Tag: West bengal health

West bengal health

  • West Bengal Health: তিন রোগের সংক্রমণে দুশ্চিন্তা, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ কি মানছে রাজ্য?

    West Bengal Health: তিন রোগের সংক্রমণে দুশ্চিন্তা, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ কি মানছে রাজ্য?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    তিনটি রোগের সংক্রমণ (West Bengal Health) বাড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা। পশ্চিমবঙ্গের গর্ভবতীদের স্বাস্থ্য নিয়ে তাই বাড়তি উদ্বিগ্ন দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাজ্যকে সে বিষয়ে জানানোও হয়েছে। রোগ যাতে মায়ের শরীর থেকে নবজাতকের দেহে না পৌঁছায়, সে বিষয়ে বাড়তি নজরদারির প্রয়োজনীয়তার কথাও জানিয়েছে মন্ত্রক। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন।

    কোন তিন রোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র? 

    কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, সিফিলিস, হেপাটাইটিস বি এবং এইচআইভি-এই তিন রোগ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এই তিনটি রোগ রক্ত ও দেহরসের দ্বারা সংক্রমণ ছড়াতে পারে। একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে বাসা বাঁধতে পারে। আর শিশুদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়ের থেকেই তাদের দেহে এই রোগ সংক্রমিত হয়েছে।
    সূত্রের খবর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই এই তিন রোগ নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিল। দেশের সমস্ত রাজ্যেই তাই রোগ নির্ণয় করার পরামর্শ দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে, এ রাজ্যের পরিস্থিতি (West Bengal Health) বেশ উদ্বেগজনক বলেই জানাচ্ছে মন্ত্রক। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে গর্ভবতীদের এই তিন রোগের স্ক্রিনিংয়ের হার কম। অর্থাৎ, হবু মায়ের এই তিন রোগ আছে কিনা, অধিকাংশ সময় তা গর্ভস্থ অবস্থায় পরীক্ষা করা হয় না। ফলে, মায়ের থেকে অজান্তেই শিশুর শরীরে এই তিন রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ভুগতে হয় পরবর্তী প্রজন্মকে।

    কী পরামর্শ (West Bengal Health) দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক? 

    স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরামর্শ, গর্ভবতী মায়ের শারীরিক পরীক্ষা বাড়াতে হবে। সরকারি নজরদারিতে প্রসূতির সিফিলিস, হেপাটাইটিস বি এবং এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে সিফিলিসের মতো রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল সম্ভব। তাই প্রথমেই এই রোগ নির্মূলকে গুরুত্ব দিতে হবে। গর্ভবতীর এই রোগ থাকলে, তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুনিশ্চিত করতে হবে। সরকারের তরফ থেকে ওষুধ দেওয়া হবে। গর্ভস্থ শিশুর মধ্যে যাতে রোগ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। 
    তবে, এইচআইভি এবং হেপাটাইটিস বি নির্মূল সম্ভব নয়। কিন্তু গর্ভবতীর রোগ নির্ণয় হলে, মায়ের থেকে শিশুর শরীরে রোগ সংক্রমণ আটকানো সম্ভব। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মা হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত জানতে পারলে, শিশু জন্মানোর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর শরীরে হেপাটাইটিস বি টিকা দিতে হবে। তারপরে টিকার আরও দুটো ডোজ নির্দিষ্ট সময় অন্তর সদ্যোজাতকে দিতে হয়। তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি নির্মূল করা যেতে পারে। তবে, এইচআইভি সংক্রমিত হলে, মায়ের বাড়তি চিকিৎসা জরুরি। কারণ, শিশু গর্ভস্থ অবস্থায় চিকিৎসা শুরু না করলে, এইডস আক্রান্ত শিশু জন্মানোর ভয় থাকে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মায়ের থেকে শিশুর শরীরে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে ৪০ শতাংশের বেশি। তাই গর্ভবতীর অ্যান্টি-রেস্ট্রাভাইরাল থেরাপি শুরু করা জরুরি। এই থেরাপি করলে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি ১ শতাংশের কম হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরামর্শ, এই দুই রোগে গর্ভবতী আক্রান্ত কিনা, তা পরীক্ষা করে জানতে হবে। পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলে পরিবারকে বিষয়টি জানাতে হবে। এই রোগের চিকিৎসার গুরুত্ব বোঝাতে হবে। রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সর্বোপরি, রোগ যাতে সদ্যোজাতের শরীরে বাসা না বাঁধে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতো ট্রিপলট্রিগার ক্যাম্পেন (West Bengal Health) চালাতে হবে। অর্থাৎ, এই তিন রোগের উপরে বাড়তি নজরদারি জরুরি।

    কী পদক্ষেপ করবে রাজ্য (West Bengal Health) ? 

    স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা জানাচ্ছেন, গর্ভবতীদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই তিন রোগের দাপট রুখতে স্ক্রিনিংয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার, উত্তর চব্বিশ পরগনা, বীরভূমের মতো জেলাগুলোকে বাড়তি নজর (West Bengal Health) দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ১২ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গড়ে তোলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Swasthya Sathi: স্বাস্থ্য সাথীতে ওষুধের পর এবার রাশ সিটি স্ক্যান সহ একাধিক ব্যয়বহুল পরীক্ষায়! 

    Swasthya Sathi: স্বাস্থ্য সাথীতে ওষুধের পর এবার রাশ সিটি স্ক্যান সহ একাধিক ব্যয়বহুল পরীক্ষায়! 

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যে কার্যত বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছে। বারবার এমনই অভিযোগ তোলেন সাধারণ মানুষ। এবার সেই ভোগান্তির তালিকা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। শুধু ভোগান্তি নয়। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড (Swasthya Sathi) নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের নয়া নির্দেশে, রোগীদের স্বাস্থ্য নিয়েও জটিলতা বাড়ার আশঙ্কায় চিকিৎসক মহল।

    কী নয়া নির্দেশ (Swasthya Sathi) স্বাস্থ্য দফতরের? 

