Tag: Vladimir Putin India Visit

  • Vladimir Putin India Visit: সময় পরীক্ষিত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়! অর্থনীতি–প্রতিরক্ষা–পর্যটন–শিক্ষাসহ নানা চুক্তি ভারত-রাশিয়ার

    Vladimir Putin India Visit: সময় পরীক্ষিত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়! অর্থনীতি–প্রতিরক্ষা–পর্যটন–শিক্ষাসহ নানা চুক্তি ভারত-রাশিয়ার

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত সফর শেষ করে শুক্রবার রাতেই দেশ ছাড়লেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russian President, Vladimir Putin)। ২৮ ঘণ্টার ব্যস্ত সূচি শেষে বিদায়বেলায় পুতিনকে এগিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা, ব্যাঙ্কোয়েট হলে মোদি (PM Narendra Modi)–পুতিনের পাশাপাশি বসা, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বক্তব্য—সব মিলিয়ে বৈঠকের গাম্ভীর্য থেকে জোরদার বার্তা পাঠাল দুই দেশ। শুরু হল দিল্লি–মস্কো (Vladimir Putin India Visit) সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়। বাণিজ্য থেকে জ্বালানি, পারমাণবিক শক্তি থেকে প্রতিরক্ষা—প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করে ফেলল দুই দেশ।

    জ্বালানি ও বাণিজ্যে গভীরতর সম্পর্ক

    দিল্লি-মস্কো ঠিক করে ফেলল আগামী ছয় বছরের বাণিজ্যিক পথনকশা। লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যেই ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। বৈঠক শেষে রাশিয়ার স্পষ্ট বার্তা, “ভারতকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে তেল সরবরাহ করতে প্রস্তুত মস্কো।” জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পারমাণবিক শক্তি—সব খাতেই যৌথ উন্নয়নে এগোবে দুই দেশ। জ্বালানি নিরাপত্তাকে ভারত–রাশিয়া অংশীদারিত্বের মূল স্তম্ভ বলে উল্লেখ করেন মোদি। তিনি বলেন, নাগরিক পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা দুই দেশের পরিচ্ছন্ন জ্বালানি লক্ষ্যের প্রতি অঙ্গীকারকে আরও জোরদার করছে। দুই দেশই রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। পাশাপাশি, জি-২০, ব্রিকস, এসসিওর মতো ফোরামে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। প্রতিরক্ষায় যৌথ উৎপাদন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এদিন রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারত ও রাশিয়ার লেনদেন পৌঁছে গিয়েছে ৬৪ বিলিয়ন ডলারে। শীঘ্রই এই অঙ্কটা পৌঁছে যাবে ১০০ বিলিয়ন ডলারে।” একইসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট জানা এই বাণিজ্যের ৯৬ শতাংশই হয়েছে দেশীয় মুদ্রায় অর্থাৎ ভারতের টাকা ও রাশিয়ার রুবেলে মাধ্যমে। অর্থাৎ ডলারকে পাশ কাটিয়ে দেশীয় মুদ্রায় লেনদেনের ক্ষেত্রে জোয়ার এনেছে দুই দেশ। যা আমেরিকার ডলার অস্ত্রকে কড়া জবাব বলেই মনে করা হচ্ছে।

    রাশিয়ায় দু’টি নতুন দূতাবাসের উদ্বোধন

    সম্মেলনের পর এক্স-এ প্রধানমন্ত্রী মোদি লিখেছেন, “২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নানান দিক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। আমরা ২০৩০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচিতে সম্মত হয়েছি। সংযোগ বৃদ্ধি, জাহাজ নির্মাণ, দক্ষতা উন্নয়ন, শক্তি, গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ বহু ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।” রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ভারত আবারও জানিয়েছে—ভারত শান্তির পক্ষেই। মোদি জোর দিয়ে বলেছেন, স্থায়ী শান্তিই ভারতের লক্ষ্য, এবং অচলাবস্থা নিরসনে শান্তিপূর্ণ সমাধান জরুরি। শুক্রবার যৌথ প্রেস বৈঠক থেকে রাশিয়ায় দু’টি নতুন দূতাবাসের উদ্বোধনের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন তিনি বলেন, ‘ভারত-রাশিয়ার সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিকটাই হল উভয় দেশের সংস্কৃতি ও জনসাধারণ।’ আর সেই সংস্কৃতি ও জনসাধারণের মেলবন্ধনকে বজায় রাখতে রাশিয়ার কাজান এবং ইয়েকাতেরিনবুর্গে দু’টি ভারতীয় দূতাবাস খুলেছে নয়াদিল্লি। যার উদ্বোধন হল শুক্রবার।

