Tag: Waqf Board

  • Waqf Amendment Act 2025: সংশোধিত ওয়াকফ আইন লাগু হলে ২৫৬টি ঐতিহাসিক কাঠামোর মালিকানা বদল হতে পারে

    Waqf Amendment Act 2025: সংশোধিত ওয়াকফ আইন লাগু হলে ২৫৬টি ঐতিহাসিক কাঠামোর মালিকানা বদল হতে পারে

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর (Waqf Amendment Act 2025) হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৫৬টি ঐতিহাসিক কাঠামোর মালিকানায় বদল ঘটতে পারে। এই সম্পত্তিগুলির অনেকগুলিই ইতিমধ্যেই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআইয়ের) (ASI) সুরক্ষায় রয়েছে। শীঘ্রই এগুলিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এএসআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে। আর যদি তা হয়, তাহলে বাতিল হয়ে যাবে ওয়াকফ বোর্ডগুলির দীর্ঘদিনের অবৈধ দাবি।

    মূল বিতর্কের কেন্দ্রে (Waqf Amendment Act 2025)

    মূল বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে “ব্যবহারের মাধ্যমে ওয়াকফ” বিভাগে অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তিগুলি, যেগুলি ঐতিহাসিকভাবে ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হলেও ওয়াকফ সম্পত্তির প্রমাণপত্র নেই। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডগুলিকে ছ’মাসের মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টালে বৈধ মালিকানার নথি আপলোড করতে হবে। সর্বোচ্চ আরও ছ’মাসের সময় বাড়তি দেওয়া হতে পারে। নির্দেশিকা মেনে না চললে আপনাআপনিভাবেই দাবি বাতিল হয়ে যাবে এবং ঐতিহ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে তালিকাভুক্ত স্মৃতিসৌধগুলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এএসআইয়ের হাতে ফিরে যাবে। বিতর্কিত কাঠামোগুলির মধ্যে রয়েছে দিল্লির পুরানো কেল্লা, অগ্রসেন কি বাওলি, হুমায়ূনের সমাধি এবং মোতি মসজিদ, রাজস্থানের আমের জামা মসজিদ, মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গজেবের সমাধি, এবং প্রতাপগড় দুর্গও।

    প্রধান বিচারপতির মন্তব্য

    দিল্লির অগ্রসেন কি বাওলি এএসআইয়ের তালিকাভুক্ত একটি সুরক্ষিত স্থান। এর পশ্চিম পাশে একটি ছোট মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদকে ভিত্তি করে ওয়াকফ বোর্ড সুরক্ষিত স্থানেরও মালিকানার দাবি করেছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ালে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়। কোর্ট আইনটি স্থগিত না করলেও কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের পরামর্শ দিয়েছে (Waqf Amendment Act 2025)। ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) মন্তব্য করেছেন যে, আরও নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সংশোধিত আইনের অধীনে নতুন কোনও নিয়োগ করা যাবে না। তবে আদালত স্পষ্ট করেছে যে বিদ্যমান ওয়াকফ রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে না এবং একতরফা পদক্ষেপ রোধ করতে বর্তমান অবস্থা বজায় রাখার আহ্বানও জানানো হয়েছে। আদালত আরও অনুরোধ করেছে যে আবেদনকারীরা যেন শুনানিকে সহজলভ্য করতে তাদের যুক্তির পরিধি পাঁচটি মূল ইস্যুতেই সীমাবদ্ধ রাখে।

    প্রসঙ্গত, ওয়াকফ বোর্ড এবং এএসআইয়ের মধ্যের এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তাজমহলের মতো স্মারকগুলিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রচেষ্টা নথিভিত্তিক প্রমাণের অভাবে ব্যর্থ হয়েছে (ASI)। ২০০৫ সালে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড তাজমহলকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করেছিল। ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই দাবি খারিজ করে দেয়। প্রশ্ন তোলে, এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও আইনি বৈধতা নিয়েও (Waqf Amendment Act 2025)।

  • Waqf Amendment Bill: ‘আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে অভূতপূর্ব মুহূর্ত’, ওয়াকফ বিল পাশ নিয়ে মোদি

    Waqf Amendment Bill: ‘আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে অভূতপূর্ব মুহূর্ত’, ওয়াকফ বিল পাশ নিয়ে মোদি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোকসভার (Lok Sabha)পর রাজ্যসভাতেও (Rajya Sabha) পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill)। তার পরেই এই ঘটনাকে ‘এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটিকে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেওয়ার জন্য সাংসদ এবং সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী (PM Modi)। এই বিল পাশ হওয়াকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে দাবি করেছেন মোদি।

    স্বচ্ছতার লক্ষ্যেই নয়া বিল

    বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে এখন তাইল্যান্ডে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সেখান থেকেই শুক্রবার সকালে সমাজমাধ্যমে মোদি লেখেন, “সংসদের দুই কক্ষে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার ঘটনা আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা, সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত।” প্রধানমন্ত্রী জানান, এত দিন যাঁরা প্রান্তিক এবং বঞ্চিত ছিলেন, ওয়াকফ সংক্রান্ত নতুন আইন তাঁদের সাহায্য করবে। ওয়াকফ ব্যবস্থার ‘ত্রুটি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “বহু দশক ধরে ওয়াকফ ব্যবস্থা আর স্বচ্ছতার অভাব কার্যত সমার্থক ছিল। এই কারণে মুসলমান মহিলা, গরিব মুসলমান এবং পসমন্দা মুসলমানদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সংসদে পাশ হওয়া এই বিল স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাখবে।”

    সংখ্যালঘু মুসলিমদের কণ্ঠস্বর

    সংখ্যালঘু মুসলিমদের কণ্ঠস্বরে পরিণত হবে এই ওয়কফ সংশোধনী বিল (Waqf Amendment Bill), আশা প্রধানমন্ত্রীর। মুসলিম গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এই বিল পাশ মোদি সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রয়াস। প্রথমটি ছিল তিন তালাক। উল্লেখ্য, দু’দিন ধরে সংসদে ম্যারাথন বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার রাতে পাশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫। এ বার রাষ্ট্রপতির সইয়ের অপেক্ষা। তার পরই তা আইনে পরিণত হবে। ওয়াকফ বিল অন্যায় ও দুর্নীতির যুগের অবসান ঘটিয়ে ন্যায়বিচার ও সাম্যের যুগের সূচনা করবে। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ বিল, ২০২৫ অনুমোদনের মধ্যে দিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অন্যায় ও দুর্নীতির যুগের অবসান ঘটিয়ে ন্যায়বিচার ও সাম্যের যুগের সূচনা হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিলের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে অভিনন্দন জানাই। সেই সঙ্গে, এই বিলকে সমর্থন করার জন্য সমস্ত দল এবং সংসদ সদস্যদের আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’

  • Waqf Amendment Bill: গভীর রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ সংশোধিত ওয়াকফ বিল, রাষ্ট্রপতির সই হলেই কার্যকর নতুন আইন

    Waqf Amendment Bill: গভীর রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ সংশোধিত ওয়াকফ বিল, রাষ্ট্রপতির সই হলেই কার্যকর নতুন আইন

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল। বুধবার লোকসভার (Lok Sabha) মতোই বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই বিলটি রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) পাশ হয়। লোকসভায় পাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংসদের উচ্চকক্ষেও স্বীকৃতি পেল ওয়াকফ বিল (Waqf Amendment Bill)। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই আইনে পরিণত হবে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল।

    ৭০ বছরের পুরনো আইনে বদল

    বদলে যাবে ৭০ বছরের পুরনো আইন। ১৯৫৪ সালের আইনকে সংশোধন করে ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ৩০ বছর পরে যে সংশোধনে সিলমোহর দিল ভারতীয় সংসদ, তাতে বোর্ডের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার খোলনলচে বদলে যেতে চলেছে। দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ ওয়াকফ বোর্ড পেতে চলেছে দেশ। সমস্ত বিতর্ক এবং সংশোধনী নিয়ে ভোটাভুটি শেষে বৃহস্পতিবার রাত ২টো ১৯ মিনিটে ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫’ পাশ করানোর প্রস্তাব পেশ করেন সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ধ্বনিভোটের ফলাফলে বিরোধী শিবির সন্তুষ্ট হয়নি। তাঁরা বিভাজন (ডিভিশন) চান। ভোটাভুটি শেষে রাত ২টো ৩৪ মিনিটে ফল ঘোষিত হয়। তাতে দেখা যায় বিলের পক্ষে পড়েছে ১২৮টি ভোট। আর বিপক্ষে পড়েছে ৯৫টি ভোট। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ বিল (Waqf Amendment Bill) রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যায়।