    স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ডে আর সিটি স্ক্যান, এমআরআই-র মতো জটিল অর্থবহুল শারীরিক পরীক্ষা সহজে করা যাবে না। এই ধরনের শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজন হবে একাধিক অনুমতির। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, সিটি স্ক্যান, এমআরআই-র মতো ব্যয়বহুল শারীরিক পরীক্ষার জন্য খরচ বাড়ছে। বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সেই খরচে রাশ টানতেই নতুন একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। 
    সূত্রের খবর, এবার থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় এই ধরনের শারীরিক পরীক্ষা করাতে হলে হাসপাতালের চিকিৎসককে নিজের পুরো সই, তারিখ ও সিল দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে। লিখিত ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, কেন রোগীর ওই পরীক্ষা জরুরি। তারপরে রোগীর দ্বিতীয় দফায় ওই পরীক্ষা করতে হলে, সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকেও সমস্ত রকম ব্যাখ্যা দিতে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দিষ্ট কমিটি থাকবে। তারা ব্যাখ্যা যাচাই করে দেখবে। তারা প্রয়োজন বুঝলে, তবেই পরীক্ষার অনুমতি দেবে। তারপরে রোগীর পরীক্ষা হবে। তাছাড়া, কোনও রোগী জরুরি বিভাগে দেখাতে এলেই, তার এই ধরনের পরীক্ষা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় করা যাবে না। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন থাকলে তবেই পরীক্ষা করা যাবে। তাছাড়া, যেসব সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে এই পরীক্ষাগার চলে, সেখানে আলাদা রেজিস্ট্রেশন নথি তৈরি করতে হবে। কোনও রোগীর কেন এই ধরনের পরীক্ষা হচ্ছে, তা বিস্তারিত লিখতে হবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ লিখে সম্পূর্ণ সই করতে হবে। যাতে পরবর্তীতে হিসাব সংক্রান্ত জটিলতা হলে চিকিৎসককে তলব করা যায়।

    কোন ভোগান্তির (Swasthya Sathi) আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল? 

    চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এর জেরে রোগীদের ভোগান্তি বাড়বে। আগেই ন্যায্য মূল্যের ওষুধ নিয়ে রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বারবার অভিযোগ ওঠে, সরকারি হাসপাতালে, বড় বড় ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থাকলেও, সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। এমনকী স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড থাকলেও বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি নিতে রাজি হয় না, এমনও অভিযোগ একাধিকবার উঠেছে। এবার সেই তালিকায় পরীক্ষার সমস্যা যুক্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তারা জানাচ্ছে, যে ভাবে লাল ফিতের ফাঁস তৈরি হচ্ছে, তাতে সময় মতো রোগীর পরীক্ষা করাই কঠিন হয়ে উঠবে। চিকিৎসকরা জটিলতার ভয়ে হয়তো অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন। যার ফল হবে ভয়ানক। তাছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে একাধিকবার সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষা করাতে হয়। আর সেই পরীক্ষা সময় মতো করা জরুরি। যে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য দফতর করছে, তাতে রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হবে কিনা, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • West Bengal Health: ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই রাজ্যের অধিকাংশ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে!

    West Bengal Health: ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই রাজ্যের অধিকাংশ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে!

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    জলপাইগুড়ি থেকে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে গোপীবল্লভপুর, রাজ্যের একাধিক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নীল-সাদা বহুতল ছাড়া রোগী পরিষেবা কার্যত তলানিতে। কোথাও মাসের পর মাস এক্স-রে মেশিন খারাপ। আবার কোথাও স্নায়ু, শিশু-শল্য বিভাগের মতো একাধিক বিভাগে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। তাই দিনের পর দিন ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। জেলার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য জুড়ে গড়ে ওঠা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আর বিনামূল্যে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা (West Bengal Health) কার্যত বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ে আটকে আছে।

    কী অভিযোগ (West Bengal Health) করছে রোগীর পরিবার? 

    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (West Bengal Health) গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। গোটা রাজ্যে ৩০টি সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সরকারের তরফ থেকে একাধিক বার জানানো হয়, জেলার মানুষের কলকাতা নির্ভরতা কমাতেই এই পরিকল্পনা। জেলার মানুষকে চিকিৎসা করাতে আর কলকাতার হাসপাতালের উপরে নির্ভর করে থাকতে হবে না। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা একেবারেই অন্যরকম। 

    সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভুক্তভোগীদের একাংশ অভিযোগ করেন, কয়েক মাস ধরে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন খারাপ। বারবার অভিযোগ জানিয়েও, মেশিন ঠিক হয়নি। ফলে, রোগীদের এক্স-রে করা যাচ্ছে না। অনেক সময়েই তাদের বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। 
    একই রকম ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের একাংশের অভিযোগ, শিশু-শল্য চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। হাসপাতালে শিশু রোগ বিভাগ থাকলেও, কোনও দুর্ঘটনা বা অন্য কোনও সমস্যা হলে শিশুকে নিয়ে কলকাতা ছুটতে হয়। কারণ, ওই হাসপাতালে শিশুদের অস্ত্রোপচার করার মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। 
    ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর সহ একাধিক জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (West Bengal Health) পুড়ে যাওয়া রোগীর চিকিৎসা করানোর জন্য বার্ন ওয়ার্ডের পরিকাঠামো পর্যাপ্ত নেই। যার জেরে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে কয়েকশো কিলোমিটার পাড়ি দিতে বাধ্য হন। এমনকি একাধিক জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রোগীদের অভিযোগ, স্নায়ু, বক্ষঃরোগের মতো সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গেলে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। অনেক সময়েই চিকিৎসক ও পরিকাঠামোর অভাবে তাদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। আবার হৃদরোগের মতো সমস্যা হলে, জেলা থেকে পাঠানো হয় কলকাতার হাসপাতালে। আর তার জেরে পরিষেবা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা আরও বাড়ে। সব মিলিয়ে ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকেই।

    কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health) ? 