    কুড়ানকুলামের দায়িত্ব নিলেন পুতিন

    ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কুড়ানকুলামে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে রাশিয়া। তামিলনাড়ুর এই পারমাণবিক কেন্দ্রে ছয়টি চুল্লির মধ্য়ে দু’টি ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাকি চারটি এখনও নির্মীয়মান। সেগুলির দায়িত্ব নিতে চায় রাশিয়া, জানিয়েছেন খোদ পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করব আমরা।’ দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী মন্তব্য করেন পুতিন। তিনি বলেন, “আগামী দিনে আমাদের এই বন্ধুত্ব বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তি দেবে এবং এই বিশ্বাস আমাদের যৌথ ভবিষ্যৎ আরও সমৃদ্ধ করবে।” মোদি এদিন ভারত–রাশিয়া বন্ধুত্বকে “ধ্রুবতারা” বলে অভিহিত করেন—যা বহু ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও অটুট থেকেছে। ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ফোরামের সঙ্গে দ্রুত এফটিএ (FTA) সম্পাদনের আহ্বান জানায় ভারত-রাশিয়া। দুই নেতা দ্রুত ইএইউ (Eurasian Economic Union)-এর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়ে মতৈক্যে আসেন।

    ২৩তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যে প্রধান সমঝোতাগুলিতে সই হয়েছে—

    ভারত–রাশিয়া কৌশলগত সহযোগিতা কর্মসূচি (২০২৩–২০৩০)—বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জাহাজ নির্মাণ, শক্তি, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ইত্যাদিতে সহযোগিতা বিস্তারের লক্ষ্যে একগুচ্ছ চুক্তি।

    দুই দেশের নাগরিকদের অস্থায়ী শ্রম কার্যক্রম সংক্রান্ত চুক্তি

    অবৈধ অভিবাসন দমনে সহযোগিতা

    উভয় দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মধ্যে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতা

    খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা

    মেরু জলে পরিচালিত জাহাজের বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষণে সহযোগিতা

    রাসায়নিক সার খাতে সহযোগিতা

    পণ্য ও যানবাহনের প্রি-অ্যারাইভাল তথ্য বিনিময়

    দুই দেশের ডাক ও যোগাযোগ বিভাগে চুক্তি

    মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় ও লোমোনোসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে শিক্ষা সহযোগিতা

    তথ্য ও সম্প্রচার ক্ষেত্রে প্রসার ভারতী ও রাশিয়ার বিভিন্ন মিডিয়া সংস্থার মধ্যে একাধিক চুক্তি

    ভারত নেতৃত্বাধীন ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্সে (IBCA) রাশিয়ার যোগদানের জন্য কাঠামোগত চুক্তি

    “ইন্ডিয়া ফেব্রিক অফ টাইম” (India, Fabric of Time) প্রদর্শনীর আয়োজন

    রুশ নাগরিকদের জন্য ৩০ দিনের ই-ট্যুরিস্ট ভিসা বিনামূল্যে প্রদান

    রুশ পর্যটকদের জন্য গ্রুপ ট্যুরিস্ট ভিসা বিনামূল্যে প্রদান

  • Vladimir Putin India Visit: ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত-রাশিয়া কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে’’ বন্ধু পুতিনকে পাশে  নিয়ে পাকিস্তানকে বিঁধলেন মোদি

    Vladimir Putin India Visit: ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত-রাশিয়া কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে’’ বন্ধু পুতিনকে পাশে নিয়ে পাকিস্তানকে বিঁধলেন মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত ও রাশিয়া সন্ত্রাসের মোকাবিলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে। শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin India Visit) সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘বন্ধু’ পুতিন। ঠিক এই সম্বোধন দিয়েই শুক্রবার যৌথ সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মোদি বলেন, ‘‘২৫ বছর আগে পুতিন আমাদের সঙ্গে স্ট্র‍্যাটেজিক পার্টনারশিপের সূত্রপাত করেছিল। ⁠ভারতের প্রতি পুতিনের দায়বদ্ধতা এবং বন্ধুত্বের জন‍্য আমি আমার বন্ধু পুতিনকে ধন‍্যবাদ জানাই৷’’ এদিন হায়দ্রাবাদ হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ‘ডিয়ার ফ্রেন্ড’ হিসেবে সম্বোধন করেন পুতিন৷