    গরিব মুসলিমদের রক্ষা করবে এই বিল

    প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়াও ওয়াকফ বিলকে (Waqf Amendment Bill) সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘‘এই বিল গরিব মুসলিমদের রক্ষা করবে তাঁদেরই ধনী অংশের হাত থেকে। ন্যায়ের স্বার্থে এই নতুন বিল আমাদের সংবিধানের বুনিয়াদি নীতিগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এ কথা মনে রাখতে হবে যে, নতুন ওয়াকফ বিল মুসলিমদের ধর্মাচরণে কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করছে না।’’ দেশে যে বিপুল পরিমাণ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যেই এই বিল আনা হয়েছে বলে মত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর।

    ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫-র নয়া নাম উমিদ

    এদিনও ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫’ নিয়ে বিতর্ক চলে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছেন, আমরা এই বিলের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাচ্ছি। কিন্তু ভয় আমরা দেখাচ্ছি না। ভয় আপনারা দেখাচ্ছেন। সিএএর সময়েও অনেকে ভয় দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সিএএ পাশ হলেই অনেকের নাগরিকত্ব চলে যাবে। কিন্তু সিএএ পাশ হওয়ার পরে তেমন কিছু হয়নি। ওয়াকফ বিলের ক্ষেত্রেও আগে থেকে অনেকে ভয় দেখানোর কাজ করছেন। কিন্তু বিল পাশ হওয়ার পর দেখবেন, আগামিকাল থেকেই একে কী ভাবে স্বাগত জানানো হয়।’’ তিনি আরও জানান, ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫-র নাম বদলে রাখা হচ্ছে উমিদ (ইউনিফায়েড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট এমপাওয়ারমেন্ট এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) বিল।

    ওয়াকফ বোর্ডে মুসলিমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ

    এদিন রাজ্যসভায় আলোচনার শুরুতেই রিজিজু বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তির মূল উদ্দেশ্য দরিদ্র, অনাথ শিশু ও মহিলাদের কল্যাণ। অথচ এত সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও আয় হচ্ছে সামান্যই। সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৬ সালে দেশে ৪.৯ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল, যেখান থেকে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও আদতে আয় হয়েছিল মাত্র ১৬৩ কোটি। ২০১৩ সালে আইনে কিছু পরিবর্তন আনা হলেও আয় খুব একটা বাড়েনি। নতুন আইন এই ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাবে বলে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। নতুন আইনে কেন ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে, বিরোধীদের এই প্রশ্নের জবাবে রিজিজু বলেন, ‘‘ওয়াকফ বোর্ড একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা। একটি বিধিবদ্ধ সংস্থায় শুধু মুসলিমরা থাকবেন, আর কেউ থাকতে পারবেন না, এটা কী ভাবে হবে?’’ রিজিজুর কথায়, ‘‘বিধিবদ্ধ সংস্থাকে ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে এবং সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব সেখানে থাকা উচিত।’’ তবে রিজিজু এ-ও জানান যে, ২২ সদস্যের বোর্ডে সর্বোচ্চ চারজন অমুসলিম সদস্য থাকতে পারবেন। ফলে বিল (Waqf Amendment Bill) পাশ হয়ে তা আইনে পরিণত হলেও ওয়াকফ বোর্ডে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠই থাকবেন।

  • WAQF Amendment Bill: লোকসভায় পাশ সংশোধিত ওয়াকফ বিল, আজ পেশ রাজ্যসভায়

    WAQF Amendment Bill: লোকসভায় পাশ সংশোধিত ওয়াকফ বিল, আজ পেশ রাজ্যসভায়

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বুধবার গভীর রাতে লোকসভায় পাশ হল সংশোধিত ওয়াকফ বিল (WAQF Amendment Bill)। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দিলেন। ব্যবধান ৫৬। মোট ভোট পড়ল ৫২০। বৃহস্পতিবার বিল পেশ হবে রাজ্যসভায়। ঘড়ির কাঁটা তখন পার করেছে মধ্যরাত। ততক্ষণে লোকসভায় ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে ডিবেট। খাতায় কলমে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখ তখন ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার। আর সেই বৃহস্পতির রাত ২ টোয় লোকসভায় পাশ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল।

    ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫ পেশ রিজিজুর

    বুধবার লোকসভায় বিল পেশের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সরকারের অবস্থানের কথা জানান। এর পরে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫’ পেশ করেন। বিরোধীরা বিল নিয়ে ভুল তথ্য এবং গুজব ছড়াচ্ছেন বলে বুধবার লোকসভায় অভিযোগ করেন রিজিজু। বিলের সমালোচনা যাঁরা করছেন, তাঁদের নিশানা করে রিজিজু বলেন, “যখন আমরা কোনও ইতিবাচক সংস্কার আনছি, তখন কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে?” আলোচনা এবং সকলের মতামত নেওয়ার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসিকে ধন্যবাদ জানান রিজিজু। তিনি বলেন, “আমি জেপিসির সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ২৮৪টি প্রতিনিধিদল, ২৫টি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং ওয়াকফ বোর্ড এই বিষয়ে জেপিসির কাছে নিজেদের মতামত জানিয়েছে।”

    ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ

    বিল (WAQF Amendment Bill) পেশের পর পূর্বতন ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ করে রিজিজু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াকফের হাতে সংসদ ভবনের অধিগ্রহণ আটকেছেন। ইউপিএ সরকার সংসদ এবং বিমানবন্দরের জমি ওয়াকফের হাতে তুলে দিয়েছিল।” তাঁর দাবি, মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করছে না সংশোধিত ওয়াকফ বিল। শুধুমাত্র ওয়াকফ সম্পত্তির যথাযথ দেখভাল এবং পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের কল্যাণের উদ্দেশ্যেই ওয়াকফ আইন সংশোধনের এই উদ্যোগ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজ, আমাদের দেশে মোট ওয়াকফ সম্পত্তির সংখ্যা ৪.৯ লক্ষ থেকে বেড়ে ৮.৭২ লক্ষ হয়েছে। যদি এই পরিমাণ ওয়াকফ সম্পত্তি সঠিক ভাবে পরিচালিত হত, তা হলে কেবল মুসলমানদের জীবনকেই উন্নত করত না, সমগ্র দেশের ভাগ্যকেও বদলে দিত…।’’

    ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা

    ওয়াকফ বিল (WAQF Amendment Bill) বিতর্কে বুধবার লোকসভায় বিরোধীদের বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে অন্যের জমি দান করে দেওয়া যায় না। দান একমাত্র নিজের জমিই করা যায়।’’ সংসদে একটি তালিকা হাতে নিয়ে শাহ জানালেন, কোন কোন জমি ওয়াকফকে দান করা হয়েছে। শাহের বক্তব্য, তার মধ্যে মন্দিরের জমি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অন্যান্য ধর্মীয় স্থান এবং সরকারের জমি। বুধবার, লোকসভায় এই বিল পেশ করার পরেই বিরোধিতা করতে শুরু করেন কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি-সহ বিভিন্ন দলের সাংসদরা। এমনকী যৌথ সংসদীয় কমিটির প্রস্তাব মানা হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়। তবে, লোকসভায় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের উপর বিরোধী সদস্যদের আনা সংশোধনীগুলি গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কিরেন রিজিজুর দাবি, বিশ্বের একমাত্র ভারতে সব থেকে নিশ্চিন্তে আছেন সংখ্যালঘুরা। তাঁর দাবি, মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করছে না সংশোধিত ওয়াকফ বিল।