    স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health) অবশ্য অভিযোগ কিছুটা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তবে, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কোথাও অভিযোগ পেলে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টাও হচ্ছে। কিন্তু জেলার সব হাসপাতালে কার্ডিওভাসকুলার, নিউরোলজির মতো বিভাগ নিয়মিত চালু করার কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ, শুধু পরিকাঠামো নয়, চিকিৎসকের ঘাটতিও রয়েছে। তবে, সাধারণ মানুষ যাতে ঠিকমতো স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, সে দিকে নজর রয়েছে। “

     

     
    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।
  • West Bengal Health: কোটি টাকার যন্ত্র কিনেও বন্ধ বিভাগ, চিকিৎসার জন্য ভরসা তাই ভিন রাজ্য! 

    West Bengal Health: কোটি টাকার যন্ত্র কিনেও বন্ধ বিভাগ, চিকিৎসার জন্য ভরসা তাই ভিন রাজ্য! 

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    জেলা কিংবা কলকাতা, একাধিক সরকারি হাসপাতালের করিডরে পড়ে আছে কয়েক হাজার কোটি টাকার চিকিৎসার যন্ত্র। কিন্তু তারপরেও বন্ধ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগ! তার জেরেই চিকিৎসা পরিষেবা পান না সাধারণ মানুষ। ছুটতে হয় ভিন রাজ্যে! রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা (West Bengal Health) আটকে রয়েছে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়েই, এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

    সমস্যা ঠিক কোথায়? 

    জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে কলকাতার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম, ছবিটা সর্বত্র এক! স্বাস্থ্য ভবন থেকে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চিকিৎসার জন্য যন্ত্রও কেনা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সেই যন্ত্র একবারও ব্যবহার হয়নি। বরং পড়ে থেকে নষ্ট হয়েছে। যেমন, স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে কয়েক বছর ধরে পড়ে আছে গামা রে মেশিন। এই মেশিন কিনতে একশো কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। দীর্ঘদিন অব্যবহারের ফলে তা খারাপ হয়ে যায়। ফের কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তা মেরামত করা হয়। কিন্তু রোগী পরিষেবায় সেই মেশিন ব্যবহার করা যায়নি। থাইরয়েড ক্যানসার সহ একাধিক চিকিৎসার গামা রে মেশিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এসএসকেএম হাসপাতালে (West Bengal Health) এই মেশিন থাকা সত্ত্বেও তা রোগী পরিষেবায় কাজে লাগে না। কারণ, এই মেশিন চালানোর জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। যার নিয়োগ স্বাস্থ্য দফতর করে না। ফলে রোগীকে বাধ্য হয়ে যেতে হয় ভিন রাজ্যে। 

    একই পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ একাধিক জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (West Bengal Health)। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, কয়েক’শো কোটি টাকা খরচ হয়ে ওই সব হাসপাতালে স্নায়ু চিকিৎসার একাধিক যন্ত্র বসানো হয়। কিন্তু ওই সব হাসপাতালে নেই স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ! তাই রোগীরা পরিষেবা পান না। অসুস্থ অবস্থায় তাঁদের জেলা থেকে শহর ঘুরে বেড়াতে হয়। স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য তাঁরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন।
    এমনকী স্বাস্থ্য ভবনের বারান্দাতেও পড়ে আছে একাধিক যন্ত্র, যা কোটি কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। কিন্তু কোন হাসপাতালে তার প্রয়োজন, কোথায় সেগুলো বসানো হবে, তা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা হয়নি। ফলে, নষ্ট হচ্ছে সেসব যন্ত্র!

    কী বলছেন স্বাস্থ্যকর্তারা? 

    স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, যন্ত্র চালানোর জন্য উপযুক্ত কর্মী পর্যাপ্ত নেই। বিশেষত রেডিয়েশন যন্ত্র যেগুলো থাইরয়েড, বিভিন্ন গ্ল্যান্ডের রোগ নির্মূল করতে প্রয়োজন হয়, সেই যন্ত্র পরিচালনা করার জন্য দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে। তবে, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পরিকাঠামো গড়ে তুলে রোগী পরিষেবা (West Bengal Health) দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

    স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত কী? 

    পরিকল্পনা ও সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মহল। রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, একের পর এক মেডিক্যাল কলেজ ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হলেও পরিকাঠামো নিয়ে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। রাজ্যে স্নায়ু-শল্য, প্লাস্টিক সার্জারির মতো বিভাগে রোগীদের পরিষেবা (West Bengal Health) দেওয়ার জন্য যে পরিকাঠামো ও কর্মী প্রয়োজন, তা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, এই ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন দক্ষ কর্মী। কিন্তু রাজ্য সরকার স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে না। চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী স্বল্প বেতনে এই কাজ অধিকাংশ প্রশিক্ষিত ব্যক্তি করতে নারাজ। কারণ, দেশের অন্যান্য রাজ্যে এই ধরনের কাজের জন্য অনেক বেশি বেতন ও সুবিধা এই প্রশিক্ষিত কর্মীরা পান। তাই কর্মীর অভাবে পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। পাশপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্যাপ্ত নেই। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে।

    কী বলছেন ভুক্তভোগীরা? 

    পেটের সমস্যা, স্নায়ু কিংবা ক্যানসার-যে কোনও রোগের চিকিৎসার (West Bengal Health) জন্য এ রাজ্যের মানুষকে কখনও মুম্বই আবার কখনও দক্ষিণ ভারতে ছুটতে হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বারবার বিজ্ঞাপন দেয়, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে! সব মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন। কিন্তু রাজ্যের একাধিক সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল খুব খারাপ। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন, বিজ্ঞাপনের চেয়ে কবে পরিষেবা বেশি গুরুত্ব পাবে?

