Tarun Majumdar: ‘চাওয়া-পাওয়া’ থেকে ‘ভালোবাসার বাড়ি’! শেষ হল এক যুগ

tarun_1655979509963_1655979510153

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের বাংলা সিনেমা জগতে নক্ষত্র পতন। শেষ হল এক স্বর্ণ যুগের। কিংবদন্তী পরিচালক তরুণ মজুমদার চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ৯১ বছর বয়সে হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar) তাঁর প্রয়াণে শিল্পী মহলে শোকের ছায়া পড়ে গিয়েছে। গত ২২ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তরুণ মজুমদার। এছাড়াও বর্ষীয়ান পরিচালকের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ও ডায়াবেটিস রোগও ছিল। একাধিক জটিলতা নিয়েই SSKM-এ ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।

তরুণ মজুমদারের জন্মস্থান আধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত বগুড়া। সালটা ছিল ৮ জানুয়ারি, ১৯৩১ সাল। তাঁর বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। পড়াশোনা সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ এবং স্কটিশ চার্চ কলেজে। রসায়নের স্নাতকের ছাত্র হয়েও পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন সিনেমা তৈরিকে। তিনি গত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্র পরিচালনা করে আসছেন। তিনি তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মূলত বাঙালি সমাজ এবং সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর জীবনে মোট চারটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও সাতবার সম্মানিত হয়েছিলেন বিএফজিএ সম্মানে ও পাঁচটি ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও রয়েছে তাঁর। ১৯৯০ সালে আনন্দলোক সম্মানেও সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি এবং এই বছরেই ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।

আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র জগতে নক্ষত্রপতন, প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার

তাঁর প্রথম সিনেমা ‘চাওয়া-পাওয়া’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৯ সালে। এই ছবির নায়ক-নায়িকা ছিলেন উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন। তবে এই ছবিটির পরিচালনায় আসলে ছিল ‘যাত্রিক’ নামে একটি গোষ্ঠী। যার সদস্য ছিলেন শচীন মুখোপাধ্যায়, দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং তরুণ মজুমদার। ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই ‘যাত্রিক’-এর সঙ্গেই ছবির পরিচালনা করেছেন তিনি। ‘পলাতক’ ছবিটির পরেই এই গোষ্ঠী ভেঙে যায় ও এরপর থেকে আলাদা ভাবে ছবি পরিচালনা করতে শুরু করেছিলেন। ১৯৬২ সালে এই যাত্রিকের পরিচালনাতেই ‘কাচের স্বর্গ’ ছবিটি তৈরি হয়। এই ছবির জন্যই ১৯৬২ সালে জাতীয় সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও ‘নিমন্ত্রণ’, ‘গণদেবতা’ এবং ‘অরণ্য আমার’ ছবিগুলির জন্যই তিনি জাতীয় পুরস্কার পান৷

তরুণ মজুমদার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন সিনেমা হল- ‘বালিকা বধূ’,  ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘সংসার সীমান্তে’, ‘গণদেবতা’, ‘শহর থেকে দূরে’, ‘পথভোলা’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘আলো’ ইত্যাদি। চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবে তরুণ মজুমদার সকলের নজরে আসেন ‘পলাতক’ (১৯৬৩), ‘নিমন্ত্রণ’ (১৯৭১), ‘সংসার সীমান্তে’ (১৯৭৫), ‘গণদেবতা’ (১৯৭৮) এইসব ছবির মাধ্যমে। ১৯৯৪ সালের পর থেকেই আর কোনও সিনেমা বানাননি তিনি। কিন্তু ২০০৩ সালে তিনি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘আলো’। যা ফের বক্স অফিসে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। ‘ভালোবাসার বাড়ি’  ছিল তরুণ মজুমদার পরিচালিত শেষ ছবি। যেটি ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল। আর এই সিনেমা করেই তিনি তাঁর ‘ভালোবাসার বাড়ি’ ছেঁড়ে পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে।

 

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share