    বিরোধীদের তোপ শাহের

    বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘একজন মুসলিম তো চ্যারিটি কমিশনার হতেই পারেন। তাঁকে ট্রাস্ট দেখতে হবে না, আইন অনুযায়ী ট্রাস্ট কীভাবে চলবে, সেটা দেখতে হবে। এটা ধর্মের কাজ নয়। এটা প্রশাসনিক কাজ। সব ট্রাস্টের জন্য কি আলাদা আলাদা কমিশনার থাকবে? আপনারা তো দেশ ভাগ করে দিচ্ছেন। আমি মুসলিম ভাই-বোনদের স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনাদের ওয়াকফ বোর্ডে কোনও অমুসলিম থাকবে না। এই আইনে এমন কিছু নেই। আমি স্পষ্ট করে দিচ্ছি, মুসলিমদের ধর্মকর্ম, তাদের যে দানের ট্রাস্ট, তাতে সরকার কোনও দখলদারি চায় না। ওয়াকফ আপনাদেরই থাকবে।’’ শাহের দাবি, ‘‘ওয়াকফ বোর্ড ও ওয়াকফ পরিষদ কী করবে? ওয়াকফ সম্পত্তি যারা বিক্রি করে খাচ্ছে তাদেরকে তাড়ানো হবে। ওয়াকফের টাকা, যা দিয়ে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করা দরকার, সেই টাকা যারা চুরি করছে, তাদের ধরার কাজ করবে ওয়াকফ পরিষদ।’’ বিরোধীরা শুধু তোষণের জন্য বিরোধিতা করছেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ নেই, বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

  • Waqf Bill 2024: ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ সম্পর্কে অজানা তথ্য, কেন কেন্দ্র চাইছে এই নয়া আইন?

    Waqf Bill 2024: ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ সম্পর্কে অজানা তথ্য, কেন কেন্দ্র চাইছে এই নয়া আইন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ বুধবার সংসদে পেশ হল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পেশ করা হতে পারে এই বিল। এদিন সংসদের নিম্নকক্ষে এই বিলটি পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৪-এর উদ্দেশ্য হল ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান করা। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের মতে, সংশোধনী বিলের মূল উদ্দেশ্য ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তির প্রশাসন ও পরিচালনার উন্নতি করা।

    ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৪-এর ব্যাখ্যা

    ওয়াকফ বোর্ডের কাজকে সুনির্দিষ্ট জায়গায় আনা এবং ওয়াকফ সম্পত্তির সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৮ অগাস্ট দুটি বিল, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৪ এবং মুসলমান ওয়াকফ (বাতিল) বিল ২০২৪, লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল।
    ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৪-এর উদ্দেশ্য হল, ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫-এর সংশোধন করা। সংশোধনী বিল ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির পরিচালন ব্যবস্থায় উন্নয়ন ঘটাতে চায়। এর লক্ষ্য হল :
    ● পূর্ববর্তী আইনগুলির ত্রুটি কাটিয়ে উঠে আইনের নাম পরিবর্তনের মতো বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডগুলির কার্যকারিতা  বাড়ানো।
    ● ওয়াকফের সংজ্ঞা হালনাগাদ করা।
    ● নিবন্ধন প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটানো।
    ● ওয়াকফের নথিপত্র রাখার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা আরও বাড়ানো।

    নীচের প্রশ্নোত্তরগুলি ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ সম্পর্কে বুঝতে সহায়ক হবে—

    ১) ভারতে ওয়াকফ ব্যবস্থাপনার ভার কোন কোন প্রশাসনিক সংস্থার ওপর রয়েছে এবং তাদের ভূমিকা কী?

    ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা ওয়াকফ আইন ১৯৯৫ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি কেন্দ্রীয় সরকার প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করে। ওয়াকফ ব্যবস্থাপনায় জড়িত প্রধান প্রশাসনিক সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে :
    ❖ কেন্দ্রীয় ওয়াকফ পরিষদ (সিডব্লিউসি) – এটি সরকার এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলিকে নীতি সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়, কিন্তু ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে না।
    ❖ রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড (এসডব্লিউবি) – প্রতিটি রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি রক্ষা ও পরিচালনা করে।
    ❖ ওয়াকফ ট্রাইবুনাল – এই বিচারবিভাগীয় সংস্থা ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের নিষ্পত্তি করে।
    এই পদ্ধতিতে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির পরিচালনা ও বিবাদের নিষ্পত্তি হয়। বছরের পর বছর ধরে চলা বিভিন্ন আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে ওয়াকফ পরিচালন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, কার্যকরী ও দায়বদ্ধ করে তুলেছে।

    ২) ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলি কী?

    ১. ওয়াকফ সম্পত্তির অপরিবর্তনীয়তা

    ● “একবার ওয়াকফ, বরাবরের ওয়াকফ” নীতি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বেট দ্বারকার দ্বীপপুঞ্জের ওপর অধিকার আদালতগুলিকেও বিভ্রান্ত করছে।
    ২. আইনি বিরোধ ও দুর্বল পরিচালন ব্যবস্থা
    ওয়াকফ আইন ১৯৯৫ এবং ২০১৩ সালের সংশোধনী কার্যকর হয়নি। যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে তা হল :
    ● ওয়াকফ জমির অবৈধ দখল
    ● সুপরিচিত ব্যবস্থার অভাব এবং মালিকানা নিয়ে বিবাদ
    ● সম্পত্তির নিবন্ধীকরণ ও সমীক্ষায় দেরি
    ● বিপুল সংখ্যক মামলা এবং মন্ত্রকের কাছে অজস্র অভিযোগ

    ৩. বিচারবিভাগীয় তত্তাবধানের অভাব

    ● ওয়াকফ ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত উচ্চতর আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না।
    ● এর ফলে ওয়াকফ পরিচালন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা কমে যায়

    ৪. ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির অসম্পূর্ণ সমীক্ষা 

    ● জরিপ কমিশনারের কাজের মান ভালো না হওয়ায় বিলম্ব হয়।
    ● গুজরাট ও উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলিতে জরিপের কাজ এখনও শুরুই হয়নি।
    ● উত্তরপ্রদেশে ২০১৪ সালে একটি জরিপের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি।
    ● অভিজ্ঞতা অভাব এবং রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় নিবন্ধনের প্রক্রিয়া  ধীর গতিপ্রাপ্ত হয়।

    ৫. ওয়াকফ আইনের অপব্যবহার

    ●কিছু রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করায় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
    ●ওয়াকফ আইনের ৪০ নম্বর ধারার ব্যাপক অপপ্রয়োগ ঘটিয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তিগুলিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে আইনি লড়াই ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
    ● ৩০টি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে মাত্র ৮টি রাজ্যের তথ্য পাওয়া গেছে, যেখানে ৪০ নম্বর ধারার আওতায় ৫১৫টি সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

    ৬. ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা

    ● ওয়াকফ আইন শুধুমাত্র একটি ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, অন্য কোনও ধর্মের ক্ষেত্রে এমন আইন নেই। ওয়াকফ আইন সাংবিধানিকভাবে বৈধ কী না সেই প্রশ্ন তুলে দিল্লি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্ট এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবস্থান জানাতে বলেছে।

    ৩) এই বিল আনার আগে মন্ত্রক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে?

    সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিল নিয়ে আলোচনা করেছে। যেসব বিষয় আলোচনায় উঠেছে, তার মধ্যে রয়েছে সাচার কমিটির প্রতিবেদন, জনপ্রতিনিধিদের উদ্বেগ, অব্যবস্থা নিয়ে সংবাদমাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের বক্তব্য ওয়াকফ আইনের অপব্যবহার, ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির সঠিক ব্যবহার না করা প্রভৃতি। মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলির সঙ্গেও আলোচনা করেছে।
    মন্ত্রক ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনের সংস্থানগুলি খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এই নিয়ে দুটি বৈঠক হয়। ২৪.০৭.২৩ তারিখে একটি বৈঠক হয় লখনউতে, অপরটি ২০.০৭.২৩ তারিখে, দিল্লিতে। দুটি বৈঠকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সমস্যার সমাধানে যথাযথ আইনি সংশোধন আনা যে প্রয়োজন, সে বিষয়ে সব পক্ষই সহমত পোষণ করেন।
    ● কেন্দ্রীয় ওয়াকফ পরিষদ (সিডব্লিউসি) এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলির গঠনের ভিত্তি আরও প্রসারিত করা
    ● মুটাওয়ালিদের ভূমিকা ও দায়িত্ব
    ● ট্রাইবুনালগুলির পুনর্গঠন
    ● নিবন্ধন প্রক্রিয়ার উন্নতি
    ● স্বত্বাধিকার ঘোষণা
    ● ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির জরিপ
    ● ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির মিউটেশন
    ● মুটাওয়ালিদের হিসাবপত্র দাখিল
    ● বার্ষিক হিসাবপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে সংস্কার
    ● উচ্ছেদ করা সম্পত্তি/সীমাবদ্ধতা আইনের সংস্থানগুলির পর্যালোচনা
    ● ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা
    এছাড়া, মন্ত্রক সৌদি আরব, মিশর, কুয়েত, ওমান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়াকফ ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিক রীতিনীতি বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, সাধারণত সরকারি আইন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমেই ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি নিয়ন্ত্রিত হয়।

    ৪) ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ পেশ হওয়ার প্রক্রিয়াটি কী ছিল?

