যের কোনও প্রয়োজনই প্রায় থাকবে না (Trumps Tariff War)।

    ‘রিচ’ নামের ত্রিদেশীয় এই জোট দিনের আলো দেখে কিনা, এখন সেটাই দেখার (RICH Alliance)।

  • Tariff War: বক্তব্যে ‘ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’! ট্রাম্প-প্রীতি দেখাতে গিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচিত রাহুল গান্ধী

    Tariff War: বক্তব্যে ‘ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’! ট্রাম্প-প্রীতি দেখাতে গিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচিত রাহুল গান্ধী

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ট্রাম্প-প্রীতি দেখাতে গিয়ে ঘরে-বাইরে বিতর্কের মুখে পড়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের “মৃত অর্থনীতি” মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাহুল চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আক্রমণ করতে (Tariff War)। তবে তা যে ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি কংগ্রেসের এই নেতা। কারণ তাঁর দলের সহকর্মী এবং ‘ইন্ডি’ জোটের কিছু নেতাও এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের মন্তব্যকে সমর্থন করার মাধ্যমে রাহুল একদিকে যেমন বিজেপিকে রাজনৈতিক পাল্টা আক্রমণের সুযোগ করে দিয়েছেন, তেমনই বিরোধ বাঁধিয়ে দিয়েছেন দলের অভ্যন্তরেই।

    ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য (Tariff War)

    রবিবার ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করার পরের দিনই ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। ভারত ও রাশিয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, তিনি একেবারেই চিন্তিত নন দিল্লি-মস্কোর মধ্যের এই সম্পর্ক নিয়ে। এই দুই দেশই তাদের মৃত অর্থনীতি এক সঙ্গে ধ্বংস করতে পারে। ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “আমি চিন্তা করি না ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করছে। তারা চাইলে তাদের মৃত অর্থনীতিকে এক সঙ্গে তলিয়ে যেতে দিতে পারে। এতে আমার কিছু আসে যায় না। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব কম ব্যবসা করি। ওদের শুল্ক হার অত্যন্ত বেশি। বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উচ্চ। একইভাবে, রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যেও প্রায় কোনও ব্যবসা নেই। সেটাই থাকা উচিত।”

    কংগ্রেসে মতবিরোধ

    ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই রাহুল সংসদে সাংবাদিকদের জানান, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) ঠিকই বলেছেন। এটা সবাই জানে, শুধু প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ছাড়া। আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যি কথাই বলেছেন।” রাহুল যখন ট্রাম্পের মন্তব্য সমর্থন করে (Tariff War) কেন্দ্রকে নিশানা করেন, তখন কংগ্রেসেরই প্রবীণ নেতা শশী থারুর এবং রাজীব শুক্লা ভারতের অর্থনীতির শক্তির দিকটি তুলে ধরেন। থারুর বলেন, “দিল্লির উচিত নয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া।” শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী)-র সাংসদ এবং বিরোধী নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ট্রাম্পকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য স্রেফ অহংকার বা অজ্ঞতার প্রকাশ (Rahul Gandhi)।”

    রাহুলের অভিযোগ

    প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থনীতি ধ্বংস করার অভিযোগ এনে রাহুল দায়ী করেন নোটবন্দি এবং ত্রুটিপূর্ণ জিএসটিকে। লোকসভার বিরোধী দলনেতার কটাক্ষ, “অ্যাসেম্বল ইন ইন্ডিয়া – যা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র একটি পরোক্ষ সমালোচনা – ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে, কৃষকদের পিষে ফেলা হয়েছে।” রাহুলের এই মন্তব্যের একেবারে উল্টো সুর শোনা গিয়েছে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা থারুরের গলায়। তিনি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনা চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা চলছে, ব্রিটেনের সঙ্গে একটি চুক্তি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছি। যদি আমেরিকায় প্রতিযোগিতা করা সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের মার্কিন বাজার ছেড়ে অন্য বাজারে বৈচিত্র্য আনতে হবে (Rahul Gandhi)। আমাদের কাছে বিকল্পের অভাব নেই।”

