মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বকাপ জয়ী ভারত অধিনায়ককেও অসম্মান করা যায়! এটাই রীতি কংগ্রেস ও তৃণমূলের। এমনই মনে করছে নেটপাড়া। ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে বডি শেমিং ও কটাক্ষ করা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কংগ্রেস (Congress Leader Shama Mohammad) নেত্রী শামা মহম্মদ এবং তৃণমূল (TMC)-নেতা সৌগত রায়ের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য কড়া ভাষায় কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতাদের সমালোচনা করে বলেছেন, “এটা শুধু লজ্জাজনক নয়, চরম নিন্দনীয়!”
শামা-সৌগতর মন্তব্য
সোমবার কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র শামা মহম্মদ এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) “একজন খেলোয়াড়ের নিরিখে বেশি মোটা” বলে কটাক্ষ করেন। রোহিতকে ভারতের “সবচেয়ে প্রভাবহীন অধিনায়ক” বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্য মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় কংগ্রেস নেত্রীর মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “রোহিত শর্মা অধিনায়ক হওয়ার যোগ্য নন, তিনি দলে থাকারও যোগ্য নন! আমি শুনেছি সম্প্রতি রোহিত শর্মার ফর্ম খুব খারাপ যাচ্ছে। ও একটি শতরান করেছে। তাছাড়া দু’রান, তিন রান, চার রান, পাঁচ রানেই আউট হয়ে যায়। ওর দলে থাকার যোগ্যতা নেই। ভারত জিতে যাচ্ছে, কারণ অন্য খেলোয়াড়রা ভালো খেলছে। অধিনায়কের কোনও অবদান নেই। শামা মহম্মদ যা বলেছেন, সেটা সত্যি।” এই বক্তব্য নিয়ে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে।
নেটিজেনদের নিশানা
রোহিতকে সমালোচনা করায় সৌগতকে নিশানা করে রীতিমতো কটাক্ষের বন্যা বয়ে যায় নেটপাড়ায়। এক নেটিজন বলেন, “সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের ওপেনিং জুটি: রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল – না। সৌগত রায় ও শুভমন গিল – হ্যাঁ। উনি সেঞ্চুরি করবেন।” একজন তো আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, “লর্ডসের মেঘলা সকালে স্যাঁতস্যাঁতে পিচে সৌগতবাবু ব্যাট করছেন। আর মিচেল স্টার্ক বল করছেন। দারুণ।” অপর একজন বলেন, “রোহিতকে বাদ দিয়ে সৌগত রায়কে দিয়ে ওপেন করানোর আবেদন করছি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে। ওঁনাকে একবার সুযোগ দেওয়া দরকার। এখন উনি খুব ভালো ব্যাট করেন।”
কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর তোপ
কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র এবং তৃণমূল সাংসদকে আক্রমণ শানিয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, “ক্রীড়াবিদদের নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের। কারণ তাঁরা নিজেদের পেশাদার কেরিয়ার সামলাতে পারেন। এই সব দলের নেতারা যে মন্তব্য করেছেন, তা স্রেফ চূড়ান্ত লজ্জার নয়, জঘন্যও বটে। তাঁরা একজন অ্যাথলিটের বডিশেমিং করেছেন। দলে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই ধরনের মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের ক্রীড়াবিদদের কঠোর পরিশ্রমকে খাটো করা হয়। যাঁরা অনেক কিছু বিসর্জন দিয়ে বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।”
বিজেপির কটাক্ষ
এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে নিশানা করে বিজেপি (Netizens Trolls Saugata)। পদ্ম শিবিরের নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, “রাহুল গান্ধীর ক্যাপ্টেনসিতে যারা ৯০টি নির্বাচনে হেরেছে, তাঁরা আবার রোহিত শর্মার ক্যাপ্টেনসিকে ম্যাড়মেড়ে বলে! আমার ধারনা দিল্লিতে ৬টি ও ৯০টি নির্বাচনে হেরে যাওয়াটা খুবই প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয়, কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপ জেতাটা তা নয়! রোহিত শর্মার অসাধারণ ধারবাহিকতা রয়েছে খেলোয়াড় ও ক্যাপ্টেন হিসেবে।” ক্রমশ অস্বস্তি বাড়তে থাকে কংগ্রেসের। পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে আঁচ করে কংগ্রেস শামার বক্তব্যের সঙ্গে দলীয় অবস্থানের দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানান, “শামা মহম্মদের মতামত একান্তই তাঁর নিজেস্ব। দলের সঙ্গে এক কোনও যোগ নেই। দল শামাকে সেই পোস্টটি মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল। ভারতের ক্রীড়াবিদদের অবদানকে সবসময় সম্মান করে কংগ্রেস।”