    ● ওয়াকফ সম্পত্তির দেখাশোনা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় খামতি দূর করার লক্ষ্যে ২০২৪–এর ৮ অগাস্ট পেশ করা হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪।
    ● ২০২৪ সালের ৯ অগাস্ট সংসদের উভয় পক্ষই এই বিলটি পর্যালোচনার জন্য ২১ জন লোকসভা এবং ১০ জন রাজ্যসভার সদস্যের যৌথ কমিটির কাছে পাঠায়।
    ● এই বিলের গুরুত্ব এবং ব্যাপক তাৎপর্যের প্রেক্ষিতে ঐ কমিটি সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞ/সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের মতামত যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
    ● যৌথ সংসদীয় কমিটির ৩৬টি বৈঠক হয়েছে, যেখানে শোনা হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রক/দফতরের প্রতিনিধিদের মতামত: সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক, আইন মন্ত্রক, রেল মন্ত্রক (রেল বোর্ড), আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক, সংস্কৃতি মন্ত্রক (ভারতের পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ), বিভিন্ন রাজ্য সরকার, রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষ ও বিশেষজ্ঞ।
    ● প্রথম বৈঠকটি হয় ২০২৪–এর ২২ অগাস্ট। যেসব সংগঠন ও পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, সেগুলি হ’ল:
    —অল ইন্ডিয়া সুন্নি জামিয়াতুল উলামা, মুম্বই;
    —ইন্ডিয়ান মুসলিমস্ অফ সিভিল রাইটস্ (আইএমসিআর), নতুন দিল্লি
    —মুত্তাহিদা মজলিস–এ–উলেমা, জম্মু ও কাশ্মীর (মিরওয়াইজ উমর ফারুক)
    —জাকাত ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া
    —অঞ্জুমান ই শিতেআলি দাউদি বোহরা কম্যুনিটি
    —চাণক্য ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি, পাটনা
    —অল ইন্ডিয়া পাসমান্দা মুসলিম মাহাজ, দিল্লি
    —অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি), দিল্লি
    —অল ইন্ডিয়া সুফি সাজ্জাদানাশিন কাউন্সিল (এআইএসএসসি), আজমেঢ়
    —মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ, দিল্লি
    —মুসলিম উইমেন ইন্টেলেকচ্যুয়াল গ্রুপ – ডঃ শালিনী আলি, জাতীয় আহ্বায়ক
    —জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ, দিল্লি
    —শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু অ্যান্ড ইন্টেলেকচ্যুয়াল গ্রুপ
    —দারুল উলুম দেওবন্দ
    ● কমিটি কাগুজে এবং ডিজিটাল পন্থায় মোট ৯৭,২৭,৭৭২টি স্মারকলিপি পেয়েছে।
    ● ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪–এর পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনার পর কমিটির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন শহরে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করেন। এইসব সফরের সুবাদে আরও নানা পক্ষের মতামত শোনা, বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা এবং ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনার ব্যবস্থা সংক্রান্ত আঞ্চলিক নানা বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া গেছে। ১০টি শহরে সফরের সময়সূচি:
    —সেপ্টেম্বর ২৬ – অক্টোবর ১, ২০২৪: মুম্বাই, আমেদাবাদ, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু
    —নভেম্বর ৯ – ১১, ২০২৪: গুয়াহাটি, ভুবনেশ্বর
    —জানুয়ারি ১৮ – ২১, ২০২৫: পাটনা, কলকাতা, লখনউ
    ● প্রশাসনিক এবং আইনি নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কমিটি ২৫টি রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছে (দিল্লিতে ৭টি, বিভিন্ন সফরে ১৮টি)।
    ● এরপর, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ যৌথ কমিটির ৩৭তম বৈঠকে বিলটির সব ধারার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। সদস্যদের বিভিন্ন সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হয় ভোটাভুটির মাধ্যমে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে।।
    ● গৃহীত এই খসড়া প্রতিবেদন পেশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় চেয়ারপার্সনকে। ৩৮তম বৈঠক হয় ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে।
    ● যৌথ কমিটি লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন তুলে দেয় ৩১.০১.২০২৫ তারিখে। সংসদের উভয় সভার কাছে তা পাঠানো হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে।

    ৫) ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪–এ প্রস্তাবিত মূল সংস্কারগুলি কী?

    ২০২৪–এর এই বিলের আওতায় প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলির লক্ষ্য– ভারতের ওয়াকফ প্রশাসনকে আরও সুবিন্যস্ত, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ করে তোলা। ওয়াকফ সম্পত্তির পরিচালন সংক্রান্ত বিষয়টিকে প্রযুক্তিচালিত এবং উপযুক্ত আইন বিধি অনুযায়ী এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সরকার। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকটিতেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

     সংযুক্ত ওয়াকফ ব্যবস্থাপনা

    ● ওয়াকফ সম্পত্তির অসম্পূর্ণ সমীক্ষা।
    ● বিভিন্ন ট্রাইব্যুনাল ও ওয়াকফ বোর্ড – এ মোকদ্দমা জমে থাকা।
    ● মুতাওয়ালিদের উপর নজরদারি এবং হিসেব-নিকেশে স্বচ্ছতার অভাব।
    ● ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির মিউটেশন ঠিকভাবে হয়নি।

    কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলির ক্ষমতায়ন

    ● সিদ্ধান্ত গ্রহণে দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে অমুসলিম, অন্যান্য মুসলিম গোষ্ঠী, মুসলিমদের মধ্যে অন্যান্য অনগ্রসর গোষ্ঠী এবং মহিলাদের অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিনিধিত্ব।

     রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলির দক্ষতা

    ● ওয়াকফ নিবন্ধন, সর্বেক্ষণ, মিউটেশন, অডিট, লিজ এবং মামলা-মোকদ্দমার বিষয়টি বৈজ্ঞানিক ও দক্ষ পন্থায় সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ডিজিটাল পোর্টাল ও ডেটাবেস।

    ওয়াকফ – এর বিকাশ

    ● পোর্টাল-ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা প্রশাসনকে জোরদার করবে।
    ● ধারা ৬৫ অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডগুলি প্রশাসনিক এবং আয় সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট দাখিল করবে ছ’মাসের মধ্যে, যাতে সময় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
    ● ধারা ৩২ (৪) অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডগুলি প্রয়োজন মতো মুতাওয়ালিদের থেকে পাওয়া সম্পত্তি এবং ওয়াকফ জমিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপণন কেন্দ্র কিংবা আবাসন গড়ে তুলবে।

    ৬) ওয়াকফ আইন ১৯৯৫ এবং ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪–এর মধ্যে পার্থক্য কী?

    ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪, ওয়াকফ বিল ১৯৯৫–এ বেশ কিছু পরিমার্জনা এনে ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনার বিষয়টি আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করে তুলতে চায়। পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ:

    বর্গ —> ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫ —> ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৪

    আইনের নাম —> ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫ —> নতুন নাম ইউনিফায়েড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট, এমপাওয়ারমেন্ট, এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৯৫

    ওয়াকফ – এর গঠন —> ঘোষণা অনুযায়ী, ব্যবহারকারী কিংবা প্রাপ্ত (ওয়াকফ-আলাল-অউলাদ) —> ব্যবহারকারীর মাধ্যমে ওয়াকফ বাতিল, প্রাপ্তি সংক্রান্ত ঘোষণা শুধু অনুমোদিত। দাতাদের ৫ বছরের বেশি সময় মুসলিম ধর্মাবলম্বী হতে হবে। মহিলাদের উত্তরাধিকার অস্বীকার করা যাবে না।

    ওয়াকফ হিসেবে সরকারি সম্পত্তি —> কোনও স্পষ্ট সংস্থান নেই —> ওয়াকফ হিসেবে চিহ্নিত সরকারি সম্পত্তি বলে কিছু থাকবে না। বিবাদ মীমাংসা করবেন কালেক্টর, রিপোর্ট দেবেন রাজ্য সরকারকে।

    ওয়াকফ নির্ধারণের ক্ষমতা —> ওয়াকফ বোর্ড – এর ক্ষমতা রয়েছে —> এই সংস্থান থাকছে না

    ওয়াকফ – এর সমীক্ষা —> সার্ভে কমিশনার এবং অ্যাডিশনাল কমিশনারদের মাধ্যমে —> রাজ্যের রাজস্ব আইন অনুযায়ী সমীক্ষা চালাবেন কালেক্টররা

    সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল —> সব সদস্যই হবেন মুসলিম, দু’জন মহিলা থাকবেন —> দু’জন অ-মুসলিম; সাংসদ, প্রাক্তন বিচারক এবং বিশিষ্টজনদের মুসলিম হওয়ার দরকার নেই। এই সদস্যদের মুসলিম হতে হবে: মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধি, ইসলামিক আইন বিশেষজ্ঞ, ওয়াকফ বোর্ড- এর চেয়ারপার্সন। মুসলিম সদস্যদের মধ্যে দু’জন মহিলা থাকবেন।

    রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড —> দু’জন পর্যন্ত নির্বাচিত মুসলিম সাংসদ/বিধায়ক/বার কাউন্সিল সদস্য; অন্তত দু’জন মহিলা —> রাজ্য সরকার সদস্য মনোনীত করবে, এর মধ্যে দু’জন অমুসলিম, শিয়া, সুন্নি, পিছিয়ে পড়া মুসলিম, বোহরা এবং আগাখানিদের মধ্য থেকে একজন। অন্তত দু’জন মহিলা সদস্য দরকার।

    ট্রাইব্যুনাল – এর গঠন —> একজন বিচারকের নেতৃত্বে, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং মুসলিম আইন বিশেষজ্ঞ থাকবেন —> মুসলিম আইন বিশেষজ্ঞ থাকার প্রয়োজন নেই; থাকবেন জেলা বিচারক (চেয়ারম্যান) এবং একজন যুগ্মসচিব (রাজ্য সরকার)

    ট্রাইব্যুনাল – এর নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন —> শুধুমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করবে —> ৯০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন জানানো যেতে পারে।

    কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা —> রাজ্য সরকারগুলি ওয়াকফ – এর হিসেব চাইতে পারে যে কোনও সময়েই —> কেন্দ্রীয় সরকার ওয়াকফ নিবন্ধন, হিসেব এবং অডিট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী (সিএজি/দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক)

    বিভিন্ন গোষ্ঠীর আলাদা ওয়াকফ বোর্ড —> শিয়া ও সুন্নিদের জন্য আলাদা বোর্ড (যদি শিয়া ওয়াকফ ১৫ শতাংশের বেশি হয়) —> বোহরা ও আগাখানি ওয়াকফ বোর্ড – এরও সংস্থান

    ৭) যৌথ কমিটির মূল সংস্কারমূলক প্রস্তাবগুলি কী?

    ওয়াকফ আইন ১৯৯৫–এ যে সংশোধনীগুলি এনে যৌথ কমিটি ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ (জেসিএডব্লিউবি)-এ যুক্ত করতে চায়, তা ইতিবাচক সংস্কারের কথা বলে:

    ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪–এ মূল সংস্কারের বিষয়গুলি

    ● i. ওয়াকফ–এর সঙ্গে ট্রাস্টের তফাত: মুসলিমদের তৈরি কোনও ট্রাস্ট আর কোনোভাবেই ওয়াকফ হিসেবে বিবেচিত হবে না। এর ফলে, ট্রাস্টগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
    ● ii. প্রযুক্তি ও কেন্দ্রীয় পোর্টাল: ওয়াকফ সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ, নিবন্ধন, হিসেব-নিকেশ, আর্থিক অনুদান, মামলা-মোকদ্দমা সবই পরিচালিত হবে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে। ব্যবস্থাটিকে স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
    ● iii. ওয়াকফ-এ সম্পত্তি প্রদানের যোগ্যতা: শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা (অন্তত ৫ বছর) নিজেদের সম্পত্তি ওয়াকফ’কে প্রদান করতে পারবেন, এক্ষেত্রে ২০১৩ সালের আগের সংস্থান ফিরে আসছে।
    ● iv. ‘ওয়াকফ বাই ইয়ুজার’ সম্পত্তি রক্ষা: শুধুমাত্র নিবন্ধিত সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে থাকবে, যদি না বিতর্ক থাকে বা সরকারি জমি হিসেবে চিহ্নিত হয়।
    ● v. ওয়াকফ অনুসারে পরিবারের মহিলাদের অধিকার: ওয়াকফ-কে উৎসর্গ করার আগে মহিলারা তাঁদের অধিকার অনুযায়ী প্রাপ্য সম্পদ পাবেন, এক্ষেত্রে বিধবা, বিবাহ বিচ্ছিন্না মহিলা এবং অনাথদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।
    ● vi. স্বচ্ছ ওয়াকফ ব্যবস্থাপনা: দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির জন্য মুতাওয়ালিসদের ছয় মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে সম্পত্তির বিস্তারিত তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রার করতে হবে।
    ● vii. সরকারি জমি এবং ওয়াকফ-এর মধ্যে বিবাদ: বিধিবহির্ভূত দাবি বন্ধ করতে যেসব সরকারি সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডে দাবি করা হয় সেগুলির বিষয়ে তদন্ত একজন আধিকারিক করবেন। পদমর্যাদার নিরিখে এই আধিকারিককে কালেক্টরের উর্ধতন পদে কর্মরত হতে হবে।
    ● viii. ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালকে শক্তিশালী করা হবে: নির্ধারিত একটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। নির্ধারিত একটি সময়ে তারা কর্মরত থাকবেন। এর মধ্য দিয়ে দক্ষভাবে স্থায়ী এক ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন বিবাদের নিষ্পত্তি করা হবে।
    ● ix. অ-মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব: এই প্রক্রিয়ায় সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় এবং বিভিন্ন রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডে দু-জন অ-মুসলিম সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
    ● x. বার্ষিক অনুদানের পরিমাণ হ্রাস: ওয়াকফ বোর্ডকে ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানগুলি যে বাধ্যতামূলক অনুদান দিয়ে থাকে তার পরিমাণ ৭% থেকে কমিয়ে ৫% করা হবে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি দাতব্য কর্মসূচিতে আরও তহবিল বরাদ্দ করতে পারবে।
    ● xi. লিমিটেশন অ্যাক্টের প্রয়োগ: ওয়াকফ সম্পত্তির দাবির ক্ষেত্রে লিমিটেশন অ্যাক্ট ১৯৬৩ প্রয়োগ করা যাবে। এর ফলে, দীর্ঘদিন ধরে আইনি প্রক্রিয়ার অবসান ঘটবে।
    ● xii. বার্ষিক হিসেব নিকেশের সংস্কার: যেসব ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকার উপর আয় করে তাদের রাজ্য সরকারের নিযুক্ত হিসেব রক্ষককে দিয়ে হিসেব নিকেশের তথ্য যাচাই করাতে হবে।
    ● xiii. একতরফা সম্পত্তি দাবির অবসান: এই বিলে ৪০ নম্বর ধারাকে অপসারিত করা হচ্ছে। এর ফলে, ওয়াকফ বোর্ড এক তরফাভাবে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে ঘোষণা করতে পারবে না। ফলস্বরূপ, পুরো একটি গ্রামকে ওয়াকফ ঘোষণার মত ক্ষমতার অবব্যবহার বন্ধ করা যাবে।

    ওয়াকফ বোর্ডগুলির এক তরফা এবং অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতার কারণেই এই সমস্যাগুলি দেখা দিত। তাই, ওয়াকফ আইনে ৪০ নম্বর ধারাটিকে বাতিল করা হবে। এর মধ্য দিয়ে ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনার জন্য স্বচ্ছ প্রশাসন নিশ্চিত করা যাবে।

    ৮) মুসলমান নন এমন ব্যক্তিদের সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করার নজির কী কী আছে?