    থারুরের যুক্তি

    থারুর বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক আচরণ করে, তাহলে ভারতকে অন্য কোথাও এগিয়ে যেতে হবে। এটাই ভারতের শক্তি। আমরা চিনের মতো পুরোপুরি রফতানি- নির্ভর অর্থনীতির দেশ নই। আমাদের একটি শক্তিশালী ও বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। আমাদের দর কষাকষির জন্য যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সমর্থন করতে হবে যাতে সম্ভব হলে সেরা চুক্তিটি করা যায়। আর যদি ভালো চুক্তি সম্ভব নাও হয়, তাহলে আমাদের সেখান থেকে সরে আসতে হতেই পারে (Tariff War)।”

    রাহুলকে পাল্টা আক্রমণ অমিত

    রাহুলকে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। তিনি বলেন, “কংগ্রেস নেতা যখন ট্রাম্পের মৃত অর্থনীতি মন্তব্যকে তোল্লাই দেন, তখন তিনি এক নয়া নিম্নস্তরে পৌঁছে যান। এটি ভারতীয় জনগণের আকাঙ্ক্ষা, সাফল্য এবং মঙ্গলকে লজ্জাজনকভাবে অপমান করা (Rahul Gandhi)”। তিনি বলেন, “কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, এখানে একমাত্র যা সত্যিকার অর্থে ‘মৃত’, তা হল রাহুল গান্ধীর নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ও উত্তরাধিকার। বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও ভারত আজ বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতির দেশ। আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাঙ্ক এর প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ওপরের দিকেই বলে জানিয়েছে।” মালব্য বলেন, “এটি কোনও মৃত অর্থনীতি নয়। এটি একটি উত্থানশীল, দৃঢ় ভারত।”

    তাঁর প্রশ্ন, “রাহুল গান্ধী আসলে কার হয়ে কথা বলছেন? কেন তিনি বারবার এমন বিদেশের হয়ে প্রচার করেন, যা ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে?” মালব্য বলেন, “আমি আজ একই বিষয়ে কংগ্রেসের দুই নেতার মন্তব্য শুনেছি (Rahul Gandhi)। একজন ভারতের স্বার্থে কথা বলেছেন, আর অন্যজন এমন সুরে কথা বলেছেন যা তাঁর বিদেশি (Tariff War) প্রভুদের খুশি করবে।”

  • India-US Relationship: পাকিস্তান নিয়ে মধ্যস্থতা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ট্যারিফ নিয়ে করা ট্রাম্পের জোড়া দাবি ওড়াল ভারত

    India-US Relationship: পাকিস্তান নিয়ে মধ্যস্থতা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ট্যারিফ নিয়ে করা ট্রাম্পের জোড়া দাবি ওড়াল ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান নিয়ে মধ্যস্থতা হোক বা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ট্যারিফ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিতে সায় দিলেন না বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar to Donald Trump)। সরাসরি বিরোধিতাও করলেন না। বৃহস্পতিবার তিনি বললেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক শুল্ক নিয়ে ভারত এবং আমেরিকার জটিল আলোচনাপর্ব চলছে।’’ এখনও বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়নি বলেই বিদেশমন্ত্রীর দাবি। আর পাকিস্তান প্রসঙ্গে বারবার ট্রাম্পের অভিমত প্রকাশ নিয়েও প্রত্যক্ষভাবে কিছু বলেননি জয়শঙ্কর। তবে তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের (India-US Relationship) সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক।’’

    শুল্ক মকুবের প্রস্তাব প্রসঙ্গে ট্রাম্পের দাবি

    বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় ভারতের ‘শুল্ক মকুবের প্রস্তাব’ সম্পর্কে ট্রাম্প দাবি করেন, আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যে সব ধরনের শুল্ক বাতিল করার বার্তা দিয়েছে ভারত (India-US Relationship)! তিনি বলেন, ‘‘ভারতে শুল্কের হার খুব বেশি। তাই ভারতে পণ্য বিক্রি করা খুব কঠিন। তবে ভারত আমাদের জন্য এমন একটি নীতি নিয়েছে যেখানে তারা আসলে কোনও শুল্কই নিতে চায় না।’’ এই মর্মে আমেরিকাকে নাকি প্রস্তাবও দিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেও বিশদে এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি ট্রাম্প।

