Tag: World Suicide Prevention Day 2025

  • Suicide Prevention: ‘আত্মহত্যা’ সবচেয়ে বড় ‘মহামারি’! কীভাবে রুখবেন প্রবণতা?

    Suicide Prevention: ‘আত্মহত্যা’ সবচেয়ে বড় ‘মহামারি’! কীভাবে রুখবেন প্রবণতা?

    তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

    আত্মহত্যা (Suicide) নিয়ে কটাক্ষ নয়। বরং আত্মহত্যা সম্পর্কে সতর্কতা জরুরি। প্রতিবছর ১০ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড সুইসাইড প্রিভেনশন ডে (World Suicide Prevention Day) পালিত হয়। এছাড়া, ভারতে ৭ থেকে ১৩ তারিখ ন্যাশনাল সুইসাইড প্রিভেনশন উইক (National Suicide Prevention Week) পালিত হচ্ছে। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশ জুড়ে আত্মহত্যা সম্পর্কে সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরি (Prevent Suicide)। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভারতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আত্মহত্যা ‘মহামারি’-র আকার ধারণ করবে। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই ভয়ঙ্কর প্রবণতা মারাত্মক ভাবে‌ বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Union Health Ministry) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে গত তিন বছরে প্রায় ২৭ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারেন, সেই লক্ষণ সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। আর এই মহামারি রুখতে সবচেয়ে জরুরি মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) সম্পর্কে সচেতন হওয়া। তাই দেশ জুড়ে চলছে আত্মহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা (Suicide Awareness) কর্মসূচি।

    কাদের জন্য উদ্বেগ বাড়ছে? কর্মশালার লক্ষ্য কী?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি দেখা যাচ্ছে। মানসিক অবসাদ (Mental Depression), হতাশা বাড়ছে।‌ তার থেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা বাড়ছে। গত কয়েক বছরে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বিশেষত ছেলেদের মধ্যে এই ঘটনা আরও বেশি। চলতি বছরে ন্যাশনাল সুইসাইড প্রিভেনশন উইক উপলক্ষে দেশ জুড়ে সচেতনতা কর্মসূচি (Prevent Suicide) পালন চলছে। মূল লক্ষ্য আত্মহত্যা নিয়ে কটাক্ষ বন্ধ করা। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে এ দেশে সচেতনতার হার এখনও অনেক কম। তাই কেউ আত্মহত্যা করবেন, জানালে অনেকেই এ নিয়ে কটাক্ষ করেন।

    এমন কথা অনেক সময়েই বলা হয়, যাতে সেই ব্যক্তির আত্মহত্যা করার ঝোঁক আরও বেড়ে যায়‌। আবার পরিবারের কেউ আত্মহত্যা করলে বাকিদের অনেক সময়েই নানান সামাজিক কটাক্ষের শিকার হতে হয়। যার ফলে তাদের মধ্যেও হতাশা তৈরি হয়। আত্মহত্যার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আত্মহত্যা নিয়ে কটাক্ষ নয়। বরং আত্মহত্যার লক্ষণ সম্পর্কে সতর্কতা জরুরি। এই লক্ষ নিয়েই মূলত দেশ জুড়ে একাধিক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। মূলত স্কুলগুলোতে নাটক, নাচ, গানের মাধ্যমে এই বিষয়ে কর্মশালা চলছে।‌ যাতে স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হয়। অবসাদ কিংবা হতাশার মতো সমস্যা হলে কীভাবে‌ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যায় এবং আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় সে সম্পর্কেও জানানো হচ্ছে।

    কীভাবে আত্মহত্যার প্রবণতা (Suicidal Tendencies) রুখবেন?

    চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আত্মহত্যার ঘটনা কমানোর জন্য এই সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, হঠাৎ কেউ অতিরিক্ত চুপচাপ হয়ে গেলে পরিবারের অন্য সদস্যদের সতর্ক‌ (Prevent Suicide) থাকা প্রয়োজন। বিশেষত বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলেমেয়েরা যদি দিনের অতিরিক্ত সময় ঘর বন্ধ করে একলা থাকে, তাহলে বাড়তি নজরদারি জরুরি। একাকিত্ব আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। পরিবারের কেউ কোনও ঘটনায় মারাত্মক আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলেও বাকিদের সতর্কতা জরুরি। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, অনেক সময় আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটে।

    বন্ধু কিংবা পরিবারের কোনও সদস্য মানসিক অবসাদে ভুগছেন কিনা সে সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ মানসিক অবসাদ। অনেক সময়েই অবসাদের মতো জটিল রোগকে নিছক মন খারাপের তকমা দেওয়া হয়। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটে। তাই এই সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যা রুখতে শুধুই কথা বলা নয়। প্রয়োজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং চিকিৎসা। তাঁরা জানাচ্ছেন, শরীর সুস্থ রাখতে‌ যেমন রোগীকে, তাঁর পরিবারের যত্নের পাশাপাশি চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধের প্রয়োজন হয় (Prevent Suicide)। ঠিক তেমনি আত্মহত্যার প্রবণতার মতো জটিল মানসিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন থেরাপি। তাই পরিবার ও বন্ধুদের পাশে থাকার পাশপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও থেরাপিও জরুরি। তাই কাছের মানুষের মধ্যে এই ধরনের প্রবণতা তৈরি হলে দেরি করা উচিত নয়। বরং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তবেই‌ বড় বিপদ আটকানো সম্ভব হবে। আত্মহত্যাকে মহামারির আকার দেওয়া যাবে না।

    DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

LinkedIn
Share