    ২০২৪-এর সেপ্টেম্বর অনুযায়ী ২৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ওয়াকফ বোর্ডের প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ৫,৯৭৩টি সরকারি সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
    ● আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের ২০২৪-এর সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী ভূমি ও উন্নয়ন দপ্তরের ১০৮টি সম্পত্তি, দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৩০টি সম্পত্তি এবং সর্বসাধারণের জন্য নির্ধারিত ১২৩টি সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে, সেগুলির আদালতে বিচার চলছে।
    ● কর্ণাটক (১৯৭৫ এবং ২০২০): কৃষি জমি, সর্বসাধারণের জন্য স্থান, সরকারি জমি, গোরোস্থান, রদ এবং মন্দির সহ মোট ৪০টি ওয়াকফ সম্পত্তিকে প্রজ্ঞাপিত করা হয়েছে।
    ● পাঞ্জাব ওয়াকফ বোর্ড দাবি করেছে পাতিয়ালায় শিক্ষা দপ্তরের জমিটি তাদের।

    অ-মুসলিম সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণার আরও কিছু উদাহরণ:

    ● তামিলনাড়ু: থিরুচেনথুরাই গ্রামের এক কৃষক তাঁর জমি বিক্রি করতে পারছেন না, কারণ ওয়াকফ বোর্ড দাবি করেছে ওই গ্রামের সমস্ত জমি তাদের। অপ্রত্যাশিত এই পরিস্থিতির ফলে ওই কৃষক তার জমিটি বিক্রি করতে পারছেন না। তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি যে ঋণ নিয়েছিলেন তা পরিশোধের জন্য তিনি তাঁর জমি বিক্রি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
    ● বিহারের গোবিন্দপুর গ্রাম: বিহারের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে দাবি করে ওই গ্রামের পুরো সম্পত্তি তাদের। এর ফলে ৭টি পরিবার প্রভাবিত হয়। ফলস্বরূপ, পাটনা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এটি এখন বিচারাধীন।
    ● কেরল: এর্নাকুলাম জেলার ৬০০টি খ্রীষ্টান পরিবার ২০২৪-এর সেপ্টেম্বরে জানায় তাঁদের পূর্বপুরুষের জমি ওয়াকফ বোর্ড নিজেদের বলে দাবি করেছে। সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে এই মর্মে আবেদনও জানিয়েছে।
    ● কর্নাটক: ওয়াকফ বোর্ড বিজয়পুরায় ১৫,০০০, একর জমি নিজেদের বলে দাবি করায় কৃষকরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। বল্লারি, চিত্রদূর্গ, ইয়াদগীর এবং ধারওয়াড়েও বেশ কিছু বিবাদ দেখা দিয়েছে। সরকার অবশ্য আশ্বস্ত করে জানিয়েছে যে ওই জায়গা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না।
    ● উত্তরপ্রদেশ: রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার বহু অভিযোগ জমা পড়েছে।

    ৯) ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪-এর ফলে দরিদ্র মানুষেরা কীভাবে উপকৃত হবেন?

    সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষদের জন্য ধর্মীয়, দাতব্য এবং বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে ওয়াকফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে, অব্যবস্থাপনা, দখলদারি এবং স্বচ্ছতার অভাবের কারণে এই প্রতিষ্ঠানগুলি আকার্যকর হয়ে পরে। দরিদ্র মানুষদের উপকারের জন্য ওয়াকফের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:

    স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতার উদ্দেশে ডিজিটাইজেশন

    ● আরও ভালোভাবে চিহ্ণিত করা, নজরদারি চালানো এবং যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় স্তরে একটি ডিজিটাল পোর্টাল ওয়াকফ সম্পত্তির উপর নজরদারি চালাবে।
    ● আর্থিক অব্যবস্থা প্রতিহত করতে এবং বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে যাতে তহবিলের অর্থ ব্যয় করা হয় তা নিশ্চিত করতে অডিট করা হবে।

    বিভিন্ন কল্যাণমূলক ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তহবিল বৃদ্ধি

    ● ওয়াকফের জমি অপব্যবহার এবং অবৈধ দখলদারি প্রতিহত করে ওয়াকফ বোর্ডগুলির আয় বৃদ্ধি করা হবে। এর ফলে, এই বোর্ড বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারবে।
    ● স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন এবং জীবিকায় সহায়তার জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হবে, এর ফলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পরা সম্প্রদায়গুলি প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে।
    ● নিয়মিত হিসেব পরীক্ষা এবং পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। এর ফলে, ওয়াকফ ব্যবস্থাপনার প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

    ১০) ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে অ-মুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার ফলে ওয়াকফ ব্যবস্থাপনায় কী ধরনের সুবিধা হবে এবং এই সদস্যদের ভূমিকা কী হবে, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা কতটা প্রভাব বিস্তার করবেন?

    ● অ-মুসলিম স্টেক হোল্ডার: ওয়াকফ ব্যবস্থাপনায় দাতা, মোকোদ্দমাকারী, লিজধারী এবং ভাড়াটিয়ারা যুক্ত হতে পারবেন। এর ফলে, তারা ওয়াকফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে, যার মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
    ● বিভিন্ন ধর্মনিরপেক্ষ কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ: ধারার ৯৬ অনুসারে ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানগুলির প্রশাসনিক, সামাজিক, আর্থিক এবং বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকবে। আদালতের আদেশানুসারে এই ক্ষমতা নিশ্চিত হয়েছে।
    ● কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের নজরদারি চালানোর ভূমিকা: কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল রাজ্যস্তরের ওয়াকফ বোর্ডের উপর নজরদারি চালায়। ওয়াকফ সম্পত্তির উপর কোনো প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ এক্ষেত্রে হয় না। ধর্মীয় হস্তক্ষেপের উর্ধে ওয়াকফ ব্যবস্থাপনায় এর ফলে আর্থিক নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে।
    ● অ-মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব:
    —রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড: ১১ জন সদস্যের মধ্যে (যাঁরা পদাধিকার বলে এই বোর্ডের সদস্য, তাঁদের ব্যতিরেকেই) ২ জন অ-মুসলিম হতে পারেন।
    —কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল: ২২ জন সদস্যের মধ্যে (যাঁরা পদাধিকার বলে এই বোর্ডের সদস্য, তাঁদের ব্যতিরেকেই) ২ জন অ-মুসলিম হতে পারেন।
    ● সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সিদ্ধান্তগুলি গ্রহণ করা হবে। অ-মুসলিম সদস্যরা প্রশাসনিক এবং কারিগরি বিভিন্ন ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতে পারবেন। এর মদ্য দিয়ে ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

  • Waqf Amendment Bill: “দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের উপকারে আসবে ওয়াকফ সংশোধনী বিল,” বললেন জগদম্বিকা

    Waqf Amendment Bill: “দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের উপকারে আসবে ওয়াকফ সংশোধনী বিল,” বললেন জগদম্বিকা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: “‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল’টি (Waqf Amendment Bill) দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের উপকারে আসবে।” বুধবার কথাগুলি বললেন ওয়াকফ সংশোধনী বিল সম্পর্কিত যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল (Jagdambika Pal)। তিনি বলেন, “এদিন যে বিলটি সংসদে পাশ করাতে পেশ করা হচ্ছে, তা দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের উপকারে আসবে।”

    “ঐতিহাসিক দিন” (Waqf Amendment Bill)

