মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হয়েছে দেশজুড়ে। তবে পশ্চিমবঙ্গের আমজনতা এ ব্যাপারে বিশেষ সচেতন নন। কেন আবেদন করবেন, কীভাবেই (CAA) বা করবেন, কোথায় আবেদন করবেন, অনেকেই তা জানেন না। মাস সাতেক পরে এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এবার এই বিষয়টি নিয়েই তৎপর হলেন বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। বুধবার সিএএ নিয়ে বিশেষ বৈঠক তথা কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএল সন্তোষ, অমিত মালব্যের মতো কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা। ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন পদ্ম সাংসদ, বিধায়ক এবং পদস্থ নেতৃত্ব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুনীল বনশলও, ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই।
কী বললেন সন্তোষ? (BJP)
বৈঠকে কেবল এসআইআর নয়, সিএএ-র ওপরও যাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেই বিষয়েও রাজ্য নেতৃত্বকে সচেতন করেন কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা। যত দ্রুত এবং যত বেশি সম্ভব আবেদনপত্র যাতে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, এদিন বিজেপি নেতৃত্বকে সে কথাই জানিয়েছেন সন্তোষ। জানা গিয়েছে, এদিন বিজেপির সল্টলেকের কার্যালয়ে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল। পদ্ম শিবিরের ওই বৈঠক হয়েছে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে। সেখানে রাজ্যের ১৭টি জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক সিএএ সহায়তা ক্যাম্প খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মতুয়া, উদ্বাস্তু মানুষদের ভিড় রয়েছে, যেমন, বনগাঁ, নদিয়া, এমন জেলাগুলির ওপর আলাদা নজরদারির কথা বলা হয়েছে। ওই বিধানসভাগুলির অধীনে থাকা প্রত্যেক মণ্ডলে তিনটি করে ক্যাম্প খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের ওপর এই দায়িত্ব বর্তেছে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তাঁদের এ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কারা এই কাজের দায়িত্ব পাচ্ছেন, কারা দায়িত্ব পাবেন, তার তালিকাও দিতে হবে।
শমীকের বক্তব্য
এ প্রসঙ্গে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “দেশ ভাগের সময় বা তার পরে যে পাপ করেছে কংগ্রেস, সেই পাপমুক্তি বা প্রায়শ্চিত্ত করছে বিজেপি। আমরা বাংলাদেশি উদ্বাস্তু হিন্দুদের পক্ষে। এটা আমাদের ঘোষিত অবস্থান। সেই জন্য আমরা ক্যাম্প করব, অর্থ সাহায্য করব। বিজেপি যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ একজন উদ্বাস্তু হিন্দুর কেশাগ্রও কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।”
৭০০-এরও বেশি সিএএ ক্যাম্প
জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে ৭০০-এরও বেশি সিএএ ক্যাম্প করতে চাইছে বিজেপি। প্রসঙ্গত, সবে মাত্র হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বুধবারই বাড়ি ফিরেছেন শমীক (BJP)। চিকিৎসকদের পরামর্শে আরও কিছু দিন বিশ্রাম নিতে হবে তাঁকে। তাই তাঁর বাড়িই এখন তাঁর অফিসের পাশাপাশি দলেরও পার্টি অফিসও (CAA)। ফোন এবং অনলাইনে দফায় দফায় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। রাজ্যের পুরানো কর্মী, জেলা সভাপতি এবং বুথস্তরের এজেন্টদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা নেতাদের সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল বৈঠকে শমীক এসআইআর নিয়ে সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্যে এসআইআর চালু হয়ে গেলে এই কাজে দলের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এ সংক্রান্ত কোনও কাজে কোনওরকম ঢিলেমি করা চলবে না। কর্মীরা যেন এসআইআরকে একেবারে ‘ডু অর ডাই’ মিশন হিসেবে বিবেচনা করেন। কারণ এই কাজে কর্মীদের গাফিলতি হলে রাজ্যে সংগঠনের ভিত নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে।
শমীকের বার্তা
বিজেপির জন্য এ রাজ্যে এসআইআর সফলভাবে সম্পন্ন হওয়াটা যে ঠিক কতটা জরুরি, সেটা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, “এ রাজ্যে এসআইআরের কাজ ঠিক মতো এগোচ্ছে কিনা, সেটা যদি নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর এবং সুসজ্জিত পার্টি অফিস আর থাকবে না। বিহারের পর এবার দেশজুড়ে যে কোনও দিন চালু হয়ে যেতে পারে এসআইআর।” ইতিমধ্যেই এসআইআর নিয়ে প্রাথমিক কাজ সেরে রাখছে রাজ্যগুলি। উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের প্রায় ২৩ বছর পর (CAA) আবারও দেশে স্পেশাল ইনটেনশিভ রিভিশন করা হতে চলেছে (BJP)।
সিএএ ক্যাম্প
এদিনের বৈঠকে সিএএ ক্যাম্প কীভাবে পরিচালিত হবে, লোকেশন নির্বাচন, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় কীভাবে করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়। নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট পেতে যেসব সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যেমন, নথিপত্র ঘাটতি, ফর্ম ফিলাপে অসুবিধা, আবেদন প্রক্রিয়ায় জট, এগুলির সমাধানে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয় বলে খবর। রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির অগ্রগতি এবং সেগুলিকে জনমানসে তুলে ধরার রণকৌশল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে বলে খবর (BJP)।