    ইকোনমিক কোঅপারেশন প্রোগ্রাম

    মোদির (Modi-Putin Meet) কথায়, ‘‘ভারত-রুশ বন্ধুত্ব সময়ের সব পরীক্ষায় পাশ করেছে৷ ⁠আজ আমরা এই বন্ধুত্বকে আরও পোক্ত করতে আলোচনা করেছি৷’’ এরপরেই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ⁠২০৩০ সাল পর্যন্ত ভারত এবং রাশিয়া একটি ইকোনমিক কোঅপারেশন প্রোগ্রামে সম্মতি হয়েছে ৷ মোদি জানান, ‘‘ভারত-রাশিয়া বিজনেস ফোরামে ⁠এক্সপোর্ট এবং কোঅপারেশনের রাস্তা খুলবে দু’দেশের৷ ⁠কৃষি এবং ফার্টিলাইজারের ক্ষেত্রেও আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক কৃষকদের জন‍্য অনেক লাভদায়ক হবে। ভারত এবং রাশিয়া একসঙ্গে তৈরি করবে ইউরিয়া৷’’ শিপ বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও রাশিয়া ভারতকে নতুন সুযোগ দেবে বলে জানান তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী মোদির কথায়, এই সমন্বয় এবং বন্ধুত্ব, সবটাই নতুন মাত্রা পেয়েছে পুতিনের নেতৃত্বে। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজ থেকে ১৫ বছর আগে ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক বিশেষ অংশীদারিত্বের তকমা পেয়েছিল। এমনকি, গত ২৫ বছর ধরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন পুতিন। আমি তাঁর এই কৃতিত্বকে সম্মান জানাই।’’

    সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোরালো সুর

    এদিন হায়দ্রাবাদ হাউসে মোদিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে। সেটা পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হোক বা ক্রোকাস সিটি হলে কাপুরুষোচিত হামলা, এই সমস্ত ঘটনার মূলে একই। ভারতের অটল বিশ্বাস যে সন্ত্রাসবাদ মানবতার মূল্যবোধের উপর সরাসরি আক্রমণ। এবং এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঐক্যই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। রাষ্ট্রসংঘ, জি২০, ব্রিকস, এসসিও এবং অন্যান্য ফোরামে ভারত ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। আমরা এই সমস্ত ফোরামে আমাদের আলোচনা এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সাম্প্রতিক অতীতেই বারংবার পাক প্রধানমন্ত্রী ও পাক সেনাপ্রধানকে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে ইঙ্গিতে ‘ভারতবিরোধী’ হুঙ্কার তুলতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার যেন সেই সকল হুঙ্কারের জবাব দিয়ে দিলেন মোদি।

    ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ

    এদিকে শুক্রবার বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “ভারত নিরপেক্ষ নয়। ভারত শান্তির পক্ষে। এটা শান্তির যুগ। সাম্প্রতিক অতীতে শান্তি ফেরাতে অনেক চেষ্টা হয়েছে। আমার বিশ্বাস গোটা বিশ্ব আবারও শান্তির পথে ফিরবে।” নেতা হিসেবেও পুতিনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মোদি। তিনি বলেন, “যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রকৃত বন্ধুর মতো ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন পুতিন। সমস্ত তথ্য জানিয়েছেন।” মোদির কথায়, আগামী দিনে বিশ্বে শান্তি ফিরবে বলে আশাবাদী তিনি, কারণ শান্তির মাধ্যমেই বিকাশ ঘটবে।

    স্পেশাল কারেন্সি তৈরির পথে

    বর্তমানে ২৭ ঘণ্টার সফরে ভারতে এসেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতের মাটিতে পা রাখেন পুতিন৷ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মাঝে পুতিনের এই ভারত সফরের দিকে বিশেষ নজর রাখছে ওয়াশিংটনও৷ আজ, শুক্রবার সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূর সঙ্গে দেখা করেন পুতিন৷ তারপরে হয় মোদি-পুতিন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক৷ বৈঠক শেষে দুই রাষ্ট্রনেতাই যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন, মোদিকে ‘ডিয়ার ফ্রেন্ড’ বলে বক্তব্য শুরু করেন। পুতিন বলেন, ‘‘আমরা স্পেশাল কারেন্সি তৈরির দিকে এগোচ্ছি৷ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য লেনদেনে জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে—এখন বাণিজ্য লেনদেনের ৯৬ শতাংশই জাতীয় মুদ্রায় হচ্ছে।” ⁠এনার্জি তৈরির ক্ষেত্রে সফল পার্টনারশিপ রয়েছে রাশিয়ার। ⁠ পুতিন বলেন, ‘‘ভারতে বৃহত্তম নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, কুডানকুলাম তৈরিতে আমরা সহযোগিতা করছি৷ ⁠ভারতের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা চলছে—ছয়টির মধ্যে তিনটি রিঅ্যাক্টর ইতোমধ্যেই গ্রিডে সংযুক্ত হয়েছে।’’