    এই দিনটিকে “ঐতিহাসিক দিন” বলে অভিহিত করে জগদম্বিকা বলেন, “যৌথ সংসদীয় কমিটির কঠোর পরিশ্রম, যারা বিভিন্ন রাজ্যের স্টেকহোল্ডারদের আস্থা নিয়েছিল, তারা সফল হয়েছে।” তিনি বলেন, “জেপিসি সভাগুলিতে প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে বিরোধীদের বক্তব্য শোনা হয়েছিল।” যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের কঠোর পরিশ্রম সফল হয়েছে। সরকার আজ সংশোধিত রূপে বিলটি নিয়ে আসছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ এই বিল পাশ হওয়ার মাধ্যমে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মুসলিমরা উপকৃত হবেন। আমরা গত ছ’মাস ধরে জেপিসি সভাগুলি পরিচালনা করেছি। প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে তাদের (বিরোধী পক্ষের) কথা শুনেছি।”

    জগদম্বিকার নিশানা

    বিলটির বিরোধিতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জগদম্বিকা নিশানা করেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডকে। তাদের বিরুদ্ধে বিষয়টির গায়ে রাজনীতির রং লাগানোর অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, “রমজানের নমাজের সময় মসজিদে কালো ব্যান্ড পরার জন্য আমাদের বিরোধী দল বা অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের আবেদনেই স্পষ্ট, তারা এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে।” এদিকে, ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করার প্রস্তুতি নেওয়ায় এদিন বিজেপি নেতা মোহসিন রাজা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ওয়াকফ আইনে এই সংশোধনী পাশ হলে তা প্রান্তিক মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ‘ইদি’ (উপহার) হবে।”

    সবচেয়ে বড় ‘ইদি’

    সংবাদ মাধ্যমে (Waqf Amendment Bill) সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “দেশের সব সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া মুসলিম ভাই-বোনেদের পক্ষ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এই ওয়াকফ সংশোধনী বিলের জন্য ধন্যবাদ জানাই। এটি পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় ‘ইদি’ হবে।” বিলটির বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। সাংসদ কিরণ কুমার চামালা বলেন, “এই বিল যদি কোনও বিশেষ সম্প্রদায়কে বিলুপ্ত করার চেষ্টা করে, তবে আমরা এর বিরোধিতা করব।” তিনি বলেন, “বর্তমান বাজেট অধিবেশনের মধ্যেও সরকার আজ লোকসভায় আট ঘণ্টার বিতর্ক করতে রাজি হয়েছে।”

    ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫ পেশ

    এদিনই লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫ পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিলটি পেশ হতেই ব্যাপক হইচই শুরু করে দেন বিরোধীরা। তার পরেই পূর্বতন ইউপিএ সরকারকে নিশানা করে রিজিজু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াকফের হাতে সংসদ ভবনের অধিগ্রহণ আটকেছেন। ইউপিএ সরকার সংসদ ও বিমানবন্দরের জমি ওয়াকফের হাতে তুলে দিয়েছিল।” তার আগে অবশ্য রিজিজু আলোচনা ও সকলের মতামত নেওয়ার জন্য জেপিসিকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, “আমি জেপিসির সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ২৮৪টি প্রতিনিধি দল, ২৫টি রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং ওয়াকফ বোর্ড (Waqf Amendment Bill) এই বিষয়ে জেপিসির কাছে নিজেদের মতামত জানিয়েছে।” বিল পেশের ঠিক আগেই কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী বলেন, “আজ ঐতিহাসিক দিন। আজ ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল লোকসভা পেশ করা হবে। দেশের স্বার্থেই এই বিল পেশ করা হচ্ছে।”

    ওয়াকফ সম্পত্তি

    প্রসঙ্গত, বর্তমান ওয়াকফ আইনের ৪০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণার অধিকার এতদিন ছিল ওয়াকফ বোর্ডের হাতেই (Jagdambika Pal)। ফলে ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে বারবার বহু গরিব মুসলমানের সম্পত্তি, অন্য ধর্মাবলম্বীদের সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। নয়া সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কিনা, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। সরকারের যুক্তি হল, বর্তমানে যে আইন রয়েছে, তাতে ওয়াকফের দখল করা জমি বা সম্পত্তি কোনওভাবেই পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকে না। কারও আপত্তি সত্ত্বেও জমি বা সম্পত্তি দখল করতে পারে ওয়াকফ বোর্ড। তাতে সরকারের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকে না। নয়া বিলে যে সুযোগও রয়েছে। ওয়াকফ বোর্ডে দুজন অমুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আপত্তি উঠেছে। একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব (Waqf Amendment Bill)।

    প্রসঙ্গত, ১৯৫৪ সালে প্রথম পাশ হয় ওয়াকফ আইন। ১৯৯৫ সালে ওই আইনে সংশোধনী এনে ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছিল ওয়াকফ বোর্ডের। তারপর থেকেই বিজেপির তরফে বারবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে। বিজেপির দাবি, ওয়াকফ সম্পত্তির সমস্ত সুবিধা ভোগ করছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। বঞ্চিত হচ্ছেন (Jagdambika Pal) সাধারণ মুসলমানরা। নয়া আইন কার্যকর হলে উপকৃত হবেন সাধারণ মুসলমানরা (Waqf Amendment Bill)।

  • Waqf Bill 2025: নতুন ওয়াকফ আইন কেন আনা দরকার? মুসলমানদের জন্য কতটা প্রয়োজন এই সংশোধনী?

    Waqf Bill 2025: নতুন ওয়াকফ আইন কেন আনা দরকার? মুসলমানদের জন্য কতটা প্রয়োজন এই সংশোধনী?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লোকসভায় পেশ হচ্ছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ২০২৫ (Waqf Bill 2025)। রাজ্যসভায় পেশ হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার ৩ এপ্রিল। বর্তমান ওয়াকফ আইনের ৪০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণার অধিকার রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের হাতেই। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। সরকারের যুক্তি, বর্তমানে যে আইন রয়েছে, তাতে ওয়াকফের দখল করা জমি বা সম্পত্তিতে কোনও ভাবেই পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকে না। কারও আপত্তি সত্ত্বেও জমি বা সম্পত্তি দখল করতে পারে ওয়াকফ বোর্ড। তাতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকে না সরকারের। নতুন বিলে তার বন্দোবস্ত রয়েছে।

    ওয়াকফ সম্পত্তি কী

    ওয়াকফ (Waqf Bill 2025) হল মুসলিম আইন দ্বারা স্বীকৃত ধর্মীয়, ধার্মিক বা দাতব্য উদ্দেশ্যে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির স্থায়ী উৎসর্গ। ওয়াকফ সম্পত্তি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা দান করা হয় এবং বোর্ডের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রতিটি রাজ্যের একটি ওয়াকফ বোর্ড আছে। এটি একটি আইনি সংগঠন যা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ এবং হস্তান্তর করতে পারে। ওয়াকফ সম্পত্তি স্থায়ীভাবে বিক্রি বা লিজ দেওয়া যাবে না।

    ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের জমির পরিমাণ

    ওয়াকফ বোর্ড দেশ জুড়ে ৮.৭ লক্ষ সম্পত্তির ৯.৪ লক্ষ একর জমি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। যার আনুমানিক মূল্য ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। এর ফলে ওয়াকফ বোর্ড ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম জমির মালিক। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং ভারতীয় রেলের ঠিক পরেই। দেশজুড়ে ৩০টি ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে। প্রধানত, কৃষিজমি, ভবন, দরগা/মাজার, কবরস্থান, ঈদগাহ, খানকাহ, মাদ্রাসা, মসজিদ, প্লট, পুকুর, স্কুল, দোকান এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ওয়াকফ সম্পত্তি হতে পারে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালে ৪০,৯৫১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ওয়াকফ ট্রাইব্যুনাল ওয়াকফ বা ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তিকারী সংস্থা। যার মধ্যে ৯,৯৪২টি মামলা মুসলিম সম্প্রদায় কর্তৃক ওয়াকফ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে।