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • West Bengal Health: রোগী পিছু বরাদ্দ মাত্র ১৩ সেকেন্ড! তারপরেও চিকিৎসক নিয়োগ বন্ধ রাজ্যে! 

    West Bengal Health: রোগী পিছু বরাদ্দ মাত্র ১৩ সেকেন্ড! তারপরেও চিকিৎসক নিয়োগ বন্ধ রাজ্যে! 

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    সরকারি হাসপাতালের আউটডোরে রোগী ও পরিজনের লম্বা লাইন! কেউ ভোর রাত, কেউ বা আগের দিন থেকে টিকিট কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করেন। চিকিৎসকের কাছে সমস্যার কথা সম্পূর্ণ জানানোর পর্যাপ্ত সময়টুকুও পান না রোগী। তারপরেও বন্ধ চিকিৎসক নিয়োগ প্রক্রিয়া! সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা (West Bengal Health) নিয়ে তাই প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

    কী বলছে সমীক্ষা (West Bengal Health)? 

    সম্প্রতি, এক আন্তর্জাতিক সংস্থার তরফে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল (West Bengal Health) নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়। আর তা থেকে জানা যায়, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে একজন রোগীর জন্য চিকিৎসক গড়ে মাত্র ১৩ সেকেন্ড বরাদ্দ করতে পারেন। অর্থাৎ, রোগীর সমস্যা শোনা, রোগ নির্ণয়, তাঁকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া, সবটাই করতে হয় মাত্র ১৩ সেকেন্ডে! সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষত মেডিসিন, কার্ডিওলজি, স্ত্রীরোগ বিভাগে রোগীর চাপ বেশি থাকে। রোগী ও চিকিৎসকের কথা বলার প্রয়োজন বেশি হয়। তাই এই সব বিভাগে চাপ আরও বাড়ে!

    কী বলছে চিকিৎসক মহল (West Bengal Health)?

    রোগীদের প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব হয় না বলেই জানাচ্ছেন সরকারি হাসপাতালে (West Bengal Health) কর্মরত অধিকাংশ চিকিৎসক। তাঁরা জানাচ্ছেন, রোগীদের সমস্ত সমস্যা শোনা, তার রোগ নির্ণয় ও তাকে পরামর্শ দেওয়া, এই প্রক্রিয়া খুব দ্রুত করা কঠিন। অনেক ক্ষেত্রে রোগী একাধিক বিষয় জানতে চান। রোগীর কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেগুলো অত্যন্ত দ্রুত করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। কারণ, কয়েক হাজার রোগী অপেক্ষা করেন। তাই একজন রোগীকে অতিরিক্ত সময় দিলে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবাও দেওয়া যাবে না। 
    স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গর্ভবতী মায়েদের স্তন্যপান করানোর বিষয়ে কাউন্সেলিং করানো জরুরি। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই কেন মা সদ্যোজাতকে প্রথম ছ’মাস শুধুই মাতৃদুগ্ধ পান করাবে, সে বিষয়ে কাউন্সেলিংয়ের সময় পাওয়া যায় না। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি এখন রাজ্যের বছরভর সমস্যা। তবে অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে এই সমস্যা প্রতি বছর প্রবল বাড়ে। চাপ বাড়ে হাসপাতালের। কয়েক হাজার রোগী আউটডোরে অপেক্ষা করেন। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই রোগীর কথা ঠিকমতো শোনার সুযোগ পর্যন্ত থাকে না। 
    চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে রোগী ও চিকিৎসক সম্পর্কের উন্নতির প্রয়োজন অনুভব করা হচ্ছে। সে নিয়ে নানান কর্মশালাও হচ্ছে। আর সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যোগাযোগে। অর্থাৎ, রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে কথোপকথন হতে হবে। কোনও রকম ভ্রান্ত ধারণা যাতে রোগীর তৈরি না হয়, সে জন্য রোগীকে সব কিছু বোঝাতে হবে। চিকিৎসক সহজভাবে রোগীর সঙ্গে কথা বলবেন, যাতে রোগী ও চিকিৎসকের সম্পর্ক ভালো হয়। কিন্তু রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে (West Bengal Health) রোগী-চিকিৎসকের কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট তো দূর অস্ত, ন্যূনতম প্রয়োজন ঠিকমতো শোনার সুযোগ হয় না। আর প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ঘাটতি তার অন্যতম কারণ বলে মনে করছে চিকিৎসক মহল। 
    সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জেলা স্তর থেকে মেডিক্যাল কলেজ, রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক অত্যন্ত কম। আর তাই পরিষেবার মান কমছে।

    নিয়োগ (West Bengal Health) বন্ধ কেন? 

    স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে রাজ্য সরকার সরকারি হাসপাতালে (West Bengal Health) চিকিৎসক নিয়োগ করেনি। চিকিৎসক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে রাজ্যের ৩০টি মেডিক্যাল কলেজ থেকে কয়েক হাজার নতুন এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসক তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হবে, নতুন চিকিৎসক তৈরি হবে! প্রশ্ন উঠছে, সেই চিকিৎসক তাহলে সরকারি হাসপাতালে নিযুক্ত হচ্ছে না কেন?
    রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর কিন্তু এ বিষয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ স্তরের পরামর্শ মতো কাজ করছে। 

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Transfer: একদিনেই বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার! তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনেই চলছে স্বাস্থ্য ভবন?