    জয়শঙ্করের জবাব

    ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar to Donald Trump) সাফ জানান, এখনও বাণিজ্যনীতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, “ভারত এবং আমেরিকার (India-US Relationship) মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা চলছে। এগুলো অত্যন্ত জটিল আলোচনা। সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত পুরোটা বলা কঠিন। তবে যে কোনও বাণিজ্য চুক্তি দুপক্ষের কাছেই লাভবান হওয়া উচিত। অন্তত এই চুক্তি থেকে আমরা সেটাই আশা করি। তাই যতক্ষণ না চুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে ততক্ষণ এই বিষয়ে মতামত দেওয়া উচিত নয়।” প্রসঙ্গত, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেই শুল্কবাণে গোটা পৃথিবীকে নাজেহাল করেছেন ট্রাম্প। এপ্রিল মাসে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর পরে ট্রাম্প তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন। আগামী ৯ জুলাই ওই সময়সীমা শেষ হবে। তার আগে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ভারত এবং আমেরিকা আলোচনা চালাচ্ছে।

    ভারত পাকিস্তান সম্পর্ক

    বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে হন্ডুরাসের দূতাবাস উদ্বোধনের ফাঁকে সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্প বা আমেরিকার (India-US Relationship) কথা না বললেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিল্লি যে তৃতীয় পক্ষের কথা শুনবে না তা-ও স্পষ্ট করে দেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ৷ গোটা দেশ এমনটাই মনে করে৷ বহু বছর ধরে এটা চলে আসছে এবং সেখানে কোনও পরিবর্তন হয়নি৷” জয়শঙ্কর জানান, পহেলগাঁওয়ে হামলার জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ৷ ৭ মে অপারেশন সিঁদুরের মধ্য দিয়ে ভারত সেটাই করে দেখিয়েছে৷ ৬-৭ মে রাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা ৷ এরপর ৮, ৯ ও ১০ মে পাকিস্তানও ভারতীয় সেনাঘাঁটি এবং সাধারণ মানুষের বসবাসের জায়গাগুলিকে নিশানা করে৷ ভারত তার যথাযোগ্য জবাবও দিয়েছে ৷ এরপরই পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির আর্জি জানায়। ভারত কখনওই যুদ্ধের পক্ষে নয় তাই সম্মত হয়।

    সন্ত্রাস বন্ধই একমাত্র পথ

    বিদেশমন্ত্রী বলেন, “বিষয়গুলি পরিষ্কার৷ এই আবহে আমাদের বিরোধীদেরও আমি আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিতে চাই৷ পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, কাজকর্ম সবকিছু দ্বিপাক্ষিক এবং কঠোরভাবেই দ্বিপাক্ষিক৷ বিগত বহু বছর ধরে এই বিষয়ে দেশে ঐকমত্য আছে৷ এর কোনও বদল হয়নি৷” জয়শঙ্করের কথায়, ভারতের একটাই দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের অধিকৃত ভারতের জমি ছেড়ে দিতে হবে পাকিস্তানকে৷ পাকিস্তানের সঙ্গে এই বিষয়েই আলোচনা হতে পারে৷ এদিন সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা নিয়ে ভারতের অবস্থান একই রয়েছে বলে জানান বিদেশ মন্ত্রী৷ গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরদিন মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বৈঠক করে৷ সেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত-সহ পাঁচটি পদক্ষেপ করে ভারত৷ এর ফলে পাকিস্তান জল সংকটের সম্মুখীন হবে৷ এই প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, “সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রয়েছে৷ পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বন্ধ না করা পর্যন্ত তা স্থগিতই থাকবে৷”

LinkedIn
Share