    নতুন আন্তর্জাতিক ট্রেড করিডোর

    পুতিন জানান, এই বৈঠকের পরে ভবিষ্যতে ⁠নিরাপত্তা, বাণিজ্য, সংস্কৃতি সহ একাধিক ক্ষেত্রে দু’দেশের সম্পর্ক আগের তুলনায় আরও মজবুত হবে৷ তাঁর কথায়, ‘‘নতুন আন্তর্জাতিক ট্রেড করিডোর তৈরির পরিকল্পনা করছি আমরা। যার মধ্যে অন্যতম হল উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডর প্রকল্প। রাশিয়ার টিভি চ‍্যানেল আরটি আজ থেকে ভারতে নিজেদের ব্রডকাস্ট শুরু করছে৷ ⁠আগামিবছর ভারত ব্রিকসে চেয়ার গ্রহণ করবে। আমাদের তরফে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে ভারতকে৷ গত বছর ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১২ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৬৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আমরা এই পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হব বলে মনে করি। মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের প্রক্রিয়া আমাদের বাণিজ্য আরও বাড়াতে সাহায্য করবে। গত অর্ধশতাব্দী ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণে রাশিয়া সহযোগিতা করে আসছে। আমাদের আলোচনার ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক। এই সফর দু’দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’’

  • Vladimir Putin India Visit: একান্ত নৈশভোজে বিশেষ আলাপ! বন্ধু পুতিনকে ভগবদ গীতা উপহার মোদির

    Vladimir Putin India Visit: একান্ত নৈশভোজে বিশেষ আলাপ! বন্ধু পুতিনকে ভগবদ গীতা উপহার মোদির

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে (Vladimir Putin India Visit) ভগবদ গীতা উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi Putin Meet)। এক্স হ্যান্ডলে বিশেষ এই উপহারের কথা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘গীতার শিক্ষা পৃথিবী জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়।’’ তাই প্রেসিডেন্ট পুতিনকে দেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো উপহার আর কিছুই হতে পারে না, বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। পুতিনের হাতে মোদি যে গীতা তুলে দেন, তা রুশ ভাষায় অনূদিত। বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির ৭, লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের একান্ত নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই বন্ধু পুতিনকে এই বিশেষ উপহার দেন মোদি।

    মোদি-পুতিন বিশেষ সম্পর্ক

    ভারতের মাটিতে পুতিনকে স্বাগত জানাতে প্রোটোকল ভেঙে নিজেই বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করমর্দন ও আলিঙ্গন করে দুই রাষ্ট্রপ্রধান রওনা দিয়েছিলেন একই গাড়িতে। পুতিনকে স্বাগত জানাতে পালাম বিমানবন্দরে রুশ শিল্পীরা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। তার পরে প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকারি গাড়ি ‘ফরচুনার’-এ চেপেই দুই নেতা ৭, লোককল্যাণ মার্গে পৌঁছন। পুতিন ‘ফরচুনার’-এ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হয় হুবহু সেই মুহূর্ত যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চিনের তিয়ানজিন দেখেছিল। সেখানে এসসিও সামিটের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট পুতিন তাঁর ‘অরাস সেনাত’-এ মোদিকে ডেকে নিয়েছিলেন! এ বার ডিসেম্বরের শীতে গোটা দুনিয়া দেখল ঠিক তার উল্টো ছবি। ‘ফরচুনার’ পিছু পিছু চলল ‘সর্ববিপদহরেষু’ অরাস সেনাত।

    মোদির আমন্ত্রণে নৈশভোজে পুতিন

    বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে একটি নৈশভোজে যোগ দেন পুতিন। সেখানেই তাঁর হাতে গীতা তুলে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দুই নেতার বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকারি বাসভবনে, যেখানে ভারত–রাশিয়া বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিশেষ আলোকসজ্জা ও দুই দেশের পতাকা সাজানো ছিল। বৈঠকের আগে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মোদি লিখেছিলেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে যাবতীয় আলোচনা নিয়ে আশাবাদী। ভারত–রাশিয়া বন্ধুত্ব বহু দশকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এই সম্পর্কে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হয়েছে। ভারতে আসের আগেই অবশ্য রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব বহু পুরোনো। ইউক্রেন যুদ্ধের অনেক অনেক আগে থেকেই তা রয়েছে। তাতে কোনও ফাটল ধরেনি।’

LinkedIn
Share