    Transfer: একদিনেই বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার! তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনেই চলছে স্বাস্থ্য ভবন?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অভিযোগ ওঠে বারবার। আর এবার কার্যত সেই অভিযোগে সিলমোহর দিল খোদ স্বাস্থ্য ভবন। চব্বিশ ঘণ্টা পার হতে না হতেই বদলির (Transfer) সিদ্ধান্ত বদলে গেল। রাজ্যের চিকিৎসক মহল বলছে, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ না হলে সরকারি হাসপাতালের দায়িত্ব পাওয়া যায় না। এমনকী, কোন হাসপাতালে কোন কাজ চিকিৎসক করবেন, সবটাই হয় রাজ্যের শাসক দলের অঙ্গুলি হেলনে।

    কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক? 

    সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন থেকে এক নির্দেশিকা (Transfer) জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে বদলি করা হচ্ছে। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান হিসাবে পাঠানো হচ্ছে। আর এই সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে যায়।

    কে এই সন্দীপ ঘোষ? 

    চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে, তিনি তৃণমূলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সূত্রের খবর, সেই সম্পর্কের জেরেই তাঁকে কয়েক বছর আগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের দায়িত্ব দিয়ে বদলি করে কলকাতায় আনা হয়। তার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। বছর দুয়েক আগে আরজিকর হাসপাতালের পড়ুয়াদের একাংশ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলে। এমনকী ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়ারা নানান অভিযোগ জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনও প্রতিকার হয়নি। বরং, ওই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দুই ছাত্রের যাতে মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন না হয়, সে বিষয়ে তৎপর হয়ে ওঠে তৃণমূলের একাংশ। এরপরে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ছাত্ররা। তারপর তাঁরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। হঠাৎ, সেই সন্দীপ ঘোষকে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েই আলোচনা শুরু হয়। যদিও স্বাস্থ্য ভবনের সিদ্ধান্তের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই ফের বদল করতে হয় নির্দেশিকা। জানানো হয়, সন্দীপ ঘোষকে বদলি (Transfer) করা যাবে না। তিনি আরজিকর হাসপাতালের অধ্যক্ষের দায়িত্বেই থাকছেন।

    কোন সমীকরণ কাজ করছে এই বদলির সিদ্ধান্তে? 

    চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, তৃণমূলের নিজস্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাবেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে। সূত্রের খবর, সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে তৃণমূলের চিকিৎসক সাংসদ শান্তনু সেনের সুসম্পর্ক নেই। বরং তিনি তৃণমূলের আরেক নেতা সুদীপ্ত রায়ের ঘনিষ্ঠ। এতদিন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন সুদীপ্ত রায়। সম্প্রতি, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হয়েছেন শান্তনু সেন। আর তারপরেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে বদলির (Transfer) নির্দেশ এসেছিল। যদিও সন্দীপ ঘোষ শুধু সুদীপ্ত রায় নয়, তৃণমূল দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অত্যন্ত কাছের বলেই পরিচিত ঘনিষ্ঠ মহলে। তাই রাতারাতি তাঁর বদলির নির্দেশ বদলে যায় বলেই জানা যাচ্ছে।

    কী বলছেন সন্দীপ ঘোষ? 

    সন্দীপ ঘোষ অবশ্য পুরো ঘটনা (Transfer) প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তিনি জানান, সরকারি চাকরি করছেন। স্বাস্থ্য দফতর যে সিদ্ধান্ত নেবে, যে কাজ দেওয়া হবে, সেটাই তিনি করবেন। এর বাইরে তিনি কিছুই জানেন না।

    শান্তনু সেন কী বলছেন? 

    তৃণমূলের সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, “এসব বিষয়ে (Transfer) জানি না। বদলির সিদ্ধান্ত পুরোটাই স্বাস্থ্য ভবনের। সেটা যদি পরিবর্তন হয়, সেটাও স্বাস্থ্য ভবন থেকে হয়েছে। “

    প্রশাসনের অস্বচ্ছ বদলি নীতি ফের প্রকাশ্যে, মত চিকিৎসক মহলের! 

    রাজ্যের চিকিৎসক মহল অবশ্য জানাচ্ছে, সরকারের বদলি (Transfer) নীতি যে পুরোটাই শাসক দলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তা ফের প্রমাণিত হল। তারা জানাচ্ছে, একজন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকে। কয়েক বছর পরে বদলির সিদ্ধান্ত নিলেও রাতারাতি কেন তা পরিবর্তন করতে হয়, তার স্পষ্ট উত্তর নেই। এতেই প্রমাণ হয়, এ রাজ্যে স্বচ্ছ নিরপেক্ষ প্রশাসন নেই। যা হয়, পুরোটা রাজনৈতিক সমীকরণে চলে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

  • Balurghat: এমনিতেই চিকিৎসক নেই, তারপরে আবার ট্রমা কেয়ার সেন্টার!

    Balurghat: এমনিতেই চিকিৎসক নেই, তারপরে আবার ট্রমা কেয়ার সেন্টার!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সেরার তকমা জুটলেও চিকিৎসক সংকটের জেরে বালুরঘাট (Balurghat) জেলা হাসপাতালে চালু থাকা নানা পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সেখানে ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালুর প্রস্তাব দিল রাজ্য। কিন্তু সেই একই প্রশ্ন, চিকিৎসক কই? বালুরঘাট হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালু হলে জেলায় চিকিৎসা পরিষেবার আরও উন্নতি ঘটবে। পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কোনও রোগীকে নিয়ে আর কলকাতা, মালদা বা শিলিগুড়ি ছুটতে হবে না। ওই ইউনিট চালু হলে বালুরঘাট হাসপাতালেই আহতদের চিকিৎসা মিলবে। সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বালুরঘাট হাসপাতালে এই ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

    সংশয় কোথায়?

