মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা পাক নেতারা হুমকি দিচ্ছেন ভারতের ওপর পরমাণু হামলা চালানোর। কিন্তু নিজের দেশের অন্দরের অবস্থা ভাঁড়ে মা ভবানী! খাবার সংস্থান করাই পাকিস্তানের (Pakistan) কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। সেদেশে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। চাল, আটা, সবজি, ফল ও মাংসের দাম অনেক বেশি (Pakistan Faces Food)। অবস্থা এতটাই খারাপ জায়গায় পৌঁছেছে যে মুরগির মাংসের দাম পাকিস্তানি মুদ্রায় ছুঁয়েছে প্রায় ৮০০ টাকা। অন্যদিকে, চালের দাম ছুঁয়েছে ৩৪০ পাকিস্তানি মুদ্রা। এই আবহে অনেকেই কটাক্ষ করে বলছেন, আগে পাকিস্তান নিজেদের খাদ্যের সংস্থান করুক, তারপর না হয় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের কথা ভাববে।
নিজের পায়েই কুড়ুল মেরেছে পাকিস্তান (Pakistan)
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করতেই পাকিস্তানজুড়ে খাদ্য সংকট আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবর্ষেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ৩৮৩৮.৫৩ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছিল। এবার নতুন অর্থবর্ষ শুরু হতেই পাকিস্তানের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত। অমৃতসরের এই সীমান্ত দিয়েই মূলত আমদানি রফতানি হয় পাকিস্তান, আফগানিস্তানে। কিন্তু পাকিস্তান আগ বাড়িয়ে বাণিজ্য স্থগিত করে নিজের পায়েই কুড়ুল মেরেছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ৭৯৮ পাকিস্তানি মুদ্রা, চালের দাম ৩৪০ পাকিস্তানি মুদ্রা
ভারত থেকেই পাকিস্তান (Pakistan) এতদিন অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ, বিভিন্ন কেমিক্যাল, খাদ্যপণ্য, মাছ-মাংস, ফল, সবজি, জিপসাম ও লবণ আমদানি করত। বর্তমানে যদি পাকিস্তানের বাজারের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের বাজারে এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ৭৯৮ পাকিস্তানি মুদ্রা। অন্যদিকে, চালের দাম ছুঁয়েছে প্রতি কেজি ৩৩৯ পাকিস্তানি মুদ্রা! জানা যাচ্ছে, এক ডজন মুরগির ডিমের দাম পাকিস্তানে ৩৩২ পাকিস্তানি মুদ্রা, এক লিটার দুধের দাম সেখানে ২২৪ পাকিস্তানি মুদ্রা।
আলুর দাম প্রতি কেজি ছুঁয়েছে ১০৫ পাকিস্তানি মুদ্রা
অন্যদিকে, ৫০০ গ্রাম পাউরুটির দামই রয়েছে ১৬১ পাকিস্তানি মুদ্রা, আলুর দাম প্রতি কেজি ছুঁয়েছে ১০৫ পাকিস্তানি মুদ্রা। আপেলের দাম সেখানে কেজি প্রতি ২৮৮ টাকা, কলার দাম ছুঁয়েছে ১৭৬ পাকিস্তানি মুদ্রা। এই আবহে পাকিস্তানে ইতিমধ্যেই ওষুধ সঙ্কটের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারত থেকেই ৩০-৪০ শতাংশ ওষুধ ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানি করে পাকিস্তান। বাণিজ্য বন্ধ হতেই বাজারে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বিরাট সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূল্যবৃদ্ধি আরও বাড়বে পাকিস্তানে
প্রসঙ্গত, ভারতবর্ষের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পাকিস্তানের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ব্যবসা চলতে থাকে। ভারতের বেশিরভাগ জিনিসই পাকিস্তান আমদানি করতে থাকে আফগানিস্তান এবং অন্যান্য দেশ থেকে। সম্প্রতি, তৃতীয় দেশের মাধ্যমেও বাণিজ্য বন্ধের কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধের ফলে পাকিস্তানের অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এর ফলে ওষুধ সহ খাদ্য সামগ্রীর জিনিসপত্রে ঘাটতি তৈরি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যার ফলে যে মূল্যবৃদ্ধি পাকিস্তানে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে তা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানে ভারত জিপসাম এবং লবণ ছাড়াও বিপুল পরিমাণে ওষুধ রাসায়নিক, সবজি, হাঁস মুরগির খাবার এবং শুকনো ফল রফতানি করত এতদিন।
এক কোটিরও বেশি পাকিস্তানিকে অনাহারে ভুগতে হবে, রিপোর্ট বিশ্ব ব্যাঙ্কের
অন্যদিকে, পাকিস্তানের অবস্থা যে খুবই খারাপ হতে চলেছে আগামী দিনে, তার ভয়াবহ ভবিষ্যদ্বাণী শোনা গিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্টেও। সেখানে বলা হচ্ছে যে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে চলেছে পাকিস্তান। চলতি আর্থিক বছরে তাদের দারিদ্রতার মাত্রা আরও ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, এক কোটিরও বেশি পাকিস্তানিকে অনাহারে ভুগতে হবে বলে নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
২০২৫ সালেই চরমভাবে অনাহার দেখা দেবে পাকিস্তানে
ওই রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানের (Pakistan) বর্তমান পরিস্থিতিতে ধান এবং ভুট্টা উৎপাদনের ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই কারণে এক কোটিরও বেশি পাকিস্তানি তীব্র খাদ্য নিরাপত্তার সম্মুখীন হবেন। ২০২৫ সালেই চরমভাবে অনাহার দেখা দেবে পাকিস্তানে। বিশ্বব্যাঙ্কের ওই রিপোর্টে পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক নীতি এবং ঋণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে সতর্ক করা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে যে সরকার চলছে তা বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংঙ্কের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতিবছর ২ শতাংশ হারে যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে আগামী দিনে অর্থনৈতিক অবস্থা দেশটির আরও খারাপ হবে।