    ভারতে ওয়াকফ আইন

    ভারতে ওয়াকফগুলি (Waqf Bill 2025) ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। একজন সার্ভে কমিশনার স্থানীয় তদন্ত পরিচালনা করে, সাক্ষীদের তলব করে এবং নথিপত্র সংগ্রহ করে ওয়াকফ হিসাবে ঘোষিত সমস্ত সম্পত্তি তালিকাভুক্ত করেন। ওয়াকফটি একজন মুতাওয়াল্লি দ্বারা পরিচালিত হয়, যিনি একজন তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন। বিভিন্ন সময় নানা ধরণের আইনি সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে ওয়াকফ বোর্ডকে। কখনও সম্পত্তি সংক্রান্ত, কখনও মহিলা প্রতিনিধি সংক্রান্ত বিষয়ে। ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যাওয়ার বিধান রয়েছে। হাইকোর্ট ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত পাল্টে দিতে পারে।

    কেন ওয়াকফ আইনে সংশোধনী

    ওয়াকফ আইনের (Waqf Bill 2025) ৪০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যে কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণার অধিকার এত দিন ছিল ওয়াকফ বোর্ডের হাতেই। ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে বার বার বহু গরিব মুসলিমের সম্পত্তি, অন্য ধর্মাবলম্বীদের ব্যক্তির সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। এর পাশাপাশি ওয়াকফ বোর্ডে মহিলাদের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। নতুন বিল অনুসারে, একজন অমুসলিমও বোর্ডের শীর্ষপদে বসতে পারবেন। কমপক্ষে দু’জন সদস্য অমুসলিম হওয়ার কথাও বলা রয়েছে সংশোধনীতে।

    নতুন ওয়াকফ বিলের মূল বৈশিষ্ট্য

    নতুন ওয়াকফ বিলটি অনেক দিক থেকে সংস্কারমূলক এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য লাভজনক হতে পারে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে:

    ১. ওয়াকফ সম্পত্তির উন্নত ব্যবস্থাপনা:

    নতুন বিলটি ওয়াকফ সম্পত্তির জন্য একটি স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি করবে। এতে ওয়াকফ বোর্ডের কার্যক্রম ডিজিটালাইজড হবে, যা সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণকে আরও সহজ এবং দক্ষ করবে। এতে করে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় জটিলতা কমবে এবং আরও সঠিকভাবে তা ব্যবহৃত হবে।

    ২. মুসলিমদের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা:

    নতুন বিলে ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় করা অর্থ মুসলিমদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে। এই আয় থেকে মুসলিম শিশুদের শিক্ষার জন্য স্কুল ও কলেজ চালানো, দরিদ্রদের সহায়তা করা, এবং মসজিদ-মাদ্রাসা সংস্করণে সহায়তা প্রদান করা হবে। এটি মুসলমানদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

    ৩. ওয়াকফ বোর্ডের শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ:

    নতুন বিলে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে অনেক ওয়াকফ বোর্ড কার্যক্রমে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে থাকে। এই নতুন আইনে ওয়াকফ বোর্ডকে আরও শক্তিশালী, স্বচ্ছ এবং কার্যকরী করে তোলা হবে।

    ৪. অপ্রাপ্ত বয়সী ও নারীদের জন্য সুবিধা:

    মুসলিম নারীদের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধা থাকবে। তারা ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের উন্নতির জন্য সহায়তা পাবে। নারীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অন্যান্য সাহায্য পাওয়া সম্ভব হবে।

    ৫. সমাজে ওয়াকফের গুরুত্ব বৃদ্ধি:

    নতুন বিলে মুসলিম সমাজে ওয়াকফের গুরুত্ব আরও বাড়ানো হবে। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এছাড়া, এই বিলটি সমাজে মুসলিমদের প্রতি সরকারি সহানুভূতির পরিমাণও বৃদ্ধি করবে।

    মুসলমানদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

    ওয়াকফ (Waqf Bill 2025) ব্যবস্থাপনার সঠিক এবং স্বচ্ছ পদ্ধতি মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘকাল ধরে, অনেক ওয়াকফ সম্পত্তি অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে পড়েছে, এবং এর সুবিধা মুসলিম সমাজে সঠিকভাবে পৌঁছায়নি। নতুন ওয়াকফ বিলটি এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। এতে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় সম্পত্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্য সেবায় আরো বেশি সুবিধা পাবেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় একটি বৃহৎ জনগণ, এবং তাদের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। নতুন ওয়াকফ বিলটি এদের জন্য সেই সহযোগিতার একটি বড় হাতিয়ার হতে পারে। এটি মুসলিমদের শিক্ষার মান উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং তাদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে। নতুন ওয়াকফ বিলটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। ওয়াকফ সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয়, শিক্ষা, ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হবে। আশা করা যায়, এই বিলটি মুসলিমদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

  • Madhya Pradesh: শিবলিঙ্গ-সহ গোটা হিন্দু গ্রামের উপর দাবি জানাল ওয়াকফ বোর্ড! মধ্যপ্রদেশে জনরোষ

    Madhya Pradesh: শিবলিঙ্গ-সহ গোটা হিন্দু গ্রামের উপর দাবি জানাল ওয়াকফ বোর্ড! মধ্যপ্রদেশে জনরোষ

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) রাইসেন জেলার হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মাখনি গ্রামে ওয়াকফ বোর্ড এক চমকপ্রদ দাবি তুলেছে। তারা দাবি করছে গ্রামের বাসস্থান, কৃষিজমি এবং এমনকি একটি শিবলিঙ্গের ওপরও তাদের অধিকার রয়েছে। ওয়াকফ বোর্ডের এই দাবি গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সূত্রের খবর, ওয়াকফ বোর্ড সম্প্রতি গ্রামবাসীদের একটি নোটিশ দিয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে জমি তাদের অধীনে রয়েছে এবং তা তাদের মুক্ত করতে হবে।

    ওয়াকফ বোর্ডের কাছে কোনও প্রমাণ নেই (Waqf Board)

    ওয়াকফ বোর্ড দাবি করছে যে, মাখনি গ্রামে অবস্থিত ওই ৩ একর জমি একটি কবরস্থানের অংশ। তবে তাদের দাবি সমর্থনে কোনও শক্তিশালী প্রমাণ দেখানো হয়নি। প্রমাণের অভাব সত্ত্বেও, নোটিশে গ্রামবাসীদের বাড়ি, চাষের জমি, প্ল্যাটফর্ম এবং এমনকি শিবলিঙ্গেরও উল্লেখ করা হয়েছে। বোর্ড দাবি করেছে যে, গ্রামবাসীদের ওই জমি ছাড়তে হবে। যা গ্রামবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ ও রোষের সৃষ্টি করেছে। গ্রামবাসীদের সম্পত্তির পাশাপাশি, বোর্ড একইভাবে রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন জমির ওপরও দাবি জানিয়েছে। বোর্ডের দাবি অনুযায়ী, গ্রামটি একসময় কাদির খান নামে এক ব্যক্তির মালিকানায় ছিল। যিনি ওই জমিটি ওয়াকফে দান করেছিলেন। তবে স্থানীয়রা এই দাবি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে এবং তারা জানাচ্ছে যে, কখনও এমন কোনও ব্যক্তি ওই গ্রামে বাস করেননি।

    ওয়াকফ বোর্ডের নানা জমি নিয়ে বিতর্ক (Waqf Board)

    মাখনি গ্রামে (Madhya Pradesh) বহু পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করছে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা তাদের জমি ছাড়বে না। ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বিশেষত, শিবলিঙ্গের ওপর এই দাবি গ্রামবাসীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা বোর্ডের কার্যকলাপকে অধিকতর হস্তক্ষেপ এবং বেআইনি দখল বলে অভিযোগ করছে। রাইসেনের এই বিতর্ক এমন সময় সামনে এসেছে, যখন ভারত সরকার ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে কাজ করছে, যা ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা এবং সম্পত্তি দাবির বিষয়গুলো সমাধান করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত। এই বিলটি ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে রাজ্যসভায় উত্থাপন করা হয়। দেশজুড়ে ওয়াকফ বোর্ডের অস্বাভাবিক প্রভাব ও সম্পত্তি দাবি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বোর্ড গত কয়েক বছরে মন্দির, হিন্দুদের মালিকানাধীন জমি এবং সরকারি জমির ওপর দাবি তুলেছে।

LinkedIn
Share