    কিন্তু ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালুর জন্য প্রয়োজন নতুন পরিকাঠামোর। নতুন ট্রমা ভবন নির্মাণ, আধুনিক অপারেশন থিয়েটার ইত্যাদি। পরিকাঠামোর জন্য অর্থ বরাদ্দ হবে রাজ্য থেকে। তাই ভবন সহ নানা পরিকাঠামো হয়তো সহজে করেও ফেলবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ট্রমা কেয়ার ইউনিটের জন্য প্রয়োজন নিউরো সার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি সহ নানা চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞের।প্রশ্ন উঠেছে, চিকিৎসক কোথায়? উল্লেখ্য, চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে বালুরঘাট (Balurghat) হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, মেডিকো লিগ্যাল, পিপি ইউনিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলি। একজন চিকিৎসকও নেই ওই বিভাগগুলিতে। মেডিকো লিগ্যালের অভাবে তো হাসপাতাল মর্গে আসা মৃতদেহ মালদা মেডিক্যালে রেফার করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রমা কেয়ার ইউনিট হলে তা কার্যত খাতায়-কলমে থেকে যাবে বলেই মনে করছেন জেলার মানুষ। কারণ, তথ্য অনুযায়ী এখনও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের সংখ্যা অত্যন্ত কম। বিশেষ করে জেনারেল ডিউটি মেডিসিন অফিসারের অনেক পদ ফাঁকা রয়েছে।

    চিকিৎসকের মোট পদ ১০২, রয়েছেন মাত্র ৪০ জন

    পাশাপাশি বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ বিভাগেও মোট শূন্যপদের তুলনায় কিছুটা কম সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন। জানা গিয়েছে, বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট পদ ১০২। কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৪০ জন চিকিৎসক। সামান্য চিকিৎসক নিয়েই চলছে বালুরঘাট (Balurghat) জেলা হাসপাতালের ইন্ডোর ও আউটডোর। পাশাপাশি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ইন্ডোর ও আউটডোর সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে৷ এরই মধ্যে সম্প্রতি সিসিইউয়ের ২৪ বেড বাড়িয়ে নতুন ইউনিট খোলা হয়েছে। আরও অতিরিক্ত ৫০ বেডের ব্লক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতালে শুরু হয়েছে উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার জন্য টিউমার বোর্ড। সেখানে ১৬ জন চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সপ্তাহে অন্তত একদিন করে অতিরিক্ত কাজ করতে হবে। এমন অবস্থায় ট্রমা কেয়ার ইউনিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ এমন পরিষেবা আদৌ চালু করা যাবে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে হাসপাতালেই।

    কী বলছেন হাসপাতালের সুপার (Balurghat)?

    বালুরঘাট (Balurghat) হাসপাতালে সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, “বালুরঘাট হাসপাতালের মূল সমস্যা চিকিৎসকের ঘাটতি। আমরা রাজ্যের কাছে বারবার চিকিৎসক চেয়ে যাচ্ছি। আর এরই মধ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন বালুরঘাট হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট করতে চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।’

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • WB Hospital: সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলেও টাকা? দালালচক্রে হয়রান রোগী ও পরিজনেরা

    WB Hospital: সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলেও টাকা? দালালচক্রে হয়রান রোগী ও পরিজনেরা

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবে, সরকারি হাসপাতাল (WB Hospital) নিয়ে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, দালালচক্র। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে ওষুধ সবটাই হবে বিনামূল্যে, সম্পূর্ণ নিখরচায়, এমন কথা সব সময় বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলেও টাকা দিতে হয়। সরকারি হাসপাতালে সক্রিয় একাধিক দালালচক্র। অন্য হাসপাতাল থেকে রেফার হোক কিংবা সরকারি হাসপাতালে আউটডোরে চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি, দালালকে টাকা দিলে তবেই সম্ভব। না হলে, ‘বেড নেই’, এমনই শুনতে হয়। 

    কী অভিজ্ঞতা হয় রোগীর পরিবারের (WB Hospital)? 

    সরকারি হাসপাতালে (WB Hospital) ভর্তি নিয়ে নানান অভিযোগ রোগীর পরিবারের। তবে, দালালচক্রের জন্য সবচেয়ে বেশি হয়রানি হতে হয় রোগী ও পরিজনের। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে এক রোগী জ্বর, কাশি ও ফুসফুসের কিছু সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। তাঁকে পরীক্ষার পর চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ফুসফুসের সমস্যার জন্য তাঁকে ভর্তি হতে বলা হয়। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে কাউন্টারের কাছে কিছু ব্যক্তি এসে তাঁর পরিজনদের জানান, তাঁরা হাসপাতালের কর্মচারী। পরিবারের কাছে নগদ কয়েক হাজার টাকা দাবি করা হয়। তবেই রোগী ভর্তি করা হবে, এমনও জানানো হয়। পরিবারের সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ ছিল না। তাঁরা রোগী ভর্তি করতে পারেননি। পরে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সেই রোগী আরও জটিল বক্ষঃরোগ নিয়ে ভর্তি হন। মুর্শিদাবাদের ঘটনা ব্যতিক্রম নয়। এমনই অভিজ্ঞতা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের এক রোগী ও তাঁর পরিবারের। তাঁদের অভিযোগ, পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে যান বীরভূমের এক প্রৌঢ়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করাতে হলেও দালালচক্রকে টাকা দিতে হবে বলেই অভিযোগ করেন ওই প্রৌঢ় ও তাঁর পরিবার।ফলে, বিনা চিকিৎসাতেই হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হয়। ভোগান্তির শিকার রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, কলকাতা হোক বা জেলা, রাজ্যের যে কোনও সরকারি হাসপাতাল বিশেষত যে কোনও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে রোগী ভর্তি করতে হলেই নগদ টাকা দিতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দালালচক্রে যাঁরা সক্রিয় থাকেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্মী। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও অধিকাংশ সময়ই কোনও সদুত্তর পাওয়া যায় না।

    দালালচক্র (WB Hospital) নিয়ে সরব খোদ বিধায়ক থেকে সাংসদ? 

