Tag: Uttarakhand’s Dharali

  • Uttarkashi Cloudburst: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস! হড়পা বানের পর ভূমিধস, উত্তরকাশীতে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা

    Uttarkashi Cloudburst: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস! হড়পা বানের পর ভূমিধস, উত্তরকাশীতে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হড়পা বানে বিপর্যস্ত উত্তরকাশী (Uttarkashi Cloudburst)। আর এই হড়পা বানেই ভেসে গেল উত্তরাখণ্ডের হরশিলের (Uttarakhand’s Dharali) একটি সেনা ছাউনি। ৯ জন জওয়ান নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত ৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ১৩০ জনকে। মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধারালী গ্রামে আচমকা নেমে আসে হড়পা বান। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গ্রামের অনেক অংশ। শুধু উত্তরকাশী নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে পারে উত্তরাখণ্ডের আরও কয়েকটি জেলা। এমনই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

    সাহায্যের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

    হরপা বানে বিপর্যস্ত উত্তরকাশীতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি বৈঠকে বসেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। আপাতত কেদারনাথ যাত্রা বন্ধ রাখা হচ্ছে। হড়পা বানে এই ক্ষয়ক্ষতিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন ধামি। তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উদ্ধার কাজে সবরকম সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যানাথও। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ করছে। সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় সেনাও এবং ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার জন্য চারটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারগুলিকে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সেনার এক উচ্চপদস্থ কর্তা।

    ভেসে গেল সেনা ছাউনিও

    মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরকাশীতে (Uttarkashi Cloudburst) শুরু হয় মেঘভাঙা বৃষ্টি। তার জেরে আচমকা নেমে আসা হড়পা বানে ভেসে যায় একের পর এক বাড়ি, হোটেল। ধারালী গ্রাম জলের তলায়। গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে পুণ্যার্থীরা এই ধারালীতে আশ্রয় নেন। সেজন্য এখানে অনেক হোটেল, রেস্তরাঁ এবং হোম স্টে রয়েছে। জলের তোড়ে ভেসে যায় হর্ষিলের এক সেনা ছাউনিও। নিখোঁজ ন’জন জওয়ান। তবে সেই ধাক্কা সামলে হড়পা বানের বিধ্বস্ত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনা। সেনার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে ১৫০ জওয়ান ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিপর্যস্ত নাগরিকদের সবরকম সাহায্য করতে দায়বদ্ধ ভারতীয় সেনা।”

    জায়গায় জায়গায় ধস, চলবে বৃষ্টি

    জায়গায় জায়গায় ধস (Uttarakhand’s Dharali) নামার কারণে উদ্ধারকাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। সাতটি রাজ্য সড়ক, পাঁচটি জাতীয় সড়ক, দু’টি সীমান্ত সড়ক-সহ রাজ্যে মোট ১৬৩টি রাস্তা ধসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উত্তরকাশীতে ধসের নীচে কেউ চাপা পড়ে আছেন কি না, খুঁজে বার করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে আসা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তিনটি দল উদ্ধারকাজে নেমেছে। অতিরিক্ত আরও দু’টি দলকে দেরাদুন বিমানবন্দর থেকে আকাশপথে নিয়ে আসা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। বুধবারও বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা কম বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।

    জেলা প্রশাসনের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালু

    রাজ্যের এই আবহে প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। ন’জেলার সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। উত্তরাখণ্ডের প্রিন্সিপাল সচিব আরকে সুধাংশু জানিয়েছেন, ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরগুলি হল ০১৩৭৪-২২২১২৬, ২২২৭২২ এবং ৯৪৫৬৫৫৬৪৩১। উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিনিয়র আইপিএস অফিসাররা—আইজি এসডিআরএফ অরুণ মোহন জোশী, আইজি গড়ওয়াল রেঞ্জ রাজীব স্বরূপ, প্রদীপ কুমার রাই, অমিত শ্রীবাস্তব, সুরজিৎ সিং পানওয়ার ও শ্বেতা চৌবে।

    যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

    ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরকাশী-হর্ষিল (Uttarkashi Cloudburst) সড়কে ধস নেমেছে। ফলে ওই সড়কে বেশ কয়েকটি অংশ বন্ধ। প্রভাব পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। ধসের কারণে উত্তরকাশীর সঙ্গে ধারালী এবং গঙ্গোত্রীর যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ফলে উদ্ধারকাজ থমকে রয়েছে বহু জায়গায়। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা হরিদ্বার, নৈনিতাল এবং উধম সিং নগর জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও কম-বেশি বৃষ্টি চলবে। কোথাও লাল সতর্কতা জারি, আবার কমলা সতর্কতা। ৯ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে দুর্যোগ।

    পরিষেবা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা

    প্রকৃতির এমন দুর্যোগপূর্ণ রূপে ব্যাপক সমস্যায় তীর্থযাত্রীরা। চারধাম যাত্রা শুরু হয়ে গেলেও গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন তীর্থ যাত্রীরা। কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী যাত্রা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এক মাস আগেই উত্তরকাশীতে হরপা বান নামে। উত্তরাখণ্ডে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজের পাশাপাশি প্রাথমিক পরিষেবাগুলির পুনরুদ্ধারে জোর দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ দফতর ও উত্তরাখণ্ড জল বিদ্যুৎ নিগম যৌথভাবে কাজ করে চলেছে। সরকার ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনার সহায়তা চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চণ্ডীগড় এয়ার বেসে চিনুক, এমআই১৭ভি৫, এএলএইচ এবং চিতা হেলিকপ্টার standby তে রাখা হয়েছে, যাতে আবহাওয়ার উন্নতি ঘটলেই সেগুলি দ্রুত উদ্ধার সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে পাঠানো যায়।

LinkedIn
Share