    সরকারি হাসপাতালের (WB Hospital) দালালচক্রের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে শুধু রোগী ও তাঁর পরিবার নয়। এবার তা নিয়ে মুখ খুলছেন তৃণমূলের বিধায়ক থেকে সাংসদ। সূত্রের খবর, সম্প্রতি দলের অন্দরেই একাধিক নেতা রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, বারবার বিজ্ঞাপনে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বলা হচ্ছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে রোগী হয়রানি বাড়ছে। ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না, সময়মতো চিকিৎসাও পাওয়া যায় না। তবে, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে যেভাবে সরাসরি দালালচক্রের খপ্পরে পড়তে হয়, তা বন্ধ করা দরকার বলে দলের অন্দরেই জানাচ্ছেন নেতারা। তবে শুধু বন্ধ ঘরে নয়, হাসপাতালের দালালচক্র নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের বিধায়ক মদন মিত্র থেকে সাংসদ শতাব্দী রায়। সম্প্রতি এসএসকেএম হাসপাতালে দালালচক্রের সক্রিয়তা নিয়ে মুখ খোলেন মদন মিত্র। সংবাদ মাধ্যমে জানান, টাকা না দিলে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যায় না।তৃণমূলের সাংসদ শতাব্দী রায়ও অভিযোগ করেন, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের দালালচক্র নিয়ে। 

    কী বলছেন স্বাস্থ্যকর্তারা? 

    স্বাস্থ্য দফতর কিন্তু এ নিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে। সরকারি হাসপাতালে (WB Hospital) দালালচক্রের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা জানায়, অভিযোগ জমা পড়লেই খতিয়ে দেখা হয়। কেউ ভোগান্তির শিকার হলে অভিযোগ জানান। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • Swasthya Sathi: স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও ভর্তি নিচ্ছে না বহু বেসরকারি হাসপাতাল! ভোগান্তি চরমে

    Swasthya Sathi: স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও ভর্তি নিচ্ছে না বহু বেসরকারি হাসপাতাল! ভোগান্তি চরমে

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    নিখরচায় চিকিৎসা তো দূর অস্ত! স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড রয়েছে জানতে পারলেই বেসরকারি হাসপাতাল মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। রোগী ভর্তি পর্যন্ত করছে না। এমনই অভিযোগ উঠছে শহরের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ফলে স্বাস্থ্য সাথী নিয়ে ভোগান্তিতে রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।

    কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? 

    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, শুধু সরকারি হাসপাতালেই নয়। বেসরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন রাজ্যবাসী। সেজন্য স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু করা হয়। চিকিৎসা খরচ বাবদ পরিবার পিছু পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থেকে যে কোনও মানুষ চিকিৎসা করাতে পারেন। স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড থাকলে, তাঁর চিকিৎসার খরচের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজ্য সরকার ব্যয় করবে। তাঁকে কোনও খরচ দিতে হবে না।

    অভিযোগ কী?

    স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড নিয়ে একাধিক জায়গায় রোগী ভোগান্তির অভিযোগ উঠছে। রোগী ও পরিবারের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলে বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি নিতেই চাইছে না। সম্প্রতি বেলঘরিয়ার বছর সত্তরের অনিতা বসুর স্ট্রোক হয়। তাঁকে প্রথমে পার্ক সার্কাসের একটি নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্য সাথীর আওতায় রোগী ভর্তি করাতে হবে জানার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসে। তারা জানায়, আপাতত ওখানে চিকিৎসার সুযোগ নেই। অন্য কোথাও নিয়ে যেতে হবে।এরপরে পরিবার অনিতাদেবীকে বাইপাসের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানেও একই রকম অভিজ্ঞতা হয়। এরপরে তাঁকে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। বিপুল অর্থ ব্যয় করেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। 
    স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের (Swasthya Sathi) আওতায় অস্ত্রোপচার করানোর কথা জানার পরেই আর দিন জানানো হচ্ছে না হাওড়ার সুদর্শন হালদারকে। তিনি জানান, গলব্লাডারে স্টোনের সমস্যা নিয়ে মাসখানেক আগে বাইপাসের একটি প্রথম সারির হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সবরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও তাঁর স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় চিকিৎসা হবে জানার পরেই টালবাহানা শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁর অভিযোগ, বারবার যোগাযোগ করলেও কবে অস্ত্রোপচার করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই জানাচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু কতদিন? তার কোনও উত্তর নেই। এদিকে পেটের যন্ত্রণা ও অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা বাড়ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়ে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া গেলেও ভোগান্তি অব্যাহত। সূত্রের খবর, সুদর্শন হালদার বা অনিতা বসু কোনও ব্যতিক্রম নন। স্বাস্থ্য সাথীর ভোগান্তির তালিকা দীর্ঘ। 

    কী বলছে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? 

    বেসরকারি হাসপাতাল রোগী ভর্তি না করার অভিযোগ অস্বীকার করছে। কিন্তু স্বাস্থ্য সাথীর (Swasthya Sathi) আওতায় থাকা রোগীদের পরিষেবা দিতে যে তাদের অসুবিধা হচ্ছে, তা তারা স্বীকার করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অ্যাপোলো হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, পরিষেবা দিলেও সরকারের কাছ থেকে সময় মতো টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। বিল মাসের পর মাস পড়ে থাকছে। এভাবে হেলথ ইন্ডাস্ট্রি চালানো মুশকিল। স্বাস্থ্য ভবনে বারংবার জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে সাফ জানিয়েছেন আমরি হাসপাতালের এক কর্তা। তিনি বলেন, “সরকার তৃতীয় একটি মাধ্যমের সাহায্যে আগে স্বাস্থ্য সাথীর বিল মেটাত। তার ফলে অনেকটা সময় লাগত। স্বাস্থ্য দফতরে জানানোর পরে বলা হয়,  এরপর থেকে সরকার সরাসরি বেসরকারি হাসপাতালকে টাকা দেবে। কিন্তু তারপরেও টাকা পেতে অনেক দেরি হয়। কোটি কোটি টাকার পরিষেবা এভাবে দেওয়া যায় না। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই অনীহা তৈরি হয়।” বেসরকারি হাসপাতাল ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে এত বড় পরিকাঠামো গড়ে তোলেনি, স্পষ্ট বলেন মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক কর্তা। তিনি বলেন, “সরকার সহযোগিতা না করলে, স্বাস্থ্য সাথী সফল হবে না। আর রোগী হয়রানি বাড়বে।” তাছাড়া, সরকার যে টাকা অস্ত্রোপচারের জন্য নির্ধারিত করেছে, তাতে চিকিৎসকেরা পরিষেবা দিতে রাজি নন বলেই জানাচ্ছেন ওই কর্তা। তিনি বলেন, একদিনে একাধিক স্বাস্থ্য সাথীর আওতায় থাকা রোগীর অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন না চিকিৎসকেরা। কারণ, তাঁরা ওই পরিষেবা দিয়ে যা পারিশ্রমিক পান, তা একেবারেই যথাযথ নয়। 

    কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর? 

    স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “স্বাস্থ্য সাথীর (Swasthya Sathi) জন্য কোনও বেসরকারি হাসপাতাল রোগী ভর্তি নিতে চায়নি, এমন লিখিত অভিযোগ জমা পড়লে তদন্ত করা হবে।” তবে, স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছে, বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথীর একাধিক সমস্যা নিয়ে বারবার স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছে। সেগুলো সমাধানের পরিবর্তে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকে নির্বাচনী প্রচার হিসাবেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই মানুষের ভোগান্তি চলছেই।

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

  • West Bengal Health: চিকিৎসক নিয়োগ বন্ধ তিন বছর! ‘সিভিক ডাক্তার’-এর পিছনে কোন সমীকরণ?

    West Bengal Health: চিকিৎসক নিয়োগ বন্ধ তিন বছর! ‘সিভিক ডাক্তার’-এর পিছনে কোন সমীকরণ?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    রোগী-চিকিৎসকের অনুপাতে বিস্তর ফারাক। চিকিৎসা পরিষেবা পেতে অনেকেই ভিড় করেন সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু রোগী পিছু এক মিনিটও বরাদ্দ করতে পারেন না সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। আর তাই রোগীদের ভোগান্তিরও অন্ত নেই। চিকিৎসকের এই ঘাটতি পূরণেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিন বছরের প্রশিক্ষণ দিয়ে হেলথ প্রফেশনাল তৈরির কথা জানিয়েছেন, যা লোকমুখে সিভিক ডাক্তার বলে বহুল পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবন (West Bengal Health) সূত্রে জানা যাচ্ছে, তিন বছর ধরে এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসকদের নিয়োগ করছে না রাজ্য সরকার। হাজার ছয়েক চিকিৎসক চাকরি পাচ্ছেন না।

    কী বলছে স্বাস্থ্য ভবনের তথ্য? 

    স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছে রাজ্য সরকার। এমবিবিএস পাশ করার পর গ্রাম কিংবা শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের বলা হয় মেডিক্যাল অফিসার। ২০২১ সাল থেকে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ। প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার চিকিৎসা পড়ুয়া এমবিবিএস পাশ করেন। অর্থাৎ, তিন বছরে প্রায় ছ’হাজার এমবিবিএস পাশ করা চিকিৎসক রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবার (West Bengal Health) সঙ্গে যুক্ত হতে পারতেন। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।

    কেন বন্ধ নিয়োগ প্রক্রিয়া? 

    স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। তিনি জানান, বিষয়টি বিভাগের অভ্যন্তরীণ। এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলবেন না। তবে স্বাস্থ্য দফতরের (West Bengal Health) অন্দরের খবর, একজন পাশ করা চিকিৎসককে নিয়োগ করতে হলে তাঁর বেতন যা দিতে হবে, তার তুলনায় অনেক কম বেতনে হেলথ প্রফেশনালদের দিয়ে কাজ করানো যাবে। তবে অবশ্যই পরিষেবার মান এক থাকবে না। কিন্তু সরকার এখন পরিষেবার মানের চেয়ে অন্য দিক বেশি বিবেচনা করছে। আর তাই নিয়োগও আপাতত বন্ধ।

    কী বলছে চিকিৎসক মহল? 

    চিকিৎসক মহলের (West Bengal Health) একাংশ জানাচ্ছে, রাজ্যে বাড়ছে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা। বাড়ছে আসন। পড়ুয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। ২০২১ সালে যেখানে গোটা রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ছিল ২৩ এবং আসন ছিল ২৫৫০, সেখানে ২০২৩ সালে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২, আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে, ৪,৮২৫। তাহলে প্রতি বছর চার হাজার পড়ুয়া এমবিবিএস পাশ করবে। এত চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও কেন চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে না? চিকিৎসক মহলের প্রশ্ন, অন্য কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের জন্য কি এই সিদ্ধান্ত? 

    পুলিশ নিয়োগের ক্ষেত্রেও আগে দেখা গিয়েছিল, পূর্ণ সময়ের প্রশিক্ষিত পুলিশ নিয়োগের পরিবর্তে, সিভিক পুলিশ নিয়োগেই বেশি আগ্রহী রাজ্য সরকার। অনেক জায়গায় অভিযোগ ওঠে, সিভিক পুলিশ আসলে রাজ্যের শাসক দলের কর্মী। তার উপর সিভিক পুলিশ অধিকাংশ সময়ই শাসক দলের হয়ে কাজ করে। ঠিক সেই ধাঁচেই এবার ‘সিভিক’ চিকিৎসক গড়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। বিরোধীরা জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য দফতরের নানা দুর্নীতি ঢাকতেই কি পাশ করা যোগ্য চিকিৎসকদের নিয়োগ করতে চাইছে না রাজ্য?

     

    দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

LinkedIn
Share